বহুদিন হল কোথাও নিজের কথা বলি না। আমি মানুষের কথা শুনি, তাদের আশা, তাদের স্বপ্ন তাদের উল্লাস। ক্রিকেটে দেশের জয়ে সবার আনন্দের কথা শুনি, ৫৮, ৭৮ এর আক্ষেপ শুনি, আর অন্য দেশের উত্তরণে আফসোস শুনি। নিজের কথা বলি না, মুখে আসে না। আমি গাছ হয়ে যাচ্ছি, খুবই ভাল শ্রোতা হচ্ছি। লেখাও আসে না নিজেকে শামুক বানাতে বানাতে মনে হল ঠিক হচ্ছে না এভাবে মোটেও ঠিক হচ্ছে না। তারপরও গুটিয়ে পড়ি একটু একটু করে।
মাঝে মাঝেই আসি সিসিবিতে নিজের প্রলাপ শুনাতে কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাঠক হয়ে ফিরে যাই। দুই তিন লাইন লেখা লিখে আবার মুছে ফেলি। খসড়া থেকে ট্র্যাশে মুভ করে ফেলি চোখের পলকেই। রাতের বেলা আবার শুয়ে শুয়ে ঠিক করি এরপর এভাবে লেখব। ঘুম আসার আগেই একটা লেখার আদ্যোপান্ত ঠিক করে ফেলি। পরেরদিন আবার একই গোলকধাঁধাঁ।
আজ হঠাৎ মনে হল অনেক মেইল করব। বড় বড় যেন পড়তে পড়তে সবাই টায়ার্ড হয়ে যায়। অনেক সময় ধরে আমার মেইল পড়তে পড়তে সবার যেন নস্টালজিয়া চলে আসে। আমার বিষণ্নতা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা সবার মাঝে। কিন্তু কি অদ্ভুত, ইনবক্সে গিয়ে কাউকে খুঁজে পেলাম না যাকে লেখা যায়। যার থেকে সময় ছিনিয়ে নেওয়া যায়। এরকম কলেজে থাকতে হত মাঝে মাঝে, মনে হত আজ শুধু চিঠি লিখি। একটা প্যাড নিয়ে বসতাম প্রেপে। একে ওকে যতক্ষণ প্রেপ চলত ততক্ষন চিঠি লিখতাম। কখনো প্রাপক সংকটে পড়েছি বলে মনে হয় না। বড় হতে হতে দেখি আশে পাশে লোকজন কমে যাচ্ছে আশংকাজনক ভাবে। যারা হারিয়ে গেছে তাদের যদি হঠাৎ একটা বিশাল মেইল করে ফেলি তারা কি অবাক হবে?
এই সময়ে যেটা মোটেও করা উচিৎ হচ্ছে সেটাই করছি আমার অত্যন্ত প্রিয় একটা বই আবার গোড়া থেকে শুরু করেছি। হাতের কাছে কড়ি দিয়ে কিনলাম পেয়ে জিভে প্রায় জল চলে আসল। বিমলের এই বই যখন পড়েছিলাম তখন মুগ্ধ হয়ে গোগ্রাসে গিলেছি। এখন একেবারে তাড়িয়ে তাড়িয়ে প্রতিটি লাইনের মজা নিয়ে নিয়ে পড়ছি। আর সাথে সাথে বিমর্ষ হচ্ছি। অবাক হই এত সুন্দর করে কিভাবে মনকে আলোড়িত করে। বিমল মিত্রের অন্য কোন বই আর আমার পড়া হয়নি। এবার দেশে গেলে আরো কিছু পড়ার ইচ্ছা আছে। অনেকদিন ধরে বিভূতিভূষণ এর অপরাজিত পড়ার জন্য এত ইচ্ছে করছে। কোথাও পাচ্ছি না।
জাপানে থাকি, তাই বাসার সবার আশংকার বিষয়বস্তু হয়ে আছি বেশ কিছুদিন ধরে। নিজের ও মাঝে মাঝে মনে হয় সব কিছু ছেড়ে যদি পালিয়ে যেতে পারতাম। একটা উছিলায় প্রবাসী জীবনের সমাপ্তি ঘটত। মাঝে মাঝে বেশ মনে হয়েছে হোক আরো খারাপ অবস্থা। রেডিয়েশন চলে আসুক টোকিও পর্যন্ত। সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে যেহেতু পারছি না, প্রকৃতি ব্যবস্থা করে দিক কিছু ছেলেকে নিজের দেশে ফিরে যাবার। নিজেকে নিজেরই খারাপ লাগে এরকম ভাবনার পর কিন্তু … । তবে জাপান বলেই হয়ত আল্লাহর রহমতে শেষ পর্যন্ত সব আবার ঠিক হয়ে যাবে। এরা আসলেই মানুষ না।
কেউ একটা ব্লগ দিতে পারে না মন ভাল করার ১০১ উপায় নামে? আমি সবসময় তার অপেক্ষায় আছি। প্রথম ৩-৪ উপায়ে আমার কিছু হবে না। কারণ সিনেমা দেখতে অত ভাল লাগে না খুব বেশি সংগীতপ্রেমিক ও আমি নই। ১০১ টা উপায় থেকে কয়েকটা খুঁজে পাব নিশ্চয়ই।
মন খারাপ করে দেয়া একটা লেখা...ভাইয়া আপনি তো নিজেই মানুষের মন খারাপ করায় দিবেন, মন ভালো করার উপায় মানুষে বলবে কি করে?
কি করব বল স্বভাবের দোষ।
তোমার কোন উপায় জানা থাকলে বল ট্রাই করে দেখি...
তোমার লেখাগুলো সবসময়ই এমনভাবে মন ছুয়ে যায়! সবসময় ভালো থাকো এই কামনা করি...
ভাইয়া ভাল আছেন? অনেক অনেক দিন পর। আপনার কমেন্ট পেলে আমার খুব ভাল লাগে। সবসময় ভাল ভাল কথা বলেন তো এই জন্য 😛
যা চেয়েছিলেন তাই হল......আপনার মন খারাপটা আমাদের মাঝে ছড়িয়ে দিলেন.....
অবশ্য এতে ভালই হল খুব 🙂 খালি সুখই কি ভাগাভাগি করব ? মাঝেমধ্যে না হয় দুঃখটাকেও নিলাম :hug:
আপনি সুস্থ আছেন আগেই খবর পেয়েছি.....এখন কি অবস্থা ?
এখন হল অস্বস্তিকর পরিবেশ। কি হচ্ছে কিছু বুঝতে পারছি না। যারা ব্যস্ত অফিস আদালত নিয়ে তাদের সমস্যা নাই ভাবার সময় নাই, কাজ করতে করতে পার পেয়ে যাচ্ছে। আমার সেমিস্টার ব্রেক চলছে তো তাই সমস্যা। এমনিতে জাপানের অবস্থা মনে হচ্ছে এখনো কন্ট্রোলেই আছে। তবে পুরোপুরি সমস্যা সমাধানে বেশ সময় লাগবে।
কেমন আছো, তপু? লেখাটা সাক্ষাত যেন প্রলম্বিত ছাত্রজীবন এবং সংকটের প্রতিচ্ছবি। তোমার অনেক লেখাই আমার পড়া। পড়ে মনে হয় একেকটা ইমোশনাল মনোলগ। ভাল থেকো।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ভাইয়া ঠিকই বলেছেন , যারা চাকরী করে তাদের মধ্যে এরকম বিষণ্নতা দেখি না। সবাই কিছু না কিছু নিয়ে ব্যস্ত আছে। ছাত্রজীবনে বেশি ব্যস্ত হয়ে উঠা হয় না কখনোই। আর এই জন্য এরকম সংকট। রোগ তো নির্ণয় হল এবার প্রেসক্রিপশন?
ভাল আছি ভাইয়া। কমেন্ট পেয়ে ভাল লাগল।
:no: প্রেসক্রিপশন নাই। পাইলে আমাকে দিও।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সাবধানে থাকিস দোস্ত।
হ, সাবধানে থাকিও।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
এইসব সময় কেমনে থাকলে সাবধানে থাকা হয় তাই তো বুঝতেছি না। 🙁
আমারে মেইল লিখ
mon kharap hole 🙁 ,mon khrap howar karon kuje ber korte hoi thn sei karon ar solve korlei mon valo hoye jabe.. 🙂
এত সহজ?
hmm..sohoj jodi apni mon khrap howar karon solve korte paren bt majemaje solve koratai onk besi kothin hoye jai.. 🙂
বিষণ্ন লেখা
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ছাত্রজীবন আরেক দিল্লিকা লাড্ডু। ভাল থেক।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
জীবনটাই লাড্ডুতে লাড্ডুতে ভরে গেল আপু।
আপনে মিয়া...ভয় খাওয়ায় দিসিলেন...
পুরা জাপানের অবস্থা দেখে সবাই হতভম্ব...
🙂
তুমিই একমাত্র আমার লেখাটা পড়েছ মনে হয়। তোমার ১০১ উপায় পড়ে আসি যাই।
দেখেন আপনে যে এক নম্বর পেসিমিস্ট তার প্রমাণ।
অবশ্য এটাকে পেসিমিস্ট না বলে ১৮০ডিগ্রী অফ নার্সিসিস্টও বলা যাইতে পারে... :duel:
মন ভাল রাখার সহজ তম উপায় ...
১। সিসিবিতে নিয়মিত আসা
২। সিনিয়ররে মাফ করে দেয়া
😀 😀 😀
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
মন ভাল হয়ে গেছে ভাইয়া। আর আপনি অবশেষে আমার ব্লগে কমেন্টাইছেন অভিমান তো এমনিতেই মাটি হয়ে গেছে।
ব্লগ গিফট পাইছস, এখন তো মন ভাল হয়ে যাবার কথা... ;))
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আপনি ব্লগে কমেন্ট দিলেও মন ভাল হয়ে যায়।
ইয়ে,ওয়েলকাম টু জেসিসি... 🙂
লেখার সময়ই ভাবতেছিলাম এই কথাটা মাস্ফ্যুর মনে ধরবে।
ইয়ে,একটা পেম করেন,মন তো মন,সবকিছু ভাল হয়া যাবে 😛
কি খবর তপু মিয়া,,,,মন ডা ভালা??
একটা কথা খুব মনে ধরসে
সু্যোগ হেলায় হারইয় না 😀
ভাইয়া আপনার কি অবস্থা? আপনার ব্লগ পড়া আর ইহকালে হইল না মনে হয়।
সুযোগ চলে গেছে ভাইয়া। এখন তো সব আন্ডার কন্ট্রোল এখন কি আর যাওয়া যায় নাকি।