ইতিহাস কিভাবে রচিত হয়? কিভাবে তৈরি হয় তার ঘটনা প্রবাহ? যুগ যুগ ধরে কি শুধু মাত্র রাজা-রাজরা,রাজনীতিবিদ কিংবা অতিমানবদের হাতেই ইতিহাস তৈরি হয়? নাহ, ইতিহাস শুধু অতিমানবদের হাতে তৈরি হয় না। এটা তৈরি হতে পারে অতি সাধারণ কিছু মানুষের হাতেও তাদের ইচ্ছে শক্তির জোরে। আর তাই একজন জননী, শিক্ষক, স্ত্রী জাহানারা ইমাম তার সব পরিচয় ছাপিয়ে আমাদের কাছে একসময় পরিণত হন এক প্রতীকে, পরিণত হন উলটা স্রোতের যাত্রীদের এক কঠিন দৃষ্টান্তে।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের উপর লিখিত বই গুলোর মধ্যে সম্ভবত সর্বাধিক পঠিত বই হচ্ছে “একাত্তরের দিনগুলি”। ক্লাস এইটে এই বই পড়ার সময় সাধারণ এক নাগরিকের দৃষ্টীভঙ্গী থেকে লেখা এই দিনলিপির মাঝ দিয়ে যেন ঢুকে পড়েছিলাম উত্তাল সেই একাত্তরের ঢাকায়। ইয়াহিয়ার এসেম্বীলী স্থগিত করার ঘোষণার সাথে সাথে ঢাকা স্টেডিয়ামের ক্রিকেট খেলা থামিয়ে ঢাকার রাস্তায় নেমে আসা হাজার-হাজার জনতার সাথে যেন আমিও ছিলাম যেমন ছিল রুমী আর তার বন্ধুরা। এখনো যেন আমি দেখতে পাই রুমী আর তার বন্ধুরা মা কে গল্প বলছে কিভাবে স্টেনগানের গুলিতে তারা উলটে দিয়েছে হানাদার ট্রাক। ছোট ছোট নোটে সেইখানে উঠে আসা জাহানারা ইমামের সন্তানের জন্য আকুতি যেন আমাদের যে কার মায়ের চিরন্তন আকুতি। আসলে সেই বয়সে আমার মনের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের যেই জলছবি এঁকে দিয়েছিল একাত্তরের দিনগুলি তা হয়ত ম্লান হনে না আজীবন।
একাত্তর পরবর্তী সেই সময়টা ছিল আমাদের চেতনার জন্য এক গাঢ অন্ধকার কাল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গুলো তখন গভীর হতাশায় নিমজ্জিত। একাত্তরের পরাজিত রাজাকার বাহিনি আস্তে আস্তে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে আমাদেরই দেশে কখন আমাদের রাষ্ট্র যন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় কখন আমাদের ভুল কৌশলের কারণে। ক্ষমতার কেন্দ্রে অবস্থান শক্ত করতে শাসকরা আস্থা রাখছেন এইসব শকুনদের উপর। সেই সময় এর বিরুদ্ধে বড় কোন সংঘটিত প্রতিবাদ কিন্তু আসেনি আমাদের কোন রাজনৈতিক দল থেকে বরং এসেছিল এক সাধারণ মা’র কাছ থেকে যিনি কিনা একাত্তরে হারিয়েছেন তার সন্তান কে। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছিল ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। সারাদেশ ব্যাপী এর কার্যক্রম প্রমাণ করেছিল কোনদিকে ছিল সেইদিন সাধারণ জনমত, বসেছিল গণ-আদালত। সেইখান থেকেই উঠেছিল ১০১জন ঘাতক-দালালের বিচারের দাবি।
কিন্তু হায় সব সম্ভবের এই বাংলাদেশ, তোমার মাটিতেই তোমার জন্মের বিরধীতাকারী গোলাম আজম হয়ে যায় এক সম্মানিত নাগরিক আর শহীদ জননী জাহানার ইমাম হয়ে যায় রাষ্ট্র যন্ত্রের চোখে এক রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধী। তবু উলটা স্রোতে দাড়িয়ে ক্যান্সারে মৃত্যুর মুখেও তিনি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি বলে যান- জয় আমাদের সুনিশ্চিত। তাই আপনার মৃত্যুদিনে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, জাতির এক নগন্য যুবক হিসেবে আমিও বলতে চাই- সত্যের বিজয় হবেই। বাংলার মাটিতে ঘাতক-দালালদের বিচার একদিন হবে নিশ্চয়ই।
B-)
জাহানারা ইমাম :boss: :salute:
:salute: :salute:
সত্যের জয় হবেই মাঝে মাঝে একটু দেরী হয় । :salute:
মা তোমাকে শ্রদ্ধা ।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
:salute: :salute: :salute:
শ্রদ্ধা...
:thumbup: :thumbup:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
মঝে মাঝে ভেতর থেকে ধিক্কার আসে। এমন দেশের সন্তান আমি যেখানে জাহানারা ইমামকে রাষ্ট্রদ্রোহী হতে হয়। ছি! ধিক আমাদের রাজনীতি, ধিক আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র। তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল সেই সময় কি করেছিল জানতে খুব ইচ্ছা করে। অন্যরা কি করবে সেটা আর জানতে কারো বাকি নেই।
Aj or kal, bichar hobei. :salute: ma.
:clap: :clap: :clap:
মা তোমাকে :salute:
বাংলার মাটিতে ঘাতক-দালালদের বিচার একদিন হবে নিশ্চয়ই।
৭১'এর ঘাতকদের বিচার এর সাথে সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্পনার দেশ গড়ার কাজ যেন করে সবাই।এখন তো তাদের নিয়ে একটা ব্যাবসা গড়ে উঠতেছে।শুধু কিছু বিশেষ বিশেষ দিনেই তাদের মনে করা হয়।সেদিন তাদের কথা খুব বলা হয় আর বছরে বাকি দিনগুলাতে তাদের কোনো খবর নাই।
আমরা তাদের নামে মনুমেন্ট বানাই কত টাকা খরচ করে অথচ কত শত মুক্তি আজ রিকশা চালায়!তাদের পেটে ভাত থাকে না।পেটে ভাত না থাকলে মনুমেন্ট বানায়া লাভ কি?রাজনীতিবীদরা march,december মাসে ৭১'এর কথা বলেতে বলতে মুখ ব্যাথা করে ফেলায় অথচ আসল কাজের কোনো খবর নাই!
আমাদের দেশের সবাইকে এখন থেকেই দেশের কাজে নিয়োজিত হতে হবে।আমরা তো এখন খালি ছোটো খাটো বিষয় নিয়া নিজেরা নিজেরাই কোপাকুপি করে।একদিন religion নিয়া,আরেকদিন অমুক নিয়া।এইসব বাজে কাজে মাথাটারে না খাটায়া দেশের agriculture,finance নিয়া চিন্তা করলেও ভাল কিছু বাইর হয় মাথা থেইকা।
আর আমি খুব কম বুঝি।তবে আমার কাছে সবসময় মনে হয়েছে আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল war criminal দের বিনা বিচারে মাফ করে দেয়া।এর মাশুল অনেক দিক দিয়েই এখন আমাদের দিতে হচ্ছে।সাম্নেও মনে হ্য় দিতে হবে।
@ মন্ঞ্জুর:
যুদ্ধাপরাধীদের বিনা বিচারে মাফ করার থেকেও বড় ভুল ছিল তাদের পুনরায় পুনর্বাসন করা...........
আর আলাদা করে আমি বলব, জামাত-শিবির গুলোকে ওপেন ব্রাশ ফায়ার করে মেরে না ফেলাটাও আমাদের একটা বড় ভুল.......
🙂
শহীদ জননীর প্রতি শ্রদ্ধা।
যুদ্ধাপরাধী অমানুষগুলোর ফাঁসি চাই।
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
মা তোমায় সালাম :salute: :salute:
ক্লাস এইটে হসপিটালের জেনারেল ওয়ার্ডে শুয়ে শুয়ে "একাত্তরের দিনগুলি" পড়া শেষ করে পরবর্তী কয়েক মিনিট আমি অঝোরে কেঁদেছি।
বিচার হবেই। হতেই হবে। শহীদ জননীর প্রতি শ্রদ্ধা।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
শহীদ জননীর প্রতি রইল ভালবাসা মেশানো শ্রদ্ধা।
উনার একাত্তরের দিনগুলি পড়ার পর আমি ক্রিকেটে পাকিস্তানকে আর কখনই সাপোর্ট করতে পারিনি।