আত্মহননঃ আমার অভিমত – প্রেক্ষাপটঃ ক্যাডেট কলেজ কম্যুনিটি
[আমার এই লেখাটা কোন ভাবেই কোন সিস্টেম বা ব্যাক্তিকে দায়ী বা কটাক্ষ করে লেখা নয়। বরং গত কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু ঘটনার কারনে মনের মাঝে জমে থাকা অনেকগুলো বিষয়কে রিলেট করে একটা সমাধানের আশায় লেখার একটা প্রয়াস মাত্র। আমি নিজে একজন ক্যাডেট বলেই হয়তো বিষয়টা নিয়ে আমি ক্যাডেট কলেজ কম্যুনিটির প্রেক্ষাপটে লিখছি। কিন্তু আসলে এটা সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমি ক্যাডেট কলেজের পুরো সিস্টেম, প্রতিটি ব্যাক্তি, প্রতি ইঞ্চি জায়গা এবং প্রতিটি ধুলিকণার প্রতি সারাজীবন কৃতজ্ঞ ছিলাম, থেকেছি, আজীবন থেকেই যাব। আমার অস্তিত্বের মাঝে, আমার স্বত্তায় এই ‘ক্যাডেট’ বা ‘ক্যাডেট কলেজ’ শব্দটা মিশে আছে। আর সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আমার এই লেখা। আমার সকল কথাই যে সঠিক হবে, তা আমি দাবী করি না; আমার মতের সাথে অনেকেরই দ্বিমত পোষণ করার সুযোগ, যোগ্যতা এবং অধিকার রয়েছে। কেউ আহত হলে নিজ গুনে ক্ষমা করবেন।]
রবিন উইলিয়ামস, নামটা এখনো আমরা কেউই ভুলিনি। অসাধারণ প্রতিভা। সাবলীল অভিনয়। সুক্ষ্ম কমেডী। জনপ্রিয়তার কথা বাদই দিলাম। অর্জন নেহায়েতই কম নয়। বলা চলে ঈর্ষণীয়। কিন্তু তারপরেও তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন। স্বাভাবিক ও সুস্থ মস্তিস্কের একজন মানুষের পক্ষে যা অসম্ভব। তার মানে তিনি সেই মুহূর্তে স্বভাবিক ছিলেন না। মানষিক চাপ তাকে অস্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিল। এতটাই অস্বাভাবিক যে আত্মহনন সম্ভব হয়ে যায়। কিংবা নিজেকে মেরে ফেলার ব্যাপারটা মনের চাপের চেয়ে হালকা পর্যায়ে চলে আসে। অথবা বিষয়টা হয়তো এমন যে চিরবিদায় নেয়াটাই সেই মুহূর্তের সবচেয়ে সহজ সমাধান। তাহলে ভেবে দেখার বিষয় তো বটেই যে মানষিক চাপটা কোন পর্যায়ের ছিল। তা কি শুধুমাত্র একটা তাৎক্ষনিক চাপ, নাকি দীর্ঘদিনের জমে ওঠা অপ্রাপ্তির হিসেব মেলানোর পালাক্রমিক ফলাফল – হিসেবে বড় রকমের গরমিল – সহজ সমাধানঃ আত্মহনন। এই মুহূর্তে আমি স্বাভাবিক আছি বলেই হয়তো এত সাবলীল ভাবে এই কথাগুলো লিখে গেলাম। কিন্তু, আমিও যদি এই মুহূর্তে এমন কোন মানষিক চাপের মধ্যে থাকি, এবং ভেন্টিলেট করার কোন জায়গা বা কোন নির্ভরতা না থাকে, আমিই বা কোন পথে হাটব! সমাধান কি তাহলে ওই একটাই?
কিছুদিন আগে মাস্টার্সের একটা থিসিস সুপারভিশন শেষ করেছি, “এ সাইকো-কম্পারেটিভ স্টাডি বিটউইন ভার্জিনিয়া উলফ এন্ড হুমায়ুন আহমেদ ইন দ্যা আর্ট অফ ক্যারেক্টারাইজেশন এন্ড অটোবায়োগ্রাফিকাল এলিমেন্টস”। কাজটা অনেক আনন্দের সাথে (মনপ্রান দিয়ে) সুপারভাইজ করেছি, যদিও এখানে অনেক প্রতিকুলতা ছিল। আসলে এইরকমের বেশ কিছু আলোচনা বিভিন্ন কোর্সে ‘সাইকো-এনেলাইসিস’ এবং ‘ভার্জিনিয়া উলফ’ পড়ানোর সময়ে আমিই ক্লাসের ছাত্রদের ধারনা দিয়েছিলাম। কেউ একজন এই কথাগুলো মনে রেখেছিল। পরবর্তীতে মাস্টার্স শেষ করার মুহূর্তে আমার কাছে এই টপিকে থিসিস করার প্রস্তাব নিয়ে আসে, আমিও সানন্দে সম্মতি জানাই, এবং পুরো থিসিস পেপারটা আমার সুপারভিশনে সম্পন্ন হয়। এখানে, ভার্জিনিয়া উলফের লেখাগুলোর সাইকোএনালেটিক বিশ্লেষনে দেখা গেছে যে তার বিভিন্ন উপন্যাসের চরিত্রগুলোর কোন না কোন একটার আত্মহত্যার প্রবনতা আছে, কিংবা গল্পের কোথাও গিয়ে একটা মৃত্যু ঘটছে; অর্থাৎ একটা ‘ডেথ ইন্সটিক্ট’ থেকে গেছে লেখার চরিত্রায়নে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে ভার্জিনিয়া উলফ নিজেও আত্মহত্যা করেছেন।
আজ সকাল থেকে মনটা বিক্ষিপ্ত। একজন সম্ভাবনাময় এবং একেবারে ইয়াং এনার্জেটিক হাসিখুশি এক প্রানের বিদায় মনকে অশান্ত করেছে। খবরটা অনেকের মত আমিও প্রথম জেনেছি এক্স ক্যাডেটস ফোরামের ফেসবুক পেইজ থেকে। সেইসাথে তার পরিচিত অনেক গুনগ্রাহী এক্স-ক্যাডেটের ভাষায় তার এচিভমেন্টগুলোর ধারাবাহিক বিবরণ, এবং তার তাজা প্রানের ছবি, যেন এখনো জীবন্ত। চোখে পানি আসেনি সত্যি, কিন্তু মন বড় অস্থির হয়েছে। এই অস্থিরতার প্রথম এবং প্রধান কারন হয়তো এটাই যে আমিও তো একজন ক্যাডেট। আমি শুধু বারবার এটুকু বোঝার চেষ্টা করছি যে ছেলেটা কি পরিমান মানষিক চাপের মধ্য দিয়ে গেছে যা হয়তো তার ভেন্টিলেট করা হয়ে ওঠেনি, কিংবা কেউ হয়তো তাকে বোঝেইনি যে তার ‘সাবকনশাস’ মনের মাঝে একটা ‘ডেথ ইনস্টিংক্ট’ কাজ করে গেছে যা এক সময়ে ‘কনশাস’ লেভেলে চলে এসেছে। ছেলেটা সম্পর্কে যা জানলাম, ফুটবলের হীরো, স্টেজের স্টার। মাঠে তার অসাধারণ কিক, স্টেজে তার হাতে গীটার আর ড্রামের জাদু। এই ছেলে কিভাবে সুইসাইড নোটে লেখে যে তার জীবনটা নাকি মিনিংলেস। ছেলেটার আত্মার শান্তি কামনা করছি।
মনটা বেশ খারাপ হয়ে আছে, অনেক চাপ পড়ছে মনের উপরে। আমরও ভেন্টিলেশন দরকার। গত কয়েক বছরের বিচ্ছিন্ন অনেক ঘটনা ছিন্নভিন্নভাবে নতুন করে মনের কোণাগুলো থেকে বের হয়ে আসা শুরু করেছে। সঙ্গত কারনেই এই লেখায় আমি আর কারো নাম উল্লেখ করছি না। আমি আবারো বলছি লেখাটা সম্পূর্ণভাবে আমার একান্ত, নিজস্ব, ব্যাক্তি-মত-প্রসূত। আলোচনা, সমালোচনা, দ্বিমত – যাই থাকুক না কেন, এই কথাগুলো কাউকে আহত করার উদ্দেশ্যে মোটেও নয়। আমি আজ এক্স ক্যাডেটস ফোরামের ফেসবুক পেইজে কথাগুলো লিখেছিলাম। এখানে বাংলায় অনুবাদের মতন করে আরেকবার লিখছি। যেহেতু এই প্লাটফর্মের অন্যদের মত আমিও একজন ক্যাডেট, আমার এই লেখায় আমি কিছু পয়েন্ট তুলে আনছি। আমাদের সবার শৈশবকে এখানে টেনে আনছি না, কারন তা হয়তো একেকজনের একেকরকমের। কিন্তু ক্যাডেট কলেজে পদার্পন এবং তার পরবর্তীকালীণ জীবনের প্রবাহ আমাদের সকলেরই প্রায় একই রকমের। আর যাই হোক আমাদের সাইকোলজিকাল টিউনিংটা প্রায় একই ধাঁচে চলতে থাকে। তাই ক্যাডেটদের টিন-এইজ এবং তার পরবর্তী ডেভলাপমেন্ট প্রসেস নিয়ে এখানে আমার কিছু পয়েন্ট তুলে ধরছিঃ
১। দয়া করে এই পয়েন্টটাতে কেউ বিরাগভাজন হবেন নাঃ আমার মতে ক্যাডেট কলেজের এ্যাডজুট্যান্টদের সিনিয়র লেভেলের মেজরদের মধ্য থেকে হওয়া উচিত; সেইসাথে তারা বিবাহিত এবং বাবা হলে ভাল হয়। বলা বাহুল্য যে, তাদের অবশ্যই এক্স-ক্যাডেট হওয়া উচিত। এখানে আমার পয়েন্টটা হলো ‘ম্যাচ্যুরিটি’। ম্যাচ্যুরড না হলে টিন-এজার ক্যাডেটদের বুঝতে পারা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে। কারন, এই টিন-এজাররা নিয়ম এবং নির্দেশ অমান্য করবেই, এটাতেই তাদের মজা, আর বয়সটাও তো আসলে সেরকম। আর তারা তো যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সৈনিক নয় যে সবকিছু একবাক্যে মেনে নেবে। কাজেই শুধুমাত্র কমান্ডিং এটিচ্যুড নয় বরং ম্যাচ্যুরড এডমিনিস্ট্রেশন দিয়ে ক্যাডেটদের হ্যান্ডেল করার বিষয়টিতে আমি আলোকপাত করছি।
২। সামরিক বাহিনীতে যোগদান করা ছাড়াও অন্যান্য প্রফেশনাল ডিসিপ্লিনগুলোর ব্যাপারেও ক্যাডেটদের ওরিয়েন্টেশন দেয়া দরকার। কারন, নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্যাডেট সামরিক সুশৃংখল জীবনে থেকে যাবার সুযোগ পেলেও বাকিদের সবাইকে সিভিল প্রফেশনাল জগতে প্রবেশ করতে হয়। কাজেই, মানষিকভাবে তাদের কিছুটা হলেও পূর্বপ্রস্তুতিমূলক কাউন্সেলিং দেয়া যেতে পারে।
৩। ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ, এ্যাডজুট্যান্ট এবং ফ্যাকাল্টিদের ‘টিন-এইজ সাইকোলজি’-র উপরে বিশেষ বা কাস্টমাইজড প্রশিক্ষণ হতে পারে, যাতে করে রেজিমেন্টেড পরিবেশেও এই টিন-এজার ক্যাডেটদের সাইকলোজিকাল ইস্যুগুলো (needs, demands, care & management) আরও যথাযথভাবে বিবেচিত হয়। তার মানে কিন্তু এটা নয় যে, বিবেচিত হচ্ছে না; আমি শুধুমাত্র আমার অভিমত ব্যক্ত করছি।
৪। ক্যাডেট কলেজ পরিবারের ক্যাডেট-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের জন্য একজন সাকলোজিস্ট বা সাইকিয়েট্রিস্ট (যেমন একজন মেডিক্যাল অফিসার থাকেন, ঠিক তেমনি) থাকতে পারে, যাতে করে রেজিমেন্টেড লাইফের যেকোন ক্রিটিক্যাল সাইকলোজিক্যাল ইস্যুতে সহজে সঠিক কাউন্সেলিং বা মোটিভেশন দেয়া সম্ভব হয়।
৫। এই পয়েন্টটাতেও দয়া করে কেউ অফেন্ডেড হবেন নাঃ আমার ১ম পয়েন্টের রেশ ধরেই লিখছি যে, মেডিক্যাল অফিসারকেও এ্যাডজুট্যান্টের মত ম্যাচ্যুরড এবং ধৈর্য্যশীল হওয়া প্রয়োজন। ক্যাডেট দুষ্টামী করবে, ফাঁকি দেবার চেষ্টা করবে, পারলে আসুস্থতার ভান করে মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে সুযোগ নেবার চেষ্টা করবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা কম বেশি অনেকেই এটা করেছি আমাদের সেই টিন-এইজে। কিন্তু মেডিক্যাল অফিসারকে যথেষ্ট ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হবে। কোনটা ক্যাডেটের লেইম এক্সকিউজ আর কোনটা সত্যিকারের সমস্যা সেটা বিবেচনা করার ধৈর্য্য মেডিক্যাল অফিসারের থাকতে হবে। মেডিক্যাল অফিসারের ভুল জাজমেন্টের কারনে বড় সমস্যার যেন আবির্ভাব না ঘটে সেটাতে গুরুত্ব দিতে হবে। এই ভুল যে হয়েই চলেছে, তা আমি বলছি না; কিন্তু কখনোই হয়নি বা হবার সম্ভাবনা একেবারেই নেই, এমনটা কিন্তু বলা যাচ্ছে না।
৬। ক্যাডেট কলেজ ব্লগ, এক্স ক্যাডেটস ফোরাম, ক্যাডেট কলেজ ক্লাব এবং স্ব-স্ব ক্যাডেট কলেজের এক্স ক্যাডেটস আসোসিয়েশনের মত এক্স ক্যাডেটস প্লাটফর্মগুলোর পক্ষে সময়ে-সময়ে এক্স ক্যাডেটদের জন্য মোটিভেশনাল বা কাউন্সেলিং প্রোগ্রাম অর্গানাইজ করা যেতে পারে যাতে করে মেন্টাল স্ট্রেস রিলিজ করার মাধ্যমে সঠিক সময়ে সঠিক গাইডেন্স নিশ্চিত করা যায়; তা সে ব্যাক্তিগতই হোক, আর প্রফেশনালই হোক।
৭। এই পয়েন্টটা কিছুটা হাস্যকর মনে হতে পারে, কিন্তু এখানে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া উচিত বলেই আমি মনে করি। বাবা-মায়েদের উচিত ছুটির সময়গুলোতে ক্যাডেটদের সাথে সচেতনভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা। বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষার পরের লম্বা ছুটিটাকে আমার কাছে সবচেয়ে ক্রিটিক্যাল মনে হয়। কারন এই সময়টাতেই একজন টিন-এজার ক্যাডেট রেজিমেন্টেড লাইফের বাইরে বেশ কিছুদিন স্বাধীনভাবে চলার সুযোগ পায়, যখন অনেক ক্ষেত্রেই বাইরের এই জগতটা তার কাছে যথেষ্ট রোমানাটিক ভাবে ধরা দেয়, এবং অনেক ক্ষেত্রে এটাই স্বাভাবিক যে একজন ক্যাডেট এসময়ে একটা আনরিয়্যালিস্টিক ড্রীম বা হুইমের মধ্যে প্রবেশ করে ফেলে, যার কিছুদিনের মধ্যেই তাকে আবার রেজিমেন্টেড জীবনে ‘ইলেভেন-টুয়েলভ’ পার করার জন্য ফিরে যেতে হয়। এখানে সমূহ সম্ভাবনা থাকে পা পিছলানোর এবং সাইকলোজিক্যাল কনফ্লিক্টস তৈরি হবার। আমাদের মাঝে অনেকেই এখন ক্যাডেটের প্যারেন্টস, অনেকে তো আবার এক্স-ক্যাডেটেরও প্যারেন্টস। দয়া করে তারা আমার এই পয়েন্টটাতে মনোক্ষুন্ন হবেন না।
এই পয়েন্টগুলোর কোন একটা যদি/যখন যেকোন জায়গা (পরিবার কিংবা ক্যাডেট কলেজ) থেকে ইনিশিয়েট বা এক্সিকিউট করা হয়, তা যেন শুধুমাত্র থিয়োরিটিক্যালি বা সুপারফিশিয়ালি না হয়, বরং এটা একটা উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই হওয়া উচিৎ। যদিও বিরল ঘটনা বিরলই এবং দূর্ঘটনা কেবলমাত্র দূর্ঘটনাই, কিন্তু কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিরল দূর্ঘটনাগুলোকে এড়ানোই কি মংগলজনক নয়? আমি আবারও বলছি আমার এই কথাগুলো কোন সিস্টেম বা ব্যাক্তিকে সমালোচনা করে নয়। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে ক্যাডেট কলেজ কম্যুনিটিতে যেভাবে আত্মহননের পথ বেছে নেবার প্রবনতা দেখা গেছে, তা আমাকে চিন্তায় ফেলেছে। হয়তো ক্যাডেট কলেজ কম্যুনিটির বাইরে এই সমস্যা আরো বেশি, কমও হতে পারে, আমার জানা নেই। কিন্তু আমি তো একজন ক্যাডেট; আমাদের এই পরিবারের কেউ জীবনের ছোট-ছোট অপ্রাপ্তিগুলোকে হিসেব কষে একদিন ‘সাবকনশাস’ থেকে ‘কনশাস’ লেভেলে নিয়ে এসে এমন হৃদয় বিদারক সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের কাঁদিয়ে যাবে, এ তো মেনে নেয়া কঠিন, মেনে নেয়া যায় না, মেনে নিতে পারছি না।
:boss: :boss:
ধন্যবাদ আপু!
মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে।
তাই এই লেখা।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন ভাই। সবগুলো পয়েন্টের সাথে একমত।
বাবা-মা, ভাইবোন আর বন্ধুদের ভূমিকা এখানে সবচেয়ে বেশি। তাদের উচিত সবরকম পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে যাওয়া ছেলে/মেয়েটিকে খুব ভাল করে সান্ত্বনা দেয়া। পাশে বসিয়ে ভাল দুটো কথা বলা।
অকালে আর কেউ ঝরে যাক, তা চাইনা। আল্লাহ্ সাবিতকে ক্ষমা করে বেহেশত দান করুন।
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
ঠিকই বলেছো।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
দারুণ লিখেছেন ভাইয়া......... 🙂
ধন্যবাদ সাদাত!
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
"আমি শুধু বারবার এটুকু বোঝার চেষ্টা করছি যে ছেলেটা কি পরিমান মানিষিক চাপের মধ্য দিয়ে গেছে যা হয়তো তার ভেন্টিলেট করা হয়ে ওঠেনি"
এইখানে একটা ডিম-মুরগি সিচুয়েশন আছে।
চাপের কারনে সুইসাইডাল টেন্ডেন্সি নাকি সুইসাইডাল টেন্ডেন্সির কারনে চাপ নিতে অস্বীকৃতি জানানো?
আমরা সচরাচর প্রথমটিকেই ইকুয়েট করে ফেলি।
কিন্তু আমি যতগুলি চাপ জনিত কারনে ঘটা সুইসাইডের ঘটনা জানি, তা থেকে হাজার গুন বেশী চাপে থাকা মানুষকেও সুইসাইডে বিন্দুমাত্র উৎসাহিত হতে দেখি নাই। তাই আমার ধারনা, পড়েরটিই ঠিক।
কোন একটি কারনে (সেটা মানসিক বা শারীরিক অসুস্থ্যতা হতে পারে, হতে পারে জিনেটিক বা অন্যকোন কিছুও) যখন কেউ সুইসাইডাল টেন্ডেন্সিতে ভোগে, আর দশজনের জন্য স্বাভাবিক এইরকম একটা মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উপায় হিসাবে তাঁরা আত্মহননকে বেছে নেয়।
সেই ক্ষেত্রে চাপ কে আত্মহত্যার কারন হিসাবে দোষী সাব্যস্ত না করে বরং স্বাভাবিক অবস্থায়ও সুইসাইডাল টেন্ডেন্সিতে আক্রান্ত হতে পারে এরকম মানুষদের ব্যাপারে সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিৎ। এখানে সুইসাইডাল টেন্ডেন্সিতে আক্রান্তদের কিছু সিম্পটম দিচ্ছি। আপনার আশেপাশের কারো মধ্যে এইরকম কিছু দেখলে সত্বর তাঁকে মানিসিক স্বাস্থ্য সহায়তা নিতে উৎসাহিত করুন:
- Talking about suicide — for example, making statements such as "I'm going to kill myself," "I wish I was dead" or "I wish I hadn't been born"
- Getting the means to commit suicide, such as buying a gun or stockpiling pills
- Withdrawing from social contact and wanting to be left alone
- Having mood swings, such as being emotionally high one day and deeply discouraged the next
- Being preoccupied with death, dying or violence
- Feeling trapped or hopeless about a situation
- Increasing use of alcohol or drugs
- Changing normal routine, including eating or sleeping patterns
- Doing risky or self-destructive things, such as using drugs or driving recklessly
- Giving away belongings or getting affairs in order when there is no other logical explanation for why this is being done
- Saying goodbye to people as if they won't be seen again
- Developing personality changes or being severely anxious or agitated, particularly when experiencing some of the warning signs listed above
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ধন্যবাদ ভাইয়া!
আপনার এই মন্তব্যটা যারা পড়েছে, আশাকরি সবাই বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে মনে রাখবে।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
ভাইয়া, আরেকটা কথা জানতে এলাম।
আপনার পয়েন্টগুলো (সিম্পটমগুলো) বেশ ভাবালো।
কিন্তু কারো এই সিম্পটমগুলোর কোন একটাও যদি দেখা যায়, তাহলে তাতক্ষনিকভাবে এবং লং টার্ম করণীয় কি? এটা জানার জন্য মনের মধ্যে খচখচ করছে।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
এক্সপার্টরা ভাল বলতে পারবেন।
আমি যতটুকু বুঝেছি, তা এইঃ
১) Talking about suicide — for example, making statements such as "I'm going to kill myself," "I wish I was dead" or "I wish I hadn't been born"
২) Getting the means to commit suicide, such as buying a gun or stockpiling pills
৩) Withdrawing from social contact and wanting to be left alone
৪) Having mood swings, such as being emotionally high one day and deeply discouraged the next
৫) Being preoccupied with death, dying or violence
৬) Feeling trapped or hopeless about a situation
৭) Doing risky or self-destructive things, such as using drugs or driving recklessly
৮) Saying goodbye to people as if they won't be seen again
এই আটটার যেকোন একটাও যদি দেখা যায়, ধরে নিতে হবে ব্যক্তির মধ্যে আত্মহত্যা প্রবনতার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
নীচের তিনটি আত্মহত্যা প্রবনতা ছাড়া অন্য কারনেও ঘটতে পারে।
ক) Changing normal routine, including eating or sleeping patterns
খ) Giving away belongings or getting affairs in order when there is no other logical explanation for why this is being done
গ) Increasing use of alcohol or drugs
তবে উপরের আটটির কোন একটির সাথে যদি ক, খ, গ সহ নীচেরটির (ঘ) কোন একটি যোগহয়, তাহলে প্রক্রিয়াটি আরও জোরদার হওয়ার কথা।
ঘ) Developing personality changes or being severely anxious or agitated, particularly when experiencing some of the warning signs listed above
সোজা কথায়, এই সব সিম্পটমের কোন একটি দেখলেই কেইসটিকে ইগনর না করে প্রোফেশনাল হেলপের আওতায় আনাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তা না করা হলে দেখা যাবে দিনে দিনে সিম্পটমের পরিমান বেড়ে যাচ্ছে। (সম্পাদিত)
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ভাইয়া কি ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষক?
আমার শিক্ষকতার বিষয়ে তোমার ধারণা সঠিক, যদিও রিসার্চের ক্ষেত্রে আমার আগ্রহের বিষয় হলো "এপ্লাইড লিংগুইস্টিক্স" এবং "কম্পারেটিভ লিটারেচার"। কিন্তু হঠাত এই প্রশ্ন কেন ভাই; ভুল কিছু লিখে ফেলেছি নাকি?
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
প্রাচীন ভারতের সাধু দের ইচ্ছামৃত্যুর কথা শোনা যায়।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
জানা ছিল না।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
ব্যক্তি ক্যানো স্বাধীন হবে না!
না, আমি আত্মহত্যার পক্ষে বলছি না। কিন্তু একজন মানুষ যদি স্বেচ্ছায়, সুস্থ মস্তিষ্কে সিদ্ধান্ত নেয় আত্মহত্যার তবে সেটাকে কিভাবে দেখা যেতে পারে? কেউ যদি মনে করে এই জীবন সে ব্যবহার করে ফেলেছে, তার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই, তবে?
যখন আমরা শুনি কারো স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে সেটা শুনেই কষ্ট পাই, উহ, আহ করি। সেখানে কেউ আত্মহত্যা করলে তাতে আরো বেশি কষ্ট পাওয়া স্বাভাবিক। আর তাই আমরা রিয়েক্ট করি।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
মন্তব্য করতে পারছি না।
বিষয়টা নতুন ভাবে সামনে এলো।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
রাজীব,
ঠিক কি ভাবে বলবো ভাবছিলাম। ব্যক্তি স্বাধীনতার একটা এক্সপ্রেশন সেটা ( আত্মহত্যার সিদ্ধান্তটা) আমরা ভাবতে পারি। একজন মানুষ, আজকের একজন আধুনিক সামাজিক মানুষ যতটা সে একজন ব্যক্তি, ততটাই সে তার পূর্ববর্তী বা সমসাময়িক মানুষদের সম্মিলিতজ্ঞানেরও একটা এক্সপ্রেশনও। তার একার সাময়িক বিবেচনা হতেই পারে জীবনের লেনদেন শেষ, ঐ বিশেষ মুহূর্তটা পার হয়ে যাবার পর, তার সিদ্ধান্ত ভিন্নও হতে পারে। তার ঐ সাময়িক ইচ্ছাকে প্রাধান্য না দেয়াটা একটা প্র্যাকটিস, সামাজিক প্র্যাকটিস। কালেক্টিভ বেটারমেন্ট এর জন্য মে বি। ভাবো আগামীকাল ঠিক কি সম্ভাবনা নিয়ে আসবে, তা কেউ জানি না।
হুট করে একটা চেতনা যার অপার সম্ভাবনা আছে, স্বেচ্ছায় তা শেষ করে দেয়াটা কেমন বল?? আরতো কখনো ফিরে পাওয়া যাবে না...
" আমি জানি আগামী আসবে শুধু আজকের বেচে থাকায় "
নিজে কানা পথ চেনে না
পরকে ডাকে বার বার
ভাইয়া, সুন্দরভাবে লিখেছেন। বেশ ব্যালান্সড কমেন্ট। সহমত জানালাম।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
আহমেদ ভাই, আমি ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিলাম এক কালে! যদিও বাংলা পত্রিকায় কাজ করার জন্য ও তল্লাটে সম্পর্ক নেই ম্যালা দিন। কিছু কিছু লেখকের নাম "কমন" পড়ে গেল আর কি!
জেনে ভাল লাগল।
ভাল থেকো।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
১০০% একমত ভাই। প্রত্যেকটা পয়েন্টের সাথে।
ধন্যবাদ!
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
আরও অর্গানাইজড সাইন ও সিম্পটম পেলাম এখানে
লিখেছে:
Symptoms and Danger Signs
Warning Signs of Suicide
These signs may mean someone is at risk for suicide. Risk is greater if a behavior is new or has increased and if it seems related to a painful event, loss or change.
- Talking about wanting to die or to kill oneself.
- Looking for a way to kill oneself, such as searching online or buying a gun.
- Talking about feeling hopeless or having no reason to live.
- Talking about feeling trapped or in unbearable pain.
- Talking about being a burden to others.
- Increasing the use of alcohol or drugs.
- Acting anxious or agitated; behaving recklessly.
- Sleeping too little or too much.
- Withdrawn or feeling isolated.
- Showing rage or talking about seeking revenge.
- Displaying extreme mood swings.
Additional Warning Signs of Suicide
- Preoccupation with death.
- Suddenly happier, calmer.
- Loss of interest in things one cares about.
- Visiting or calling people to say goodbye.
- Making arrangements; setting one's affairs in order.
- Giving things away, such as prized possessions.
A suicidal person urgently needs to see a doctor or mental health professional.
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ধন্যবাদ ভাইয়া
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম