স্বপ্ন-১

অনেক দিন ধরেই ইচ্ছা ছিল কিছু লেখার, এখন তো আর খাতা কলম নিয়ে বসার সময় হয়না। তার চেয়েও বড় কথা এখন কার যুগে আবার খাতা কলম নিয়ে বসার যুগ না, আধুনিক যুগ। এখন সবাই কম্পিউটার এর সামনে ব্লগে লিখে; শুনেছি বড় বড় লেখকরাও নাকি এখন আর আগের মত সুন্দর খাতা, সুগন্ধি কলম নিয়ে লিখতে বসে না। তারা এখন তাদের  ল্যাপটপ- এর সামনে বসে টাইপ করে, তাই আমিও আমার সাধের ল্যাপটারটার সামনে বসে পড়লাম, কিছু লেখার জন্য।

তার মানে এই না যে আমি নিজেকে খুব বড় লেখক মনে করছি, আমি ছোট মানুষ, অত বড় লেখক আমি কোনদিন হইনি। তবে এক সময় মনের মধ্যে একটা স্বপ্ন ছিল যে হয়ত এক দিন বড় লেখক হব। তখন অনেক বই পরতাম।গল্প উপন্যাস, দেশি বিদেশি, ক্লাসিক কিছুই বাদ দিতাম না। পরতাম আর মুগ্ধ হতাম। চোখের সামনে এক একটা নতুন জগৎ খুলে যেত, অবাক বিস্ময়ে আমি নতুন এই পৃথিবীকে দেখতাম। মনের মাঝে তখন লাল নীল রঙ খেলা করতো, একদিন সাহস করে নিজে একটা উপন্যাস লিখে ফেললাম। উপন্যাস ছিল না বড় গল্প ছিল, তা আমি জানি না। কিন্তু আমি আবার আমার কিছু গুণগ্রাহীকেও পেয়ে গেলাম। তখন আমি কলেজে, আর তারা ছিল আমার বন্ধুরা। বাসায় আসার পর আমার ছোট আন্টিকেও পড়তে দিলাম। আন্টি তো মহা খুশি, আমার একটা বই বের করে দিবেন এই রকম কথাও তিনি আমাকে দিয়ে দিলেন। তখন তো আমি মহা খুশি, নিজের এই মহান সাহিত্য আমি বার বার পড়ি আর মুগ্ধ হই।

নাইন অথবা এইট এ পড়ার সময় আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে একটা দৈনিক পত্রিকা বের করলাম। হাতে লেখা পত্রিকা। আমরা ৪-৫ জন মিলে লিখি, এক একজনের এক এক অংশ।কলেজেরই বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে লিখলাম। বেশ ভালই চলল আমাদের প্রথম সাংবাদিকতা। কুপনের বিনিময়ে আমরা পত্রিকা ভাড়া দিলাম। অনেকে নিয়ে পড়ল,এই ভাবে মনে হয় দুই কি তিন সংখ্যার পর আমাদের এই পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেল, শেষ হয়ে গেল আমার জীবনের প্রথম সাংবাদিকতা। (পত্রিকা টার নাম আমার মনে নাই, বন্ধু তোদের কারো মনে আছে?)

আমার লেখা তখনও বন্ধ হইনি।সমানে কবিতা লিখে যাচ্ছি, পূর্ণিমা-জ্যোৎস্না-চাঁদ তখন আমাকে পাগলের মত টানে, আকাশের বড় রূপালি চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকি আর কবিতা লিখি।কেন জানি কবিতাগুলো হত অনেক বিষাদ ভরা, দেখে মনে হত দেবদাস মনে হয় ভুল করে কবিতা লিখতে বসেছে, যদিও সেই রকম কোন ঘটনা তখনও আমার জীবনে ঘটেনি। এই ভাবে ১২ এ থাকতে দেয়াল পত্রিকাই কবিতা লিখে সেরা কবিতার পুরষ্কারও পেলাম। আমার লেখালেখির প্রথম সম্মাননা।

আশ্চর্যের বিষয় আমার কবিতার ডাইরিটা এখন আমার কাছে নেই,কিভাবে যেন সবগুলো কবিতা হারিয়ে ফেলেছি। মানুষের স্বপ্নগুলো সময়ের সাথে এই ভাবেই মনে হয় হারিয়ে যায়…।।

(আমার প্রথম লেখা, কেউ যদি কষ্ট করে পড়ে থাকেন তা হলে অনেক ভুল বানানের জন্য আমি দুঃখিত।)

২২ টি মন্তব্য : “স্বপ্ন-১”

  1. রকিব (০১-০৭)

    শুভ ব্লগিং ভাইয়া রিয়াজ ভাই।
    উপন্যাস/বড় গল্পখানা স্মৃতির আলমারী থেকে তুলে এনে ঝেড়ে মুছে সিসিবিতে দিয়ে দেন।
    অফটপিকঃ ভাইয়া, কমার পরে একটা স্পেস দিলে পড়তে আরাম হতো।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  2. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    সলিড স্টার্ট । ভালো লেগেছে তোমার লেখালেখির গল্প শুনে। মজা পেয়েছি দৈনিক পত্রিকার কথা শুনে। দৈনিক পত্রিকা আমরাও বের করেছিলাম যার নাম ছিল "দৈনিক রাতের আঁধারে"।
    পত্রিকার কো এডিটর ছিলাম আমি। আমাদের সম্পাদক মশায় স্যারের হাতে এটা নিয়ে ঝামেলা করে সাতটা ইডি খেলে থেমে যায়। তবে আমাদের সেই পত্রিকা কোন সাহিত্য ছিল না ছিল জনমুখি মানে আম জনতার মুখের কথার প্রতিফলন আরও সুন্দর করে বলে কতিপয় পোলাপানরে বাঁশ দেয়ার জন্য। সেই সব দিনের কথা মনে পড়লো।
    শুভ ব্লগিং।
    আর হ্যা ব্লগে প্রথম লেখা লেখলে একটা নিয়ম আছে। প্রিন্সিপালের নামে ১০ টা কুইক :frontroll: দিতে হয়। দেরি না কইরা শুরু কইরা দাও।

    জবাব দিন
    • আমীন (০১-০৭)

      আমরা দৈনিক পত্রিকা বের করিনি তবে একটা ম্যাগাজিন বের করতাম প্রতি টার্মে একটা করে । মোটামুটি ২০ টার মত কবিতা ছাপা(লেখা) হত । তিনটা সংখ্যা বের করতে পেরেছিলাম কিন্তু পরে আর লেখার মানুষ পাওয়া যায় নি বলে প্রজেক্ট বাদ। 🙁

      জবাব দিন
  3. আব্দুল্লাহ্‌-আল-আমীন (৯৮-০৪)

    ......বন্ধু, ব্লগে স্বাগতম। বেশি বেশি লেখা দিতে থাক, তোর লেখার ক্ষমতা আমি জানি।

    জিতু আপা,......ব্লগের নিয়ম মনে হয় বুঝবার পারে নাই।

    ব্যাটা লেখক, পরথম লেখার আনন্দে গুইনা গুইনা ১০টা :frontroll: লাগা তাড়াতাড়ি।

    জবাব দিন
  4. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    কবিতা লেখার খাতা যে হারিয়ে ফেলেছো একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে। কোন পিছুটান থাকলোনা।বারেবারে উল্টেপাল্টে দেখার থাকলোনা অতীতে কী কী লিখতে। আবার ঝাঁপিয়ে পড়ো, একদম আনকোরা সব লেখা লেখো। দেখবে হারানো সময় আবার ফিরে পাচ্ছো।

    জবাব দিন
  5. রিফাত (২০০২-২০০৮)

    শুভ ব্লগিং ভাই 🙂
    ক্লাস নাইন-টেন এ আমিও একটা উপন্যাস 🙁 লেখা শুরু করছিলাম...অনেকখানি লিখছিলাম ও....পরে এস এস সি' র ছুটিতে বাড়ি আসার পর সেটা কই যে হারায়ে গেল ..!...
    এখন, উপন্যাস লিখতেছি ভাবলে ভয়ে গায়ে জ্বর আসে 🙂

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।