(Mr. M W Pitt, the first Principal of Momenshahi Cadet College – আমার জীবনে দেখা প্রথম ইংরেজ, যার সামনাসামনি বসে জীবনের প্রথম আনুষ্ঠানিক ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। তাঁর হাসিমুখ আমার কিশোর মনে সেদিন স্থায়ীভাবে খচিত হয়ে গিয়েছিলো, সে স্মৃতি আজও সমুজ্জ্বল, আপন আলোকে দীপ্যমান। ফটো ক্রেডিটঃ মাহবুব শহীদ ভাই, ক্যাডেট নং ৩)
দু’দিন বিশ্রাম নেয়ার পর ফের স্কুলে যাওয়া শুরু করলাম। আবার স্কুলের ক্যালেন্ডারের সাথে একাত্ম হ’লাম, ক্যাডেট কলেজের ভাবনা ধীরে ধীরে মাথা থেকে চলে গেলো। একদিন শিক্ষকের অনুপস্থিতির কারণে স্কুলটা এক পিরিয়ড আগে শেষ হলো। আমরা কয়েকজন মিলে ঠিক করলাম, বাসায় গিয়ে বই রেখে পুনরায় স্কুলে আসবো আর দুই দলের মধ্যে একটা কম্পিটিশন ম্যাচ খেলবো। তাড়াহুড়ো করে বাসায় ফিরলাম। দরজা খুলতেই আমার চেয়ে সাত বছরের ছোট বোনটা ঘোষণা দিলো যে আমি পাশ করেছি। কিসে পাস করেছি, সে সম্বন্ধে তার কোনই জ্ঞান ছিলোনা, তবে বড়দের পাশে বসে আলোচনা শুনে সে বুঝতে পেরেছে যে আমি বেশ বড় একটা কিছু করে ফেলেছি। এজন্যই সে বেশ উল্লসিত ছিলো। সন্তর্পনে ঘরে ঢুকলাম। আম্মা কাছে ডেকে আদর করে জানালেন যে আমি ক্যাডেট কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। টেবিলের উপরে দেখি পত্রিকার পাতা খোলা। যে পাতায় আমার রোল নম্বরটা আছে, সেটা মেলানো। যদিও রেজাল্ট জেনে গেছি, তবুও চোখ দুটো খুব দ্রুত নম্বরগুলো স্ক্যান করতে লাগলো। ১০৪৮ এ এসে দৃষ্টি থেমে গেলো। অনেকক্ষণ ধরে নম্বরটা দেখতে থাকলাম। ফাহিয়ানের রোল নম্বরটাও জানা ছিলো। সেটাও দেখলাম আমারটার পাশেই, ১০৫১। পাশাপাশি এ দুটো নম্বর দেখতে পেয়ে মনটা খুশীতে ভরে গেলো। কম্পিটিশন ম্যাচটার কথা বেমালুম ভুলে গেলাম।
দেখতে দেখতে আমার ভাইভা আর মেডিকেল পরীক্ষার দিন ঘনিয়ে এলো। পরপর দু’দিন হবে, প্রথম দিন ভাইভা, সেটাতে টিকে গেলে পরের দিন মেডিকেল। আমার একটা চোয়ালের দাঁতে পোকা ধরেছিলো (যদিও ডেন্টিস্টদের বদৌলতে এখন জানি, দাঁতের পোকা বলতে কিছু নেই)। এ নিয়ে আব্বার নতুন করে চিন্তা শুরু হলো। তিনি তাঁর অফিসের কলীগ আর প্রতিবেশী মুরুব্বীদের সাথে আলোচনা করলেন। সবাই পরামর্শ দিলো দাঁতটাকে তুলে ফেলার। যতদূর মনে পড়ে, তখন ঢাকায় মাত্র একজনই নামকরা ডেন্টিস্ট ছিলেন, তাঁর নাম ডাঃ জামান, বসতেন জিন্নাহ এভিনিউ এ (এখনকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ)। ভাইভার তিনদিন আগে সেখানে গিয়ে দাঁতটাকে তুলে এলাম। দাঁত তোলার সময় সামান্য ব্যথা পেয়েছিলাম, তবে সেটা সহ্য করার মত। কিন্তু সমস্যা শুরু হলো বাসায় ফিরে। বাসায় আসতে আসতে প্রচন্ড দাঁতব্যথা শুরু হলো, সাথে রক্তক্ষরণ। কিছুক্ষণ পর ব্যথায় জ্বর এসে গেলো। আব্বা আমাকে নিয়ে পুনরায় ছুটলেন ডাক্তারের চ্যাম্বারে। এবারে তিনি অনেকক্ষণ ধরে পরীক্ষা করে কি যেন একটা স্প্রে করে দিলেন। আর মুখ ভরে তুলো গুঁজে দিলেন। ধীরে ধীরে ব্যথা আর রক্তক্ষরণ দুটোই কমে এলো। তবুও, তিনদিনের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে কিনা, সে দুশ্চিন্তাটা রয়েই গেলো।
ভাইভার জন্য শুরু হয়ে গেলো ক্র্যাশ প্রোগ্রাম। সাধারণ জ্ঞান, ইংরেজী কথোপকথন আর পোশাকে আশাকে আমাকে চোস্ত বানানোর এক প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা। একটা কমন কোশ্চেন- তুমি কেন ক্যাডেট কলেজে যেতে চাও- এর উপর মোটামুটি একটা নোট লিখে আমাকে মুখস্থ করতে দেয়া হলো। আমি নিষ্ঠার সাথে মুখস্ত করলাম, যদিও তা করতে মোটেই ভালো লাগছিলোনা। বাসায় ডাকযোগে ইন্টারভিউ কার্ড এলো। সেখানে প্রিন্সিপালের নাম লেখা দেখলাম M W Pitt, MA, Oxon. এই নামটা আমার মনে এক নতুন দুশ্চিন্তার জন্ম দিলো। খবর শোনা আর পেপার পড়া আমার অন্যতম হবি ছিল বিধায় এতদিন ভাইভা সম্পর্কে বিশেষ উদ্বিগ্ন ছিলাম না। কিন্তু ঐ নামটা দেখার পর থেকে খুব অস্থির বোধ করতে লাগলাম, কারণ আমি জীবনে কখনো কোনদিন কোন ইংরেজকে সামনা সামনিই দেখি নাই, তার সাথে কথা বলাতো দূরের কথা। তার প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবো কিনা, তার চেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হলো তার প্রশ্নটা ঠিকমত বুঝতে পারবো কিনা। আব্বা শিখিয়ে দিলেন, ভয় নেই, সাহেবরা খুব ভালো মানুষ হয়। যতবার বুঝতে পারবোনা, ততবারই যদি বলি ‘বেগ ইয়োর পার্ডন স্যার’, তবে ইংরেজ সাহেব যে করেই হোক, আমাকে সহজ করে বুঝিয়ে দিবেন। আসলে আমার মনে সাহস সঞ্চার করাই ছিল আব্বার মূল উদ্দেশ্য। এটা শোনার পর থেকে আর সব বাদ দিয়ে শয়নে স্বপনে জাগরণে ‘বেগ ইয়োর পার্ডন স্যার’টাই আওড়াতে শুরু করলাম।
ভাইভার দিন খুব নার্ভাস ফীল করতে লাগলাম। ভয় ঐ একটাই, যা একটু আগেই বলেছি। কলেজের একজন শিক্ষক আমাদের সিরিয়াল ঠিক করে দিলেন। আমার ক্রম সাত নম্বরে। আমাদেরকে বলা হলো প্রিন্সিপাল সাহেব যদি আমাদের হাতে কোন কাগজ দেন, তবে আমরা যেন বাইরে এসে সেটা তাঁর হাতে জমা দেই। প্রথম তিনজন গেল আর খালি হাতে বেরিয়ে এলো। চতুর্থজন একটা কাগজ হাতে বেরিয়ে এলো। বুঝলাম, সে টিকে গেছে। ওর হাতের কাগজ দেখে আমার হৃদকম্পনটা একটু বেড়ে গেলো, যদি আমি কোন কাগজ না পাই? যখন ১০৪৮ ডাকা হলো, তখন মে আই কাম ইন স্যার বলে উত্তরের অপেক্ষা না করেই যন্ত্রচালিতের ন্যায় ভেতরে প্রবেশ করলাম। কারণ, আমার ‘মে আই কাম ইন স্যার’ এর উত্তরে প্রিন্সিপাল স্যার ইয়েস বললেন, না নো বললেন, সেটাও যদি না বুঝি?
ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিলো। প্রিন্সিপাল স্যারের এক হাসিতে আমার মনে হলো তিনি আমার অনেক দিনের চেনা। যখন আমার নাম, বাবার নাম ইত্যদি জিজ্ঞেস করলেন, ততক্ষণে ভয় ডর দূর হয়ে গেছে। দেখলাম, তিনিতো আমাদের মতই কথা বলেন। বরং মনে হলো আমাদের চেয়েও স্পষ্ট। প্রিন্সিপাল স্যারের চোখের মাঝে স্নেহের আধার খুঁজে পেলাম। আর একদম ভয় রইলোনা। তিনি প্রথমে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের নাম জিজ্ঞেস করলেন। আমি উত্তর দেয়ার পর তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, “ডু ইউ নো হোয়্যার ইজ হি নাও”? খবর শোনা আর পেপার পড়ার কল্যানে জানতাম যে প্রেসিডেন্ট আইউব খানের ঐ দিন রাজশাহী যাবার কথা। যতটুকু পারলাম, ইংরেজীতে তাই বললাম। তিনি ও তাঁর পাশের জন খুশী হলেন বুঝতে পেরে বুকের সাহস অনেকটা বেড়ে গেলো। তার পর এলো সেই কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নঃ “হোয়াই ডু ইউ ওয়ান্ট টু জয়েন ক্যাডেট কলেজ”? কিন্তু কি আশ্চর্য! এতদিনের সেই ঝরঝরে মুখস্থ করা আর রিহার্সেল দেওয়া উত্তরটা মোটেই মুখে এলোনা। তার বদলে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে আমার মুখে চলে এলোঃ “আই ওয়ান্ট টু জয়েন ক্যাডেট কলেজ বিকজ আই লাইক ফ্রেন্ডস। ইন ক্যাডেট কলেজ আই শ্যাল হ্যাভ এ লট অব ফ্রেন্ডস। আই শ্যাল স্টে উইথ মাই ফ্রেন্ডস টুগেদার।“
কে আমার মুখে এই কথাগুলো তুলে দিয়েছিলো, তা আজও জানিনা। কিন্তু Mr M W Pitt এর মুখে দুইবার গুড গুড শোনার পর মনে হয়েছিলো আমি যেন কোন দৈববাণী শুনতে পাচ্ছি। এই সৌম্যকান্তি, স্নেহপ্রবণ, আলোকবর্তিকাতুল্য ব্যক্তিত্বের সাথে ওটাই ছিলো আমার প্রথম পরিচয়, এবং ওটাই শেষ। কারণ আমরা এমসিসিতে প্রথম যোগদান করে অন্য একজন প্রিন্সিপালকে পেয়েছিলাম। ততদিনে তিনি কর্তব্যপালন শেষে নিজ দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। তিনি একটা কাগজে খস খস করে কিছু একটা লিখে আমার হাতে ধরিয়ে হাসিমাখা মুখে বললেন, ইউ মে গো নাও। কাগজটা নিয়ে আমি প্রস্থান করলাম, মুখে বিজয়ের হাসি। জমা দেবার আগে হাতের লেখাটা পড়ে দেখলাম, “Selected for Medical Test”.
আমার পরে ১০৫১ এর ডাক পড়লো। পথে ফাহিয়ানের সাথে দৃষ্টি বিনিময় হলো। ওর মুখ দেখে মনে হলো, ওর চিকণ দুটো কাঁধে যেন পৃ্থিবীর বোঝা।
চলবে…
ঢাকা
০৯ জুলাই ২০১৫
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
:clap: :clap: :clap: :clap:
আপনার জীবনের জার্নাল পড়তে পড়তে নিজের সব কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। বিদ্যাময়ী স্কুল থেকে আমরা সব বন্ধুরা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও মাত্র তিনজন শেষমেশ টিকে থাকতে পেরেছিলাম। তিনজনের একজন আবার খুব কান্নাকাটি করতো। দেখা হলেই ও সাবিনাগো বলে সুর করে কান্না করতো বলে ওর হাউসই বদলে দেয়া হলো। দুই টার্ম পরে মেয়েটি চলে যায় ফাইনালি।
এইট, নাইন, টেন এই তিনটে ক্লাসের ১৫০ জন ক্যাডেট নিয়ে ১৯৮৩ সালে এমজিসিসির যাত্রা শুরু হয়। প্রথম বছরে আমরা তিন বোন (কাজিনস) কলেজে একসেপ্টেড হই। আমি সবার ছোট ছিলাম। বড় বোনটি খুবই নরম মনের মানুষ, ইনিয়ে বিনিয়ে কেবল আমার খালাকে চিঠিপত্র লিখতো তাকে নিয়ে যাবার জন্য। লুবনা, মিলি আপা, এ্যানি, শেলীর মত অসাধারণ কিছু বন্ধু পেয়েছি কলেজ থেকে। মাঝেমধ্যে সব লিখতে মন চায়, অস্থিরচিত্ত মানুষ বলে ধৈর্যচ্যুতি ঘটে সহজেই!
চিত্ত যখন স্থির হবে, তখন লেখা শুরু করে দিও।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। একমাত্র মন্তব্য, তাই আরেকটু বেশী করে ধন্যবাদ জানালাম।
🙂 🙂 🙂 🙂
আমি মনে করি মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ হলো তাঁর অকপটতা ও নিজস্বতা। এদু'টির বিচ্ছুরণ প্রস্ফুটিত হলে ভাইভাতে আর কীইবা জিগ্যেস করবার থাকে?
দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ
গভীর পর্যবেক্ষণপ্রসূত কথা! মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম, মোস্তফা।
আগের মতই। তরতরিয়ে পড়ার মত।
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
অনেক ধন্যবাদ। উৎসাহিত হলাম।
আহা ! আমার ভাইভার এক তোড়া প্রশ্ন মনে পড়ে গেলো ।
বৈরুত কোথায় ? বললাম লেবাননে ।
লেবানন কোথায় ? বললাম মিডল ইস্টে ।
মিডল ইস্ট কোথায় ? বললাম এশিয়ায় ।
আরো কি কি যেনো ...
ট্রাফিক জ্যামের মতোন সব জ়ট পাকিয়ে গেছে যেনো ।
আপনার কি করে অমন সব ডিটেইল এতো এতো মনে আছে !
নিদারুন নস্টালজিয়ায় ভাসিয়ে দিলেন ...
খায়রুল ভাই । :boss: :boss:
ইদানীং আমার কি যেন হয়েছে, সুদূর অতীতের শৈশব আর কৈশোরের স্মৃতিগুলো খুব ডিটেইলসে মনে পড়ে। কিন্তু বর্তমান আর নিকট অতীতের স্মৃতিগুলো সহজেই ভুলে যাই, অনেক সময় চেষ্টা করেও আর মনে করতে পারিনা।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, লুৎফুল।
ডাঃ জামান সাহেবের চেম্বারে আমিও গিয়েছি।
তখনকার দিনে দাতের যেকোন সমস্যার একটা প্রধান চিকিতসাই ছিল, দাত তুলে ফেলা।
কি সাংঘাতিক ব্যাপার, যদি তা দুধের দাত না হয়ে থাকে - কেউ ভাবতো না তা...
যা হোক দন্ত চিকিতসায় যে অনেক উন্নতি হয়েছে, সেটাই আশার কথ...
সবই প্রায় চেনা ঘটনা, প্রেডিক্টেবল ঘটনা। তবুও দারুন উপোভোগ্য কারন নিজের স্মৃতি উসকে দিচ্ছে...
বাকি গুলোও পড়ে ফেলবো শীঘ্রই...
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
পোস্টটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, পারভেজ। প্রেরণা পেলাম।
সিসিবিতে অনুপস্থিত থাকার কারণে সিরিজের প্রথম দিকের পর্বগুলো মিস হয়ে গিয়েছিল। গোড়া থেকে পড়ার লোভ সামলাতে পারলাম না স্যার।
'বেগ ইয়োর পার্ডন' অংশটা পড়ে অদ্ভুত একটা অনুভূতি হলো। প্রায় তিন যুগ পর, ২০০০ সালে, মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে ভাইভা দিতে যাওয়ার আগে এই 'বেগ ইয়োর পার্ডন' বলার ব্যাপারে আমার বাবাও বেশ জোর দিয়েছিলেন, এবং আমাকে বেশ কয়েকবার মনেও করিয়ে দিয়েছিলেন। ইতিহাসের কী চমৎকার পুনরাবৃত্তি !
[আমার বাবা নিজেও ১৯৬৫ সালে মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজে পরীক্ষা দিয়েছিলেন (ক্লাস সেভেন), লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ন হলেও দুর্ভাগ্যবশত মেডিকেল টেস্টে বাদ পড়ে যান। এ নিয়ে পরবর্তীতে তাকে অনেক আফসোস করতে শুনেছি।]
লেখা আশ্চর্য রকমের সাবলীল, আর তাতে সাদাকালো যুগের খুব মিষ্টি একটা গন্ধ টের পাওয়া যায়। দারুণ মুগ্ধতা নিয়ে পড়ে যাচ্ছি স্যার।
নিজের পুরনো কোন লেখায় কোন মনযোগী পাঠকের মন্তব্য পাওয়াটা যে কতটা আনন্দদায়ক, তা লেখক মাত্রই জানেন। আমার প্রায় তিন মাসের পুরনো লেখায় তোমার এই মন্তব্যটাও আমাকে অসামান্য আনন্দ দিয়ে গেলো।
সেই তখনকার দিনের মুখস্থ করা 'বেগ ইয়োর পার্ডন' সারাটা জীবন বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুফল দিয়ে গেছে। নিজে যেমন বলে সুফল পেয়েছি, অন্যরাও আমাকে বলে তেমন সুফল পেয়েছে।
তোমার বাবার পরিচয় জেনে খুব ভালো লাগলো। উনি যদি যোগদান করতেন, তবে আমার দুই ব্যাচের সিনিয়র হতেন। অর্থাৎ ফাহিম ভাইদের ব্যাচের হতেন। ঐ ব্যাচটি আমার দেখা এমসিসি'র অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যাচ। ওনাদের ব্যাচের বেশীরভাগ রত্নই অবশ্য প্রবাসী।
Mr. M W Pitt, the first Principal of Momenshahi Cadet College – আমার জীবনে দেখা প্রথম ইংরেজ, যার সামনাসামনি বসে জীবনের প্রথম আনুষ্ঠানিক ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। তাঁর হাসিমুখ আমার কিশোর মনে সেদিন স্থায়ীভাবে খচিত হয়ে গিয়েছিলো, সে স্মৃতি আজও সমুজ্জ্বল, আপন আলোকে দীপ্যমান। তাঁর একটা ছবি আজ পেলাম, তাই এখানে যোগ করে দিলাম।
যারা তাঁকে দেখেনি, আশাকরি ছবিটা ত্তাদের ভালো লাগবে।