০।
আমার বন্ধু রোকনের একটা শখ ছিল ডায়েরীর ভিতর ছবি জমানো, পুরান খবরের কাগজ থেকে কেটে আনা ছবি। সেইখানে হিঙ্গিস ছিল, কুর্নিকোভা ছিল ছিল আর অনেক আজেবাজে ছবি। সেইখানের একটা ছবি ছিল, এক ফিলিস্তিনী মা তার দুই সন্তান কে বাঁচানোর জন্য আড়াল করার চেষ্টা করছেন আর এক ইসরায়েলী সেনা তার রাইফেল তাক করে আছে তাদের দিকে, সেই ছবির ক্যাপশন ছিল- Tell me who is the terrorist? সেই পুরান ডায়েরীর কুর্নিকোভার জায়গায় কেন জানি আমার এই ছবিটার কথা মনে রয়ে গেছে। হয়ত তাই মাথার ভিতর খালি ঘুরছে- টেল মি হ্যু ইজ দ্যা টেররিস্ট?
০১।
আজকে ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স নামে এক ইসরায়েলী মানবাধিকার সংস্থা একটা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেইখানে এই বছরের শুরুর দিকে ইসরায়েলী সেনাবাহিনীর অপারেশন লিড কাস্ট নামে গাজায় নৃশংস আক্রমনের বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে। তাদের এই রিপোর্টে অপারেশন লিড কাস্টে অংশ গ্রহণকারী ৫৪ জন ইসরায়েলী সৈ্নিক তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছে। প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে বিনা কারণে হাজার হাজার বেসামরিক বাড়ি-ঘর, মসজিদ ধ্বংসের কথা, ক্ষুদ্রাস্ত্রের সাহায্যে বেসামরিক নিরস্ত্র লোকদের হত্যা করা কিংবা জনবসতি পূর্ণ এলাকায় ফসফরাস বোমা ব্যবহার করার কথা। যার সবগুলোই কিনা যুদ্ধাপরাধের লঙ্ঘন। আর সবচেয়ে গুরুতর ব্যাপার হল সৈ্নিকেরা স্বীকার করে নিয়েছে তাদের এই কাজে তাদের হাই কমান্ডের নৈ্তিক সমর্থনের কথা। তাই হয়ত এক সৈ্নিক ব্যাপারটা কে ব্যাখ্যা করেছে এইভাবে- You feel like an infantile little kid with a magnifying glass looking at ants, burning them,”
০২।
আজকে আবার বিবিসিতে ইসরায়েলী এক মুখপাত্রের বক্তব্য দেখলাম। তারা ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স এর এই রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের ভাষায় হামাস এর জংগীদের সাথে সেই অপারেশনে অত্যন্ত বিবেচনামূলক কাজ করা হয়েছে। আর ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স তাদের সূত্রদের পরিচয় প্রকাশ না করায় এর ভিত্তি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। এর পর থেকে খালি মাথা ঘুরছে আসলে কে অপরাধী?
০৩।
সার্বভৌমত্বের সংজ্ঞা আসলে কী? এই প্রশ্নের উত্তর সম্ভবত সারা পৃথিবীর জন্য এক হলেও ফিলস্তিনীদের জন্য ভিন্ন। কারন নিজ ভূমেই তারা পরবাসী। তাই তাদের ভূখন্ডের চারপাশে চলাচল নিয়ন্ত্রিত হয় ইসরায়েলীদের ইচ্ছা মাফিক। ইসরায়েলীরা দিনের পর দিন গাজার পানি, বিদ্যুত সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসের সরবারহ নিয়ন্ত্রণ করে এমনকি অতিপ্রয়োজনীয় ঔষুধেরও। সেইখানে প্রবেশধিকার আছে খালি ত্রাণ সাহায্যের। কি হাস্যকর এই পৃথিবী, একটি জনগোষ্ঠীকে দিনের পর দিন তাদের প্রয়োজনীয় দৈনিক দ্রব্য সামগ্রী থেকে বঞ্চিত করে বরং নির্ভীরশীল করে তুলা হচ্ছে ত্রাণের উপর।
সারা পৃথিবীর চোখে হামাস আজ জংগী, অপরাধী। তাদের অপরাধ তারা ইসরায়েলী ভূখন্ডে রকেট হামলা চালিয়েছে। বিস্ময়কর ভাবে সবাই শুধু হামাস কে দোষ দিচ্ছে। কিন্তু কেও হামাসের চরমপন্থা গ্রহণের পিছনের কারণ গুলো আর তুলে ধরছে না। কেও এইকথা বলছে না একটি জনগোষ্ঠী দিনের পর দিন অবরুদ্ধ হয়ে থাকলে তারা ঘুরে দাড়াতে বাধ্য। তখন চরমপন্থা বা নরমপন্থা বলে কিছু থাকে না, তাদের মনে থাকে খালি শুধু একটা কথা প্রতিশোধ। তাই মনে প্রশ্ন জাগে আসলে কে অপরাধী? যে ঘুরে দাড়িয়ে পালটা আঘাত হানতে বাধ্য হয় সে? নাকি যে তাকে বাধ্য করে আঘাত হানতে সে?
০৪।
জানুয়ারীর এই আক্রমণে ফিলিস্তিনীদের হতাহতের সংখ্যা আনুমানিক প্রায় ১১৬৬-১৪১৭ আর ইসরায়েলী পক্ষে মৃতের সংখ্যা ১৩। ফিলিস্তিনীদের হতাহতের মধ্যে বেশীর ভাগই আবার বেসমারিক লোকজন যাদের মাঝে শিশুই বেশী। একটা যুদ্ধের প্রকৃ্ত ক্ষতির পরিমাণ শুধু মাত্র মৃতের সংখ্যা দিয়ে বিবেচনা করা যায় না। চিন্তা করুন যেই সব মানুষ গুলো বেচে গেল তাদের কি অবর্ণনীয় অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে যেতে হল? চিন্তা করুন যেই শিশু তার চারপাশে আজ এই নিষ্ঠুর-নির্মম দৃশ্য দেখছে তার মানসিক জগতে তার কি প্রভাব পড়বে। আজ থেকে দশ বছর পর এই শিশুদের কেও যদি হাতে অস্ত্র তুলে নেয় তাইলে ইসরায়েলী কর্তৃপক্ষ কি তাকে আরেকটা টেররিস্ট আখ্যা দিয়েই তাদের দ্বায়িত্ব খালাস করবে?
০০।
আজকাল মাঝে মাঝে এইসব খবরে দারুন হতাশ লাগে, কষ্ট লাগে। মনে হয় একটা জাতি কে পরিকল্পিত ভাবে উচ্ছেদের এই চেষ্টা কিভাবে শুধু মাত্র সন্ত্রসী দমনের নামে বৈধ করা হচ্ছে। মনে হয় হিটলারের জার্মানী, ঈহুদীদের মনজগতে অত্যাচারের যে ছবি ঢুকিয়ে দিয়েছে তা কি তাদের এতটা মানসিক বিকারগ্রস্ত করে ফেলেছে যে, ফিলিস্তিনীদের আরেকটা যাযাবর জাতিতে পরিণত করার রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ তাদের মনে আর কোন বিকার ঘটায় না। হয়ত এটাই সত্যি তাই আইরিন আভারিন আর ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্সের মত গুটিকতেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কন্ঠস্বর আর ইসরায়েলী জনগনের মাঝে অনুরনন তুলে না। বরং নেতানিয়াহুর ফিলিস্তিনী সন্ত্রাসীদের(!!!) দমিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতি আর বেশি আবেদনের সৃষ্টি করে। কারন হয়ত ভেড়ার পালরূপী ইসরায়েলী জনগনের কাছে সব ফিলিস্তিনীই সন্ত্রাসী যাদের মরা উচিত, মারা উচিত।
১ম
আজকাল আর কষ্ট করে কেও লেখা পড়ে না 🙁
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
খুবই গুরুত্বপুর্ন একটা বিষয় নিয়ে খুব চমৎকার লিখেছো রাশেদ ...... :boss: :boss: :boss:
ইসরায়েলী লোকজন যতদিন বিশ্ববাজার নিয়ন্ত্রন করবে, মনে হয় না টেররিস্টয়ের সংগা বদলাবে ...... 🙁 🙁
মইনুল ভাই আসলে এখন সংজ্ঞা নির্ধররিত হয় কে সংজ্ঞা দিচ্ছে তার উপর। পড়ার জন্য ধন্যবাদ
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
এই সংজ্ঞা নির্ধারণের পলিটিকসটাই ওরিয়েন্টালিজমের মূল বক্তব্য। নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতাবানরা কিছু সংজ্ঞা বানিয়ে তা' চাপিয়ে দেয় অধীনস্তদের উপর। তারপর চলে নিবর্তনমূলক শাসন।
খুব ভালো লাগল ইসরাইল-ফিলিস্তিন সমস্যাটাকে এভাবে বিচার করা। আরো ভালো লাগবে যদি এই দৃষ্টিভংগিটা আমাদের দেশের মধ্যকার নানা বিষয় বিশ্লাষনে কাজে লাগালে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আপনার মতামত পেয়ে ভাল লাগল ভাইয়া 🙂
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
কোন উপায় নাই মনে হয় কিছু করার...
জিদের চোটে আরেকটা হিটলার দেখতে ইচ্ছা করে.........
ফয়সাল জিদ ভাল কিন্তু জিদের চোটে হিটলার দেখতে চাওয়া ভাল না 🙂 এক হিটলার ঈহুদী নিধন করতে গিয়ে যত সমস্যার পথ খুলে দিয়েছে আরেক হিটলার সেই পথের সংখ্যা শুধু মাত্র বাড়াবে।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ফয়সাল...হিটলার শুধু ইহুদিদেরই মারে নি...সমাজের রুগ্ন, বৃদ্ধ, মানুষিক রুগী, পঙ্গু এরাও ছিল হিটলার এর বর্বরতার শিকার...তাই
এই কাথাটা বলা তোমার উচিৎ হয় নি...
আমরা সবাই অপরাধী । তবে দেখতে দেখতে মানুষ জন কেমন যেন অনুভূতিহীন হয়ে গেছে, কোন কিছুই আর মনে দাগ ফেলে না । শালার এগুলা পড়লে নিজেরে মানুষ মনে হয় না ।
হুম...... ঠিক কথা। কালকে যখন বিবিসিতে ইসরায়েলী মুখপাত্রের কথা শুনছিলাম আর তারপরে যখন বিবিসি সেইসাথে ধ্বংস যজ্ঞের ছবি দেখাচ্ছিল তখন কেন জানি খুব রাগ হচ্ছিল হয়ত কোন কিছু না করতে পারার রাগ
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ঈসরাইলের ব্যাপারে একমত।
এখন দুইটা কথা যোগ করি।
আমাদের এইখানে কিন্তু অনেক ফিলিস্তিনি ছাত্র আছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন একদম প্যালেস্টাইন থেকে উঠে আসা। আর অন্যরা সৌদি কিংবা দুবাই প্রবাসী।
প্যালেস্টাইনেই বড় হয়েছে এমন এক ছেলে আমার খুব কাছের বন্ধু। গত কয়েকমাস আগে ঈসরাইলের নৃশংস হত্যাকান্ডের সূচনার আগেও ও বলতো, হামাসের চেয়ে ঈসরাইল সৈন্যরা ভালো।
ওর দশ বছর বয়সী কাজিনকে হামাসের সৈন্যরা পাঁচ তলা থেকে নীচে ফেলে মেরে ফেলেছিল- কারণ শিশুটি ফাতাহ দের একটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল। ফাতাহরা একধরণের কাপড় পড়ে সেও ওই ধরণের কাপড় পড়া ছিল। এই তার অপরাধ।
হামাস মনে করে ফাতাহ এর সমর্থকরা মুসলমান না। বিনা বিচারে, বিনা কারণে ফাতাহ নিধন করা হয়।
হামাসকে তাই বড় করে দেখার উপায় নেই, তারা আটকে পড়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এমনভাবে বিশেষায়িত করারও কিছু নেই। তারাও খুনী। ঈসরাইলী সৈন্যদের মতৈ।
হামাসকে আমি যেভাবে খারাপ বললাম এইটাকে অনেকেই এক বাক্যে ইহুদী নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমা মিডিয়ার প্রোপাগন্ডা বলে চালিয়ে দিতে পারবেন- কিন্তু এইটা প্রপাগন্ডা না। প্যালেস্টাইনী অধিবাসীদের কাছে শোনা।
ব্যাপারটা ঠিক জানা ছিল না তাই তোকে ধন্যবাদ।
যদি হামাস এইরকম ঘটনার সাথে জড়িত হয় তাইলে তাদের কে আসলেই বড় করে দেখার কিছু নেই। কিন্তু আরেকটা কথা হল হামাস কে বৈধতা দিচ্ছে কিন্তু ইসরায়েলীরা কারণ যখন তারা দখলদারীর ভূমিকা নিচ্ছে তখন সেইখানে তাদের প্রতিরোধ করা যে কেউ বীরের সম্মান পাবে।
আর ফাতাহের কিছু জিনিসও আসলে চোখে লাগার মত। ইসরায়েলী এই অগ্রাসনের শুরুর দিকে ফাতাহ কিন্তু অনেকটা নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়েছিল কারণ তারা ভেবেছিল এইটা শুধুমাত্র হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান।
শুধু মাত্র নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এই ভূমিকা নেওয়াকেও সমর্থন করা যায় না।
এইসব দেখে কোথায় যেন শুনা একটা কথা মনে পরে গেল- আসলে এইখানে সবাই খেলে, খেলে ইসরায়েলীরা, আরব নেতারা এমনকি হামাস আর ফাতাহ আর মাঝ খনে চিপায় পড়ে ফিলিস্তিনী জনগণ
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
@রায়হান,
যুদ্ধের মাঠে সৈন্যরা সবাই খুনী। এটাই নিয়ম। আর যুদ্ধ যখন ময়দান ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে+দীর্ঘস্থায়ী হয়, তখন স্বপক্ষের লোকজনের মাঝেও মতদ্বৈততা এবং সেখান থেকে সহিংসতা আসে। তোমার উল্লিখিত সূত্র একপেশে বক্তব্য দিয়েছে। তার কথার উপর ভিত্তি করে হামাসকে মূল্যায়ন করা ভুল হবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
নিজ দেশের জনগনের সাথে যুদ্ধ? সেই যুদ্ধে খুন করতে হবে এটাই নিয়ম?
এই বাক্যের মাধ্যমে হামাসের ফাতাহ সমর্থকদের নির্বিচারে হত্যাকে কি "ঠিকাছে" বলে মেনে নিবো?
তোমার উল্লিখিত সূত্র একপেশে বক্তব্য দিয়েছে। তার কথার উপর ভিত্তি করে হামাসকে মূল্যায়ন করা ভুল হবে।
হামাসকে মূল্যায়ন করা আমার কাজ নয়। আমার মন্তব্যে আমি হামাসের নৃশংসতা বোঝাতে চেয়েছি।
সূত্র একপেশে বক্তব্য দিয়েছে সেটা কেমন করে বলি? সে নিজ চোখে অনেককে খুন হতে দেখেছে, আমাকে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছে, আমি সেটা শেয়ার করেছি।
আমার উদ্দেশ্য সাধারণ। একটা তথ্য দেওয়া। ফিলিস্তিন সংকট আলোচনা নয়। নাই জ্ঞান নিয়ে আমি সেটা করার যোগ্যও নই।
অন্যভাবে নিও না, একটা প্রশ্ন দিয়ে আমার মতটা খোলাসা করি।- আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শেষের দিকে এসে কিছু কিছু রাজাকারকে হত্যা করা হয়েছে। এখন তাদের কেউ যদি অন্যদেশে যেয়ে বলে যে মুক্তিযোদ্ধারা খুনী, তাহলে সেই তথ্যটা কিভাবে নিবে?
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভাইয়া, অন্যভাবে নেই নাই। 🙂
রাজাকারের সাথে তুলনা আমার মাথাতেও আসছিল। তবে কোন ভাবেই তো হত্যাকান্ড সমর্থন করা যায় না। এইজন্যই হামাসের ব্যাপারে একটু বাজে ফিলিং হয়।
রাজাকার মারা আর ১০ বছর বয়েসি শিশু মারা এক জিনিস না।তবে এইটা ঠিক-নিরীহ কাউকেই হত্যা করা ভয়াবহতম অন্যায়
রাশেদ ভাই, খুব সুন্দর করে লিখেছো ...
যখন এইসব নৃশংসতার খবর পড়ি, চুপচাপ শুনে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকেনা। যুদ্ধে এত নিরপরাধ মানুষ, বাচ্চা'রা কোন কারন ছাড়াই মারা যাচ্ছে। খুব'ই দুঃখজনক 🙁
ধন্যবাদ ভাবী পড়ার জন্য 🙂
যুদ্ধ জিনিসটাই খারাপ। আর এর আর খারাপ দিক হল অপ্রকাশ্য ক্ষতির দিকটা। আমার মতে একটা যুদ্ধে যতটা না প্রকাশ্য ক্ষতি হয় তার থেকে বড় ক্ষতি হয় অপ্রকাশ্য ভাবে, মানুষের মনজগতে। দেখুন না এক ২য় মহাযুদ্ধের কারনে ঈহুদীদের মনজগতে যে পরিমান অস্তিতহীনতার সংকট সৃষ্টি করেছে তার পরিনাম ভোগ করছে ফিলিস্তিনীরা
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আজকাল ইসরাইল - ফিলিস্তিন, ইরাক-যুক্তরাস্ট্র কিংবা আফগানিস্তান বিষয়ক খবরগুলো স্কিপ করি। এককালে ইন্টারনেটে ইসরাইলের অনৈতিক আগ্রাসন-বিরোধী অনেক পিটিশন, প্রতিবাদ, ফোরাম ইত্যাদিতে অংশ নিয়েছি। আজকাল স্কিপ করি। কি লাভ কষ্ট পেয়ে! এককালে মনের মধ্যে উঁকি দেয়া ভয়ংকর চিন্তাগুলো তাই আজ কাছে ভিড়ে না। বাস্তবতা আর হতাশার তীব্রতা অবশ আর অসাড় করে দিয়েছে কিছু কিছু ফিলিংসকে।
ওদেরকে না ঘেঁটে তাই আজ আমি comfortably(?) numb!!
ভাইয়া আমিও অনেকদিন এড়িয়ে থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু এড়িয়ে থাকতে চাইলেই কি এড়িয়ে থাকা যায়?
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
:thumbup:
নাহ! দেখতে দেখতে পোলাডা বড় হইয়া গেল।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
এইবার তাইলে পাত্রী দেখি, কি বলেন? 😛
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
চমৎকার লাগল লেখা :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ধন্যবাদ ভাইয়া 🙂
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
রায়হান আবীরের মন্তব্যটা পড়ে একটু থমকে গেলাম। অবশ্য সব খানেই এমন ব্যাপার ঘটে শুধু নিজেদের কাছের লোক সেখানে থাকলে ঘটনার আঁচ আমাদের গায়ে লাগে। তবে আমি নিজে ব্যাক্তিগত ভাবে সকল ধরণের মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে। ইসরাইলের ব্যাপারে অবশ্য নতুন করে কিছু বলার নেই। সারা বিশ্বে এটাকে বৈধতা দেয়ার নাটক দেখেও আমি ফেডআপ।
তবে লিখাটা খুব সুন্দর হইছে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ আমিন ভাই
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
রাশেদ, আবীর : পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের আগ্রাসনের সময় সিসিবিতে বেশ আলোচনা হয়েছিল। নির্বাচনের আগে ইসরায়েলি ডানপন্থী নেতারা এই রকম একটা যুদ্ধ চাচ্ছিল। সে সুযোগ করে দিয়েছে হামাস। হাতির মতো ইসরায়েলি সমরযন্ত্রের গায়ে চামচিকার মতো হামাসের লাথি এই একবিংশ শতাব্দীতে কাতুকুতু দেয়ার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু না! দেখো তামিল টাইগারকে পর্যন্ত চরমভাবে পরাজিত করা গেছে। সেখানে হামাসের ক্ষমতা কি আমরা সবাই জানি। ইসরায়েলি উগ্র ডানপন্থীরা সুযোগ খুঁজছিল। হামাস বোকার মতো সে ফাঁদে পা দিয়েছে।
ইসরায়েলি যুদ্ধাপরাধ নিয়ে রাশেদের সঙ্গে বিন্দুমাত্র ভিন্নমত নেই আমার। এইসব যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় সাধারণ প্যালেস্টাইনি জনগণ, নারী-শিশুরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই জন্য আজ না হলেও একদিন অবশ্যই ইসরায়েলি নেতাদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
আর ফাতাহ-হামাস দুটোই হারামি, দুটোই বাজে। এদের বিভক্তির সুযোগ নিচ্ছে ইসরায়েল এবং এর পশ্চিমি মিত্ররা। ইসরায়েলি সমরযন্ত্রের বিরুদ্ধে কয়েকটা রকেট বা আত্মঘাতি হামলা কোনো কাজে দেবে না। আমি এসব ক্ষেত্রে গান্ধীবাদী। অহিংস পথে আমরণ লড়াই করেই প্যালেস্টাইনের দেশ আদায় করতে হবে। এই পথে গেলে গোটা বিশ্বের জনমত ফাতাহ-হামাসের পক্ষে থাকবে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাবলু ভাই, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। তবে আপনার গান্ধীবাদী নীতি নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। কারণ এর মাধ্যমে বিশ্বজনমত গঠন করতে গেলে তার প্রচার দরকার হবে। কিন্তু আপনি যদি বিশ্বের প্রধান প্রচার মাধ্যম গুলোর ইসরায়েলী নীতিটা লক্ষ্য করেন তাইলে দেখবেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা অত্যন্ত নমনীয় আর অনেক ক্ষেত্রেই তা নিলজ্জের মত পক্ষপাতমূলক।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
একমত রাশেদ। কিন্তু কয়েকটা রকেট দিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কিছুই করা যাবে না, নিজেদের আরো ক্ষতি ছাড়া। তাই অহিংসাই সেরা পথ। হয়তো ৫/১০ বছর আরো লাগবে। দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে দেখো। ওরাও সশস্ত্র সংগ্রাম করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অহিংস প্রবল আন্দোলন আর বিশ্ব জনমতের কাছে পরাজিত হতে হয়েছে চরম বর্নবাদীদের।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাবলু ভাই, আমি গান্ধীবাদী মতের পক্ষে রায় না দিলেও ঠিক চরম সশস্ত্র পন্থাও সঠিক বলে মনে করি না। আসলে আমার মতে, নিরীহ মানুষের উপর আত্মঘাতী হামলা না চালিয়ে লক্ষ্য করা উচিত ইসরায়েলী সেনাবাহিনী কে। আর সেই সাথে চালান উচিত কূটনৈতিক তৎপরতা। এইখানে একটা ব্যাপার হল সব কূটনৈতিক তৎপরতার আগে হামাস আর ফাতাহ কে তাদের উদ্দ্যেশে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
যত ক্ষুদ্র মাত্রাই হোক ইসরায়েলী সেনাবাহিনীর উপর হামলার কথা বলছি এই কারনে যে, এটা একটা বন্দী জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিরোধের স্পৃহা কে জাগিয়ে রাখবে। যেহেতু কূটনৈতিক ভাবে এইসব ব্যাপারে সমাধানে যেত অনেক সময়ের ব্যাপার তাই সেই সময়টায় সাধারণ জনগণ ভাবতে পারে তাদের দাবির পক্ষের কাজকর্মের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। যেটা কিনা এইসব হামলা গুলো দূর করবে। আরেকটা কথা হল, অনেক সময় সামরিক ক্ষেত্রে হামলার তীব্রতার উপর নির্ভর করে আলোচনার টেবিলে আক্রমণকারী শক্তির সমাধানের আসার ইচ্ছা। উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, ১৯৮৭ এর ইন্তিফাদার তীব্রতা কিন্তু ইসরায়েলী শক্তিকে অসলো শান্তি চুক্তির পথে নিয়ে যেতে সাহায্য করিছিল। তাই অন্তত একটা ক্ষেত্র পর্যন্ত সামরিক শক্তি ব্যায়ের দরকার আছে।
আরেকটা তথ্য দিই লাবলু ভাই, এইবারের ইসরায়েলী আক্রমণটা কিন্তু তাদের জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগে দিয়ে হয়েছিল। অনেক বিশ্লেষকের মতে এটা আসলে অতি ডান দের একটা নির্বাচনী চাল ছিল মানে হামাস রকেট ছুড়ুক আর নাই ছুড়ুক তারা হামলা চালাতোই কারন এর প্রস্ততি নেয়া হয়েছিল অনেক আগেই। খুজে দেখছি, পেলে এই বিশ্লেষণের লিংক দিয়ে যাব।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
রাশেদ : এটা কিন্তু আমি আমার প্রথম মন্তব্যেও বলেছি। এবার আসো ইন্তিফাদায়। সেটা যতোটা সশস্ত্র তার চেয়ে বেশি ছিল প্যালেস্টাইনি জনগণের আন্দোলন। এক ধরণের গণঅভ্যূত্থান বলতে পারো। কিন্তু ফাতাহ-হামাসের বিভক্তি এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই ইন্তিফাদার সাফল্যকে ম্লান করে দিয়েছে। আরেকটা ইন্তিফাদা দরকার। এবার সেই ইন্তিফাদার ঢেউ ছড়িয়ে দিতে হবে গোটা বিশ্বে।
আর ইসরায়েলি সমরযন্ত্র সম্পর্কে তোমার ধারণা কি জানি না। ওরা ভয়ংকর, অসাধারণ দক্ষ-যোগ্য। ওরা নিজেরা প্রচুর সামরিক গবেষণা করে। মার্কিন সহায়তার বাইরেও নিজস্ব যোগ্যতায় ওরা পুরো মধ্যপ্রাচ্য ও আরব বিশ্বকে পরাস্ত করতে সক্ষম। সামরিক পথে ওদের সঙ্গে পারা যাবে না। বরং ওদের ভন্ডামির মুখোশ উম্মোচন করা, ইসরায়েলকেই সন্ত্রাসবাদী হিসাবে পদে পদে প্রমাণ করার জন্য যা করা দরকার- সব করতে হবে। আমি এখনো মনে করি অহিংস আন্দোলনই প্যালেস্টাইনের বিজয় অর্জনের পথ। চিন্তা করে দেখো, প্যালেস্টাইনের প্রজন্মের পর প্রজন্ম কি দূর্বিষহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে! কতো মৃত্যু, কতো ধ্বংস, কতো কান্না!!
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
মাও সে তুং একটা খুব সত্য কথা বলছিলেন, বন্দুকের নলই সকল ক্ষমতার উৎস।
অনেক সময় কথাটা সত্য বইকি 🙁
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ভাল লিখেছ।
কে টেররিস্ট এটা বলা খুব টাফ হলেও খুব নিশ্চিতভাবে বলা যায়- সুপারপাওয়ার এবং তাদের পা-চাটা রা কখনই টেররিস্ট না।