সাধারণতঃ তিন শ্রেণীর ক্যাডেটদের জন্য ক্যাডেট লাইফটা চরম আনন্দের ও আত্মতৃপ্তির হয়ে থাকে। প্রথম শ্রেণীতে পড়ে যারা স্পোর্টস এবং এ্যথেলেটিক্সে ভালো হয়ে থাকে। এরা বাকী ক্যাডেটদের জন্য, বিশেষ করে জুনিয়রদের জন্য রোল মডেল হয়ে থাকে। তারা খুবই জনপ্রিয় হয়ে থাকে। হাউসের জন্য তারা পয়েন্ট অর্জন করে থাকে বলে তারা হাউস মাস্টার, হাউস টিউটর এবং হাউস এনসিওদের প্রিয়ভাজন হয়ে থাকে। এজন্য এদের ছোটখাট দোষ ত্রুটিও হাল্কাভাবে দেখা হয়। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে যারা লেখাপড়ায় খুব ভালো হয়। এরা শিক্ষকদের নেক নজরে থাকে, এসএসসিতে ভালো ফলাফল করার পর প্রিন্সিপাল ও এডজুট্যান্টেরও নেক নজরে চলে যায়। এরাও জুনিয়রদের চোখে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়। আর তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে যারা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে ভালো হয়ে থাকে। এদেরকে জুনিয়র ক্যাডেটরা সম্মানের চোখে দেখে, এমনকি মেস ওয়েটাররাও সমীহ করে চুপে চুপে এদেরকে এটা ওটা এক্সট্রা খেতে দেয়। আমি নিজে দেখেছি জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আলমগীর ভাইকে (আন্তর্জাতিক সঙ্গীত শিল্পী আলমগীর হক) মেস ওয়েটাররা ভালোবেসে একটু এক্সট্রা খাতির করতো। কোন কোন চৌকষ ক্যাডেট আবার এই তিন শ্রেণীর সব ক’টাতেই বা অন্ততঃ দুটোতে নিজেদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। এদের জন্য লীডারশীপ এপয়েন্টমেন্ট লাভ করাটা প্রায় নিশ্চিতই থাকে বলা চলে।
দুর্ভাগ্যক্রমে আমার ক্যাডেট লাইফে আমি এই তিন শ্রেণীর কোনটাতেই নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। কেবল ৮ম থেকে ৯ম শ্রেণীতে উঠার সময় আমার সেকশনে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলাম। ওটাই প্রথম, ওটাই শেষ। এ সাফল্যটাকে পরে আর ধরে রাখতে পারিনি। তবে যেবার প্রথম হয়েছিলাম, সেবার ছুটিতে বাড়ী এসে স্পেশাল খাতির যত্ন পেয়েছিলাম। আমার এক নন ক্যাডেট বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। তখনকার দিনে বন্ধুদের বাসায় গেলে তাদের পিতামাতার কাছে অবধারিতভাবে পরীক্ষায় সাফল্য ব্যর্থতার একটা খতিয়ান পেশ করতে হতো। আমার চমৎকার সাফল্যের কথা শুনে চাচা (আমরা বন্ধুর বাবা মাকে চাচা চাচী বা খালাম্মা খালুই ডাকতাম, আঙ্কেল আন্টি নয়) বন্ধুটিকে তার খারাপ ফলাফলের জন্য খুব কথা শুনিয়েছিলেন, যা আমার ভাল লাগেনি। তিনি চাচীকে বলে আমার জন্য স্পেশাল রান্নার আয়োজন করেছিলেন। এ ধরনের আদর তখন খুব স্বাভাবিক ছিলো। এর আগে একবার ঈদে আম্মার কাছে কেরোলীনের শার্ট (তখন ওটাই বেশ চালু স্টাইল ছিলো) আবদার করে পাইনি। মধ্যবিত্তের সংসারে মানুষ হয়েছি। সংসারের টানাপোড়েনের কথা জানতাম, তাই এজন্য দাবী দাওয়ার ব্যাপারে বেশ সংযত ছিলাম। তথাপি এ ক্ষুদ্র দাবীটুকু (আমার ভাবনায়) পূরণ না হওয়ায় বেশ মনোক্ষুন্ন হয়েছিলাম। কিন্তু প্রথম হবার পর সে চাওয়াটাতো পূরণ হয়েছিলোই, এক্সট্রা একটা দামী প্যান্ট পিসও পেয়েছিলাম।
আগেই বলেছি, ঐ তিন শ্রেণীর ক্যাডেটদের জন্য ক্যাডেট লাইফটা চরম আনন্দের ও আত্মতৃপ্তির হয়ে থাকে। কিন্তু আমি তো তাদের একজন ছিলাম না, তাহলে আমার ক্যাডেট লাইফটা কি দুঃখের ও ব্যর্থতার ছিলো? মোটেই না। আমি বন্ধুদের সাহচর্য খুব পছন্দ করতাম। আমার খুব ভালো কিছু বন্ধু ছিলো, যাদের সাথে থাকাটাই একটা আনন্দের ব্যাপার ছিলো। ক্যাডেট জীবনে অল্প হলেও কিছু নিজস্ব সময় পাওয়া যায়। আমি সেই সময়গুলো খুব উপভোগ করতাম। কিছু না করলেও এটা ওটা নিয়ে ভাবতেও ভালো লাগতো। আমাদের খুব ভালো একটা লাইব্রেরী ছিলো। আমি মোটেই খুব পড়ুয়া ছেলে ছিলাম না। তবে যেদিন নিজস্ব সময়ে লাইব্রেরীতে যেতাম, সেদিন কেউ না উঠানো পর্যন্ত উঠতে মন চাইতো না। আমি গল্প শুনতে খুবই ভালোবাসতাম। যেখানেই কেউ কোন গল্প শুরু করতো, সেখানেই আমি উপস্থিত থাকতাম। তাই ক্যাডেট কলেজে আমার সময়টা মন্দ কাটেনি। তবে দশম শ্রেণীতে উঠার পর যেন হঠাৎ করেই একদিন আমি আবিষ্কার করে ফেললাম, আমি একজন মিঃ নোবডি। আমি কেউ নই, কলেজে আমার কোন সাফল্য নেই। জীবনের লক্ষ্য খোঁজা শুরু করলাম। দেখলাম, আমি লক্ষ্যহীন। আমি জানিনা, আমি কী হতে চাই। ভেতরে ভেতরে খুব ফাঁকা বোধ করতে শুরু করলাম। নিজেকে সূতোকাটা ঘুড়ির মত মনে হলো। লক্ষ্যহীন, বাতাসবাহিত। আস্তে আস্তে পাঠ্য পুস্তক পড়াশোনা ছেড়ে দিলাম। তারাশঙ্করের কিছু বাংলা উপন্যাস পড়া শুরু করলাম। তার মধ্যে সপ্তপদী’র কথা মনে আছে। শিশির কুমার ভাদুরীর ক’টা ছোট উপন্যাস পড়ে ভালো লাগলো। লক্ষ্য করলাম, আমি এমন বই পড়তে চাইতাম, যেটা পড়ে কাঁদতে পারি। হঠাৎ করেই মনের মধ্যে একটা নতুন উপলব্ধি দেখা দিলো, আমার কাঁদা প্রয়োজন।
জীবনানন্দ দাশের নাম তখনো শুনিনি। একদিন লাইব্রেরীতে টেবিলে পড়ে থাকা আব্দুল মান্নান সৈয়দের লেখা ‘শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ দাশ’ বইটা পেয়ে পৃষ্ঠা উল্টাতে শুরু করলাম। এক নিঃশ্বাসে অনেকদূর পড়ে গেলাম। মনে হতে থাকলো, জীবনানন্দ দাশ বুঝি আমার কবি। আমার মনের কোমল অনুভূতিগুলোকে তিনি কাব্যিক প্রকাশ দিয়েছেন। তখন থেকে জীবনানন্দ দাশ পড়া শুরু করি। বন্ধু ফাহিয়ান একদিন জানালো যে সে ছুটিতে বিমল মিত্রের মোটা বই ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ পড়া শুরু করেছে এবং সেটা তার খুব ভালো লেগেছে। আমি একথা শুনে সত্যিই খুব অবাক হয়েছিলাম, কারণ ও ছিলো খুবই চঞ্চল প্রকৃ্তির, মূলতঃ একজন ভালো এ্য্যথেলেট ও ভালো ফুটবলার। কোথাও দু’দন্ড স্থির থাকতে পারতোনা। ও কোনদিন বাংলা উপন্যাস পড়বে, তাও ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ এর মত মোটা বই, সেটা আমার কাছে অবিশ্বাস্য ছিলো। পরে জেনেছিলাম, ও ঐ সময়ে ওর এক পাড়াতো বড় বোনের প্রেমের ব্যাপারে “গো বিটউইন” (দূতিয়ালী) এর কাজ করতো। ওদের প্রেম দেখতে দেখতে প্রেমের কনকপ্রভা ওর হৃদয়কেও আলোকিত করতে শুরু করেছিলো। তা থেকেই বাংলা উপন্যাসের প্রতি ওর আগ্রহ জন্মে। ওর মুখে তখন বইটির গল্প শুনতে শুনতে দীপু চরিত্রটি খুব ভালো লেগেছিলো। বই পড়ার পাশাপাশি খুব করে গান শোনা শুরু করে দিলাম। সতীনাথের গান খুব ভালো লাগতো। দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় আমার রুমটা ছিলো বাথরুম সংলগ্ন কোণার একটা তিন বেডের রুম। টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে একদিন গলা ছেড়ে খালি গলায় গান গাচ্ছিলাম, ‘জানি একদিন আমার জীবনী লেখা হবে’। আবরার ভাই (ডঃ চৌধুরী রফিকুল আবরার, বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিষয়ের প্রফেসর এবং সম্ভবতঃ বিভাগীয় প্রধান) একদিন গোসল করে বের হবার সময় আমার এই গান শুনে রুমে উঁকি দিলেন। এখানে বলে রাখি যে সি আর আবরার ভাই একটু ভাবুক প্রকৃতির ছিলেন। শীতের রাতে চাদর জড়িয়ে একা একা হাঁটতেন। বাংলার ব্যাপারে খুব তেজস্বী ভাবাপন্ন (স্পিরিটেড) ছিলেন। খুব সুন্দর বাংলা কবিতা আবৃত্তি করতেন, তাঁর বাংলা উচ্চারণও উচ্চমানের ছিলো। তাঁর চলাফেরা, কথাবার্তা সব কিছুতেই একটা রাবীন্দ্রিক প্রভাব লক্ষ্য করা যেতো। সেই আমলেও একুশে ফেব্রুয়ারীতে প্রভাত ফেরী করার ব্যাপারে তিনি খুব তৎপর থাকতেন। সাহসীও ছিলেন বটে। বাংলা ভাষা নিয়ে কিংবা একুশে ফেব্রুয়ারী পালন নিয়ে তিনি স্বয়ং প্রিন্সিপালকে একবার কি একটা ব্যাপারে যেন খুব সাহসী একটা প্রশ্ন করেছিলেন বলে মনে পড়ছে। এজন্য আমি আবরার ভাইকে মনে মনে খুব শ্রদ্ধা করতাম। সেই আবরার ভাই বোধহয় পড়াশুনার প্রতি আমার অমনযোগিতার বিষয়টা খেয়াল করেছিলেন। একটু হেসে তিনি বললেন, “জীবনী লিখতে হলে তো ভালো করে পড়াশোনা করতে হবে। এখন বরং গান ছেড়ে পড়া শুরু করো”।
চলবে…
ঢাকা
২২ নভেবর ২০১৫
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
১ম 🙂
বরাবরের মতই সুখপাঠ্য। আর সবচে বড় কথা, মেনি অফ আস ক্যান আইডেন্টিফাই উইথ দি স্টোরি।
থ্যাঙ্কস, মাহবুব। তোমার কথাগুলো লেখার প্রেরণা যুগিয়ে গেলো।
প্রোফাইল ছবিটা নতুন দিলে নাকি? মনে হচ্ছে এটা যেন একটা নতুন ছবি।
ছবিটা বেশ পুরোনো, বছর পাঁচেক কি তারো বেশি।
অনেকগুলো ভাবনা জানি অনেকের মনের কথাই বিম্বিত করেছে। যেমন করেছে আমারও।
চেনা কথাগুলো যতো বেশী প্রতিধ্বনিত হয় ততো বেশী হয় ভালো লাগা।
আর সেই গল্প বলার ঢংটি পারে সেই আনন্দটুকুকে বহুগুন বাড়িয়ে দিতে।
সেই অনেক ভালো লাগাতেই আন্দোলিত হলাম পড়ে।
আমার এ লেখাটা তোমার মনের কথাই বিম্বিত করেছে জেনে খুব ভালো লাগলো, লুৎফুল। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
আমি আপনার দলেই ছিলাম।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
🙂
জেনে ভালো লাগলো রাজীব। মেজরিটি না হলেও অন্ততঃ প্রতি ব্যাচের ৫০% তো বোধকরি ঐ দলেই থাকে। এবং পরে তারা যে বাকী জীবনটাতে খুব খারাপ করে, তাও না।
সো, নো রিগ্রেটস!
কলেজের কথা এত ডিটেইল আকারে মনে পড়ে না। কিন্তু আপনার লেখা পড়ার পর প্রতিবারই মনে হয়, 'আরে, তাই তো! ভাই তো ঠিকই লিখেছেন!'
আপনার এই সিরিজটি অসাধারণ, ভাই!
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
সিরিজের লেখাগুলো নিয়মিতভাবে পড়ে যাচ্ছো দেখে ভালো লাগে।
আত্মজৈবনিক স্মৃতিকথা “জীবনের জার্নাল” আসছে শনিবার থেকে এবারের একুশে বইমেলায় পাওয়া যাবে ইন শা আল্লাহ। প্রকাশক- বইপত্র প্রকাশন, স্টল নম্বর ১২৭-১২৮।
সব সময় জানা দেয়া হয় না। তবুও এই লেখায় জানিয়ে যাই, আপনার এই সিরিজটি খুব আগ্রহ নিয়ে ফলো করছি।
ইট পাথরের জীবন নেই -- এমন কথাগুলো মাঝে মাঝে আমার কাছে খুব মিথ্যে মনে হয় বিশেষত কলেজের যে কোন জায়গার ব্যাপারে। কলেজের দেয়ালের পরতে পরতে জমা হয়ে আছে এ জায়গা থেকে বেরিয়ে যাওয়া সকল ক্যাডেটদের জীবন্ত সময় গুলো। আপনার লেখা পড়ে সেটা আরো একবার খুব ভালোভাবেই ফিল করলাম।
=====
কলেজে আপনার বলা তিন রকমের বাইরেও আরেক রকমের ক্যাডেটরা জনপ্রিয় হয়ে থাকেন। যাদের মাঝে কৈশোরের চপলতা সবার চেয়ে হয়তো একটু বেশিই থাকে। সেই চপলতার হিরোইজমে ভুগে তারা হয় ইনডিসিপ্লিন। এদের জুনিয়র মহলে বেশ একটা জনপ্রিয়তা থাকে। তবে অথরিটির কাছে এরা হয়ে থাকে বলির পাঠা। যে কোন দলীয় গোলমালে এদেরকে সামনে ঠেলে দেয়া হয়। কলেজের শিক্ষকদের কারো কারো কাছে এদের জন্য কোমল স্থান বরাদ্দ থাকলেও বেশিরভাগ শিক্ষকরাই এদেরকে পছন্দ করেন না। এমন সো কলড ইনডিসিপ্লিনড ক্যাডেটদের অনেককেই দেখেছি পরের জীবনে নিয়ন্ত্রিত শৃঙ্খলায় আবদ্ধ করে সাফল্যের পথে হাঁটতে।
====
বই হাউস লাইব্রেরি নিয়ে সবার মাঝে উৎসাহ থাকলেও ভারী জার্গন কিংবা কবিতার মত্ বিষয়গুলো ক্যাডেটদের দ্বারা একটু শৃঙ্খলিত ই লাগত আমার কাছে। এসব ঘাটালে আঁতেল উপাধি পাবার সম্ভাবনায় অনেককেই পিছু হটতে দেখেছি।কবিদের প্রয়োজন পড়ে বয়সকালের নীল খাম চিঠির জন্যেই এমন মতও কম হয় না।
=====
জীবনী লেখা হওয়া দরকার। কারণ প্রত্যেকটা মানুষের জীবনই একেকটা উপন্যাস কিংবা চলমান বায়োস্কোপ। তার মাঝে থাকে সংগ্রাম হতাশা আনন্দ উচ্ছাস এবং শূন্যতার অদ্ভুত সমন্বয়।
===
লেখাতে আন্তরিক ভালো লাগা।
এত গভীর অনুভব নিয়ে কেউ আমার কোন লেখা পড়ছে, কাছে কিংবা দূরে, এটা ভাবতেও পুলকিত হই। আর কারো লেখা পড়ে কেউ তার নিজের আবেগ অনুভূতির প্রতিফলন দেখতে পেয়ে এতটা চমৎকারভাবে মন্তব্যে রেখে যাবে, সেটা আজকাল সিসিবি'র বেশীরভাগ মন্তব্যের আলোকে ভাবাই যায় না।
কলেজের দেয়ালের পরতে পরতে জমা হয়ে আছে এ জায়গা থেকে বেরিয়ে যাওয়া সকল ক্যাডেটদের জীবন্ত সময় গুলো। -- আমারও তাই মনে হয়। কলেজে গেলে ওগুলোকেই খুঁজে খুঁজে দেখি। তবে এখন কলেজটাকে কেন যেন প্রাণহীন মনে হয়। সবই পারসেপশন এর ব্যাপার হয়তোবা।
কলেজে আমার বলা তিন রকমের বাইরেও চতুর্থ ক্যাটেগরির ক্যাডেটদের জনপ্রিয় হবার কথাটা বলে যেন বিষয়টা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলে। সত্যি, এটা আমার নজর এড়িয়ে গিয়েছিলো। বিষয়টা আমার মূল লেখাতে সংযোজন করে নেয়ার আশা রাখছি।
কবিদের প্রয়োজন পড়ে বয়সকালের নীল খাম চিঠির জন্যেই এমন মতও কম হয় না। -- 😀
জীবনী লেখা হওয়া দরকার -- জীবনী লেখা হবে। উপরে ইশহাদ এর মন্তব্যের উত্তরে কিছুটা আলোকপাত করেছি।
লেখাতে আন্তরিক ভালো লাগা। -- আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
"দশম শ্রেণীতে উঠার পর যেন হঠাৎ করেই একদিন আমি আবিষ্কার করে ফেললাম, আমি একজন মিঃ নোবডি। আমি কেউ নই, কলেজে আমার কোন সাফল্য নেই। জীবনের লক্ষ্য খোঁজা শুরু করলাম। দেখলাম, আমি লক্ষ্যহীন।" - এটা বেশ কমন একটা ব্যাপার বেশির ভাগ ক্যাডেটদের জন্যই।
আর্টস নিয়ে ক্লাস টেনে পড়া এক এক্সক্যাডেট জীবনের লক্ষ বলেছিল "ডাক্তার হওয়া"।
কতটা বিচ্ছিন্ন থাকে এরা, তার একটা এক্সট্রিম উদাহরন।
এসব কারনে কাউন্সেলিং জিনিষটা কলেজে বাধ্যতামূলক করা উচিৎ।
(জানি সেটা কে খুতবা বলে অবজ্ঞা করবে তারা। তবুও তা প্রফেশনাল দিয়ে কনশাসলি চালু তো হোক...)
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
প্রতিটি কলেজে একজন করে মনস্তত্ববিদ রাখার ধারণাটা বেশ পছন্দ হলো আমার। নিজ পরিবার থেকে দূরে থাকা একতাল কাদামাটিসুলভ ছেলেপুলেদের মনের গলিতে যাতায়াত করতে পারে, এমন একজন পেশজীবির উপস্থিতি অনেকের জীবন বদলে দিতে পারে।
বই প্রকাশ উপলক্ষ্যে অভিনন্দন খায়রুল ভাই!
ক্যডেট কলেজের মি. নোবডিরা বেলা শেষে সবাই সামবডি হয়। আসলে কেউ মি. নোবডি না।
একটা বয়েসের পরে খেলা ধুলা গান বাজনা এসবে দক্ষতা কমে আসে, পুরোন চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে মেডেল ঝোলে অন্যের গলায়, নায়ক হয় নায়কের বাবা। ভাল ছাত্রেরো পরীক্ষার পালা শেষ হয়।
সারা জীবন চুপচাপ সব দেখে যাওয়ার পর, কলম হাতে নেবার এইতো সময়। তার হাতে বেঁচে থাকে বাকি সবাই।
চমৎকার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ধন্যবাদ মাহবুব।
বইগুলো ৮ তারিখের পর থেকে মেলায় পাওয়া যাবে (সকলের জ্ঞাতার্থে)।