“কোথায় পাবো তাদের – ২” ব্লগ টা পড়তে পড়তে কলেজ এর দুই-একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। সব কলেজেই এই ধরনের কেউ না কেউ থাকে যারা যৌন সুড়সুড়ি মুলক কথা গুলো খুব রসালো করে ক্যাডেট দের সামনে পেশ করে। আমরা খালি ঘুরে ফিরে সেই কথাই শুনতে চাইতাম স্যারদের কাছে। আমরা কলেজ এ দুই জন ইসলামীয়াত এর স্যার পাইছি। তারা দুজন নিজ নিজ
গুনে গুনান্বীত। বিল্লাহ্ স্যার তার নাম অতি শুদ্ধ করে উচ্চারনে “বিল্লাহ্” এর চেয়ে “বিল্হা” বলাটাই বেশি সাচ্ছন্দ বোধ করতেন।তার ভাষায় তারা দুই জন “একই বৃন্তে দুটি ফুল”। এদের দুই জনের কথাই আজকে বলব।
আব্দুল কাবীর স্যার, নিতান্তই ভাল মানুষ। কারও আগে পিছে নাই, অন্যান্য স্যারদের মত ক্রিটিকাল পলিটিক্সও করেনা। অনেকে তাকে কবীর স্যার বলতেন, কিন্তু তিনি শুদ্ধ করে দিতেন “কবীর” না “কাবীর” হবে। যাইহোক ক্লাস সেভেন থেকে স্যার আমাদের
ইসলামীয়াত পড়ান। প্রায়ই পড়ার মধ্যে ধর্ষণ, জেনা, ব্যভিচার, নারী, কামনা-বাসনা এই শব্দ গুলো চলে আস্ত। আর এগুলো শুনলেই সবাই নড়ে-চড়ে বসতাম। অপেক্ষা করতাম স্যার এই বিষয়ে আর কিছু বলে কিনা শুনার জন্য। কিন্তু স্যার ২/১ লাইন বলে অন্য প্রসংগে চলে যেত। আর আমরা অতৃপ্ত মন নিয়ে আফসোস করতাম ইস্ স্যার যদি আরেকটু কিছু বলত??
ক্লাস এইটে উঠার পর আমাদের মধ্যে একজন সাহস করে স্যার কে জিজ্ঞাস করে ফেলল স্যার ধর্ষণ, জেনা, ব্যভিচার এগুলা কি? এই সর্ম্পকে কিছু বলেন। স্যার প্রসংগ বদলানর জন্য বললেন অন্য একদিন বলবেন। ব্যাস্ আমরা সাহস পেয়ে গেলাম। এরপর থেকে স্যার এর ক্লাস হলেই কেউ না কেউ জিজ্ঞাস করত স্যার আজকে বলেন। আর স্যারের উত্তর আজ না কাল। শেষ-মেষ স্যার বিরক্ত হয়ে বললেন তোমরা বড় হও তারপর বলব। ক্লাস নাইনে ওঠার পর স্যারকে ধরলাম এখন আমরা বড় হয়েছি বলতে পারেন। আসলে আমাদের ইচ্ছা স্যার কিভাবে বর্ণনা করে সেটা শুনা। কিন্তু তাও স্যার রাজী হলেন না। স্যার রাজী না বলে আমাদের মনের আগ্রহ আরো প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছিল। ক্লাস টেনে উঠে গেলাম। চার বছর ধরে অপেক্ষা। একদিন ক্লাসের সবাই মিলে ধরলাম আজকে কিছু বলতেই হবে। স্যার আমাদের দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসে, আমরা মনে মনে প্রস্তুত গরম গরম কিছু রসালো কথা শুনবার জন্য। স্যারের বাঁকা হাসি আমাদের মনের আকাঙ্খা আরো শত গুন বাড়িয়ে দিল।স্যার হাসি বন্ধ করে সহজ, স্বাভাবিক উত্তর
-কোন কিছু শক্ত করে ধরা কে ধর্ষণ বলে। এইযে আমি এই ডাষ্টার কে শক্ত করে ধরে আছি এটা এক প্রকার ধর্ষণ।
জনৈক ক্যাডেটের প্রশ্ন,
– স্যার গত কাল অমুক J.P.আমার শার্টের কলার চেপে ধরছিল এটা কি তাহলে ধর্ষণ?
– অবশ্যই।
আমরা হতাশ কিন্তু পেট ফাটান হাসি চেপে রেখে ক্লাস শেষ করলাম। স্যার ক্লাস থেকে বের হবার সাথে সাথে যে যাকে পারে ধর্ষণ শুরু করলাম (অবশ্যই স্যারের ভাষ্য মতে ধর্ষণ)।
বিল্লাহ্ স্যারের একটা ছোট কাহিনী বলে ব্লগটা শেষ করি। আমরা তখন নাইন অথবা টেনে পড়ি। স্যার ক্লাসে এসে জিজ্ঞাস করা শুরু করল কোন টেলিভিশন ভাল আর কোন টা খারাপ। সবার মতামত নিচ্ছে।
– স্যার TV কিনবেন নাকি?
– সব স্যারের বাসায় আছে আমার বাসায় না থাকলে কেমন দেখা যায়?
– স্যার TV তে কি দেখবেন?
– দেশ-বিদেশের খবর দেখব।
স্যার কথা ঘুরিয়ে অন্য দিকে যায় আর আমরা আবার ঘুরে ফিরে আসি TV তে কি কি দেখা যায় সেই প্রসঙ্গে।
– স্যার ডিশের লাইন নিবেন?
– ডিশের লাইন নেয়ার কোন ইচ্ছা নাই,কিন্তু ক্যাম্পাসে সব বাসায় ডিশ সংযোগ দেওয়া আছে বিনামূল্যে (কলেজের নিজেস্ব ডিশ)।তাই বাধ্য হয়ে নিতে হবে।
– স্যার ডিশে কি দেখবেন?
– ডিচ্কোভারী (স্যারের ভাষায় “ডিস্কভারী” চ্যানেল)
– স্যার আমরা শুনছি ডিশে অনেক খারাপ খারাপ জিনিস দেখায়, ওই সব দেখা তো হারাম।
– হ্যাঁ ও সব দেখা ঠিক না, তবে তোমরা এই সব কিছু দেখার সময় মনে মনে বলবে ছিঃ ছিঃ এগুলো দেখা ঠিক না, এগুলো অশ্লীল লোকের কাজ।
এখনো স্যারের সেই কথা মনে করি আর হাসি।
বিলহা স্যারের লাস্ট ডায়ালগটা তো জটিল। লেখাটা পড়ে এই দুই ব্যাটার অনেক কাহিনী মনে পড়ে গেলো...
আর দেখেন বিলহা স্যার ডিচকভারীতে কি দেখে...
রায়হানতো দারুন দারুন smiley দিতে জান! তোমার কাছে এই বিষয়ে একটা ক্লাস নিতে হবে। 😉
;)) দুই কাহিনীই জটিল। মজা পাইসি।
তয় ভাইজান, এই ধরণের কাহিনীতে স্যারদের নাম একটু ঢেকেঢুকে লিখলেই ভাল হয়। কবে দেখা যাবে ঐ স্যার নিজে এসে ব্লগে কমেন্ট দিয়ে গ্যাসে!!
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
নাম ঢেকেঢুকেই লিখতে চাইছিলাম। but কোন ফাঁক দিয়া যে বের হইয়া গেল টের পাই নাই 🙁
ভবিষ্যতে খেয়াল রাখব। লেখাটা পড়ে মজা লাগছে শুনে ভাল লাগল।
Aaay Khoda......class 12 e thakte amar favorite punishment chilo choto khato juniyorderke shirt er collar dhore shunne tule fela.....ami ki eto din taile na jaina taderke "D..orshon" korsi?????
Jail Jorimana to asei Fashi, Dipantor o hoite pare.....
ব্রাদার mashroof, তুমি তো না জেনে করছ, কিন্তু আমরা স্যারের বলা "ধর্ষণ" এর ওই সংগা অনুযায়ী নিয়মিত যে যারে পারে উপর্যুপরি,,,,,
লাস্ট ডায়ালগটা তো জটিল
@মাসরুফ ভাই...না জেনে কিছু করলে কোন পানিশমেন্ট নাই আশা করি...:d
আপনাদের ধৈর্য আছে বলা যায়, চার বছর ধরে অপেক্ষা করেছেন।
এর চেয়ে আমাদের কলেজে চলে এলেই পারতেন, আমাদের ঈমাম হুজুর প্রত্যেক কুরআন ক্লাশে একবার করে সামাজিক অবক্ষয় নিয়া রক্ত উত্তপ্ত করা লেকচার দিতেন!
ধৈর্য ছিল বটে। কিন্তু আমাদের প্রধান আকর্ষণ ছিল স্যার কিভাবে বর্নণা করে সেটা শোনা। সমস্যা হলো আমরা যেভাবে আশা করছিলাম স্যার তার আশেপাশে দিয়েও যায় নাই 🙁
স্যার ক্লাস থেকে বের হবার সাথে সাথে যে যাকে পারে ধর্ষণ শুরু করলাম....
বেশ মজা পাইলাম।
ধন্যবাদ!
লেখা পড়ে কেউ মজা পাইছে শুনলে নতুন নতুন কাহিনী লেখার ইচ্ছা জাগে।
আবার লিখব। (যখন সময় পাবো)
রচনা পড়তে ছিলাম। "একটি বর্ষণমুখর রাত্রি"। পাশে রিয়াসাত বলল, দোস, "ব" এর জায়গায় "ধ" লাগায়া পড়। আমি পড়ে আর হাসি থামাতে পারি নি। ক্লাসে স্যার ঢোকার পরেও থামতে পারলাম না। ফলাফলঃ করিডোরে নীল ডাউন হয়ে কানে ধরে দাড়িয়ে থাকা পুরো চল্লিশ মিনিট। তখনো দাঁতে দাঁতে চেপে হাসছিলাম। 😀
একই কাজ কয়েকদিন আগেও করলাম, একটুও হাসি আসে নাই। 🙁
মন খারাপ কইরো না ব্রাদার,
সময় এবং পরিবেশ মানুষেকে অনেক চেঞ্জ করে দেয়।
কোন এক সময় আমার ইচ্ছা ছিল বড় হলে রিমট কন্ট্রোল গাড়ি কিনব আর সারা দিন খেলব।
মাঝে মাঝে দোকানে গেল বড়, সুন্দর কোন রিমট কন্ট্রোল গাড়ি দেখলে তাকিয়ে থাকি আর একা একা হাসি। মাঝে মধ্যে ধরে দেখতে ইচ্ছা হয় কিন্তু আশে পাশের মানুষ কি বলবে চিন্তা করেতেই ইচ্ছা টা উবে যায়।
নাইনের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে "ঘর্ষণের" যে সংজ্ঞাটা ছিলো, আমরা সেটাকে
ঘ'র জায়গায় 'ধ' দিয়ে প্রতিস্থাপিত করতাম। অবাক লাগত যে, উভয়ের সংজ্ঞা-বৈশিষ্ট্য হুবহু মিলে যেতো।
আবার জিগায়...
নাইনের বই আছে কারো কাছে?
জিহাদ, ওই একটা ক্লাস নাইন পাঠা তো আমার রুমে। ডাবল আপ কইরা আইতে কইবি। লগে জানি ফিজিক্স বৈ থাকে।
হা হা! মজা পাইলাম।
আমরা যখন এইটে ছিলাম তখন এক ছেলে ইস্লামিয়াতের স্যরকে জিজ্ঞাসা করেছিল স্বপ্নদোষ কি? স্যরের যেই চেহারা হইছিল তখন! 🙂
কমেন্টটা বাজে মনে হলে মুছে দিয়েন। 🙁
হায়রে ভদ্রতা... 🙂
হি হি! 😀
এইখানে কে কারে ধর্ষণ করছে তা নিয়া আলাপ হইতাছে আর তুমি মিয়া স্বপ্নদোষের কথা কইয়া লজ্জা পাইতাছো???
স্যারের চেহারা কেমন হইছিল সেইটা নিয়া একটা ব্লগ লিখা পোষ্ট কইরা দেও,,, মজা টা আমরাও একটু শেয়ার করি।
হা হা! ভাল কইছেন। 😛
এইখানে নতুন তো, তাই শরম পাইচিলাম একটু! এই আর কি! B-)
মজা পাইছি =))
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
শালার দুনিয়া! ভদ্রলোকের দাম নাই! 🙁
কিন্ত মরা হাতি লাখ টাকা, এইডা কিমুন বিচার?
মাইনাচ
sabbir ... amake akta phone dis ... important kotha ache
পড়তে পড়তে আমারও একটা ঘটনা মনে পড়ে গেলো- আমাদের কলেজে ইসলামিয়াত এর টিচার ছিলেন হাদীউল স্যার(এখনো আছেন)। একদিন ক্লাসে আমাদের শাহরিয়ার স্যারকে জিজ্ঞেস করলো- "স্যার, আপনি কি ফাজিল পাস করেছেন?"। আর যায় কোথায়- ডাষ্টার দিয়ে শাহরিয়ার এর পিঠের বারোটা বাজিয়েছিলেন স্যার। এখনো মনে হলে হাসি পাই। কিন্তু স্যারের পছন্দের আরেকটা শাস্তি ছিল রীতিমত ভয়াবহ- চাবির রিং এর ২টা চাবি দুই দিক দিয়ে কান চেপে ধরা...উফ, আমাদের নাঈমের কান থেকে রক্ত বের করে ফেলেছিল!!!