(কিঞ্ছিৎ ভূমিকাঃ আমার কম্পিউটার বিগড়ানোর আর সময় পেল না। সিসিবিতে কতো নতুন পোষ্ট! নারী দিবস উপলক্ষ্যে নতুন একটা লেখা দিতে চেয়েছিলাম তা আর পারলাম না। ঘরওয়ালার কম্পিউটার ধার করে লিখছি এখন। পুরনো একটা রেডিমেট লেখা পোষ্ট করছি। এজন্য আ্ন্তরিকভাবে দুঃখিত। লেখাটা প্রবাসের একটা পত্রিকায় ছাপানো হয়েছিল। এক বছর আগের লেখা। এর মধ্যে দিয়ে পদ্মায় অনেক পানি প্রবাহিত হয়ে গেছে। কিন্তু আমার চিন্তাভাবনা একদম আগের জায়গাতে রয়ে গেছে বলে এই লেখাটার একটা শব্দও আর পরিবর্তন করলাম না)
১
নারীর ক্ষমতায়ন শব্দটি দিয়ে আসলে কী বোঝায়? আমরা যারা আম-জনতা তারা এক ঝলক ক্ষমতায়ন শব্দটা দেখেই একে ক্ষমতাশালীর সমর্থক বলে কিছু একটা মনে করি আর মনে মনে ভাবি বাংলাদেশে আর কতো নারীর ক্ষমতায়ন দরকার – প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী সবই তো নারী। আর কতো?
কিন্তু এই গুটিকয়েক পদভারী নারীদের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সমাজের চারপাশে তাকালে কী দেখবো? দৈনিক পত্রিকার একভাগ জুড়ে নেত্রীদের ফিতা কাটা আর অধিকাংশ অংশ জুড়ে নারী নির্যাতনের কাহিনী বাংলাদেশে নারীর করুন অবস্থানটিই তুলে ধরে। এমনিতেই আমাদের দেশে অপরাধের শেষ নেই, তার উপর নারী হলে তো কথাই নেই। ইভ টিজিং, এসিড সন্ত্রাস, ধর্ষন, বাল্য বিবাহ, পারিবারিক সন্ত্রাস, অশিক্ষা, কুসংস্কার, যৌতুকের মতো অপরাধগুলো দৈত্যের মতো তাদের পিছু পিছু ধাওয়া করতে থাকে। এখানে প্রতিপক্ষ কিন্তু একা পুরুষ নয়, প্রতিপক্ষ সামগ্রিকভাবে সমাজের মানসিকতা যা আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি।
এই সমাজে কয়জন আছে যারা একবার হলেও এই মানসিকতার সংস্কারবোধের প্রয়োজনীয়তা উপলদ্ধি করে পদক্ষেপ নিয়েছে? নিঃসন্দেহে খুব একটা বেশি নেই। যে দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবেই সংস্কার শব্দটিকে কালো তালিকাভূক্ত করা হয় সে দেশে আম-জনতার কী দায় ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর? তাই ঘটা করে নারী দিবস কিম্বা নারী নির্যাতন দিবস পালন করেই সেই পৌনঃপুনিক জীবনে এক কাপ চায়ের পেয়ালা হাতে পত্রিকা খুলে দেখি রহিমের প্রেম প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় রাহেলার মুখ এসিডে ঝলসালো। কারণ মাস্তান রহিমের কাছে রাহেলা ছিল সুন্দর মুখের একটা মাংশপিন্ড মাত্র – কোন মানুষ নয়। কেন? এখানে রহিমের মায়ের ব্যর্থতাও আছে যে তিনি ছেলেকে নারীদের ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল করে গড়ে তুলতে পারেননি বা করেননি। না করাটা তার নিজের অশিক্ষা এবং দূরদৃষ্টির অভাব আর না পারাটা এক ধরনের অক্ষমতা বা ক্ষমতায়নহীনতা যা আমাদের দেশের অধিকাংশ নারীই ভোগ করছে। অধিকাংশ সংসারেই নারীর নিজস্ব কোন কণ্ঠস্বর নেই। এর পেছনের কারণ হয়তো সংসারে যে কাজ সে করছে তার স্বীকৃতি নেই কিম্বা কোন রকম টিকে থাকার সংগ্রামে যুদ্ধরত তার হাতে সন্তানের জন্য কোন সময় নেই অথবা হাতে অর্থ নেই, শিক্ষা নেই ফলস্বরূপ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই।
এতোসব নেই নেইকে অতিক্রম করার পোষাকী নামই হলো ক্ষমতায়ন। এ ক্ষমতায়নে আসলে লাভ কার? যে রাহেলা আজ জীবমৃত হয়ে জীবন কাটাচ্ছে তার নাকি যে রহিম আজ জেলের ভেতরে পচছে তারও? কে অস্বীকার করবে যে নারীর ক্ষমতায়ন আসলে সমাজ উন্নয়নের অন্যতম প্রাথমিক শর্ত? দেশের সর্বস্তরে নারীদের মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার অধিকারের প্রতিষ্ঠা পাওয়াকে আর ভয় পাবার কোন কারণ নেই। এখনই সময় আর দেরী না করে কাধে কাধ মিলিয়ে নারী-পুরুষ সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে লিঙ্গ বৈষম্য কমিয়ে এনে আমাদের সন্তানদের সামনে সুন্দর ভবিষতের নিশ্চয়তা দিতে।
২
বাংলাদেশে বিংশ শতাব্দীর শুরুতে নারীদের প্রধান বাঁধা ছিল শিক্ষার সুযোগ। সে সময়ের কঠোর ধর্মীয় আর সামাজিক অনুশাসন ভেঙ্গে অনেক পরিবার এগিয়ে এসে নারীদের শিক্ষিত করা শুরু করেছিলো। কিন্তু তা মূলত অবস্থাপন্ন পরিবারগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এরপর বাংলাদেশে জনসংখ্যা অনেকগুন বেড়েছে – সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্রান্িতক নারীদের দূর্দশা। অনেকটা সময় চলে যাওয়ার পর বিভিন্ন সরকারী এবং বেসরকারী উদ্যোগে কিছুটা হলেও গ্রামাঞ্চলের নারীরা শিক্ষা এবং উৎপাদনশীলতায় অংশ নেওয়ার সূযোগ পেল। এক্ষেত্রে ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের গ্রামীন ব্যাংক এবং ফজলে আবেদ খানের ব্র্যাকের নাম উল্লেখ করতে হয়। এই দুটো সংস্থা নিয়ে অল্পবিস্তর কিছু বিতর্ক থাকলেও আমাদের মানতে হবে যে অন্তত্ব একজন হলেও বৈঠকখানার আড্ডা ছেড়ে, তাত্বিক সমালোচনার কলামে নিজেকে ব্যস্ত না রেখে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহনের মাধ্যমে প্রান্িতক নারীদের একটা পথ দেখিয়েছে। এর আগে তাদের সামনে এগুনোর পথ আগলে যে দুর্গম পাহাড় দাড়িয়ে ছিল তার মধ্যে দিয়ে অপ্রশস্ত হলেও একটা পথ তৈরী হয়েছে। কে জানে হয়তো অদূরেই আরো বহু পথ মিলে একদিন এ পথই প্রশস্ত রাজপথে পরিনত হবে।
পাশাপাশি গত দু-তিন দশক ধরে বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্প বিকাশের সাথে সাথে শহরাঞ্চলেও প্রান্িতক নারীরা আত্মমর্যাদা আর আত্মনির্ভরশীলতার একটা প্লাটফর্ম খুঁজে পেল। সকালে মিরপুরের দশ নম্বর গোল চক্করের সামনে দাড়লে গার্মেন্টস কর্মীদের ঢল কিম্বা ঢাকা শহর থেকে দূরে প্রতন্ত গ্রাম মধুপুরের কোনোমেঠো পথ দিয়ে সাইকেল বা হোন্ডায় চড়া গ্রাম্যতরুনী কোন বিরল দৃশ্য নয়। এসব দেখলে মনে হয় ওরা এগিয়ে যাচ্ছে। সেই তুলনায় আমাদের নাগরিক নারীরা কতদূর এগিয়েছে?
৩
বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে আর কোন দ্বিধাদ্বন্ধ নেই। বোর্ডের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাগুলোতে মেয়েদের সাফল্য প্রশংনীয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনগুলোতে নারীরা এখন আর কোন দৃষ্টব্য উপাদান নয়। এরা খুব ভালো ফলাফলও করছে। সংখ্যায় কম হলেও অফিস-আদালতে নারীদের দেখা যাচ্ছে। সংখ্যায় কম হওয়ার অন্যতম কারণ নারীদের মাতৃত্ব এবং সংসারের প্রতি দায়িত্ব। এ দুটো কাজই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না বলে নারী হারাচ্ছে তার স্বীকৃতি, অতিক্রম করতে পারছে না লিঙ্গ বৈষম্য। অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা এখনও নারীদের ক্ষমতায়নের একটা প্রধান উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। এর সাথে পরোক্ষভাবে সামাজিক প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও জড়িত। তবে অন্য সব কিছু পাশ কাটিয়েও একজন নারী সমাজসেবার মাধ্যমে সামাজিক ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এক্ষেত্রে সদিচ্ছাই বড় মন্ত্র। নারীকেই উদ্ভাবক হতে হবে তার নিজের সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে। একজন মা তার নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে মেয়ের মাঝে তা সঞ্চালিত করতে পারেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আমরা একই ভুলের আবর্তে স্থবির থাকতে পারিনা। শিক্ষার ক্ষেত্রটা শুধু প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই চলবে না। ঘর ও বাহির দুটোর সমন্নয় করে নারীকে এগিয়ে যাবার দীক্ষা দিতে হবে।
৪
বাংলাদেশে প্রকোশল, চিকিৎসক, বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয় বা ব্যবসা নিয়ে লেখাপড়া করা মেয়েদের অনেকেই প্রবাসে চলে আসছে। তুলনামূলক ভাবে প্রবাসে নারীর ক্যারিয়ার তৈরী করার অনেক সুযোগ থাকলেও দেখা যাচ্ছে অনেক উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার পরও একটা বিশাল সংখ্যক নারী সেই সুযোগটা নিচ্ছে না। কারণ হিসেবে এদের অনেকেই সংসার-সন্তানকে প্রাধান্য দেবার কথা উল্লেখ করে। কিন্তু কথা হলো প্রায় ত্রিশ বা ততোর্ধ বয়স পর্যন্ত নিবেদিত প্রাণ হয়ে লেখাপড়া করার পর একজন বুদ্ধিমান নারীর হঠাৎ করেই এই বোধোদয় আসবে কেন? তার পড়াশোনার উদ্দেশ্য ছিল কী শুধুই একজন সুপাত্রস্থ হওয়া? প্রকৌশল, চিকিৎসা বা বিভিন্ন পেশাজীবিভিত্তিক বিষয়ে তো দর্শন , সংসার বা সন্তান পালনের কোন শিক্ষা পাওয়া যায় না। এই অপচয় শুধু কোন ব্যক্তির একার নয়, তা দেশেরও। কারণ এদের পেছনে গরীব দেশকে অনেক অর্থ খরচ করতে হয়েছে।
মধ্যবিত্ত পরিবার এখন নিউক্লিয়ার ফ্যামেলি। সচ্ছ্বলও হয়েছে। মেয়েরা কথাশোনা লক্ষ্মী শ্রেনী বলে কথা শুনছে। সারাক্ষন লেখাপড়া গিলছে। অনেক ভালো ফলাফল করছে। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যাচ্ছে মায়ের সংসারের সেই নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ ছেড়ে যখন নিজের দায়িত্ব নিজেই নিচ্ছে তখন একই সাথে ঘরে-বাইরে সামাল দেওয়ার বর্হিমূখী পারদর্শিতার অভাব পরবর্তীতে তাকে পিছিয়ে দিচ্ছে। বিষয়টা অনেকটা ডলফিনের নাচ শেখার মতো। একটা ট্রেনিংপ্রাপ্ত ডলফিন নাচ দেখাচ্ছে, স্বাধীন ডলফিন তা দেখাচ্ছে না। নাচ জানা ডলফিন স্বাধীন হয়ে যেমন নাচ দেখায় না ঠিক তেমনি অতি নিয়ন্ত্রিত মেয়েদের জীবনের গতিও থিতিয়ে আসে পরবর্তী স্বাধীন জীবনে। তারা বুঝতে পারছে না কিভাবে ছোট পৃথিবী ছেড়ে বড় পৃথিবীতে এসে কিভাবে এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। অনেকসময় ইগোও বাধা হয়ে দাড়ায়। কারণ আমরা আমাদের ছোট পৃথিবীতে অল্পতেই খুব বেশি প্রশংসিত। তাই প্রবাসে এখন এই দৃশ্য অনেক বেশি পরিচিত যে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ে আসা শিক্ষিত নারীরা প্রগতিশীল মায়ের ভূমিকা পালন না করে অনেকবেশি ধর্মীয় গোঁড়ামীর আশ্রয় নিচ্ছে। গোঁড়া ধর্মবাদ নারীর ক্ষমতায়ন স্বীকার করে না। নারী হারাচ্ছে তার নিজের উপর বিশ্বাস। যে নারী নিজেই স্বপ্ন দেখতে ভুলে যাচ্ছে সে তার সন্তানের মধ্যে কতটুকু স্বপ্নের বীজ বপন করতে পারবে?
আমি ঢাকার রাস্তায় একজন একজন গার্মেন্ট কর্মীর মুখে যে আত্নবিশ্বাসের দিপ্তী দেখেছিলাম, আমেরিকায় এসে অনেক নারীর মুখেই সেই দিপ্তীর ছিটেফোটাও খুঁজে পাইনি। যে শিক্ষিত সমাজের দায়িত্ব ছিল প্রগতির মশালটা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার – কেন জানি মনে হয় তাদের একটা বিরাট অংশই দ্বিধাগ্রস্ত।
৫
একই সাথে ঘরে বাইরে সামাল দেওয়া এবং উভয় ক্ষেত্রেই সফল হওয়া আজকের নারীর জন্য একটা কঠিন পরীক্ষা। কারণ অনেকাংশেই পথটা অজানা। চলতে চলতে ঠেকে ঠেকে নিজেকেই তা শিখে নিতে হচ্ছে। হয়তো আজকের নারীর সংগ্রাম সহজ করে দিবে আগামী নারীদের চলার পথ।
মা যেমন শিক্ষক আবার মেয়ে সন্তানদের রোল মডেলও বটে। অলিখিতভাবে ছেলেরা বাইরের পৃথিবীতে আসছে, নিজেদের প্রতিষ্ঠা করছে। তাই কোন অভিধানে পুরুষের ক্ষমতায়ন শব্দটা নেই। মেয়েদের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে গেলে গড়পত্তা একজন ছেলের থেকে বেশি শ্রম দিতে হয় এবং বেশি দায়িত্ব পালন করতে হয়। বহুমাত্রিক না হলে একটা মেয়ের পক্ষে ক্ষমতায়ন অনেকটাই অসম্ভব। এর মানসিক প্রস্তুতিটা অনেক আগে থেকেই নিতে হয়। পরিবার এই প্রস্তুতির প্রধান ক্ষেত্র। সে অনেকটাই মা বা পরিবারের অন্যান্য নারীদের দেখে শেখে অথবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আশ্বাস, উৎসাহে নিজের ভবিষৎ গড়ে তোলে। খুব প্রতিভাবান ছাড়া বিষয়টা অনেকটা প্রজন্মের প্রগতিশীল ধারাবাহিকতার ফল।
কর্মজীবি নারীদের সামনে একটা জ্বলন্ত প্রশ্ন সন্তান, সংসার না ক্যারিয়ার কোনটা আগে? অনেকেই ঝামেলা এড়াতে আর সন্তান-সংসারের পথে পা বাড়ায় না। মূলত কর্মজীবি মায়েদের সাফল্য নির্ভর করে সময়ের যথার্থ ব্যবহারের মাধ্যমে। ব্যতিক্রম ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কিন্তু এসব মায়েরা সন্তানকে অগ্রাধিকার দেন। তাদের উপার্জনের একটা বড় অংশই সন্তানের শিক্ষা এবং সহশিক্ষার পেছনে ব্যয় করেন। নিজেকে প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটা সুন্দর ভবিষৎ তৈরী করার মধ্যেই আসল সার্থকতা। তারপরও কর্মজীবি মায়েদের মনের ভেতর ক্রমশ টানাপড়েন চলতে থাকে। তার উপর আছে সামাজিক চাপ যার অনেকটাই উৎস ধর্মীয় গোঁড়াবাদ। কিন্তু মুসলিম ধর্মে তো দেখি যে মহানবী (সঃ) জন্মের পর পরই ধাত্রীমাতা হালিমার কাছে মানুষ হয়েছিলেন। তাহলে তো ধর্মের দোহাই দিয়ে ডে-কেয়ার পর্দ্ধতির সমালোচনা করা উচিত নয়। মুসলিম মহিলারা সবচেয়ে বেশি ঘরে থাকে। অথচ তাকিয়ে দেখি নারী তো বটেই পুরুষদের ক্ষেত্রেও অর্থাৎ পুরো মুসলিম জাতিই ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি। এ সমস্যাটাও আমাদের চোখে খুব বড় হয়ে দেখা দেয় না কারণ মুসলিম সমাজ অতিমাত্রায় অদৃষ্টবাদে বিশ্বাসী। পক্ষান্তরে এই আমেরিকাতেই দেখছি ভারতীয় এবং চাইনীজ নারীদের ক্ষমতায়নের জোর। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও দেখা যায় অধিকমাত্রায় এসব ক্ষমতাবান নারীদের সন্তানদের উপস্থিতি। কোম্পানীর উচ্চপদে আজ অনায়াস অধিকার।
এরকম আরো অনেক উদাহরন দেখে আমার ধারণা হয়েছে যে আমরা মায়েরা মনে মনে সন্তানকে নিয়ে যতো বড়ই আশা করি না কেন – পরিশেষে সন্তান কিন্তু মায়ের মূল্যবোধটাই ভেতরে ধারণ করে এবং সে ছাঁচেই তার জীবন পস্ফুটিত হয়। এজন্য দেখা যায় যে পরিবারের মেয়েরা যতো আগে থেকে ক্ষমতায়নের পথে এগিয়েছে সে পরিবারের মেয়েরা তথা সে জাতি ততো বেশি অগ্রগামী।
৬
নারীর ক্ষমতায়ন শুধু নিজের অর্থনৈতিক বা সামাজিক প্রতিষ্ঠার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় – মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত সমাজে নিজেদের কণ্ঠকে জোরদার করার মাধ্যমে নিজস্ব চিন্তাভাবনাকে তুলে ধরা। নিজেদের ব্যাপারে শ্রদ্ধাবোধ না জাগাতে পারলে লিঙ্গবৈষম্য কমবে না। এর প্রাথমিক শর্তই প্রগতিশীলতার ধারাবাহিকতা। দেখা যায় যে যেখানে নারীরা যতো আগে ক্ষমতায়নে এসেছে পরিবারের অর্থনীতির বুনিয়াদ ততো শক্ত হয়েছে। সেক্ষেত্রে নারীরা সমাজের অন্যন্য ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহন করতে পেরেছে, নিজের ক¥স্বর জোরালো করতে পেরেছে। সমাজ যদি একজন নারীর ক¥স্বরকেও গুরুত্ব দেয়, তবে সে হাজারো নারীর পক্ষে কথা বলতে পারে। নারীরা যদি তাদের কথা নাই বললো তবে কে তাদের সমস্যার কথা বলবে? আমাদের দেশেই জন্মেছেন নবাব ফয়জুন্নেসা, বেগম রোকেয়া, শহিদ জননী জাহানারা ইমাম।
এই লেখাটা পড়ে আয়েশা একটা মূল্যবান মন্তব্য করেছিল।
সেই মন্তব্যটি আমি আবার পোস্ট করছি। মূল কারণ এই মন্তব্যটি আমাকে ভাবিয়েছিল। আমার মনে হয় অনেক সময় না বুঝেই আমরা কিছুটা চাপ তৈরী করি। আমাদের আসল উদ্দেশ্য পরিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকা, ভাল থাকা, সুখে থাকা। মানব সভ্যতা এখনও অনেক উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে এগুচ্ছে। কোন পদ্ধতিরই সর্বোত্তম সমাধান বের হয়ে যায়নি। আমার লেখা শুধু একটা লেখাই। আমার কিছু ভাবনা। এরকম আরো অনেকের অনেক ভাবনা আছে। আশা করছি সেসব লেখা আকারে দেখতে পাব।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সকল পুরুষই তার মা কে ভালবাসে। সন্তান জন্ম দেয়ার মত অসীম ক্ষমতা যে নারীর, তারা যদি শুধু পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হত ...
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
শ্রদ্ধা জিনিষটা অর্জন করে নিতে হয়। নিজের কতটুকু স্পেস লাগবে সেটা জানতে পারলে এই অর্জনটা সম্ভব হয়।
আমার দৃষ্টিতে পূর্ব আর পশ্চি্ম গোলার্ধের নারীদের সমস্যা আলাদা আলাদা।
তবে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা শুধু নারী নয় পুরুষ-পুরুষ, পুরুষ-নারী সবার সমস্যা।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শান্তা,
যথারীতি সুন্দর লেখা।
আমার বাবা বলতেন ছেলে-মেয়েদের সঠিক শিক্ষা দেওয়া তাদেরকে সম্পতি দেওয়া বা ভাল বিয়ে দেবার চাইতে বেশী প্রয়োজনীয়। আমার ৬ বোনের সবাই নিজ গুনে শিক্ষিত, প্রতিষ্ঠিত এবং সার্থক ছিলেন বা আছেন তাদের জীবনে। তবে আমি মনে করি শিক্ষার সাথে সাথে এই বিষয়গুলির ব্যাপারে আমাদের পরিস্কার ধারনা গড়ে ওঠাতে হবেঃ
১) অর্থনৈতিক স্বাধীনতা
২) যৌন স্বাধীনতা
৩) মাতৃত্বের স্বাধীনতা
৪) ধর্মীয় স্বাধীনতা
৫) সামাজিক স্বাধীনতা
তবে এই প্রতিটি স্বাধীনতার সাথে অতিরিক্ত দায়িত্ব এসে পড়বে মেয়েদের উপর। সেটার ফলাফল জানতে হবে তাদেরকে।
[জানিনা আমার কথাগুলি সঠিক ভাবে বলতে পারলাম কিনা? কারণ প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এগুলির মানে করতে পারে]
সাইফ ভাই আপনার কথাগুলো বুঝতে পেরেছি বলে মনে হচ্ছে।
আপনার মেজবোন সাদেকা সফিউল্লাহকে আমার এখনও মনে আছে। ১৯৮১-১৯৮২ সালের দিকে উনি বোধহয় শিশু একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। শিশু একাডেমিতে আমি উনাকে দেখেছিলাম। আমি তখন শিশু ছিলাম। আমি যেই উপন্যাসটা লিখছি সেখানে উনার কথা একটু উল্লেখ করেছি।
আমি নিজেকে একদিক দিয়ে খুব ভাগ্যবান মনে করি এই জন্য যে আমি যেই পরিবারে জন্মেছি সেখানে বিভিন্ন রকম নারীদের দেখেছি। অনেক বৈচিত্র্যের সমাহার। এই পর্যন্ত মেয়েদের জীবনে যত রকম সমস্যা হতে পারে তার সব রকম সমস্যাই তাদের কারো না কারো জীবনে ঘটেছে। তাদের জীবন পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ আমার জীবনে একটা খুব মূল্যবান শিক্ষা। কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই শিক্ষা পাওয়া সম্ভব নয়।
আপনার স্বাধীনতা এবং দায়িত্ববোধের কথাটা খুব উল্লেখযোগ্য। দায়িত্ববোধ না জাগলে স্বাধীনতার যথাযথ ব্যবহার সম্ভব নয়।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শান্তা আপা, আপনি সব সিরিয়াস বিষয়গুলি নিয়ে চিন্তা করেন এবং লেখেন - ভালই লাগে পড়তে। একটা অভিজ্ঞতার কথা বলি, আমি তখন মাত্র ক্যাডেট কলেজে গেছি। একদিন লাইটস আউটের পর রুমমেটরা গল্প করছি। মাত্র সবার ফ্যামিলি সর্ম্পকে জানা শুরু করেছি। তো আমার এক রুমমেট তার বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়ে দিল যে আমার মা কোন দিন বেহেশতে যেতে পারবে না, কারণ সে চাকরি করে। বাকিরা আবার সেই বিষয়ে বিভিন্ন রেফারেন্স টেনে মতামত দেয়া শুরু করলো।
কি আজব কথারে বাবা! আমার মা, খালা, চাচী, মামী (ফুপু নেই) সবাই চাকরি করতো এবং অনেকে এখনো করে। যাইহোক, ধর্মীয় গরিমা কম থাকায় ডিফেন্ড করতে পারিনি সেদিন। পরে খেয়াল করে দেখলাম, ওদের কারো ফ্যামিলিতে মা-খালারা বাসার বাইরে কাজ করে না। প্লাস ফ্যামিলির ওরিয়েন্টেশনটা একটু অন্যরকম। আপব্রিংয়িং থেকেই মানুষ বেশি শিখে, আবার সময়ে ধারণা পরিবর্তন হয়। তো মজার ব্যাপার হচ্ছে যে এই কথাটা যে বলেছিল তার বউ এখন চাকরি করে এবং তারা একই পেশার। ক্ষমতায়ন জিনিসটা কতটা কার্যকরী তা নির্ভর করে ক্ষমতা কিভাবে পাওয়া এবং কিভাবে ব্যবহার করা হয় বা ব্যবহারের সুযোগ থাকে তার উপর।তবে এখনো মোটামুটি প্রায় সবখানে, কর্তার সংসার। পরিবর্তনগুলো হয়তোবা বাহ্যিক।
অশনিসংকেত তো বটেই, টেনশনে ঘুম পাতলা হয়ে গেছে!
আমার বন্ধুয়া বিহনে
হাতে কতগুলো অর্ধসমাপ্ত লেখা আছে। সেগুলো শেষ হলে 'লা লা লাস ভেগাস' টাইপের লেখা লিখব বলে ঠিক করছি। আমি বেশি বোরিং না ফানিও।
তুমি একটা খুব উল্লেখযোগ্য পয়েন্ট উল্লেখ করছো -
সময়ের ধারণাটা ঐ বেড়ে উঠার সময়েই বেশিরভাগ প্রোথিত হয়ে যায়। মা একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ পদ। সন্তান তথা প্রজন্ম তথা সামাজিক মনোভাব তৈরীতে মায়েদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
🙂
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
সাইফ ভাইয়ের মন্তব্যটি ভালো লাগলো। প্রতিটি স্বাধীনতা অতিরিক্ত দায়িত্ববোধের জন্মদেয়। আমার ধারনা, নারীদের একটা বড় অংশ ঘরের বাইরে যে দায়িত্ব আছে সেগুলো এড়িয়ে চলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাদের মধ্যে এই বোধ হয়ত পারিবারিক ভাবেই তৈরী হয়েছে, এবং তা তৈরী করতে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে ধর্মকে। পারিবারিক ভাবেই এই বোধ পরিবর্তন করতে হবে, আর শিক্ষার কোন বিকল্প আছে কি?
তবে আমার উপসংহার একটু আলাদা, নারীদের ক্ষমতায়ন তাদেরকেই করে নিতে হবে, এক্ষেত্রে পুরুষ ক্যাটালিস্ট হিসেবে কাজ করতে পারে মাত্র, তা ধনাত্মক বা ঋনাত্মক যেকোন ভাবেই হোক না কেন, বিক্রিয়ার মূল উপাদান তাদের (নারীদের) মাঝেই।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
সহমত তোমার প্রতিটা কথার সাথে।
আগেকার সেই বন-বাদাড়ে ঘোরার দিনগুলোতে আগে নারী-পুরুষ-শিশু একসাথে থাকতো। কিন্তু বর্তমানের এই আধুনিক যুগে সন্তান চলে যায় স্কুলে, স্বামী চলে যায় অফিসে - হঠাৎ করেই নারী একা এবং নিজেকে কিছুটা গুরুত্বহীন বলে ভাবতে শুরু করে। সমস্যার শুরু এখান থেকেই। নারীর অবজেক্টিভ হওয়া উচিত কিভাবে নিজেকে সে গুরুত্বপূর্ন ভাবতে শিখবে - প্রথমে নিজের চোখে তারপর অন্যের চোখে। পরিপূর্নভাবে বেঁচে থাকার জন্য এই বোধটা খুব জরুরী। এখন আর তাকে কেউ টেনে ধরে ্রাখছে না। বল এখন অনেকটাই নারীর কোর্টে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আচ্ছা আপু, আপনার কাছে নারীর ক্ষমতায়নের ছবিটা ঠিক কেমন? হঠাৎ জানতে ইচ্ছে হল, তাই।
তোমাকে গুগল থেকে পাওতা সংজ্ঞাটা দিই -
Empowerment refers to increasing the spiritual, political, social, or economic strength of individuals and communities. It often involves the empowered developing confidence in their own capacities.
সহজ কথায় বলতে গেলে লিংগ বৈষম্য কমে গিয়ে একটা ভারসাম্য অবস্থা বিরাজ করবে। প্রকৃতি ভারসাম্য পছন্দ করে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আমি কিন্তু আপু সংজ্ঞা জানতে চাইনি। সমাজবিজ্ঞানে সংজ্ঞা অনেক অ্যাবস্ট্রাক্ট একটা বিষয়। আমি আপনার কাছে নারীর ক্ষমতায়নের 'ছবি'-টা জানতে চেয়েছিলাম। মানে নারীর ক্ষমতায়নকে আপনি ঠিক কিভাবে ভিস্যুয়ালাইজ করেন। আপনার কাছে কখন মনে হবে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে?
গুলশান - লেখাটায় যেসব নারীদের নাম উল্লেখ করেছি তারা (ঁ ব্যবহার করছি না) আমার কাছে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিচ্ছবি।
এর মধ্যে সাইফ ভাই, রাব্বী, মাহমুদ তাদের মন্তব্যে যেসব নারীদের কথা উল্লেখ করেছে তারাও অন্তর্ভূক্ত।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু,
কয়েকদিন আগে আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ফেমিনিজমকে আপনি কিভাবে দেখেন। এই পোষ্টে সেই প্রশ্নের উত্তরটা সরাসরি না-বলেও খুব ভালো ভাবে দিয়ে ফেললেন। আমার ইচ্ছে করছে এই পোষ্টটা ঢাবি'র সমাজবিজ্ঞানের "না-বুঝে নারীবাদী" ম্যাডামদের দেখাই। জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর ক্লাসে দুইদিন গিয়ে আর ও'মুখো হইনি।
আমার মা'রা ছয় বোনের মধ্যে আম্মাসহ পাঁচজন প্রাইমারী স্কুলে পড়ান, আরেকজন সমাজসেবায় চাকুরী করেন। কিন্তু আমার বেঁচে থাকা পাঁচফুফুর সবাই স্বল্পশিক্ষিত এবং ঘোরতর সংসারী। তাই, নিজের পরিবারের মধ্যেই দেখে এসেছি নারীর ক্ষমতায়নে শিক্ষা আর অর্থোপার্জনের গুরুত্ব। তবে এনজিও আর গার্মেন্টসের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আপনার ধারণার সাথে বিপরীত মত পোষণ করি।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ - উৎসাহ পেলাম তোমার মন্তব্য। যেহেতু এই বিষয়টা আমি স্বশিক্ষিত, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তাই আমার ধারনাটা প্রকাশ করতে গেলে অনেক কথায় লিখতে হয় - এখনও অল্প শব্দে বেশি ভাব প্র্কাশ করতে পারি না। তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আসলে সে বিষয় নিয়ে কিছু পড়াশোনা করতে শুরু করেছিলাম। তাই আর উত্তর দেওয়া হয়নি।
প্রান্তিক নারী ছাড়া স্বচ্ছল নারীরাও বেশ ক্ষমতাহীনতায় ভোগে। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আছে, আবার অর্থও সমস্যা নয় - তারপরও কেন যেন বৃত্তে আটকে পড়ে আছে। এই ব্যাপারটা উল্লেখ করেছি। পেছনের ব্যাখ্যাটা খুঁজছি। তুমি কিছু জানলে জানিও।
আসলে ওদের তেমন কোন অপশন নেই। দেশে আমার বোন অনেক প্রান্তিক নারীদের নিয়ে কাজ করে। সেখানে দেখেছি ওদের সামনে এই দুটো পথ ছাড়া আর বাকী অপশনগুলো হলো, কাজের বুয়া, দেহব্যবসা, নারী পাচার, বিয়ে। এখন বিয়েটাও খুব সমস্যা হচ্ছে এই কারণে যে বিপুল সংখ্যক পুরুষরা শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন দেশে চলে গেছে। মূলত তাদের কারনে নারী পাচারের সংখ্যাও বাড়ছে।
আশা করবো কেউ এসে নতুন কোন তত্ব প্রয়োগ করবে তারা প্রান্তিক নারীরা তাদের সামনে নতু্ন আশার আলো খুঁজে পাবে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু, আপনার লেখাটা ফেইসবুকে শেয়ার দিলাম, অনুমতি না নিয়েই। অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা করে কিন্তু বলা হয়ে ওঠে না।
ধন্যবাদ আপু।
খুব ব্যস্ত? হঠাৎ করেই তুমি এবং আরো সব নারী সিসিবিয়ানরা এখান থেকে উধাও হয়ে গেছে। ব্যাপারটা খুব কাকতালীয়। আবার সবার পদচা্রনার আশায় আশায় দিন গুনি।
চিন্তাভাবনা লুকিয়ে রাখতে নেই। কোন দ্বিধা না করে তোমার কথাগুলো লিখে ফেল। কে জানে হয়তো তা কারো না কারো উপকারে আসতেও পারে।
আমার ফেসবুক আইডি wahidaafza@gmail.com. পারলে যোগ করো।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু হাল্কা দৌড়ের উপর আছি। তবে সব লেখা পড়ি। আপনার টা একাধিক বার পড়ি 😀
একজন পুরুষ যতোটা ক্ষমতাবান, একজন নারীকেও ততোটা ক্ষমতাশালী চাই আমি। নারী-পুরুষের দেহের পার্থক্য ছাড়া আর কোনো পার্থক্য গ্রহণযোগ্য নয়। এটা পুরুষের জন্য অশনিসংকেত কেন হবে শান্তা? যে পুরুষ মেধায়-যোগ্যতায় দুর্বল সে যোগ্য-মেধাবী নারীকে ভয় পেতে পারে। আর নারী-পুরুষের সাম্যের যুদ্ধটা শুরু করতে হবে পরিবার থেকেই।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানা ভাই - অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলে তো অশনিসংকেত না - সেটা বোঝানোর জন্য শিরোনামটা এরকম দিয়েছি। আমি চিন্তা করেছি অধিকাংশ পুরুষ আসলে বিষয়টাকে কেমন দৃষ্টিতে দেখে।
কেন ভারসাম্য দরকার সে ব্যাপারটা অনেকের কাছেই পরিষ্কার নয়। সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহন বাড়ানোর কথা বলছে - মজার ব্যাপার হলো বক্তাদের কাছেই বিষয়টা পরিষ্কার নয়। তাই এখন প্রশ্ন উঠছে নারী বেশি স্বাধীন হলে সংসার ভেংগে যায়। একটা সমস্যা আরেকটা সমস্যার ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ব্যক্তিগত পড়াশোনার ব্যস্ততায় অনেক দিন পর সিসিবিতে আসলাম। এসেই দেখি নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আপনার ব্লগ।
আপনার লেখার ধরণ, বিষয়বস্তু, শব্ধ চয়ন, ইত্যাদি নিয়ে নতুন করে কি আর কিছু বলার নেই। যথারীতি সাবলীল আর আকর্ষনীয়। আমি আগে থেকেই আপনার লেখার এক বিরাট ভক্ত।
আপনার ব্লগ পড়ার পর আমার নিজের কিছু কথা শেয়ার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মন্তব্যের ঘরে লিখতে গিয়ে দেখি পরিসর শুধুই বেড়ে যাচ্ছে। তাই আলাদা করে পোষ্ট আকারে মডারেশনে জমা দিলাম।
আপু, আপনার চমংকার লেখার জন্য ধন্যবাদ। কানিজ ফাতিমা সুমাইয়ার লেখা আগে পড়েছি। সেখানে যে মন্তব্য করেছি, তা এখানেও তুলে ধরছি-
নারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি ও মানসিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার মতো যে শক্তিশালী সামাজিক আন্দোলনের প্রয়োজন এবং বেগম রোকেয়াদের মতো নির্লোভ নেতৃত্বের প্রয়োজন, তা বর্তমানে খুবই অভাব রয়েছে। এক্ষেত্রে চরমপন্থা অবশ্যই ক্ষতিকর। নারীর ক্ষমতায়ন, সমাধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা সমমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করার জন্য নারী-পুরুষ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন, কেউ কারো প্রতিদ্বন্দ্বি নয়-এটা ভালো করে অনুধাবন করা দরকার। সমাজের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারীর উন্নয়ন প্রয়োজন, বিবেকবান পুরুষরা তা বুঝতে সক্ষম আমি তা মনে করি। এক্ষেত্রে একে অপরের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা প্রতিযোগিতা নয়। এবং তাসলিমা নাসরিনের মতো চরমপন্থা কোনভাবে কাম্য নয়।
লেখাটি পড়শি নামের একটি অনলাইন প্রকাশনাতেও দেখলাম