“একটি চাবি মাইরা দিছে ছাইড়া,
জনম ভইরা চলতে আছে”
সেই যে কবে থেকে বাউল কবির এ গান শুনেছি,
এখানে এসে দেখতে পারছি তার সঠিক চিত্ররূপ।
চাবি মারা কলের মত মানুষের জীবন, আচরণ,
ঘড়ির সাথে বাঁধা তার দু’পা, ছুটছে তো ছুটছেই।
জীবনের এই অন্তহীন দৌড়ের কোন বিরতি নেই।
হাডসন নদীর সাথে মিশে আছে কত নোনা অশ্রুজল,
কে তার হিসেব রাখে? কত ঘাম অবিরাম ঝরে যায়,
দৌড়ঝাঁপ, ছুটে চলায, শুধুই কিছুটা পুঁজির আশায়।
দু’দন্ড অবকাশ যদিও বা মেলে, সাবওয়ের কামরায়,
পেলব স্মৃতিগুলো সেথায় হারিয়ে যায়, রেলের ঘষায়!
ঘরের কারো সাথে কারো দেখা নেই দিনের বেলায়,
ঘড়ির এলার্ম শুনে ঠিক বেড়িয়ে যায়, যে যার সময়।
স্কুল শেষে ছেলে মেয়ে বসে যায়, ফেসবুকের পাতায়।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও তারা হাবুডুবু খায়।
ক্লান্ত শরীরে কর্মজীবি মা ঘরে ফিরে, সেবা দিয়ে যায়।
কবি নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য ‘কাজের লোক’ কবিতায়,
ডেকেছিলেন মৌমাছি, ছোট পাখি আর পিপীলিকায়।
জানতে চেয়েছিলেন তাদের গন্তব্য কতই আকুতিভরে,
‘দাঁড়াবার সময় তো নাই’ বলে তারা সবাই কেটে পরে।
নিউ ইয়র্কের ব্যস্ততা দেখে আমার সে কথা মনে পড়ে।
এখানে হয়না সময় কারো পূর্ণিমার চাঁদ দেখার,
হিসেব রাখেনা কেউ আলো আঁধারের, চন্দ্রকলার।
কর্মঘন্টার হিসেবে ধাবমান সবাই, রাখেনা খেয়াল,
কিভাবে গড়ায় দিন, যায় রাত, আর যায় বয়সকাল।
বছর শেষে নয়, জীবন সায়াহ্নে হয় হালখাতার সময়।
(ইতিপূর্বে ফেইসবুকে প্রকাশিত)
নিউ ইয়র্ক সিটি,
০৪ জুন ২০১৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
চাবি মারা কলের মত মানুষের জীবন
নিত্য দিন তারে দম দিয়ে যায় চলার ভীষণ
চলে তো সে যাপনের ভেলায় দিনভর সারাক্ষণ
কে রাখে হিসেব জীবন তার আড়ালে ঘটায় কতোটা ক্ষরণ !
:boss: :boss:
অনেক ধন্যবাদ, লুৎফুল। তোমার ভাবনার সাথে আমি একমত।
এখানে হয়না সময় কারো পূর্ণিমার চাঁদ দেখার,
হিসেব রাখেনা কেউ আলো আঁধারের, চন্দ্রকলার।
কর্মঘন্টার হিসেবে ধাবমান সবাই, রাখেনা খেয়াল,
কিভাবে গড়ায় দিন, যায় রাত, আর যায় বয়সকাল।
বছর শেষে নয়, জীবন সায়াহ্নে হয় হালখাতার সময়।
তারপরও ওই জীবনটা চেখে দেখতে ইচ্ছে করে। পরে না হয় ফিরেই এলাম।
ভালো লাগলো স্যার
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
ঠিকই বলেছো সাইদুল। আমারও তা করে। কিন্তু এই বয়সে?
যদি ঘড়ির কাঁটাটাকে পেছানো যেতো....