একটা জীবন শেষ করলাম। ঘোরের মধ্যে ছিলাম, আছিও হয়ত। ভাল লাগাটা এই পর্যায়ে ছিল যে লোকনাথের দোকানে বসে ডালপুরি খাওয়া এক বালকের টক দিয়ে সালাদের মাখামাখিতেও আমার মুগ্ধতা ছিল, কিংবা দুপুর বেলাতে শুয়ে শুয়ে বিছানার পাশের জানালা দিয়ে আকাশে খাবারের খোঁজে পাক খাওয়া পাখিদের দেখাতেও। আফিসার্স ক্লাবের ছাদে বসে চানাবুট আর পিঁয়াজু চিবুতে চিবুতে এক ঝাক চড়ুইয়ের সাথে সখ্যতা, আকাশে তাদের কিচির মিচির আর একপাশে শীতলক্ষ্যা। সন্ধ্যায় যখন চড়ুইরা হাল ছেড়ে দেয় ক্লান্ত হয়ে; তখন সেটা কাটাতেই যেন শীতলক্ষ্যা লাল হয়। লজ্জায় মনে হয়, নাকি সূর্যটাই। এসবকিছু ভাবতে ভাবতেই আমি শুধু দেখতেই থাকি, দেখতেই থাকি তাকে। অবশেষে যখন সূর্যটা আর কুলোতে পারে না, ঝুপ করে অন্ধকার নেমে আসে। শীতলক্ষ্যাও ক্ষান্ত দেয়, আমিও। রাতে রিকশায় চড়ে জাপানী হোষ্টেলে ফেরার সময় হঠাৎ করেই হয়ত এক হাত-পায়ে প্যাডেল মারা রিক্সাওয়ালাকে আবিষ্কার করি। ভাবি, মানুষ আসলেই বাঁচে; সেটা বাঁচার মত না হলেও। বিক্ষিপ্ত অনুভূতিগুলোকে জোড়া লাগাতে গভীর রাতে বের হই নেশার খোঁজে; চাচামিয়ার মশলা চা খাওয়ার নেশা। টনিকের কাজ করে সেটা। হয়ত এভাবেই বেঁচে থাকে ঘোড়াশাল।
অনেক কিছুই শিখলাম ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিংয়ে গিয়ে। জিজ্ঞেস করেন মিনিকেট চালের কেজি কত? কিংবা আলু, ডাল, তেল, লবণ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন। সব একেবারে হাতের মুঠোয়, জিহবার আগায়। কিছু পারি আর না পারি, কিছু করি আর নাইবা করি বাজার করতে পারব বেশ হেলেদুলে। কোনটা কি মাছ তা চেনার ধারণাটুকুও ছিলনা। বাসায় প্লেটে মাছ দেখলে জিজ্ঞেস করতাম; চেটেপুটে খেয়ে ঢেকুর তুলতাম। সেই আমি মেঘনা ঘাটে(আশুগঞ্জ) গিয়ে শইল, পুঁটি, রুই, কেঁচকি, চিংড়ি নিয়ে মুলামুলি করি দোকানদারের সাথে। এভাবেই মনে হয় দুনিয়া উল্টিয়ে যায়, সূর্য পূর্ব-পশ্চিম ভুল করে। আর আমি সেই ভুলের মাশুল দিতেই সদাইপাতি করি। তাতে অবশ্য আমার আক্ষেপ থাকে না।
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে ভৈরব সেতু দর্শনে বের হই আমরা সবাই। কাঁপতে থাকা সেতুর সাথে শামিল হই। ট্রাক-বাসগুলো ছুটে যাওয়ার সময় সেতুটা বিদ্রোহ করে, সেটাকে পাত্তা না দিয়ে নিচে তাকিয়ে কালচে মেঘনাকে দেখি। পাশ দিয়ে চলে যাওয়া ট্রেন দেখে চিৎকার করি একসাথে যা কোন অর্থেরই ধার ধারে না; কিন্তু ঢাকা পড়ে যায় ঝিকঝিক শব্দে। তাই হাত-পা নেড়ে উপস্থিতি জানান দেই, ট্রেনের কেউই হয়ত খেয়াল করেনা। হয়তবা করেও; আর মনে
মনে বলে ‘ওরা এগারোজন কেন?’
ঘোড়াশালে থাকতে পিকনিকে গেলাম একদিন, শীতলক্ষ্যার ওপারে আজম খাঁনের বাগান বাড়িতে। ভাল কিছু শুনিনি তার সম্বন্ধে। জাতীয় পার্টির নেতা, আর কিছু বলা মনে হয় শোভন হবে না। নৌকায় পার হলাম, গিয়ে দেখি খাঁন সাহেব তার আরও কিছু সাঙ্গপাঙ্গদের সাথে নিয়ে মদের বোতল সাবাড় করছে, বিপরীত লিঙ্গেরও উপস্থিতি টের পেলাম; উগ্রতার উর্দ্ধে। মদের বোতলের ভিড়ে এডোভাসকে দেখে কিছুটা চমকেই যাই, মানুষের উদ্ভাবনী চিন্তাধারায় আরেকবার বাকহারা। এতদিন এডোভাসকে নিরীহ মনে করেই পেটে চালান দিতাম কাশিকে শায়েস্তা করতে। এরপর না হয় চোখ নাচিয়ে; কোমর বাঁকিয়ে; হিন্দি গান ছেড়ে আয়েশ করে গলা ভেজাবো। আজম খাঁনকে তাই-ই করতে দেখলাম।
সময় ফুরিয়ে যায়, ভাল সময় আরও তাড়াহুড়ো করে। ঢাকায় আসলাম এবার; আবার সেই…মানুষ শান্তিতে নাই, আমিও নাই। সবকিছুই কেমন যেন নশ্বর, আনন্দগুলো কেমন যেন ম্যাড়ম্যাড়ে। একমাত্র দুঃখগুলোই কোন রূপ বদলায়নি, তার বোধহয় দরকারও নেই। পুরনো বেদনাগুলো নতুন আমাকে পেয়ে আবার যেন জাকিয়ে বসে দ্বিগুন ওজনে, অনুভূতিশূন্য হই। নতুন-পুরাতন জীবনটাকে পেটে জমে থাকা বাসি বমি বলে ঠাহর হয়। ওয়াহিদা আপু, এটাই কি বিষন্নতা?
তাই আমার কাছে ঐ একমাস;
একটা জীবন।
😀
বহুদিন পর লিখলেন ভাইয়া; পাক্কা দুমাস।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
একমাস পরীক্ষা খাইলো আর এক মাস ট্রেনিং। তয় সিসিবিতে আইসা ঢু মারি সবসময়।
সেদিন তোমার পুরানো লিখাগুলো পড়ছিলাম, আর লিখা দিচ্ছোনা কেন ভাবছিলাম।
যাক আশা করি বিষন্নতা কেটে যাবে 🙂
হুম... আপু বিষন্নতা ভালা না।
এত বিষন্ন হইস না......... 😕
আমারে কিছু ধার দে...... :hug:
তাইলে দেখবি কইম্যা যাবে 😀
হে হে... বিষন্নতা নিয়া কি করবি? চিপস লাগলে আওয়াজ দে।
এই নে দিলাম

চিপস দেএএএএএএএ :(( :(( :(( :((
চমৎকার ফিরে আসা হাসনাইন। 🙂
এই উপলব্ধিগুলোর জীবনে অনেক দরকার আছে। আশা করি তোমার বিষন্নতা কেটে যাবে শীঘ্রই।
হুম... ভাই।
হাসনাইন ভাই বিষণ্ণ কেন?
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
😛
এত ছোট কেন? সুন্দর লেখা দোস্ত।
😛 .
অসাধারন লাগলো তোমার এই লেখাটা। অসম্ভব গুছানো, খুব-খুব ভালো লেগেছে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
🙂
আবার্যাইতেমঞ্চাইন্ডাস্ট্রিয়াল্ট্রেনিঙে 🙁 🙁 🙁
আমিওপ্লায়াঙ্ক্রছিলামকিন্তুএক্টাকাজেয়াটকাপীড়াগেলাম। 🙁
একটা ছোট জীবনের মধ্যে আরো কতো কতো জীইইইবন! এইভাবেই মানুষ বেঁচে থাকে। জীবনযাপন করে যায়। ভালো হয়েছে হাসনাইন। লিখতে থাকো। আর ভালো থেকো। :thumbup:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
খাঁটি কথা ভাই।
তুই এত বিষন্ন কেন?
লেখা এত ছোট কেন?
লেখাটা এত সুন্দর কেন?
এতদিন লিখস্নাই কেন?
আমি এত প্রশ্ন করতেসি কেন? ~x( ~x(
তুই কই হারায়লি?
লেখা দেস না কেন?
আমি এত প্রশ্ন করতেসি কেন? 😛
মন খারাপ করে থাকা একটা গুণ হাসু তুই কি জানিস?সবাই পারে না।আমার মন ভাল না এখন।তাই তোর লেখাটা পড়ে ভালই লাগছে।কেন যানি নিজের মন খারাপের সময় আর কারো মন খারাপ দেখলে ভালই লাগে।হয়তো আমার সমস্যা আছে।তবু মন্ খারাপ করে থাকাটা আমার সাধারণ হয়ে গেছে খুব।
কেন রে মামা..... তোর ব্যাপার-ত সিরিয়াস লাগতেছে।
খুব সুন্দর গোছানো লেখা, হাসনাইন। নি:সন্দেহে তোর ভাল লেখাগুলার একটি।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুর এর কথা ভাবলে ঘোড়াশাল এর কথাই আগে মনে পড়ে। পলাশ সার কারখানার আবাসিক এলাকাটুকু কি সুন্দর গাছপালা ঘেরা একটুকরো স্বর্গ যেন। আর শীতলক্ষ্যা,আহা, কি মায়াময় স্নিগ্ধ একটা নদী। নাহ ইমোশনাল হয়া যাইতেসি 🙁
একটা ছবি দিয়ে দেই এই ফাকে।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
এই লাইজ্ঞাই ছবি দেই নাই।...।
হাস্না ব্যাপক লিখছস...
অবশ্য তুই ব্যাপক লিখবি, এতে অবাক হবার কিছু নাই...
মন কি বেশি বিষণ্ণ?
মাঝে মাঝে এরকম থাকা ভাল...
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
বসের কি অভিজ্ঞতা আছে নাকি। B-)
বিষন্নতা একটি রোগ :-B
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
নেটে সার্চ দিয়ে দেখলাম বিষয়টাকে সুইসাইড পর্যন্ত টাইনা নিয়া গেছে। 😮
কেম্নে কি?!!! 😕
খুব, খুব সুন্দর একটা লাইন৷ 🙂
এই উছিলায় একখান ব্লগ নামা। 🙂
অসাধারণ লাগল। শান্ত স্নিগ্ধ একটা জীবন চাই। দৌড়ানো আর ভাল লাগতেছে না।
তাইলে বস দেশে ফেরার আগে একশ একবার চিন্তা কইরেন।
সবই বুঝলাম। শুধু "ওয়াহিদা আপু" টুকু ছাড়া।
অনেকদিন পর উকি দিয়ে বেফাস প্রশ্ন করলাম কিনা- তাও বুঝছি না! 😕
শহীদ ভাই এই লিংক অনুসরণ করেন।