কলিং বেলের শব্দে কিছুটা বিরক্ত হয় শারমিন। আজ শনিবার। ছুটির দিন। ছুটির দিনে বাসায় অপরিচিত কেউ আসেনা। পারভেজ এই দিন বাসায় থাকে। সারাদিন পারভেজকে নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়। ঘর গোছানো,টুকটাক রান্না বান্না। এছাড়া ইদানিং আরো একটা কাজ বেড়েছে। ছোট কাঁথা সেলাই করা। অসময়ে মাথা ব্যথা আর বমি বমি ভাব জানান দিচ্ছে ভালোবাসাবাসির প্রথম ফুল ফুটতে বেশি দেরি নেই। শারমিন বিরক্ত ভাব নিয়ে দরজা খুলল।
আরে তুমিহ? কিছুটা অবাক হয়ে শারমিন প্রশ্ন করে।
ফরহাদ হাসছে। সেই ভুবন বিখ্যাত হাসি। চারুকলার বকুল তলায় বসে যে হাসি হাসতো তেমন হাসি। যে হাসির কারণে গোছালো শারমিন খুব সহজেই অগোছালো ফরহাদকে ভালোবেসেছিল সেই হাসি। শারমিন ধমকের সুরে বলল,হাসি থামাও। বল ঠিকানা কোথায় পেলে? ক্যানো এসেছ?
ফরহাদ শান্ত কন্ঠে বলল,এখনো অগাধ অধিকার নিয়ে ধমকের সুরে কথা বলো। শুধুই আমার সাথে? না তোমার স্বামীর সাথেও?
-বাজে কথা রাখো। কেন এসেছ বল?
-তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করলো। ইদানিং খুব দেখতে ইচ্ছে করে। মনকে আটকাতে পারিনা।
-বিয়ে করে ফ্যালো। ঐ যে শান্তা না কি নামের একটা মেয়ে তোমার খোঁজ খবর নিত। ওকে বিয়ে করে ফেল।
-শান্তার কথা জানতে তুমি? তোমাকে কখনো বলেছি?
-খোঁজতো ঠিকই রাখতাম। যাকে ভালোবাসি তাঁকে আর কে কে ভালোবাসে খোঁজ রাখবোনা।
ফরহাদ হাসলো। মলিন হাসি। সংসারটা শারমিন আর ফরহাদের হবার কথা ছিল। কিন্তু হইনি। পৃথিবীতে অনেক কিছুই হবার কথা থাকে। হয়না।
“বাইরে দাড় করিয়ে রাখবে? ভেতরে ঢুকতে বলবেনা?
-আজ না ফরহাদ। অন্যদিন। বাসায় পারভেজ আছে।
-ভেতরে তো কাউকে দেখছিনা।
-ও একটু বাইরে। এখনি এসে পড়বে।
-বেশিক্ষণ থাকবো না। তিনদিন ধরে ঠিক ভাবে খাওয়াদাওয়া হয়নি। গোসল ও করিনি। একটা লুঙ্গী দাও। গোসল করবো। ততক্ষনে একটা ডিমভাজো। খেয়ে চলে যাবো।
-প্লিজ ফরহাদ,পাগলামি করোনা। আমি তোমাকে পাঁচশো টাকা দিচ্ছি। বাইরে থেকে খেয়ে নিও।
-খাওয়ার চেয়েও গোসল করাটা জরুরী। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। পারভেজ সাহেবকে আমি চিনি। আমাদের প্রোজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার। আমাকে দেখে অবাক হবেনা। অনেকদিন বাসায় দাওয়াত দিয়েছে। আসিনি। আজ আমাকে দেখে নিশ্চই খুশী হবেন।
শারমিনের মাথা ঝিম ধরে আসে। শান্ত কন্ঠে বলে,ভেতরে আসো লুঙ্গি দিচ্ছি।
ফরহাদ ভেতরে ঠোকে। গোছানো সংসার। ফরহাদের সাথে বিয়ে না হওয়াতে বোধহয় ভালোই হয়েছে। ফরহাদ নিশ্চই শারমিনকে এত ভালো রাখতে পারতোনা। খারাপ লাগে ওর।
শারমিন রান্নাঘর থেকে ফিরে দেখে ফরহাদ নেই। বিছানার ওপর ভেজা গামছা আর লুঙ্গি রাখা। ভাতের প্লেট টা হঠাত্ করেই হাত থেকে পড়ে গেল। আহারে বেচারা। কতদিন ঠিকভাবে খায়নি। পারভেজ এসে দেখে মেঝেতে ছড়ানো ছিটানো ভাত। কিছুটা অবাক হয়। কৌতূহলি কন্ঠে শারমিনকে বলে,বউ তোমার শরীর কি আবার খারাপ করলো?
শারমিন বললো,না। হাত থেকে ফসকে পড়ে গেল। তুমি কখন এলে?
এইতো। যাও গোসল করে এসো। একসাথে খাবো।
শারমিন বাথরুমে ঢোকে। ঝরণার নিচে নিজের শরীরটাকে ছেড়ে দেয়। অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। সাবান হাতে নিয়ে আলতো করে সমস্ত শরীরে মেখে নেয়। হঠাত্ মনে পড়ে একটু আগেই ফরহাদ। হ্যাঁ,এই সাবানটা একটু আগেই ফরহাদের শরীর প্রদক্ষিণ করেছে। এখন শারমিনের. . .শারমিন কিছুই ভাবতে পারছেনা। সাবানের গন্ধ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। মনেহয় ওর সারা শরীর জুড়ে ফরহাদ লেগে আছে। শারমিনের পৃথিবী অন্ধকার হয়ে আসে। চারদিকে প্রবল অন্ধকার। প্রচন্ড ঘোরের মাঝে ডুবে যাওয়ার আগ মুহুর্তে কেউ একজন শারমিনের অর্ধনগ্ন শরীর ধরে আছে। আশ্চর্য জনক ভাবে ছেলেটাকে ফরহাদের মত লাগছে. . .
খুব সুন্দর একটা গল্প। তুই ভালো লেখক। বানানের দিকে আরেকটু খেয়াল করিস 🙂
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
vai,mobile theke likhi..........chesta kori banan jate vul na hoi.ar amar banan knowledge khub e kharap.................:(
তাইলে একটা প্রুফ রিডার খুঁইজা নে।
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
ছোট প্রাণ ছোট ব্যথা ছোট ছোট দুঃখ কথা
নিতান্তই সহজ সরল
সহস্র বিস্তৃতরাশি প্রত্যহ যেতেছে ভাসি
তারি দুচারটি অশ্রুজল
নাহি বর্ননার ছটা ঘটনার ঘনঘটা
নাহি তত্ব নাহি উপদেশ
অন্তরে অতৃপ্ত রবে সাঙ্গ করি মনে হবে
শেষ হইয়াও হইলো না শেষ।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
🙂 🙂 🙂
36 people like this!!!! Only five comments!!!!!
Bhalo likhcho.
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
thank you apa...:)
অসাধারণ গল্প,ভাই..........................................।। :clap:
dhonyobad vai...........:)
তোমার লেখা সব সময়ই ভাল হয়। চালায়া যাও।। :boss: :hatsoff:
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
🙂 🙂 🙂
পারভেজ ভাইয়ের কি দোষ !!!!!!!!! লোকটারে এইভাবে ঠকানোর কোন মানে আছে??? রাব্বী তুই ৩০ মিনিটের জন্য পারভেজ হয়ে যা.................................... কেমন লাগে রে???? :gulti:
ha ha vai................:)