মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা যুদ্ধের কথা আসলে “ক্র্যাক প্লাটুন” এর কথা সেখানে আসতেই হবে।ঢাকার ভিতরে সব দুঃসাহসিক অভিযান চালায় এই ক্র্যাক প্লাটুন। যার হাত ধরে এই প্লাটুনটি গড়ে উঠে তিনি হচ্ছেন মেজর খালেদ মোশাররফ। ছিলেন K ফোর্সের প্রধান। খালেদ মোশাররফকে নিয়ে বলতে গেলে মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান থেকে শুরু করতে হয়। কিন্তু একটু বিপরীত দিক থেকে শুরু করব। পরে সময় করে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার খালেদ মোশাররফকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করব। আজকের লেখায় চেষ্টা করেছি খালেদ মোশাররফের শেষ কয়েকটি দিনের কথা বলতে,অর্থাৎ ৩রা নভেম্বর শুরু হওয়া অভ্যুত্থানের কথা। প্রাসঙ্গিক আরো কিছু বিষয় আসতে পারে। তবে মূল ফোকাসটা খালেদ-শাফায়েত এর অভ্যুত্থান এর দিকেই থাকবে।
২/৩ নভেম্বর রাত।বঙ্গভবণে মোস্তাক সরকারের উচ্চপদস্থ কয়েকজনের মিটিং চলছে। উপস্থিত আছেন রাস্ট্রপতি খন্দকার মোস্তাক, সামরিক উপদেষ্টা জেনারেল ওসমানী, ডিফেন্স স্টাফ প্রধান জেনারেল খলিল,মেজর রশীদ। জেনারেল জিয়া এবং জেনারেল খালেদ মোশাররফের মধ্যকার ক্ষমতার লড়াইয়ের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল। জিয়াকে সরিয়ে দেয়ার পক্ষে ছিল মোস্তাক, ওসমানী,খলিল। রশীদ অবশ্য জিয়াকেই চাইছিলেন। ফারুক চাইছিলেন খালেদকে। এই দুইজনকেই সরিয়ে দেওয়া যায় নাকি সেই বিষয়েও আলোচনা হচ্ছিল এবং শেষ পর্যন্ত দুজনকেই সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে পৌছায় সভা। মিটিং চলাকালীন সময়েই বঙ্গভবণ থেকে মেজর ইকবালের নেতৃত্বে থাকা ১ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের এক কোম্পানী সৈন্য বঙ্গভবণ ছেড়ে চলে যায় আনুমানিক রাত ১২ টার দিকে। অভ্যুত্থানের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে!
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, আনুমানিক রাত সাড়ে বারটায় ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টে এসে ইউনিটের সার্বিক পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করলেন খালেদ মোশাররফ। সাথে ৪৬ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার কর্ণেল শাফায়েত জামিল এবং অন্যান্য অফিসার। কর্ণেল মালেক, ব্রিগেডিয়ার রউফ,ব্রিগেডিয়ার নূরুজ্জামান,মেজর হাফিজউদ্দিন,মেজর ইকবাল,মেজর নাসের প্রমূখ।
রাত একটার দিকে ক্যাপ্টেন হাফিজুল্লার নেতৃত্বে ১ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি প্লাটুন জিয়ার বাসায় পাঠিয়ে জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয় এবং বাসার টেলিফোন লাইন কেটে দেওয়া হয়। ১ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্যরা বাসা ঘিরে রাখল বাইরে থেকে, সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিল। এভাবেই অভ্যত্থানের প্রথম ধাপ শেষ হয় কোন ধরনের বুলেট বা রক্তপাত ছাড়াই। (যতদূর জানা যায় জিয়াকে বন্দী করার এই কাজ ৪৬ ব্রিগেডের কিছু তরুণ অফিসার নিজ উদ্দ্যোগেই করে এবং ব্রিগেড মেজর হাফিজ এখানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে)
৪র্থ বেঙ্গল হেড কোয়াটার থেকে অপারেশন পরিচালনা করছিলেন খালেদ মোশাররফ। ৪র্থ বেঙ্গলের দুটি কোম্পানী এয়ারপোর্ট রোডের কাওরান বাজারে অবস্থান নিয়ে বঙ্গভবণ থেকে আসার রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এন্টি ট্যাঙ্ক রকেট নিয়ে আশে পাশে অবস্থান নেয় একই ইউনিটের কিছু সৈন্য। রেডিও স্টেশন দখল করে ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। ১ম বেঙ্গলের দুটি কোম্পানী বঙ্গভবণের আশেপাশে ঘেরাও করে অবস্থান নেয়। রেডিও ট্রান্সমিশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাতের অন্ধকারে ৪৬ ব্রিগেডের ইউনিটগুলো ক্যান্টনমেন্ট এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে কৌশলগত অবস্থান নেয়, কোন ধরনের হামলা এবং বুলেটে খরচ ছাড়াই। ওদিকে বঙ্গভবণে অবস্থাণরত ফারুক অভ্যুত্থানের খবর পাওয়া মাত্রই তার ট্যাংকগুলো সচল করে ফেলে। বঙ্গভবণে ৮টি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৮টি, বাকীগুলো ক্যান্টনমেন্টে। ফারুক বঙ্গভবণ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে ট্যাঙ্কের কমান্ড নিল। সবগুলোতেই তখন গোলাবারুদ ভর্তি। (উল্লেখ্য, ১৫ আগস্ট রাতে ফারুক যে ট্যাংকগুলো নিয়ে বের হয়েছিল সেগুলোতে একটিতেও কোন শেল ছিল না)। বেঙ্গল ল্যান্সারের ট্যাঙ্কগুলো যখন যুদ্ধাবস্থায় তৈরী সেই সময়েই ২য় ফিল্ড রেজিমেন্টের অধিকাংশ কামান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, বাকী কামানগুলো ক্যান্টনমেন্টের ইউনিট লাইনেই আছে। সবাই প্রস্তুত নিজ নিজ অবস্থানে।
ভোরবেলা বঙ্গভবণের উপর দিয়ে দুটো মিগ ফাইটার প্রচন্ড শব্দে উড়ে যায়। ঘুরপাক খেতে থাকে। সাঁজোয়া একটি হেলিকপ্টার ক্যান্টনমেন্টের উপর চক্কর দিতে থাকে। সকাল থেকেই রেডিওতে কোন শব্দ ছিল না। সাভারের রেডিও ট্রান্সমিটার থেকে একটি অংশ খুলে নেয় কর্ণেল শাফায়েত জামিল। ১৫ই আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে তখন নানান ঘটন অঘটনের দেশ। আর সেই সময়টাতে রেডিও অনেক গুরুত্বপূর্ন মিডিয়া ছিল। সাতসকালেই রেডিওর এমন অবস্থা দেখে সবাই ধারণা করে নিল ক্ষমতার আবার পালাবদল হয়েছে। ওদিকে বঙ্গভবণে প্রাণভয়ে ভীত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোস্তাক। মেজর ফারুক প্লেন লক্ষ্য করে গুলি করতে চাইলে অনুমতি দেন নি মোস্তাক সরকারের সামরিক উপদেষ্টা জেনারেল ওসমানী।
ওদিকে ক্যান্টনমেন্টের উত্তরপ্রান্তের অবস্থা অনেকটাই যুদ্ধের মত। বেঙ্গল ল্যান্সারের ১২টি ট্যাঙ্ক অ্যাটাকিং অবস্থান নিলে সেকেন্ড বেঙ্গল রেজিমেন্টের ট্রুপ্স এন্টি ট্যাঙ্ক গান নিয়ে তাদের ঘেরাও করে রাখে। আকাশে জঙ্গী বিমান এবং সাঁজোয়া হেলিকপ্টারের চক্কর। যদিও শেষ পর্যন্ত কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল। প্রথমে অনুমান করা হয়েছিল ৪৬ ব্রিগেড মুভ করলেই বঙ্গভবণের মেজররা আত্নসমর্পন করে ক্যান্টনমেন্টে চলে আসবে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি হল ভিন্ন। আর এই সব কিছুই সিনিয়র কমান্ডার হিসেবে জেনারেল খালেদ মোশাররফকে সামাল দিতে হচ্ছে। সবাই অনেক উত্তেজনার মধ্যে থাকলেও খালেদ ছিলেন, শান্ত,ধীরস্থির।
সকাল বেলায় ৪র্থ বেঙ্গল হেড কোয়াটারে বসে অভ্যুত্থানের অন্যান্য অফিসারদের উপস্থিতিতে জেনারেল খালেদ মোশাররফ একটি দাবী-নামার ড্রাফট তৈরী করলেন। সেখানে তিনটি দাবী ছিল।
১। ট্যাঙ্ক ও কামান বঙ্গভবণ এবং শহরের অন্যান্য জায়গা থেকে ক্যান্টনমেন্টে ফেরৎ পাঠাতে হবে।
২। জিয়া এখন থেকে আর চীফ অব স্টাফ নন।
৩।বঙ্গভবণে বসে ফারুক-রশিদের কার্যক্রমের অবসান ঘটবে,তাদের ক্যান্টনমেন্টে ফিরে চেইন অব কমান্ড মানতে হবে।খন্দকার মোস্তাক প্রেসিডেন্ট থাকবেন।
সভায় উপস্থিত ব্রিগেডিয়ার রউফ হাত উঁচু করে নতুন একটি পয়েন্ট যোগ করতে চাইলেন। তার দাবী অনুযায়ী ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফকে আর্মী চিফ ঘোষণা করতে হবে। কর্ণেল চিশতিও সায় দিলেন। খালেদ কিছু না বলে শুধু মৃদু হাসলেন। ব্রিগেডিয়ার নূরুজ্জামান জেনারেল জিয়াকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে সরিয়ে দূরে কোথাও নিয়ে রাখার পরামর্শ দিলেন। তখন সেটাতে কেউ গুরুত্ব দিল না। ওদিকে মুক্ত জিয়ার থেকে বন্দী জিয়ার জনপ্রিয়তা ক্যান্টনমেন্টের সাধারণ সৈনিকদের মধ্যে বাড়তে লাগল ব্যাপক হারে এবং এক দিনের মধ্যেই। বিদ্রোহী পক্ষ থেকে কর্ণেল মালেক, কর্ণেল মান্নাফ এবং কর্ণেল চিশতি’র সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবণে রওনা হল। এভাবেই সারাদিন ক্যান্টনমেন্ট এবং বঙ্গভবণের মধ্যে টেলিফোন এবং সরাসরি আলাপ-আলোচনা চলতে থাকল। সকালের দিকে মেজর ডালিমও একবার ক্যান্টনমেন্টে এসে কথাবার্তা বলে যায়।
খন্দকার মোস্তাক দাবী দাওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রীসভার অনুমোদন ছাড়া কোন ধরনের সিদ্ধান্ত দিতে আপত্তি অস্বীকৃতি। পদত্যাগ করতে চায় সে। ওসমানী মেজরদের ক্যান্টনমেন্টে ফিরে যাবার ব্যাপারে একমত হলেন। মোস্তাকও রাজী, কিন্তু মেজর রশীদ রাজী না। এর চেয়ে বরং মেজরদের দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেন মোস্তাকের কাছে। ফারুক দেশত্যাগে রাজী ছিল না,কিন্তু রশীদ তাকে বুঝিয়ে রাজী করায়।অবস্থা আঁচ করতে পেরে মোস্তাকও মেজরদের সাথে দেশত্যাগে ইচ্ছা প্রকাশ করে।
মোস্তাক মেজরদের দেশ ত্যাগের প্রস্তাব করলে খালেদ মোশাররফ অন্যান্য অফিসারদের সাথে অনেকক্ষণ আলোচনা করে শান্তির খাতিরে এই মুহূর্তে তাদের দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়াই মঙ্গল হবে চিন্তা করে তাদের দেশ ত্যাগের অনুমতি দেন। এয়ার মার্শাল তোয়াবকে পররাস্ট্র মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করে তাদের দেশ ত্যাগে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। এখানে বলে রাখা ভাল মোস্তাক সরকার থেকে তৎকালীন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাস্ট্রদূত ইউজিন বোস্টারের সাথে ৩ তারিখ সকাল থেকেই যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল। এবং ভিসা প্রসেসিং এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ের ক্ষেত্রে বোস্টারের ভূমিকা নিয়ে সময় করে আরেক সময় কিছু বলার চেষ্টার করব।
৩ তারিখ সন্ধ্যায় তেজগাঁও বিমানবন্দরে অপেক্ষমান বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে (S2-ABO) আরোহণ করে ১৫ ই আগস্ট কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী মেজরেরা, সঙ্গে তাদের স্ত্রী। মেজর শাহরিয়ারের সাথে তার বান্ধবী। মেজরেরা তাদের অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে যেতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত সেগুলো ফেলেই যেতে হয়। রাত ৮-৪৫ মিনিটে প্লেন তেজগাঁও ছেড়ে যায়। চট্টগ্রাম থেকে রিফুয়েলিং করে সরাসরি ব্যাংককের পথে উড়াল দেয়।
একটু পিছনে ফিরে আসি। ৩ তারিখ দুপুরের দিকে পুলিশের আইজি বঙ্গভবণে ফোন করলে ফোন ধরেন জেনারেল খলিল । আইজি তাকে জানান গতকাল রাতে আর্মির লোকজন জেলে ঢুকে আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা করেছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটি প্রেসিডেন্টের সেক্রেটারী মাহবুব আলম চাষীকে জানান এবং প্রেসিডেন্টকে জানাতে বলেন খলিল। চাষী মোস্তাকের কাছে খবরটি জানালে মোস্তাক জানেন বলে তাকে জানান। চাষী খলিলকে জানিয়ে দেন প্রেসিডেন্ট খবর জানেন। সেদিনের প্ররিস্থিতি গরম বলে খলিল খবরটি সেখানেই চেপে যান।
সেই রাতে যাদের হত্যা করা হয়, তারাই ছিলেন জাতীয় চার নেতা তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম,মনসুর আলী এবং কামরুজ্জামান। ৩ তারিখের অভ্যুত্থান টের পেয়েই রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি সৈন্যদলকে পাঠানো হয় সেন্ট্রাল জেলে। সূচিত হয় পৃথিবীর ইতিহাসে আরেকটি জঘন্যতম হত্যাকান্ড “জেল হত্যাকান্ড”
চলবে…
রেফারেন্সঃ ১.তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা, লেঃকর্ণেল এম,এ,হামিদ
২.ইন্টারনেট
মারদাঙ্গা পোস্ট ভাই! এটা ব্যাপক হারে শেয়ার হওয়া প্রয়োজন। :boss:
@ নাফিস,
কেন এইটাকে মারদাঙ্গা পোষ্ট মনে হল, সেইটা কি একটু বিস্তারিত বলা যাবে? 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভুল শব্দের প্রয়োগ। 🙁 "মারদাঙ্গা" শব্দ টাকে হয়তো "তথ্যবহুল" শব্দ দিয়ে রিপ্লেস করা যেতে পারে। আসলে ভাই বিশেষণ টা কোনো কিছু না ভেবেই দিয়েছি। এই দোষ ক্রুটি গুলো কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি।
@ নাফিস,
দোষ-ত্রুটি নয়, জানতে চাইছিলাম কি কি কারণে তোমার কাছে এই ব্লগটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে, সেইটা। তোমার শব্দ দিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম বলে মনে হয়ে থাকতে পারে যে, ভুল/দোষ উল্লেখ করেছি। আসলে, আমিও তোমার মত করে দেখতে চাইছিলাম। তুমি সেটা প্রতি উত্তরে 'গুরুত্বপূর্ণ তথ্য' বলে পরিস্কার করে বলে দিয়েছো। 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আসলে ৭৫ এর সেই দিনগুলির ইতিহাস আমাদের প্রজন্মের কাছে অনেকটা ধোয়াশার মতো ! রাজনৈতিক মতাদর্শের ভেদাভেদ ভুলে ঐ উত্তাল সময়ের সঠিক ইতিহাস টা আমাদের সবারই জানা উচিত।
ঐ সময়ের কাহিনীগুলা আসলেই অনেক জটিল। অনেক অনেক কাহিনীর ভিতর দিয়ে গেছে সময়গুলা
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
বানান ভুল আছে দেখলাম। খালেদের জায়গায় ভুলে দ পড়ে নাই। চেক কর আবার।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ঠিক করে দিতেছি 🙂
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
অপেক্ষায় রইলাম...
জীবনটাই তো অপেক্ষার 😉
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
:boss: :boss:
লেখা ভালো হইছে। ২য় খন্ড তাড়াতাড়ি চাই। আর কর্নেল তাহেরের ভুমিকাটা ভালোভাবে লেখিস। কর্নেল তাহেরের পুরো জীবনের সাথে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ হত্যা সংক্রান্ত অংশটা পুরোপুরি বেমানান।
ব্যাক্তিগত ভাবে আমি তাহের ও খালেদ মোশাররফ ২ জনকেই শ্রদ্ধা করি। খালেদ মোশাররফ এক জায়গায় ইউনিক। ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সে যেভাবে এটার প্রতিবাদ করছে আর কেউ করেনি। ::salute:: ::salute::
ছোট হাতি
কর্নেল তাহের বিপ্লবী। কিন্তু মন থেকে শ্রদ্ধার ব্যাপারটা আসে না। কারণ জিয়াকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য " সিপাহী- জনতা বিপ্লবের" স্লোগান ছিল,' সিপাহী সিপাহী ভাই ভাই,অফিসারের রক্ত চাই'।
সেদিন রাতে রাস্তাঘাটে কুকুর বেড়ালের মতো অফিসারদের হত্যা করা হয়। বেশিরভাগই নিরীহ জুনিয়র অফিসার। তাহের সৈনিকদের মনে সকল অফিসারদের প্রতি ঘৃণা ভরে দেন। উদ্দেশ্য যদিও ছিল জিয়াকে মুক্ত করা এবং কম্যুনিজম প্রতিষ্ঠা করা, কিন্তু এর মূল্য দিয়েছিল অনেক সাধারণ অফিসার তাদের প্রাণ দিয়ে। পিলখানায় যেমন চরম অপমানের সাথে মৃত্যু বরণ করতে হয় অফিসারদের, ওইদিনও ঠিক তাই ঘটেছিল। ৭ই নভেম্বর। দিবস যে বই থেকে তথ্যগুলো দিল ঠিক সেই বই থেকেই তথ্যগুলো দিলাম।
Prisoner of Own Mind
একটাই তো জীবন , তাই জীবন যেখানে যেমন -- Life is Beautiful .
তুষার, তাহের বিপ্লবী এবং একজন বড় মাপের মুক্তিযোদ্ধা। তবে তার সম্পর্কে মহিউদ্দিন যা বলল তার সাথে আমি পুরোপুরি একমত। ০৭ নভেম্বরের অফিসার হত্যার দায় তাহের এড়াতে পারে না। এবং এর আগে থেকে ক্যান্টনমেন্টের ভিতর লিফলেট বিলি করা, খালেদ মোশাররফকে ভারতের চর হিসেবে সৈনিকদের মিথ্যা পরিচয় করিয়ে দেওয়া এসব কোন কিছুরই দায় তাহের এড়াতে পারে না।
আর ০৩ নভেম্বরের খালেদ শাফায়েত এর অভ্যুত্থান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ছিল না মূলত। ব্যবস্থা নেয়ার মত হলে ১৫ ই আগস্টেই তারা ব্যবস্থা নিতে পারতেন। অথচ ঐদিন খালেদ-শাফায়েত কাউকেই বিমর্ষ দেখা যায় নাই। ৪৬ ব্রিগেড কমান্ডার শাফায়েত জামিল পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন। প্রেসিডেন্টের বাসায় হামলার খবর পেয়েও তিনি তার এই বিশাল বাহিনীকে কোন কাজে লাগাননি। মেজর রশীদ ছিল তার অধিনস্ত একটি ইউনিটের কমান্ডার। বঙ্গবন্ধুকে খুন করে রশীদ নিজে আসে শাফায়েত এর কাছে এবং বলে Sir We Have Killed Sheikh. ভোরবেলায় যে ট্যাঙ্কগুলা মুভ করে সেগুলা তারই ৪৬ ব্রিগেডের ভিতর দিয়ে মুভ করে এবং শাফায়েতের বাসার পিছন দিয়ে।
তাই এটা ভাবা ভুল হবে যে ০৩ তারিখের অভ্যুত্থান ১৫ই আগস্টের প্রতিশোধ হিসেবে ঘটানো হইছিল।
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
হুমায়ূন আহমেদের দেয়াল উপন্যাসেও খালেদ মোশারফফের গল্প বীরত্বের প্রতিফলন, খুনি মেজরদের পা চাটা সিনিয়র সেনা অফিসারদের জন্য ধিক্কার।
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
:thumbup:
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় রইলাম... ::salute:: ::salute:: ::salute::
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
২য় পর্ব চলে আসতেছে 🙂
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
:thumbup:
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
🙂
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
ভাল হইছে লেখা ভাই :thumbup:
🙂
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
ভাই এই ব্যাপার গুলোতে আমি মোটে ই ক্লিয়ার না। একটু ডিটেইলস চাই। এতোটুকু তে মন ভরতেছে না। নেক্সট পার্টের অপেক্ষায় আছি। 🙂 🙂
আচ্ছা আরো ডিটেইল দেওয়ার চেষ্টা করব। নেক্সট পার্ট অন দ্যা ওয়ে 😉
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
পড়ে দেখতে পারো।
ধন্যবাদ সাল্লু ভাই। সময় করে পড়ে নিব।
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
:duel:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
রাজীব ভাই, খালি শর্টকার্ট মারেন। ইসমাইলরে কি এমনি এমনি বাদ দিতে চাইছিল জিহাদ ভাই!!!
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
অনেক সময় মোবাইলে থাকি তাই চাইলেও বাংলায় কমেন্ট করা হয়ে ওঠে না.
সিসিবি আইন রে সম্মান দেখাইয়া ইংরেজিতেও দিতে পারি না. তাই ইমো দিয়া কাজ চালাতে হয়.
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
🙂 🙂 🙂
আমিও ইসমাইল দিয়া গেলাম 😀
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
If possible go through this book , u'll have most of your answers .
The copy I had was been stolen by one of Madam Zia's aid i 1998 .
as far i know the book was ban in our country for long time.
http://books.google.com.bd/books?id=0zYmAAAAMAAJ&redir_esc=y
একটাই তো জীবন , তাই জীবন যেখানে যেমন -- Life is Beautiful .
ধন্যবাদ ভাইয়া। সময় করে পড়ব।
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
তথ্যবহুল লেখা। দ্বিতীয় পর্বে আরেকটু ডিটেলে লিখ। মূল ইতিহাসকে ঠিক রেখে সঠিক তথ্য পাঠকের পাছে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটা কঠিন। আশা করবো, সেটা ভালমতই করবে তুমি।
অফটপিকঃ কর্নেল হামিদের আত্মজীবনী ধরণের একটা বই আছে। বাংলার জেনারলেদের নিয়ে উনার কিছু বিশ্লেষণ ভাল লেগেছে। বইটাতে লেঃজে এরশাদকে নিয়ে মজার কিন্তু সত্য কিছু তথ্য আছে। বি ও এ সভাপতি থাকা অবস্থায় তার দিনরাত্রি নিয়ে।
সময় হলে পড়ে দেখ।
ধন্যবাদ সিদ্দিক ভাই,ডিটেইল লেখার চেষ্টা করব। দেখি কতদূর পারা যায়।
বইটার নাম বইলেন, পড়ব আশা করি।
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
ইতিহাস লেখা অনেক কঠিন একটা কাজ... আর বাংলাদেশ এর এই সময়ের ইতিহাস লেখা টা আরও কঠিন... শুধু একটা বই পরে লিখলে তুমি বায়াসড হয়ে যাবে... এই রকম একটা সেন্সিতিভ বিষয়ে তোমার আরও শিওর হয়ে লেখা উচিৎ... আর একটু গুছিয়ে লিখলে ভালো হয়...।। যা হোক... ভালো প্রচেষ্টা।