আগের পর্ব গুলির জন্য এখানে দেখুন।
৯
এখন বিকাল ৫’টা বাজে। আকাশ অফিস থেকে বাড়ী ফিরছে।
আজ দাদী’র আসার কথা। ওনার শরীরটা ক’দিন ধরে ভাল যাচ্ছে না। আকাশের বিয়ে’র কথা চলছে -জানতে পেরেই তিনি একদম অস্থির হয়ে উঠলেন ঢাকা আসবার জন্য। দাদীকে আনবার জন্য সকালে একটা মাইক্রোবাস পাঠানো হয়েছিল টাঙ্গাইলে।
আকাশ বাড়ীতে ঢুকেই বুঝতে পারে, পুরা বাড়ীতে একদম উৎসবের আমেজ চলে এসেছে। বসার ঘরে রীতিমত আসর জমেছে। :party:
দাদীকে দেখে আকাশ কাছে এসে পা ছুঁয়ে সালাম করলো।
– হুম্ম মাথা উঁচু করে।
( সালাম করার সময় মাথা নীচু রাখলে দাদী খুব রেগে যান।)
– তা বেশ। বেশ। আমদের আকাশে’র তো দেখি সত্যি বিয়ের ফুল ফুটেছে। কিন্তু দাদু ভাই আমায় ছাড়া সব্বাই বিবি সাহেবকে দেখে ফেলেছো। এখন ভাই আমাকে আমার বোনটাকে একটু দেখাবি না?
একটানে অনেক ক্ষন কথা বলায় ওনার কাশি শুরু হয়ে গেল। আজকাল তার হাঁপানীটাও বেড়েছে।
আকাশের বাবা বললেন, ‘মা আপনি অস্থির হবেন না। আপনার নাত বৌ’কে দেখানোর ব্যবস্থা আমি করব’।’
আকাশ কাপড় ছাড়ার কথা বলে নিজের রুমে চলে আসলো। সমস্ত ব্যাপারটা তার জানা, তবুও অস্বস্তিবোধটা কাটেনি পুরাপুরি। এ যে সম্পূর্ণ নতুন এক অধ্যায় ! সহজ হতে সময় লাগছে।
রাতে খাবার টেবিলে জানা গেল, কাল ঐ বাড়ী থেকে মুরুব্বীরা আসবেন দিনক্ষন পাকাপাকি করবার জন্য। দাদী এসে সবার মধ্যে দারুন একটা গতি এনে দিয়েছেন।
খাওয়া শেষে বাবা আকাশ’কে ডেকে নিয়ে বারান্দায় গেলেন। তাকে বেশ উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে। তিনি বললেন, তোমার দাদুর শরীরটা বেশী ভাল না। ডাক্তার বলেছেন নড়াচড়া কম করতে। কিন্তু কে শোনে কার কথা ! চলে আসলেন এতটা পথ। ইদানীং এমন ছেলেমানুষী করেন যে বড় মায়া লাগে। আমাকে এসেই কয়েকবার বলে ফেলেছেন যে, ‘ বাবা। আমার বুঝি ডাক এসে যাবে। তোর বাবা কে দেখলাম সেদিন। আকাশে’র বিয়েটা একটু জলদি করে দিয়ে ফেলো বাবা।‘
আকাশ কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়লো।
মানুষ কেমন করে যে বুড়িয়ে যায় ? আশ্চর্য ! এখনও চোখে ভাসে ঐ দিনের ঘটনাটা-
…ম্যাচ নিয়ে দুষ্টামি করার জন্য দাদী কঞ্চি হাতে ওর পিছে পিছে দৌঁড়িয়েছিলেন এক তালা দোতালা’র সিড়ি ভেঙ্গে ভেঙ্গে…। পরে এক সময় ক্লান্ত হয়ে গেলে চেচিঁয়ে বলেছিলেন, ‘কি বাসায় আসা লাগবে না? আইসো তখন…।’
আহ! এইতো সেদিনের কথা মনে হয়।
– হুম্ম। দীর্ঘশ্বাস বেরুলো বাপ-বেটা’র প্রায় এক সাথেই।
পরের দিন আকাশের বাসায় সব মুরুব্বীরা বসলেন। ভেন্যু গুলো সবাই তাদের বাসার কাছে ধারেই পছন্দ করলেন । এছাড়া কাবিন সংক্রান্ত আরও কিছু গম্ভীর কথাবার্তা চললো। তাদের প্রানবন্ত আলোচনার সারাংশ হচ্ছে অনেকটা এ রকম – মেয়ের হলুদ আর ছেলের হলুদ ২৩ আর ২৪ মার্চঃ রাওয়া ক্লাব, বিয়ে ২৬ মার্চঃ ফ্যালকন হল আর বৌভাত ২৮ মার্চঃ সেনাকুঞ্জ । সবই আল্লাহর ভরসায়।
আকাশের মা’র হাতে এখনও দু’সপ্তাহ রয়েছে। তবে তা একমাত্র ছেলের বিয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। আর তাই, তিনি কালবিলম্ব না করে পর দিন হতেই তার বান্ধবীকে নিয়ে সাঁড়াশি অভিযানে নেমে পড়লেন। তার বৌ মা’র জন্য সব আন্কমন আর সুন্দর জিনিষ গুলো তার চাই। ভেবেছিলেন কত ধুমধাম করে ছেলের বিয়ে দেবেন। এখন যে অবস্থা ! যাই হোক, তাই বলে তিনি দমে যাওয়ার মানুষ নন।
…পাঁচ দিনেই হৈ চৈ-বাসা-বাজার-শপিং মল ঘোরাঘুরি করে মোটামুটি তিনি সব কাজ গুছিয়ে ফেললেন। ঐ দিকে কার্ড ছাপানো আর দাওয়াতের ভার পড়লো আকাশ আর ওর বাবার। নিঁখুত টীম ওয়ার্কে সব কাজ পরিমিত ভাবে এগিয়ে চললো।
:thumbup:
আকাশের একুশ দিনের ছুটি মঞ্জুর হয়েছে। আগামী কাল ব্যাচেলর হিসেবে তার শেষ অফিস। এই খুশীতে হাল্কা একটা ব্যাচেলর পার্টিরও আয়োজন করা হবে।
অফিসের হীরা ভাইয়ের মতে, বিয়ের আগে আগে এই সময়টাই নাকি জীবনের সবচেয়ে মধুর! তাই কোন রাতই অপচয় করা ঠিক নয়। এই মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েই হয়তো রাতে খাওয়ার পর আকাশ নীলিমাকে ফোন করলো। টুকটাক আলাপ গড়ালো। এক পর্যায়ে নীলিমা আকাশকে একটা কবিতা শোনাতে বললো। তখন একটা শর্ত দেয়া হলো এই মর্মে যে নীলিমা যদি গান শোনায় তবে আকাশ কবিতা শোনাবে। প্রেমের জোয়ারে ভাসমান দুই বান্দাই চুক্তি পত্রে সাগ্রহে স্বাক্ষর করে দিল।
নীলিমা রবীন্দ্র সঙ্গীত করলো একটা। অপূর্ব দরদ ওর গলায়। আর আজ তা যেন পূর্নিমার জোয়ারে একেবারে ফুলে ফেঁপে রাতের নিস্তব্ধতাকে বিমূর্ত করে তুললো। গানটাও আকাশের প্রিয় গান গুলোর একটি-
‘আমারও পরাণ যাহা চায়-
তুমি তাই তুমি তাই গো।
আমারও পরাণ যাহা চায়-
তোমা ছাড়া আর এ জগতে
মোর কেহ নাই কিছু নাই গো
আমারও পরাণ যাহা চায়…।‘
আকাশ মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছিলো নীলিমার গান। শেষ হলে ছোট্ট করে খালি বললো- ‘অসাধারন’’।
– শুধু বাহবা দিলে পার পাওয়া যাবে না মশাই। কবিতা কই?
এত সুন্দর গান শোনার পর আর কোন কথা চলেনা। তাই আকাশ গুড বয়ের মত তার পছন্দের একটা কবিতা শুরু করলো। সৈয়দ শামসুল হকে’র ‘পরাণের গহীন ভিতর’ এর একটি কবিতা-
‘সে কোন বাটিতে কও দিয়া এমন চুমুক-
নীল হয়া গ্যাছে ঠোঁট, হাত পাও শরীল অবশ,
অথচ চাও না তুমি এই ব্যাধি কখনো সারুক।
আমার জানতে সাধ, ছিল কোন পাতার সে রস?
সে পাতা কি পানের পাতা মানুষের হিয়ার আকার?
নাকি সে আমের পাতা বড় কচি ঠোঁটের মতন?
অথবা বটের পাতা অবিকল মুখের গড়ন?
তুঁতের পাতা কি তয়, বিষ নিম, নাকি ধুতুরার?
কতবার গেছি আমি গেরামের শ্যাস সীমানায়
আদাড় বাদার দিয়া অতিধোর গহীন ভিতরে,
কত না গাছের পাতা কতবার দিয়াছি জিহ্বায়,
এমন তো পড়ে নাই পানি এই পরানে, শিকড়ে।
তয় কি অচিন বৃক্ষ তুমি সেই ভূবনে আমার,
আমারে দিয়াছো ব্যাধি, নিরাময় অসম্ভব যার? ‘
আকাশের আবেগ জড়ানো ভরাট কন্ঠে কবিতাটা যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছিল।
আবৃতি শেষ হলে নীলিমা শুধু বললো- ‘চমৎকার’’।
:clap:
১০
আজ ১৫ই মার্চ। সারা দিন হাল্কা মেজাজে অফিস চলেছে। আকাশ সব কাজ গুছিয়ে আনছে। ও ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে হীরা ওর কাজ গুলো দেখবে। বিকাল ৪’টার দিকে অফিসে আকাশের বাবা’র ফোন এলো। জানা গেল, দাদীর শরীরটা একটু বেশীই খারাপ। অফিসে সবার থেকে বিদায় নিয়ে আকাশ ছুটি করলো।
…অফিস থেকে ফিরেই দেখা গেল আজ বাড়িতে অনেক মেহমান। ভীড় ঠেলে এগোতেই মা’কে দেখা গেল। মা’কে দেখে আকাশ তার কাছে যেতেই তিনি আব্দারের সুরে জিজ্ঞেস করলেন, কি রে এই তোর আসা হলো? আকাশ ভেবে পায়না আজকের দিনের বিশেষত্ব কোথায়! সে মনে মনে শুধালো -বিষয়টা কি? সে কোন উত্তর না পেয়ে ধীর পায়ে নিজের রুমের দিকে এগুলো। দরজা ঠেলে আকাশ রুমে ঢুকলো। কিন্তু, এ কি কান্ড! ওর রুমটা ফুলে ফুলে সাজানো। মিষ্টি একটা গন্ধ মৌ মৌ করছে। এসব ছাপিয়েও একটি বিষয় তাকে অস্থির করে তুললো- একজন বধূ বেশে তার বিছানায় বসে আছে। …অবিশ্বাস্য ! আকাশ বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। অফিস ফেরৎ আকাশ দেখে কাকতালীয় ভাবে তার স্বপ্ন বাস্তবে ধরা দিল। হায়, প্রকৃতি আমাদের নিয়ে কত খেলাই না খেলে !
…তাকে চমকে দিয়ে নীলিমা বললো, আমাকে একটু পানি দাও না প্লীজ। সম্বিত ফিরে পেয়ে টেবিলে রাখা জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢাললো। নীলিমাকে সাবধানে পানির গ্লাসটা দিল সে। পানি খেয়ে পানির গ্লাসটা ওর হাতে দিয়ে নীলিমা বললো, ‘আকাশ, আমার প্রচন্ড নার্ভাস লাগছে। আব্বু বললো, তোমার দাদুর শরীর খুব খারাপ। দাদুর ইচ্ছা উনি হাসপাতালে যাবার আগে আমাদের বিয়েটা দেখে যেতে চান। এরপর সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আজই বিয়ে পড়ানো হবে। কিছুক্ষনের মধ্যে কাজী সাহেব চলে আসবেন। ব্যাপারটার আকস্মিকতা আমি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি।‘
– হুম্ম। তারপর আকাশ জিজ্ঞেস করলো, ‘আমার বাবা কই জানো? ‘
নীলিমা মাথা নেড়ে জানালো- সে জানে না।
বেরিয়ে যাবার আগে আকাশ ওকে বললো, ‘তুমি রিল্যাক্সড্ হয়ে বসো। আমি দেখি কাউকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।‘
বাবাকে পাওয়া গেল দাদীর ঘরে। মা’ও আছেন ওখানে।
আকাশকে দেখে দাদীর মুখে হাল্কা হাসির রেখা ফুটে উঠলো। ও কাছে যেয়ে দাদীর কাছে বসলো। দাদী ভাঙ্গা ভাঙ্গা স্বরে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি দাদু ভাই, পাগরি পড়বা না?’
আকাশ হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে একটু হাসলো। দাদী আকাশের মুখে হাত বুলিয়ে ওর হাতে চুমু খেলেন। আকাশের খুব ভেতরে কোথাও একটা মোচড় খেয়ে উঠলো। ওর চিবুক বেয়ে চোখের পানিটা টপ করে নীচে পড়ে যাবার আগেই ও রুম থেকে বের হয়ে এল।
নিজের রুমে যেয়ে তৈরী হয়ে নিল ও।
খবর এলো কাজী সাহেব এসেছে।
রোবটের মত বাড়ীময় ঘুরছে অনেক মানুষ।
নিয়ম অনুযায়ী বিয়ে পড়ানো হলো।
সদ্য বিবাহিত বর-কনে কে দাদীর রুমে নেওয়া হলো। ওরা দাদীর কাছে যেয়ে ওনার পা ছুঁয়ে সালাম করলো। আকাশ দেখলো দারুন এক প্রশান্তি দাদীর চোখে মুখে। এই প্রিয় বৃদ্ধাকে এতটুকু শান্তি দিতে পারায়, আকাশ মনে মনে সবাইকে ধন্যবাদ দিল ।
ওদেরকে পাশে বসতে বললেন- বাবা। তারপর, নীলিমার হাতে একটা খাম দিলেন তিনি।
খামের উপরে কাঁপা হাতে লেখা-
‘চোখে চোখ
হাতে হাত
অন্তরে অন্তর
জনম জনম।‘
আকাশ খামটা খুললো। দেখা গেল, কক্সবাজার এ যাওয়ার জন্য দু’জনের ফুল প্যাকেজ প্রোগ্রাম।
বাস ছাড়বে আজ রাতে কলাবাগান থেকে।
নিয়মিত আকাশের বাবা ফলমূল- এটা ওটা কিনতে হলে বাড়তি হাতখরচের জন্য কিছু টাকা পাঠাতেন। ঐ টাকা আর নিজের জমানো টাকা মিলিয়ে তিনি তার নাতির জন্য সুন্দর একটি উপহার বেছে নিয়েছেন। আকাশের জন্য পৃথিবীতে এর থেকে উপযুক্ত উপহার আর কি হতে পারে…?
আকাশ পরম শ্রদ্ধায় দাদীর কপালে একটা চুমু খেল।
নীলিমাও তাকে অনুসরন করলো।
:dreamy:
আমাদের কাছের মানুষ গুলো এমন নিঃস্বার্থ ভাবে দিনের পর দিন আমাদেরকে পরম মায়ার জালে আবদ্ধ করে রাখেন। আর তাই হঠাৎ তাদের হারাবার ভয়ে আমারা বড্ড বিচলিত হয়ে পড়ি।
সবচেয়ে বিধ্বস্ত লাগছে আকাশের বাবাকে।
মাথার উপর থেকে ছায়া সরে যাবার ভাবী যন্ত্রনায় কাতর তিনি। ক্ষনে ক্ষনে দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন তিনি। হাসান সাহেব ওনার সাথে সাথে আছেন সব সময়।
ঐ দিকে আকাশের মা কিঞ্চিৎ রান্নার আয়োজন করেছিলেন। এরপর বাড়ীতে আগত মেহমানদের আপ্যায়ন করা হলো।
সময় ঘনিয়ে এলো, বাস ছাড়বার।
আকাশ একবার বাবাকে প্রশ্ন করেছিল যে, এসময়ে না গেলে হয়না ? উত্তরে তিনি তার মা’র এই ইচ্ছার কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন।
তাই সময় হলে দাদী, দুই বাবা মা আর আত্মীয় স্বজনদের থেকে বিদায় নিয়ে ওরা বাস স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দিল।
ওরা বের হওয়ার সাথে সাথে আকাশের বাবা হাসপাতালে ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স আসতে বললেন।
হাসপাতালে স্পেশাল কেবিনে শুয়ে আকাশের দাদী একটু স্বাভাবিক হয়ে উঠলেন। তাই দেখে সবাই আশান্বিত হলেন।
কিন্তু ,এ সময় ডাক্তার সবাইকে বাইরে চলে যেতে বললেন।
সবাই বেরিয়ে যেতে উদ্যত হলে ডাক্তার আকাশের বাবাকে থাকতে বললেন।
-জ্বী, ডাক্তার সাহেব?
-আপনি আপনার মা’র কাছে থাকুন।
সীমান্ত চৌধুরী তার মা’র মাথার কাছে বসলেন। নাকে মুখে নল ঢুকানো আছে কয়েকটি। মনিটর স্ক্রীনে হার্টবিটের সাথে সাথে লাইন গুলো থেকে থেকে উঠা নামা করছে।
উনি ঘড়ি দেখলেন – ১০টা ২৮ বাজে।
কিছুক্ষনের মধ্যে হয়তো বা আকাশ’দের বাসটা ছেড়ে দিবে।
এমন সময় সাগরিকা চৌধুরী কেবিনে ঢুকলেন। তিনি এসে আকাশের বাবার পাশে দাঁড়ালেন। বললেন, ওদের বাসটা বুঝি এখনই ছাড়বে।
উত্তরে- আকাশের বাবা একটু মাথা নাড়লেন।
এরপর দুজনই এক পলকে আকাশের দাদীর দিকে চেয়ে রইলেন।
খানিক বাদে আকাশের বাবা জিজ্ঞেস করলেন,
‘ সাগর আমার চশমাটা কই?’
আকাশের মা দেখলেন, উনি চশমা পড়েই আছেন।
বোধকরি, ওনার চোখদুটি ঝাপসা হয়ে গেছে!
তিনি পরম উষ্ণতায় আকাশের বাবা’র হাত দুটি শক্ত করে ধরে, বিছানার পাশে ঠাঁই দঁড়িয়ে রইলেন নিশ্চুপ…।।
😐
:hatsoff:
পরিশিষ্টঃ
স্বপ্ন পূরনের পরিসংখান নির্ণয় করা আমার উদ্দেশ্য নয়।
ক'টা স্বপ্ন পূরন হয় ...?
ক'টা নীরবে হারিয়ে যায়...?
সে হিসেব কষতে গেলে জীবনটাই হয়তো থমকে যাবে।
তাই আমার বক্তব্য হচ্ছে এই যে,
মানুষ হিসেবে সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে -
আমরা আমাদের ভাবনা গুলোকে মনে মনে কল্পনা করতে পারি।
আমরা সব সময় ভাল কিছু আশা করতে পারি।
আমরা অবিরত স্বপ্ন দেখতে পারি...।
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন,
‘জগতে সকলই মিথ্যা সব মায়াময়,
স্বপ্ন কেবলই সত্য অন্য কিছু নয়।‘
সে সুর ধরে আমিও আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে-
ঐ প্রতিবিম্বটির দিকে তাকিয়ে প্রতিদিন বলি,
‘‘শেখো মানুষ-
স্বপ্ন দেখতে শেখো।‘’
সৈয়দ সাফী
স্বপ্নের একমাত্র কারিগর হল মানুষ নামের রঙের ফানুস। :-B
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
খুব ঠিক কথা রকিব।
স্বপ্ন কারিগর - এই মানুষেরাই।
:-B
সৈয়দ সাফী
🙂
ধন্যবাদ।
সৈয়দ সাফী
সামুতে আগেই পড়ছিলাম । তবে.................
পড়ার জন্য ধন্যবাদ আমিন।
তবে ......?
বুঝি নাই। 🙁
সৈয়দ সাফী
:salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute:
প্রতি পর্বের জন্য একটা করে আর অন্যটা আজকের দিনের জয় ফ্রি... B-)
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
অনেক অনেক ধন্যবাদ জুনায়েদ ভাইয়া।
শুভেচ্ছা নিও।
:hatsoff:
সৈয়দ সাফী
অসাধারন উপসংহার। আপনার সিরিজটা প্রচন্ডভাবে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছিল এতদিন। আজ শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রিয় কিছু হতে বিচ্ছেদ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। :clap: :clap:
অনেক ধন্যবাদ তোমাকে শার্লী ভাইয়া।
মোহিত হওয়ার কৃতিত্ব পাঠকের।
সে জন্য সাধুবাদ জানাই।
🙂
সৈয়দ সাফী
বস মন্টা ক্রাপ হইয়া গেল। ছ্যাকা খাইছি এখন ও চল্লিশা হয় নাই। আপনার গল্প পইরা খালি ...নীলিমা 🙁 🙁 দেখতেসি চখে। 😡 😡
মন খারাপ করিয়ে দেয়ার জন্য দুঃখিত রাব্বি।
🙁
চল্লিশা টা পার হউক তারপর সার্চ মাইরো 😉
কথায় বলে -
Once You miss any bus You can always wait for the next bus to come.
:thumbup:
সৈয়দ সাফী
ভাইয়া, অসম্ভব ভালো লাগল এই সিরিজটা। :boss: :boss:
এত সুন্দর বর্ণনা! সব কিছু কল্পনা করে নিতে বিন্দুমাত্র সমস্যা হয়নি!
সিরিজটা শেষ হয়ে যাওয়ার পর এখন কেমন খালি খালি লাগছে! 🙁
ইসসসসসস! কবে আপনার মত করে ভাল লিখতে পারব? 🙁 🙁
পুরানো সিরিজটা ভালো লাগার জন্য অনেক ধন্যবাদ তোমাকে তানভীর।
ভিজুয়ালাইজেশন এর ক্ষমতাটকু পাঠকের - তাই সে কৃতিত্ব তোমার।
আর ভাল লেখা কি না জানি না - তবে ভালো কিছু নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে।
ঐ সময় টুকু রাঙাতে কার্পণ্য করি না কখনো।
ভালো থেকো অনেক।
সৈয়দ সাফী
এইটারে কয় কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ,
ভাগ্যিস জগতে দাদু দিদারা আছেন, আর তাই নাতি-নাতনীদের তারাতারি বিয়ে হয়ে যায়।
তোমার লেখা অনেকটা ইমদাদুল-হক-মিলনের মত, বর্ননা গুলো একদম সামনে ভেসে আসে।
ভাল থেক।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
বস,
আপনি এক্কারে খাঁটি কথা কইছেন।
:salute:
পৃথিবীর সব দাদা-দাদী আর নানা-নানীদের সালাম।
আর,
লেখার ধাঁচে মিলন কাট খুঁজে পেয়ে আমার শরমিন্দা :shy: করছেন বহুত।
মন যা চায় - তাই ভাবি। সুখী সুখী ভাব নিয়ে লিখে জাগিতিক টানা পোড়েন থেকে দূরে সরে থাকার চেষ্ঠা করি মাত্র।
নয়তো - বেঁচে থাকাটাই কেমন পানসে - খুব দায় সারা হয়ে ওঠে।
অনেক ধন্যবাদ বস।
শুভেচ্ছা নিয়েন।
সৈয়দ সাফী
ভাল ফিনিশিং দিয়েছেন ভাইয়া । আমিতো টেনশন নিয়ে পরছিলাম কখন আবার একটু অন্যরকম ফিনিশিং দিতে গিয়ে বড়সর কোন ট্রাজেডি নিয়ে আসেন । :hatsoff:
অনেক ধন্যবাদ আদনান।
তোমকে টেনশন থেকে মুক্তি দিতে পেরে ভাল লাগলো। 🙂
শুভেচ্ছা নিও।
সৈয়দ সাফী