(লেখাটি শুধুমাত্র সিসিবি’র সদস্যদের জন্য। এর মাঝেও কেউ যদি আহত হোন; ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি প্রত্যাশা করি। আমার মাথার ঠিক নাই।)
সাইফের লেখাটি
সাইফের লেখাটি পড়ে কিছু লিখতে ইচ্ছে হলো। গত দুইদিনের ঘটনায় কিছু লেখার মত মানসিকতা ছিলনা।
সিসিবির সানাউল্লাহ ভাই সহ বাকি সবার থেকে যেভাবে আপডেট পেয়েছি- তা বলে বোঝাতে পারব না। বাংলাদেশ থেকে এত দূরে বসে নিজেকে খুব অসহায় আর দুর্ভাগা মনে হচ্ছিল।
সামিয়া’র আব্বুকে এখনও পাওয়া যায়নি। আমার বন্ধু মনির’কে দেখলাম খবরে। আসাদে’র খবর জানি না। হারিয়ে ফেলা অনেক অফিসারদের চিনতাম। এখন অনেককেই পাওয়া যাচ্ছে ম্যানহোলে – ড্রেনে- সুয়্যেরেজের লাইনে কিংবা মাটি খুঁড়ে। ভেতরটা হু হু করে ওঠে। ক’দিন আগে আমি একজন শান্তিরক্ষীর মরদেহ দেশে নিয়ে গিয়েছিলাম। ইউ এন মিশনে এসে প্রতিকূলতার মাঝে অমূল্য প্রাণ খোয়ানোর জ্বালা না বুজতেই এই অসহনীয় ঘটনাটি এবং এতে দেশের অধিকাংশ মানুষের মনোভাবটুকু গত ১৫ বছর ধরে লালিত সৈনিক হওয়ার স্বপ্নটুকু লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে।
ইতিহাসে পাই – Soldiering এবং Prostitution (সবাইকে সম্মান জানিয়ে) এ পেশাদুটি আদিকাল থেকেই চলে আসছে। থেকে থেকে এদের স্থায়ীত্বের পাশাপাশি সাদৃশ্যও খুঁজে পাচ্ছি। দেশ সেবার কসম খাওয়া প্রজাতন্ত্রের চাকর হিসেবে আমাদের
এভাবেই বেঁচে থাকতে হবে। এবং সাইফের ভাষায় –
কাজেই আমাদেরকে যে যখন চাইবে নিজের কাজে টিস্যু পেপার এর মত যতেচ্ছ ব্যবহার করবে তারপর ছুড়ে ফেলদিবে যত্র তত্র।
দেশের উচ্চ শিক্ষিত এবং চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গ ভুলেই যান আমাদের পিরামিডের চূড়ার সৈনিকদের সময়ে সময়ে নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী গণতন্ত্রের ধারক এবং বাহকেরা নিজেরাই সাজিয়ে নেন। আর, আমরা প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষনের পাশাপাশি কেবল সিস্টেমের ডিফল্ট বডি হয়ে আজ্ঞা বহন করেই মাসান্তে নিজের পাওনাটুকু বুঝে নিই।
আমার মনে প্রায়ই প্রশ্ন জাগে – এই অদেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর মনে দেশপ্রেম জাগানোর জন্য ক’জন বুদ্ধিজীবি-রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তাদের সন্তানদের কিংবা আত্মীয় স্বজনদেরকে সেনাবাহিনীতে পাঠিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন? তারা এগিয়ে আসলেই তো এই প্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে দেশটাও ধন্য হতে পারত।
কিন্তু এমনটি হয়না। কেননা – বাড়িতে পাহাড়া দেয়ার জন্য পয়সা দিয়ে স্বাস্থ্যবান কুকুর রাখতে চাই আমরা। বাড়িতে চোর আসেনা ভয়াল কুকুরের জন্য। কিন্তু চোর না আসায় কুকুরের প্রতি তাই অবজ্ঞা আসতেই পারে – কুকুরটা তো বসে বসেই খাচ্ছে।
সেনাবাহিনীতে লোকজন বাইরে থেকে আমদানী করে আনা হয়না। এরা এ দেশেরই সন্তান। আর তাই ঢালাও ভাবে সাধারনকে ‘ব্লাডি সিভিলিয়ান’ বললে যে পক্ষান্তরে গালিটা আমার মা’বাবা আত্মীয় স্বজনদের উদ্দেশ্যে হয়ে যায় তা বোঝার বুদ্ধিটুকু আছে আমাদের অনেকেরই। এর মাঝেও কেউ কেউ থাকেন অবিবেচক – অপরিপক্ক। গুটিকয়েক ব্যক্তিবর্গের নাদানীর জন্য সমষ্টিগত ভাবে একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রতিপক্ষ করে তোলার কোন মানে খুঁজে পাই না আমি।
আবারও সাইফের লেখায় তাকাই-
১/১১ এর মত পরিস্থিতি কি শুধু আর্মির একক প্রচেষ্টায় হয়েছে? raw,CIA er টাকায় পালিত সাংবাদিক বুদ্ধিজীবি, পত্রিকার সম্পাদক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অর্থনিতিবিদ এদের কি ভুমিকা ছিলনা?
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শুরুটা ভালমত হলেও রাজ্য পরিচালনার নিঁখুত পরিকল্পনার অভাব এবং সর্বাত্মক অসহযোগিতায় শেষে এসে তাল রাখতে পারেনি ঐ প্রচেষ্ঠাটুকু। সেখানে একসময় সরিয়ে আনা হলো সেনাবাহিনীকে মাঠ পর্যায় থেকে। তারপর অগোচরেই যৌথবাহিনীর নামে চলেছে দেদারসে হঠকারীতা। এও সত্য এ সময় অনেকেই লাভবান হয়েছে- চরিতার্থ করেছে অনেক অন্যায় আবদার। সব অনুরোধ কিংবা আবদার গুলো পর্যালোচনা করলেই অনেক বিচক্ষণ সাধারন লোকও বাদ পড়বে না। কিন্তু তাই বলে তার সাথে জড়িতদের দিকে আঙ্গুল তুলতে যেয়ে গোটা প্রতিষ্ঠানটিকে ছোট করে দেখানোর অর্থ নিজের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলা। কেউ কেউ ভুল করেছে – অন্যায় করেছে – তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়। কিন্তু নিজের স্বার্থে সেনাবহিনীকে অস্বীকার করলে নিজের স্বাধীন সত্ত্বাটাকেই অবহেলা করা হয় – এ সত্যটুকু বুঝবার ক্ষমতা অধিকাংশ মানুষেরই নাই। যেদিন সময় হবে – ততদিনে দেরী হয়ে যাবে হয়তো। তাই খুব ভয় হয়। এভাবে চলতে থাকলে আগামীর পথ যে আঁধারে ছেয়ে যাবে তা থেকে পরিত্রাণের পথ হাতড়ে যেতে হবে এই হুজুগে জাতির অনেক অনেক দিন। আমরা সবাই শুধু নিজেরটাই বুঝি। অবাক লাগে সেই আবাহনী-মোহামেডান এর মত আজো প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশের বড় দুটি দলের অনুসারীদের পৃথক ইউনিয়ন আছে। যারা প্রতিটি পদক্ষেপেই একে অন্যের প্রতিযোগী। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর ইন্টারেস্টে এই ডিফল্ট মেকানিজমটিই এই দেশের উন্নতি – বা অগ্রগতির অন্তরায়ে যথেষ্ট। দিন বদলের হাওয়ায় মুখ বদল হয়। আমাদের ভাগ্য বদল হয় না। জীবনের দৌড়ে খেটে খাওয়া মানুষ ভুলে যায় বিগত দিনের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের জ্বালা। গুটি কয়েক অবিবেচকের দোষে এই হুজুগে জাতি ঝাপিয়ে পড়ে অদেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ইমেজের উপর। এতে করে যে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারা হচ্ছে তা অনেকেই অনুধাবন করেননা। দিনে দিনে পারস্পরিক সহমর্মিতা উবে যেয়ে কেবল প্রতিহিংসাই বেড়ে যায়। এই হয়তো আমাদের নিয়তি। আমরা যারা – কলুর বলদ আছি। আমরা এইসব লাথি – গুঁতা খেয়ে এইখানেই পড়ে থাকব। না হয় দেশচালকদের হাল্কা ইশারায় চ্যাপ্টার ক্লোজ করে পরদিন ইউনিফর্ম খুলে রাস্তায় নেমে যাব। পূর্ব পরিকল্পিত বিডিআর এর এই পাশবিকতাকে সাধারন ক্ষমাকে সানন্দে স্বাগতম জানিয়ে যারা এখন যারা বিগত দিনের দূর্নীতি নিয়ে আমাদের গালাগালি করে যাচ্ছেন। চালিয়ে যান। থামবেন না প্লীজ। আমাদের নিয়তি আমরাই বেছে নিয়েছি।
আমাদের কি বেচে থাকা উচিত?……কার জন্য কিসের জন্য?
সাইফের এই প্রশ্নের উওর খুঁজতে যেয়ে ভাবছিলাম এইসব কথা। আমার উত্তরটি হচ্ছে- এখনই নয়। আপাততঃ প্রহর গুনছি…
আমি প্রহর গুনছি- ফিনিক্স ভবনের মত কোন দালান ধ্বসে পড়ার জন্য
এন টিভি কিংবা কোন গার্মেন্টসে আগুন লাগার জন্য
দুর্বিষহ গরমে সুষ্ঠুভাবে পানি সরবরাহ করার জন্য
সিডর-বন্যা-ভূমিকম্পে মানুষের পাশে যাওয়ার জন্য
শান্তিরক্ষায় জীবন বাজি রেখে লালসবুজ পতাকাটা উঁচুতে তুলে ধরে রাখার জন্য
অথবা রাতের পর রাত জেগে ম্যাজিকাল ভোটার লিস্ট তৈরীর জন্য।
এসব করতে করতে তারপর কোন এক সময়;
অন্যের দোষে পরিকল্পিত ভাবে
কোন এক হুজুগে গোষ্ঠীর অতর্কিত পাশবিক হত্যাযজ্ঞের কবলে পড়ে সপরিবারে উচিৎ শিক্ষা পেয়ে
শেষমেশ গলে পঁচে গিয়ে সুয়্যেরেজের লাইনে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত
আমি প্রহর গুনছি…
সে অবধি আমি প্রহর গুনছি।
প্রিয় মাতৃভূমি- আমি প্রস্তুত আছি।
:salute:
:salute:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
প্রিয় জিহাদ ভাইয়া,
নেটয়ার্কের কারনে প্রব্লেম হইছিল। মুছে গেছিল।
তুমিও রিস্টোর করার চেষ্ঠা করছিলে।
এখন হলো মনে হয়।
ধন্যবাদ।
সৈয়দ সাফী
আমিও প্রহর গুনছি..............
Life is Mad.
প্রিয় মাতৃভূমি - আমিও প্রস্তুত আছি।
Life is Mad.
বলার মত কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।
শুধু :salute: জানিয়ে গেলাম
:salute: :salute:
সাইনের ব্লগাদের সামরিক জ্ঞান দেখলে আবাক হই। সাধারণ জনগনের ট্যাক্স এর টাকায় নাকি আমির্র জন্য মিগ-২৯ বিমান কেনা হয়? =)) এই বিষয়ে আপনারা আমাকে কি কিছু বলবেন?
প্রেতাত্মা ভাই, এইগুলো নিয়ে একটু পরে আলোচনা করি। আপনি বরং এক কাজ করতে পারেন, যারা বলছে তারা কত টাকা ট্যাক্স দিয়েছে আর কতখানি মেরে দিয়েছে এই হিসাবটা যদি দিত।
স্পেসিফিক টিন নাম্বার দিলেই হবে, বের করে নিতে পারব বাকি সব।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
তাদেরকে মনে করিয়ে দিয়েন যে, মিগ-২৯ কিনে আর্মি নিজের পেট ভরে না, এটা দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্যই করা হয়েছে/হয়/হবে। তারা এমনভাবে বলছেন যেন, আর্মি এই-দেশের ভিতরের কেউ না!! কী আজিব।
একটু শান্ত হবা প্লিজ।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ওবায়েদ ভাই, আমরা আছি এখানে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ধৈর্য্য দিন।
দুখঃজনক!
হৃদয়বিদারক!
ওবায়েদ ভাই আমরা আছি আপনাদের সাথে আমৃত্যু ।
সেনাবাহিনীকে :salute:
:salute:
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আজকে বহুদিন পর জুম্মার নামাজে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল, গেলাম না। কারণ মসজিদে যাওয়ার সময় বাসে থাকবে আরো কিছু গন্ডমূর্খ বাঙালি যারা দাঁত বের করে হাসবে। জানি না নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারব কিনা, তাই যাই নাই। কালকে দাঁত কেলানো একজনকে অপমান করেছিলাম। মুখ থেকে তার হাসি মুছে যাওয়াটা দেখার মত ছিল। আমি আমার শহীদ হয়ে যাওয়া ভাইদের নিয়ে কাউকে উপহাস করতে দেব না, যতদূর নিজ ক্ষমতায় কুলায়।
:salute: :salute:
:hatsoff: :hatsoff:
Life is Mad.
:salute:
:salute: :salute: :salute:
অবায়দুল্লাহ ভাই, আমরা আছি আপনাদের সাথে আমৃত্যু।
বাংলাদেশ আর্মিকে আমার :salute:
আমরা আমাদের 'আনসাং হিরো'দের কখনো ভুল বুঝবোনা...
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে :salute:
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
:salute: :salute:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ধৈর্য্য দিন।
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
:salute:
ধৈর্যধারন করতে হবে সকলকে, কিন্তু কিভাবে তা আমি জানি না।
বস,গত তিন দিনে আমি ৩ মিনিট ও ঘুমাইছি কিনা সন্দেহ আছে?তারপরও মনে হচ্ছে আমি ঘুমাচ্ছি আর একটা অমোঘ দু;স্বপ্ন এর মধ্যে আছি......
বাড়িতে পাহাড়া দেয়ার জন্য পয়সা দিয়ে স্বাস্থ্যবান কুকুর রাখতে চাই আমরা। বাড়িতে চোর আসেনা ভয়াল কুকুরের জন্য। কিন্তু চোর না আসায় কুকুরের প্রতি তাই অবজ্ঞা আসতেই পারে - কুকুরটা তো বসে বসেই খাচ্ছে।
স্যরি বস,উদ্ধৃতিটা ঠিক মত যায় নি.........।। :salute:
এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা কর। দেশের মানুষকে আর্মির 'প্রতিপক্ষ' বানানোর বুদ্ধিজীবীয় অপপ্রয়াসকে ধিক্কার জানাই।
সাফি আমি তোমার মতো এত সুন্দর করে গুছিয়ে মনের কথা লিখতে পারিনা। আমার মনের কথা লিখেছ। বেচে থাক অনেকদিন আর তোমাদের সুন্দর স্বপ্নগুলুকে সামনে নিয়ে যাবে তা যতদিনই লাগুক। আমরা তো বুড়ার খাতায় নাম লিখিয়েছি। তাও আছি তোমাদের সাথে।
স্যার :salute:
সৈয়দ সাফী