সপ্তম শ্রেনীর কথা। প্রচন্ড মন খারাপ নিয়ে ক্লাসে বসে আছি। অনেক দিন বাসা থেকে চিঠি আসেনা। আম্মুর মুখটাও ঝাপসা হয়ে এসেছে। ডেস্কের ওপর বসে ডায়রি লিখছি। হঠাত্ কে যেন পেছন থেকে একটা হাত আমার মাথার ওপর রাখল। অদ্ভুত মায়াবী সে হাতের শীতল স্পর্শ ছিল কিছুটা উষ্ণ আদরের মত। সবেমাত্র কলেজে এসেছি। সব স্যার ম্যাডামদের নাম ও জানিনা। পেছনে তাকিয়ে দেখি বানু ম্যাডাম। যদিও পরে নামটা জেনেছিলাম। ম্যাডাম ডায়রিটা সিজ করলেন। প্রচন্ড রাগ হয়েছিল ম্যাডামের ওপর। ভাবলাম ক্যাডেট কলেজের ম্যাডামরা এত নিষ্ঠুর ক্যানো?
পরের দিনের কথা। হঠাত্ আমার ডাক পড়লো সিভিকস ডিপার্টমেন্টে। ভাবলাম আজ আমি শেষ। হয়তো গাইড ভাইয়াকে ডায়রি সম্পর্কে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে। মোটামুটি একটা নকশা দাড় করালাম। চোখের সামনে লং আপ,লকার স্টিকের বারি আর প্রচন্ড শব্দের কিছু ঝাড়ি ভাসছিল।ভয়ে ভযে ম্যাডামের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। ম্যাডামের হাসি মায়াবী না হলেও ঠিক অই মুহূর্তে আমার কাছে ম্যাডামের হাসিকে বেশ মায়াবী মনে হল। ম্যাডাম বললেন “মন কি খুব খারাপ?ডায়রিতে এসব কি লিখেছো?আমি চুপ করে রইলাম। আমার নির্লিপ্ততা দেখে ম্যাডাম বললেন ‘শোন,ক্যাডেট কলেজে সবাইকেই কষ্ট করতে হয়। নাও এটা রাখো। আর হাউসে গিয়ে আমার সাথে দেখা করবে। ম্যাডাম আমাকে একটি সাফারি চকোলেট দিয়ে বিদায় করলেন।
আমার মন তখনো অজানা আশঙ্কায় কাঁপছে। অবশেষে হাউস অফিসে গিয়ে ম্যাডামের সাথে দেখা করলাম। অসম্ভব রাগী সেই ম্যাডামকে প্রথমবারের মত আমি কাঁদতে দেখলাম।ম্যাডাম বললেন ‘এত আবেগ নিয়ে ক্যাডেট কলেজে থাকতে পারবে?তোমার ডায়রি পড়ে কাল রাতে অনেকক্ষন কেঁদেছি। জানো আমার ছেলেটাও অনেক দিন ধরে দেশের বাইরে। ম্যাডাম ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করলেন। আমার হাতে দিয়ে বললেন নাও কথা বলো।
২০০৫সালের কথা। ক্যাডেট কলেজে তখনো মোবাইল চালু হয়নি। হঠাত্ করেই মনে হল আম্মুর সাথে কোথাও যেন ম্যাডামের অনেক মিল। তখন খুঁজে না পেলেও আজ ছয়বছর পর মনে হচ্ছে এক জন ম্যাডাম ও তো নারী। আর নারী মানেই অদ্ভুত মমত্ব,অসীম মায়া কিংবা অশ্রু ফেলার একটি নীরব আশ্রয়। একটি অসহায় ছেলের প্রতি ম্যাডাম সেদিন যে সহানুভূতি দেখিয়েছিলেন তা আসলেই ভোলার নয়।
* * * * * * * * * * *
রকিমুন্নেছা ম্যাডামকে আমি কথনো দেখিনি। তবে আমার কল্পনা শক্তি দিয়ে যতটুকু তাকে আঁচ করতে পেরেছি তা হল তিনি আমাদের ক্যাডেট পরিবারের ই একজন মা। এক জন মায়াবতী। আজ ক্যান্সারের সাথে জীবন যুদ্ধে ব্যাস্ত আমাদের মা।আর ক্যাডেট কলেজের কয়েক হাজার সন্তান শুধুই তাকিয়ে দেখছি।যে ভালোবাসা দিয়ে আজন্ম কাল আমাদের বেঁধে রেখেছেন সেই মা আজ মৃত্যু শয্যায় শায়িত। এক জীবনে মানুষকে অনেকবার পরাজিত হতে হয়। তবুও মানুষ নতুন করে স্বপ্ন দেখে বেঁচে থাকার। খুব অল্প শক্তি নিয়ে আমরা পৃথীবিতে এসেছি। কিন্তু আমরা মানুষ। তার ওপরে আমরা ক্যাডেট। আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শক্তিকে এক করে পরাশক্তিতে রূপান্তর করতে চাই। আমরা দেখাতে চাই ভালোবাসার গভীর মমত্বের কাছে ক্যান্সার কিছুই নয়।
ম্যাডামের জন্য সাহায্যের হাত বাড়ানো আমাদের ই একান্ত দায়িত্ব।আসুন একজন মা কে বাঁচাই।
ক্যাডেট রাব্বী(২০০৫-২০১১)বি সি সি
ম্যাদামের একাউন্ট নঃ
কিভাবে সাহায্য করা যায়
যেসব কলেজে ছিলেন তাদের এক্স এবং বরতমান ক্যাডেট, কলেজ, এইচ কিউ যগাযগ করতে হবে।
অতিতে যারা এরকম ব্যাপারে কাজ করেছে তাদের সাথে যগাযগ করতে হবে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ভাইয়া,
পে প্যালের একটা অ্যাকাউন্ট থাকলে খুব ভাল হয়। অনেকে হেল্প করতে পারতো।
যেভাবে পারি, ম্যাডামের পাশে থাকার চেষ্টা করবো।আশা করি, উনি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন ।
ম্যাডামের দুই ছেলে-মেয়ে, দুজনেই ক্যাডেট।
একাউন্ট ইনফো, ইউ এস এ থেকে পাঠানোর জন্যঃ
H Fahmida Soniaposted toMymensingh Girls' Cadet College
Please donate any amount (starting from $1 to any amount) to the following account.
This is our duty to raise some fund for Our dear Roquimunnessa madam (MGCC), who is in critical condition, as the cancer has spread in her lungs.
I will send the money from USA to her family through AMEC (Association of Mymensingh Ex-Cadets)
Thanks
Hasina Fahmida Huq Sonia
Cadet no 412
Mymensingh Girls' Cadet College (MGCC)
Email: hhuq@vt.edu
Office: 956-665-5017
Cell: 865-548-8813and information
Home: 956-994-1540
Account information:
Bank of America
Hasina Fahmida Huq
1500 W.University Drive
Edinburg TX 78539
956-380-8600
Routing number: 113000023
Account number : 005866112658
সেলিনা আপা ম্যাম এর দুই ছেলে-মেয়ে কোন কলেজ আর কত ইনটেক ?
রাব্বী, বানু ম্যাডামের সম্পূর্ণ নাম কি? বাংলা পড়াতেন?
রকিমুন্নেছা ম্যাডামের বর্তমান অবস্থা কি? মানে কিভাবে সাহায্য করা যায়?
ভাইয়া ম্যাডামের ক্যান্সার শেষ পর্যায়ে।বাঁচার আশাও ক্ষীন।এখনো account খোলা হয়নি।প্রচেষ্টা চলছে।আর বানু ম্যাডাম সিভিকস পড়াতেন।
:(( রাব্বি তোমার লেখা পড়ে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল ।তোমার লেখা অসাধারণ ।ঢাকা থাকলে ম্যাম এর সাথে দেখা করতাম ।ম্যাম এর কন্টাক্ট নাম্বার কি আছে তোমার কাছে ?শুনে খুব খারাপ লাগলো যে ম্যাম এর বাঁচার আশা ক্ষীণ ।তাই ম্যাম এর সাথে কথা বলতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করতাম ।
রকিমুন্নেছা ম্যাডাম সম্পর্কে শোনার পর থেকেই খুব খারাপ লাগছে, এমনিতেই ক্যান্সার সম্পর্কে আমার মধ্যে একটা ভীতি কাজ করে। আরো বেশি খারাপ লাগছে ম্যাডামের দুই সন্তানের কথা চিন্তা করে, এও পরিবারের পাশে দাড়ানোর যেকোন উদ্যোগের সাথে আছি।
বানু ম্যাডামকে পেয়েছি ইলেভেন, টুয়েল্ভ এ। এ দু বছরে ম্যাডামকে যে কি পরিমানে জ্বালিয়েছি আর তার বদলে কত স্নেহ পেয়েছি তা বলার মত না। পুরো কলেজের কাছে ম্যাডামের ইমেজ ছিল এক রকম আর আমাদের আর্টস পার্টির কাছে পুরো অন্য রকম।
মন খারাপ করে দেয়া একটা লেখা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ রাব্বী
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আমি রকিমুন্নেছা ম্যাডাম এর কলিগ ছিলাম । উনি একজন খুব ভাল মানুষ।আল্লাহ উনােক ভাল করবেন।
অজস্র ধন্যবাদ আহসান ভাই এবং শরীফ ভাই।ম্যাডামের কন্টাক নাম্বার আমার কাছে নাই।
-----------------
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আল্লাহ উনাকে শান্তি দান করুন।।।।।।।।।।।।
রকিমুন নেসা আমার সহকর্মী ছিলেন ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজে।আমি এখন ময়মনসিংহ এ থাকি। কাজ করি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে।ওর সাথে আমার দেখা হয়।তোমাদের মতো আমিও ওর পাশে আছি।রাব্বি তোমার লেখা পড়ে চোখ ভিজে যায়।ম্রিত্যুর সাথে লরাই করা রকিমুন এর জন্য তোমাদের এই প্রয়াস সত্যিই প্রশংসনীয়।মা এবং শিক্ষকরা সন্তানদের কাছ থেকে এটুকুই আশা করে।তুমি অনেক বর হও।
নুসরাত জাহান হোসেন
ম্যাডাম,অজস্র ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্যে।আমি খুব ছোট মানুষ।আবেগ গুলোও তাই ছোট ছোট।ম্যাডামদের নিয়ে লেখার ক্ষমতা প্রকৃতি আমাকে দেয়নি।তারপরেও লেখার চেষ্টা চালিয়েছি।ভালো থাকবেন. . .
:clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap:
বানু ম্যাডামের বানানো আচারের স্বাদ এখনও মুখে লেগে আছে। আর উনার দেয়া চাবির রিঙটা সবসময় আমার ব্যাগ এই থাকে।
খেয়া (২০০৬-২০১১)