মানুষ লুবনার বিজুলি

লুবনার ভাপা পিঠা খাওয়ার ধুম দেখে বুঝতে পারি ঢাকা শহরে শীত পড়তে শুরু করেছে। লুবনার ব্যক্তিগত একজন দর্জি আছেন, নাম তার ইকবাল হোসেন। ইকবালের বৌ মাফিয়া খাতুন পৌষ মাস আসতে না আসতে চাল কুটতে বসে; ডাক্তার আপামণি ভাপা পিঠা খেতে বড় ভালবাসে, পিঠা বানাতে হবে যে! ইকবালের নানীর কোমড়ে ব্যথা, লুবনা আপার ‘অষুদ’ ছাড়া তার চলবে কেনো? মাফিয়ার মায়ের শ্বাসকষ্টে ইনহেলার কিনে দেবে কে, লুবনা ছাড়া? ওদের শিশু সন্তান দুটির সর্দিগর্মি থেকে শুরু করে তার বৃহত্তর পরিবারের জন্য লুবনা বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে।

লুবনার তখন কিমোথেরাপি চলছে, শরীরজুড়ে তার নানান রকমের জ্বালাপোড়া, মুখে কোন রুচি নাই, কাঁধ অবধি স্টেপ কাট চুল পড়তে শুরু করেছে তখন। একদিন সকালবেলা দরজা বন্ধ করে জিলেট রেজার দিয়ে আয়নার সামনে বসে নিজেই চুল কামিয়ে নিলো। ওর তিন বছরের কন্যা অপ্সরা প্রথমে মাকে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গগনবিদারী কান্না জুড়ে দিল; তারপর মাকে সান্ত্বনা দেবার ছলে কিনা জানিনা গলা উঁচিয়ে বলতে লাগলো, আমার নাড়ু বেল মা’ই বেশী সুন্দর! ওর পাঁচ বছরের পুত্র অর্ণব মাকে জড়িয়ে কি মনে করে চুপচাপ বসে থাকে। আমি জানি আমাদের জীবন আর কখনোই আগের মত হবেনা তবুত্ত আমরা মুখে কিছু বলিনা। স্কাইপে অথবা ফোনে নিত্যদিনের আলাপচারিতা চলতে থাকে আগের মত। আমাদের মন খারাপ থাকলেও নিত্যই এমন সব গল্প বলি যেন মাথা ন্যাড়া করার মত আধুনিকতা আর কিছুই নয়। চৈত্রের কাঠফাটা রোদে লুবনা মাথায় দুই পট্টির হিজাব পড়তে শুরু করলো। ফ্যাশনদুরস্ত ডাক্তার আপার জন্য ইকবাল একদিন আধা ডজন বাহারি ব্যান্ডানা বানিয়ে নিয়ে এলো; সাথে তার বৌয়ের রান্না করা কচি মুরগির সুরুয়া আর আতপ চালের ভাত।

জমিলা বেগমের বাঁ হাতে লাল স্ট্র্যাপের একখানা ঘড়ি চব্বিশ ঘন্টা বাঁধা থাকে। তিনি লুবনার বিচ্ছু দুই সন্তানের পরিচর্যাকারী আন্টি। সাত সকালে বাচ্চাদের ঘুম থেকে উঠিয়ে খাইয়ে দাইয়ে স্কুলে দিয়ে আসা থেকে শুরু করে রাতের ঘুমপাড়ানি গানের দায়ভার তার। জমিলা খাতুন বিকাল হলে অপ্সরার জন্য পুডিং বানায়, অর্ণবকে গা মেজে গোসল করিয়ে দেয়! সন্তান আর সংসারের চাবিটি জমিলার হাতে তুলে দিয়ে লুবনা নিশ্চিন্তে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে বেড়ায়। ঢাকাবাসী মানুষ ক্যালেন্ডারের পাতা দেখে যখন উলের মাফলার গলায় জড়ায় অথবা পশমিনা শাল কেনে তখন লুবনা নিজের পরিবারের সাথে সাথে জমিলা বেগমের পরিবারের জন্যও টুপি, মোজা থেকে শুরু করে কম্বল অবধি কিনতে ভোলে না। ‘একখান রূপার নাকফুল পিন্দি নাই কুনোদিন আফা’ জমিলা আফসোস করে বলেছিল একদিন। গেল ঈদে জমিলাকে সোনার নাকফুল গড়িয়ে দিয়েছে লুবনা! জমিলা খাতুন তার লাল স্ট্র্যাপের হাতঘড়িটি কষে বাঁধতে বাঁধতে চোখের জল লুকায় আপামণির ভালবাসায়!

কারো সার্জারি হবে বললে দেশে শুনতে পেতাম, প্যাট কাটুইন লাগবো! অর্থাৎ জরা ব্যাধি মানেই হলো পেটের ভেতরকার গন্ডগোল! ছুরির নীচে কেউ শুতে চায় না জগতে কিন্তু স্টেজ থ্রি ব্রেস্ট ক্যান্সার তো কাউকেই ছাড় দেবেনা। ক্যান্টনমেন্ট বাজারের মাছবিক্রেতা আর ডিমবিক্রেতার কপালে ভাঁজ পড়ে। ওদের ডাক্তর আম্মার ‘অসুক’ করলে রোগে শোকে তাদের পাশে কে থাকবে, কে জানতে চাইবে রতন মিয়ার মায়ের খবরাখবর? তেলচর্চিত মাথাটিতে সবাই তৈলক্ষেত্র বানাতে পারে কিন্তু অবহেলিত মানুষের কুশল জানতে চায় না কেউ!

লুবনার সার্জারির আগে ওর বাড়ির দুধওয়ালা প্রতিদিন খানিক দুধ বেশী করে দেয়া শুরু করলো, আফা খাইয়ুন যে বিসমিল্লা বইলা, আল্লায় শিফা করবো! কয়েক মাস পর ডাক্তার আপার রিকন্সট্র্যাকশন সার্জারি হবে; আবারও সহৃদয় দুধবিক্রেতা প্রতিদিন খানিক দুধ বেশী দিয়ে যান; আফায় ভালা না হইলে তাগো দেখবো কিডা? ফলওয়ালা জমির আলি এক ঝুড়ি আপেল, কমলা, লিচু নিয়ে লুবনার বাড়ি এলো আপাকে দেখতে। ইকবাল তার ডাক্তার আপামণির মেয়ের জন্মদিনে জামা পাঠায় বৌকে দিয়ে; সময় করে নিজেও এসে কেক খেয়ে যায়। জগতজুড়ে বহু মানুষ অসাধারণ হওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত। হাজারো ‘অসাধারণ’ মানুষের ভীড়ে আমার অতি সাধারণ অতি সাদামাটা বন্ধুটি নিত্যদিন আলো ছড়ায় ফলওয়ালা, ডিমওয়ালা কিংবা একজন জমিলার আকাশে!

লুবনার অফিসের সহকর্মী অর্থপেডিক সার্জন ডাঃ লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আব্দুল কাদের, মারিয়া আর ডাঃ লাকী সদাহাস্য মুখ। লুবনার পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রবাসে থেকেও তাদের মুখরিত আড্ডার অংশীদার আমিও কম নই। ভেতরে বাহিরে সুন্দর এই মানুষগুলো আমাদের জীবনে অপার আনন্দ হয়ে এসেছেন। রানা প্লাজায় দূর্ঘটনার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাটা সুরংগ দিয়ে ডাঃ কাদের ভবনের ধ্বংসস্তূপে প্রবেশ করে আহতদের উদ্ধার করেন এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। ডাঃ কাদেরের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সেনাবাহিনী ২০১৫ সালে তাঁকে ‘বিশিষ্ট সেবা পদক’ এ ভূষিত করে। ডাঃ নাহিদের সাথে আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম লুবনার সাথে। তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরতেই মনেহলো এই চিকিৎসক কেবল রোগের দাওয়াই দেন না, তিনি আলোর দিশারী হয়ে আসেন মানুষের জীবনে। নাহিদ আপা আমাদের লুবনার জীবনে আলোর দিশারী হয়েই এসেছিলেন। কিমোথেরাপী যখন চলছিল তখন নাহিদ আপা দিনের পর দিন লুবনার পাশে থেকে বলেছেন, তুমি সেরে উঠবেই মনে জোর রাখো শুধু।

লুবনার ডায়াগনোসিসের পর ঘটনার আকস্মিকতায় আমরা দিশেহারা হয়ে পড়লেও একজন অনকোলজিস্টের খোঁজ করতে শুরু করেছিলাম প্রায় সাথে সাথেই। ইসিএফ এ একজন ভাল ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের সন্ধান চেয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম আমি; সেই স্ট্যাটাস পড়ে ডাঃ হাই এর কথা জানালেন আমার একজন অনুজপ্রতীম ভাই। অপরিচিত ডাঃ হাই আমাদের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে এলেন। দিনের পর দিন ডাঃ হাই লুবনার পাশে থেকে চিকিৎসার পাশাপাশি আশার আলোও জ্বালিয়েছেন। ডাঃ হাই সম্পকর্ে যে কথাটি না বললেই নয় তা হলো, আহসানিয়া মিশন হাসপাতালটি তিনি প্রায় একক চেষ্টাতে দাঁড় করিয়েছেন। ক্যান্সার নামক রোগটির চিকিৎসা পৃথিবী জুড়েই ব্যয়বহুল; ডাঃ হাই আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন ক্যান্সার চিকিৎসা সেবা সাধারণ মানুষের নাগালের মাঝে রাখতে।

ভালবাসাটা অনেকটা রিলে রেইসের মত; একজন দৌড়ে গিয়ে পরবর্তীজনের হাতে পৌঁছে দেয় যাদুমন্ত্রের বীজ, তারপর আলোর মশাল হাতের পর হাত বদল হয়ে বিজুলি ছড়ায় জগতজুড়ে!

১১,২৩৭ বার দেখা হয়েছে

৬০ টি মন্তব্য : “মানুষ লুবনার বিজুলি”

  1. লড়াকু লুবনার গল্প শুনে আসছি অনেকদিন থেকেই। এর তার মুখে ওর সাহসিকতার গল্প শুনি কিন্তু দেশে গেলেও পরিচয় হয় নাই আমার সাথে। তারপর যখন ওর সাথে পরিচিত হয়েছি তখন ফোনে অথবা ফেসবুকে পাঁচ মিশালী কত গল্প করেছি আমরা শুধু ওর ডায়াগনোসিসের গল্পটি আমরা দুইজনই সযত্নে এড়িয়ে গেছি।

    সদালাপী, সদাহাস্য ডাঃ লুবনা শারমিন কেবল ফলওয়ালা, সব্জীওয়ালার বন্ধুই নন, তিনি আমাদের অতি প্রিয় সহপাঠী বান্ধবী।

    'মানুষ লুবনার বিজুলি' পড়তে গিয়ে যে লুবনার পরিচয় পেলাম তাতে ওর বন্ধু হিসেবে আমার অহংকার হতেই পারে। লেখাটি পড়তে গিয়ে আমি অশ্রু সংবরণ করতে পারি নাই।

    জবাব দিন
  2. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    আপাততঃ শুধু একটা কথাই বলতে পারিঃ তোমার লেখার আঙুল দিয়ে শিল্প ঝরে, সাবিনা! আর সে শিল্প পাঠকের দু'চোখ থেকে জল ঝরায়।
    তোমার বন্ধু লুবনার জন্য অন্তর থেকে দোয়া রইলো। মানুষকে যারা এমন অকাতরে ভালোবেসে যায়, সৃষ্টিকর্তা তাঁকে কোন না কোন অছিলায় বাঁচিয়ে রাখবেনই।

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      শুভসন্ধ্যা, ভাইয়া!

      আপনার শর্তবিহীন ভালবাসা আমাকে নিয়তই সম্মানিত করে, আমার পথ চলার প্রেরণা যোগায়!
      আপনার মত আরো কিছু সুহৃদজনের ঠ্যালাধাক্কা খেয়ে লিখি তবে সব লেখা সবার ভালোবাসা কুড়োবার যোগ্য হয়ে উঠে না, কবি। ফরমায়েশী কত লেখা জমে আছে কিন্তু লেখা হয়নি, কত লেখা শুরু করেছিলাম অশেষ উদ্দীপনায় কিন্তু শেষ করা হয়নি, আবার কত প্রিয় লেখায় ধূলো জমেছে সাহস করে প্রকাশ করতে পারিনি! মাঝে কবিতার মিষ্টি ভূতটার সাথে খুনসুটি হলো হঠাৎ, চুপচাপ এটা সেটা কন্ঠবন্দীও করলাম কিন্তু সিসিবিতে দিতে সাহসে কুলালো না।

      অনেকদিন পর ব্লগে এলাম লেখা নিয়ে যদিত্ত প্রতিদিনই এসে পড়ে যাই চুপচাপ কাউকে না জানিয়ে। আশাকরি ভাল আছেন, ভাইয়া। আমার শ্রদ্ধার্ঘ রইল।

      জবাব দিন
  3. তানভীর (২০০১-২০০৭)

    আপু, পড়তে পড়তে হুমায়ূন আহমেদের শ্রাবণ মেঘের দিনের রাজবাড়ির ডাক্তার আপার কথা মনে পড়েগেল..... ডাক্তারি নামের এই মহান পেশাটাকে আমার খুব পছন্দের হলেও কখনো ডাক্তার হতে চাইনি। খুব মন ছুঁয়ে গেল।
    এখন মাঝে মাঝে ভাবি ডাক্তার হলে ভালোই হত, তেতুল বনে জোছনা উপন্যাসের ডাক্তার আনিসের মত আমিও হয়ত সাইকেল ডাক্তার হতে পারতাম যার সাইকেলের ক্রিং ক্রিং শব্দে রোগ পাখি উড়ার মত উড়ে যেত......
    " মানুষ হতে চাই......আর কিছুই নয়"।
    আপু, এই অসাধারণ কথাগুলো শোনানোর জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।


    তানভীর আহমেদ

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      ছোটবেলায় আমার জার্নালিস্ট হতে মন চাইতো। মনেহতো, মানুষের দুঃখকষ্টের কথা তুলে ধরবো পত্রিকার পাতায়, অন্যায় অত্যাচারের বিচার চাইবো! দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন করতে হবে সমাজে ভাবতাম। বড় হয়ে দেখলাম সংবাদে সং এর সংখ্যা বেশী, বাকী সব বাদ! বইপত্তর পড়তে পড়তে লেখকও হতে মন চেয়েছিল এক সময়ে। লেখকের কলমের কত জোর দেখো, এক ঠোকাতেই পথের ভিখেরী মিলিয়নেয়ার হয়ে যায়!

      মানুষের মত কমপ্লেক্স, কুটিল, কুশলী কিংবা মনোমুগ্ধকর, হৃদয়বান, মেধাবী অথবা আনন্দদায়ক জগতে আর কিছুই নয়। সব ছাগলকে ছাগল হিসেবে অনায়াসে এক ক্যাটাগরিতে ফেলা যায়, যেমন যায় সব কোয়ালাকে একত্রে; কিন্তু মাঝেমধ্যে আমাদের দশজন বন্ধুকে তাদের ইউনিকনেসের জন্য তাদের দশটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে ফেলতে হয়। কোথাও গেলে সবাই ফুল পাখি লতাপাতার সাথে ভাস্কর্য, যাদুঘর, স্থাপত্যশিল্প আরো কত কী দেখে। আমি কোথাও গেলে চুপচাপ সেই শহরের মানুষ দেখি।

      ভাল আছো আশাকরি। আমার ভালবাসা জেনো!

      জবাব দিন
  4. তানভীর (২০০১-২০০৭)

    আপু আগের মন্তব্যে একটা কথা বলতে ভুলে গেছি....আমি গত প্রায় দেড় মাস ধরে আপনার "সাদা বাড়ি থেকে ব্লগ বাড়ি'' এর অপেক্ষায় আছি.....ওই যে বলেছিলাম সাথে আছি.....এখনো আছি.....!!!! আপনার লেখা পড়তেই আনন্দ।আনন্দ পেতে আরও অপেক্ষায় থাকবো...... কথা রাখতে হবে কিন্তু আমি সুনীলের মত আক্ষেপ করতে চাই না.....কেউ কথা রাখেনা বলে। 🙂 (সম্পাদিত)


    তানভীর আহমেদ

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      সাদা বাড়ির সাদামাটা গল্পের সাথে আমার ব্লগ বাড়ির গল্পটি তোমার মত অনেকেই পছন্দ করেছেন, তানভীর। সিসিবিতে লেখালেখির সূত্র ধরে কত মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে আবার লেখনীর সূত্র ধরেই ফাটল ধরেছে কত বন্ধুতায়! আমরা হামেশাই ভাবি সিসিবির পাঠক সংখ্যা কম কিন্তু এখানে নিয়মিত যারা আছেন তাদের কাছে সিসিবি অনেকাংশেই আফিমের মত; দিনশেষে এখানে ঢু না দিলে চলে না যে। সাদা বাড়ির গল্প চলবে।

      অটঃ তানভীর তোমার ভ্রমণকাহিনী আমার বেড়ে লাগছে, ভাইয়া।

      জবাব দিন
      • তানভীর (২০০১-২০০৭)

        আপু, ভালোই আছি।তুমিও ভালো আছো আশাকরি। তুমি আমার লেখা পড়েছো এটাই আমি এতেই খুশি..... 🙂 🙂 🙂
        ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালোবাসি আমি কিন্তু তেমন করে লিখে উঠতে পারি না.....মুজতবা আলী যখন পড়েছি তখন মনে হয়েছে এমন ভাবে যদি লিখতে পারতাম......................
        ইভেন সাইদুল ভাইয়ের ভ্রমণকাহিনী গুলাও পড়ে যাই এক নিশ্বাসে।
        সিসিবি বলেই হয়ত লেখার সাহস করি আর কি....... 🙂 (সম্পাদিত)


        তানভীর আহমেদ

        জবাব দিন
  5. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    লিখাটা চোখে পড়লো ট্রেডমিল শুরু করেই।
    ভাবলাম, একটু চোখ বুলিয়ে "কতদিন পর! কতদিন পর!!" লিখে হাটায় মন দেবো।
    কিন্তু হলো কৈ?
    যা একখানা লিখা দিয়েছো, এক নিঃশ্বাসে শেষ না করে থামা গেল কৈ?
    আর এখন হাটতে হাটতেই ইয়াব্বড় একটা কমেন্টও লিখিয়ে নিচ্ছো।
    ক্যামনে যে এমন সব লিখা নামাও, ভাবি!
    ধরার পর কোনো কিছুর নিয়ন্ত্রন আর নিজের হাতে থাকে না।
    এভাবে মানুষকে পুতুল বানানো কিন্তু ঠিক না!
    একদমই ঠিক না!!


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      সালাম, ভাইয়া! বহুদিন পর তোমার সাথে দেখা হলো আবার। আশাকরি কুশলে আছো। পর সমাচার এই যে, তোমার থেকেই প্রথম দেশের জিমের ব্যাপারটি জানতে পারি। সিসিসিএল এর জিমে নিশ্চয়ই মেয়েদের জন্যও ব্যবস্থা আছে। আমি যখন দেশ ছেড়ে এসেছি তখন স্বাস্থ্যচচর্া বলতে ভোরের হাঁটাহাঁটি ছিল; তাও আবার হাতে গোণা কিছু মানুষের। ব্রম্মপুত্রের পাড়ে কদাচিৎ গেলে দেখতে পেতাম রোগাপটকা ক'টি ছেলে ছোকরা বুকডন দিচ্ছে, আর কিছু খালু চাচা গোত্রীয় কিছু মুরুব্বি দুই হাত ওপর নীচ করে আদরের শরীরটিকে নাড়াচাড়া করতে চাইছেন। পাড়ার খালা চাচীরা টুথব্রাশ হাতে হাঁটতে বেরুতেন দেখতে পেতাম আমাদের দোতলার বারান্দা থেকে।
      আমাদের এখানে সকাল নেই বিকেল নেই কিছু মানুষ সময় পেলেই ফুটপাথ থেকে শুরু করে পার্কে অথবা নিজেদের সাব ডিভিশনেই জগিং শুরু করে। মেয়েরা অনায়াসে স্পোর্টস ব্রা আর শর্টস পড়ে কানে হেডফোন এঁটে দৌড়োয়, তাদের দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না।

      ক্যাডেট কলেজ থেকে মাঝেমধ্যে ভোরবেলায় আমরা বাইরে দৌড়ুতে যেতাম। নগরবাসী মানুষেরা তখনো জেগে উঠতেন না বলতে গেলে; যেদিন বাইরে যেতাম সেদিন দৌড়ুতে আর কষ্ট লাগতো না!

      জবাব দিন
      • পারভেজ (৭৮-৮৪)

        আমি কিন্তু আর দৌড়াই না।
        হাটি।
        কেবলই হাটি।
        সিক্স থেকে সিক্স পয়েন্ট ফাইভে দিয়ে হাটি।
        ত্রিশ থেকে ষাট মিনিট।
        তোমার এই অংশটাও ব্লগের লাহানই লাগলো।
        লিখে ফেল দিকিনি এটা নিয়েও কিছু একখানা!!!


        Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

        জবাব দিন
        • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

          🙂 🙂 🙂 🙂

          জিমে যাবার একটিই কারণ ভাইয়া, স্বাস্থ্যপিয়াসী মানুষের তৎপরতা দেখতে আমার ভাল লাগে। এলএ ফিটনেসে গিয়ে কিন্তু আমি মানুষই দেখি। আমার দেখা মতে জিমে দুই ধরণের লোকজন যায়; প্রথম গোষ্ঠির মানুষজন অবিস, শরীর নিয়ে নড়তে চড়তে কষ্ট হয় তাদের। লিপিড প্রোফাইল দেখে ডাক্তারবাবু মৃত্যুভয় দেখিয়েছেন হয়তো তাই অনিচ্ছাপূর্বক জিমের ঘুলঘুলিতে এসেছেন। এরা ট্রেডমিলে হাঁটাকে প্রায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। দুটি বই, একটি হেলথ ম্যাগাজিন, এক বোতল প্রোটিন শেক আর দুই বোতল গেটোরেইড নিয়ে তারা মেশিনে চড়ে বসেন। একটু পর পর এই বোতলে ঐ বোতলে মৃদু চুমুক চলে, কখনো ফোনালাপে নিজের স্বাস্থ্যের ফিরিস্তির বর্ণনা! দ্বিতীয় গোষ্ঠীর মানুষজন আবার অতি স্বাস্থ্যপিয়াসী; কথায় কথায় তারা বিএমআই আর অর্গানিক খাবারের গল্প করেন। এই দলটির প্রায় সব গল্পই নদীর ধারে ঐ কুমিরের কাটাকাটাকাটা গল্পের মতই পেডোমিটার, হার্টরেট আর গ্রিন স্মুদিতে গিয়ে শেষ হয়।

          আমার বড় আপার পোস্টিং তখন চট্টগ্রামে। আপা-ভাইয়া চিটাগং ক্লাবের সদস্য ছিলেন। আমি একদিন ওদের সাথে জিমে গিয়েছিলাম। বড়সড় একখানা কক্ষে ট্র্রেডমিলে দাঁড়িয়ে চকচকা সব আন্টিরা খুব মিষ্টি পায়ে হাঁটার চেষ্টা করছিলেন। একটু পরপর এক একজন নিম্নপদস্থ কর্মচারী এসে ঠান্ডা রুমালে আন্টিদের মুখ মুছিয়ে দিচ্ছিলো। এক আন্টির হাঁটাহাঁটি শেষ হলে বেশ উচ্চকন্ঠে বললেন, ঐ রহিমা জুতা খুইলা দিয়া যা!

          সাধারণ আমেরিকানরা স্বাস্থ্য সচেতন না, এখানে জলের দরে ফাস্ট ফুড বিক্রি হয়। লোকজন হিপোপটেমাসের মত আহার করে এখানে। যে যত দরিদ্র এখানে সে তত বেশী খায়!

          জবাব দিন
          • পারভেজ (৭৮-৮৪)

            ডাঃ লুবনাকে নিয়ে লিখা এমন একটা মানবিক, হৃদয়গ্রাহি - লিখাকে আড্ডাচ্ছলে জীমে নিয়ে ঢোকানোটা ঠিক হয় নাই আমার।
            লুবনা সম্পর্কে আগেও পড়েছি, জেনেছি।
            কিন্তু এই লিখাটা আগের সব পড়া আর জানা কে ছাপিয়ে গেছে।
            অনেক শুভকামনা লুবনার জন্য।
            এর এভাবে তাকে আমাদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য তোমাকে জানাচ্ছি কৃতজ্ঞতা...
            ভাল থেকো।
            অনেক ভালো.........


            Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

            জবাব দিন
            • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

              ভাইয়া তুমি মিছেই ভাবছো আমাদের আড্ডা নিয়ে। সিসিবিতে আমরা যা করি সেটিকে সেলিব্রেশন অব লাইফ বললে অত্যুক্তি হয়না। এখানে শারীরবৃত্তীয় যে কোন আলোচনা থেকে মনোদৈহিক আলোচনাতেও আমি দোষের কিছু দেখিনা। আড্ডা চলুক যে কোন বিষয়ে! তোমার মন্তব্য বরাবরের মত উপভোগ করি; তাছাড়া আলোচনার ডাইমেনশনও গুরত্বপূর্ণ।

              জবাব দিন
              • পারভেজ (৭৮-৮৪)

                কথা তো ঠিকই বলেছো।
                সেটা বুঝিও।
                কিন্তু আবার মনে হলো, এমন হৃদয়স্পর্শি একটা লিখাকে আবার হালকা করে দিচ্ছি নাকি।
                আমাদের এই ই-আড্ডা আসলেই এক হুলুস্তুল ব্যাপার।
                নেশা ধরানিয়াও কম না।
                একবার শুরু হলে, থামতেই চায় না।
                সেই যে কপিক্যাট নিয়ে বেশ কদিন কি মেতেই না ছিলাম!!!
                ভাবতে দারুন লাগে।

                কপিক্যাটের কথাই যখন উঠালাম, সাম্প্রতিক একটা ঘটনা শুনাই।
                আরিয়ানার ত্রয়োদশ বার্থেডে ছিল গত ২২শে ডিসেম্বর।
                বিকেলে ও যখন কেক কিনে ফিরলো, ওর সাত বছরের ছোট বোন আদৃতা তখন ঘুমিয়ে।
                ঘুম থেকে উঠে দেখে ওকে না নিয়ে একা একাই কেক কিনে এনেছে আরিয়ানা।
                ব্যাপারটা পছন্দ হলো না ওর।
                আর তা ঝাড়তে, আমাকে এসে জানিয়ে গেল কেকটা যে ওর পছন্দ হয় নাই সে কথা।
                আমি তো অবাক!
                বললাম, কি সমস্যা কেকের?
                বলে কি না, "আরিয়ানা আপি একটা 'কপিক্যাট'। নাইলে আমার বার্থডের কেক হুবহু কপি করবে ক্যানো।"

                আরিয়ানাকে বললাম, "ঘটনা তো গুরুগম্ভীর। তুমি নাকি কপিক্যাট। ওর কেক কপি করেছো?"
                আরিয়ানার কথা হলো, "আদৃতাই আসল কপিক্যাট। কারন ও আমার গত বছরের কেক কপি করেছে। আমি তো আমার নিজের গতবছরের কেক কপি করতেই পারি। ও কেন কপি করবে? আবার নিজে কপি করে, আমাকে দোষ দেবে? ভারী অবাক কান্ড তো!!!"

                আমি বললাম, "হুম! জটিল সমস্যা। আগে নিজেরা এটার সমাধান করো, কে আসল আর কে নকল কপিক্যাট। আমি ততক্ষনে এক টুকরা কেক খাই..."


                Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

                জবাব দিন
                • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

                  🙂 🙂 🙂 🙂

                  রুবি দ্য কপিক্যাট এর গল্প বলি, শোন ভাইয়া! এটি শিশুতোষ একটি বই যা এলিমেন্টারী লেভেলের বাচ্চারা পড়ে।

                  রুবির বয়েস নয়। সাব ডিভিশনের নতুন স্কুলে এসেছে ও। ক্লাসে এসে প্রথম দিন সবার সাথে তার খানিক ভাব হলেও এনজেলাকে রুবি ভীষণই পছন্দ করলো। এনজেলা কথা বলে খলবলিয়ে, হাসে কারণে অকারণে। রুবি ভাবলো, এখন থেকে সেও এনজেলার মত করে কথা বলবে, হাসবেও যথেচ্ছ! যা ভাবা সেই কাজ! এনজেলা পনি টেইল করে ক্লাসে আসে; রুবিও তাই করতে লাগলো। এনজেলা আলো জ্বলা স্নিকার্স পরে, রুবিও মায়ের থেকে একই রকম জুতো আদায় করে নিল। রুবির কান্ডকীর্তি দেখে অন্যরা মজা পেলেও এনজেলা খুবই বিরক্ত হয়ে একদিন তাকে সাফ সাফ জানিয়ে দিল যে রুবির এই আচরণ তার বড় অপছন্দ।

                  রুবি দুইদিন মন খারাপ করে রইল তারপর একদিন রিসেসের সময়ে সে যখন একপায়ে লাফাচ্ছে তখন দেখা গেল ওদের ক্লাসের প্রায় সব বাচ্চাই ওর পেছনে এক পায়ে লাফাচ্ছে!

                  গল্পের মূল বক্তব্য হলো, অন্ধ অনুকরণ নয় বরং নিজেকে নিজের মত করে প্রকাশ করাতেই আনন্দ!

                  ভাইয়া, তোমার কন্যাদের জন্য আমার ভালবাসা রইল।

                  জবাব দিন
                  • পারভেজ (৭৮-৮৪)

                    "অন্ধ অনুকরণ নয় বরং নিজেকে নিজের মত করে প্রকাশ করাতেই আনন্দ" - চমৎকার বলেছো...
                    তোমার ভালবাসা ওঁদের কাছে পৌছে দিলাম...
                    গল্পটাও দারুন।
                    ওরা হয়তো এটা জানে বলেই কপিক্যাট জিনিষটা ওঁদের কাছে পরিচিত...
                    ভাল লাগলো!!!


                    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

                    জবাব দিন
  6. জিয়া হায়দার সোহেল (৮৯-৯৫)

    বেশ কয়েকদিন জ্বরের পর লিখাটা পড়ে সাবিনা আপুকে প্রথমত এইজন্য ধন্যবাদ দিবো কারন লুবনা আপুর মত একজন অসাধারন এবং সাহসী মানুষের জীবনের একটা অংশের গল্প ছোট্ট করে সবাইকে জানিয়ে অনুপ্রেরনা দেবার জন্য ।

    সত্যিকার অর্থে লুবনা আপু থেকে আমি প্রতিনিয়ত শিখি কিভাবে ভাল মানুষ হওয়া যায়। এরকম নিরহংকারী দরদী মানুষ আজকাল দেখা যায় না। নিজের সীমাবদ্ধতার কারনে হয়ত কখনো কিছু করতে পারিনি সেটা অনুভব করি প্রতিনিয়ত।

    সাবিনা আপু তুমি যথার্থ লিখেছ আর তোমার বর্ণনায় কিছুটা হলেও অনেকে জানবে আপুকে। ছোট্ট, সুন্দর এবং নান্দনিক লিখার জন্য তোমার প্রতি শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা।

    আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা লুবনা আপু এবং আমারা সবাই যেন অনেক ভাল থাকি।
    আবারো ধন্যবাদ।।

    জবাব দিন
  7. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    হাজারো ‘অসাধারণ’ মানুষের ভীড়ে আমার অতি সাধারণ অতি সাদামাটা বন্ধুটি নিত্যদিন আলো ছড়ায় ফলওয়ালা, ডিমওয়ালা কিংবা একজন জমিলার আকাশে! -- এমন একজন 'অতি সাধারণ' মানবীকে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
    এই চিকিৎসক কেবল রোগের দাওয়াই দেন না, তিনি আলোর দিশারী হয়ে আসেন মানুষের জীবনে। ... কিমোথেরাপী যখন চলছিল তখন নাহিদ আপা দিনের পর দিন লুবনার পাশে থেকে বলেছেন, তুমি সেরে উঠবেই মনে জোর রাখো শুধু। -- আরেকজন আলোকিত মানুষের কথা জানলাম। মুগ্ধ হ'লাম।
    ভালবাসাটা অনেকটা রিলে রেইসের মত; একজন দৌড়ে গিয়ে পরবর্তীজনের হাতে পৌঁছে দেয় যাদুমন্ত্রের বীজ, তারপর আলোর মশাল হাতের পর হাত বদল হয়ে বিজুলি ছড়ায় জগতজুড়ে! -- অসাধারণ একটা লেখা, এক নিঃশ্বাসে পড়ার মত। ফ্ল'লেস!

    জবাব দিন
  8. সাবিনার লেখাটা যখন পেলাম তখন রিইউনিয়ন এর প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। একবার পড়লাম। অনেক কান্না করলাম। আমিতো সব ভুলেই যেতে বসেছিলাম। বন্ধু আমার তোর সুন্দর লেখনিতে এতো এতো ভালবাসার অনুভুতির প্রকাশ দেখে আমি আবেগে কাঁদছি আর ব্যাগ গুছাচ্ছি। সাবিনা তোকে আমি অনেক মিস করছি। আমার প্রতিটা কেমো নেয়ার আগে তুই ফোন দিতি।আমার একটুও খারাপ লাগতো না। তোর সংগে গল্প করতাম বলেই সময়গুলো কেটে যেতো। স্যার আমাকে মাথায় হাত বুলিয়ে মা ডেকে সাহস দিতেন। আমার চারপাশের মানুষজনের ভালবাসায় আমি মুগ্ধ হয়ে যাই। তাই আমার দেশে থাকতে অনেক ভালো লাগে। আমার ব্যাপারে আমার চেয়ে তুই অনেক উদ্বিগ্ন ছিলি এবং আছিস।তাই আমি ভালো আছি। এক জীবনে আমরা কতো মানুষ এর দেখা পাই। কিন্তু শুভাকাংখির দেখা পাওয়া অনেক বড় ভাগ্যের ব্যাপার। তুই নিজে অনেক ভালো বলেই এইসব ঘটনা তোর মনে ছুঁয়ে যায়। আমাকে এতো বেশি ভালো বলেছিস বলে আমি অনেক লজ্জা পাচ্ছি বন্ধু। আমার একজন ভালো বন্ধুই না শুধু, আমি তোর একজন মুগ্ধকরা পাঠক। লেখিকা যা লেখে তাই আমার মন ছুঁয়ে যায়। তোর লেখার অপেক্ষায় রইলাম।

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      তোমার আম্মার চিকিৎসার অভিজ্ঞতার কথা তুমি বলেছিলে তখন, রাজীব। অনেক তথ্য দিয়েছিলে আমার মনে আছে। আমরা যেমন এখানে একটা সার্জারি করাতে যাবার আগে চিকিৎসকের অভিজ্ঞতার খবরাখবর নিই; কিন্তু দেশে অনলাইনে চিকিৎসকদের কোন রিভিও পাওয়া যায় না। আবার একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের এ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে পেতে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। আমার একজন বন্ধুকে ওর গায়নোকলোজিস্ট রাত তিনটের পর এ্যাপয়েন্টমেন্ট দিতেন তার অফিসে। ওর প্রেগন্যান্সির পুরো সময় জুড়েই এই নাটক চলছিল। অনিয়মই এখন নিয়মে পরিনত হয়েছে। দেশ থেকে চলে আসার আগে আগে দাঁতের ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। ডেন্টিস্ট তার গ্লাভসবিহীন হাতখানি আমার মুখে দিতেই আমি শোরগোল করে উঠলে তিনি বললেন, গ্লাভসের জন্য বাড়তি বিশ টাকা দিতে হবে!

      অনিয়ম সব জায়গাতেই আছে। তবে এদেশে পেশেন্ট রিভিও কিংবা অভিযোগ গুরত্বের সাথে দেখা হয়।

      ভাল আছো আশাকরি, রাজীব।

      জবাব দিন
  9. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    সাবিনাপা, তোমার মত অন্ততঃ একজন বন্ধু সবার জীবনে থাকুক - এই দোয়া করি।
    আর লুবনা আপার জন্য রইল অনেক অনেক অনেক শুভকামনা।
    লেখাটা মন ছুঁয়ে গেল...বরাবরের মতন...


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  10. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    লেখাটা একাধিকবার অফলাইনে পড়েছি। দুজন ভালো মানুষকে সম্মান জানাতে লগইন করলাম। অসাধারণ লেখা। ভীষণ মমতা নিয়ে লুবনার লড়াই এবং মানবিকতা এখানে সাবিনা প্রকাশ করেছে।

    তোমাদের দু'জনের জন্য অনেক শুভকামনা। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠো লুবনা। আর ভালো থেকো সাবিনা।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  11. মাহবুব (৭৮-৮৪)

    সাবিনার মমতাময়ী তুলিতে আমার অচেনা লুবনা মূর্ত হয়ে উঠেছে অপরাজেয় লড়াকু মানুষের মহিমায়, দুজনের জন্য রইল প্রান খোলা শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা।
    যখন সবকিছুর উপরে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলার উপক্রম হয়, জীবন মনে হয় কেবলই অন্ধকার সুড়ঙ্গে ছুটে চলা, তখন লুবনা সাবিনারা আসে।
    :hatsoff: :hatsoff:

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।