২০০৪ সালের ১৪ ই এপ্রিল ছিলাম ময়মনসিংহে। আমার খালার বাসায় চলে এসেছিলাম। পহেলা বৈশাখ ছিল সেদিন। ক্লাস সেভেন পড়ুয়া ছেলে হিসেবে এই দিনে একটু বাইরে গিয়ে ঘুরে বেড়ানোটাই স্বাভাবিক ছিল আমার জন্য। কিন্তু প্রচন্ড নার্ভাসনেস এর কারনে সেইদিন কোন কিছুই আর স্বাভাবিক লাগছিল না আমার। পরদিন জয়নিং ডেট.. মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে। চিন্তায় সেই রাতে ঘুম হয় নি ঠিকমতন। আচ্ছা, ধান ভানতে গিয়ে আমি শিবের গীত কেন গাচ্ছি? প্রথম দিনের গল্প বলতে গিয়ে হাবিজাবি আলাপ করতেছি। সবকিছু স্কিপ করলাম। ডাইরেক্ট কলেজ এ পৌছানোর পর থেকে শুরু করলাম।
১৫ই এপ্রিল, ২০০৪। আমাদের ক্লাসমেট দের মাঝখানে সবার আগে আমার সাথে পরিচয় হয় রাকিবের। রাকিব আর ওর প্যারেন্টস কলেজ গেট এর ঠিক বাইরেই দাড়িয়ে ছিল.. ওখান থেকেই টুকটাক আলাপ। আমার সাথে ছিল আব্বু-আম্মু, ছোট ফুপি আর দাদু। সময় হলে আস্তে আস্তে এগুতে লাগলাম। ভাইভা কলেজে হওয়ার কারনে কলেজ এর বিল্ডিং গুলো আগেই দেখা হয়ে গিয়েছিল। তাই এটা নিয়ে খুব একটা সারপ্রাইজ কাজ করেনি। যে জিনিস দেখা হয়নি সেটা হলো কলেজের মানুষগুলোকে। অডিটরিয়ামে পৌছানোর পর আমাদের রিসিভ করতে আসলেন একদল টাই পরা বড় ভাই। এসে পরিচয় দিলেন। নাম বললেন ইসলাম। আব্বু আম্মুর সাথে কথা বললেন উনি। এরপর আমরা ব্যাগ নিয়ে হাটা দিলাম হাউজের দিকে। একাডেমিক ব্লক এর মাঝখানের শেড দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার বিশাল ওজনের বস্তা সদৃশ্য ব্যাগটা উনি নিজেই ক্যারি করতে লাগলেন। আমি বারবার ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে লাগলাম ভাইয়া এটা আমাকে দেন। উনি তো নারাজ। আমাকে দিবেন না। উনিই ক্যারি করবেন। মনে মনে আমি তো খুশি। বাহ, কি সুন্দর জায়গায় আসলাম। এইখানকার মানুষের এত্ত ভালো ! সবাই, সবাইকে কি সুন্দর ভাবে ব্যাগ টানাটানিতে হেল্প করতেছে। এই মুগ্ধতার রেশ কাটে একটা ডাক শুনে। ফজলুল হক হাউজ থেকে কয়েকজন বড় ভাই ডাকছেন। “ওই পোলা, ওই পোলা ! নাম কি তোমার?” আমি বিগলিত হয়ে ৩২ পাটি দন্ত বিকশিত করে বললাম,” নাফিস, ভাইয়া” .. ওপাশ থেকে উত্তর,” ইসলাম, জুনিয়রকে এখনো কিছু শেখাও নাই ? কাইন্ডলি বলে না কেন? যাও তাড়াতাড়ি নিয়ে গিয়ে শেখাও ”
পুরা কনভারসেশন টাই মাথার উপর দিয়ে গেল আমার। ঘটনা কি ? এখানে আসলে সবার নাম কি কাইন্ডলি হয়ে যাই নাকি? এইটা কি জাতীয় নাম নাকি? যাই হোক, এই সব ভাবতে ভাবতে দেখি আমি যে হাউজে থাকবো সেই খানে চলে এসেছি। হাউজের নাম সোহরাওয়ার্দি। হাউজ রং লাল। রুমে নিয়ে আসলেন ইসলাম ভাই আমাকে। বাম পাশের এসিসটেন্ট রুম লিডার সাইডের সেকেন্ড বেড.. ১০ জনের রুম এটা। ৯ জন ক্লাস সেভেন। আর একজন ক্লাস ৯ এর বড় ভাই। সবচেয়ে খুশি হলাম আমার পাশের বেডে দীপ কে দেখে। এই ছেলেটা তো কোচিং এর সময় থেকেই আমার ফ্রেন্ড। যাক, এক হাউজে পরাতে ভালোই হয়েছে বলে মনে হলো..
এইসব ভাবনা চিন্তা যখন করছি তখনি ইসলাম ভাই মুখ খুললেন প্রথম বারের মতন.. ব্যাগ থেকে সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট পরে পরতে বললেন। আমি ড্রেস চেঞ্জ করতে গিয়ে পরলাম বিপদে। এত লোকের সামনে কিভাবে ড্রেস করবো? এবার ত্রাতা হয়ে এলেন ইসলাম ভাই। টাওয়েল পরে সবার সামনেই যে চেঞ্জ করা যায় তা তিনি এক্সপ্লেইন করে দিলেন। নতুন একটা জিনিস শিখতে পেরে আমি আনন্দে উদ্বেলিত। অবশ্য এই আনন্দ কেটে গেল সাথেই সাথেই যখন ইসলাম ভাই সব নিয়ম কানুন বলা শুরু করলেন। সিনিয়র এর গায়ে টাচ লাগলে সরি বলা, প্রত্যেকটা বাক্য এর শুরুতে কাইন্ডলি বলা, ফল আউট হওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। মাথায় একটা বিস্ফোরণ হলো মনে হয়। এগুলা কি বাজে নিয়ম রে ভাই। যাই হোক, ড্রেস চেঞ্জ করে অডিটরিয়ামে চলে গেলাম আবার। আমাদে রিসেপশন অনুষ্ঠান হবে ঐখানে। জেনারেটর নাকি নষ্ট। কারেন্ট নেই। প্রচন্ড গরমে বিশাল খারাপ অবস্থা। ক্রমাগত ঘামছি। মাথায় কোন কিছু ঢুকছেনা। খালি মনে করছি ওই নিয়ম গুলোর কথা। পকেটে একটা রুমাল ছিল.. সেটা প্রায় ভিজে গেছে ঘামে। হাসফাস লাগছিল ভেতরে। একসময় শেষ হলো সেই প্রোগ্রাম। প্যারেন্টস রা আমাদের সাথে হাউজে গেলেন। সাথে টিচার আর বাকি ক্যাডেট রাও.. এই সময়টুকু আমার কাছে অনেকটা ঝাপসার মতন.. তেমন কিছু মনে পরেনা। আসলে নার্ভাসনেস বেড়ে গিয়েছিল এই সময়ে। আর এই ভয় লাগা বা মন খারাপ হওয়া একদম চূড়ায় উঠে যায় যখন প্যারেন্টস দের চলে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসে.. রুমে অলরেডি কান্নাকাটির শব্দ শোনা যাচ্ছে। প্যারেন্টস রা কাদছে নাকি আমার মতন নতুন ঢোকা ছেলে গুলো কাদছে সেটা আলাদা করতে পারছিলাম না। শুনলে অনেকে বিশ্বাস নাও করতে পারে, তবে সত্যি হলো আমার আর আমার ফ্যামিলি মেম্বার দের বিদায় পর্বে কোন কান্নাকাটি ইনভলভ ছিল না। আব্বু আম্মু কিছু উপদেশ দিয়ে আস্তে আস্তে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। আমিও হু হা করে সেগুলো শুনে স্কট , ইসলাম ভাই এর সাথে রুমে চলে আসলাম। চেয়ারে বসে রইলাম কিছুক্ষণ.. সন্ধ্যা হয়ে যাবে কিছুক্ষণ পর। রুমলিডার বড় ভাই আমাদের পায়জামা পাঞ্জাবি পড়তে বললেন।
দীপ কে ফিসফিস করে বললাম ,” ওই দীপ। এই ভাই এর নাম কি ? ”
ও গলা খাকারি দিয়ে জবাব দিল ” আগে আমার নাম শোন ব্যাটা। আমার নাম এখন হাসান ”
লকার এর উপরে ওর লাল রঙের কাঠের নেমপ্লেটে তাকিয়ে দেখি সেখানে সাদা রঙে বড় করে লেখা হাসান, ক্যাডেট নাম্বার ২২৬১। দীপ ছেলেটা হাসান হয়ে গেছে এর মাঝে। আবার জিজ্ঞেস করলাম ,” আচ্ছা বুঝলাম। তা এই ভাই এর নাম কি ?”
“আবরার ভাই.. উনি ক্লাস নাইন এর। আমাদের রুম লিডার”
“আরবার না আবরার ?”
“বললাম তো আবরার। উনার কাছ থেকে সাবধান থাকবি”
“কেন ?”
“রুমলিডার এর অনেক পাওয়ার। চাইলে অনেক কিছু করতে পারবে”
“তুই জানস কেমনে ?”
“আপু বলছে?”
“তোর স্কট কেমন?”
“ভালো। খুব ভালো রে। উনার নাম আল-আমিন ভাই ”
“হুম। আমার স্কট এর নাম ইসলাম ভাই। আমার স্কট তোর স্কটের চেয়ে ভালো”
” হুম কইছে তোরে?”
“একদম। উনি আমার ব্যাগ টেনে আনছে পুরা টাইম”
হুট করে ফার্স্ট বেড থেকে রুমলিডার আবরার ভাই এর গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম। “এই তোমরা দুইজন ক্রসটকিং করতেছ কেন? নাম কি তোমাদের ? হাসান আর নাফিস। ও আচ্ছা। কথা বলার দরকার পড়লে আমার কাছে এসে পারমিশন নিয়ে যাবা যে অমুকের সাথে কথা বলতে চাই। এরপর ওর জায়গায় গিয়ে ওর সাথে কথা বলবা। নিজের বেডে থেকে কথা বলবানা”
আমরা দুইজনই অপরাধীর ভঙ্গিতে মাথা নাড়লাম। এরমাঝে বিকট শব্দে ঘন্টা। আমাদের স্কটরা এসে আমাদের নিয়ে গেলেন বাইরে। অনেক সিনিয়র রা দাড়িয়ে সেখানে। সবাই আমাদের দিকে চিড়িয়াখানার জন্তুর মতন তাকিয়ে আছে। তিনটা লাইন করে দাড়ালাম আমরা। একজন ভাই দেখি বাইরে দাড়িয়ে চিল্লাচ্ছেন। অমুক ক্লাস হারি আপ, তমুক ক্লাস ডাবল আপ। ঘটনা বুঝতে পারছিলাম না। যাই হোক, একসময় হাঁটা দিলাম মসজিদের দিকে। মসজিদও অনেক দূরে। বেশ কিছুক্ষণ হাটতে হয়। মসজিদে গিয়ে খেয়াল করলাম যে অজু করা হয়নি। এখন এই ব্যাপারটা কাকে বলা উচিত সেটা ঠিক ঠাহর করে উঠতে পারছিলাম না। তাই কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ বসেই রইলাম। নামাজ এভাবেই পরলাম। ফিরে এলাম আবার হাউজে। আমাদের গাইড রা রুমে এসে আমাদের সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট আর টাই পরতে বললেন। উনারা যাবেন পড়াশুনা করতে। আমরা নাকি আজকে হাউজেই থাকবো।
কিছুক্ষণ পর দেখলাম সবাই আবার টাই শার্ট পরে কোথায় জানি চলে গেলেন। রয়ে গেলাম শুধু আমরা। এতক্ষণ গেলেও রুমের আর বাকি ছেলে গুলোর সাথে কথা বলা হয়নি। সত্যি কথা বলতে কি ঠিক মতন খেয়াল ও করা হয়নি কে কে আছে রুমে। সুযোগ পেলাম অবশেষে কয়েক জনের সাথে কথা বলার। আমার পাশের বেডের ছেলেটার নাম জিসান। দিনাজপুর বাড়ি। আমার উল্টো সাইডে খালিদ। ছেলেটা দেখতে খুব নাদুস নুদুস। হাসান এর পাশে খোজ পেলাম এক ময়মনসিংহের ছেলের। ছেলেটার নাম জুনায়েদ। ঐপাশে আরো তিনটা ছেলে। এই তিনজন ঢাকার। রাশেদ , নাসিফ আর ইশতিয়াক নাম। ইশতিয়াক ছেলেটাকে দেখে কেমন জানি পিকিউলার লাগলো দেখতে। আলাপ তেমন জমলো না। সবাই কেমন জানি গম্ভীর হয়ে আছে। মন খারাপ মনে হয়। হাসানের জায়গায় ফিরে আবার গল্প করা শুরু করলাম। কারেন্ট চলে গেছে আবার তখন.. জেনারেটর নেই। ভ্যাপসা গরম.. এর মাঝেই হাউজ মাস্টার স্যার আমাদের ডাকলেন। একটা অফিস রুমে গেলাম। স্যার এর নাম নুরূল হক স্যার। স্যার আমাদের সবার সাথেই কথা বললেন। নাম জিজ্ঞেস করলেন সবার। প্রথম ছেলেটার নাম তারিক। কপালে টিপের মতন একটা কালো তিল.. ওর পাশে টিপু নামের একটা ছেলে। ওর পাশে জোবায়ের। এই ছেলে মোটামুটি ভোম্বল দাস.. বেশ মোটাসোটা। ওর পাশে সানি নামের একটা ছেলে। এরপর ফ্যাসফেসে গলায় একটা ছেলে বললো যে ওর নাম রাফি। রাফি নাম শুনে আমার কেন জানি তিন গোয়েন্দার জিনার কুকুর রাফিয়ান এর কথা মনে পরে গেল। তাফির পাশে শাদমান। তার পাশে জাফরি নামের একটা ছেলে। ঢাকার মাদারটেক এ থাকে। মাদারটেক আর জাফরি দুইটা শব্দই আমার কাছে খুব কাবিল টাইপের মনে হলো। ওর পাশে মাহমুদ নামের একটা ছোটখাট ছেলে। বাকি ছেলে গুলো আমার রুমেরই। কে কোথায় থাকে, কে কি পারে সেগুলোও স্যার জিজ্ঞেস করলেন। এর মাঝে স্যার বললেন,” গান পারো কেউ ?” ডানে তাকিয়ে দেখি একটা ছেলে হাত উচু করে দাড়িয়ে আছে.. শাদমান অথবা টিপু। “আমি বাংলায় গান গাই” গানটা গাওয়া শুরু করলো ও। গান ভালো লাগলো না। মাথায় এত চিন্তা নিয়ে এই নতুন জায়গায় এসে বেসুরো গলায় গান গাচ্ছে কেন এই ছেলে তা মাথায় ঢুকলো না। স্যার কথা বলা শেষ করলেন একসময়। আমাদের ও ডিনার এর সময় হলো..
ডায়নিং এ আমরা সমস্ত ক্লাস বসলাম একসাথে। কাটা চামচ আর স্পুন দিয়ে খেতে গিয়ে এলাহী কান্ড ঘটিয়ে ফেললাম.. বেশ কয়েকজন সিনিয়র ভাই আর ১ জন স্যার এসে কিছু নিয়ম কানুন শিখিয়ে দিলেন যে কিভাবে বাম হাতে ফর্ক আর ডান হাতে স্পুন ধরে খাওয়া দাওয়া করতে হবে। মোটামুটি সবকিছুই মাথার উপর দিয়ে গেল। আধপেটা খেয়েই বের হতে হলো ডায়নিং থেকে। বিশাল অবস্থা। খাওয়ার শুরু তে আর শেষে দুই পাশ থেকে কে জানি চিত্কার করে বিসমিল্লাহ আর আলহামদুলিল্লাহ বলে। ডানে বামে তাকানো নিষেধ। যেটাকে বলে এঙ্গেল মারা আর কি। তাই দেখতে পেলাম কে বলে কথা গুলো। আমার কাছে মনে হলো জিনিসটা অনেকটা গায়েবী আওয়াজ এর মতন..
ডিনার এর পর আবার রুমে ফিরে ভ্যাবদা মেরে বসে রইলাম। একসময় আমার স্কট , ইসলাম ভাই আসলেন রুমে। স্লিপিং ড্রেস কোনটা দেখিয়ে দিলেন। নীল রঙের এই উত্কট পোশাক পরে ঘুমাতে হবে ভেবে মনটাই খারাপ হয়ে গেল। রুম লিডার আবরার ভাই এসে অনেক কিছু বললেন। উনাকে বেশ হাসিখুশিই মনে হলো। রাতে হাউজ মাস্টার স্যার আবার ডাকলেন। ওখান থেকে কথা বার্তা শেষ করে ফিরতে ফিরতে ১০:৩০ এর মতন বেজে গেছে। মশারি টাঙ্গানোর আদেশ আসলো। মশারি বের করে আমি আবার ভ্যাবাচেকা খেয়ে বসে রইলাম। কিভাবে টাঙ্গাব এই মশারি। কোন স্ট্যান্ড তো দেখি না কোথাও। বেশ কয়েক জন দেখি সামনের তারে কিভাবে জানি প্যাচ মেরে মশারি টাঙিয়ে ফেলেছে। কিন্তু আমি অনেক কাহিনী করেও পারলাম না। সাদা পোশাক পরা এক লোক এসে টাঙিয়ে দিলেন আমার মশারি। নেমপ্লেটে দেখলাম উনার নাম লেখা জয়নাল। আমাদের হাউজ বেয়ারা নাকি উনি.. বাথরুমে যেতেও ভয় লাগছে। কোন সিনিয়র এর সাথে দেখা হলে কি না করে বসি কে জানে। ভয়ে ঠিক করলাম বাইরে যাওয়া ঠিক হবেনা। এই অবস্থায় ঘন্টা বাজলো।
রুমের লাইট গেল নিভে। চলে গেলাম মশারির নিচে। ডিম লাইট ছিল নীল রঙের। আমার বেডের ঠিক উপরে। ডিম লাইটের দিকে তাকিয়ে সারাটা দিনের ফ্ল্যাশব্যাক করলাম। কি পাগলা একটা দিন গেলো। সকালে ছিলাম কোথায় আর রাতে এখন আছি কোথায় ! বিছানার চাদর আর নতুন কাপড়ের জামা গুলো থেকে এক ধরণের কড়কড়ে গন্ধ আসছে। গন্ধটা নাকে লাগে খুব। মাথার উপরের ফ্যানটা হালকা শব্দ করতে করতে ঘুরছে। চারপাশের নীরবতাকে কে ছাপিয়ে যায় ফ্যান এর মৃদু সেই শব্দ। বাইরে থেকে আসা বেশ কয়েকটা শেয়াল ডাক শুনলাম। গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো কেমন জানি। কান পাতলে দূরের হাইওয়ের উত্তরবঙ্গ গামী বাসগুলোর হর্ণের শব্দ শোনা যায়। আম্মুর চেহারা চোখে ভাসছে এরমাঝেও। সেই কল্পনার ঝাপসা চেহারা আর এই অদ্ভুত নীরবতা মিলে আমার চোখের পাতার কম্পন বাড়িয়ে দিল.. কালকে কি হবে জানিনা কিছু। নতুন ছেলেগুলোর সাথে ঠিক মতন মিশতে পারবো তো ? এই অনিশ্চয়তা নিয়ে ভাবতে ভাবতেই কখন জানি ঘুমিয়ে পরলাম।
১১ বছর হয়ে গেল। আজ আবার এসেছে ১৫ই এপ্রিল।মাঝে মাঝে মনে হয় এখনো সেই ঘুম থেকে উঠিনি আমি। অদ্ভুত সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছি সেই ঘুমে। সেই নতুন ছেলেগুলোর সাথেই এখন আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধন। এরপর একসাথে পার করেছি ৬ টা বছর। বের হয়ে বন্ধুত্বের এই গন্ডী ছড়িয়ে পরেছে আরো ৯ টি ক্যাডেট কলেজের সমমনা ছেলে-মেয়েদের মাঝে।এরকম ফ্রেন্ডশিপ কোথায় পাবো আর আমি ? চিন্তা করা যায় ? এতগুলো ছেলে মেয়ে , কি অবলীলায় আমরা এত কাছের বন্ধু হয়ে গেলাম। ১৫ ই এপ্রিলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ২০০৪ এর এই ১৫ এপ্রিল জীবনে এসেছিল বলেই জীবনের শ্রেষ্ঠ জার্নিটা করতে পেরেছি। পেয়েছি বেস্ট ব্রাদারহুড এর একজন ক্ষুদ্র সদস্য হতে।
শুভ জন্মদিন ক্যাডেট কলেজ ২০০৪ ইনটেক ! বেচে থাকুক আমাদের এই ভালোবাসা।
ইমোশনাল কইরা দিলি.. 🙁
আমি ভাবছিলাম লিখবো, আলসেমি করে আর হলো না।
ভাল লিখছিস..
কাহিনী সব কলেজেই প্রায় একইরকম। খালি চরিত্রগুলোর নাম আলাদা।
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
তুই ও লিখে ফেল একটা । ব্লগে ২০০৪ ইনটেক ফ্লাডিং চলুক 🙂
হুট করে ফার্স্ট বেড থেকে রুমলিডার আবরার ভাই এর গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম। “এই তোমরা দুইজন ক্রসটকিং করতেছ কেন? নাম কি তোমাদের ? হাসান আর নাফিস। ও আচ্ছা। কথা বলার দরকার পড়লে আমার কাছে এসে পারমিশন নিয়ে যাবা যে অমুকের সাথে কথা বলতে চাই। এরপর ওর জায়গায় গিয়ে ওর সাথে কথা বলবা। নিজের বেডে থেকে কথা বলবানা”
ভালো লেখা। মজা পেলাম
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
অনেক ধন্যবাদ :hatsoff:
:clap: :clap:
:hatsoff: :hatsoff:
লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হ'লাম। ফিরে গেলাম তোমার চেয়ে ৩৭ বছর আগের আমার সেই দিনে। অনেক কিছুই একই রকম ছিলো, আবার অনেক কিছুই না। আমি রুম লীডার হিসেবে একজন অতি ভদ্র ও সজ্জন ব্যক্তি পেয়েছিলাম, আবেদ আহাদ চৌধুরী, সিলেটী। শুনেছি তিনি আমেরিকা প্রবাসী। তিনি কলেজ ছেড়ে যাবার পরে আর কোনদিন তার সাথে দেখা হয়নি।
এখনকার ঢাকা টাঙ্গাইল হাইওয়েটা তখন ছিল গ্রামের ভেতর দিয়ে সাপের মত এঁকেবেঁকে যাওয়া একটি সরু পাকা সড়ক। সন্ধ্যের পর সাধারণতঃ বাস ট্রাকের চলাচল হতোনা। তখন নৈশকোচ চলাচলের কোন প্রচলন ছিল না। রাস্তার আশে পাশে কোন দোকানপাট কিংবা মনুষ্য বসতি ছিল না।
"কান পাতলে দূরের হাইওয়ের উত্তরবঙ্গ গামী বাসগুলোর হর্ণের শব্দ শোনা যায়" - আমি ফজলুল হক হাউসে ছিলাম। রাস্তা থেকে আমার হাউসটাই সবচেয়ে কাছে ছিল। সারা রাত কান পেতে রেখেও শুধু ঝিঁঝিঁ পোকা আর শেয়ালের আর্তনাদ ছাড়া আর কিছু শোনা যেত না।
আমাদের সময় কোন নামাজই বাধ্যতামূলক ছিলনা। কোন মাসজিদও আমরা থাকা পর্যন্ত নির্মিত হয়নি, তবে নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো। প্রতিটি হাউসেই একটি করে প্রেয়ার রুম ছিল। জ্যেষ্ঠ ক্যাডেটদের ইমামতিতেই সেখানে নামাজ পড়া হতো। শুধু শুক্রবারের জুম'আর নামাজ কেন্দ্রীয়ভাবে স্টাফরুমে একজন ইমামের নেতৃ্ত্বে পড়ানো হতো।
এমসিসি তে আমার প্রথম দিন নিয়ে একটা কবিতা লিখেছিলাম। সেটা এই ব্লগে প্রকাশনার জন্য জমা দেয়া আছে। কিন্তু ইংরেজীতে লেখা বলে বোধহয় সেটা মডারেটর কর্তৃক প্রকাশনার যোগ্য বলে বিবেচিত হয় নাই। তবে আমাকে কিছু জানানোও হয় নাই। সেখানে তোমার এ লেখার মত আমার কিছু বিস্ময়াভিভূত উপলব্ধি ও অনুভূতির কথা ব্যক্ত হয়েছে।
অনেক ধন্যবাদ খায়রুল ভাই ! আপনাদের মতন সিনিয়র এক্স-ক্যাডেট দের কাছ থেকে এরকম গল্প শুনতে আসলেই অন্যরকম লাগে। আপনার কাছ থেকে কলেজ লাইফের স্মৃতিচারণ মূলক পোস্ট চাই সামনে 🙂
মেলাদিন পর লগ ইন করলাম। পুরনো কথাবার্তা আবার মনে করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ নাফিস মিয়া!
এই অভিজ্ঞতাগুলো কেমন যেন একটা সুতোয় বাঁধা। ঘুরে ফিরে নিজের গল্পই যেন শুনছি বলে মনে হয়।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
অনেক ধন্যবাদ ভাই রকিব ভাই।
আলসেমি করতেছেন মেলা দিন ধরে। কিছু পোস্ট ফোস্ট দ্যান 🙂
🙂 🙂 🙂 🙂
উনিশে মার্চ, ১৯৮৩ তে আমাদের নিয়ে এমজিসিসির যাত্রা শুরু হয়, নাফিস! তিনটে ব্যাচ আমরা একসাথে কলেজে যাই তখন। আমি সবচেয়ে জুনিওর ব্যাচে। আমরা যেমন নতুন ছিলাম আমাদের অনেক টিচারও ছিলেন সদ্য পাশ করা। কত ঘটনা মনে পড়ে গেলো তোমার লেখা পড়তে পড়তে! কত বন্ধুর চোখের জল অথবা কত সিনিওর আপার ভালবাসা অথবা তাদের কারো কারো অকারণ চিৎকার!
বরাবরের মত চমৎকার লেখা!
অনেক ধন্যবাদ আপা ! একদিন সময় করে আপনার কলেজ লাইফের কিছু কাহিনী বা অভিজ্ঞতা লিখে ফেলুন না ! 🙂
লগিন করলাম কমেন্ট করতে। লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো অনেক। অনেকগুলো মানুষরে চিনি, সবগুলো জায়গা চিনি। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় ইট পাথরেরও জীবন আছে। আমাদের জন্য দিনটি ছিল ৪ঠা জুন ১৯৯৬ রোজ মঙ্গলবার। সেই দিনটা এখনও খুব কাছে থেকেই অনুভব করতে পারি। তোমার লেখা পড়ে মনে হলো আসলে ১৯ বছর পার হয়ে গেছে। সেই সময়ে যারা জন্ম নিছে তারাও এখন ক্যাডেট কলেজ থেকে পাশ করে বের হয়ে গেছে !!
তবে অনুভূতি গল্প গুলো যুগ কাল ভেদে একই রকম হয়ে যায়। আমিও তোমার মত সোহরাওয়ার্দী হাউস, আর ক্যাডেট নাম্বারে তোমার বন্ধু আমার বরাবর চারশ পিছনে। মজা হইলো তোমার মত একদম সেই ঘটনা আমারো ঘটছিলো। আমার স্কট সোহেল ভাই যখন আমার ব্যাগ ক্যারি করে আমারে নোয়ে শেড ক্রস করে আসছিলেন তখন ফজলুল হক হাউসের কয়েকজন বড় ভাই আমার নাম জিজ্ঞেস করেন। আমি হাঁটতে হাঁটতেই বলছিলান, জ্বি আমিন। ঐ ভাইয়েরা আমারে ছাইরা দিছিলেন তবে স্কট নগদে ঝাড়ি দিছিলেন। যে কেউ জিজ্ঞেস করলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে তারপরেই কথা বলতে হবে এমনটা শিখাইছিলেন।
আমি রুমে আসার পরে অনেক সিনিয়র একজনকে দেখি আমাকে বলতে যে, তোমার এই জায়গাতে ক্লাশ সেভেনে আমি থাকতাম। তোমার কেমন সৌভাগ্য দেখছ! আমি অবশ্য সৌভাগ্যের কারণ না বুঝে ভ্যাবলার মত তাকিয়ে ছিলাম। উনি আমাকে বলেন আমি কে জানো? আমি নির্দোষ কন্ঠে বলি, না ভাইয়া। ঐ ভাই আমার স্কটরে বেশ সহজ ভঙ্গিতে দেখা করতে বলেন আফটার থার্ড প্রেপ। এত কিছু অবশ্য বুঝি নাই, তবে পরে জানি যে উনি ছিলেন নাফিস ভাই (১৫১৪)। আমাদের হাউসের হাউস লিডার। মজার ব্যাপার হলো এই ঘটনারও অনেক পরে ২০১০ এ আমি যখন বাংলা লিংকের চাকরির ক্লিয়ারেন্স নেই তখন সেই ভাইয়ার সাথে আবার দেখা হয়। মোটামুটি আমাকে চমকে দিয়েই তিনি বলছিলেন, তুমি আমার হাউসের না?
হাউস মাস্টার আমাদেরকেও ডাকছিলেন রাতে। আমাদের হাউস মাস্টার ছিলেন, শিল্পী কামরুল হাসানের ছোট ভাই ফায়জুল হাসান স্যার। উঁনার ছেলেও আমাদের সাথে ঢুকেছিল বলেই হয়তো আমাদের ব্যাচের প্রতি স্যারের বিশেষ মমত্ববোধ ছিলো। নুরুল হক স্যার আমাদের সময়েও ছিলেন। তবে অন্য হাউসের হাউস মাস্টার হিসাবে। স্যার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড খুব পছন্দ করতেন। তবে এটা নিয়ে একটা মজার ঘটনাও আছে (স্যার সিসিবিতে আসেন জেনেও রিস্ক নিয়ে কাহিনীটা বলে ফেলি। বেয়াদবি হলে স্যার মাফ করে দিয়েন)। একবার আমাদের সময়ে নজরুল হাউসের হাউস কালচারাল শো হবে। তো আমাদের ব্যাচমেট যারা নজরুল হাউসের তাদের মুখ থেকে একথা শোনা। স্যার সবাইকে ডেকেছেন কে কী গান গাইতে পারে এটা জানতে। সাধারণত এসব জায়গায় উৎসাহী খুব পাওয়া যায় না। তবে আমাদের অত্যুৎসাহী একজন জানায় সে গান গাইতে চায়। গান শোনবার জন্য স্যার গাইতে বললে, মোটামুটি স্যার এবং ব্যাচমেট সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাংলা সিনেমার কায়দায় গা দুলিয়ে সে গান ধরে " পড়ে না চোখের পলক "। ঘটনাটা তখন সবার জন্য বিব্রতকর হলেও পুরো ব্যাপারটা কথা মনে করে আমরা অনেকেই হেসে উঠি অজান্তেই।
ক্রস টকিং, গ্যাদারিং, প্রপারশান, ফল আউটের মত বেমাক্কা নিয়মগুলো কম বেশি পেইন দিত। তবে সবচেয়ে পেইন খেতাম ঐ কাইন্ডলি বলা নিয়েই। নিজের নাম যে 'কাইন্ডলি আমিন' সেটা ট্রেইন করতে বেশ টাইম লাগত। অবশ্য মাঝে মাঝে আমাদের ফর্ম মিস্ট্রেস এর কাছে কাইন্ডলি বলে বেশ হাস্যম্পদও হয়েছি সময়ে অসময়ে।
জয়নাল ভাই আমাদের সময়ে ফজলুল হক হাউসে ছিলেন, আর মান্নান ভাই ছিলেন আমাদের হাউসে। আমরা বের হয়ে যাবার মাস ছয়েক আগে উনাদের দুইজনের হাউস চেঞ্জ হয়। জয়নাল ভাই অবশ্য ইউসুফ ইয়োহানার সাথে চেহারা মিল থাকার কারণে আমাদের মাঝে ই্য়োহানা নামে পরিচিত ছিলেন।
তোমাদের রুম লিডার আবরার নামটা চেনা চেনা লাগলো। যদিও ঐ ব্যাচটাকে আমরা বেশিদিন পাইনি (তিন মাস খুব সম্ভবত), তবে তৎকালীন মেডিক্যাল অফিসার আবরার স্যারের সাথে নামের মিল থাকাতেই নামটা চিনতে পারলাম।
পরিশেষে বলি, আমার প্রথমদিনের জায়গাটা ছিলো ১২ নাম্বার রুমের এসিস্ট্যান্ট রুম লিডারের দিক থেকে তিন নাম্বারে। আমার ঐ পাশের বাকি দুইটা বেড খালি ছিলো (আমরা চৌদ্দ জন ছিলাম বলে দ্বিতীয় রুমের কিছু জায়গা খালি ছিলো)। রাতে ঘুমিয়ে পড়ার আগেও জানালা দিয়ে ঐ পাশে নজরুল হাউস দেখা যেত। সেই রাতের কথা এখনও স্পষ্ট। কারণ প্রথমদিনের উত্তেজনায় সেই রাতে ঘুমের মাঝে বারে বারে উঠে গেছি, অবশেষে রাইজিং বেলেরও কিছুটা আগেই উঠে যাই। সেই নির্ঘুম হওয়ার পরিণতি বয়ে বেড়িয়েছি কলেজের ছয় বছর এবং তার পরের তের বছরও।
আমিন, এমন লেখাটা কমেন্টে দিলা? কত ভালো একটা পোষ্ট হতো!
জয়নাল ভাই এর সাথে যে ইউসুফ ইয়োহানার চেহারার মিল আছে এইটা কেন আমাদের মাথায় আসে নাই তা ভেবে আফসোস লাগছে 😛
আমরা প্রথম থাকা শুরু করেছিলাম ৬ নাম্বার রুমে। আপনারা ১২ নাম্বার এ। ১২ নাম্বার তো দোতলায়। তখন কি ক্লাস সেভেন দোতলায় থাকতো আমিন ভাই ?
আর , নাফিস ভাই এর নাম হাউজ প্রিফেক্ট এর বোর্ডে দেখেছিলাম বলে মনে পরে।
আগে ১১ আর ১২ নাম্বার রুম ট্রেডিশনালি ক্লাশ সেভেনের রুম ছিলো। আর ছয় আর সাত ছিলো ক্লাশ ইলেভেনের। পাঁচ আর আট ছিলো ক্লাশ টেন/নাইন এর। আমরা যখন এসএসসি ক্যান্ডিডেট তখনই ট্রেডিশন চেঞ্জ হয়। এগারো বারো চলে যায় এসসসি ক্যান্ডিডেটদের দখলে (এটা বিশেষভাবে মনে আছে কারণ ঐ রুম গুলোতে রুম ক্রিকেট বেশ জমতো। আগি হাউস লিডারের পাশের রুমে থাকলেও আড্ডা আর ক্রিকেটের টানে যেতাম)। তখন থেকেই নিচের রুমে ক্লাশ সেভেন এলোকেশন করা হয় প্রথম।
নাফিস ভাই ২৮ তম ব্যাচের (৯০-৯৬) ছিলেন। পরেও বিভিন্নভাবে উনার সাথে কথা বলবার সুযোগ হয়েছে। হাউস লিডার হিসাবে উনি নাকি ত্রাস ছিলেন। আমাদের সময় উনারা এইচএসসি ক্যান্ডিডেট বলে দেখার সৌভাগ্য হয় নি। তবে উনার সাথে পরে যতবার কথা হয়েছে সোহরাওয়ার্দীয়ান এবং মির্জাপুরিয়ান হিসাবে অনেক খাতির পাইছি যেটা ছয় ব্যাচ সিনিয়রের কাছে মোটামুটি অপ্রত্যাশিত।
২০১০ এ যা দেখে আসছি তাতে ৫,৬ ক্লাস সেভেন এর। ৭,৮ ক্লাস ইলেভেন। ১১,১২, ১৩ ক্লাস এইট, নাইন মিক্স। ১৪ আর উপর নিচের দুই ফাইভ ক্লাস টেন।
ভারি সুন্দর লেখা, একটানে যেন আমাকেও নিয়ে গেল ১৯৭৮ এর সেই বৃষ্টিভেজা বিকেলে। প্রথম, - তা যে বিষয়ই হোক, চিরকালের জন্য। ক্যাডেট কলেজের প্রথম দিন, হয়তো সবার অভিজ্ঞতা মোটামুটি একই, তারপরো আলাদা অনন্য। আমারো ইচ্ছে করছে সেই দিনের কথা বলতে, যদিও নতুন কিছুই নেই। :clap:
অনেক ধন্যবাদ মাহবুব ভাই ! আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকলাম কিন্তু।
গল্পগুলো অনেকটা সেই একই রকম ...
"সকালে ছিলাম কোথায় আর রাতে এখন আছি কোথায় ! বিছানার চাদর আর নতুন কাপড়ের জামা গুলো থেকে এক ধরণের কড়কড়ে গন্ধ আসছে। গন্ধটা নাকে লাগে খুব। মাথার উপরের ফ্যানটা হালকা শব্দ করতে করতে ঘুরছে। চারপাশের নীরবতাকে কে ছাপিয়ে যায় ফ্যান এর মৃদু সেই শব্দ। বাইরে থেকে আসা বেশ কয়েকটা শেয়াল ডাক শুনলাম। গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো কেমন জানি। কান পাতলে দূরের হাইওয়ের উত্তরবঙ্গ গামী বাসগুলোর হর্ণের শব্দ শোনা যায়।"
আবার ঘুরে এলাম সেই সব দিনের স্মৃতিঘেরাটোপ । নির্মল স্মৃতিভ্রমণের যুতসই শব্দশৈলী নির্মাণের জন্য ধন্যবাদ ।
ধন্যবাদ মন্তব্যের পাতায় যাঁরা, তাঁদেরও ।
আর হ্যাঁ । মাহবুব, সেদিন আমাদের ওখানেও বৃষ্টি ছিলো । (সম্পাদিত)
০৭ জুলাই ১৯৬৭। আমার প্রথম দিনেও মুষলধারায় বৃষ্টি হয়েছিলো। আষাঢ়ী বর্ষা।
আমি সত্যি সত্যি অনুপ্রাণিত ভাই আপনাদের সবার রেসপন্সে !
অনেক ধন্যবাদ ! :hatsoff:
এই গল্পগুলো প্রায় সবারই এক কিন্তু কখনোই পুরোনো হয় না।
দূর্দান্ত লিখেছো :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
অনেক ধন্যবাদ আহসান ভাই ! :hatsoff: