বিয়ের কোন সার্বজনীন সংগা নেই। দেয়া অসম্ভব। একেক সমাজে বিয়ে একেক অর্থ বহন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সেমিস্টারে একটা কোর্সে বিয়ে ছিল পাঠ্য বিষয়। পড়িয়েছিলেন শাহীন ম্যাডাম, কেমব্রিজ থেকে রেকর্ড সং্খ্যক নাম্বার পাওয়া সমাজবিজ্ঞানের এই ছাত্রীর সেই ক্লাসের পর চিন্তা চেতনায় আমুল ধাক্কা লেগেছিল। মাত্র বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করে আসা গতানুগতিক আমি সমাজ বিজ্ঞানের এই অগতানুগতিক বিষয় কে হজম করতে পারিনি তখনো।
সমকামী বিয়ে নিয়ে কিছু লিখতে ইচ্ছে হলো। বিশ্বজুড়ে এমন বিচিত্র সব বিয়ে আছে, যা আমাদের ধারণার বাইরে। খুব সম্ভবত আমরা আমাদের পারিপার্শ্বিক সমাজের আলোকে সবকিছুকে দেখতে অভ্যস্ত বলেই বিয়ে বলতে বুঝি একটা ছেলে এবং মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক। তবে বিশ্বব্যাপি বিয়ের দুটি বিষয় সার্বজনীন। প্রথমত স্বামী স্ত্রীর যৌন মিলনের সামাজিক স্বীকৃতি এবং দ্বিতীয়ত সন্তানের বৈধতা। বিগত কয়েকশ বছর যাবত নৃবিজ্ঞানীরা বিয়ের এমন কোন সংগা দিতে পারেন নি যা সকল সমাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ১৯৭০সালে উইলিয়াম গুড এনাফ বিয়েকে সংগায়িত করতে গিয়েবলেছিলেন,বিয়ে একটি চুক্তি যার মাধ্যমে একজন নারীর ওপর একজন পুরুষ সামাজিক ভাবে যৌন অধিকার লাভ করে এবং তাদের তারা উতপাদিত সন্তান সমাজে বৈধতা লাভ করে।
সুদানের নুয়ের সমাজে ভুত বিবাহ এবং নারীতে নারীতে বিবাহ কয়েক শতাব্দী ধরে চালু আছে যা এ যাবতকালে বিয়ের সকল ধারণাকে পাল্টে দেয়। বাংগালি হিসেবে আমাদের প্রচলিত ধ্যান ধারণাকেও ভেংগে দেয়। এই দুটি বিয়ে সম্পর্কে আলাদা ভাবে লিখবো অন্যদিন। আমাদের সমাজের প্রেক্ষাপটে চিন্তা না করে সমাজ বিজ্ঞানের চোখ দিয়ে দেখলে সমকামি বিয়ে পৃথিবীতে বিরাজমান প্রায় চল্লিশ ধরণের বিয়ের একটি। এখানে বুঝতে হবে এই বিয়ে আসলে গে সেক্স এর জন্য না অন্য অর্থ বহন করে। কারণ সমকামি বিয়ে শুনলেই পর্নে ভেসে আসা গে সেক্স এর কথা মনে আসে। কিন্তু এটাও সত্যি কখনো কখনো দুজন পুরুষ বা দুজন মেয়ে আত্মিক কারণে পাশাপাশি থাকতে চায়। সেক্ষেত্রে যৌনতা মুখ্য নয়।
তবে সমকামি বিয়ে মানুষের প্রজাতি রক্ষার
পরিপন্থি বলে অনেক সমাজেই তা নিষিদ্ধ। সুন্দর এবং মেয়েলি চেহারার ছেলেরা অনেক সমকামির শিকার ও হয় হরহামেশা। নৃবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হিসেবে সমকামি বিয়েকে বিয়ের একটা ধরণ বলতে পারি। এটা ঠিক কি ভুল এই বিতর্কে কখনোই যাবো না। কিংবা যাওয়া ঠিক ও না। তবে সমকামি বিয়ে প্রসংগে একটা কৌতুক মনে পড়লো।
সমকামি বিয়ে স্বীকৃতি দেবার পর এক লোক দর্জির কাছে গিয়েছে প্যান্ট বানাতে। দর্জি তখন তাকে প্রশ্ন করছে, ভাই জিপার কি দুই দিকেই দেব? সামনে একটা, পেছনে একটা।
সেক্স এক ধরণের ব্যাক্তি স্বাধীনতার বিষয়। এক অর্থে স্বেচ্ছাচারীও। যৌনমিলনের সময় কে কাকে সংগী হিসেবে গ্রহন করবে এটা তাদের বিষয়। সমকামি বিয়ে তারা যদি ভালো থাকে, তবে আমাদের ক্ষতি কি? ভালো থাকা যে যার ব্যক্তিস্বাধীনতা। তবে কয়েক দশক পরই হয়তো সমকামি বিয়ে নিয়ে বিস্তর মাঠ গবেষণা হবে। তখন আবার নতুন করে সমাজবিজ্ঞানের চোখ দিয়ে একে ব্যাখা করা যাবে।
আপাতত তারা ভালো থাকুক।
সমকামী বিয়ের প্রসঙ্গে অনেকেই জার্মানিতে ভাই বোনের বিয়ে সম্পর্কিত একটি খবরের লিঙ্ক শেয়ার দিচ্ছে ফেসবুকে। যেখানে অজাচার আর সমকামিকে তুলনা করতে গিয়ে মিলিয়ে ফেলা হচ্ছে। নির্মোহ ভাবে কিছু লেখা লিখতে ইচ্ছে হলো। সমকামী বিয়ে নিয়ে প্রথম অংশে লিখেছি। যা সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টি থেকে। আর ভাই বোনের বিয়ের ঘটনায় আমার মনে পড়লো প্রাচীন মিশররের ফারাও সম্রাটদের কথা যারা তাদের আভিজাত্য কিংবা ব্লু ব্লাড যাই বলি না কেন ধরে রাখার জন্য ভাই বোনের বিয়ে দিত। এছাড়া প্রাচীন কালে এমন অনেক গোত্র মিলতো যেখানে ভাই বোনের বিয়ে বৈধ ছিলো। কেউ আবার ভেবে বসবেন না ভাই বোনের বিয়েকে বৈধ করার উদ্দেশ্য নিয়ে এ লেখা। তাহলে ভুল ভাবা হবে। কিন্তু সমকামীদের প্রতি আপনাদের তীব্র ঘৃণা ছাপিয়ে এখন যারা এই বিয়েকে সমর্থন করে ফেসবুকে রংধনু প্রোফাইল পিক দিয়েছে তাদের প্রতিও চলে যাচ্ছে দেখে মনে হলো এক ধরণের সামাজিক সংঘাত তৈরি করছি অন্য দেশে পাশ হওয়া একটি আইন নিয়ে। বিশ্বব্যাপী অজাচার নিষেধাজ্ঞা খুব প্রচলিত বিষয়। অজাচার নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে কিছু নির্দিষ্ট সম্পর্কের সাথে বিয়ের বন্ধন নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। তবে বিভিন্ন সমাজ বিশ্লেষণ করে নৃবিজ্ঞানীরা এই মতে পৌঁছেছেন যে শুধু মাত্র মা এবং ছেলের বিয়ে ছাড়া সার্বজনীন কোন অজাচার নিষেধাজ্ঞা নেই। অর্থাৎ ভাই বোনের বিয়ে কিংবা বাবা মেয়ের বিয়ে অনেক নৃতাত্ত্বিক গোত্রেই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এই বিয়ে কোন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য নয়, কিংবা ঐ বিয়ে আমাদের বিয়ের মতোও নয়। ক্ষেত্র ভেদে যা ভিন্ন অর্থ বহন করে। পরে এ নিয়ে আলোচনা আছে। যা হোক, গ্রীক পুরাণের ইদিপাসের কাহিনী প্রসঙ্গত মনে পড়ে যায় যা অজাচার নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। শুনতে কটু শোনালেও যারা ইদিপাস কমপ্লেক্স পড়েছেন তারা হয়তো জানেন, ইদিপাস তার বাবাকে হত্যা করে মাকে বিয়ে করেছিল ঘটনা ক্রমে। যদিও এটা জানতে পেরে তার মা পরে আত্মহত্যা করেছিল। সে ভিন্ন প্রসঙ্গ।আব্রাহামীয় ধর্ম যেভাবে সৃষ্টি তত্ত্বকে ব্যাখা করে অর্থাৎ অ্যাডাম এবং ইভ থেকে মানব জাতির উতপত্তি সে হিসেবে আমরা সমগ্র মানব প্রজাতি অজাচার নিষেধাজ্ঞার ফসল। ধর্মতাত্ত্বিকদের সাথে এ নিয়ে বহু তর্ক বিতর্ক হয়েছে। এই স্ট্যাটাসে এই বিতর্ক শুরু না করলেই খুশি হবো। সবার ব্যক্তিগত বিশ্বাসকে আমি সম্মান জানাই।যাহোক, প্রাচীন সমাজে বিয়ের ধারণা এসেছিল নর-নারীর যৌন সম্পর্ককে মুখ্য হিসেবে ধরে নয়, বরং সামাজিক মৈত্রী বন্ধন এবং এক গ্রুপের সাথে অন্য গ্রুপের সম্পর্ক স্থাপনের জন্য। সামাজিক নিরাপত্তা এবং বাইরের গোত্রের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য যার বিশেষ প্রয়োজন ছিল। ফলে এক্সোগ্যামি এবং এন্ডোগ্যামির মতো দুই ধরণের বিয়ে প্রচলিত হয়েছে। কিন্তু, কেন এই অজাচার নিষেধাজ্ঞা? দীর্ঘকাল ধরে নৃবিজ্ঞানী, মনঃবিজ্ঞানী এবং সমাজ বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে গবেষণা করেছেন। বলাবাহুল্য পশ্চিমা সমাজে অজাচার বলতে নিজ বাবা, মা, ভাই, বোনের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন বোঝালেও অনেক সমাজেই এই অজাচারের ধারণা এত সীমিত এবং সংকীর্ণ নয়। লেভিস্ট্রসের আগে যে সকল নৃবিজ্ঞানীরা এসব নিয়ে গবেষনা করেছেন, তারা যৌন বিধিমালা এবং বিয়ের বিধি মালা এ দুয়ের পার্থক্য করেছিলেন। তাদের ধারণা ছিলো বিয়ে ছাড়াও যৌন সম্পর্ক ঘটতে পারে। কিন্তু আদতে দেখা গেল বিয়ে হচ্ছে কিন্তু যৌন সম্পর্ক হচ্ছে না এমন বহু বিয়ের দেখা পাওয়া যায় পৃথিবীতে। উল্লেখ্য, সুদানের নুয়ের সমাজের বিয়ে এবং ভূত বিবাহ। ( এ নিয়ে পরে আলোচনা করবো)প্রসঙ্গত ই বি টায়লরের কথা বলা যায়। যিনি বহির্বিবাহ সংক্রান্ত আলোচনা করতে গিয়ে বলেছিলেন, মৈত্রী সম্বন্ধ রক্ষা করে সমাজকে সু সংহত রাখতেই এই ধরণের বিয়ের প্রচলন হয়। অর্থাৎ একে অন্যের বোন কে বিয়ে করা, নারীবাদ আসার পূর্বে যাকে “নারী বিনিময়”ও বলা হতো। এভাবে একটি গোত্রের সাথে অন্য গোত্রের বিয়ের মাধ্যমে সমাজে সু সংহত করার প্রয়াস ছিলো। ফলে আজো বিশ্বব্যাপি অনেক সমাজে প্যারালাল কাজিন ( মামাতো বোন, খালাতো বোন) বিয়েকেও অজাচার হিসেবে দেখা হয় । মানব মনের আত্মিক ঐক্যের কারণে বিশ্বব্যাপি সব সমাজেই অজাচার নিষেধাজ্ঞা আছে। এই অজাচারকে ব্যাখা করতে গিয়ে সর্বপ্রথম মর্গান এবং মেইন একটি তত্ত্ব দাড় করান। এই তত্ত্বের আলোকে অজাচারকে ব্যাখা করা হয় এভাবে যে, মানুষ নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে করলে পরবর্তী প্রজন্মের ওপর জেনেটিকাল প্রভাব পড়ে। যদিও, অনেক নৃবিজ্ঞানীর কাছে এই ব্যাখা গ্রহনযোগ্যতা পায় নি। এই তত্ত্বের বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও ছিলো বেশ দুর্বল। তবুও উনিশ শতকে তা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে হলে পরবর্তী প্রজন্মে জেনেটিকাল ইফেক্ট পড়ে, দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতিগ্রস্ততা হয় এই কথা বিভিন্ন সমাজের মানুষ কিভাবে জানলেন? এর কোন সদুত্তর মেলেনি।অজাচার নিয়ে আরো কিছু ব্যাখা আছে। যেমন স্পেন্সার ও লুববক এর মতে অজাচার নিষেধাজ্ঞার উতস হচ্ছে প্রাচীন কালে জঙ্গি উপজাতিদের জোর পূর্বক কনে আনার প্রথা। ডুরখেইমের মতে অজাচার নিষেধাজ্ঞা যুক্ত আরো ব্যাপকতর নিষেধাজ্ঞার সাথেঃ ঋতুস্রাবের রক্ত। একই গোত্রের সদস্যদের জন্য গোত্রের সদস্যের রক্তের সংস্পর্শে আসা নিষিদ্ধ। ডুরখেইমের মতে অজাচার নিষেধাজ্ঞার উৎস এর মূলে আছে এই বিশেষ নিষেধাজ্ঞা। ( রেহনুমা, মানস, নৃবিজ্ঞানের প্রথম পাঠ, পৃঃ৮৩) শুধু নৃবিজ্ঞান নয় মনঃবিজ্ঞানের আলোকেও এই অজাচার নিষেধাজ্ঞাকে ব্যাখা করা যায়। এলিস এবং ওয়েস্টারমার্কের মতে, প্রাকৃতিক বিমুখতা ( ন্যাচারাল অ্যাভারসন) অজাচার নিষেধাজ্ঞার কারণ। এই তত্ত্ব মতে, ছোট বেলা থেকে যাদের সাথে বেড়ে ওঠা তাদের প্রতি প্রকৃতিগত কারণেই যৌন আকর্ষণ বোধ জন্মায় না। যদিও এটিও সমালোচিত কম হয় নি। এর ঠিক উলটো ব্যাখা দিয়েছেন মনঃবিজ্ঞানী ফ্রয়েড। ফ্রয়েডের মতে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রতি বিমুখতা নয় বরং আকর্ষণবোধই স্বাভাবিক। ছেলেরা তাই মায়ের প্রতি, এবং মেয়েরা বাবার প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। একে ইদিপাস কমপ্লেক্স এবং ইলেক্ট্রা কমপ্লেক্স নামে অভিহিত করা যায়। তবে এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখা দিয়েছেন মেলিনোস্কি। তিনি বলেছেন, কোন সমাজ বা গোত্র অজাচার মেনে চলে কারণ এটি মেনে না চললে সামাজিক সম্পর্ক গুলোর মাঝে দ্বন্দ্ব সংঘাত সৃষ্টি হয় এবং সম্পর্ক চূর্ণ বিচূর্ণ হতে পারে। কিংবা অজাচারের ফলে যদি সন্তান জন্মায় তাহলে কিনশিপ সিস্টেমের ব্যাঘাত ঘটে। যেমন মা এবং ছেলের বিয়ে হলে সন্তান কাকে বাবা ডাকবে, মা কেই বা কি ডাকবে।
টায়লর একদা বলেছিল, marry out or die out. তিনি বহির্বিবাহের পক্ষপাতিত্ব ছিল। কিন্তু, লেভিস্ট্রস অজাচারকে ব্যাখা দিয়েছিলেন ভিন্ন ভাবে। তিনি বলেছিলেন, অজাচার নিষেধাজ্ঞা একদিকে যেমন প্রাকৃতিক অন্যদিকে সাংস্কৃতিকও। কারণ, বিয়ের মাধ্যমে শুধু নারীর বিনিময়ই ঘটে না বরং সমাজ এবং সংস্কৃতির বিনিময়ও ঘটে। বিয়ের মাধ্যমে কি কি ধরণের মৈত্রী বন্ধন তৈরি হয় লেভি স্ট্রস তাও ব্যাখা করেছেন। অন্য কোন দিন লিখবো তা নিয়ে। আপাতত শুধু এটুকুই বলতে চাই, আমাদের সীমিত জ্ঞানের আলোকে কোন কিছুকে বিবেচনা করার আগে এর পেছনের সমাজতাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট জানা যেমন জরুরী তেমনি জরুরী কোন সমাজকে সেই সমাজের আলোকে ব্যাখা করা যাকে কালচারাল রিলেটিভিজম বলা হয়।পৃথিবীকে বহুমাত্রিক দৃষ্টিতে দেখতে হবে, দেখতে হবে জীবনকেও। তবেই, সমকামী, অসমকামী, বিষমকামী, কিংবা কামবিহীন সম্পর্ক কে মেনে নিতে এত জটিলতার সৃষ্টি হবে না। হুমায়ূন আহমেদের কথাই যথার্থ, জীবন সহজ, আমরাই একে জটিল করি। ভালো থাকুক সবাই, যে যার নিজস্ব জগত নিয়ে।
বুঝলাম নৃবিজ্ঞানিরাও এই ব্যাপারগুলো নিয়ে ভালই যন্ত্রনায় আছেন।
বিয়ে, সম্পর্ক, যৌন-আচরন এসব আসলেই যে জটিল ব্যাপার তা বুঝতে চেষ্টা না করে - "আমি স্ট্রেইট তাই জগত স্ট্রেইট হবে না ক্যান?" বলে ভিন্ন প্রেফারেন্স ও প্রবৃত্তি থাকাদের উপর খড়গ হাতে যারা ঝাঁপিয়ে পড়েন - আমার তো মনেহয় তাদেরই চিকিৎসা করানো দরকার......
তথ্য সমৃদ্ধ। যদিও ইন্টিগ্রেটেড না। একটু ছাড়া ছাড়া ভাব আছে...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ভাইয়া লেখাটা আমার ফেসবুকের দুটো আলাদা স্ট্যাটাসের সংযুক্তি। রাজিব ভাই বলাতে ব্লগে দেয়া। এডিট করতেও পারিনি কারণ মোবাইল থেকে পোস্ট দিয়েছি। ব্লগের জন্য লিখবো ভাবলে আরো যত্ন করে লিখতাম। আর হ্যা, নৃবিজ্ঞানীরা এখনো বিয়ের এমন কোন সংগাই দিতে পারেন নি যা সব সমাজের ক্ষেত্রে প্রোযোজ্য।
সেটা বুঝতে পেরেছি।
আর রাজিবের খপ্পরে পড়লে যে কোন রক্ষা নাই, সেটা আমার চেয়ে ভাল কে আর জানে?
ওর কাছে পাকড়াও হয়েই তো আমার এই সিসিবি যাত্রা
অথবা বলা চলে
সিসিবি জীবনে পদার্পন.........
😀 😀 😀 😀
:hatsoff: টউ রাজিব!!!
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
সিসিবিতে নিয়মিত আমিও ছিলাম একসময়। ক্যাডেট কলেজ থেকে বের হয়ে এটাই ছিল লেখালেখির সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম। সাময়িক ব্যাস্ততার কারণে যদিও কিছুদিন সিসিবি তে পোস্ট দেয়া হয়নি। নিয়মিত হবার চেষ্টা করছি। আর রাজিব ভাই নিঃসন্দেহে সিসিবির জন্য যা করছেন তার জন্য দেশে এলে তার সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করবো ভাবছি। ল :boss:
হা হা হা।
আমরা সবাই সিসিবি কে ভালোবাসি।
সেই ভালোবাসার টানেই তো সবাই।।।।।
আপনিও কি কম করছেন পারভেজ ভাই।।।
এবং আমরা এটা চালিয়ে যাবোই
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
:thumbup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
প্রসংগটি যদি হয় সমকামী বিয়ে, তবে এতে দুটি টার্ম বা শব্দের ব্যাপ্তি। সমকাম ও বিয়ে। সমকামিতা বিষয়টি হাজার বছর পুরোনো। বিয়েও।
এখানে আমার কাছে গুরুত্বের দাবীদার তিনটি বিষয়। প্রথমত: সমকামীর সম অধিকার। এতে এক বিন্দু আপত্তির কারন দেখিনা।
দ্বিতীয়ত: বিয়ের প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক অস্তিত্ব।চিরাচরিত বংশবৃদ্ধি ও সামাজিক বন্ধনের যে সূত্র হাজার বছরে লালিত (ব্যতিক্রমগুলো ছাড়া) তার প্রেক্ষিতে অগ্রায়ন বা পশ্চাদায়নের বিবেচনা। এখানে অনেক অজ্ঞতা বা দৃষ্টির সময়াত্তীর্ণ ফলাফল দেখতে পাওয়া বা বিচার-বিবেচনার সীমাবদ্ধতা।
তিন: নর-নারীর প্রাকৃতিক সম্পর্ককে পাল্টে প্রকৃতিকে অস্বীকার করার সম্ভাব্য সুদূরপ্রসারী ফলাফল।
এক্ষেত্রে একজন সমকামীর দুটো দিকের পৃথক বিষয় বৈচিত্র ও বিবেচনার আংগিক পুরো বিষয়ের সর্বাংগীন ফলাফল ও ভবিষ্যত বিচারের বিষয়টাকে খুব জটিল করে তুলছে। তা হলো যে এই সম্পর্কের ভিত্তি সম্পূর্ণ পৃথক ও ভিন্ন দুটি প্রসংগ বিবেচনায় গৃহীত হচ্ছে। এক, তার সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন যা পরিপূর্ণভাবে যৌন আচার ভিত্তিক। দুই, তার মনস্তাত্বিক ওরিয়েন্টেশন, যার ফলে একজন নারী নিজেকে মানিসিক ভাবে পুরুষ বৈ অন্য কিছু ভাবতে পারছে না বা একজন পুরুষ যে নিজেকে নারী ভিন্ন অন্য কিছু মনে জরতে পারছে না।
এর প্রথমটি সম্পূর্ণ ভাবে দ্বিতীয় ব্যক্তি সম্পৃক্ত করবার বাধ্যবাধকতা দাবী করে। যার সামাজিক বিচার্য বিষয়ের ব্যাপ্তি বিশাল।
আর দ্বিতীয়টি, একটি আত্মকেন্দ্রিক মনস্তাত্বিক জটিলতার বিষয় যা সেই ব্যক্তির জন্য নিদারুন সহমর্মিতার দাবী রাখে। আর এক্ষেত্রে বিজ্ঞান আজ তাকে লিংান্তরের সুযোগও তৈরী করে দিয়েছে।
সর্বোতভাবে আমার পয়েন্ট অফ কনসার্ণ বিয়ের প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়ের সামাজিক ও ব্যক্তি ভিত্তিক পরিনতি এবং প্রাকৃতিক রীতির বিরুদ্ধাচারনের সম্ভাব্য (সুদূরপ্রসারী) ফলাফল ও প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়া।
যারা আমরা কালোত্তীর্ণ দৃষ্টিতে সুদূর ভবিষ্যত দেখতে পাবো এই সামাজিক পরিবর্তনের সনদায়নের তারাই আজ কিছুমাত্র বিচলিত বা দ্বিধাগ্রস্ত হবার পাকে পড়বেন না। দুর্ভাগ্য আমার আমি অতো দূর দেখতে পাচ্ছি না এবং বিষয়টির দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক ও ব্যক্তিগত মনস্তাত্বিক ফলাফল দেখার জন্য এক তো নয় বরং দুই বা তার অধিক জেনারেশন সময় লাগবে।
- এক সেটেলার আমমেরিকান যেমন ব্যাংগ করে বলেছেন, এক সময় নিষিদ্ধ, পরে লুকোনোর, তার পরে অধিকারের, এরপর মেনে নেয়ার, তারপর বৈধ, আগামীতে বাধ্যতামূলক হবার আগে এ দেশ থেকে আমাকে পালাতে হবে।
এই ব্যংগের মাঝে কিন্তু এক রকম অজানা উতকন্ঠাও উচ্চারিত।
পুনশ্চ: সম অধিকার বিবেচনায় একজন সমকামীকে ডিস্ক্রিমিনেট করার একবিন্দু বাসমা থেকে আমার কোনো যুক্তি বা বক্তব্য বা প্রস্তাবনা উত্থাপিত নয়।
:clap: :boss: :thumbup: 🙂 ভালো লিখেছেন ভাইয়া। ইতিহাসের অনেক অজানা কথাগুলো জানিয়ে দিয়ে ভালো করেছেন। এতে করে আমরা যারা এটি সমর্থন করি তারা আরও মুখ খুলে কিছু যুক্তিযোগ্য কথা বলতে পারবো। 🙂 ধন্যবাদ ভাইয়া।