সংবিধাণ সতর্কিকরণ বিজ্ঞপ্তীঃ ইহা একটি দীর্ঘ এবং বোরিং পোস্ট। পাঠক নিজ দায়িত্বে পড়বেন। আর না পড়লেও একবারে শেষ অনুচ্ছেদ (২০) চলে যেতে পারেন।
১৪
এখন কথা হলো ‘পশ্চিম ফ্রি-সেক্সের দেশ’ বহুশ্রুত এই বাক্যটির সঠিক এবং যথার্থ দৃশ্য কিভাবে ফুটিয়ে তোলা যায়? পশ্চিমে পাবলিক ন্যুইসেন্সকে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখানকার উন্মুক্ত পরিবেশে এমন কিছু করা যাবে না যা অন্যের মনে বিরক্তির উদ্রেগ সৃষ্টি করবে। একবার একটা মজার সংবাদ পড়েছিলাম। জনৈক ভদ্রলোক তার প্রতিবেশী মহিলার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছিলেন। কারণ সেই মহিলা বিকিনি পড়ে বাগানে পানি দিচ্ছিল। এতে ভদ্রলোকের মনোযোগ ব্যাহত হয়। ফলে হাঁটতে গিয়ে বেখেয়ালে পা মচকে যায়। এই ফ্রি সোসাইটির দেশে চলতে গেলে পাবলিক ন্যুইসেন্সকে গুরুত্ব না দিলে বিপদে পড়তে হয়। এই ঘটনাটি পড়ে আমার ছোটবেলার একটি ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। আমার ছোটবেলা কেটেছে বনানীতে। সেই সত্তর-আশির দশকে এই এলাকাগুলো আক্ষরিক অর্থেই আবাসিক এলাকা ছিল। দালানগুলো ছিল দোতলা কিম্বা বড়জোর তিনতলা। এর থেকে খুব একটা উঁচু বিল্ডিং দেখেছি বলে মনে পড়ছে না। সেসময় অনেক ককেশীয় পশ্চিমারা সেই এলাকাগুলোতে থাকতেন। আমাদের পাশের বাসায় এরকম একজন ককেশীয় পশ্চিমা তরুণী প্রায় দিনই বিকিনি পড়ে ছাদের উপর শুয়ে সূর্যস্নান করতেন। যেদিন প্রথম এই দৃশ্য আবিষ্কার করেছিলাম সেদিন অতি উৎসাহে বাসার আর সব মহিলাদের খবর দিতে দ্রুত নীচে ছুটে গিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেদিন আমার এক খালা বাসায় ছিলেন। মহিলা মহা আধুনিক। লেখাপড়া করে এসেছেন আমেরিকা থেকে। ছাদে দেখা ঘটনাটি উনাকে বর্ণনা করলাম। এতে হিতে বিপরীত হলো। তিনি অনধিকার চর্চা বিষয়ে আমাকে কিছুক্ষণ জ্ঞান দান দিয়ে আমার টগবগ করা অতি উৎসাহে পানি ঢেলে দিলেন। অথচ এই একই ঘটনা যদি আমার গ্রাম থেকে আসা ফুপাত বোনদের বলতাম তাহলে অনেকদিন পর্যন্তই আমার এই আবিষ্কারের উৎসাহ টগবগ করে ফুটতো। কারণ ততদিনে এই ব্যাপারটা বুঝেছিলাম যে বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করে উনারা খুব বিনোদন পেতেন। আর সেখানে চাক্ষুষ একটা বিকিনি পড়া মেয়ে তো মহা বিনোদন! পরে অবশ্য সেই আমেরিকান তরুণীটির সাথে আমার খুব ভাব হয়েছিল। আমাকে অনেক মজার মজার ক্যান্ডি উপহার দিত। আর আমিও বুঝেছিলাম কাপড়চোপড়ের সাংস্কৃতিক পার্থক্য। অনেক বছর হলো আমেরিকায় আছি। তাও আবার থাকি এশিয়ান অধ্যুষিত এলাকায়। এই পরদেশ এখন চোখে সয়ে গেছে। আগে যখন দেশে ছিলাম তখন কয়েকবার আমেরিকা প্রবাসী বড়ভাইয়ের বকাঝকা খেয়েছিলাম। বিষয়বস্তু বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা সব গোল্লায় যাচ্ছে এবং সেই সাথে আমরাও সবাই গোল্লাই যাচ্ছি। যাইহোক বক্তব্যের এক পর্যায়ে বুঝলাম বড়ভাই কারো কাছে ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিউ ইয়ার ইভের কোন একটি পার্টির ছবি দেখেছে। আর তাতেই রেগে টং। তাকে বুঝিয়ে বলতে হলো পুরো ঢাকাবাসীর মধ্যে হাতে গোণা কজন মাত্র এরকম পার্টি করে। আর ‘গোল্লা’য় যাওয়া কি এতোই সহজ? আমার অন্তত: সেই সাহস ছিল না।
কথা হচ্ছিল পশ্চিম আর তার ফ্রি-সেক্স নিয়ে। আসলে কয়েকটি বাক্যে তা ব্যাখ্যা করা যাবে না। কারণ পশ্চিম নিজেই একটা বিশাল জায়গা। এই বিশাল অংশের মধ্যেই রয়েছে অনেক সাংস্কৃতিক পার্থক্য। প্রথমবার ইউরোপে বেড়াতে গিয়ে আমার মনে হয়েছিল সেখানকার টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে, পথে-ঘাটে, সাবওয়ে, বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপনের ছবিতে অনেক বেশি যৌনতার ছড়াছড়ি। এসব ক্ষেত্রে আমেরিকা তুলনামূলক বিচারে আরেকটু রক্ষণশীল। আবার ইউরোপ থেকে সরাসরি লাস-ভেগাসে যে বেড়াতে আসবে হরেকরকম চটকদার বিজ্ঞাপন আর ফ্লায়ার দেখে তার চোখও ঝলসে যেতে পারে। আমরা জানি ‘গুলশান এভিনিউ’ যেমন আমাদের জীবনের গল্প নয় ঠিক তেমনি ‘বোল্ড এন্ড বিউটিফুল’ও আমেরিকান জীবন নয়।
১৫
আমেরিকায় প্রথম এসে একটা এপার্টমেন্টে ছিলাম। সামনেই ছিল একটা হাইস্কুল। নাম কেনেডি হাইস্কুল। সব দেশেই হাইস্কুলের পরিবেশ নির্ভর করে সে এলাকার ছাত্রছাত্রীর মানের উপর। কেনেডি হাইস্কুলের অনেক ছেলেমেয়েদের মাথায় লাল-নীল রঙ করা। গায়ে উল্কি আঁকা। কানে, জিহ্বায়, থুতনি কিম্বা নাভিতে ফুটো কর সেকলে ঝুলানো। চলাফেরায় দুর্বিনীত ভাব। অহংকারী পদক্ষেপে তারা ভেঙ্গে ফেলতে চায় জন্ম-শেকল। জন্ম-লগ্ন থেকেই জীবন তো আসলে শেকঁলে বাঁধা থাকে। যে দারিদ্রের মধ্যে জন্মগ্রহণ করে সে দারিদ্র-চক্রের মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। ঠিক তেমনি রয়েছে সচ্ছলতার চক্র। তবে দারিদ্রের শেকল ভাঙ্গা যতো কষ্টের ঠিক ততোটাই সহজ সচ্ছলতার শেকল গুড়িয়ে দরিদ্র হওয়া। এই স্কুলের অধিকাংশ ছেলেমেয়েদের বাবা-মায়েরা ছিল খেটে খাওয়া শ্রমজীবী আমেরিকান। হয়তো তারা নিজেরাও একসময় তাদের সন্তানদের মতো ছিল। স্কুলের সময়টাতে অনেক ছেলে
মেয়েই স্কুল ফাঁকি দিয়ে ডেট করতে বেরুতো। প্রকাশ্যেই এরা একজনকে আরেকজনকে চুমো খাচ্ছে। খুব একটা বেশি না হলেও বেশ কয়েকবার তা চোখে পড়েছে। স্কুলের আশেপাশে পার্ক থাকলে সেখানে একটি-দুটি এরকম স্কুল পালানো জোড়া দেখতে পাওয়া যাবে। আর এ বয়সের আকর্ষণের মূল ভিত্তিটা তো যৌনতা। অল্পবয়সী জোড়াদের দেখলে বোঝা যায় খোলা জায়গায় যতদূর সম্ভব এরা পাবলিক ন্যুইসেন্স মেনে নিজেদের ভালবাসা প্রকাশ করছে। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের বান্দরবনের রুমাতে গিয়েছিলাম। সেখানে পর্যটকদের জন্য সুন্দর একটি কেন্দ্র বানানো হয়েছে। শহর ছাড়ার পরই গ্রামের দিকে গেলে মহিলাদের দেখা যায় আপাদমস্তক কালো বোরখায় মোড়া। পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে কয়েকটি অল্পবয়সী জোড়া ছিল। মেয়েরা সবাই বোরখা পরিহিতা। সবাই অবশ্য পাশাপাশি বসে আছে। প্রকৃতির কি অদ্ভুত হিসেব! সময় যখন আসে তখন কোন চৌধুরী সাহেবই একে-অপরের প্রতি এই আকর্ষণবোধ রুদ্ধ করে দিতে পারে না। কি বোরখা কি শর্টস – স্কুল পালিয়ে ডেট করার জন্য কোন পোশাকই অর্গল তৈরি করতে পারে না। তবে সংস্কৃতি-ভেদে প্রেম-করার ধরনে হেরফের হয়।
১৬
একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গড়ে একজন আমেরিকান পুরুষের জীবনে সাতজন সেক্স-পার্টনার থাকে। সেখানে মেয়েদের থাকে তিন থেকে চারজন। পূবের মানুষরা আঁতকে উঠলেও পশ্চিমের সমাজে প্রাক-বৈবাহিক সেক্স খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। পঞ্চাশ-ষাট বছর আগের সাহিত্য পড়লে অবশ্য মনে হয় তখন পশ্চিমের অবস্থাটা এরকম ছিল না। সেসময় একটি অবিবাহিত মেয়ে গর্ভবতী হয়ে পরলে তাকে যথেষ্ট নাজেহাল অবস্থার মধ্যে পরতে হতো। ড্রু ব্যারিমুর অভিনীত ‘রাইডিং এ কার উইথ বয়েস’ সিনেমাটিতে এই বিষয়টি বেশ পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। একটি মেয়ে গর্ভবতী হলো তো তার পরিবার সন্তানের বাবাকে বিয়ে করে ফেলাটাকেই মেয়েটির জন্য সবচেয়ে ভাল সমাধান বলে মনে করছে। অল্প বয়সে বিয়ে-বাচ্চা মানেই তো অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি মেয়ের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের পরিসমাপ্তি। মেয়েটি সংসারের ঘেরাটোপে আটকে যায়। আমেরিকায় ষাটের দশকে সিভিল রাইট মুভমেন্ট নারীদের জীবনে অনেক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এই সমাজের দিক-নির্দেশনাটি অনেকটা নির্ভর সমসাময়িক সমাজবিদ, দার্শনিক, লেখক, কলামিস্টদের হাতে। স্বভাবতাই এরা অনেক লিবারেল। তাঁরা সমাজের মূল্যবোধ তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। দার্শনিক বারট্র্যান্ড রাসেলের মত ছিল অবদমনের বিপক্ষে। অর্থাৎ যৌনসম্পর্কের জন্য বিয়ে করার বাধ্যবাধকতা নেই। তবে সন্তান নিতে চাইলে নারী-পুরুষকে একসাথে থেকে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবার গঠন করতে হবে। নয়তো সাবধানতা অবলম্বন করে যে যার মতো সঙ্গী পছন্দ, যৌনতা উপভোগ করতে পারবে।
নদীর বাঁধ একটু ভাঙ্গলে তা যদি সাথে সাথে মেরামত করা না হয় তবে একসময় পুর বাঁধই ভেঙ্গে যায়। ফ্রি সেক্সের ফল এখন আমেরিকা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে। এই দেশে হাইস্কুলে এতো এতো কনডম সরবরাহ আর যৌন-শিক্ষা দেওয়ার পরও অপরিকল্পিত টীন সেক্সের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। আল্লাহর মাল আল্লাহ দেখলে আর মায়েদের সৃষ্টি করতে হতো না। আমার তো মনে হয় সন্তান পালন পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি। সব কাজেরই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সময় থাকে। একজন মা দিনে চব্বিশ ঘণ্টার জন্যই মা। একবার যে মা সে সারাজীবনের জন্য মা। সন্তানের চিন্তা থেকে সে নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারে না। আবার একজন মা দায়িত্বপূর্ণ নাও হতে পারে। মাতৃত্ব উপভোগ্য হলে তবেই সে ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করতে পারবে। অসময়ের মাতৃত্ব উপভোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তার উপর যদি না থাকে পারিবারিক এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা। আমেরিকায় হাইস্কুল পর্যন্ত সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু বৃত্তি না পেলে উচ্চশিক্ষা খুবই ব্যয়বহুল। আমাদের মতো প্রতিবছর হাজার হাজার অভিবাসী প্রতিবছর এই দেশে উচ্চশিক্ষা অর্জন করছে। অথচ এখানে জন্মগ্রহণ করা আমেরিকানরা হাইস্কুলের গণ্ডিই পেরুতে পারছে না। মূল কারণ পারিবারিক কিংবা অর্থনৈতিক শক্ত ভিত্তি না থাকা। এদেশে সন্তানদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে বাবা-মাকে অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করে টাকা জমাতে হয়। এখন একজন সিঙ্গেল মা যেখানে সে নিজের জীবন নিয়েই হাবুডুবু খাচ্ছে সে সন্তানের লেখাপড়ার জন্য সঞ্চয় করবে কিভাবে? অধিকাংশ সময়ই দেখা যায় সন্তানদের দায়িত্ব নেবার ক্ষেত্রে বাবারা লা-পাত্তা থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডিভোর্সগুলোর মূল কারণ পরকীয়া। পশ্চিমের মানুষেরা জীবনকে পানসে মনে করলে তাতে ঝাঁজ আনার জন্য বোধহয় নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। হোক সে বিবাহিত কি অবিবাহিত। সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে সহ্য করে সংসার করে যাওয়া বোধহয় এদের ধাঁচে নেই। ফলশ্রুতিতে একটা বিশাল সংখ্যক আমেরিকান শিশু সিঙ্গেল প্যারেন্ট বা দত্তক পরিবারের তত্বাবধানে মানুষ হচ্ছে। এতে অবশ্য আমাদের মতো এশিয়ানদের সুবিধা হয়েছে। দক্ষ জনশক্তি হিসেবে আমেরিকার শ্রমবাজারে ঢুকতে পারছি। এশিয়ান বাবা-মায়েরা
অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজেদের শখ-আহ্লাদকে পাশে সরিয়ে রেখে সন্তান পালনে একনিষ্ঠ থাকেন। পূবের বাবা-মায়েদের আত্মত্যাগ কারণে আজ তাদের সন্তানরা উচ্চশিক্ষিত হচ্ছে। তাহলে কি আমরা সহজেই উপসংহারে পৌছাতে পারি কি যে পুব পেরেন্টিংএর দিক থেকে পশ্চিমের থেকে উন্নত? কিংবা এই ফ্রি-সেক্স পশ্চিমের জন্য অভিশাপ ছাড়া আর কিছু নয়?
১৭
আমার টিন-এজ ভাগ্নিকে নিয়ে চিকিসৎকের কাছে গেলাম। এশিয়ান চিকিৎসক আমাকে কোন কথা সরাসরি না বলে হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিল। সেখানে টিন-এজ ছেলেমেয়েদের সেক্স বিষয়ে কিছু জ্ঞান দেওয়া হয়েছে। সেই জ্ঞানের নমুনা এইরকম ‘… তোমরা যদি ঠিক করেই থাক যে শেষ পর্যন্ত তোমার পার্টনারের সাথে সেক্স করবে তাহলে প্রটেকশন নিবে।’ তারপর লেখা আছে সেইসব প্রটেকশনের কিছু নমুনা। এদেশে হাই-স্কুলের রেস্ট-রুমে কনডম রাখা হয়। চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী। ঠিক তেমনি টিন-এজ বয়সে যখন সেক্সের ব্যাপারে অদম্য কৌতূহল থাকে তখন হাতের কাছে এসব পেলে স্বভাবতই এর মানে তারা অন্যকিছু বুঝবে। ‘আমাদের সাবধান করছে’র বদলে তারা ভাববে ‘আমাদের টেস্টটা নিতে বলছে।’ আর এসব কিছুর বলী হয় টিন-এজ মেয়েরা। হাইস্কুলে সবচেয়ে জনপ্রিয় থাকে ফুটবল বা বাস্কেটবল টীমের অধিনায়করা। স্কুলের মেয়েদের অনেকে তো মুখিয়েই থাকে এদের সংগ পাওয়ার। অনেকাংশেই দেখা যায় এইসব ছেলেরা করমর্দনের মতো টেস্টটা নিয়েই লা-পাত্তা। বন্ধু-মহলে মহান পুরুষ বনে গেল। কিন্তু মেয়েদের কাছে তো শারীরিক বা মানসিক কোনভাবেই সেক্সটা করমর্দনের মতো নয়। তারা সেক্সটা করে মূলত ‘ছেলেটা আমাকে ভালবাসে বা আরো ভালবাসবে’ অথবা ক্লাসের মেয়েদের জনপ্রিয় দলে থাকবার জন্য। মেয়েরা সাধারণত দল বেঁধে থাকে এবং দলীয় কোন সিদ্ধান্ত হলে তার বাইরে যাওয়ার সাহস করে না। কয়েক বছর আগে বোস্টনের একটা হাই-স্কুলে দল বেঁধে একই ক্লাসের দশ-বারটা মেয়ে গর্ভবতী হয়েছিল। এশিয়ান-আমেরিকানরা, বিশেষ করে বাংলাদেশের বাবা-মায়েরা এই কারণে অনেকেই ধার্মিক হয়ে পড়েন। মনে করেন ধর্মীয় বাধা-নিষেধের বেড়াজালে থাকলে মেয়েকে এই পশ্চিম সমাজের কুপ্রভাব থেকে বাঁচানো যাবে। পশ্চিমে তো সেই মধ্যযুগের রেনেসাঁর পর থেকেই তো জীবনধারা আর বাইবেলের প্রেসক্রিপশন মেনে চলে না। অবশ্য বাইবেলে তা আছে কিনা তাও তো জানি না। যিশু মাতা মেরী ছিলেন তো কুমারী। তারপরও তো মা হয়েছিলেন। গ্রামাঞ্চলে সমাজ চার্চ বেষ্টিত হলেও, শহরেও কমবেশি এর প্রভাব আছে। তবে এরা পুরোপুরিই জীবনবাদী মানুষ। সেই তুলনায় মুসলিম সমাজ অনেক বেশি পারলৌকিক। পশ্চিমের এতো জীবনবাদীতা তাদের খুবই অপছন্দ। তাদের অনেকেই মনে করেন মুসলিমদের সংযত পারিবারিক জীবনযাপন প্রণালী থেকে পশ্চিমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। অবশ্য সংযত কথাটি ধর্মীয় মোড়কে না বলে বরং ভৌগলিক পরিপ্রেক্ষিতে বলাটাই অপেক্ষাকৃত যুক্তিযুক্ত। কারণ এশিয়া মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত অধিকাংশ দেশের মধ্যবিত্ত মূল্যবোধ এখনও ফ্রি-সেক্স কিম্বা লিভ-টুগেদার সমর্থন করে না। আমার তো মনে হয় মেটিং এর দিক থেকে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত মূল্যবোধ আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। একটি ছেলের সাথে সারা জীবন কাটিয়ে দিব – আমরা মানসিকভাবে এভাবেই বড় হই। ছেলেরাও। প্রয়োজনে সংসার ভাঙ্গতেই পারে। কিন্তু যারা এই ভাঙ্গা-গড়ার মধ্য দিয়ে যায় তাদের অনেক মানসিক চাপ সহ্য করতে হয়। এই সমাজে এককথা দুকথার পরই একজন নারীকে জিজ্ঞেস করা হয় তার স্বামী কি করে। সন্তানকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় তার বাবার পরিচয় কি। তুলনামূলক-ভাবে পশ্চিমের নারীদের এই চাপটি কম। সুখের সংসারের কারণে হয়তো তেমন নয়, যেমনটা আমাদের মূল্যবোধ এবং অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতার কারণে সংসারগুলো টিকে যাচ্ছে। আবার পুবে এমনটাও দেখা যায় যে যৌবনের পুরো সময়টাই হয়তো ঝগড়া করে কাটালো কিন্তু ষাটোর্ধ বয়সে টোনাটুনির মতো পরম নির্ভরতায় সুখের সংসার করছে। সঙ্গীর প্রয়োজন আসলে পৌঢ় বয়সেই বেশি হয়। দারিদ্রের কষ্ট, অপ্রাপ্তির কষ্টের থেকে একাকীত্বের কষ্ট কোন অংশেই কম নয়। আর এজন্যই হয়তো সংসার গড়ে তুলি, টিকিয়ে রাখি যাতে একাকীত্ব আমাদের পেয়ে বসতে না পারে। মজার ব্যাপার হলো পশ্চিমে বুড়ো-বুড়িরাও ডেটিং করে, আবার জোট বাঁধে। আবার জোট না বাঁধলেও শুধু বৃদ্ধা মহিলারা একসাথে ঘুরতে যায়। মীটআপ বলে একটি ওয়েবসাইট আছে। যেখানে বাসার ঠিকানা দিলে আশপাশের বুক-ক্লাব, হাইকিং গ্রুপ, চার্চ গ্রুপ এরকম বিভিন্ন সামাজিক মেলামেশার সন্ধান দিবে। একাকীত্ব দূর করার জন্য টেকনোলজির এই এক ভাল দিক।
১৮
নিশ্চিন্ত এবং নিরবচ্ছিন্ন পারিবারিক জীবনের একটি প্রধান উদ্দেশ্য হলো সন্তান পালন। কিন্তু একটি অদ্ভুত ব্যাপার হলো এই আমেরিকা একের পর এক প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় আইবিএম, ইন্টেল, মাইক্রোসফট, অ্যাপেল কিংবা হালের ফেসবুকের মতো এক-একটি কোম্পানি তৈরি করে হাজার হাজার কর্ম সংস্থান তৈরি করছে? একটি আইডিয়া, একটি উদ্ভাবন পুরো সমাজকে পালটে দিতে পারে। এই একটি দিক থেকে পুবের মানুষেরা খুব পিছিয়ে আছি। আমরা আমেরিকার টীন প্রেগন্যান্সি নিয়ে হাজারো সমালোচনা করতে পারি। কিন্তু এই শূন্য দশকের দুজন বিখ্যাত ব্যক্তি হচ্ছেন স্টিভ জবস এবং বারাক ওবামা। অদ্ভুত ব্যাপার হলো এই দুইজনই অবিবাহিত টীনএজ মায়েদের দুর্ঘটনাবশত: গর্ভধারণ। দুজনেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছাতে পেরেছিলেন। পেছনের কারণটা হলো এই দুই ব্যক্তির মা তাদের নিজস্ব জীবনে যাই ঘটে থাকুক না কেন সন্তানদের ক্ষেত্রে পড়াশোনার ক্ষেত্রটিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এক জর্ডানি মহিলা আমাকে বলেছিলেন যে আমরা আসলে সন্তানদের বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাড় করাই না সেজন্য সন্তানরা অতো চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠতে পারে না। কথাটা ভেবে দেখার বিষয় বটে।
তারপরও বলবো পশ্চিমের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা অনেক বেশি নাজুক অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে। কি পুব আর কি পশ্চিম -প্রান্তিক নাগরিকদের তো কখনই ভোগান্তির শেষ ছিল না, বর্তমানে সেই সাথে আরও অনেক অনুষঙ্গ যোগ হয়েছে। আফ্রিকান-আমেরিকানদের কথাই ধরা যাক। এখানে অসংখ্য পরিবার বাবাহীন। মায়েরা বাবা ছাড়াই সন্তান মানুষ করছে। এর একটি প্রধান কারণ আফ্রিকান-আমেরিকান পুরুষদের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যা অপরাধের সাথে জড়িত। বাকীদের একাংশের স্কুল ড্রপ-আউট কিম্বা যথোপযুক্ত পড়াশোনা বা চাকরি নেই। আবার অন্যদিকে ভাল চাকরি করছে এমন ছেলেদের অনেকেই অন্য রেসের নারীদেরকে মেট হিসেবে পছন্দ করছে। কারণ অন্য রেসের নারীদের কাছে সুযোগ্য কালো ছেলেরা আকর্ষণীয় পাত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। পক্ষান্তরে সুযোগ্য কালো মেয়েরা তাদের নিজ রেস বা রেসের বাইরেই অতো আকর্ষণীয় পাত্রী হিসেবে বিবেচিত হয়না। সৌন্দর্য তো আসলে একটা কনসেপ্ট। দেখা যাক মিশেল ওবামাদের মতো ক্ষমতাশালী নারীরা সৌন্দর্যের চিরাচরিত কনসেপ্টে পরিবর্তন আনতে পারেন কিনা।
কথা হচ্ছিল পশ্চিমের অবাধ যৌনাচার আর তার প্রেক্ষিতে সে সমাজের ক্ষয়িষ্ণু পরিবার নিয়ে। এ বিষয়ে সমালোচনা করে শেষ করা যাবে না। কিন্তু তারপরও যে বিষয়টি আমাকে অবাক করে তা হলো এইসব ব্রোকেন পরিবারের সন্তানদের মধ্যে থেকেই আবার কেউ কেউ বিল ক্লিনটন, বারাক ওবামা কিম্বা স্টিভ জবস হচ্ছে। একটা আর্টিকেলে পড়েছিলাম যে একটি গবেষণায় দেখা গেছে সন্তান পালনের জন্য একজন ভালো প্যারেন্টই যথেষ্ট। হয়তোবা। আইন জিনিশটাই তো আপেক্ষিক। স্থানভেদে, সংস্কৃতি-ভেদে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে। এই যেমন সৌদি আরবে একসাথে চারটি স্ত্রী রাখা যায়। আইনের এই সুবিধা নিয়ে বিলিয়নিয়ার মোহাম্মদ বিন লাদেন তার ষাট বছরের জীবনে ক্রমাগত একটার পর একটা বিয়ে করে এবং তালাক দিয়ে বৈধ উপায়ে কমপক্ষে চুয়ান্ন সন্তানের জনক হন। উনার দশম বিবি হালিমাকে তালাক দেন তাদের ওসামা বিন লাদেন নামের একটি বৈধ সন্তান হবার পর। বিলিয়ন বাবার বৈধ সন্তান মিস্টার ওসামা তো পশ্চিম বিশ্বে মুসলিমদের জীবনযাত্রা অনেক কঠিন করে দিয়েছে। গড়তে না শিখে শুধু ধ্বংস করে গেলে কি নিজের মহত্ব প্রমাণ করা যায়? পশ্চিমারা অনেক ধ্বংস করে। কিন্তু আবার গড়তে পারে দেখে এখনও সবার উপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে। ইহুদিদের হাতে অর্থ, ক্ষমতা, মিডিয়া সব কিছু বলে এই পৃথিবীতে তারা সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। বিপর্যস্ত মুসলিম বিশ্বের হাতে কোন বারগেইন পাওয়ারই নেই। কিভাবে তারা তাদের অধিকার আদায় করবে? মুসলিম বিশ্বে অবিবাহিত কোন মেয়েরা গর্ভবতী হলে সাথে সাথেই কল্লা নামিয়ে টিন-এজ প্রেগনেন্সি রোধ করতে পারছে। টিন-এজ প্রেগনেন্সি রোধ হলেই কি ভালো মা হওয়া যায়? মুসলিম বিশ্বের মায়েরা কেন পারছে না কোন বড় বিজ্ঞানী, নেতা, শিল্প-সাহিত্যিক, দার্শনিকের জন্ম দিতে? সৌদি আরবে সামান্য একটা কনসাল্টেন্ট খুঁজতে তাদের ঠিকই পশ্চিমের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। মা দিবস আসলে আমরা খুব গর্ব করে বলি যে আমাদের প্রতিদিনই মা দিবস – আলাদা কোন দিবসের দরকার নেই। অথচ বাস্তব সত্য হলো আমাদের কোটি কোটি মা অভুক্ত দিন পার করছে। সমস্ত উজাড় করে দিয়ে সন্তানদের তারা স্নেহ-ভালবাসা দেয়। পেছনের কারণটি এই নয় যে নিজের সন্তানরাই তাদের একমাত্র অবলম্বন, একমাত্র ভুবন। ভাল মা হওয়ার জন্য আসলে কি দরকার? নিজে এখন মাতো, তাই এই প্রশ্নের উত্তরটি খুঁজে বেড়াচ্ছি।
১৯
বাংলাদেশে টীন-এজ প্রেগন্যান্সী সমস্যা নেই কেন?
আসলে সমস্যা আছে। কিন্তু বৈধ বা অবৈধ এই শব্দটি দিয়ে আমরা সমস্যাটিকে ধামাচাপা দিয়ে রাখছি। অনূর্ধ্ব বিশ বছরের মায়েদের সংখ্যা বাংলাদেশে তো ভূরি ভুরি। পশ্চিমের সাথে পার্থক্য হলো এই যে সেসব মায়েদের একজন বৈধ স্বামী ছিল বা আছে। বাল্যবিবাহ বাংলাদেশে এখনও একটি উদ্বেগজনক সমস্যা। হয়তো দেখা গেছে যে একটি সতের আঠারো বছরের ছেলে একটি তের বছরের মেয়ের পথ আগলে দাঁড়িয়েছে – অমনি অভিভাবকরা ঐ ছেলেমেয়েদেরকে হুজুরের সামনে বসিয়ে কবুল পড়িয়ে দিলেন। পরের বছরই মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে মেয়ে মা হয়ে গেল। আর তার পরের বছরই নারী বিষয়ক সব আগ্রহ মিটে যাবার পর বাবা হয়ে গেল লা-পাত্তা। সন্তানের দায়িত্বের বোঝা ছেলেটির প্রেমের সব শখ মিটিয়ে দিয়েছে। এখন বিশ বছরের সেই যুবক অন্য জায়গায়, অন্য কোন শিকারের সন্ধানে। এই ছেলেটিকেও এক তরফাভাবে দোষ দেওয়া যায় না। মানুষের জীবন তো কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর সাথে জড়িয়ে রয়েছে স্থান আর কাল। কোন সময়ে কোন স্থানে জন্ম গ্রহণ করলাম তার উপর নির্ভর করছে আমার চিন্তা-ভাবনা।
এই পশ্চিমে সামার হলেই মেয়েরা সব শর্টস আর ট্যাঙ্ক টপস পড়ে ঘুরে বেড়ায়। এখানে এটি এমনই এক সহজ দৃশ্য যে পশ্চিমের ছেলেদের কাছে তা চোখ সওয়া হয়ে গেছে। কিন্তু আরব থেকে কোন ছেলে হটাৎ এরকম দৃশ্য দেখলে তার “রোজা ভেঙ্গে যাওয়া”র মতো অবস্থা হবে। যে লোক শৈশব থেকে তার চারপাশে পর্দায় আবৃত নারী দেখে বড় হয়েছে স্বাভাবিক ভাবেই জিন্স-টিশার্ট পড়া একটি মেয়ে তার জন্য খুব বড় রকমের কালচারাল শক। সৌদি আরবে মেয়েরা শুধু চোখ খুলে রাখতে পারে। তাও আবার বিত্ত-ভেদে ভিন্ন ব্যবস্থা। উচ্চবিত্তদের জন্য নিয়ম বেশ শিথিল। এখন কথা উঠছে যে শুধু বোরখার ভেতরের শুধু খোলা চোখ দিয়েও নাকি মেয়েরা আবেদনময়ী হয়ে উঠতে পারে। সেই ধরনের পুরুষদের কাছে এই আবেদনময়ীর মানে হচ্ছে “রোজা ভেঙ্গে যাওয়া”র মতো অবস্থায় পৌঁছানো। ইদানীং এই “রোজা ভেঙ্গে যাওয়া” শব্দটি বেশ শুনছি তো তাই লেখার মধ্যেও চলে আসছে। এক আরব পুরুষের অফিস থেকে ইউরোপ ট্যুরে যাওয়ার কথা। কিন্তু সে যাবে না। কারণ ইউরোপের মেয়েরা সামারে এমন সব পোশাক পড়ে যে এতে নাকি তার খুব সহজে “রোজা ভেঙ্গে যাওয়া”র মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়। অবাক হয়ে ভাবি এইধরনের কথাবার্তা পুরুষরা কি নির্বিকার-ভাবে প্রকাশ করছে। দুর্বলতা তাদের, অথচ দোষ দিচ্ছে আরেকজনের ঘারে। লোভ সামলাতে না পেরে চুরি করলাম আমি, আর দোষ হলো গেরস্থের – এমন অদ্ভুত কথা কি কেউ কবে শুনেছে? চোরের লোলুপ দৃষ্টি বাঁচতে গেরস্থকে কি বাড়িঘর কালিঝুলি দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে? আমি কালো কাপড়ে আবৃত নয় বলে যার খুব সহজে রোজা ভেঙ্গে গেল, সে কি আদৌ রোজা রাখার উপযুক্ত?
সংযমের পরীক্ষায় যে পুরুষ উত্তীর্ণ হতে পারছে না, দয়া করে তাকে পাশ করানোর দায়িত্ব নারীদের ঘাড়ে না বর্তালেই ভালো হয়।
২০
এখন পবিত্র রোজার মাস চলছে। জন্মাবধি এই মাসটিকে আমি একটি উৎসবমুখর সময় হিসেবেই দেখে এসেছি। ইফতার, সেহেরি, ঈদের জামা কেনা এবং তা লুকিয়ে রাখা, মাস শেষে ঈদ হবে – এরকম হাজারো উত্তেজনায় কাটতো সারা মাসটি। সেই ছোট্টবেলায় দুপুর একটার সময় ইফতার করে ভাবতাম অর্ধেকটা রোজা রেখে ফেলেছি। এখন আমার সন্তানরা ব্রেকফাস্ট না খেয়ে অর্ধেকবেলা রোজা রাখতে চায়। আমার শৈশবের সেই আনন্দময় স্মৃতি থেকে আমিও ওদের অর্ধেকবেলা রোজা রাখার ব্যাপারে বাদ সাধি না। ফেসবুকে নানানজনের ইফতারের আয়োজন দেখে প্রশ্ন তুলি না আমাদের সংযম হচ্ছে কিনা? আসলে ধর্ম-সংস্কৃতি এসব কিছু মিলিয়েই একটা জীবন-ব্যবস্থার মধ্যে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। আমেরিকাতে প্রতিবছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে নিউ-ইয়ার পর্যন্ত দোকানপাট, রাস্তাঘাট, বাড়িঘরে আলোকসজ্জা চলে। স্থানে স্থানে ক্রিসমাস ট্রি বিক্রি হয়। আবার ভারতে মুম্বাই দিয়ালিতে, কলকাতা দুর্গাপূজার সময়,চায়নিজ নতুন বৎসরের সময় চীন, রোজার সময় বাংলাদেশ – এরকম সংখ্যা গরিষ্ঠের পালা-পর্বণ অনুযায়ী শহরগুলোও বিভিন্ন সাজে সেজে উঠে। গতবছর রোজার সময় বাংলাদেশে ছিলাম। যখন বুঝলাম ঠিক ইফতারের সময় কেমন করে জানি যানজটগুলো উধাও হয়ে যায়, তখন ঘর থেকে বেরুতাম সেই সময়টাতে। সেসময় সিসিবির ইফতার পার্টিতে অনেকের সাথে সরাসরি পরিচয় হয়। শূন্য ব্যাচ একসময় সিসিবি জমিয়ে রাখতো। তাই ওদেরকে খুব ভালো মনে আছে। কামরুল, তানভীর, রবিন, টিটো – আর কেউ ছিল কি? ০২ ব্যাচের হাসানের সাথে আগেই দেখা হয়েছিল। ওর হাইকুর কয়েকটা বই আমার বুক ক্লাবের সদস্যদের উপহার দিয়েছিলাম। তারা খুব পছন্দ করেছিল। খুব আটির্স্টিক গেট-আপ। আর হাইকু পড়তেও খুব আরাম। ফেসবুকে দেখলাম আন্দালিব আমেরিকা আসছে , আহসানের স্ত্রী ওর মিশন থেকে ফেরার অপেক্ষায় আছে, জিহাদ দেখি প্রায়ই সেলিব্রেটিদের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি, শাওনের কোন খবর দেখিনি। কমান্ডো দম্পতির কর্তা আহসান বোধহয় আমাদের পারিবারিক জামাই মুরাদের বন্ধু। এই রোজাতেও নিশ্চয় অনেক দাওয়াত খেয়ে বেড়াচ্ছে। ০৩ ব্যাচের সামী খুব মজার। ০৩ কথা মনে হলেই মাশ্রুফের কথা মনে হয়। সে তো এখন আমলা হয়ে হামলা চালাচ্ছে। আর বোধহয় সাদি ছিল। এহসানকে দেখে এহসান মনে হলেও ফয়েজকে দেখে ফয়েজের সাথে মিলাতে পারিনি। না, পোশাকের জন্য নয় – ফয়েজকে অনেক অল্পবয়সী দেখতে লাগে। আসলে কবিতা-টবিতা লেখে তো। তাই মনের দিক থেকে তরুণ রয়ে গেছে। রায়হানকে দেখে কেউ বলবে এই ছেলে এখনই একটা বইয়ের লেখক – তাও আবার দর্শনের বই! জুনা একদম জুনার মতো। মানে চেহারা দেখে সহজেই চেনা গেছে। শেষের দিকে আসলো আসিফ। আসিফের দেশের জন্য কিছু করার তাগিদটা আসলেই আন্তরিক। শেষের দিকে সাইফও বোধয় এসেছিল। জিতুর সাথে দেখা হলো। মারজুককে দেখে মনে হলো রাইসাকে সাথে নিয়ে যেতে পারতাম। সামিয়ার ডিমের হালুয়ার তুলনা হয়না। সবাই সামিয়ার সাথে দুষ্টুমি করে মজা পায়। আর আমাদের সবার সানা ভাই তো আছেনই। মহা-ব্যস্ত মানুষ সিসিবিকে সময় দিতে ভোলেন না। আর কারও নাম বাদ পড়ে গেল কি? একবছর পর লিখছি। ও হ্যাঁ রিমা আর লিজার নাম লেখা হয়নি (বৌ ক্যাটাগরিতে চলে গেছে)।
সবার জন্য রইলো শুভকামনা।
Lekhati valo legese
ধন্যবাদ।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
খুব ভাল একটা লেখা। হাতে মিনিট দশেক সময় নিয়ে লেখাটা পড়লাম। আপনি যে বললেন পশ্চিম অনেক বড়ো এবং নানা মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির মিশেল, সেটা আমার নিজেরও ধারণা। এজন্য স্টেরিওটাইপিংমূলক মন্তব্য কেউ করলে সেটা মানতে মন চায় না। ওদের সামাজিক বন্ধন ভেঙে পড়ছে, এটা যেমন সত্যি, তেমনি ওরা প্রযুক্তি ও সভ্যতার শিখরে চলে যাচ্ছে সেটাও সত্যি। হয়তো এই শিখরে উঠতে গেলে বন্ধনগুলো শিথিল করা লাগে?
আরেকটা ব্যাপার, বাংলাদেশের সমাজেও পরিবর্তন আসছে আপু। আমার মনে হয়েছে এখনকার বিশ-বয়সী ছেলে মেয়েরা নিজেদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। আমি অবশ্য নাগরিক মানুষের কথা বলছি, মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণীতে এই মূল্যবোধ (একসাথে থাকা, বিয়ে করা, কমিটমেন্ট ইত্যাদি) ধীরে ধীরে কমে আসছে। বিবাহপূর্ব সম্পর্ক এবং তাতে শরীরের ব্যাপারগুলি সহজ হয়ে আসছে। ছেলে-মেয়ে উভয়ই বুঝে শুনে স্বেচ্ছায় এমন সম্পর্কে জড়াচ্ছে। কিছু প্রতারণা হয়তো ঘটছে, কিন্তু তার বাইরে অনেকেই এমন জীবনধারাতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে।
পশ্চিম হচ্ছে ফ্রুট সালাদের মতো, ফ্রুট স্মুদির মতো নয়। এখানে অনেক ফলের সমাহার কিন্তু আবার কেউ কারও সাথে মিশে যাচ্ছে না; নিজেদের আলাদা বৈশিষ্ট নিয়ে অবস্থান করছে।
সম্পর্ক জনিত সমস্যাগুলো যেহেতু মেয়েদের ঘাড়ে বেশি পরে, তাই তাদের অনেক সতর্ক পদক্ষেপ নিয়ে চলতে হয়। কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ - তা অবশ্য আমি জানি না। আমার শুধুই পথ চলতে চলতে চারপাশ দেখে যাওয়া।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
বাহ! ফ্রুট সালাদ আর ফ্রুট স্মুদির তুলনাটা তো দারুণ দিয়েছেন, আপু! 😀
হ্যাঁ, মেয়েদের সতর্কতা থাকতেই হবে। তা এই সমাজে হোক আর ওই সমাজে। আমিও ভাল বা মন্দ বিচার করি না। যা ঘটছে, সেগুলোকে নিজের পছন্দ-অপছন্দে যথাসম্ভব না এনে দেখে যাওয়া।
লেখাটা রীতিমত গো-গ্রাসে গিললাম...এক কথায় অসাধারণ গবেষণা...
পুরোপুরি সহমত......
আমার মতন সাধারণ মানুষকে যে আপু তুমি মনে রেখেছো ভাবতেই ভালো লাগছে...হ্যা কোন আপডেট নেই আমার...দেখি কিছু দেয়া যায় কিনা.. 😀
ধন্যবাদান্তে,
মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শাওন
প্রাক্তন ক্যাডেট , সিলেট ক্যাডেট কলেজ, ১৯৯৫-২০০১
["যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি"]
প্রতিটি মানুষই অসাধারণ - অন্ততঃ তার মায়ের কাছে এবং নিজের কাছে। এই সাধারণ কথাটা আমরা প্রায়ই ভুলে যাই।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
মুগ্ধতা নিয়ে লেখাটা পড়তেছিলাম, শেষে নিজের নাম দেখে ভাল লাগা বেড়ে গেল 😀 পাঁচতারা দাগালুম 🙂 (সম্পাদিত)
🙂 🙂 🙂
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়লাম আপু। কেমন আছেন?
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
কতদিন পর পড়লা? আছি ভাল। চলছে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
মন্তব্য আসিতেছে 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
মন্তব্য কি আপনার ছবির নাম? নায়ক-নায়িকা কে?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
এক. শেষ অনুচ্ছেদ পড়ার ইচ্ছা ছিলো সরাসরি। সেটা করতে গিয়ে দেখলাম অনুচ্ছেদ ২০ নাই এই লেখায়। তাই পুরাটা পড়া লাগলো।
দুই. লেখায় এক জায়গায় পড়লাম, এখন পবিত্র মাস। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন চলে আসে অন্য মাসগুলি তাহলে কি?
তিন. তবে রক্ষনশীল মাস হিসেবে লেখার বিষয়বস্তু একটু কড়া হয়ে গেছে।
চার. লেখা পড়ে বুঝলাম নৈবত্তিক ব্যাপারটা আপেক্ষিক। লেখায় ঠিকই একটা দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়। লেখা ঠিকই লেখককে প্রতিনিধিত্ব করে।
পাঁচ. পশ্চিম বলতে যদি উত্তর আমেরিকা অর্থ করেন তাহলে এটাকে বলা হয়ে থাকে মেল্টিং পট, তবে দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের (ভিজিবল মাইনোরিটি) পশ্চিমের হাঁড়িতে গলতে সাধারণত বেশ সময় লাগে। পশ্চিমে আবার ইয়োরোপে মাল্টিকালচারিজমের ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে প্রতিয়মান হচ্ছে, কিন্তু সেটেলার্স ডেমোক্রেসিতে (আম্রিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া) একটা মাত্রায় এটা কার্যকর। এর বিপরীতে শশী থারুর ভারতীয় উপমহাদেশকে বললো থালি/থালে যেটাতে অনেক পদ সাজানো আছে কিন্তু তারা একে অন্যের সাথে সতন্ত্রতা বজায় রেখে আলাদাই থাকে। আবার পশ্চিম বলতে যদি ইউরোসেন্ট্রিক ককেশীয় সংস্কৃতি বুঝি তাহলেও তার স্তরে স্তরে ভিন্নতা নিয়েও এরা একসূত্রে গাঁথা। তবে পশ্চিম হলো মোটা দাগে ক্ষমতার বিন্যাসে হোয়াইট সুপ্রিমেসির জায়গা।
ছয়. ‘পশ্চিম ফ্রি-সেক্সের দেশ’ এটা আমাদের দেশে পশ্চিমকে নিয়ে খানিকটা মিথ। পশ্চিমের সংস্কৃতিটা আলাদা এবং সেটার নানারকম লাইনস এবং টেকচার আছে। আমার কাছে মনে হয়, পশ্চিমের একটা প্রতিনিধিত্বশীল সাংস্কৃতিক ধারা হলো মুক্ত চিন্তার চর্চা করা। আমার মতে ফ্রি সোসাইটি বলতে এরা এটা অর্থ করে। তার বিপরীতে, পশ্চিমে রক্ষনশীল এবং গোড়ামীর ধারাও প্রবল। চার্চের প্রভাব বজায় রাখার চেষ্টাও কোন দিক দিয়ে কম না। তারপরও পশ্চিমের সাথে পূবের শরীর, পবিত্রতা, লজ্জা, যৌনতা প্রভৃতির ধারণাগত বিস্তর পার্থক্য আছে মনে হয়। তবে গত ৫০ বা ১০০ বছরে পশ্চিমে এই ধারণাগুলো আরো পরিবর্তিত হয়েছে।
সাত. পূবের জীবন এবং সমাজকে নানা মাত্রায় রক্ষনশীল ফ্রেমওয়ার্কে দেখার একটা ধারা চালু আছে। কিন্তু পূবে কি কোন অংশে কম টিনএজ সেক্স আছে? কিংবা বিয়ে বর্হিভূত সম্পর্ক। হয়তো সেটা খোলামেলা না। পশ্চিমের এই খোলামেলা সংস্কৃতি বেশি দিনের না। ডিভোর্সের বয়স এখানে একশ বছর পেরোয়নি। মানে প্রদেশগুলোতে বিচ্ছেদ আইন বেশি দিনের না।
আট. পশ্চিমে দ্যাখেন যে ডেটিং এখন প্রতিষ্ঠিত চর্চা। আর লিভ টুগেদার তো একটা বিয়ের মতোই প্রতিষ্ঠান যার আইনি স্বীকৃতি আছে কমন ল’ পার্টনার হিসেবে। আমার যেটা দেখে মজা লাগে এরা ভাঙ্গা বা গড়া যে কাজটাই করে সেটা বেশ মহাসমারোহে করে। যেমন এ্যাশলে ম্যাডিসন বিবাহিত লোকদের অযাচার করার জন্য তুমুল জনপ্রিয়। এরা আবার কিছুদিন পরপর সেনসাস করে কোন শহরে অযাচারের প্রবণতা বেশি। সেই সেনসাস নিয়ে আবার একটা প্যাটার্ন বের করার চেষ্টা করে।
নয়. মন্তব্য আসিতেছে মানে হলো বড় মন্তব্য লেখা হচ্ছে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
তোমার মন্তব্যে একটা একাডেমিক দৃষ্টিভংগি উঠে আসলো। হয়তো এটা তোমার পড়াশোনার মধ্যে পরে বলে।
দুই, তিন এবং চারের উত্তরে বলবো - আমি সবসময়ই বসে আসছি আমি আস্তিক - আস্তিক বাই চয়েস এবং নাস্তিক কেউ হতে চাইলে তার যুক্তিকে পুর্ণ সমর্থন করেই। এর পেছনের কারণটা হলো আস্তিক প্যারাডাইম থেকে চিন্তা করার একটা মজা আছে। তা হলো অধিকাংশ মানুষ কিভাবে ভাবছে তার সাথে একাত্মবোধ করে চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রটিকে একটু সংকীর্ণ করে রাখা। ব্যাপারটা আসলে সাবধানে গাড়ি চালনার মতো। এক্ষেত্রে অবশ্য আমার অবস্থা অনেকটা বাঁদুরের মতো - না পশুর দলে না পাখীর দলে। সুতরাং কেন পরিত্র শব্দটি ব্যবহার করলাম আবার কেনইবা এই সময়ে এই বিষয়ে লিখলাম তা বুঝতে পারছো।
পাঁচ আর ছয়ের উত্তর একটা কাজ সেরে এসে দিচ্ছি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
মন্তব্যের কথা আসলে পেপার পত্রিকা পড়া এবং সীমিত পর্যবেক্ষণ থেকে বলা। এক, দুই, তিন বলেছি হালকা চালে। পয়েন্টগুলো আপনার মতো আমারো দুইবারে লেখা। প্রথমবার শ্রেফ মজা করেই লিখতে শুরু করেছিলাম পরের বার একটু মনযোগ দিয়ে। চারটা বলা এজন্য যে লেখার বিষয়ের উপর আপনার পর্যবেক্ষেণ, অভিজ্ঞতা, তুলনামূলক আলোচনা সবকিছু মিলে আপনাকে প্রতিনিধিত্ব করছে। আস্তিক বা নাস্তিক ব্যাপারটা মূখ্য না, মূল ব্যাপার হলো মুক্ত চিন্তা ভাবনা, যুক্তির চর্চা, জানার ইচ্ছা, উদার দৃষ্টিভঙ্গী এবং গোড়ামী থেকে দূরে থাকা।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
তোমার মুক্তবুদ্ধি্র কথা পড়ে একটা জোক মনে পড়ে গেল। ক্রিকেটার শচিন তাঁর গুরুর মৃত্যুতে জন্মদিনের প্রোগ্রাম বাতিল করাতে তসলিমা নাসরিন তার টুইটারে েই বিষয় নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন। ্তার উত্তরে একজন লিখেছিলেন বেশি মুক্তচিন্তা করতে গেলে ভালো খেলোয়ার হওয়া যায় না। আমার কথা হলো আজকাল মুক্তচিন্তা নিয়ে আমরা বড়ই বড়াই করি কিন্তু অধিকাংশ এতে প্রোডাক্টিভ আউটপুট কি দিচ্ছি তা নিয়ে মনে হয় খুব একটা ভাবি না।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
মুক্তচিন্তার বিষয়টা সম্ভবত সংকীর্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। মুক্তচিন্তা দর্শনের একটি অনুসঙ্গ এবং গুরুত্বপূর্ন কালকে নির্দেশ করে। মুক্তচিন্তা না হলে রেনেঁসা আসতো না। শিল্প বিল্পব আসতো না। চার্চের ক্ষমতা খর্ব হতো না। মুক্তচিন্তা না আসলে জাদুটোনা এখনো প্রতিনিধিত্বশীল থাকতো কিংবা ডাইনির নামে নারী হত্যা কিংবা সতীদাহকে সঠিক মনে করা হতো। শিল্প সাহিত্যের প্রসার ঘটতো না। মুক্তচিন্তা না হলে জ্ঞানের এতো শাখাপ্রশাখার উদ্ভব হতো না। আমাদের কাছে তথ্য এতো সহজলোভ্য হতো না। এবার ভাবুন তো মুক্তচিন্তা কি আউটপুট দিচ্ছে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সবই জানা কথা - আমার কথা হচ্ছে মুক্তচিন্তার প্রতিফলন কাজে দেখানোর পক্ষপাতি আমি। আর তাই যেই মুক্তচিন্তা সত্যিকার অর্থেই এপ্লিকেবল এবং ফলপ্রসু আমি তার ধারক হতে চাই। আসলে সাত খণ্ড রামায়ন পড়ে সীতা কার বাপ - এখন এরকম কোন প্রশ্ন তুললে তার উত্তর দিতে কিছুটা হ্কচকিয়ে যেতে হয়।
সত্যিকার অর্থে মুক্তচিন্তার বাহকরা কাজেই তা প্রমাণ করে - আমি শুধু এই কথাটিই বলতে চাইছি; তা সেই রেনেসার সময়ই বলো আর এখনই বলো। আমার আবার আল্ট্রআ স্মার্টনেস দেখানো মুক্তচিন্তাবিদদের ব্যাপারে কিঞ্ছিৎ এলার্জি আছে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আমার ধারণায় মুক্তচিন্তা অনেক বড় বিষয়। কঠিনও। ব্যাপারটা এমন না আজ আমি ঘোষনা দিলাম মুক্ত চিন্তা করি আর সাথে সাথে ফল দেওয়া শুরু করবে। এটা চর্চার ব্যাপার, আত্মস্থ করার ব্যাপার। সতর্কতার সাথে এই অভ্যাসটা করলে ধীরে ধীরে সংকীর্ণতা এবং সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়। সবাই সেটা পারবে বা করবে ব্যাপারটা তেমনও না। আমার তো মনে হয়, আবার ব্যাপারটা এমনও না যে কেউ আস্তিক হলে মুক্তচিন্তা করে না, শুধু নাস্তিকরাই মুক্তচিন্তা করে। আবার মুক্তচিন্তার চর্চা করে এমন মানুষেরও জীবনের কোন একটি পর্যায়ে বিচ্যুতি ঘটতে পারে। আমার কাছে মুক্তচিন্তা হচ্ছে শুধুই শুদ্ধ চিন্তার চেষ্টা যেটা মানুষকে আলোকিত করে ধীরে ধীরে।
আলোচনার স্বার্থে, আমরা এখন যে পর্যায়ে কথাগুলো বলছি সেখানে "ব্যাড এ্যাপলসদের" কথা প্রাসঙ্গিক না হয়তো। আমার দৃষ্টিতে মুক্তচিন্তা বড়াই করারও কোন ব্যাপার না। মুক্তচিন্তার কথা বলতে আমরা কি এই ধারার প্রতিনিধিত্বশীল হিসেবে "আল্ট্রআ স্মার্টনেস দেখানো মুক্তচিন্তাবিদদের" প্রাধান্য দিবো কিনা সেটাও ভাববার বিষয়।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
তোমার পাঁচ নম্বর বিশ্লষণটি অনেক বেশি থিউরিট্যাল মনে হলো। লন্ডনের কথাই ধর। ওখানে তিন জেনারেশন ধরে বাংলাদেশি সিলেটীরা আছে। মূল স্রোতের সাথে মেল্টিং হতে পেরেছে কি? না পারেনি। তৃতীয় প্রজন্মের একদল অতি রক্ষণশীল হয়ে উঠছে আরেকদল ওয়েস্টার্নাইজড না হয়ে ওয়েস্টটক্সিকেটেড হয়ে পড়ছে। হয়তো একটা সরু ধারা মূল স্রোতের সাথে মিশছে। আমেরিকাতেও এই একই অবস্থা দেখা দেবে। আর ইউরোপে তো আগে এমন ভূড়ি ভূড়ি বাংলাদেশি সেটলার ছিল না। লন্ডনের উদাহরণ দিলাম কেননা একমাত্র এই জায়গাতেই এখন পর্যন্ত থার্ড জেনারেশন পর্যন্ত পৌছাতে পেরেছে।
ছয় আর সাত পয়েন্টগুলো তো আমিও তো একই কথা লিখলাম। তুমি জান কিনা জানিনা মিথটা আমেরিকাতে সেটল করা বাংলাদেশিদের মধ্যেও প্রবল। তার কারণ চাকরি, বাসা আর নিজস্ব কমিউনিটি এর বাইরে কেউ কিন্তু কোন পশ্চিমা নাগরিকের সাথে মিশছে না। কাছ থেকে দেখা দু-একটা ঘতনাকেই জেনা্রএলাইজড করে দেখছে। তার কারণ যে কোন মূল্যে সে ভাবতে চাচ্ছে যে ্রক্ষণশীনতাই সর্বোত্তম পন্থা। আর পূর্বে অনেক টীন-সেক্স আছে তোমার এই ধারণাটির সাথে আমারটা মিলছে না। অবশ্য আমি চারপাশের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি - কোন একাডেমিক পরিসংখ্যাণের কথা জানি না।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সাথে জীবনযাত্রা বদলে যায়।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
বিলাতে তো আইরিশ বা স্কটিশরাই পুরিপুরি মেল্ট হয় না। সিলেটিরা হবার কথাও না। বিলাতের সাথে আমেরিকা বা কানাডার পার্থক্য হলো রাজনৈতিক ব্যবস্থা। উত্তর আমেরিকায় সেটেলার্স ডেমোক্রেসি। অস্ট্রেলিয়াতেও। কিন্তু ইউরোপে তো তারা শত শত বছর বাস করছে। উত্তর আমেরিকায় ইউরোপিয়ানরা ভাগ্য পরিবর্তন এবং বানিজ্য করতে এসে বসতি গড়েছে। সেটেলার্স ডেমোক্রেসিতে সবাই অভিবাসী ইন্ডিয়ানস এবং ফার্স্ট নেশনস ছাড়া।
সাত নম্বর পয়েন্টের বিষয়ে ধারণা পাবেন আইসিডিডিআর'বির জনস্বাস্থ্য নিয়ে যে স্ট্যাডিগুলো আছে সেটা থেকে। ইউনিসেফও রিপোর্ট তৈরি করে। যেগুলো থেকে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায় টিন-সেক্সের ট্রেন্ডের উপর। এটা আরো বেরিয়ে আসে এসডিটি থেকে। আমাদের দেশের কথা যদি ধরেন ব্যাপারগুলো তো খোলামেলা না, তাই এড়িয়ে যাওয়া হয় কিংবা স্বীকার করা হয় না। রক্ষনশীল প্রতিক্রিয়ার কারণে বিষয়গুলো গোপন থাকে। অদৃশ্য থাকে। কিন্তু এগুলো তো সবখানে ঘটে। সমাজের সব শ্রেনীতে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
্তুমি এখনও স্টুডেন্ট এনভায়রনমেন্টে আছো তো তাই রিয়েল উত্তর আমেরিকার চিত্রটা মনে হয় বুঝতে পারোনি। ব্রিটেন থেকে তা খুব একটা অন্য্রঅকম কিছু হবে বলে মনে হয়না।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শান্তাপু,
এইখানে রাব্বীর মতকে সমর্থন করে বিষয়টা নিয়ে একটু বলি- বৃটেন বা ইউরোপের অন্যান্য দেশে অভিবাসীরা যে অবস্থার মধ্যে গিয়ে নিজেদের অবস্থান করে নেওয়ার প্রয়াস পায়, তা থেকে আমেরিকা-কানাডার পরিস্থিতি মৌলিক ভাবে আলাদা। কারণ, বৃটেন আর ইউরোপীয় কন্টিনেন্টের দেশগুলোতে মূলস্রোত (main-stream population) ঐখানকার আদীবাসীরা যারা কয়েক শত বছর ধরে সেখানে বসবাস করছে, রাষ্ট্রের ক্ষমতায় রয়েছে, সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবনে নের্তৃত্ব-কর্তৃত্ব করছে। ফলে সেখানে অভিবাসীরা বিদ্যমান অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে বাধ্য। কিন্তু আমেরিকা-কানাডার আদীবাসীরা (রেড ইন্ডিয়ান, বা ফার্ষ্ট নেশনস) নিজেরাই সংখ্যা-লঘু আর অভিবাসীরা মূলস্রোত! এর ফলে নেটিভ আর অভিবাসীদের মাঝের সম্পর্কের প্রকৃতি মোউলিকভাবেই আলাদা- বৃটেন আর ইউরোপে ক্ষমতার কেন্দ্রে নেটিভরা আর আমেরিকা-কানাডাতে অভিবাসীরা। তাই, আমেরিকা-কানাডাতে অভিবাসীরাই তৈরী করে নেয় নিজেদের অর্থনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবন যা সমগ্র দেশেরই মূলস্ত্রোত হিসেবে গড়ে ওঠে। (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ - তোমার আর রাব্বীর কথায় আমি তত্বীয় তথ্য দেখতে পেলাম। আমার প্রায় চৌদ্দ বছরের অভিবাসী জীবনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি অভিবাসীরা এখানে ফ্রুট স্যালাদের মতোই বাস করে। একসাথে মিশে যায় না। তবে এর পেছনেও অনেক কিছু বলার আছে। সেটা নিয়ে নাহয় পরে এক সময় আলোচনা করি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু,
তত্ত্বীয় ব্যাখ্যাসহ বিশাল এক কমেন্ট লিখছিলাম আজ সকালে। কিন্তু পোষ্ট করতে গিয়ে ক্যামনে যেন পুরোটাই হাওয়া হয়ে গেল! ~x( নিজের উপরে রাগে আর লেখতে ইচ্ছে করলো না।
পরে এক সময় লিখে ফেলবো, আবার...... 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
এটা সত্যি আমার উত্তর আমেরিকার অভিজ্ঞতা আসলে সময় এবং মিথষ্ক্রিয়া দুই অর্থেই সীমিত। তবে আমি যে পয়েন্টটা বোঝাতে চেয়েছি মাহমুদ ভাই সেটা ভালভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। উত্তর আমেরিকার প্যাটার্ন আলাদা। অভিবাসীর মহাদেশ হওয়াতে এখানে সংখ্যালঘু অভিবাসীদের মূলস্রোতে মেশার পথটা খোলা।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
দোস্ত, শুধু তোর দুই নম্বর কমেন্টটার উত্তরে বলছি, ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস, এর মানে এই না যে বছরের বাকি দিন আমরা পরাধীন থাকি। ২৬শে মার্চ দিনটা আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসে একটা বিশেষ দিন দেখে এই দিনটাকেই আমরা স্পেশালি পালন করে থাকি।
ধর্মের পালনীয় এবং অবশ্য পালনীয় ব্যাপারগুলো "পবিত্র" মাসে পালন করলে রিটার্নটা বেশি। এই জন্যেই মনে হয় এই মাসটাকে পবিত্র মাস হিসেবে গন্য করার প্রবনতা। আর এটা মানে এই না যে বছরের বাকি মাসগুলো অপবিত্র।
যাহোক, আছিস কেমন? 🙂 (সম্পাদিত)
মইনুল - একটি মাসকে পবিত্র বলেছি তার মানে তো অন্যমাসকে অপবিত্র বলিনি - এই ধরনের কথাবার্তা ্লিখে আমি পাস কাটিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু ইচ্ছে করেই যাইনি। আমার কথা হচ্ছে ক্ষতিকারক নয় কিন্তু ভিন্নমত ্মেনে নিতে অসুবিধা কোথায়?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শুধু দুই নম্বরটাই মনে ধরলো?! ব্যাটা দুই নাম্বার একটা!
এবার পরিষ্কার করি, দুইয়ে প্রশ্নটা আসলে মজার মুডে খুব সাধারণ অর্থে করেছিলাম। আসলে প্রশ্নটা যখন করেছিলাম 'সব মাসই পবিত্র' এরকম একটা অবস্থান থেকে করা। এখন মন্তব্যগুলোর প্রতিক্রিয়া থেকে ধারণা পাচ্ছি, প্রশ্নটা অন্য অর্থ তৈরি করছে। ভুলটা আমারই হয়েছে। হালকা চালের এবং সিরিয়াস মন্তব্য একসাথে দেওয়া হয়তো উচিত হয়নি। এক থেকে চার পর্যন্ত রাতে লিখে সকালে বাকি পয়েন্টগুলো লেখা। শান্তা আপা যেখানে এই কথাটা লিখেছেন সেখানে ব্যক্তিগত এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে লেখা। তাই এটা অন্য অর্থ করবে সেটা বুঝে উঠিনি। এই ভুল বোঝাবুঝির জন্য একটা :frontroll:
ভাল আছি। তুই কেমন??
আমার বন্ধুয়া বিহনে
মাঝে মধ্যে সিরিয়াস মুডে থাকলে অন্যের রসিকতাটুকু বোঝা যায় না। এই সমস্যা নিশ্চয় তোমারও হয়। তাই একটু কথা বেশি হয়ে গেছে। এমননিতে আমি রসিকতা বুঝি ভালই।
তবে তোমার বোধ খুব সূক্ষ। এই লেখার একটা ফ্ল আছে - হালকা চাল হলেও সেটা ছুঁয়ে গেছ। এই বিষয়টা ভাল লাগলো।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
লেখাটা ভাল লেগেছে।
কিন্তু কেন জানি কোন মন্তব্য আসছে না।
তবে লেখাটা মনে বেশ দাগ কেটে দিল মনে হচ্ছে।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
হু ভাববার বিষয়।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
সময় করে মন্তব্য করবো বলে পুরো একদিন অপেক্ষা করলাম, তাও হলো না। আপাতত দারুন এই লেখার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে যাই, সেই সাথে পরিবার সমেত আমাকে মনে রাখার জন্য।
লেখায় পাঁচতারা... 😀
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আপনার লেখা তো দেখি দিন দিন মন্তব্য বন্ধ্যায়ক টাইপের হয়ে যাচ্ছে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
:clap:
পোষ্টটা গতকালই একবার পড়েছিলাম। মোটের উপর, শান্তাপুর ভাবনাগুলো ভালো লেগেছে।
আজ আরেকবার পড়লাম, মন্তব্যগুলো সহ। বেশ কিছু কথা বলার ছিল, কিন্তু সেগুলোর বেশিরভাগই রাব্বী বলে দিয়েছে। কাজেই, আপাতত আর কিছু লিখলাম না। ফিল্ডোয়ার্কে বিরাট দৌড়ের উপরে আছি।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আসলে তোমাদের কাছ থেকে তত্বীয় ব্যাপারগুলো জানার অপেক্ষায় থাকি। ভালো থেক।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু, অনুচ্ছেদ গুলোর মধ্যে মনে হয় একটু এলোমেলো হয়েছে। দেখেতে পাচ্ছি ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৯, ১৮, ১৯ ক্রমিকে অনুচ্ছেদ গুলো রয়েছে। খুব সম্ভবত, ১৭ এর পর ১৮, তারপর প্রথম ১৯ অনুচ্ছেদ হবে। শেষ ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদটি মনে হয় ২০ হবে।
লিখা বরাবরের মতোই অতি সুন্দর হয়েছে। যুক্তিপূর্ন, চমৎকার উপস্থাপন থেকে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারছি।
ধন্যবাদ। ঠিক করে দিচ্ছি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
লেখাটা খুবই ভালো লেগেছে ওয়াহিদা আপা। মাঝে মাঝেই গাড়ি চালানোর সময় এফএম রেডিওতে খবরে শুনি ১৪/১৫ বছর বয়েসের মেয়েরা হাসপাতালে বাচ্চা ডাম্প করছে। মালেয়শিয়াতে ভালো ভালো ইয়ং মাদারর্স সাপোর্ট প্রোগাম থাকা স্বত্তেও কেনো এই মেয়েরা এই পথ নিচ্ছে কে জানে। আমার লোকাল কলিগরাও দেখলাম এই ব্যাপারটাকে- এ আর নতুন কি - এই ভাবেই নিচ্ছে।
আমার নিজের এই বয়েসে বন্ধুদের কাছে কুল হবার জন্যে সিগারেট ধরেছিলাম। 🙂 আমার বাচ্চাদের এই বয়েসে আসতে অবশ্য আরো ১০ বছরের মতন বাকি আছে। আশা করি ততদিনে টিনেজ ছেলেমেয়ে কন্ট্রোল -- এই টাইপের কোনো গাইড বই বের হয়ে যাবে।
আশা করি টিনেজ বাচ্চারা কি ধরনের সমস্যা বা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় আর প্যারেন্টরা কিভাবে তাদের সাহায্য করতে পারে, তার ওপরে কিছু লিখবেন।
লেখাটা পড়েছি। অনেক ভালো লেগেছে। অনেক কথা মনের মাঝে আসছে, দুইটা কারণে বলতে পারতেসি না। এক নম্বর কারণ গুছাতে পারছি না। দুই নম্বর কারণ, আমার আম্মা নিয়মিত এই ব্লগ পড়ে আর আমারে ফলো করে। জীবনের টুকরো'র এইবারের বিষয় নিয়ে কিছু বলতে গেলে সে পিটায় আমার হাড্ডী গুড়া করে দিবে। বুঝেনই তো...আজকালকার মায়েরা...
ইহা একটি ১৮+ পোষ্ট। তোমার পড়া উচিত হয় নায়। আন্টির তোমার হাড্ডি গুড়া করলে আমি মাইন্ড করবো না।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
পড়ছি কিন্তু। মন্তব্য নাই। 🙂
অল্প বয়সী বলার জন্য ধন্যবাদ। প্রচুর পানি পান এর একটা কারন হতে পারে। কবিতা নয়। আমি প্রচুর পানি খাই। রোজায় সবচেয়ে কস্ট পাই, পানি খেতে না পারার কারনে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
🙂 🙂
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ফয়েজ,
তুমি হইলা গিয়া ভালো পোলা। আমার মতো 'পানি' খাওনা। :)) :)) :))
:clap: :clap: :clap:
খুব ভালো হয়েছে আপা।
এইটাই তো আজকের দুনিয়ার ছবি।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
আমি ক্যাডেট কলেজ এ পড়াশোনা করি নি , ঠিক জানি না আদৌ আমার মন্তব্যটা করা উচিৎ কিনা। আপনার লেখাগুলি মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়লাম। ভালো লাগাটুকু জানাতে চাই। ঠিক এ ধরনের লেখা আরো পড়তে চাই, লিখলে খুশি হবো।
আসমা খান
আসমা,
ক্যাডেট কলেজে পড়েননি বলে এই ব্লগের সদস্য হয়তো হতে পারবেননা, কিন্তু পাঠে এবং মন্তব্যে সাবলীল অংশগ্রহণ সবসসময়েই করতে পারবেন, নির্দ্বিধায়।
অনেক ধন্যবাদ নুপুর কান্তি।
আসমা খান - নুপুর'দা যেমন বলেছেন আসলে ব্লগ তো সবার পড়ার জন্য। এই যে আপনি পড়ছেন, কমেন্ট করছেন এসব লেখার উৎসাহ বাড়িয়ে দেয়। আমার কিছু নিরব পাঠক আছে যারা ক্যাডেট না, কিম্বা কখনও কমেন্টও করেনা, কিন্তু ্মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেয় লেখার কথা, আইডিয়া দেয় বিষয়বস্তু সম্পর্কে।
আমার অতীত বয়ান বলে একটা সিরিজ আছে - সেখানে এইসব বিষয়ে অনেক লেখা পাবেন।
্ধন্যবাদ এই ব্লগে আসার জন্য।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ওয়াহিদা, আমি আপনার লেখা গুলি বিশেষ করে পুবের মানুষ যখন পশ্চিমে খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম, আমার ভাবনা গুলিকে আপনি ছুঁয়ে দিয়েছেন। পশ্চিমের পেশাজীবি পুবের মেয়েদের দৈনিক জীবনের চ্যালেন্জ, বিশ্বাস, উপলব্ধি গুলি নিয়ে পড়তে চাই, আপনার লেখায় যুক্তি নির্ভর শব্দ চয়নের মুন্সিয়ানা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
এধরনের লেখার জন্য অশেষ ধন্যবাদ, পরের লেখার প্রত্যাসায় রইলাম।
তোমার এই সিরিজের এই পর্বটি সবথেকে ভালো লেগেছে আমার। প্রতিটি পর্ব পড়েই বলবার মতো অনেক কিছু মাথায় এসেছিলো (ভাবনার বেশ ভালো খোরাক জুগিয়েছিলো) , কিন্তু আইলসা বলে কিছুই আর বলা হয়ে ওঠেনি সেভাবে।এবারের পর্বেও রাব্বী বা মাহমুদের থেকে বেশি কিছু বলতে পারবোনা, তবে তোমার সংহত ভাবনাটুকু অনায়াস পড়ে নেয়া গেলো, বোঝা গেলো।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য। রাব্বী, মাহমুদের উত্তরে বার বার একটি কথাই আমি বলেছি যে প্রাকটিক্যাল আমেরিকানদের অভিবাসী জীবন বৃটেন থেকে খুব একটা আলাদা নয়।
পাঠ্যবই ঘাটলে আমরা ইতিহাসটুকু সহজেই জানতে পারি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমি বর্তমান অভিবাসীদের নিয়ে তথ্যপূর্ণ কোন লেখা পাইনি যা বাস্তবতা তুলে ধরে। এই বিষয়ে আমি বিস্তারি্ত একটা ব্লগ লিখবো আশা করি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু,
অভিবাসীদের বর্তমান এবং অতীত নিয়ে প্রচুর গবেষণা হচ্ছে সামাজিক বিজ্ঞানের নানান ডিসিপ্লিনে। সমাজবিজ্ঞানের কয়েকটা বিশেষ ধারাই আছে এই ক্ষেত্রে, যেমন, রেস-এথনিসিটি-ন্যাশনালিটি, মাইগ্রেশন, সিটিজেনশীপ, ইত্যাদি। হত দুই বছরে আমেরিকায় চাইনীজ অভিবাসীদের নিয়ে একটা কোর্সে টিএ করার সুবাদে চীন থেকে আমেরিকায় মাইগ্রেশনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটসহ বর্তমানের নানান দিক নিয়ে পড়া, আলোচনা এবং পড়ানোর সুযোগ হয়েছে।
আমেরিকায় সেন্ট্রাল- এবং দক্ষিণ-আমেরিকা থেকে আসা অভিবাসীদের বর্তমান নিয়ে বাস্তব তথ্যভিত্তিক গবেষণা হচ্ছে প্রচুর, কোয়ালিটেটিভ- কোয়ান্টিটেটিভ উভয়ই।
যদিও আমার ফোকাস মাইগ্রেশন এবং অরিজিন দেশে রেমিট্যান্সের প্রভাব, ডেস্টিনেশন দেশে অভিবাসীদের বিষয়ে ভালোই পড়তে হয়েছে এবং হচ্ছে। আপনি চাইলে আলাপ করা যাবে এই নিয়ে। (ইউসিএলএ সমাজবজ্ঞান পিএইচডিতে এবছর এক বাংলাদেশী মেয়ে ভর্তি হয়েছে যে আপনার উল্লিখিত বিষয়ে গবেষণা করবে)।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আপু,
আমার অবস্থান আপনার বিপরীতে। আমি বলি, কিছু কিছু সাধারণ বিষয়ে এই দুই দল অভিবাসীর অভিজ্ঞতা এক রকম হলেও দুই দেশের মাইগ্রেশন/ইমিগ্রেশন পলিসি আলাদা হওয়ার কারণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এই অভিবাসীদের অভিজ্ঞতা আলাদা হবেই। 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
অপেক্ষা করো এই বিষয়ে আমার পরের লেখার জন্য।
সমাজের মূল স্রোতে মিশে যাওয়ার পদ্ধতি দুই দেশে একই রকম। দেখো তুমি আবারও কাগজপত্রের কথা বললে। আমি কিন্তু প্রতিবারই বলছি তোমরা কথা বলছো তত্বীয় দৃষ্টিকোণ থেকে - কিন্তু বাস্তবতা এক নয়।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
পড়লাম,ভালোই লাগলো, াাগে পড়লে আমার লিখিতি বিয়ে ও সংসার নামক বইটিতে কাজে লাগাতাম
" াাগে পড়লে আমার লিখিতি বিয়ে ও সংসার নামক বইটিতে কাজে লাগাতাম"
🙂
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi