শিরোনামে যা লিখেছি তা একটি বহুল প্রচলিত বাক্য। বাংলাদেশে আমি কোন পরীক্ষক হলে এই বাক্যটি একটা বাংলা পরীক্ষায় ভাবসম্প্রসারণ করতে দিতাম।
যে প্রশ্নগুলো মাথায় আসে তা হলোঃ
তথ্য বিপ্লব কী?
তথ্য বিপ্লব হলে কী হয়?
দ্বারপ্রান্ত মানে কোন প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢুকবো ঢুকবো অবস্থায় আছি – প্রবেশদ্বারের ওপারে কি আছে?
শেষ কথার এক কথা আমি কোন মারফতী মানের ধার ধারি না, জানতে চাই এতে আমার কোন লাভ হবে কিনা?
তথ্য বিপ্লব মানে তথ্যের ছড়াছড়ি। কিরকম তথ্য? সবরকম তথ্য। আসলে তথ্যের প্রতুলতাই তো সভ্যতা। তথ্য দিয়েই তো আমরা সভ্যতার চরিত্র রুপায়ন করি। যত বেশি সেই সমাজের আইন এবং মূল্যবোধ, প্রযুক্তি, দর্শন, ধর্ম, শিল্পসাহিত্য সম্পর্কে জানতে পারবো তত বেশি সেই সমাজকে চিনতে পারবো। এটাতো গেল বর্তমান থেকে অতীতের দিকে তাকিয়ে সভ্যতার শ্রেনীবিভক্তিকরণ। তথ্যের অবাধ স্বাধীনতা সরাসরি উৎপাদন আর উদ্ভাবনের সাথে সম্পর্কিত। জ্ঞান এবং প্রয়োজনীয় উপকরণাদি হাতের কাছে ছিল বলে মোরস টেলিগ্রাম উদ্ভাবন করতে পেরেছিল। এডিসন পেরেছিল ফটোগ্রাফ উদ্ভাবন করতে। আবার অন্যদিকে তথ্যের অভাবে র্যামসেস বা পেরিকনস এসব উদ্ভাবণ করতে পারেনি।
তথ্য বিপ্লব হলে সভ্যতা এক লাথে কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়। না, এখনও কোন গাণিতিকভাবে তা প্রমান করা হয়নি। তবে মানবসভ্যতার ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে একম ধারণা পাওয়া যায়। নিচের চারটি উদ্ভাবনকে তথ্য বিপ্লবের প্রধান কারন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ঃ
১-ভাষা
২-লেখনী
৩-ছাপাযন্ত্র
৪-কম্পিউটার
উপরের চারটি উদ্ভাবন ছিল সভ্যতা উত্তরণের এক একটি প্রবেশদ্বার। উদ্ভাবনগুলো হলো কারণ আর তথ্যবিপ্লব হলো তার ফল। আর সভ্যতাও ধাম করে এগিয়ে গেছে।
কারণ: ফল
ভাষা উদ্ভাবন: মানুষ হিসেবে মানব প্রজাতির যাত্রা শুরু
লেখনী উদ্ভাবন: মানব সভ্যতার গোড়াপত্তন
ছাপাখানা উদ্ভাবন: আধুনিক সভ্যতার যাত্রা শুরু
কম্পিউটার উদ্ভাবন: ????
গত বিশ বছরে সারা পৃথিবীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নতুন মধ্যবিত্ত যোগ হয়েছে। তাদের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। ভোক্তা হিসেবে তাদের বেশ ভাল কদর। তাই উৎপাদনও চলছে পাল্লা দিয়ে। চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নত হয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে চিকিৎসার তথ্য সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। লোকের গড় আয়ু বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে অর্থনৈতিক বৈষম্য। সামাজিক যোগাযোগ বাড়ছে। লোকে এখন আগের থেকে বেশি জন্মদিনের শুভেচ্ছা পায়। মধ্যপ্রাচ্যগুলোর একনায়কতন্ত্রের ভীত নড়ে যাচ্ছে। সেই সাথে নতুন যোগ হয়েছে সাইবার ক্রাইম।
আসলে কম্পিউটার যুগের বিশ্লেষণ এখন সম্ভব নয়। দেখা যাক কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে গড়ায়?
আপু ::salute::
লেখাটায় একটা জিনিষ উল্লেখ করতে ভুলে গেছি। তা হলো উদ্ভাবনগুলো কিভাবে তথ্যবি্প্লব ঘটায়।
তথ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং বিতরণ একটা সময়সাপেক্ষ, শ্রমসাধ্য এবং ব্যয়বহুল পন্থা। প্রতিটি উদ্ভাবন এই ব্যয়বহুল শ্রমসাধ্য পন্থাকে সহজ করে দেয়। এতে রিডানডেন্সী কমে প্রোডাক্টিভিটি বেড়ে যায়। যেমন যখন ভাষা আবিষ্কার হলো তখন একজন শিকারী আর সবচেয়ে বড় কৌশলটার কথা আরো কয়েকজনকে বলতে পারলো। এতে তারা সেই কৌশল অবলম্বন করে নিজেরাও শিকারে দক্ষ হওয়ার সুযোগ পেল। অর্থাৎ বার বার আলাদা করে এক একজনকে চাকা আবিষ্কার করতে হয়নি। একজন আবিষ্কার করার পর সে কৌশল সবার কাছে ছড়িয়ে গেছে। পরেরজন চাকা থেকে ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি আবিষ্কার করেছে। এভাবেই তথ্যপ্রবাহ সভ্যতাকে এগিয়ে নেয়।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
:-/ :-B :dreamy:
তাড়াহুড়া করে শেষ লাইনটা লেখা। তোমার তিনরকম অভিব্যক্তি দেখে হচ্ছে মনযোগী পাঠকের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এমনি এমনি কিছু লিখে পার পাওয়া যাবে না।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
লেখটা পড়ে মনে হল লেখাটা শেষ হয়নি।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
কথাটা ঠিকই বলেছ। ্লেখা শুরু করার পর দেখলাম অনেক জটিল জটিল বিষয়ের অবতারণা করতে হবে তাই হঠাৎ করেই লেখা শেষ করে দিলাম। তারপরও পোস্ট করলাম কারণ অনেকদিন সিসিবিতে কিছু লিখি না তাই।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শান্তা আপা, কথাগুলো কি আপনার পড়া কোন বইয়ের বিষয়?
কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ভিত্তিক টেকনোলোজির সবথেকে বড় তথ্যবিল্পব হলো সম্ভবত "উইকিলিকস!" - উই ওপেন গভার্নমেন্টস। আরব বিশ্বে এবছরের গণজাগরণের পিছনেও কম্পিউটারের ভূমিকা আছে এমন দাবি করেন অনেকে। এটা নিয়ে একাডেমিক বিতর্ক আছে যদিও।
এখনো পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করে না। কিন্তু কম্পিউটারের সাফল্য হলো মানুষের যোগাযোগের অর্থপূর্ন শব্দ এবং প্রতীক ধারণ, পরিবর্তন এবং ব্যবহার করতে পারা। মজার ব্যাপার হলো, ছাপাখানার মতো কম্পিউটারভিত্তিক প্রযুক্তি এবং তথ্য উৎপাদনের ক্ষমতার কেন্দ্র এবং নিয়ন্ত্রন একমূখী। কম্পিউটার মানুষকে বিশ্বব্যবস্থায় যুক্ত করে। আমাদের চিন্তায় বৈশ্বিক ধ্যানধারনার প্রভাব তৈরি করে এবং একই সাথে স্থানীয় ধ্যানধারণার পূর্নউৎপাদন করে। এবং মিথস্ক্রিয়া করে। চ্যালেঞ্জ করে। কম্পিউটারের আরেক টেলেসপাতি ব্যাপার হলো সমাজে যতোধরণের যোগাযোগের কৌশল আছে তার বেশিরভাগকে এটি প্রতিস্থাপন করে ফেলেছে। কম্পিউটার প্রীতি এবং প্রসারের আরেকটা কারণ হয়তোবা আমাদের সাংস্কৃতিক স্কীলস গুলোকে প্রতিস্থাপন করতে পারা।
কম্পিউটার প্রযুক্তিতে আমার প্রিয় বিষয় হলো - কম্পিউটার পদ্ধতিতে ভাগ্য গণনা, অত্যাধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তিতে ১০০% গ্যারান্টিসহ পাত্র-পাত্রী নির্বাচন 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আমি এখন টেকনোলজী, ইঞ্জিনিয়ারিং, সোসাইটি আর এথিক্স এই কয়টা বিষয় মিলিয়ে কিছু গবেষণাধর্মী কাজ করছি। প্রথম কাজ হচ্ছে জ্ঞানার্জন যাতে কিছু পেপার পাবলিশ করতে পারি। কিন্তু এতো বেশি লেখা আর কাজ হয়ে গেছে যে অরিজিন্যাল কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। তাই এখনও পড়েই যাচ্ছি। মাঝে মধ্যে ইন্টারেস্টিং কিছু দেখলে টু্কে রাখছি।
তুমি যে মধ্যপ্রাচ্যের সোশ্যাল চেঞ্জের কথা বললে তাও এর অন্তর্গত। অর্থাৎ নিউ মিডিয়া ব্যবহার করে বর্তমান সমাজে কি পরিবর্তন আসছে? যাই হোক আমাদের সমাজে নিউ মিডিয়ার প্রেক্ষাপটে কিছু লেখার ইচ্ছা আছে যাতে নিউ জেনারেশনের সাথে যোগযোগ করে কোন আইডিয়া বের করতে পারি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
:))
রাব্বী ভাই, এইটা কী কইলেন? হাসতে হাসতে গড়াগড়ি =)) =)) (সম্পাদিত)
khubi choto lekha, kintu apnar lekha bolei onek somoi niye monojog diye porlam. sesh hoye gelo hothat, arektu bistarito koren.
sorry for benglish.
লেখার তো খুব ইচ্ছা হয়। অন্যান্য প্রায়রিটির কারণে একটু পিছিয়ে যায়। ভালো থেক।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
পোস্ট টা পড়েছি। তবে লেখাটা ইনকম্প্লিট কিন্তু চমৎকার কিছু বিষয়ের অবতারণা হয়েছে। আপেক্ষায় থাকলাম এর পরবর্তী সিকুয়েল এর জন্য।
আসলেও লেখাটা ক্যামন জানি নাই মামা - কানা মামা টাইপের হয়ে গেছে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আমার মনে হয়, তথ্য বিপ্লবের যে চারটা ধাপের কথা আপনি বলেছেন, সেখানে "কম্পিউটার" না বলে "ইন্টারনেট" বলাটাই বেশি যুক্তিযুক্ত। কারণ, শধু কম্পিউটার তথ্য বিশ্লেষণ এবং ব্যবহারে গতি এনেছে মাত্র। কিন্তু যোগাযোগটা হয়েছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। কয়েক বছর আগেও বেশ ভাল গতির কম্পিউটার মানুষের কাছে ছিল। কিন্তু ইন্টারনেটের এমন ব্যবহার না থাকায় সেটা কোন বিপ্লব ঘটাতে পারেনি। এখন ইন্টারনেটের প্রচলনই ঐ বিপ্লব শুরু করেছে। আর সামনে এই বিপ্লবের অনেক কিছুই বাকী। তবে আমরা মনে হয় নিকট ভবিষ্যতকে অনুমান করতে পারি এখন।
এটা কি তোমার মত? রাব্বীর মন্তব্যে লিখেছিলাম যে এই বিষয়ে ইতিমধ্যে অনেক কিছু এগিয়ে গেছে - আমাদের কিছু করতে হলে তারপর থেকে শুরু করতে হবে। আমি যেই বিভাজনটা দিয়েছে সেটা 'দ্যা নিউ রেনেসা' ডগলাস রবার্টসনের বই থেকে পাওয়া। আরেকটু ব্যাখ্যা করছি।
শূন্য লেভেলঃ ভাষা আবিষ্কারের আগে একজনকে তথ্যাদী তার মনের মধ্যে সংরক্ষিত করতে হতো এবং সেটা শুধু তার নিজের তথ্য।ধরা যাক সেটা হ এবং পরিমাণ ৫ মিলিয়ন বিট (ধরা হয় ইলিয়াডের বিট সংখ্যা)।
প্রথম লেভেলঃ ভাষা আবিষ্কারের পরে একজন নিজের মনের তথ্যাদির পাশাপাশি গ্রাম, গোত্রের তথ্যও ্রাখতে পারছে। সংখাটা হ'র ্থেকে ৫০ - ১০০০ গুণ বেশি।
দ্বিতীয় লেভেলঃ লেখা আবিষ্কারের ফলে একটা লাইব্রেরী (যেমন আলেক্সাড্রিয়া) ১০০ বিলিয়ন বিট সংগ্রহে রাখতে পেরেছিল।আলেক্সাড্রিয়া লাইব্রেরীতে ৫৩২,৮০০ সংখ্যাক স্ক্রল (হাতে লেখা মানপত্রের মতো) ছিল। তখন লাইব্রেরীর সংখ্যাও খুবই নগন্য ছিল।
তৃতীয় লেভেলঃ ছাপাখানা আবিষ্কারের পর লাইব্রেরীর সংখ্যা shoto shoto ছড়িয়ে পড়ে। একটা লাইব্রেরীর ধারণ ক্ষমতা ১০E১৭ বিট।
চতূর্থ লেভেলঃ কম্পিউটার ধারণ করতে পারে ১০E২৫(?) বিট।
কম্পিউটার, লাইব্রে্রীর মতো নিজেই একটি আধার বা ধারক তাই বোধহয় ভাগটা কম্পিউটারেই রেখেছে। ইন্টারনেট হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা লাইব্রেরীর সময়কার ঘোড়ার গাড়ি বলতে পার। (সম্পাদিত)
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
একটু জারগন করি।
তথ্যই হচ্ছে সকল বিপ্লবের উৎস। তথ্য জ্ঞানের বাহক, জ্ঞান চোখের পর্দা উন্মীলক।
যখন আমার চোখ খুলে যায়, তখন আমি দুটো জিনিষ দেখি......আমি কতটা বঞ্চিত, এবং আমার সম্ভাবনা কতটুকু।
প্রত্যেকটা বড় বড় আবিষ্কারের সাথে(বিশেষ করে আপনি যেগুলো উল্লেখ করেছেন) মানুষের সামনে খুলে যায় সম্ভাবনার দুয়ার। কম্পিউটার ও এর ব্যাতিক্রম নয়। তবে, এটা সম্ভাবনার সাথে সাথে অবাধ তথ্য প্রবাহ সম্ভব করেছে। এটাই আমাদের বর্তমান ব্যাবস্থার ভিত নড়িয়ে দিয়েছে।
একটা দেশের উন্নতির জন্য সর্বপ্রথম যা দরকার, তা হচ্ছে শিক্ষার সর্বব্যাপী বিস্তৃতি। কম্পিউটার এই যাত্রার গতি বৃদ্ধি করেছে। তাই, বিপ্লব আসতেই পারে...অবাক হওয়ার কিছু নেই।
তবে এই বিপ্লবের রূপ কেমন হবে, তা বলা মুশকিল। ভারতের ক্ষেত্রে তা হচ্ছে সফটওয়্যারের বাজারে নেতৃত্ব, মিশরে একনায়কতন্ত্রের অবসান, বাংলাদেশে আই ওপেনার।
দেখা যাক।
মুছে যাক গ্লানি/ঘুচে যাক জরা
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা
তোমার পয়েন্টগুলো ভাল লাগলো। এখন আরো ডিটেইলে চিন্তা করতে হবে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে কিভাবে শিক্ষার বিস্তার করা যায় বা গনতন্ত্রকে আরো সুসংগঠিত করা যায়।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi