অতীত বয়ান – কেউ যদি শুনতে চায় (চিত্র প্রদর্শনী)

বিয়ের পর যখন মেজবোন বাসা ছেড়ে তার নতুন ঠিকানায় চলে গেলেন, তখন তার পেছনে ফেলে রেখে যাওয়া সমুদয় সাম্রাজ্যের অধিকারী হয়ে গেলাম আমি। রং, তুলি, আঁকার কাগজ, ক্যানভাস যা আগে তৃষিত নয়নে দূর থেকে দেখতাম, নিজের অধিকারে আসার পর সে সবের উপর চললো আমার নিরন্তন অত্যাচার। এরপর ক্যাডেট কলেজে যাওয়ার পর ক্লাব বেছে নেওয়ার সময় একটুও দ্বিধায় পরতে হলো না। ইলোরা, সেতু, পলি, খুকু, নিতা, নিলা, তুহীন আর আমি মিলে তখন মাফরুহা ম্যাডামের আর্ট ক্লাব জমিয়ে রেখেছিলাম। এ্যডজুটেন্ট স্যার, ভিপি সবাই জানতেন যে আর্ট ক্লাবে আছে কতগুলো দুষ্ট-দুষ্ট, মিষ্টি-মিষ্টি মেয়ের সমাহার। তাই ক্লাবের সময়টাতে ওনারা সেখানে কিছু সময় কাটাতে ভূলতেন না। সে সময় ম্যাডাম আমাদের কত কিই না শিখিয়েছিলেন। ভাবতে অবাক লাগে মধ্যে দিয়ে কত বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু সেই সব টেকনিকগুলো এখনও মাথায় রয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে ছুটির দিনে নিজের ছেলেমেয়ে আর পাড়ার ইন্ডিয়ান, চাইনীজ, আমেরিকান বাচ্চাদের নিয়ে ছবি আঁকতে বসে যাই। তখন ম্যাডামের কিছু কিছু টেকনিকগুলো কাজে লাগাই। ক্যাডেট কলেজে থাকার সময় আমরা আর্টিস্ট বন্ধুরা মিলে ভবন পরিদর্শনের সময় পাল্লা দিয়ে নিজ নিজ ভবনকে সাজানো, একুশের ম্যাগাজিন বের করা আবার একসাথে চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন, বড় কোন অনুষ্ঠানে কলেজ সাজানো – এরকম কতো কিই না করেছি। প্রিন্সিপ্যাল সলিমুল্লাহ স্যার একবার বড় করে চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করলেন। হাশেম খান সহ আরো অনেক বড় বড় শিল্পী এসেছিলেন। সে সময় স্যার একটা বিশেষ কারণে আমাদের উপর একটু রাগ করেছিলেন। আশা করি পরে সেটা আবার ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি দেখেছেন।

তারপর যা হয় – ক্যাডেট কলেজ থেকে বের হয়ে নানা কাজ আর অকাজে ব্যস্ত হয়ে পরা। বুয়েট থেকে মাঝে মধ্যে বন্ধুরা মিলে দৃক গ্যালারী, জার্মান কালচারাল সেন্টার, আর্ট কলেজ আর কোথায় কোথায় যেন চিত্র প্রদশর্নী দেখতে যেতাম। ছবিগুলো দেখে বুকের ভেতরটা দুমড়ে উঠতো। মাঝে মধ্যে রংতুলি হাতে নিলেও অনভ্যাসের জন্য দেখতাম আমগাছ হয়ে যেত তাল গাছ, বক হয়ে যেত কাক। কষ্টের মাত্রাটা যেত বেড়ে।

বুয়েটে পড়ার সময় একটা স্বপ্ন দেখতাম। বাংলায় কার্টুন ছবি বানানোর এবং এ বিষয়ে উচ্চতর লেখাপড়া করা। বন্ধু কনক আমার এই আগ্রহের কথা শুনে নিয়ে গেল তার পূর্ব পরিচিত বিখ্যাত কার্টুনিস্ট আহসান হাবীবের কাছে। উন্মাদ পেপারের মতো লালমাটিয়ায় উন্মাদের অফিসটাও সাজানো হয়েছিলো হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যাওয়ার মতো করে। এতো বড় কার্টুনিস্ট কি সহজভাবে আমাকে স্কেচ করে দেখালেন কতটুকু জায়গার মধ্যে কি কি বিষয়ের উপর প্রাধান্য রেখে কালো কলমের ডগায় দন্ত বিকশিত করা এক একেকটা কার্টুন ফুটিয়ে তুলতে হয়। সময়টা তখন নব্বই দশকের মধ্যভাগ। কয়েক বছর আগেই এরশাদের পতনে প্রচন্ড আশায় উদ্বেলিত হওয়া বাঙ্গালি জাতি তখন গণতন্ত্রের নামে দুদলের আমিতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য দলবাজীদের পালটাপালটি খেলা দেখার বিস্মিত দর্শক। নিরুপায় জনগণ আবারো আশাভঙ্গের গহবরে ঢোকার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। সে সময়টায় মানুষের দীর্ঘনিশ্বাসের সাথে সাথে বাস, স্কুটার, গাড়িও বেশি বেশি কালো ধোয়া ছাড়তে শুরু করলো। তখনই প্রথম ঢাকার রাজপথে মুখে মাস্ক বাঁধার প্রচলন শুরু হলো। আহসান হাবীব একটা কার্টুন আঁকলেন। একটা ছেলে দোকানের সামনে দাড়িয়ে দোকানীকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘ আচ্ছা আপনার দোকানে কি মুখের জাঙ্গিয়া পাওয়া যায়?’ আশেপাশের সবাই হেসে উঠলো। কিন্তু আমি অন্তর্মুখীতার কারণে তখনো সবার সাথে সহজ হয়ে মিশতে পারতাম না। হাসির বদলে হয়ে গেলাম লাল। এরপর তো কান গরম হয়ে উঠলো যখন দেখলাম উন্মাদের সবাই আমাকে নিয়ে তাৎক্ষনিক কার্টুন বানাচ্ছে। বিষয়বস্তু ছিল খুবই নিরিহ ধরনের। এই যেমন ‘ইনি একজন মহিলা কার্টুনিস্ট’ – এ বিষয়ে সবাই তাদের হাস্যরসাত্মক মন্তব্য করছিলেন। পরিশেষে আহসান হাবীব উন্মাদের পরবর্তী সংখ্যার জন্য আমাকে কার্টুন দিতে বললেন। দিলামও। তারপর ব্যক্তিগত ব্যস্ততা আর বুয়েট খুলে যাওয়ার কারণে আপাতত কার্টুনিস্ট হওয়ার ইচ্ছেটাকে শিকায় তুলে রাখলাম। কনক বলেছিলো আহসান হাবীব দৃক গ্যালারীতে কার্টুন প্রদর্শনীর আয়োজন করছেন। এজন্য নাকি আমার খোঁজ করছিলেন। কিন্তু ততদিনে আমার মনে হয়েছিল যে যত সহজে আমার মাথা থেকে আইডিয়া বের হয় তত সহজে হাতে স্কেচ আসে না। কার্টুন ছবি বানাতে চাচ্ছি কিন্তু ঠিক কার্টুনিস্ট হতে চাচ্ছি না। তাই আর সেই কার্টুন প্রদর্শনীতে যোগ দেওয়া হলো না। এখানে উল্লেখ করছি যে একবার আহসান হাবীবের পল্লবীর বাসায় গিয়েছিলাম। ওখানে হুমায়ুন আহমেদের হাতে আঁকা একটা তৈল রং দেখতে পেয়েছিলাম। নীচে সই করা সালটা ছিল ১৯৭৮। ছবিতে দেখা যাচ্ছিলো সমুদ্রের বুকে একটা জাহাজ নোঙ্গর ফেলে দাড়িয়ে আছে।

এর অনেক বছর পর এখনকার কর্মস্থল ইন্টেল করপোরেশনে দেখতাম প্রায়ই চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন হচ্ছে। আমেরিকারই গন্যমান্য জীবিত আর্টিস্টরা তাতে অংশগ্রহন করছে। গত কোয়ার্টারে কর্তৃপক্ষ ইন্টেলে চাকুরীরতদের ছবি অথবা ফটোগ্রাফ নিয়ে একটা প্রদর্শনীর আয়োজন করার আগ্রহ প্রকাশ করে। ইতিমধ্যে আমেরিকায় নিজেদের ঘরটাকে ছবি দিয়ে ছবির মতো করে সাজাবার উদ্দেশ্যে বেশ কিছু ছবি এঁকে ফেলেছিলাম। তাই ইন্টেল ছবি আহ্বান করাতে সেগুলোই এনে আয়োজকদের হাতে তুলে দিলাম।

ন্যান্সি আর আমি শুধু এ দুজনেই ছিলাম পেইন্টার। আর বাকী সবাই ফটোগ্রাফার। আমাকে আর ন্যান্সিকে একদিন একটা অডিটোরিয়ামে চিত্রকলার উপর বক্তৃতাও দিতে হলো।

বাদল দিনের প্রথম কদমও ফুল

বাদল দিনের প্রথম কদমও ফুল

কচুরীপানা ফুলকে নিয়ে কি কোন কবিতা আছে? ফুলটা খুব পছন্দের।

কচুরীপানা ফুলকে নিয়ে কি কোন কবিতা আছে? ফুলটা খুব পছন্দের।

যে যা ভেবে নেয়

যে যা ভেবে নেয়

ঝিলে শাপলা ফুটে থাকার দৃশ্য খুবই নয়নকারা

ঝিলে শাপলা ফুটে থাকার দৃশ্য খুবই নয়নকারা

এবস্ট্রাক ধরনের কিছু একটা করে আতলামীর চেষ্টা করা আর কি?

এবস্ট্রাক ধরনের কিছু একটা করে আতলামীর চেষ্টা করা আর কি?


Slide in poster
Slide in poster

এখান থেকে সামু ব্লগের খোঁজ পেয়ে সেখানে চিত্রকলার বিবর্তনের উপর একটা কিছূ লিখেছিলাম। এখানে লিংক দিয়ে দিলাম।

৬,৭২৬ বার দেখা হয়েছে

১২৮ টি মন্তব্য : “অতীত বয়ান – কেউ যদি শুনতে চায় (চিত্র প্রদর্শনী)”

  1. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    আপনার ছবি আঁকার হাত খুবই সুন্দর। সবগুলো ছবিই ভাল লাগল। ৪ নম্বরটা বাদে বাকি সবগুলাতেই নীল রং এর চমৎকার ব্যবহার আছে। নীলটাই কেন জানি আমার সবচেয়ে ভাল লাগছে। পাতার আশেপাশে, আকাশ আর পানির রং হিসেবে নীলটা খুব ফুটেছে। অ্যাবস্ট্রাক্ট আঁতলামিটাই কেন জানি সবচেয়ে গর্জিয়াস লাগছে, কারণ জানি না।

    সামহোয়ার এর পোস্টটা এখানেও দিতে পারেন, ভাল হবে।
    আমি ছবি সবচেয়ে বেশি দেখেছি জার্মান এক্সপ্রেশনিজম যুগের। এই যুগেরটা কেন জানি বেশি বুঝি। ইমপ্রেশনিজম আর দালি-র সাররিয়েলিজম এখনও খুব একটা দেখা হয় নি, উপলব্ধিও করা হয় নি। তবে ইচ্ছা আছে। চারুকলা আর আলোকচিত্র- দুটোর ব্যাপারেই আগ্রহ আছে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ক যেকোন লেখায় আমাকে পাঠক হিসেবে পাবেন।

    কলেজে ক্লাস সেভেনে একজন অসাধারণ আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফ্টস এর টিচার পেয়েছিলাম- ওবায়দুল হক। চিনেন নাকি? আমরা এইটে উঠতে না উঠতেই চলে গিয়েছিলেন। এরপর এলেন দেবব্রত মল্লিক- ইনার ক্লাসগুলার মত বিরক্তিকর ক্লাস কলেজ লাইফে আর একটাও ছিল না। চারুকলার প্রতি আমাদের ব্যাচের পোলাপানের যদি কোন বিরাগ থাকে তা হয়ত কেবল দেবব্রত স্যারের কারণেই।

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      মুহাম্মদ, এই প্রথম বোধহয় তোমাকে আমার পোস্টে দেখলাম। মনে হয় মুভির প্রতি তোমার বেশ পড়াশোনা।
      আমরা শুধুই মাফরুহা ম্যাডামকে পেয়েছিলাম এবং এখন পর্যন্ত উনি আমার প্রিয় শিক্ষক।
      ছবি ইনসার্ট করতে এতো সময় লাগে যে সামুর পোস্টটা দেওয়ার পর ভেবেছিলাম আর এরকম পোস্ট দিব না।
      নীল আমার প্রিয়। আমার বাসার দেয়ালও নীল রং করা।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
      • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

        পড়াশোনা আসলে নাই, তবে আগ্রহ আছে। আগ্রহ থাকলে যতটুকু জানা হয়ে যায় ততটুকুই জেনে ফেলি আর কি!
        দেরি হলে তো অন্য কোন ইমেজ হোস্টিং সাইটে হোস্ট করে তারপর সিসিবি-তে দিতে পারেন। আর আরেকটু বড় আকারের ছবি দিলে বেশি ভাল লাগবে।

        জবাব দিন
    • রকিব (০১-০৭)

      ওবায়দুল হক, আমার দেখা সেরা চারুকলার শিক্ষক ছিলেন। আমরা প্রায় ২।৫ বছর উনাকে পেয়েছি, যদিও উনার সাথে কোন ক্লাশ ছিলো না।


      আমি তবু বলি:
      এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

      জবাব দিন
      • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

        আসলেই, ওবায়দুল হক স্যার এর তুলনা হয় না। ক্লাস পেলে বুঝতা। চারুকলা পড়াতে গিয়ে উনি রাজ্যের সব বিষয় টেনে আনতেন। অথচ্আমরা তখন মাত্র ক্লাস সেভেনে।
        স্যারের রিসেন্ট আপডেট জানতে ইচ্ছা করছে। অবশ্য উপায় জানি না।

        জবাব দিন
        • রকিব (০১-০৭)

          দাড়ান খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছি ভাইয়া। ক্লাশ ইলেভেনের কিছুটা সময় উনার সান্নিধ্যে পার করেছি। বলা যায় আড্ডার ছলে উনার কথা শুনতে যেতাম, অসাধারণ।


          আমি তবু বলি:
          এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

          জবাব দিন
          • জিহাদ (৯৯-০৫)

            আমার ক্যাডেট কলেজে দেখা প্রিয় শিক্ষকদের একজন ওবায়দুল হক স্যার। যদিও তার সাথেই সবচেয়ে কম সময় কেটেছে বোধহয় আমাদের। স্যারের কোন ক্লাস শুধু আঁকাআঁকির মাঝে সীমাবদ্ধ থাকতো এমন মনে পড়েনা। স্যার গল্পচ্ছলে কতকিছু কত চমৎকার ভাবে বর্ণনা করতেন, জানার ব্যাপারে সত্যিকারের আগ্রহ তৈরিতেই তিনি বেশি মনযোগী ছিলেন সবসময়। স্যারের কথা মনে পড়ে গেল অনেকদিন পর। তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

            আর দেবব্রত স্যারের হাতে বেশ কয়েকবার মাল্টিপল চড় খাওয়ার ইতিহাসের দরুণই কীনা কে জানে, চারুকলার উপর থেকে আগ্রহ একেবারে উঠে গিয়েছিল পরবর্তীতে।


            সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

            জবাব দিন
  2. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    পোস্টটা খুলে দিহান আর মেলিতাকে দেখে কেন যে এতো ভালো লাগলো বুঝলাম না। আমি কিন্তু একদম সাম্প্রদায়িক না।
    মেলিতা আশা করি কোন পরীক্ষা ভালো হয়ে যাবে।
    দিহান আমারে এক কাপ চা খাওয়াবি?


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
  3. রকিব (০১-০৭)

    দারুন একটা পোষ্ট। চিত্রকলা দেখতে আমার বেশ ভালো লাগে, তবে সৃষ্টিতে একটু ভয় পাই। ১,৩,৪ নম্বর ছবিগুলো বেশি ভালো লাগছে। :boss: :boss:


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  4. নাজমুল (০২-০৮)

    আমি আর্টস এন্ড ক্রাফটস এ সব সময় কম পেতাম 🙁 পাক্ষিক এ ১০ আর টার্ম এন্ড এ ৩০ :((
    শিক্ষক হিসেবে ছিলেন ওয়াহেদুজ্জামান স্যার। আমি ক্লাস এ বেশি কথা বলতাম দেখে আমার উপর ফর্ম এর দায়িত্ব দিতেন কেউ কথা বললেই পানিশ্মেন্ট খেতাম আমি ~x(
    উনি আবার খাতা দেখার সময় হালকা হাউজ টান্তেন(মিফতাহ ভাই আছে নাকি 😕 )
    তবে স্যার অসাধারণ মানুষ ছিলেন :boss:

    জবাব দিন
  5. তানভীর (৯৪-০০)

    শান্তাপু- ভালো লাগল সবগুলো ছবিই, বেশি ভালো লাগল কদম ফুল আর এবস্ট্রাক্ট ছবি দুইটা।
    চিত্রকলার বিবর্তন নিয়ে আপনার লেখাটা পড়লাম- ওটাও ভালো লেগেছে।

    আপনার আঁকা ছবিগুলোয় নীল রঙের প্রাধান্য দেখে একটা কথা মনে পড়ল। আমাদের চারুকলার শিক্ষক লতিফ স্যারের প্রিয় রঙ ছিল "বার্নট সিনা"- তখন ওয়াটার কালারের রংগুলোর মধ্যে এই রংটাও ছিল। আমাদের যে কোন কিছু আঁকতে দিলেই আমরা বার্নট সিনা ব্যবহার করা শুরু করে দিতাম, এমনকি আকাশের রঙ্গেও। 🙂 একারণে কিছুদিন পর পর আমাদের ওয়াটার কালারের নতুন বাক্স কিনতে হত।

    অফটপিকঃ নীল আমারও প্রিয় কালার। কিন্তু ঘরের দেয়ালের রঙ নীল করলে রুমটা ছোট দেখানোর কথা না আপু?

    জবাব দিন
  6. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    ছবি গুলা বিয়াপক সুন্দর হইছে। লাস্টের টা ছাড়া। অইটা বুঝার ক্ষমতা নাইক্কা। 😀

    আমারে অটোগ্রাফ দিয়া একটা ছবি গিফট কইরা পাঠাইতে পারলে তো "লারে লাপ্পা" হইতো। 😀

    যাউজ্ঞা, মনে কস্ট নাই, দিলেন আরকি সময় সুযোগ কইরা কোন একদিন।

    আমি অবশ্য আর্ট করতে পারিনা। সারাজীবন আকঁছি কুড়েঘর, নদী আর দূরে পাহাড়ের ফাকে সূর্য্য, পাখি আকতাম টিক চিহ্ন দিয়া।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  7. ইন্টেলে কাজ করা, মনকাড়া সব ছবি আঁকা, নিজের মনের কথা এত সুন্দর করে বলতে পারা, হয়ত আরো আরো না জানা অনেক গুণে গুণান্বিত আপনি। জীবনে এর থেকে বেশি কিছু কি পাওয়া যায়? জানি না। জানতে চাইও না। শুধু ভাবতে চাই, এমন মানুষের দেখাও পেয়েছিলাম একদিন, এমন মানুষের লেখাতেও নিজের ভালো লাগা জানিয়ে লিখতে পেরেছিলাম কিছু। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। ভালো থাকবেন আপু। চিরদিন!

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      ধন্যবাদ তোমার সুন্দর কমেন্টের জন্য।
      তোমার লেখায় অনেক ভালো মানুষের লেখা উঠে আসে, সেসব পড়তে ভালো লাগে। ্যখন ছোট ছিলাম তখন মানুষের প্রতিভা দেখতে মুগ্ধ হতাম। আর এই বড়বেলায় বুঝতে পারলাম প্রতিভাবান, জ্ঞানী, গুনী হওয়া যতটা সহজ - বিনয়ী, ভালো মানুষ হওয়া ততটাই কঠিন। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ একজন ভালো মা হওয়া। দোয়া করো ভাই।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  8. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    আমার আগেই সবাই অনেক প্রশংসা করে ফেলেছে। অনেক চিন্তা করেও তাই আর বিশেষন খুঁজে পেলাম না। 🙂

    লেখা এবং আঁকা দুটোই মুগ্ধ করেছে।

    কথা রাখার জন্যে বড়সড় একটা ধন্যবাদ । 🙂


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      আপাতত আমার ছবি আঁকার অধ্যায় স্থগিত। যদি বেঁচে থাকি তাহলে বুড়ি বয়সে আবার শুরু করতে পারি। যে ছবিগুলো দেখছো সেগুলো ২০০৩ সালে আঁকা। কার্টুনের কথা লেখাতাই উল্লেখ করেছি। এক্ষেত্রে আমার কোন সহজাত ক্ষমতা নেই।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  9. দিহান আহসান

    লেখা দেওয়ার পর এসে কথা বলে গেলাম, কিন্তু আপনার লেখা বা ছবি নিয়ে কিছুই বলিনি। 😕

    ছবিগুলো সব সুন্দর হয়েছে আপি, আপনিতো একসাথে অনেক গুনের অধিকারী। :boss: 😀
    লেখাও খুব ভালো লেগেছে, 🙂

    জবাব দিন
  10. তাইফুর (৯২-৯৮)

    কিছু কিছু গুণীজনের ব্লগে মন্তব্য লিখতে শংকাবোধ হয়,
    আমার নিজের জ্ঞাণের দৈণ্যদশা না আবার ফুটে উঠে ...

    এতদিন আপনার লেখার ভক্ত ছিলাম ...
    আজ থেকে আপনার পেইন্টিং-এর ভক্ত হইলাম

    (আনলাকি ১৩ তে বেশিদিন আটকায়া না থাইকা তাড়াতাড়ি ১৪ নম্বর নামায়া দেন)


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  11. সেলিনা (১৯৮৮-১৯৯৪)

    কচুরিপানা আর কদম ফুল দুইটাই খুব প্রিয়। ছবিগুলো পসন্দ হইসে।ভাবতেসি একটা ডাকাতির প্ল্যান করে ক্যালিফোর্নিয়ায় আসতে হবে। 😀 😀

    মাফরুহা ম্যাডাম ক্যাডেট কলেজের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন, এখন ঢাকায় আছেন। ম্যাডাম আসলেই অসাধারণ।

    জবাব দিন
  12. রুম্মান (১৯৯৩-৯৯)

    :clap:


    আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
    ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
    ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
    সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
    ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
    আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।

    জবাব দিন
  13. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    ছবি আঁকা, গান গাওয়া, কবিতা আবৃত্তি, লেখালেখি-কিছুই পারি না...এই জীবন রাইখ্যা কি লাভ!!! :bash: :bash: :bash:

    আপু আপনাকে স্বশস্ত্র :salute:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  14. তৌফিক

    ছবিগুলো ভালো লাগল শান্তাপু। তার চেয়েও ভালো লেগেছে আপনার শখ লালন করাটাকে। মিস্ত্রিগিরি শুরু করার পর থেকে তুলি দূরে থাক, কলম পেন্সিল তুলতে পারি নাই হাতে, দায়টা যদিও নিজেরই বেশি। হলের রুমে কাবার্ডে দুটো ছবি টাঙিয়েছিলাম, একটা পেনস্কেচ আরেকটা পেন্সিলের। বছর খানেক পরে গিয়ে দেখি নতুন বাসিন্দা সেগুলো ছিঁড়ে ফেলে দেয়নাই। খুব ভালো লেগেছিল তখন। শুরু করতে হবে আবার... ইচ্ছাটা চাগিয়ে দিলেন। 🙂

    জবাব দিন
  15. মেলিতা

    আপু ছবি গুলো নিয়ে কমেন্ট করার আগে আমার একটি আবদার
    কৃষ্ণচুড়া ফুল আকতে হবে।
    ১ নং ছবি দেখে মনে পড়লো এই বছর প্রথম কদম দেখলাম।(বুকিং দিলাম)
    ২ নংঃ আমার এবং আমার বড়বোন এর ধারনা ছিল আমাদের ২ জন ছাড়া আর কেউ কচুরীপানার ফুল পছন্দ করে না।(ঐ)
    ৩ নং ছবির ফুল কে ভেবে নিলাম পারিজাত
    ৫ নং ছবি তে এত ফুল কেনো আপু? কেন জানি সমাধি এর কথা মনে হল

    পরিশেষে বলতে চাই গত ৩ সপ্তাহ ধরে আমার কাজ হল বিশুদ্ধ গিবত। বিভিন্ন রিসার্চ আইডিয়া কে পুরাই ভুয়া প্রমান করে রিভিউ জমা দেওয়া এবং ক্লাস এ আলোচনা করা। আপনার ছবি এবং লেখা উপর অনেক চেষ্টা করে কিছু করতে পারলাম না বলে আপনার ব্যাঞ্চাই :grr: :grr:

    জবাব দিন
  16. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    শান্তা'পু, ছবিগুলো দেখে - ওয়াও!!! :clap:
    আর চিত্রকলার বিবর্তনের পোস্ট টা - আলিফ!!! :clap: :clap:

    কিছুইতো পারিনা দেখি :((
    শান্তাপু ছবিগুলোর হাই রেজ্যুলিউওশন আপলোড করে দেন কষ্ট করে যদি পারেন 🙂 ওয়াল্পেপার বানাবো :awesome:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  17. শান্তাপু- ভালো লাগল সবগুলো ছবিই, বেশি ভালো লাগল কদম ফুল আর এবস্ট্রাক্ট ছবি দুইটা।
    চিত্রকলার বিবর্তন নিয়ে আপনার লেখাটা পড়লাম- ওটাও ভালো লেগেছে।

    আপনার ভক্ত হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করলাম। 😀 😀 😀

    জবাব দিন
  18. হাসান (১৯৯৬-২০০২)

    পরেশ চন্দ্র মন্ডল স্যারের কানমলা ছিল সেইরকম। উনার ক্লাসে আমাকে কানমলা খেতে হত দুই কারনে, খালি ঘুমাতাম আর ফুল আঁকলে হয়ে যেত পেঁপে 😕 সারাজীবন আর্টে লোয়েস্ট পেয়ে এসেছি 🙁

    আপনার ছবিগুলো অদ্ভুত সুন্দর আপু :clap:

    জবাব দিন
        • কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

          শান্তাপুর পোস্ট টা রিভাইজ দিতে এসে পরেশ স্যারের কথা মনে পড়লো।
          আরো আগেই পড়া উচিত ছিলো যদিও।
          আপাত কঠিন স্বভাবের মানুষটিকে সারাজীবন শ্রদ্ধা করে যাবো ক্যাডেটদের জন্য সত্যিকারের ভালোবাসা ধারণ করা শিক্ষকদের একজন হিসেবে।
          আর শিক্ষক হিসেবে তিনি ক্যামন ছিলেন? শুধু এটুকুই বলতে পারি, উনি আমাদের সেভেন আর এইটে যা শিখিয়েছিলেন বেসিক হিসেবে শুধুমাত্র তার জোরেই ভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারের পুরো ডিজাইন কোর্সেরই কোন প্রজেক্টে আমাকে একটি মুহুর্তের জন্যেও চিন্তা করতে হয়নি। অবাক হয়ে দেখেছি স্নাতক লেভেলের বেসিকের প্রত্যেকটি জিনিস পরেশ স্যার আমাদের হাতে ধরে শিখিয়েছিলেন সেই কলেজ লাইফের শুরুতেই। ক্যাডেটদের মধ্যেকার সিনিয়রিটি জুনিয়রিটির ব্যাপারটি যে অল্প কয়েকজন শিক্ষক সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারতেন এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারতেন পরেশ স্যার তাদের মধ্যে একেবারে সামনের দিকে থাকাদের একজন।
          জানিনা, স্যার এখন কোন কলেজে আছেন, তবে উনি যেখানেই থাকুন সারাজীবন :salute: :salute: দিয়ে যাবো।


          সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

          জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      সাইফ ভাই,
      স্বপন নামে আমার কোন ভাই নেই। আমার একজন বড়ভাই আছে তার নাম ইমন। সে এই ক্যালিফোর্নিয়াতেই থাকে।
      একটু আমার একজন খালুশ্বশুর ছিলেন। উনার নাম কর্নেল রশিদ। আপনার বন্ধু রওশন ইয়াজদানী উনার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন। সে সময় উনারও ফাঁসি হয়।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  19. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    শান্তা, বেশ কয়েকবারই তোমার পোস্টটা ঘুরে গেছি। পড়েছি সব মন্তব্যসহ। কিন্তু আরো অনেক কিছুর মতো পেইন্টিং বিষয়ে আমি "বিশেষ অজ্ঞ" বলে কিছু বলা বা লেখার সাহস পাইনি। তবে তোমার পেইন্টিংগুলো ভালো লেগেছে। রংয়ের ব্যবহারে তুমি সংযম দেখিয়েছ বলে মনে হয়েছে।

    ড্রইং যে স্কুল বয়সে পড়াশুনার বিষয় হয়, সেটা ক্যাডেট কলেজে গিয়ে প্রথম জেনেছিলাম। কিন্তু সেটা আমাকে দিয়ে কখনোই হয়নি। তুলি দিয়ে রং দিতে গিয়ে এবড়ো-থেবড়ো হয়ে যেত। টেনেটুনে পাশ করে গেছি। আমাদের ড্রইং শিক্ষক ছিলেন আবদুর রহমান ভুঁইয়া। স্যার আবার আমাদের হাউজ মাস্টারও ছিলেন। ওফার অনুষ্ঠানে ক'দিন আগেও দেখা হলো। আমরা কলেজ ছাড়ার পর ভীষণ বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে গেছেন ভুঁইয়া স্যার।

    অথচ আমাদের মিজান, সোহেল কি দারুণ আঁকতো। বিশেষ করে মিজান। দুজনেই পরে স্থাপত্য পড়েছে। পাশ করার কিছুদিন পর মিজান আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। এতো হাসিখুশি আর প্রাণবন্ত ছিল আমাদের এই বন্ধুটি। আমাদের ছেলেটাও ভালো আঁকতো। স্কেচ করতো। কিন্তু কোনো বিষয়ে ওর আবার বেশিদিন আগ্রহ থাকে না! অনেকদিন কিছুই আঁকে না।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      সানা ভাই, আপনার প্রোফাইলের ছবিটা বোঝার চেষ্টা করছিলাম। ক্যাম্প ফায়ার ... বোধহয় চারপাশে আপনার রেডিওর কলিগরা। কোন গান টান হচ্ছিল কি?
      আমার ছবিগুলো একজন নভিস আঁকিয়ের শখ পূরন, এর বেশি কিছু না। আপনার বন্ধু মিজানের কথা শুনে খারাপ লাগলো।
      বাচ্চারা একটু অস্থির হবে এটাই স্বাভাবিক। এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি অন্যকিছু সেখানোর ব্যাপারে উৎসাহিত করে।
      এই সপ্তাহে আপনাকে একটা মেইল করার ইচ্ছা আছে।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  20. সাইফ শহীদ (১৯৬১-১৯৬৫)

    আমার ভুলের জন্যে দুঃখিত। আমাদের ব্যচের স্বপন আদনানের (৬) এক বোন তোমাদের কলেজে পড়তো – আমি তার কথা ভাবছিলাম।
    কর্নেল রশিদের brother-in-law হচ্ছেন ফরহাদ আজিজ (৫) – আমার বন্ধু।
    It’s a small world!

    জবাব দিন
  21. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

    onek pore comment korlam apu......
    prottekta chobi sundor, tobe 4 nombor ta khub beshi valo legeche. apnar lekha ekta golper purono barir kotha mone pore gelo eita dekhe.

    ami ekebarei akte pari na. ekta chobir theme mathay pray ghore - "kochupatar opore panir boro ekta bindu jomese. shei bindute ekta meyer bisshmoy meshano khushir protibimbo dekha jacche." ami nije akte parle ei chobita aktam.

    জবাব দিন
  22. টুম্পা (অতিথি)

    আপু, অনেকদিন পর পোস্টটা চোখে পড়ল। ছবিগুলো চমৎকার হয়েছে, বিশেষত প্রথম তিনটা।
    কদম ফুলের সাথে সখ্যতা একদম ছোটবেলা থেকেই। কি সুন্দর সোনালী একটা বল!! আমার নিজের হাতে লাগানো একটা গাছ ছিল, বর্ষায় গাছ উজার করে ফুল ফুটত...
    তৃ্তীয় ফুল টা চিনিনা, তবু দেখতে খুব ভাল্লাগলো।

    জবাব দিন
  23. starbucks এর কড়া এক কাপ coffee খাওয়ার পর রাতে ঘুম আসছেনা. CCB তে আমি একদম নতুন. আমার এক বন্ধুর সুন্দর একটি লিখা পড়ার জন্যই ঢুকেছিলাম. আর ওখানেই নারিকথন পড়েছিলাম. overall লিখাটি ভালো লাগলেও, কোথায় যেন দ্বন্দ আছে. আপনার কিছু কিছু মন্তব্য তেও রয়েছে আমার তীব্র দ্বিমত. কিছুদিন আগে আপনার প্রকাশিত বইটির কথা পড়লাম.... আর আজ একটু আগে এই ব্লগ টি। আমি বিস্ময়ে আপনার আঁকা ছবিগুলো দেখলাম. একটি মানুষ বুঝি এত গুনী হয়!....... ভাবছি সেই থেকেই....... আমার ছোটবেলায় এক প্রতিবেশী আপু খেলার সাথী ছিল, যার নাম মুনমুন..পরে অবশ্য কলেজে গিয়েও ওনাকে পেয়েছি. অনার CDT নামটা প্রকাশ করলাম না. অনার মত গুনী মেয়ে নই বলে আজও হা হুতাশ কিছু আছে. 🙁 খুবই বুদ্ধিমতী, খুব ভালো আঁকিয়ে, খুব ভালো গান গায় এবং দেখতেও দারুন এই আপুটির উপর আমার হিংসাও ছিল একটু একটু. অনেকদিন পর আজ যেন আপনার আঁকা ছবিগুলো দেখে ঈর্ষান্বিত বোধ করছি. আমার ছবি আকার খুব শখ ছিল, কিন্তু আমি আমার জীব বিজ্ঞান , এমনকি রসায়নের প্রাক্টিকাল খাতাতেও সুন্দর একটা ছবি আকতে পারিনি. দারুন গুনী মানুষ আপনি . যে রাঁধে সেই চুল বাধে এর উপযুক্ত উপমা. আপনার আরো কিছু ব্লগ পড়লে হয়ত আরো কিছু গুন বেরিয়ে আসবে.

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      আয়েশা, তোমার কমেন্টটা অনেক আগেই দেখেছিলাম তবে কী লিখবো বুঝতে পারছিলাম না। তুমি যে এতো যত্ন করে ছবিগুলো দেখলে তা আমার খুবই ভালো লাগলো। গুনের কথা যা বললে গুন একটা আপেক্ষিক ব্যাপার ইত্যাদি ইত্যাদি বললে আবার বেশি বিনয়ী ভাববে তাই আর ওসব বলছি। মজার ব্যাপার হচ্ছে গল্প উপন্যাস লিখতে শুরু করার পর আগে যাকে পছন্দ করতাম না তাকেও ভালো লাগতে শুরু করেছে। কারণ তার মতো চরিত্র না থাকলে গল্প এগোয় না। দ্বিমতের কথা যা বললে সেটা না থাকলে তো হয় না। আমরা তো চাইবো না ক্যাডেট কলেজের মতো সবার মনই খাকী ড্রেস পরুক।
      ভালো থেক।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  24. আপু, আমার ঠোঁটকাটা স্বভাবটি নিয়ে একটি গল্প লিখে ফেললে খুব মজা হবে! :shy:
    বেটার লেট দেন নেভার...আপনার কমেন্টটির জন্য ধন্যবাদ।আপনার দ্বিতীয় ছবিটি, যেটির caption "যে যা ভেবে নেয়', সেটি হলো poinsettia , আর সেটির চারপাশ ঘিরে রয়েছে হলি বুশ। তবে এই নীল পৈন্সেত্তিয়া টা বিরল।আমাদের বাসায় সিল্ক পৈন্সেত্তিয়া ছিল, আমি ছোটবেলায় সেটার পাপড়িগুলো দেখে মুগ্ধ হতাম। মাঝে মাঝে গাছটিকে পাতাবাহার মনে করতাম, পাপ্রিগুলোকে পাতার মতই লাগত।ছবিগুলো সামনাসামনি দেখতে পারলে বেশ ভালো লাগত।আপু, আপনার কিন্নর কন্ঠি বইটি কোথায় পাওয়া যাবে? NYC তে পাওয়া যাবে? আমি পরশী সার্চ করেছিলাম, লিখা পাইনি। আপনি আমাকে লিঙ্ক টা পাঠিয়ে দিলে ভালো হত।

    জবাব দিন
  25. আয়েশা ( মগকক) আয়েশা

    আপু, আপনার লিন্কটা পড়ে খুব ভালো লাগলো।মূল বিষয়বস্তুর পাশাপাশি শব্দচয়নও খুব সুন্দর ছিল।
    মাকে রোল মডেল করে দেখতে ও অনুকরণ করতে ভালবাসে মেয়েরা এটা সত্যি। তবে যেসব মা রা আঁতুরঘর থেকে রান্নাঘর, আর রান্নাঘর থেকে আঁতুরঘর করেছে, এবং ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের স্বীকার হয়েছে ও যাবার কোনো জায়গা নেই বলে মুখ বুজে সব সহ্য করেছে, তাদের মেয়েরা কিন্তু আরো বেশি তাদের শিক্ষা আর স্বনির্ভরতার ব্যাপারটিতে সচেতন হয়েছে। তারা তাদের মা এর কাছ থেকে অন্যভাবে শিক্ষা পেয়েছে। নিজের জীবন জাহাজের হাল টি তারা অন্য কোনো নাবিককে দেবেনা, নোঙ্গর কোথায় ফেলবে সেটিও তাদেরই সিদ্ধান্ত।

    আচ্ছা আপু, আপনি যে লিখলেন,
    "কিন্তু মুসলিম ধর্মে তো দেখি যে মহানবী (সঃ) জন্মের পর পরই ধাত্রীমাতা হালিমার কাছে মানুষ হয়ে ছিলেন। তাহলে তো ধর্মের দোহাই দিয়ে ডে কেয়ার পদ্ধতির সমালোচনা করা উচিত নয়।"
    আপনাকে কি কেউ ডেকেয়ারের ব্যাপারে ফতুয়া(?) শুনিয়েছে?
    :)) :)) :)) কি যে জ্বালা!
    এই পশ্চিমের দেশে অনুষ্ঠিতব্য হালাকা আর তালিম নামের গেট টুগ্যাদার গুলোর উদ্দেশ্য কিন্তু খুব মহৎ তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু কিছু জিনিস বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায় সঠিকভাবে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা আর নিয়ন্ত্রনের অভাবে।
    আপু, আরেকটা কথা-- এই দেশের daycare গুলোতে তিন মাস থেকেই যে বাচ্চ্গুলো থাকে, তাদের জন্য যদি দুগ্ধমাতা সরবরাহ করা যেত, তাহলে বাচ্চাগুলো ফর্মুলা নামক দুধের substitue খেয়ে ফার্মের মুরগি আর এক বছর পর গরুর দুধ খেয়ে গরুর বাচ্চা না হয়ে মানুষের বাচ্চা হতে পারত। :shy:
    আমাকে আপু প্লিজ এখন daycare এর বিরুদ্ধ ব'লে ট্যাগ করবেননা। আমি তো নিজেই সাত মাসের দুধের শিশুটিকে রেখে বহির্মুখী হয়েছিলাম। কি করব-- উপায় ছিলনা, আরো কিছুদিন হয়ত ও সহজেই আমার কাছ থেকে পুষ্টি পেতে পারত। শিশুটির জন্মগত অধিকার জোরপূর্বক বঞ্চিত করা হয়েছে এই ভেবে দীর্ঘনি:শ্বাস ফেলি। মেয়েদের জীবন বড় অদ্ভুত, কত কত চাওয়া না পাওয়ার কারণে আমরা দীর্ঘনি:শ্বাস ফেলি! আমার মা বলেন মেয়েদের জীবনে দুয়ে দুয়ে চার মেলানো কঠিন। উনি BTVএর enlisted গীতিকার। ওনার লিখা একটা গানের মাঝে আজকে শুনছিলাম-- "মেলাতে চেয়োনা সুর......মিলবেনা কিছুতেই দীপজ্বলা সাঁঝে.."। তারপরও জীবনের সায়ান্হে এসে প্রতিটি নারী যেন হিসেবের গরমিলটা শেষ পর্যন্ত মিলিয়ে নিতে পারে--এটাই কাম্য।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।