আকাশ আরেকবার হাতঘড়ির দিকে তাকালো –
পৌনে বারটা বাজে।
নীলিমার ওখানে যাওয়ার কথা দশটার দিকে।
এখন ছুটতে হবে সেই মগবাজারে।
নিজের উপর ওর এমন রাগ লাগছে যে আর কি বলবে ! ~x(
ছুটির দিনেও অফিসে এসে জনসেবামূলক কাজ নিয়ে দৌড় ঝাপ করে ঘাম ছুটাতে হলো।
একেই বলে খাল কেটে কুমির আনা। শুধু কুমির আনা পর্যন্ত ব্যাপারটা গড়ালেও চলতো। কিন্তু শেষে দেখা গেল নেমন্তন প্রাপ্ত ঐ কুমির কে খাইয়ে দাইয়ে আদর যত্ন করে তারপর রক্ষা।
আকাশদের অফিস এর প্রতিষ্ঠার পঁচিশ বছর উদযাপন করবে। এই নিয়ে ক’দিন ধরে অফিসে বেশ তুমুল আলাপ আলোচনা। আর সাধারন – অতি সাধারন পরিকল্পনার ছড়াছড়ি। আকাশ সচরাচর অফিসের কালেক্টিভ অ্যাফেয়ার গুলোতে অর্থবহ অবদান রাখে। তবে এই সময়, মানে নীলিমার সাথে ইয়ে হওয়ার পর ছুটির দিন গুলো মাটি করা রীতিমত শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য ওর কাছে। :bash:
দুদিন আগের ঘটনা। কনফারেন্স রুমে একেক জনের বাহারী পরিকল্পনা শুনতে শুনতে আকাশ আলতো করেই তার কল্পনাটা প্রকাশ করেছিল।
ওরে বাবা! আর যায় কোথায়? ওর বস খপ্ করে সেই কল্পনার লাটাই ধরে তার শুরুতে ‘পরি’ লাগিয়ে অনুষ্ঠানের যাবতীয় ‘পরিকল্পনা’র ভার আকাশের উপর ন্যস্ত করে তারপর যেন ক্ষেমা দিলেন।
তারপর কলিগরা সবাই এসে আকাশকে অভিনন্দন জানিয়ে গেল।
ভাবটা এমন যেন সে সদ্য অস্কার বিজয়ী একজন নন্দিত অভিনেতা।
সবাই সাধুবাদ জানিয়ে যাচ্ছে।
অস্কার না পাক, আকাশ কিন্তু সেই চরম পরিতাপের সময়ও মুখে তার মৃদু হাসির রেখা টেনে রেখেছিল। বোধকরি ঐ লাইনে গেলেও তার তেমন অসুবিধা হতো না। x-(
সে চটপট তার আইডিয়াটা ড্রাফ্ট করে ফেললো। :gulli2:
আইটেম : ঘুড়ি
থীম: আমাদের সামনে বিশাল আকাশ। ব্যাপক তার বিস্তৃতি। আকাশ ছোয়ার সবচেয়ে সুলভ মাধ্যম হচ্ছে ঘুড়ি। আমাদের ফিরে দেখা আর আগামীর পথ চলার যোগসূত্রতা ঘটাবে এই মাধ্যমটি। এবারকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর প্লট হচ্ছে – ঘুড়ি আর ঘুড়ির বাক্স।
প্রয়োগ:
১। মেইন গেট। মেইন গেট এর বাম পাশে থাকবে একটা ভার্টিকাল মেম্বার। তার সাথে লাগোয়া অ্যানটিক টাইপের একটা বাক্স। বাক্সের আলতালায় একটা ঢাউশ সাইজের পুরানো আমলের তালা ঝুলছে। বাক্সের আধ খোলা ডালা গলিয়ে রং বেরং এর বিভিন্ন সাইজের ঘুড়ি গুলো বেরিয়ে আসবে। সব ঘুড়ি গুলো ঐ ভার্টিকাল মেম্বার বেয়ে বেয়ে উপরে উঠে আসছে যেন। তাদের সবার গায়ে নম্বর আঁকা। গননা শুরু হয়েছে ১ থেকে। এভাবে একে একে ২৪ পর্যন্ত… মোট চব্বিশটা ঘুড়ি ভার্টিকাল মেম্বার এর চূড়া অবধি পৌঁছে যাবে। তারপর বড় একটা ঘুড়ি যাতে লেখা থাকবে ২৫। এই ঘুড়িটি চিকন একটি রডের সাথে ঝালাই করতে হবে। ফলে ২৫ লেখা বড় ঘুড়িটি থেকে থেকে ভাসতে থাকবে বাতাসের সাথে সাথে সাথে।
মেইন ফোকাস হাইলাইটেড আর সাথে হাল্কা লাইভ ইফেক্ট।
প্রোগ্রাম বিকালে শুরু হয়ে রাতে গড়াবে তাই দুটো হ্যালোজেন লাইট অ্যাঙ্গেলে সেট করতে হবে যাতে পুরো কম্পোজিশনটা আলোকিত থাকে।
২। কেক এর ডিজাইন।কেক টাও হবে ঘুড়ির আদলে। দুইটা ঘুড়ি। বেইসে বড় একটা ঘুড়ি যার রং হবে একটু হাল্কা ফ্লেভারের ।আর উপরের ঘুড়িটা অনেক উজ্জ্বল রং এর হবে। তার মাঝে বড় করে লেখা থাকবে ২৫ আর সাথে অফিসের লোগো।
আকাশ ড্রাফট করা ডকুমেন্টটা ওর বসের মেইল এ চালান করে দিয়ে আজাদ মিয়াকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। প্রথমে কেক এর অর্ডার দিল সুমি’স হট কেক এ। তারপর প্রয়োজনীয় সব জিনিষ গুলো ঘুরে ঘুরে কিনে আজাদ মিয়ার হাতে অফিসে পাঠিয়ে রাতে ও বাড়ী ফিরলো।
দোকান থেকে সে নিজের জন্যও একটা রঙ্গীন ঘুড়ি কিনছিলো। বাড়িতে ঢুকবার সময় ঐ ঘুড়ি হাতে দেখে মা জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি রে হঠাৎ ঘুড়ি ?’
আকাশ মা’কে দুষ্টুমি মাখা এক চিলতে হাসি উপহার দিয়ে বললো – কাল অফিস শুদ্ধু সবাইকে নিয়ে ঘুড়ি উড়াবো মা।
তারপর ওদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নিজের পরিকল্পনার কথা এক নিশ্বাসে মা’কে বলে আকাশ নিজ রুমে চলে এলো।
প্রচন্ড ক্লান্ত ও আজকে।
জলদি করে গোসল – তারপর খাওয়া দাওয়া সেরেই ঘুম।
ওহ! তার আগে নীলিমার সাথে কথা বলতে হবে। ওর কি যেন একটা জরুরী কথা আছে।
খাওয়া সেরে নীলিমার সাথে কথা বলে জান গেল ম্যাডামের সাথে আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবারে সকাল দশটায় সাক্ষাত করতে হবে মগবাজার আড়ং এ। :guitar:
যাইহোক, ক্লান্তির কারনেই হয়তো ঝটপট সব কাম কাজ শেষ করে বিছানায় শোয়ার প্রায় সাথে সাথেই সে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল।
:dreamy:
(বাকিটা পরের পর্বে)
1st
তুমি জিতছো রবিন।
:clap:
সৈয়দ সাফী
2nd (পড়াশোনা করে 😀 )
:dreamy: দারুন তো।
(বস্, বেয়াদবী না নিলে একখান কথা বলি? আপনে যেইভাবে আপনার লেখারে খন্ড খন্ড কইরা জমা দিয়া মির্জাপুরের পোষ্টের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়াই ফেলতেছেন তাতে আমরা একটু চিন্তিত হয়ে পড়তেছি :-/ । ২য় স্থানটা হারাতে মনে হয় আর বেশি দেরী নাই :no: । আপনার লেখার কোয়ালিটি অনন্যসাধারণ :thumbup: কিন্তু ঐ যে বললাম, আমরা শংকিত 🙁 মাইন্ড করলে সরি বস। এ্যাডভান্স :frontroll: দিয়া লই, কমেন্টটাও মুইছা দিয়েন )
পড়াশোনা করার জন্য তোমাকেও অভিনন্দন রহমান।
🙂
তোমার শংকা কমাতে পারব কিনা জানি না - তবে বেয়াদবির কোন প্রশন নাই ভাইয়া।
আসলে ব্লগে একটানা বেশী বড় লেখা পরা যায় না। আমি পারি না।
তাই বোধকরি লেখাটুকু সহনশীল দৈর্ঘ্যের হলে পাঠকের জন্য সুবিধা হয়।
সে কারনেই দুই ভাগে লেখা।
আগেও এভাবে দিয়েছিলাম - এখানেও দিলাম। পরের সিরিজের প্রতীক্ষা না করে সাথে সাথে দিয়ে দিই এই কারনেই যাতে - যারা পড়তে চান সাথে সাথে পরে নিতে পারেন। নতুবা পরে সুবিধামতো পরে নিতে পারেন।
সংখ্যা বৃদ্ধি বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে হচ্ছে হয়তো। সেটাও খারাপ না।
😉
শুভেচ্ছা নিও।
সৈয়দ সাফী
আমি... ২ জনের সাথেই ১ মত। 😛
এইটাই সবচেয়ে খাঁটি কথা 😀 😀 ।
Life is Mad.
সঙ্গে থাকার জন্য থ্যাংক্স সায়েদ।
:thumbup:
সৈয়দ সাফী
দারুণ ভাইয়া।
সামুতে কী একই নিক ভাইয়া আপনার?
লেখাটা ভালো লাডছে পড়তে ............
"লাগছে" লিখতে গিয়ে লাডছে লিখেছি।
সরি বস।
উত্তরাধিকার।
সৈয়দ সাফী
:boss: :boss:
একে তো বাসি মাল তার উপর "চলবে"......... :thumbdown: :thumbdown:
তবে লেখাটা আগে পড়া ছিল না। তাই বাসি লাগে নাই। সুন্দর লিখেছ।
কই পাও তোমরা এই প্লট গুলো। আমি পাই না কেন?
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর কাছ থেকে.. 😉 😀 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
:khekz: :khekz: :khekz: :khekz:
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
বস,
বাসী মাল - সত্য কথা।
তয় পরেরটা লগে লগে দিছি তো।
ব্লগের পাঠকের সহনশীলতা বিবেচনা করে পর্ব ভাগ করছিলাম।
আর প্লট - সে তো বস আমি নিজেও জানি না।
আচমকা ভর করে মনে হয় 😛
শুভেচ্ছা নিয়েন।
:salute:
সৈয়দ সাফী
পঁচিশ বছর উদযাপন এর প্ল্যানটা তো পুরা ডিজিটাল.. :clap:
বস, জটিল.. :thumbup:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
তোমার ডিজিটাল মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ জুনায়েদ।
🙂
সৈয়দ সাফী
দেরী হই গ্যালো ... পরের পর্ব দেখি চইলা আসছে ...
প্রথম পর্ব অসাধারণ ...
যাই দুই নম্বরটা পড়ি গিয়া ...
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
শেষ ট্রেন ছাড়েনি এখনো -
তাই অসুবিধা নাই তাইফ।
🙂
সৈয়দ সাফী
ওবায়দুল্লাহ ভাই, আপনে আসছেন দেখে ভরসা পাইলাম। মির্জাপুরকে এখন একটানে আগে নিয়ে যাইতে হবে।
অবশ্য সবাই মনে হয় স্বীকার করবে, কোয়ালিটি আর কোয়ান্টিটি দুইটা সমন্বয় করে বিচার করলে মির্জাপুর এগিয়ে থাকবে। B-)
সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের জন্য তৌফিকের হাসিসহ ব্যাঞ্চাই। :grr: :grr:
কোন হাসি তানভীর ভাই? ;;)
প্রোফাইল পিকের হাসি নাকি স্মাইলির হাসি? 😐
ধন্যবাদ তৌফিক।
তবে ভাইয়া এখানে কোয়ালিটি বা কোয়ান্টিটি নিয়ে কথা বলবার কিছু নাই।
অন্তত আমার কাছে। :-B
সিসিবি মানে আমাদের ব্লগ।
যার যা খুশী যেভাবে খুশী- স্বপ্ন ছোঁয়ার আকাশ হয়ে উঠুক এই ব্লগ -সেই কামনা করি।
:thumbup:
শুভেচ্ছা নিও অনেক।
সৈয়দ সাফী