সিসিবি আড্ডা (বিজনেস টক) এবং চা-চক্র – আপডেট ফেব্রয়ারী ২৩ (সাময়িক পোস্ট)

আপডেটঃ প্রথমেই দুঃখিত বই উন্মোচন পর্ব অনুষ্ঠিত না হওয়ায়। বিষয়টি আসলেই বেশ হট্টগোল এবং জটঘট প্যাকানো বিষয়। বইমেলার আসলে চারটার পর না যাওয়াই ভালো। অস্বাভাবিক ভীড় হয়ে যায়।
জেট ল্যাগের প্যাঁচে যাতে না পরতে হয় এজন্য আমি যেদিন আসি সেদিনই বের হয়ে যাই। এবারও সাতটায় পৌঁছে বারটায় ঘর থেকে বের হলাম। তারপর বই মেলায় গেলাম। আমার সাথে আরও তিনজন ভার্সিটিতে পড়া মেয়ে ছিল যাদের মধ্যে দুজন এই প্রথম বই মেলায় গেল। অথচ তারা ঢাকার বাসিন্দা। কারণটা বলল যে তারা শুধু হুমায়ূন আহমেদ এবং জাফর ইকবালের বই পড়ে। সেসব বই তো চাইলেই সারা বছর কিনতে পাওয়া যায়।
মেলায় ঘুরে অনেক বই দেখলাম। নিজের জন্য অনেক বই কিনলাম। অধিকাংশই বাংলাভাষার লেখকদের। সমগ্র বা আত্মকথন ধরণের। পূর্ববাংলার সামাজিক এবং অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের উপর কতগুলো বই কিনলাম। আর ঘুরে ঘুরে দেখলাম বাংলাভাষায় কী কী বই লেখা হচ্ছে। বিশেষ করে বিজ্ঞানের উপর। দর্শনের উপর অনেক বই আছে। তুলনামূলকভাবে বিজ্ঞানের উপর বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক বই তেমন চোখে পড়লো না। এখন সারা পৃথিবীতে ওয়েব টেকনোলজীর ওপর বিপ্লব বয়ে যাচ্ছে – এ বিষয়ের উপর বই গুলো কোথায়?

উপরের শিরোনামে আমি বিজনেস টক কথাটি লিখেছি। কারণ আসলে আমি নিজে খুব উৎসাহী এই বিষয়টিতে সিসিবিয়ানদের মত জানতে। প্রথমেই কতগুলো প্রশ্ন করিঃ

১। মালটিমিডিয়া/গ্রাফিক ডিজাইন/ওয়েব টেকনোলজি খুব একটা রকেট সায়েন্স নয়। উৎসাহ থাকলে সায়েন্স বা আর্টস যে কোন বিভাগের ছেলে-মেয়েরা তা শিখতে পারবে। বাংলাদেশে এসব বিষয় শেখার উপায় কী?

২। বাংলাভাষায় কয়টি অনলাইন কোর্স আছে? দেশে ইন্টারনেটের স্পীড কেমন?

৩। বেসরকারী উদ্যোগে মালটিমিডিয়া সেন্টার গড়ে উঠতে কেমন? সেগুলোর কোয়ালিটি কেমন?

৪। সিসিবিয়ানদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোন বিজনেস পরিকল্পনা আছে কী?

আমরা কি কোন বিজনেস পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে পারি?
যারা নিজ উদ্যোগে কিছু না কিছু হলেও একদম শূণ্য থেকে শুরু করছে (আমি জানি এর মধ্যে ফয়েজ আছে, জুনায়েদ আছে) তাদের অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করবে কি?

আর বাদবাকী কথা পরবর্তীতে আসছে।

যদিও লেখাটি লিখছি আমেরিকাতে বসে, আর কিছুক্ষণ পরই উড়াল দিতে হবে এবং আশা করছি ঠিকঠাক মতো পৌঁছাতে পারব – তারপরও আশংকাগুলোকে পাশ কাটিয়ে একটি আগাম পরিকল্পনা করছি। এই ফেব্রয়ারী মাসে আমাদের অনেক শোক আছে, দুঃখ আছে, তারপরও আমরা উৎসবে মেতে থাকি। এই উপলক্ষ্যে একট গেট-টুগেদার করলে কেমন হয়?
আগামী সাতাশে ফেব্রয়ারী সন্ধ্যার সময় গুলশানের ক্যাডেট কলেজ ক্লাবে সবাইকে চায়ের নিমন্ত্রণ রইলো। সমস্যা হলো এই নিমন্ত্রণ পূর্ণতা পাবে সিসিবির সদস্যদের অংশগ্রহণে। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে অনেক ব্যস্ততা আছে, আগাম পরিকল্পনা আছে তার উপর আছে রাজধানীর যানজটের সমস্যা। তারপরও যদি কেউ সময় বের করে আসতে পারে তাহলে খুব ভালো লাগবে। শর্তহীন নিমন্ত্রণ – বই কিনতে হবে না।

আর ফেব্রয়ারীর বাইশ তারিখে বেলা চারটায় নজরুল মঞ্চে আমার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হবে। লাভলু ভাই আসতে পারবেন বলে বলেছেন। তবে এই মোড়ক উন্মোচন বিষয়টি কী সে নিয়ে আমার কোন ধারণা নেই। আমি সারাজীবনে চার কী পাঁচবারের বেশি বই মেলায় যাইনি। ক্যাডেট কলেজে ছিলাম এটা একটি কারণ। এর আগে আমার বোন আমার জন্য নিজের উৎসাহেই মোড়ক উন্মোচনের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। তখন আমি বিদেশে ছিলাম। এইবার তাকে বলেছি কিছু করতে না। বলতে গেলে সিসিবির জন্যই আমার লিখতে পারা, বই বের করা। তাই সিসিবির সাথে কিছু আনন্দ ভাগ করে নিতে চাইছি। কিন্তু ওখানে গিয়ে জটঘট কিছু দেখলে তার জন্য আগাম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি ঔদিন সকালবেলাতেই পৌঁছাব।
আসল কথা হলো আমাদের ব্যস্ততাকে পেছনে ফেলে কিছুক্ষণের জন্য একসাথে হওয়া। বিশেষ করে ২৭ তারিখে সন্ধ্যায় আসতে পারলে মন্তব্যের ঘরে জানালে হেডকাউন্ট করতে সুবিধা হবে।
ধন্যবাদ। সবার জন্য শুভকামনা আর আমার জন্য শুভযাত্রা – আপাতত।

২,৬০৮ বার দেখা হয়েছে

২৩ টি মন্তব্য : “সিসিবি আড্ডা (বিজনেস টক) এবং চা-চক্র – আপডেট ফেব্রয়ারী ২৩ (সাময়িক পোস্ট)”

    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      আস আস - আড্ডার ধারা বদলে আমরা বিজনেস টক করে দিলাম। তোমার অভিজ্ঞতার কথা শুনতে চাচ্ছি। বিশেষ করে যে তোমাকে একটা অ্যাপস বানিয়ে দিয়েছে তাকে পারলে নিয়ে আস।
      আর হ্যাঁ তোমার জন্য ডিএমপী লাইব্রেরির জন্য আওয়াল ভাইয়ের দেওয়া তিনটা বই নিয়ে আসছি। আওয়াল ভাই আমেরিকার একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় অনেক বছর শিক্ষকতা করেছেন। উনার কাছেই প্রথম জানলাম যে শিক্ষকরা প্রচুর ফ্রী বই পান এবং আমেরিকাতে বাংলাদেশী শিক্ষকরা তাদের চ্যানেলের সব ফ্রী বই বাংলাদেশে পাঠাতে চান। আমরা এই ব্যাপারে একটা চ্যানেল তৈরির কাজ করছি।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  1. শাওন (৯৫-০১)

    আপু,
    অফিসের একটা প্রোগ্রাম আছে। মোটামুটি বাধ্যতামূলক। বুঝতেই পারছেন। পরে একদিন খাওয়া আদায় করে নিবো... 😀


    ধন্যবাদান্তে,
    মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শাওন
    প্রাক্তন ক্যাডেট , সিলেট ক্যাডেট কলেজ, ১৯৯৫-২০০১

    ["যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি"]

    জবাব দিন
  2. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    আড্ডা খুব খারাপ কাজ, এর মধ্যে নানাবিধ অপকার ছাড়া কোন উপকার নাই। এজন্য বাংলাদেশে যাবতীয় আড্ডাবাজির উপর সরকারী নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানায়ে গেলাম :grr:


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  3. বন্য (৯৯-০৫)

    দেশে চলে আসলেন তাহলে , স্বাগতম।

    আপনার পোস্টটি ফলো করবো আগ্রহের সাথে, দেখি কে কি মতামত দেয়। বিজনেস নিয়ে আমার খুব বেশি জানা নেই, তবে সবার মত আমারও সুপ্ত ইচ্ছা আছে একদিন সব ছেড়েছুড়ে বিজনেসে নেমে পড়ার , প্রধানত নিজের মত করে কিছু করার আগ্রহ থেকেই এই ইচ্ছাটা , সাথে টেকাটুকার ব্যাপারটাও উড়িয়ে দেওয়া যায়না।

    আমারও মনে হয় মালটিমিডিয়া/গ্রাফিক ডিজাইন/ওয়েব টেকনোলজি খুব সম্ভাবনাময় শিল্প হতে পারে আমাদের জন্য , কিন্তু আসল প্রতিবন্ধকতাগুলো নিয়ে খুব একটা ভাবা হয়নি। তাও কিছু অবসার্ভেশন বলিঃ

    আমার মনে হয়না আমাদের তরুন/যুবক সমাজের ইন্টারনেট/কম্পিউটার লিটারেসি পর্যাপ্ত। অনেকেই হয়ত ফেসবুক, ব্লগ দাপিয়ে বেড়ায় , কিন্তু তা শুধু ওইটুকুর মধ্যেই, এবং এদের সংখ্যাটাও খুব কম। আমার এক কলিগ একবার আউটসোর্সিং এর উপর একটা সেমিনারে জয়েন করে খুব বিরক্ত হইসিলো, ৯০% লোককে নাকি শুধু একাউন্ট কিভাবে খোলে তা নিয়েই দিন পার করে দিতে হইসিলো।

    দ্বিতীয়ত, এইগুলা শিখানোর জন্য কোন নামকরা প্রতিষ্ঠান অন্তত আমার চোখে পড়েনি। অনেক বিজ্ঞাপন দেখি, কিন্তু এদের মধ্যে একনামে ভালো প্রতিষ্ঠান আছে বলে মনে হয়না।

    ইন্টারনেট স্পিড এবং পেমেন্ট সংক্রান্ত বিষয়গুলা যারা ফেস করসে, তারাই ভালো বলতে পারবে।

    বিজনেস করার জন্য আমাদের যেটা ঘাটতি আছে বলে মনে হয়(আমার কাছে), সেটা হল স্যাক্রিফাইং এটিচ্যুড। বিজনেসের ইনিশিয়াল ফেইজে যেই দৌড়াদৌড়ি, খাটাখাটনি করতে হয় এবং যে মেন্টাল স্ট্রেস নিতে হয় , ভালো একটা চাকরি পেলে ৯৯% গ্রাজুয়েটেরই সেটা নেয়ার ইচ্ছা চলে যায়। আমাদের মধ্যবিত্তকেন্দ্রিক সামাজিক জীবন ব্যাবস্থা এবং গ্রহণযোগ্যতাও এইটার একটা প্রভাবক (সম্ভবত)।

    ফাকা মাঠে অনেক বলে ফেললাম। দেখি অভিজ্ঞজনেরা কি বলে।

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      পোস্টটি মুছতে গিয়ে তোমার মতামত দেখে সে চিন্তাটি বাতিল করলাম। কিছু বেসিক জিনিসের উপর যদি মানুষকে শিক্ষিত করে তুলতে হয় তাহলে কি কি বিষয়গুলোকে তুমি প্রাধান্য দেবে?


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
      • বন্য (৯৯-০৫)

        আমার ক্ষেত্রে আমি প্রথমে যে জিনিটটাকে প্রাধান্য দিব তা হল, যা শেখানো হচ্ছে তা কিভাবে কাজে লাগানো যাবে, শিক্ষার্থী কিভাবে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারবে তা নিয়ে একদম ক্লিয়ার একটা রোডম্যাপ তাকে দেওয়া, উইথ একজাম্পল। তাহলে যেটা হবে যে, শিক্ষার্থীর মধ্যে একটা জেনুইন আগ্রহ তৈরী হবে এবং এই আগ্রহটা শেখার ক্ষেত্রে যে কোন সমস্যা ফেস করতে তাকে সাহায্য করবে।

        এরপর সম্ভবত আসবে, কাস্টমার কেয়ার। :grr: শিক্ষার্থী ওই বিষয়ে তার প্রশ্নগুলোর উত্তর যেন সহজেই পেতে পারে তা নিশ্চিত করা।

        আমি মনে হয় বেলাইনে উত্তর দিচ্ছি। তাই অফ গেলাম। 😐

        জবাব দিন
  4. সামিয়া (৯৯-০৫)

    জিহাদ বলাতে এসে দেখি আমি একটা কমেন্ট করেছিলাম, সেটা মুছে গেছে। আমি কিন্তু রেসপন্স করেছিলাম যে ২৭ তারিখে আসছি। অন্যদের রেস্পন্স বোধহয় ফেইসবুক থেকে পাওয়া যাবে। আমি কি পোস্ট দিব আপা?

    জবাব দিন
  5. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    আড্ডা কি বাতিল নাকি আছে? আমি তো প্রতিদিন সিসিবি চেক করি, গত দুইদিন অসুস্থতায় না চেক করায় ফস্কে গেছে এই পোস্ট।
    আড্ডা হোক বা না হোক আপনার সাথে দেখা করতে পারলে ভালো লাগবে।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।