আমাদের জাতীয় সংসদের নতুন সদস্যরা ইতোমধ্যে উপজেলা পরিষদকে করায়ত্ত করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবি সব মহল থেকেই করা হচ্ছিল। এই দেশটির জন্মের পরপর সংবিধানের প্রণেতারাও এর গুরুত্ব ভালোভাবেই বুঝেছিলেন। এইরকম একটা প্রেক্ষাপটে ড. ফখরুদ্দিন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার উপজেলা পরিষদ আইন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে রেখে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। স্থানীয় সরকারের এই সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানটিকে নিজেদের অধীন করে আমাদের আইন প্রণেতারা প্রমাণ করেছেন তারা যথেষ্ট ক্ষমতাবান!
এবার দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নিজেদের হাতের মুঠোয় নিতে উদগ্রীব হয়ে উঠেছে মহাজোট সরকার এবং তাদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে চরম ক্ষমতা পাওয়া জাতীয় সংসদ। দল-মত নির্বিশেষে জনগনের ভোটে নির্বাচিত এই জাতীয় সংসদের সদস্যরা নিজেদের ক্ষমতাকে আরো নিরংকুশ করতে যা কিছু করা দরকার সবটাই করছেন। যে প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির বিচার করবে তাদের কাঠগড়ায় তোলার ব্যবস্থা নিয়েছেন।
আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের আরেকটি বড় অর্জন মানবাধিকার কমিশন আইনটিকে এরই মধ্যে নতুন সরকার ঝুঁলিয়ে দিয়েছেন!
অথচ মাত্র পাঁচ মাস আগেও সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত, সুশাসন আর শক্তিশালী স্থানীয় সরকার এবং স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার মতো নানা অঙ্গীকার করে ভোটারদের রীতিমতো বোকা বানিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট। দিনবদলের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার গঠনের একশ দিনের মধ্যে এখন তারা উল্টো পথে হাটা শুরু করেছেন। একে বরং এভাবে বলা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার চারদলীয় জোট সরকারের পথেই হাটতে চলেছেন মহাজোট নেত্রী শেখ হাসিনা!
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা রাষ্ট্র পরিচালনার যে নীতি আধুনিক বিশ্বে এখন সবার কাছে গ্রহণেযাগ্য তাতে বলা হয়, রাষ্ট্রের তিনটা অঙ্গ- আইনসভা, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ। এই তিন অঙ্গ এমনভাবে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত ও বিযুক্ত করা হয়েছে যাতে রাষ্ট্র পরিচালনায় সমন্বয়ের পাশাপাশি একধরণের ভারসাম্যও গড়ে ওঠে। আইনসভা আইন তৈরি করবে আর বিচার বিভাগ সেটা প্রয়োগ করবে।
এক্ষেত্রে আইনসভা যদি এমন কোনো আইন তৈরি করে যা সংবিধানের বিধানের সঙ্গে বিশেষত জনগনের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের পরিপন্থী সেই আইনকে সুপ্রিম কোর্ট নাকচ করে দিতে পারে। আর আইনসভার কোনো সদস্য ফৌজদারি অপরাধের জন্য বিচারের সম্ম্মুখিন হতে পারেন। এক্ষেত্রে তার কোনো দায়মুক্তি নেই। অন্যদিকে বিচার বিভাগ আইনসভার কাছে দায়বদ্ধ নন কোনোভাবেই। জনগনের ভোটে নির্বাচিত হলেও বিচারকদের কোনো অপরাধের বিচার করার ক্ষমতা সংবিধান জনপ্রতিনিধিদের দেয়নি। এটা করতে পারেন প্রধান বিচারপতি ও একাধিক জ্যেষ্ঠ বিচারককে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। সংবিধানের ৯৫ ও ৯৬ অনুচ্ছেদে বিচারক নিয়োগ ও তাদের পদের মেয়াদ সম্পর্কে এই বিষয়গুলো স্পষ্টভাবেই উল্লেখ রয়েছে।
রাষ্ট্রের তৃতীয় অঙ্গ নির্বাহী বিভাগ বা সরকার বা মন্ত্রিসভা যৌথভাবে জাতীয় সংসদ বা আইনসভার কাছে দায়বদ্ধ। সংবিধানের ৫৫ (৩) অনুচ্ছেদে পরিস্কারভাবেই বিষয়টির উল্লেখ আছে। এ কারণে ভারতের সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে সংসদ বা সংসদীয় কমিটি তলব করতে পারেন। নির্বাহীরা যে আইন বা বিচারের উর্ধ্বে নন, তার নজিরও বিশ্বে কম নেই। এমনকি ক্ষমতায় থাকাকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টরি ব্লেয়ারকে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা তো সাম্প্রতিক।
জাতীয় সংসদ যেহেতু জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয় এবং এই প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা জনগনের কণ্ঠস্বর; তাই আইন প্রণেতারা নিজেদের সুপ্রিম বা সবার উপরে অবস্থান দাবি করে থাকেন। এটা নতুন কিছু নয়। বলা হয়, নারীকে পুরুষ বানানো বা পুরুষকে নারীতে রূপান্তর ছাড়া আর সব কিছুই আইন প্রণেতারা করতে সক্ষম। এমন দাবিতে বাড়াবাড়ি আছে। নিজেদের ক্ষমতাকে বড় বেশি করে দেখানোর প্রবণতা আছে। তবে নিজেদের প্রণীত সংবিধানই সাংসদদের ক্ষমতা ঠিক করে দিয়েছে। আইন তৈরি করার বাইরে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাও তাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। আর এটা সংসদ ছাড়াও কমিটির মাধ্যমে হয়ে থাকে।
আর সংসদ ও সাংসদদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদ দিয়ে নির্দিষ্ট করা আছে। সংসদের কাজ নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। কিন্তু সংসদের বাইরে সাংসদদের অন্যায় বা অপরাধমূলক কাজের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে কারো কোনো বাধা নেই। কিন্তু সংসদ বিচারকদের তলব করতে পারেনা বা কর্মরত কোনো বিচারকের ব্যক্তিগত অসদাচরণের জন্য তার বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া যায় না। এখানে বিচার বিভাগ ও আইনসভার দায়মুক্তির পার্থক্যটা বোঝা যায়।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৫১, ৫২ এবং ৫৩ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির দায়মুক্তি, অভিশংসন ও অপসারন বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও অভিশংসন করতে পারলেও জনগনের প্রতিনিধিরা (যারা নিজেদের এখন সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী মনে করছেন) তাকে সংসদে তলব করতে পারেন না বা তার কাছে কোনোরকম জবাবদিহিতা চাইতে পারেন না।
একইভাবে সংবিধান প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা অন্য কমিশনার, সরকারি কর্ম কমিশনের প্রধানসহ সদস্য, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারককে সংসদের কাছে জবাবদিহিতা থেকে মুক্তি দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্যের জন্য জরুরি।
অধিকাংশই জানা কথা। আর এতোসব কথার কারণ একটাই- বর্তমান মহাজোট সরকার এবং জাতীয় সংসদের মধ্যে গত দুই বছরে গড়ে ওঠা কিছু প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা এবং ওই সময়ে কথিত অনির্বাচিত সরকারের নেওয়া প্রগতিশীল নীতিগুলোকে অকেজো করে দেওয়ার একটা প্রবল প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
দুদকের পদত্যাগকারী চেয়ারম্যান, কমিশনার ও সচিবকে গত ১২ এপ্রিল তলব করেছিল জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি। তারা কেউ কমিটির বৈঠকে যাননি। এ নিয়ে ভীষণ ক্ষুব্ধ সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। কমিটি সদস্যরা দুদক কর্তাদের বিরুদ্ধে সংসদ ও সংবিধান অবমাননা অভিযোগ এনেছেন। সংসদীয় কমিটি তাদের ভাষায় “দুদকের কাজের তদন্ত” করতে চান। সরকারের একাধিক মন্ত্রীসহ সংসদীয় কমিটির সদস্যরা এর আগে মামলা পরিচালনায় দুদকের খরচ করা ১৩ কোটি টাকার হিসাব চান। বৈঠকের আগে নিজেদের “অতি আগ্রহে”র কথা প্রকাশ করে সংসদীয় কমিটি তাদের উদ্দেশ্য ইতোমধ্যে পরিস্কার করে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, দুদকের গত দুই বছরের অভিযান রাজনীতি দমনের লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত হয়েছে।
সংসদীয় কমিটিতে দুদক কর্তারা হাজির না হওয়াটাকে সাংসদরা ঔদ্ধত্ত্য মনে করছেন। সাংসদরা নিজেদের ছাড়া দেশের আর কাউকে তাদের চেয়ে সম্মানীয় বা মর্যাদাবান মনে করেন না। কিন্তু আমরা কি বিনীত ভাষায় হলেও সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের প্রশ্ন করতে পারি, তারা কোন এখতিয়ারে দুদককে সংসদীয় কমিটিতে তলব করছেন? কোথায় তাদের এই ক্ষমতা দেওয়া আছে বা কে দিয়েছে? নাকি দুদক কর্তাদের কমিটিতে ডেকে তারা নিজেরাই ঔদ্ধত্ত্য দেখাচ্ছেন?
জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধি সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটিকে কি ক্ষমতা ও এখতিয়ার দিয়েছে সেটা একবার দেখা যাক। আমাদের সংবিধানের ৭৬ অনুচ্ছেদ সংসদের স্থায়ী কমিটি গঠন, এর দায়িত্ব-ক্ষমতা ঠিক করে দিয়েছে। আর ৭৫ অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতা জাতীয় সংসদ নিজেদের পরিচালনায় কার্যপ্রণালী-বিধি তৈরি করে নিয়েছে। ১৯৭৪ সালের ২২ জুলাই জাতীয় সংসদ কার্যপ্রণালী-বিধি অনুমোদন দিয়েছিল। তারপর ২০০৬ পর্যন্ত এটি দশবার সংশোধিত হয়েছে। নানা সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। জাতীয় সংসদের সামগ্রিক কাজ পরিচালনা হয় এই কার্যপ্রণালী-বিধির অনুসরণে।
কার্যপ্রণালী-বিধির ২৩৮ বিধি সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি গঠনের কথা বলেছে। একে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষমতা ও এখতিয়ার দেওয়া হয়। ২৩৮ বিধির (ক) উপ-বিধি স্পষ্ট করে কোন কোন প্রতিষ্ঠানকে সরকারি প্রতিষ্ঠান বলা যাবে তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। কার্যপ্রণালী-বিধির চতুর্থ তফসিলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি তালিকা দিয়ে ২৫ নম্বরে বলা হয়েছে, “এই বিধিসমূহ পাসের পরে গঠিত অন্যান্য কর্পোরেশন/ প্রতিষ্ঠান” সময়ে সময়ে এতে যুক্ত হবে।
সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির কাজের এখতিয়ার ২৩৮ বিধির (ক), (খ), (গ) ও (ঘ) উপ-বিধিতে বলা হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবেদন ও হিসাব পরীক্ষা করা, এসব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কোনো প্রতিবেদন থাকলে তা পরীক্ষা করা, প্রতিষ্ঠানগুলো সুষ্ঠু ও বিচক্ষণ বাণিজ্যিক নীতি ও নিয়ম-কানুন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে কিনা, এসবের ত্রুটি-বিচ্যুতি পরীক্ষা করা, ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত করার প্রয়োজনীয় সুপারিশ করে সংসদে এবং প্রয়োজন হলে প্রতিবেদনের অংশবিশেষ সরকারের কাছে জমা দেওয়া- এসব কাজ এই কমিটির কাজের আওতায় পড়ে।
কার্যপ্রণালী-বিধি একই বিধির (অ), (আ) এবং (ই) উপ-বিধিতে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বাণিজ্যিক কাজ হতে স্বতন্ত্র বৃহত্তর সরকারি নীতি সম্পর্কিত কোনো বিষয়, দৈনন্দিন প্রশাসনিক বিষয় এবং বিশেষ আইনবলে কোনো বিশেষ সরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হলে সেই আইনবলে ওই প্রতিষ্ঠানের বিবেচ্য বিষয়গুলো এই কমিটি “কোন পরীক্ষা ও তদন্ত করিবেন না”।
কার্যপ্রণালী-বিধি পরিস্কার করে বলে দিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি কি করতে পারবে বা পারবে না। অর্থাৎ এর ক্ষমতা ও এখতিয়ার সীমিত করে দিয়েছে। ২৩৮ বিধির উপ-বিধিগুলো এবং চতুর্থ তফসিল ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে এ নিয়ে সন্দেহ থাকার আর কোনো অবকাশ নেই যে, যেসব প্রতিষ্ঠান সরকারি অর্থে চলে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে জড়িত সেগুলোই এই সংসদীয় কমিটির জবাবদিহিতার আওতায় আসে। আরও পরিস্কার করে বললে বিষয়টি এমন, যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যবসা-বাণিজ্যে জড়িত তাদের প্রতিবেদন, হিসাব এই কমিটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তদন্তের আওতায় পড়ে।
শুধুমাত্র কার্যপ্রণালী-বিধির চতুর্থ তফসিলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকার ২৫ নম্বরটি (এই বিধিসমূহ পাসের পরে গঠিত অন্যান্য কর্পোরেশন/ প্রতিষ্ঠান) বিবেচনায় নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি দুদককে তাদের এখতিয়ারের প্রতিষ্ঠান বলে ভাবতে পারে। এমনই মনে করতে পারেন সংসদীয় কমিটিটির সভাপতিসহ সদস্যরা। কিন্তু ২৩৮ বিধি এবং চতুর্থ তফসিলে দেওয়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের তালিকা গুরুত্ব দিয়ে পড়লে এমন মনে করার কোনো কারণ নেই। চতুর্থ তফসিলে সব সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের তালিকা আছে। আর ২৩৮ বিধির (গ) উপ-বিধিতে “স্বায়ত্তশাসনের পরিপ্রেক্ষিতে কোন সরকারি প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠু ও বিচক্ষণ বাণিজ্যিক নীতি ও নিয়ম-কানুন অনুযায়ী পরিচালিত হইতেছে কিনা” তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তদন্তের এখতিয়ার এই কমিটিকে দেওয়া হয়েছে।
আর দুদক সরকারি কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। যেমন সরকারি বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়- নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্মকমিশন, আইন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, উচ্চ আদালত, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ইত্যাদি। এদের কোনো কোনোটা সাংবিধানিক সংস্থা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার, সরকারি কর্ম কমিশনের প্রধান ও সদস্য এবং মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রককে সরকার নিয়োগ দিলেও তারা সরকার বা জাতীয় সংসদের কাছে জবাবদিহি করেন না। কোনো সংসদীয় কমিটি তাদের তলব করতে পারে না। গুরুতর অসদাচরণের জন্য উচ্চ আদালতের (হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ) বিচারকদের একমাত্র সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে অপসারণ করা যায়। একইভাবে এসব সাংবিধানিক সংস্থার প্রধান বা কমিশনার অথবা সদস্যদের অপসারণ করতে হলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে করতে হবে।
দুদক, আইন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন অবশ্য সাংবিধানিক সংস্থা নয়। কিন্তু আইন করেই এসব সংস্থার নির্বাহীদের একমাত্র রাষ্ট্রপতির কাছে জবাবদিহি করা হয়েছে। আর গুরুতর কোনো অসদাচরণের জন্য তাদের অপসারণও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমেই করার বিধান আইনে রাখা হয়েছে। সাংবিধানিক সংস্থা না হলেও এসব সংস্থার স্বাধীনতার জন্যই আইনে এমন বিধান। সাংসদদের কাছে জবাবদিহিতা করে এই স্বাধীনতা অর্জন ও ভোগ করা যে অসম্ভব সেটা বলাই বাহুল্য।
বাংলাদেশে আমরা দুর্নীতিবাজদের উল্লাস দেখেছি। টাকার তোষক-বালিশে গনি মিয়ারা ঘুমান, সাংসদের ঘর-বাড়ি-কারখানা তৈরি হয়েছে গরিবের জন্য নির্দিষ্ট ত্রাণের টিন দিয়ে। ঘুষের টাকায় ঢাকার অভিজাত এলাকায় ফ্লাট-বাড়ির কাহিনী লোকের মুখে-মুখে। চালের বস্তা, বাজারের থলি, ব্যাংকের ভল্ট, বিদেশী ব্যাংকে ঘুষের টাকায় ডলার একাউন্টের কথাও এখন আর অজানা নয়। সরকারি আমলা, পুলিশ, সামরিক কর্তা, ব্যবসায়ী, বিচারক, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, এনজিও কর্তা, এমনকি শিক্ষক কোনো পেশাই আজ আর তেমন সম্মানিত নেই। আর এদের পৃষ্ঠপোষক হয়ে আছেন এক শ্রেণীর রাজনীতিবিদ-সাংসদ। পাঁচ-পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কুখ্যাতি অর্জন আমাদের আস্থার জায়গাটা ধ্বসিয়ে দিয়েছিল। আমরা কোনোদিন আত্মমর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো এমন সাহসটুকুও হারিয়ে ফেলেছিলাম।
২০০৪ সালে চারদলীয় জোট সরকার কতোটা চাপে পড়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন করতে বাধ্য হয়েছিল সেটা আমরা জানি। তারপর সেই কমিশনে নিজেদের লোক বসিয়ে একটা অকর্মণ্য সংস্থায় পরিণত করেছিল তারা। শুধু মেরুদণ্ডহীন নেতৃত্বের কারণে দুদককে ২০০৭ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসাবে তৈরি হতে। তারপরের দুর্নীতির “চিচিংফাঁক”-এর সাম্প্রতিক ইতিহাস তো মায়ের কাছে মাসির গল্প বলার মতো!
সরকারের মন্ত্রীরা অভিযোগ করেছেন, দুদক গত দুই বছরে মামলা পরিচালনায় ১৩ কোটি টাকা খরচ করেছে। মন্ত্রী-সাংসদদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় আইনজীবী আছেন। মামলা চালাতে বাদি বা আসামি পক্ষের টাকা খরচ হয় এটা তো তাদেরই ভালো জানার কথা। দুদক এখানে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় করেছে কিনা সেটা দেখবেন মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক। মন্ত্রী-সাংসদদের সূত্রে আমরা দুদকের ব্যয়ের কথা জেনেছি। কিন্তু আমরা এখনো জানি না দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত বর্তমান মহাজোট সরকার ও এই পক্ষের বর্তমান ও সাবেক সাংসদ-নেতারা, বিরোধীদল বিএনপি, জামায়াতের সাংসদ-নেতা, ব্যবসায়ী, আমলারা আইনজীবীদের পেছনে কতো শত কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। এর একটা তদন্ত কি করবেন আমাদের সুযোগ্য সাংসদ বা কোনো সংসদীয় কমিটি? টাকার এই অংকটা জানলে আমরা তুলনা করে দেখতে পারতাম দুদক এ খাতে আদৌ অপ্রয়োজনীয় ব্যয় করেছে কিনা।
বর্তমান ও সাবেক সাংসদদের বেশ কয়েকজন দুর্নীতির দায়ে ইতোমধ্যে বিচারিক আদালতে সাজা পেয়েছেন। তারাই এখন নানা কলকাঠি নাড়ছেন। ক্ষমতা পেয়েই তারা দুদককে দেখে নেওয়ার চেষ্টা যে করবেন তাতো আমরা জানি। কিন্তু এতোটা তাড়াতাড়ি তেমন দিন চলে আসবে সেটা কেউ ভাবিনি। কিন্তু আমরা আর অতীতের গ্লানির দিনগুলোতে ফিরতে চাই না। দুদক যদি নিজের শক্তিতে বলিয়ান থাকে, দল-মত নির্বিশেষে সব দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে দলনিরপেক্ষ মনোভাব নিয়ে দুঃসাহস দেখায়- আমরা তার সঙ্গে এই যুদ্ধে থাকবো।
[ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন “ওফা”র গ্রুপ মেইলে সম্প্রতি দুদকের “সাহস” বা “ঔদ্ধত্ত্য” নিয়ে ‘মেইল’ বিতর্ক হয়ে গেছে। মূলত সেইসব মেইল পড়েই এই লেখাটিতে আগ্রহী হয়েছি। বলে রাখি, আমি পেশায় আইনজীবী নই। সাংবাদিকতা পেশা সূত্রে সংবিধান, কার্যপ্রণালী-বিধি এবং এ সম্পর্কিত নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পড়ে লেখাটি তৈরি হয়েছে। সিসিবিতে এ নিয়ে যে কোনো বিতর্ক উৎসাহিত করছি। লেখাটির লিংক অবশ্য ওফার গ্রুপ মেইলে দেওয়া হবে।]
১ম!!! এবার পড়ে আসি.....
এর থেকে মনে হয় সহসা মুক্তি পাবার উপায় নেই, দুদুকের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ তাই প্রমাণ করে। আসলে যা লাউ তাই কদু, গত ৫ বছর বিএনপি খাইসে, এই ৫ বছর খাবে আওমি লীগ, এর পরের ৫ বছর আবার বিএনপি, ভিশাস সার্কেল অফ পোভার্টির মত এটাকে বলা যায় ভিশাস সার্কেল অফ বাংলাদেশ পলিটিক্স :no: :no:
সাজিদ, এইখানেই আমার আপত্তি। কেন এরকম হচ্ছে, এবং কিভাবে বন্ধ হবে - এনিয়ে আমরা অনেক কিছু ভাবি; কিন্তু তেমন কোন কার্যকরী কিছু করতে পারি না। যে কোন বা্বা-মা স্বপ্ন দেখেন সন্তান বড় হয়ে ডাক্তার, প্রকৌশলী কিংবা সামরিক বাহিনীর অফিসার হবে; কিন্তু কেউ চাইবেন না সন্তান রাজনীতিবিদ হোক। ফলাফল, রাজার নীতি আজকাল রাস্তার নীতিতে পরিণত হয়েছে। এই যে আমি এসব বলছি, আমিও কখনই রাজনীতিবিদ হইয়ে কিছু করবো এমনটি ভাবিনি; এটা আমার অপরাগতা।
মন চায় কিছু একটা করি, কিন্তু জানি না কি করবো।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ভাই কোনো বাবা মা কোন হিসেবে এটা চাইবেন। লীগ ক্ষমতায় আসলে ছাত্র দলের হল ছাড়তে হয় ভয়ে ভার্সিটী যেতে পারেনা। আর এক একজন কে দেখলে তো থু থু ফেলতে ইচ্ছে করে কোন হিসেবে নিজের ছেলে মেয়েকে ওই জায়গায় কল্পনা করবে
কথা তো ঐখানেই; এরকম পরিস্থিতির কারণে সৎ কিংবা যোগ্য অনেকেই রাজনীতিতে আসার সু্যোগ পায় না। কিংবা আসলেও দাড়িয়ে থাকতে পারে না। তাহলে আর পরিবর্তন হবে কোথা থেকে। আমি, তুমি সবাই জানি আ.লীগ, বি,এন,পি কিংবা জা,পা, সবই একই ক্ষুরে মাথা কামিয়েছে। তারপরো কিন্তু নির্বাচনে অধিকাংশ তথাকথিত শিক্ষিত সমাজই এদের ভোট দিয়ে আনে। সনাতন দলগুলোর বদলে কোন নতুন দল যদি আসে, আমরা হয়তো তাদের ভূয়সী প্রশংসা করবো, কিন্তু ব্যালটে অদের সিল দেবো না। ফলাফলঃ যাহাই লাউ তাহাই কদু হইয়া, রইয়া যাবে। :bash:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
রকিব ভাই মুক্তির উপায়কি তাতো জানিনা, অনিল কাপুরের 'নায়ক' সিনেমার মত কিছু করতে পারলে ভাল হত,কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, ঐরকম কিছু যদি কেউ করে তার পরিনতিযে ভাল হবেনা শুধু সেটা যানি। আসলে বাংলাদেশের ডেমোক্রেসি, ডেমোক্রেসি না, এটা একধরনের টিরানি। একজনের বাবা দেশ স্বাধীনের সময় নেতা ছিল দেখে সে মনে করে পুরা দেশ তার, আর একজন মনে করে তার জামাই স্বাধীনতার ঘোষক তাই সে মনে করে সেই দেশের মালিক। এবং এদেরকে সরান যে সম্ভব নয় সেটাতো মাইনাস টুর ব্যর্থ্যতা থেকে প্রমাণিত, যারা চেস্টা করসিল তাদের যে কি হয় কয়েকদিন পরেই দেখবেন। জলিল বেটা নিজে খাইতে না পেরে কিছু কথা বলে ফেলসে, তারো খবর আছে। আমেরিকার যতই নিন্দা করিনা কেন তারা তাদের প্রেসিডেন্টকে যে পরিমাণ যাচাই করে নির্বাচন করে সেটা দেখে হিংসা হয়। ওরকম ভাবে যতদিন না আমাদের নেতারা নির্বাচিত হয় ততদিন এই গুন্ডা অশিক্ষিতদের দ্বারাই আমদের দেশ পরিচালিত হবে যারা দুই রানির আন্ডারে কাজ করবে আর সেটা কিভাবে হবে বুঝতেই পারছেন।
চমৎকার বলেছ ভায়া; অস্বীকার করার কোন উপায় নাই।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
সাজিদ, রকিব, নাজমুল : তোমাদের সঙ্গে দ্বিমত নেই। আমরা আসলেই রাজনীতির দুষ্টচক্রে আটকে গেছি।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
বোর্ড ফাইনালে কমন পড়া বলে একটা কথা আছে............. যতদিন বাংলাদেশের শিক্ষার হার ৮০%+ না হবে ততদিন এই জিনিসগুলো চলতেই থাকবে......... কারণ যেহেতু বেশি শিক্ষিত মানুষের কাছে দুর্নীতিবাজ মানুষের ভ্যালু নাই তাই পার্টিগুলো তখন নিজেদের জন্যেই ভাল হবে...... কিন্তু তার আগে পর্যন্ত যেই সেই থাকবে
সিউল : ৮০% শিক্ষিত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হলে তো আগামী ১০০ বছরেও কিছু হবে না। আসলে আমাদের সবাইকে যার যার ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য সবাইকে রাজনীতিবিদ বা সাংসদ হতে হবে তা কিন্তু জরুরি নয়। নিজের নিজের জায়গা থেকে আমরা সবাই যদি একটা দারিদ্রমুক্ত-উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করি তাহলে কিন্তু অনেকটা এগোবে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
শিক্ষার হারের সাথে দুর্নীতির সম্পর্ক টা ঠিক বোধগম্য নয়। যারা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ- সরকারী আমলা, বনের রাজা, নির্বাহী প্রকৌশলী সবাই একটি মানদন্ডে উচ্চ শিক্ষিত! কিন্তু তাদের শিক্ষা তাদের নৈতিকতার কাছে হার মেনেছে বলেই আজ এই অবস্থা। ৬ বচর আগে উচ্চ -মাধ্যমিকে এ প্লাস পায় ৭২ জন আর এখন শুধু একটি বোর্ডেই পায় ৭২ হাজার! এতে কি শিক্ষার মান বেড়েছে না কমেছে আমার জানা নেই তবে গুণগত মান বাড়েনি এটা স্বীকার করতেই হবে। শিক্ষার সাথে নৈতিকতার দুরত্ব, শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি, সিলেবাস নিয়ে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা সব মিলিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রের অবস্থা তথৈবচ। ৮ম শ্রেণী পাস পুলিশ নেয় ২০ টাকা ঘুষ আর নানা ডিগ্রীধারী লোক যদি সামান্য উৎকোচের বিনিময়ে দেশের স্বার্থবিরোধী অবস্থান নেয় তাহলে শিক্ষার সাফল্য কোথায়? শুধু শিক্ষিতের হারের অংক বাড়িয়ে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না। দরকার সামাজিক দায়বদ্ধতা, ঔচিত্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষা।
লেখাটায় আরো কিছু সংশোধন করতে হবে। আজ আর "এনার্জি" পাচ্ছি না। কাল দেখা যাবে। তোমাদের মন্তব্য/ প্রতিক্রিয়া চাই।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানাউল্লাহ ভাই,
লেখাটা আমার জন্য খুবি উপকারি।দেশে আইনের শাসন আসুক মনে প্রানে চাচ্ছিলাম।আপ্নি তার পথ বাতলে দিলেন।সংসদীয় কার্যপ্রনালীর আগ পর্যন্ত ব্যাপারগুলা এক টানে বুঝে ফেলছি,আর যখন ২৩৮ বিধির কথা বললেন তখন মনে মনে ইউরেকা বলে চিতকার দিয়েছি। আশা করি এই সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না করে বিগত সরকারের মত একি ভুল করবে না।আপনার সকল argument এর সঙ্গে আমি একমত পোষন করছি এবং আপনাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
আপনাকে :salute: :salute:
দুদুক একটি public body হলে তার বিরুদ্ধে 'judicial review' হতে পারে যা পুরোপুরি বিচারবিভাগ তথা বাংলাদেশ হাইকোর্ট এর এখতিয়ারভুক্ত।এখানে জাতীয় সংসদ কিভাবে রুলিং জারি করে তার সস্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।সরকারি দলের কোন উকিল এই সিস্টেমটা খুজে বের করল?
ভাই অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা করতেছে.....কিন্তু হাত পাও বান্ধা... 😕
সময় কইরা দিয়া যাব :boss:
অপেক্ষায় আছি। বলো কোনোদিন।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
হতাশ হয়ে গেছি ভাইয়া এই কদিনেই। ভেবেছিলাম এবার অন্তত নেতা-নেত্রীদের বোধোদয় হবে। কিসের কি।
হতাশাকে অভিধান থেকে ছুটি দাও। যার যার জায়গা থেকে চিৎকার দাও। দুদকের পাশে আমাদের থাকতে হবে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
-এই সাহসে বলীয়ান হয়া ব্লগের এমপি'র সাথে বাহাসে অবতীর্ণ হইলাম। 😛
শুরু করি দুদক কি তা'ই দিয়ে। পোষ্টে কোথাও স্পষ্ট করে বলা হয়নি 'দুদক' কি। সাধারণ জ্ঞানে যা বুঝি, এটা হল দূর্নীতি দমন কমিশন। কি তারপর? এটা আইনসভা, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ এর কোনটার আওতায় পড়ে?
আইনসভায় না নিশ্চিত। বাকি থাকে বিচার বিভাগ আর নির্বাহী বিভাগ। বিচার বিভাগ হতে হলে দূদকের বিচারিক ক্ষমতা থাকতে হবে, যা এখন নেই। আর নির্বাহী বিভাগ হলে ত সংসদের (আইনসভা) অধীনেই। - আর যদি এসবের কোনটাই না হয়ে থাকে, তার মানে দাঁড়ায় এটা আইনসভার (সংসদের) কৃপায় জন্ম+বৃদ্ধিপ্রাপ্ত, কোন স্বাভাবিক আইনে নয়। তাইলে ত সংসদের কথা শুনতেই হবে।- এইগুলা হল বাস্তব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আমার ধারনা।
আর তত্ত্বীয় পরিসরে চিন্তা করলে, আমাদের আরো কিছু প্রশ্নের উত্তরের মধ্যেই খুঁজতে হবে 'দূদকের সাহস'। কেন সেটাই বলছি,-
যেকোন প্রতিষ্ঠানের কাজের মূল্যায়ন হয় সেটা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য+পারফর্মেন্সের তুলনামূলক পর্যালোচনায়। দূদকের প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য আমরা সবাই জানি, 'দূর্নীতি দমন'। এখন দেখা যাক, কার্যক্রম। কেমন?- সেটাও ত আমরা সবাই জানি। কিন্তু সবটাই কি জানি? না কি বিশেষ একটা অংশ জানি, আরেকটা অংশ জানিনা?
- দূদকের ত ব্যক্তি-দল-মত-পেশা-সিটিজেনশিপ নির্বিশেষে দেশের মধ্যে সকলের দূর্নীতিই দমন করার কথা। তাই কি করেছে? যদি করে থাকে, তাইলে আমার কোন কথা নাই। আর যদি না করে থাকে, তাইলে দুইখান কথা আছে।-
এক, যাদেরকে দূদক ধরল তারা কারা, আর যাদেরকে ছাড়ল তারাই বা কারা? ধরি, সকল রাজনীতিবিদ দূর্নীতিগ্রস্থ, আর তাই তাদেরকে ধরে ভালোই করেছে (যদিও বাস্তবে কিছু কিছু ভাগ্যবান+অভাগা ছিলেন)। কিন্তু আমলাদের ব্যাপারে নীরব কেন? এটা ত বোঝা কঠিন কিছু নয় যে, মন্ত্রীর টেবিলে ফাইল যাবার আগে অন্তত তিনজন আমলার সই লাগে। আমলারা মন্ত্রীর আজ্ঞাবহ কথাটা মানা সম্ভব নয় কেন সেটা তৌফিক এলাহী (বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা) সচিব থাকা কালে মাগুরছড়ায় গ্যাসের ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলায় 'সংসদীয় কমিটি'কে কাঁচকলা দেখিয়ে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। আর দূর্নীতি যেসব আমলা করেন, তারা রাঘব বোয়াল টাইপেরই, চুনোপুটি না। কাজেই, মন্ত্রীর দর্পের সামনে চুনোপুটি আমলাদের অসহায়ত্ব দেখিয়ে দূর্নীতিবাজ রাঘব বোয়ালদের ছেড়ে দেবার কোন সুযোগ নাই।
আরো আছে; বিডিআরের অপারেশন 'ডালভাতে' দূর্নীতির কথা সব পত্রিকা ছাপল, কিন্তু দূদক কি ভূমিকা নিছিলো এই বিষয়ে? ঘুষ আর চাঁদাবাজীর পার্থক্য ত সবাই বুঝি, তাই না? তাহলে ঘূষের মামলাকে কেন চাঁদাবাজীর মামলা দেখিয়ে শুধু গ্রহিতাকে ধরা হল, আর ঘুষদাতা'কে ছাড়া হলো? ত্রানের টিনে গোয়াল ঘর বানানো যে দূর্নীতি, মসজিদ-মাদ্রাসা বানালে সেটাও কি একই ধরনের দূর্নীতি?
ব্যবাসায়ীদের বেলায় কি অবস্থা? গুঁড়াদুধের ভেজালের খবর ত সব পত্রিকাই ছেপেছে। কয়জন ব্যবসায়ীকে 'ফলাও করে' সাইজ করেছে? বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মাত্র ৬/৭ জনের একটা সিন্ডিকেটের উপস্থিতি ইত্তেফাকসহ বেশ কয়েকটা পত্রিকায় এসেছে, কয়েকবারই। দূদক কি করেছে তাদের ব্যাপারে? (আরেকটা বিষয় জানতে না চেয়ে পারলাম না,- বিশেষ অবস্থার মাঝে যখন অধিকাংশ ব্যবসা দৌড়ের উপরে, তখন কি মহিমায় "ইফাদ" নামক ব্রান্ড 'নাজেল' হইলো?)
দুই, টাকার অংকে দেশে সব থেকে বড় দূর্নীতিতে জড়িত নাইকো, অক্সিডেন্টাল, গ্রামীনফোন ও এই জাতীয় বিদেশী সংস্থাগুলো। এদের কারো কাছ থেকে গাড়ি নেওয়ায় দূদক রাজনীতিবিদদের জেলে দিল, কিন্তু এদের বিষয়ে দূদকের কি অবস্থান? গ্রামীন ফোন ত পরপর দুইবার ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে জরিমানা দিতে বাধ্য হবার তালিকায় সবার উপরে ছিলো। ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া কি দূর্নীতি নয়?
- এতোগুলো প্রশ্ন তুললাম এই কারণে যে, 'আমার মতে' দূদকের নেতৃত্ব একটা ভূল করেছে যে, তারা দূদকের প্রতিষ্ঠাকালীন যেসব নীতিমালার মাধ্যমে সংস্থাটি পরিচালনা করার কথা ছিলো, তা পুরোপুরি না মেনে নিজেরা কিছু কিছু নিয়ম তৈরী করে নিয়েছিলেন। তার ফলেই তাদের বিরুদ্ধে কথা উঠছে, উঠবেই।- এর কারণটাও বলি,
rational bureaucracy-র মূল বৈশিষ্ট্য হল, এটা পরিচালিত হয় নৈর্ব্যক্তিক আইন দ্বারা। আমলা+যেকোন ব্যক্তি সেই আইনের অধীন। আর এই কারণেই এইরকম সংস্থা কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সেখানে ব্যক্তিগত ক্ষোভ-প্রতিহিংসার সুযোগ থাকেনা। কারণ, ভুক্তভোগী মাত্রই জানে যে, আইনই তার দূর্দশার কারণ, আইন প্রয়োগকারী নয়। কিন্তু যখন দেখা যায় যে কোন দূদক-কর্মকর্তা তার ইচ্ছেমত কাউকে ধরছে আর কাউকে ছাড়ছে, তখন ভুক্তভোগী বোঝে যে, শাস্তি আসছে ব্যক্তির থেকে, নৈর্ব্যক্তিক 'আইন' থেকে নয়। কাজেই তার ক্ষোভ-প্রতিহিংসা সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যায়। আর সুযোগ পেলে তারাও 'সাইজ' করার ধান্দা করবেই। - আমাদের দেশে হয়েছেও সেটাই।
অফটপিকঃ আওয়ামীলীগ যা করছে, এর থেকে ভিন্ন আশা করা যায় কি করে? আওয়ানীলীগ কি আদর্শ বদলেছে, নাকি কর্মসূচী বদলেছে? আর জনগণ কি আওয়ামীলীগের আদর্শ-কর্মসূচী দেশে ভোট দিয়েছে, নাকি বিগত সরকারের দূঃশাসনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে?
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভালো লাগলো পড়ে। 🙂
লাভলু ভাই এর কাছ থেকে ভালো জবাব আশা করছি
মাহমুদ ভাই,
আমার কাছে মনে হয় সানাউল্লাহ ভাই দুদুক এর কোন কর্মকর্তার punishment নিয়ে চিন্তিত নন,বরং উনি চাচ্ছেন ব্যাপারটা ঘটুক একটা সঠিক procedure এর মধ্য দিয়ে,যেখানে কারো ব্যাক্তিগত রেষারেষির স্থান নেই।উনি কিন্তু বলেননি যে সাংসদ ছাড়া অন্যকেউই দুদুক এর বিচার করতে পারবে না।দুদুক একটি public body হিসেবে যদি কোনরুপ এখতিয়ার বহির্ভুত কাজ করে তবে তার শাস্তি দেবে বিচারবিভাগ judcial review এর মাধ্যমে।
কিম্বা সংখুব্ধ ব্যাক্তি রিট করতে পারেন হাইকোর্টে। কিন্তু সংসদীয় proper tribunal ছাড়া এর বিচার কিভাবে legislature করতে পারে তা ভাব্বার বিষয়।
মাহমুদ ভাই,
'আর নির্বাহী বিভাগ হলে,তা সংসদের (আইনসভা) অধীনেই।' --এইখানে আমার কিঞ্ছিত আপত্তি আছে।আপ্নি কি বলতে চাচ্ছেন নির্বাহী বিভাগের অধীনস্ত সকল প্রতিষ্ঠানগু্লোই আইনসভার অধীন।আমার মনে হয় ব্যাপারটা আরেক্টূ বিশ্লেষনের দাবী রাখে।
সুব্রত : ধন্যবাদ। মাহমুদের মন্তব্যের জবাবে আমার বক্তব্যটা তোমার মতের মতোই। ভালো থেকো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
মাহমুদ : বাহাসে আমার কখনোই আপত্তি নেই। কিন্তু বাহাসের জন্য বাহাস করতে আমি রাজি নই।
তুমি বলেছ,
দুদক জাতীয় সংসদে তৈরি হওয়া আইনের ক্ষমতায় দুর্নীতি দমনে একটি স্বাধীন সংস্থা। আইন প্রণেতারাই এসব স্বাধীন সংস্থা গড়ে তোলেন। যেমন স্বাধীন সংস্থা নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন। তোমার ভাষায়,
তাহলে নির্বাচন কমিশনকে নাওনা কাঠগড়ায়? সাহস থাকলে? সংবিধান তৈরির সময় এসব সংস্থার স্বাধীনতার প্রয়োজন মনে করে সেভাবেই আইন হয়েছিল। দুদকের প্রয়োজন তখন বোঝা যায়নি। কারণ মানুষ তখন আজকের মতো এতো সভ্য হয়নি!!
নির্বাচন কমিশন বা সরকারি কর্ম কমিশন অথবা মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক রাষ্ট্রের কোন অঙ্গের মধ্যে পড়ে? তুমি যেখানে বসবাস করছো সেখানে মানবাধিকার কমিশন কি আছে? সেটা রাষ্ট্রের কোন অঙ্গ প্রতিষ্ঠান দয়া করে কি তা জানাবে? নির্বাচন কমিশন অনেকটা আধা-বিচারিক সংস্থা। যদিও সংবিধানে এর স্পষ্ট উল্লেখ নেই। আবার সরকারি কর্ম কমিশনকে বিচারিক কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। সংবিধানিক ক্ষমতায় এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও সংবিধানে পরিস্কার বলা হয়নি এগুলো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এইরকম নানা গোজামিল নিয়ে আমরা চলছি।
রাষ্ট্র পরিচালনায় আজকের মতো জটিল পরিস্থিতি অতীতে ছিল না। নির্বাহী, আইন প্রণেতা, বিচারকরা এতো দুর্নীতিপরায়ণ ছিলেন না অতীতে। আর তাই আইনসভা, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের বাইরেও নানা স্বাধীন সংস্থার ধারণা আজ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। প্রয়োজন আছে বলেই। তথ্য অধিকার কমিশনের কথা কি ১০/১৫ বছর আগে কেউ ভাবতে পেরেছে। জনগণের কাছে জবাবদিহিতার এরকম ব্যবস্থাও আজ হচ্ছে। দুদক কারো কৃপায় নয়, জনগণের দাবির (যাকে জনমত বলি) চাপে হয়েছে। আর যদি সত্যি বলি, দাতাদের ঠেলায় হয়েছে। কষ্ট হলেও আমরা যারা এসবের মধ্যে বসবাস করি, মেনে নিয়েছি। ওদের ঠেলায়ও যদি একটা ভালো কাজ হয়!
আর আইনসভার কৃপায় গঠিত হলেই তাকে আইনসভার কথা শুনতে হবে কেন? এটা কেমন যুক্তি? আইন প্রণেতারা তো বিচার বিভাগও তৈরির আইন করেন। বিচারকরা তাদের কথা শুনবেন?
দুদক নিয়ে তুমি কিছু কথা বলেছ। সম্ভবত সঠিক তথ্যের অভাবে তোমার কথাগুলো বলেছ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুইবছরে দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতায় দুদকের পাশাপাশি গুরুতর অপরাধ দমন সংক্রান্ত জাতীয় সমন্বয় কমিটি (টাস্কফোর্স) ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তর (ডিএফআই বা বহুল কথিত ডিজিএফআই)। শেষোক্ত সংস্থাগুলো আইন-কানুন না মেনে এমন অনেক কিছু করেছে যার ঝাল এখন অনেকে দুদকের ওপর মেটাতে চাইছেন।
এ নিয়ে প্রথম আলোর ০৪ এপ্রিল, ২০০৯ সংখ্যায় সম্পাদক মতিউর রহমান একটা মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছিলেন। সেটি পড়তে পারো। "হাসান মশহুদ চলে যাওয়ায় ক্ষতি কার?" লেখাটির লিংকও দিলাম।
দুদক প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য তুমি জানো। পারফরমেন্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছ। আমি মনে করি, গত দুই বছরে দুর্নীতিবাজ নয়, এমন কাউকে হয়রানি করেনি সংস্থাটি। করলে অন্যরা করেছে। নানা দুর্বলতা ও অসহযোগিতা সত্ত্বেও তারা কাজ করার চেষ্টা করেছে। আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন আমার কাছে নেই।
ইফাদ পুরনো প্রতিষ্ঠান। গত দুইবছরে এরা ব্যবসা প্রসার করেছে। তোমার মতো আমার বা আরো অনেকের সেটা নজরে পড়েছে। তারা দুর্নীতি করছে এমন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ কি তোমার কাছে আছে? তাহলে আমরা সেটা মিডিয়ায় প্রকাশ করতে পারি। ডাল-ভাতের দুর্নীতি নিয়ে কি তুমি নিশ্চিত? দলবাজ মিডিয়ায় প্রতিহিংসামূলক ঢালাও অভিযোগ আসে। প্রমাণ পেলে প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের মতো দলনিরপেক্ষ পত্রিকায় সেটা ছাপা হতো।
তুমি দুদকের ওয়েবসাইটটি দেখতে পারো। তারা কিভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় কাজ করে সেটা সেখান থেকে জানতে পারো। তাহলে তোমার অনেক অভিযোগের জবাব পাবে। আর সব দুর্নীতি ধরার সময় তো শেষ হয়ে যায়নি। নাকি দুইবছরকে অনেক সময় মনে করছো? গ্রামীণ ফোন কর ফাঁকি দেয়নি। অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করেছে। এজন্য রেগুলেটরি বডি বিটিআরসি তাদের জরিমানা করেছে। দুদক এসব বিষয়ে এখনো যায়নি। ভবিষ্যতে তাও তদন্ত হতে পারে।
গত দুই বছরে দুদকের অর্জন? সেসব তোমার কাছে কিছু না? এ নিয়ে একটি শব্দও তুমি লেখোনি। তোমার একপেশে অভিযোগ নিয়ে আমি আর কিছু বলছি না, তবে আমি মনে-প্রাণে চাই দুদক স্বাধীন সংস্থা থাকবে। সংসদীয় কমিটির কাছে দুদকের জবাবদিহিতা কোনোমতেই নয়। তাহলে সেটা খালেদা জিয়ার নিযুক্ত মেরুদণ্ডহীন বিচারপতি সুলতান হোসেন খানের দুদক হবে, হাসান মশহুদের নয়।
আমি চাই দুর্নীতি করলে দুদক আমাকেও ধরবে। কর ফাঁকি দিলে এনবিআর যদি আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, সেজন্য দুদককে অভিযুক্ত করো না। চোখটা খোলা রেখ, মনটাও।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
:boss: :boss: :boss:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ধন্যবাদ আকাশ।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানাউল্লাহ ভাই,
পোস্ট পড়ে খুব আনন্দ পাচ্ছি।আপ্নার লেখাগুলো আমার ধারন করতে হচ্ছে।দুদুক ভাল কিম্বা খারাপ সে সম্পর্কে আমার ধারনা খুবি স্বল্প।দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে যোগাযোগ নেই অনেকদিন।তাই আমি যতটুকু text থেকে জেনেছি তার আদলে মনে হল আপনার সঙ্গেই থাকব।
বস, মনীষীরা বলে গিয়েছেন "একমাত্র পাগল আর নাবালকের কোন দল নেই"। তবে ট্রান্সকম গ্রুপের মিডিয়া গুলি চেষ্টা করে নিজেদের নিরপেক্ষ রাখতে এইটা সত্য।
দুনিয়াজুরা পচুর গিয়াঞ্জাম,
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
মাহামুদ ভাই অনেক প্রশ্নে জর্জরিত দেখা যাচ্ছে, নিজের সীমিত এবং স্বল্প জ্ঞানে দেখি কয়েকটার উত্তর দিতে পারি কিনা, constitutional and administrative lawতে ভালো করিনি, হয়তো সব প্রশ্নের পুরোপুরি, বিস্তারিত, পুর্ণাঙ্গ উত্তর দিতে পারবো না, তবে এটা নিশ্চিত করছি যতটুকু তথ্য দিচ্ছি তা সঠিক।
একটি পাবলিক বডি যা আইনবিভাগ বা পার্লামেন্ট নয় এবং বিচারবিভাগ বা কোর্ট নয় তাই ই নির্বাহীবিভাগের আওতায় পড়ে। পাবলিক বডি হলো তা যা জুডিসিয়াল রিভিউও এর আওতায় পড়ে। ব্রিটিশ এয়ারওয়াইজ একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান হলেও পাবলিক বডি কেননা মালিক ব্যাক্তিটি সরকারই যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ শেয়ার ধারণ করে, তাই কোর্ট সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটিশ এয়ারউয়েইজের বিরুদ্ধে জুডিসিয়াল রিভিউ হেয়ার করতে। এখন প্রশ্ন এটা কোন বডির অধীন? কোর্ট বলে, যেহেতু এটা আইন ও বিচার বিভাগের অধীন নয়,তাই ই এটা শাসন বিভাগের অধীন।
ermm...না। এখন আপনি বলছেন accountabilityএর কথা। প্রাধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন যে নির্বাহী বিভাগের প্রধান সে কি ব্রিটীশ এয়ারউয়েইজ যা একটি পাবলিক বডি একে কিছু বলার অধীকার রাখে? না, কেননা ব্রিটীশ এয়ারউয়েইজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে একাউন্টেবল না। মন্টেস্ক্যু এর seperation of power বলে একটি বডির কোন প্রতিষ্ঠানকে আরেকটি বডির কাছে accountable করা যাবেনা যদি ঐ আরেকটী বডি পুর্বোক্ত সেই প্রতিষ্ঠানকে নিজের প্রভাব বলয়ের মধ্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়, thus সক্ষম হয় ক্ষমতার অপব্যাবহার (ause of power) সাধন করতে। এখানে মজার ব্যাপার হচ্ছে, accountability প্রভাব বিস্তারে সাহায্য করবেই- তাই, আমেরিকার declaration of indepandence নিয়ে আসে check and balance এর ধারণা। এটা বলে, একটী বডির প্রতিষ্ঠান আরেকটী বডির কাছে accountable হলে তৃ্তীয় বডিটির ঐ যার কাছে অ্যাকাউন্টেবল সেই বডির উপর থাকবে স্ক্রুটিনির ক্ষমতা যা দ্বারা সে নিশ্চিত করবে কোন ক্ষমতার অপব্যাবহার হচ্ছে না। সানাউল্লাহ ভাইয়ের প্রশ্ন ছিলো দুদক যা একটি executive body এর accountability পার্লামেন্টের কাছে না কোর্টের কাছে? উনার মনে হয়েছে পার্লামেন্টের কাছে হওয়া উচিত না, যা আমিও মনে করি। কেন করি? বলছি আপনার পরবর্তী ডাল-ভাত দুর্নীতির পয়েন্টটিতে।
মাহামুদ ভাই এই কথা বলে কষ্ট দিলেন, কেননা এটা কোন সুষ্ঠ অ্যাকাডেমক সেন্স প্রকাশ করছে না। আপনার বোধহয় প্রথমে বলে নেয়া উচিত ছিল স্বাভাবিক এবং অস্বাভাবিক আইনের সংজ্ঞা। আমি নিশ্চিত আপনি অস্বাভাবিক আইন বলতে আপনি অর্ডন্যান্স বোঝাচ্ছেন না, কেননা আইন হচ্ছে যা আসে পার্লামেন্ট থেকে আর অর্ডন্যান্স আসে executive body থেকে।
বিডিআর, ব্রিটিশ এয়ারউয়েইজ executive body এর অধীন, দুদকও তাই। executive body এর একটি প্রতিষ্ঠান আরেকটি প্রতিষ্ঠানের উপর স্ক্রুটিনির ক্ষমতা কিভাবে পাবে সেটার জন্য একটি ভিন্ন পোস্ট দরকার, এখানে এটা অপ্রাসঙ্গীক। তবে একটা জিনিষ লক্ষ্য করার মতঃ ব্রিটশ এয়ারউয়েইজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে accountable না- এটা আলোচনার যোগ্য যে বিডিআর দুদকের কাছে accountable না হওয়ার সম্ভবনা আছে। এবার দেখা যাক দুদকের স্কোপ। পার্লামেন্ট দুদকের কাছে accountable না, কোর্টও না তাহলে কে? অন্যান্য পাবলিক বডিগুলো যেমন, মন্ত্রনালয়, সচিবালয় ইত্যাদি ইত্যাদি। বলাই বাহুল্য দুদক কেন গ্রামীন ফোনের দুর্নীতি দেখভাল করছে না এটা হাস্যকর প্রশ্ন কেননা এটার জন্য দুদকের জন্ম হয়নি। যাই হোক, দুদকের accountability কার কাছে হওয়া উচিত? পার্লামেন্টের কাছে? এক কথায় না, কেননা বানলাদেশে পরিচালিত হয় পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি, প্রেসিডেন্সিয়াল ডেমোক্রেসি নয়। অর্থাৎ, দুদক যাদের তদন্ত করছে, বা যাদের একটা অংশ মন্ত্রী তারাই আবার সাংসদ, তাই নয় কি? যাদের উপর স্ক্রুটিনি আবার তাদের কাছেই accountable- ব্যাপারটা হয়ে যায় একটা পুরো হাস্যকর ফাজলামো, সানাউল্লাহ ভাইয়ের বক্তব্য ছিলো এটাই। অবশ্যই একটা পাবলিক বডি হিসেবে দুদক হবে accountable? কার কাছে? কোর্টের কাছে হতে পারে, সেটা হলে আমাদের কোন সমস্যাই ছিলো না।
ত্রানের টাকা কোন খাতে যাওয়ার কথা সেই খাতে না গেলেই দুর্নীতি।
ermm...না।
য়াপনি বলছেন দুদক নিজেই নিজের আইন করেছে, তাই না? যেমন? এই ক্লেইম উদাহারণ দ্বারা সমর্থিত হতে হবে। দুদুকের ওই দুই বছরে বস্তুত কোন আইন হয়নি, কেননা তখন পার্লামেন্ট ছিলা না, কি হয়েছে? অর্ডন্যান্স। আপনার দাবী কি সেই অর্ডন্যান্স দুদক বানিয়েছে? অর্ডন্যান্স জারীর ক্ষমতা কি দুদকের আছে, না প্রেসিডেন্টের?
দুদকের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে আপনার ধারণা এতটা স্পষ্ট নয় মনে হচ্ছে। কেননা, আপনি কয়েকবার বলেছে গ্রামীন কে কেন ধরলো না, ট্যাক্স ফাঁকি কি দুর্নীতি নয় ইত্যাদি ইত্যাদি। দুদকের কাওকে ধরার ক্ষমতা নেই, ধরা বা অ্যারেস্ট করার ক্ষমতা আছে পুলিশের এবং তার অঙ্গ সংগঠনের। দুদক একটি investigative agency. তার কাজ তদন্ত করা এবং কোর্টে প্লেইন্টিফ হিসেবে অভিযোগ উথ্যাপন করা। এই কাজটা বলতে পারেন একজন ব্যাক্তিগত শখের গোয়েন্দাও করতে পারতো, তবে দুদকের পার্থক্য হচ্ছে এটা প্রেসিডেন্টের অর্ডন্যান্সপ্রদত্ত কিছু ক্ষমতা পেয়েছে যেমন- গোপনীয় ডকুমেন্টে access ইত্যাদি যা কিনা বলা হয়েছিলো পার্লামেন্ট গঠিত হলে আইন করা হব। সানাউল্লাহ ভাইয়ের অভিযোগ ছিলো আওয়ামীলীগ কথাতো রাখেই নি বরং উল্টো দুদককে এখন কাঠগড়ায় নেওয়ার চেষ্টা করছে।
আইন না জেনে কথা বলতে গিয়ে পুরাই গুলায়া ফালাইছি। ফলে আমার আসল বক্তব্যও ঠিকমত বলতে পারি নাই। তার জন্য সানা ভাইকে সরি বলেই আবার ক্লিয়ার করেছি আমার অবস্থান দ্বিতীয় মন্তব্যে।
অর্নব, আমার মনে হয় তোমার আসলে উচিত ছিল সেইখানে দেখা। যে ভুল আমি সানা ভাই+সুব্রতর মন্তব্য থেকে আমি আগেই বুঝেছি, সেটা আবার দেখিয়ে দিয়ে আর লজ্জ্বা দেওয়ার কি দরকার :(( ? তোমার কোন মন্তব্য থাকলে সেটা দ্বিতীয় মন্তব্যেই আশা করি।
আমার তথ্যগুলো বিভিন্ন পত্রিকা থেকেই নেওয়া। কাজেই, বিশ্লেষনও অনেকটা সেখান থেকেই। আর পত্রিকার বিশ্লেষণ ত পক্ষপাতমূলকই।
অবশেষে এই বুঝলাম যে, রাজনীতি বড়ই জটিল। তাই ইহা আমার বুঝিবার বস্তু নয়। আর এটাও ঠিক যে আমি পক্ষপাতমূলক কথা বলেছি। কারন, আমি বিশ্বাস করি না নিরপেক্ষতা বলে মানুষের মধ্যে কোন কিছু থাকা সম্ভব। যেটা আছে বা থাকা দরকার, তা হল ন্যায়বোধের প্রতি পক্ষপাত, যা সর্বজনগ্রাহ্য আইনের দ্বারা সমর্থিত।
আমার প্রথম মন্তব্যে যারা যারা কষ্ট অলরেডি পেয়েছেন+পাবেন, সবার কাছে আমি 'সরি'। তবে আমিও হালকা কষ্ট পাইছি যে, আমার আসল বক্তব্যে দেখি কেউ কিছু কয় না। আমার ধারনা, good intention-এর বেইল নাই, যেকোন ক্ষেত্রেই। সেজন্যই এই অবস্থান নিয়েছি। আইনের আংশিক বা সম্পুর্ণ প্রয়োগ যত ভালো উদ্দেশ্যেই হোক, সেটা প্রশ্নের উদ্রেক করবেই।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
:bash:
জন্যঃ সম্পুর্ণ প্রয়োগ
পড়ুনঃ অসম্পুর্ণ প্রয়োগ
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাই,
আপনার সবগুল্লো লেখাই আমি খুব এনজয় করি।তাই ত মন্তব্য করি।কে বলছে আপনার বেইল নাই? এইসব বলবেন না ভাই।কষ্ট লাগে।খারাপ ভাল যাই লেখেন একটা interact করার সুজোগ তো পাই।আর আপনার লেখাটিও অনেক যুক্তিযুক্ত সুধু মাত্র আইন গত ব্যাপারটুকু ছাড়া।
সুব্রত,
হালকা ভুল বুঝেছো ভাই। আমি আমার 'বেইল' এর কথা কই নাই, কইছি 'যে কারো'। আমি যে না বুঝে পত্রিকার তথ্যের ভিত্তিতে মন্তব্য করে ধরা খায়া গেছি তার জন্য অবশ্যই দুঃখিত, কিন্তু আমি এটাও জানি যে, আমার সীমাবদ্ধতা আছে :(( । কাজেই সেটা ব্যাপার না। -আরেকবার ভালো করে পড়লেই বুঝবে সেটা 🙂 ।
অন্যের কথায় ছিদ্র খুঁজি বলেই নিজের কথার ছিদ্রগুলো বিনা দ্বিধায় মেনে নেই+সংশোধনের চেষ্টা করি। তা না হলে নিজের বোধের উন্নতি হবে কি করে? আমি সব সময়ই আশা করি, আমার কোথাও ভুল হলে কেউ না কেউ তা দেখিয়ে দিবে। তা'তে আমি খুশিই হব।- বোঝা গেছে? :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
খুব ভাল লাগল অর্নব।মন লাগিয়ে পড়লাম।
:salute:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ধন্যবাদ রকিব।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানা ভাই,
প্রথমেই আপনার কাছে 'সরি' বলছি এই কারনে যে, আমার মনে হয়েছে আপনি আমার মন্তব্যে আহত বোধ করেছেন। সেটা একান্তই আমার অনিচ্ছাকৃত। আমার বক্তব্য আসলে ভূল বুঝেছেন, তার কারণও আমি বুঝতে পেরেছি। সেটা হল, আমার বক্তব্য উপস্থাপনা। কিছু দিন ধরে দেখছি 'প্রশ্ন-আকারে ডায়লগ' মুখোমুখি আলোচনায় খুবই কার্যকরী। ব্লগে সেটা ট্রাই করতে গিয়ে এই অবস্থা। কিন্তু এইখানে ত সেটা সম্ভব না। তার কারন, একই বাক্যে নানা অর্থ করা সম্ভব। আর ব্লগে কোন বক্তব্যে ভুল বোঝার অবস্থা তৈরী হলে সাথে সাথেই ক্লারিফিকেশন দেওয়া সম্ভব হয় না।- এরপর থেকে এই ব্যাপারে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করার চেষ্টা করবো।
এখন বলি, আমার আসল বক্তব্য ও তার প্রেক্ষিতে আপনার প্রতিউত্তর বিষয়ে।-
আমার মূল বক্তব্য ছিলো, দূদকের কার্যক্রম পুরোপুরি সংস্থার আইন মেনে প্রয়োগ করা হয়নি। ফলে ভূক্তভোগীদের মধ্যে ব্যক্তিগত ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। আর তাদের মধ্যে যারা ক্ষমতাবান হয়েছে, এখন তারা তাদের ব্যক্তিগত প্রতিহংসা চরিতার্থ করতে চাইছে। আমি বলেছি, এটা স্বাভাবিক। আমি বলিনি যে, দূদক নিরপরাধ ব্যক্তিদের ধরেছে, কিন্তু বলতে চাইছি যে, একই অপরাধে অপরাধী অনেককেই দূদক ধরেনি। যেমন, সাদেক হোসেন খোকার দূর্নীতির উপর পত্রিকার প্রথম পাতায় (সম্ভবতঃ ইত্তেফাক) লিড-নিউজ এসেছিলো। মান্নান ভূঁইয়াসহ বিএনপি+আওয়ামীলীগের সংষ্কারবাদিরাও যথেষ্ট সহানুভূতি পেয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত দূদকের তালিকা অনুযায়ী রাজনীতিবিদ-ব্যবসায়ীসহ আরো অনেকেই ছিলো যাদেরকে দূদক ধরেনি। ফলে যারা ধরা পড়েছে, তাদের এই ধারনা হওয়া অমূলক নয় যে, তারা ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার।- আর এই পর্যবেক্ষন থেকে আমি আমার মূল বক্তব্যটা লিখেছিলাম শেষের থেকে দ্বিতীয় প্যারা'তে। সেটা মনে হলো দৃষ্টি-আকর্ষনে বিফল হয়েছে।
অন্য সংস্থার চাপে দূদকের ব্যবস্থা গ্রহন করার বাধ্যকতা আইনে থাকলে কোন সমস্যা হবার কথা না। কিন্তু সেরকম আইন থাকার কথা না, কারণ স্বাধীনতা নিয়েই দূদকের জন্ম। তাহলে অন্য সংস্থার চাপে পড়ে কারো বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অযুহাতটা টেকে না। কাজেই সেরকম কিছু ঘটে থাকলে তার দায় দূদকের কর্মকর্তাকেই নিতে হবে।
আমার একই যুক্তি অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের এখন কাঠগড়ায় আসার সময় হয়নাই। ওটা আসতে পারে কেবল যারা এর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ তারা ক্ষমতাবান হলেই। সেটাও হবে একই কারণে, আইনের অস্বচ্ছ প্রয়োগের কারনে, যখন কোন পক্ষ নিজেদেরকে মনে করবে সেই প্রতিষ্ঠানের কাছে বৈষম্যের শিকার। আর আমার মনে হয়, বিএনপি'র সেটা ভাবার কারন আছে (কপিরাইটঃ দল-ভাঙ্গায় নি.ক.'র ভূমিকা)।
আইনগত বিষয়গুলোতে আমার জ্ঞান শূন্যের কাছাকাছি। তাই কমন-সেন্স থেকে বলতে গিয়ে আপনার+সুব্রতর কাছে পুরাই ধরা খায়া গেলাম। :((
আমার আসল বক্তব্যটা ছিলো, "স্বাধীন সংস্থা" চলবে স্বাধীন ভাবে, তার নিজ আইন অনুযায়ী। বিদ্যমান আইন অকার্যকর বা অসম্পুর্ণ হলে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে তা সংশোধন করে তবেই তা প্রয়োগ করার কথা। তা না করে যদি ব্যক্তিগত ইচ্ছা/অনিচ্ছা অনুযায়ী আইন প্রয়োগ করার সামান্যতম সন্দেহও দেখা দেয়, তা' অবশ্যম্ভাবীরূপেই উক্ত আইন প্রয়োগকারীর বিরূদ্ধে ভূক্তভোগীর ব্যক্তিগত আক্রোশ জন্ম দিবে। এই কারনেই আধূনিক শাসন ব্যবস্থা 'রাশ্যনাল ল' বা নৈর্ব্যক্তিক আইনের পক্ষে যা' ব্যক্তিকে আইনের বাইরে (উর্ধ্বে না কিন্তু) নিয়ে যায়+হানাহানির সম্ভাবনা বিনাশ করে।
চোখ ত খোলাই রাখতে চাই, মনও। কিন্তু বিদেশ থেকে দেখার একমাত্র মাধ্যম ত মিডিয়া। তারা ত একই ধরনের একেক জিনিস একেকজনে একেক ভাবে দেখায়। (এইখানে প্রথম আলোকে বিবেচনার বাইরে রাখলাম)। তাদের কাছ থেকে খবর নিয়ে চোখ আর মন খোলা ত কঠিন। :(( :((
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ : দুঃখিত যে সময়মতো জবাব পাওনি। আসলে অফিসে ঢুকেই সিসিবি খুলে রাখি। সময়-সুযোগ পেলে কোনোটা পড়ি, কোনোটা চোখ বুলাই, কোনোটায় মন্তব্য করি। আজ সারাদিন দৌঁড়ের ওপর ছিলাম। কখনো অফিস, কখনো বাইরে মিটিং- এভাবেই গেছে। ফলে তোমার সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি।
তোমার মন্তব্যে নয়, লেখার ধরণে কিছুটা আহত হয়েছিলাম। কারণ তুমি অসম্পূর্ণ ও উদ্দেশ্যমূলক নানা তথ্য দিয়ে জবাব দিয়েছিলে। গ্রামীণ ফোন, গুড়াদুধের ভেজাল, ইফাদ, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, ডালভাত- এমন সব বিষয়কে এই ইস্যুতে যুক্ত করেছিলে যা দলবাজ-দুর্নীতিবাজরা নিজেদের পিঠ বাঁচানোর জন্য এখন করছে। মনে হচ্ছিল তুমি বাহাস করার জন্য বাহাসে নেমেছ। তবে ক্ষুব্ধ হইনি, তাহলে তো তোমার মন্তব্যের জবাবই দিতাম না।
আজও আর সময় পাচ্ছি না। কাল পেলে এ নিয়ে আরো কিছু লিখবো। আজকের মতো ক্ষমা করে দাও। ভালো থেকো। মনে কষ্ট নিও না। :hatsoff:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
মাহমুদ : যে কথাটা কাল বলতে চেয়েছিলাম সেটা অল্প কথায় আজ বলি।
নতুন প্রতিষ্ঠান হিসাবে দুদক যে কোনো ভুল করে নাই তা নয়। তবে হাসান মশহুদের নেতৃত্ব তারা যে দুর্নীতি দমনে আন্তরিক ছিল এ নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নাই। সমালোচনা হয়তো আছে। কিন্তু হাসান মশহুদ মানুষ হিসাবেও অসাধারণ। রবীন্দ্রনাথের প্রকৃত প্রেমিকরা খারাপ মানুষ হতে পারে বলে আমার কেন জানি মনে হয় না। উনার স্ত্রীর কাছে আমার একজন ঘণিষ্ট মানুষের শোনা, সম্ভবত কুয়েতে রাষ্ট্রদূত থাকাকালে তিনি কখনো ঈদ বাসায় করেন নি। প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে ঈদ করতেন।
দুদকের আরেকজন কমিশনারকে আমি ভালোভাবে চিনি। তিনি একজন ফৌজিয়ান। জনাব মনজুর মান্নান সততা ও দক্ষতার জন্য খ্যাত। তাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। দীর্ঘদিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ছিলেন। অবসরের আগে তিনি এনবিআরের সদস্য (দ্বিতীয় ব্যক্তি) হয়েছিলেন।
তবে দুদকের স্বাধীনতা নিয়ে আমার এই অবস্থান এইসব ব্যক্তির জন্য নয়। ব্যক্তি বদলাবে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠতে হবে, আরো শক্তিশালী হয়ে উঠতে হবে। সৎ মানুষ এর সঙ্গে থাকবে। আর দুর্নীতিবাজদের ঘুম হারাম করে দেবে দুদক। এখানে আসে মানুষ হিসাবে, সমাজের সচেতন অংশ হিসাবে আমাদেরর ভূমিকা।
দুদকের আর্থিক স্বাধীনতা আইনে আছে। আর তার আর্থিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক। আইন প্রয়োগে অন্যায় বা ভুল করলে আদালতে তার বিচার আছে। দুদকের চেয়ারম্যান বা কমিশনার কারো বিরুদ্ধে কোনো অসদাচরণ বা দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে রাষ্ট্রপতি বিষয়টি তদন্ত বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে পাঠাতে পারেন। সুতরাং প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি হিসাবে দুদকের কোনো জবাবদিহিতা নেই, এমন মনে করার কোনো কারণ নেই। দুর্নীতি দমনে স্বাধীন এই প্রতিষ্ঠানটির জবাবদিহিতার বিষয়টি কোনোভাবেই সংসদীয় কমিটির হাতে যায় না বা যেতে পারে না। যেতে দেওয়াও উচিত হবে না। সেরকম কিছু হলে আমরা শেষ হয়ে যাবো।
আশা করি অল্প কথায় বিষয়টি বোঝাতে পেরেছি। ভালো থেকো। রাগ করো না ভাইটি। 😀
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ভাইরে এইগুলা দেইখ্যা মনে হয়, এর সব একতা কাপুরের ডেইলী সোপ অপেরার একনিষ্ট দর্শক।
যতদূর জানি মহিউদ্দিন খান সাব হইতেছে দুদুক সংক্রান্ত সংসদীয় দলের নেতা, যিনি নিজেই কিনা আবার দূদুকের মামলার আসামী। 😀
তবে শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যাবস্থা হতেই হবে। আজ বা কাল।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
দুদক ও সংসদীয় কমিটি নিয়ে বিতর্ক জমে ওঠেছে। চলবে। এটা মনে করি স্বাস্থ্যকর। প্রথম আলোতে আজ দুটো লেখা ছাপা হয়েছে। পড়তে পারো। এর আগেও কয়েকটা লেখা ছাপা হয়েছে। তোমরা চাইলে সেগুলোর লিংকও দেবো।
নাগরিক আন্দোলনের নেতা বদিউল আলম মজুমদার লিখেছেন দুদকের পক্ষে। পড়ুন : সংসদীয় কমিটি বনাম দুদক : নাগরিক ভাবনা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মলয় ভৌমিক লিখেছেন সংসদীয় কমিটির পক্ষে। পড়ুন : আসল বিষয়টা যেন চাপা না পড়ে
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আপনার এই লেখাটি কি কোন পত্রিকায় এসেছে? না থাকলে আসা উচিত। চমতকার বিশ্লেষণ।
আমরা আলোচ
ভুলে অংশবিশেষ মন্তব্য চলে গিয়েছে। আমরা আলোচনা করতে পারি কিভাবে আইনের শাসন টা বলবত করতে পারি। আমার ধারনা ছিল আইন বুঝি নেই। আপনার পোষ্টে সে ভুল ধারনা দূর হল। আইনতো দেখি সবই আছে। কি করা যাবে, কি করা যাবে না, কারা স্বাধীন, কে কার কাছে জবাবদিহি সবই বলা আছে, নেই শুধু যথার্ত প্রয়োগ। কিভাবে প্রয়োগটা নিশ্চিত করা যেতে পারে সে ব্যাপারে আলোচনা করতে পারি। হতে পারে নুতন নেতৃত্ব, নুতন দলের মাধ্যমে। হতে পারে আমরাই নুতন দল করলাম, সানাউল্লাহ ভাই হল আমাদের সংসদ নেতা :boss: ।
~x( :-B ~x( :-B ~x( :-B
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
প্রথম আলো আজ আসিফ নজরুলের একটা লেখা ছেপেছে। যারা তার সম্পর্কে জানো না তাদের জন্য বলছি, আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের শিক্ষক। আওয়ামী লীগের ঘোর সমালোচক হিসাবে পরিচিত। দুদক নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ আমার ভালো লেগেছে।
দুদক : অভিযোগ, অপপ্রচার ও কিছু বিশ্লেষণ
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আসিফ নজরুল আমার শিক্ষক।তাই চাই না ক্যারিয়ার শুরুতেই সমালোচনার মুখে পড়ুক।তবে ইতিহাস ভুলব না কখনই।কালের স্বাক্ষী হয়ে থাকতে চাই।পায়ের নীচের মাটি শক্ত হলে সময় মত বান মারব।সুধু বড়দের শ্রীকৃষ্ণ এর কথামৃত মনে করিয়ে দিতে চাই--তোমারে বধিবে যে,গোকুলে বাড়িছে সে।
সো......ভয় নাই বাংলাদেশ।সবাই তোমায় ছেড়ে গেলেও আমি থাকব তোমার সঙ্গে।না হয় এক সঙ্গেই মরলাম।
:thumbup: :thumbup: :salute: :salute:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
সুব্রত : তোমার শিক্ষক নিয়ে কিছু বলার দরকার নাই। সময়ই সব বলে দেবে। কোথায় আছো তুমি এখন? কি করছো?
১/১১-এর পর আসিফ নজরুল যে ভূমিকা রেখেছিল, শেষদিকে বদলে ফেলে। রাজনৈতিক পক্ষ নিয়ে নেয়। এখানেই আমাদের সমস্যা। অঙ্গীকার নাই, ধারাবাহিকতা নাই। দ্রুত নিজের খোলস পাল্টে ফেলতে পারি আমরা!!
ভালো থেকো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানাউল্লাহ ভাই,
আইনের উপর পড়াশুনা করছি অনেকদিন ধরে।কিন্তু শেষ করতে পারছি না।হয় আমার মেধা কম,নইলে বিষয়টি বড্ড কঠিন।লন্ডনে আইনের উপর স্নাতক করছি।দোয়া করবেন যেন শেষ করে আপনাদের মাঝে ফিরতে পারি।
আর শিক্ষক নিয়ে কথা বলার মত অবস্থা আমার এখনও আসেনি ভাই।আমি ত এখনও ছাত্র।শুধু দেখে যাচ্ছি।আর মনে মনে হিসেব করছি।
উপজেলা নির্বাচনটা খুব কাছে থেকে দেখার সৌভাগ্য এবার হয়েছিল। নির্বাচনের দুইদিন আগে কোন এক উপজেলায় আমি ছিলাম। নির্বাচন নিয়ে মানুষের যে উচ্ছ্বাস তা আমাকে বিস্মিত করেছিল। নির্বাচনে যারা প্রার্থী ছিল তাদের দেখেছি একা একা তার প্রচারনা চালাচ্ছেন মানুষ তাদের খুব আপন করে নিচ্ছে কারণ তারা তাদের এলাকার মানুষ(যা অনেক সংসদ সদস্যগণ নন)। আমি অনেকের সাথে কথা বলে এটা বুঝেছিলাম উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তারা খুব আশাবাদী কারণ তাদের মতে এর মাধ্যমে এলাকার সমস্যা সরকারী ভাবে করা অনেক সহজ হবে, তারা চেয়ারম্যান এর কাছে সহজে যেতে পারবে। প্রশাসনে স্বচ্ছতা অনেকাংশে নিশ্চিত হবে আর ভবিষ্যতে উপজেলা পর্যায় থেকে নেতৃত্ব তৈরী হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে উপজেলার সরকারী সব প্রকল্প গ্রহন করা হবে এই বিষয়টি আমাদের সাংসদের পছন্দ হলো না। সরকারী প্রকল্প তারা না নিতে পারলে যে টাকা বানানোর সু্যোগ ও কমবে। এতো এতো টাকা খরচ করে সাংসদ হয়ে যদি তার বিনিয়োগ না উঠে আসে তাহলে কিভাবে হবে।
আর তাই সরকারের এক কলমের খোচায় উপজেলা আইন নতুন করে লিখা হলো সংসদে। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার বিরোধী দল নাকি টেবিল চাপড়িয়ে আইনটি পাশ করেছে। আসলে দিনশেষে এ দিয়ে এই প্রমাণিত হয় যে আমাদের নেতাদের কাছে ক্ষমতা এবং নিজ স্বার্থই শেষ কথা।
সানা ভাই দুদক আর দুঃসাহস দেখাবে কি? গতকাল সমকালে দেখলাম ছয় নেতা যারা গত দুই বছর পালিয়ে ছিলেন আবার এসে হাজির হয়েছেন। যে আশা আমরা দেখেছিলাম ১/১১ র পর প্রতিদিন তা একটু একটু নৈরাশ্যে রুপ নিচ্ছে।
আশায় বুক বাঁধো বারবার। মানুষ আশা নিয়েই বাঁচে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
তেমন কিছুই বদলাবে না। সব আগের মতোই।
@ সানাউল্লাহ ভাই,
বিতর্কিত এই সাম্প্রতিক বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। উল্লেখ করা অনেকগুলো বিষয়েই আপনার সাথে আমার দ্বিমত নেই। তবে বেশ কিছু ব্যাপারে কিছুটা ভিন্ন মত পোষণ করতে বাধ্য হচ্ছি, হয়তো দৃষ্টিভঙ্গীগত পার্থক্যের দাবী থেকে। মোটা দাগে সেগুলো হল :
১) জবাবদিহিতার সংস্কৃতি এবং তার প্রয়োজনীয়তা যেটা মূল বিতর্ক থেকে অজান্তে বাইরে ছিটকে পড়ছে;
২) দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতার স্বরূপ নিয়ে সুধী মহলে বিভ্রান্তি;
৩) সাবেক দুদক প্রধানের জবাবদিহিতার দায়।
আইনের ধারা এবং তাদের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমার মতামতটি কলেবরে অনেক দীর্ঘ হয়ে যাওয়ায় এখানে পোস্ট করা থেকে বিরত থাকছি। মূলতঃ মুক্তাঙ্গনে ব্লগার অবিশ্রুতের পোস্টের বিপরীতে মন্তব্যটি লেখা হয়েছিল। আগ্রহীদের প্রতি পড়ার এবং বিতর্কে অংশগ্রহণ করার আহ্বান থাকলো। বিস্তারিত এখানে পড়ুন।
ধন্যবাদ।
রায়হান ভাই,
আপনার পর্যালোচনা আশা করছিলাম। আপনার পর্যালোচনা-পদ্ধতি ভালো লাগে।
যাই, দেখি গিয়ে কি লিখেছেন মুক্তাঙ্গনে 😀 ।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ধন্যবাদ মাহমুদ। মতামত জানতে পারলে ভাল হত।
মূল লেখা এবং তার সূত্র ধরে বিভিন্ন জনের নানা মন্তব্য পড়ে খুব ভালো লাগলো I ভালো লাগবার প্রথম কারণ অংশগ্রহণকারীদের একটা নির্বিবাদ অবস্থান পরিষ্কার ভাবে উঠে এসছে তা হলো সকলেই একবাক্কে দুর্নীতি বিরোধী এবং দুর্নীতিবাজদের ঘৃনা করে I দুর্নিবাজদের লালনকারীদের সুনির্দিষ্ট / নিশ্চিত ভাবে চিন্নিত করতে সখ্খম হযেছে/ এটা জাতির জন্য খুবই আশার কথা I
অনেক কথা এখন আমার পক্ষে বলা সম্ভব হবে না I তবে অনেক কিছুই এখনো সবার সঠিক ভাবে জানা নাই এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি I ডিজি এফ আই' র বা এন সি সি ' র সাথে দুদক এর সম্পর্কের একটা সীমারেখা নির্দিষ্ট করা ছিল / আবার সব কৃত অপরাধ দুর্নীতি দমন কমিশনের তফসিল ভুক্তও না / দুর্নীতি দমন কমিশন ওই দুই প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকান্ডের অন্কশিদারও ছিল না / দুর্নীতি দমন কমিশন ওই দুই বছরে আজন্ম সৃষ্ট স্থবিরতা থেকে বেরিয়ে এসে মূল জায়গাটাতে আঘাত করতে পেরেছিল যা দুর্নিবাজদের পরবর্তিতে তাদের গতানোগতিক সকল পরিচয়কে জলাঞ্জলি দিয়ে দুদক বিরোধী শিবিরে একত্রিত হবার আবহ সৃষ্টি করে দিয়েছে /
দুদক ভুল করেছে ..অনেক ভুল করেছে / আবার দুদক এর অনেক সীমাবদ্ধতাও আছে/ শুদ্ধ মনমানসিকতা সম্পন্ন নতুন প্রজন্মকে দিয়ে পুরাতন নষ্ট হযে যাওয়া লোক গুলোকে বিদায় জানাতে হবে /
ভারতীয় সি বি আই' র আদলে ঢেলে সাজাতে হবে / যোগ্য নির্ভিক দেশ প্রেমিক লোককে ওই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে বসাতে হবে / রাজনীতি মুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসাবে আপামর সকলের আস্থা অর্জন করতে হবে / এ সবই সমযের বেপার/
তোমার লেখা এবং অন্যান্য সকলের মতামত খুবই যুক্তিসঙ্গত ও সময় উপযোগী/ তবে স্পর্শকাতরও বটে /
এ সকলি আমার একান্তই বাক্তিগত মতামত/ আশা করি এই লেখার মন্তব্য গুলো একাডেমিক আলোচনা হিসাবে বিবেচিত হবে/ ভিন্নমত থাকবে সেটাই স্বাভাবিক //////////
বি:দ্র: বানান ইত্যাদি ভুল গুলো অনিচ্ছাকৃত/ সফটওয়ারের আজ প্রথম ব্যবহারকারী বিধায়/ মন্ত্যব্যটি মূল রচiয়তার অনুরোধে
ধন্যবাদ হানিফ ইকবাল ভাই। ফেসবুকে আপনাকে পেয়ে বন্ধুত্বের অনুরোধ জানিয়ে যেভাবে দ্রুত সাড়া পেয়েছি, একইভাবে পেলাম এই লেখাটি পড়ে আপনার মন্তব্যও। নিজের কাজের মধ্য দিয়ে আপনি যে এরই মধ্যে একজন যোগ্য, দক্ষ, রুচিশীল মানুষের ভাবমুর্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন, আজ সেই মানুষটা একজন প্রাক্তন ক্যাডেট জেনে গর্বের জায়গাটা আরো বেড়ে গেল।
আমি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এবং সাংবাদিক হিসাবে নিজের অভিজ্ঞতা আর কিছুটা পড়াশুনার ভিত্তিতে এ নিয়ে লিখেছিলাম। আমার মূল অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হয়নি। দুদককে এখন কেউ কেউ সংসদ বা সংসদীয় কমিটির কাছে জবাবদিহি করার প্রস্তাব দিচ্ছেন। আমি এর সঙ্গে মোটেও একমত নই। নানাভাবে দুদকের হাত-পা বেঁধে ফেলার উদ্যোগ শুরু হয়ে গেছে। এর পেছনে কারণ কি তা আমরা সবাই জানি। এর বিরুদ্ধে লড়াইটা চলতেই থাকবে। আপনি যথার্থই বলেছেন ভারতীয় সিবিআই-এর আদলে একটা শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা দরকার। পাশাপাশি এনবিআরকেও আরো শক্তিশালী করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের ঘুম হারাম করে দিতে হবে। এমন বার্তা সবার কাছে পৌঁছাতে হবে যে, "সাহস থাকলে দুর্নীতি করো, ধরা পড়লে শেষ"। এটা করতে পারলেই দেশের দুই-তৃতীয়াংশ সমস্যা কমে যাবে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"