সময় হিসেব করে করনীয় আর সব কিছু না করা হলেও সিসিবি’তে ঢু দেয়া বাদ যায়না কখনোই।
আজ সিসিবি’র অতিথি যুবরাজের দুইটা লেখা পড়লাম। সাথে সাথে তার সচলায়তনের ‘লেটার ফ্রম লাইবেরিয়া’ এর পর্বগুলিও পড়ে নিলাম।
শেষ পর্বে খালাম্মার কথা পড়তে পড়তে ভেতরে মোচড় খেলাম।
অনেকক্ষন ঝিম মেরে বসে ছিলাম।
তারপর দেশে কথা বললাম। হঠাৎ ফোন করায় কয়েকবার জিজ্ঞেস করলেন বাবা- মা দুজনেই। বাবা তোমার শরীর ভাল তো। আমি ভাল বলতেই মা পুনরায় শুধালেন – তাহলে তোর গলাটা এমন লাগছে কেন। বাবা- মা’রা কেমন করে যেন সব বুঝে যান !
আমি আমার বুজে আসা স্বর লুকিয়ে জোর দিয়ে বললাম – না গো মা, শুয়ে ছিলাম অনেকক্ষন তাই হয়তো অমন লাগছে। আমি ভাল আছি মা। খুব ভাল। তোমরা শরীরের যত্ন নিও। এর কিছু পরে, বাকিদের সাথে টুকটাক কথা বলে ফোন ছেড়ে দিলাম।
এই হলো ভূমিকা।
গেল বছর বাবা দিবসে সামু’তে একটা লেখা আজ এখানে আবার দিতে মন চাইছে। সাথে পৃথিবীর সব বাবা-মা’র জন্য অশেষ শ্রদ্ধা আর শুভকামনা জ্ঞাপন করছি।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সব বাবা-মা’রা ।
বাপ কা বেটা
বছরের একটি দিনকে ঘিরে মাতামাতি করার পক্ষে আমি কোন কালেই ছিলাম না। হৃদয়ের কাছের ঘটনা গুলি মনে রাখতে চাই প্রতি ক্ষন প্রতি বেলা। পর মূহূর্তেই নিজেকে শান্তনা দিই এই বলে – যে একটা দিনকে চিহ্নিত করে না রাখলে জীবনের ছুটে চলাতে হারিয়ে যেতে পারে অনেক গভীর অনুভূতির বিষয় গুলি।
আজ ১৫ই জুন। বাবা দিবস।
এই দিনে স্থির করলাম আমার বাবাকে নিয়ে কিছু লিখব।
পৃথিবীতে এমন কলম নেই যা দিয়ে বাবা -মা সম্পর্কে কিছু লিখে শেষ করা যাবে। আর তাই আমি আমার স্মৃতি থেকে আমার বাবা নিয়ে কিছু বলবার বৃথা চেষ্টায় মগ্ন হলাম।
বাবার মুখে আমার সেই ছোট্ট বেলার একটা ঘটনা এত বার শুনেছি যে মনে হয় আমি তা নিজের চোখেই দেখেছি।
বাবা সরকারী চাকুরে ছিলেন। বদলীর চাকরীতে তিনি তখন চট্টগ্রাম থাকতেন। প্রতি পাক্ষিকে তিনি একবার সাপ্তাহিক ছুটিতে ঢাকা আসতেন। আমি আর মা আমার নানী বাড়ী এলিফ্যান্ট রোডে আছি। আমার বয়স বুঝি তখন দুই ছুঁই ছুঁই করছে।
এক সাপ্তাহিক ছুটির সকালে মা আমাকে সরিষার তেল মাখিয়ে দিয়েছেন গোসল করাবেন বলে। আমি সে সময় গোসল করার মুডে নাই।
আর তাই সারা বাড়ীময় দৌড়েদৌড়ে মা কে অস্থির করে তুলছি।
এরকম সময়ই হয়তো বাবা বাড়িতে এসে ঢুকেছেন।
মহা আনন্দে আমি বাড়ীর এ ঘর থেকে ও ঘরে ছুটে বেড়াচ্ছি।
আমি জন্মদিনের পোষাকে (!) বীরের মত বাইরের ঘরে ঢুকেই বুঝলাম বাইরে লোক আছে। তাই আবার উল্টা ঘুরে দে দৌড়। 😛
কেননা ১৫ দিন পর পর দেখে দেখে আমি নাকি ঐ বয়সে প্রথমে ঠাহর করতে পারি নি বাবার চেহারা।
বাবা ক্লান্ত ছিলেন বলেই হয়তো বসার ঘরে বিশ্রামের জন্য বসলেন।
কিছু বাদে আমার ছোট্ট মাথায় যখন এই সত্য প্রতিষ্ঠিত হলো – আরে এটা বাবা না ! আমি আবার বসার ঘরের কাছে এসে পর্দার আড়াল থেকে দেখে দেখে নিশ্চিত হলাম যে – হুম্ম । যা ভেবেছি তাই ঠিক।
বাবা আড়চোখে দেখছিলেন আমার সেই অবুঝ দুষ্টামি।
আর আমিও যেন নিজের ভুল বুঝতে পেরে বেআক্কেল এর মত ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে বা…বা … বলে চিৎকার করে বসার ঘরে দৌড়ে ঢুকে বাবার কোলে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম।
এই হলো ঘটনা। এখনও এই ঘটনা সুযোগ পেলে বাবা সবাইকে বলে বেড়ান। আমাকে বলে রেখেছেন – আমার ছেলেকেও নাকি বলবেন !
এরপর দিনে দিনে বড় হয়েছি।
প্রতি ক্ষনে ক্ষনে বাবা-মা’র ভালবাসায় বেড়ে উঠেছি পৃথিবীর আলো বাতাসে।
আজ যা হয়েছি বা আগামীতে যা হবো … সব কিছুর মূলেই রয়েছেন বাবা মা।
জ্ঞান হবার পর থেকে ভেবেছি বড় হলে আমি বাবার মত হবো।
আমার সৌভাগ্য বাবা যে পেশায় ছিলেন তার দেখানো পথে আজ আমিও সেই পেশায়। সে জন্য আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া।
এর মধ্যে অনেকে আছেন যারা বাবাকেও দেখেছিলেন – আজ আমাকে দেখছেন। সবাই তো আর সব সময় খুশী থাকেন না। অনেকের অনেক লুকানো ক্ষত থাকে হয়তো। বাকিরা কিন্তু আগ্রহ ভরে আমায় স্নেহ করেন।
পিঠ চাপড়ে বলেন – ‘বাপ কা বেটা’ ।
…এই কটা মাত্র শব্দ।
কিন্তু ,কি ভীষন ভাল লাগে যে আমার ! গর্বে আমার বুকটা ফুলে ফেঁপে শার্ট ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে চায় যেন। চোখের কোনে চিকচিক করে ওঠে কিছু আনন্দ অশ্রু।
মাঝে মধ্যে মিটিং – সিটিং এ হাল্কা অফ টপিক কথাবার্তা হয়।
অনেকে খুঁজে ফেরেন আমার মাঝে বাবার ছায়া।
অসম্ভব ভাল লাগে তখন আমার।
আর বিনীত ভাবে বলি-
‘ আমার মাঝে যতটুকু ভালো আপনারা দেখছেন তা পেয়েছি আমার বাবা থেকে – তা আমার অহংকার। আর যতটুকু কালো আপনারা দেখেছেন বা দেখবেন তা একান্তই আমার। সে জন্য আমি বাবার কাছে ক্ষমা চাইছি। আমি তার সঠিক দীক্ষায় শিক্ষিত হতে পারিনি। বাবা আমাকে মানুষ হতে বলেছেন। মানুষ হওয়ার চেষ্ঠা আমরন করে যাব আমি…।‘
বাবা, আজ আমি অনেক দূরে।
ফোনে কথা হলো কিছুক্ষন আগে।
ভাগ্যিস তুমি দেখোনি আমার চোখ চিকচিক করছে।
গলাটা ধরে আসতেই তুমি হয়তো ঠাহর করতে পেয়েছো তোমার ছেলের মনের কথা। তাই বলেছো – ‘I am proud of you my son.’
থ্যাংক্স বাবা। আমি তোমায় যেন সত্যিকারের গর্বিত করতে পারি সেই আমি সেই চেষ্টাই করবো আজীবন।
বাবা , আমি মনে প্রানে বাপ কা বেটা হতে চাই…।
তুমি ভাল থেকো। তুমি … মা …তোমরা সবাই ভাল থেকো। অনেক ভাল।
বাবা দিবসে বাবা তোমাকে এরকম একটা লেখা না – একটা বিশেষ দিন না…..বরং আমার প্রিয় বাবা- মা তোমাদের দুজনকেই জানাই লক্ষ …কোটি ফুলের শুভেচ্ছা। আর উৎসর্গ করি –
আমার সব কিছু…
আমার যা যা আছে… আর আমার যা নাই…!
খালি স্যালুট............স্যালুটের পর স্যালুট :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: ।
Life is Mad.
আমিও একই সাথে -
:salute: (টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি...) :salute:
সৈয়দ সাফী
আমি ফার্স্ট :)) :)) :)) :)) :)) :)) :))
সাব্বাশ সাইফ,
তুমিই জিতছো।
:clap:
সৈয়দ সাফী
খুবি মন খারাপ করে দেবার মত লেখা ...।
২য় ... ৫ দিলাম
ধন্যবাদ মেহেদী।
মন খারাপ করিয়ে দেয়ার জন্য দুঃখিত ভাইয়া।
শুভেচ্ছা নিও।
সৈয়দ সাফী
কথা সত্য।
😐
সৈয়দ সাফী
প্রথমে আমার বাবাকে :salute: :salute: :salute: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
তারপর আপনার বাবাকে :salute: :salute: :salute: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
এবং দুনিয়ার সকল বাবাকে :salute: :salute: :salute: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
ধন্যবাদ বন্য।
তোমার সাথে আমি আবারও-
:salute:
:salute:
:salute:
সৈয়দ সাফী
ব্রোঞ্জ :grr:
অফটপিকঃ হার জিত বড় কথা নয়, অংশ গ্রহনই বড় কথা। ব্রোঞ্জ কম কিসে?? B-)
খুব ঠিক কথা।
সাব্বির তোমারে ব্রোঞ্জ মুবারক।
:clap:
সৈয়দ সাফী
এই একটা লাইনই যেন অনেক কিছু বলছে... ভাইয়া খুব ভালো লেগেছে। :boss: :boss:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
হুম্ম - ভাইয়া।
তোমার ভালো লাগা আমায় ছুঁয়ে গেল।
অনেক ধন্যবাদ।
🙂
সৈয়দ সাফী
বাহ, তুমি পোলাটাতো অনেক প্রো-আক্টিভ। প্রফেশনাল লাইফ তো তোমার পুরা ফক-ফকা।
গুড জব বাচ্চু।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
বস, 😀
সালাম।
আপনি পুরা লেখায় এই অংশটুকু ধইরে ফেলাইছেন।
ঝানু শিকারীর চোখ।
তয় বস এর আগের দীর্ঘ কবিতাটাতে কিন্তু কইছিলাম। এখানে আবার দিই-
বাবার স্বপ্ন পূরণ আর নিজের পেট পূরণে এখনও গড়াগড়ি খাইতেছি বস।
দোওয়া রাইখেন।
:salute:
সৈয়দ সাফী
কথাটা আমার ও মনের কথা। এত চমৎকার ভাবে প্রকাশ করতে পারতাম না ভাইয়া।
বিনয় গুনীজনদের বৈশিষ্ট্য।
🙂
সৈয়দ সাফী
খুব ভালো লাগলো। এরকম অনুভূতি কম বেশি সবাই সাথে করে বয়ে নিয়ে বেড়াই। কিন্তু এমন করে ফুলের মত ফুটিয়ে তুলতে কয়জনই বা পারে।
:hatsoff:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
তোমার চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ জিহাদ।
অনেক ভালো থেকো ভাইয়া।
🙂
সৈয়দ সাফী
আপনার বাবার জন্যে শ্রদ্ধা :boss:
তোমার বাবা সহ পৃথিবীর সকল বাবা- মা'র জন্য
:salute:
সৈয়দ সাফী
পৃথিবীর সকল বাবা'কে :salute:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
পৃথিবীর সকল বাবা-মা'কে
:salute:
সৈয়দ সাফী
ভাইয়া, আপনার লেখা পড়ে বেশ আবেগাপ্লুত হয়ে গেলাম। চমৎকার লেখা।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা-মা। :salute:
অনেক ধন্যবাদ তানভীর ভাইয়া।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা-মা।
সৈয়দ সাফী
আমি খুব ভাল বাবা হব ... খুব ভাল বাবা ...
আমার সন্তান আমাকে নিয়া লিখবে ... সেইরকম ভাল বাবা।
বস যথারীতি অসাধারন লেখা
বাবা'দের :salute:
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
আপনার স্বপ্ন পূরণ হোক তাইফুর ভাই। :boss: :boss:
তানভীর তোর স্বপ্নও পুরন হউক। 😉 😉
কামরুল, তোর স্বপ্নও পুরন হউক। 😉 😉 :grr:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
ধারা বজায় রেখে বলি,
কাইয়ূম ভাই, আপনার স্বপ্নও পূরণ হোক... 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ধারা তুমি এগিয়ে চলো......
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
স্বপ্ন পুরনের মাঝখানে ধারা আপাকে আনায় আহসানের ব্যাঞ্চাই 😉
ধন্যবাদ তাইফ।
তোর স্বপন পূরন হোক প্রিয়।
🙂
সৈয়দ সাফী
পৃথিবীর সকল বাবা-মা’কে :salute:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
তোমার সাথে আমিও কাইয়ুম :salute:
সৈয়দ সাফী
অসাধারন একটা লেখা ............ :salute:
অনেক ধন্যবাদ যুবরাজ।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
🙂
সৈয়দ সাফী
তোমাকে আর তোমার বাবা দুজনকেই :hatsoff: অভিবাদন।
ভালো থেকো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
বস,
বিনীত ধন্যবাদ জানিয়া আপনাকে।
আপনিও অনেক ভাল থাকুন ভাইয়া।
সৈয়দ সাফী
:salute: :salute:
ধারা অনুযায়ী সকলের স্বপ্ন পুরন হোক ইনশাআল্লাহ।
🙂
সৈয়দ সাফী
পৃথিবীর সকল বাবা মাকে :salute: :salute:
আমিও তোমার সাথে সব বাবা মা'র জন্য :salute: :salute:
ধন্যবাদ তোমাকে শার্লী।
সৈয়দ সাফী