সুপারশপের শেলফে দেখি সুন্দর করে প্যাক করে রাখা তিলের খাজা। তিলের খাজা! হ্যাঁ তিলের খাজা ই তো!! কি সাংঘাতিক! এতদিন পরে এই জিনিষ দেখলে কি মাথা ঠিক রাখা সম্ভব? এই মুহুর্তে যদি গোটা চারেক না খাই তাহলে আমার বংশ পদবীটাই বৃথা। আবার ওদিকে মধ্যপ্রদেশের আপোষহীন ক্রমবৃদ্ধি আর বাসায় লীডার-অব-দ্য-হাউজের ব্যপক চোখ রাঙ্গানিকে ও তো উপেক্ষা করা সহজ কাজ না।
অনেকক্ষণ ভাবলাম, আশেপাশের অন্যান্য আইলে ঘুর ঘুর করলাম। লো-ফ্যাট ইয়োগার্ট, ব্রাউন ব্রেড, এবং টুকটাক আরও কিছু “সুবোধ ও শালীন” খাদ্যাখাদ্য কেনার ফাঁকে ফাঁকে তিলের খাজা রাখা শেলফটার সামনে দিয়ে কয়েকবার ধীর পদক্ষেপে হেঁটে গেলাম। আড়চোখে দেখতে দেখতে সামনে গেলাম, আবার ঘুরে এলাম। এভাবে লম্বা সময় ধরে নফসের সাথে যুদ্ধ করতে করতে প্রায়-অতিষ্ঠ হয়ে গেলাম। শেষমেশ ধুত্তোরী ছাই বলে হাত দিয়ে ছোবল মারার মত করে কয়েক প্যাকেট তিলের খাজা নিয়ে ট্রলিতে রেখে হন হন করে চেক-আউটের দিকে হাঁটা দিলাম।
চেক-আউটে দরদাম চুকানো শেষ হতে না হতেই একটা প্যকেট ছিঁড়ে কড়মড় কড়মড় করে খাওয়া শুরু করলাম। কেনাকাটার রিসিপ্টটা হাতে নেবার নেবার সময়ে দোকানী নেটিভ ছেলেটার আধা-বিহ্বল চেহারাটা চোখে পড়লো। ওকে একটা চোখ-টিপ দিয়ে আশ্বস্ত করলাম, তারপর গৌতম চ্যাটার্জীর গানটাকে নিজের মত বানিয়ে গুন গুন করে গাইতে গাইতে ট্রলিটা নিয়ে কারপার্কের দিকে হাঁটা দিলাম –
ও মন রে, ও ও মন রে –
বাঙালী করেছে ভগবান রে,
ভুঁড়ি যতই ফুঁসুক, তবু তিলের খাজা খাই রে!
বাঙালী করেছে ভগবান রে।।
হায় হায় আপনি এই প্রথম খাইলেন???
ক্যামনে কি!!!!
লন্ডনে কর্ণার শপ তো বটেই কোন কোন টেসকো তেও পাওয়া যায়।
আমি বড় ক্যাশ এন্ড ক্যারি তে গেলে বক্স কিনে আনতাম।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ছোটবেলায় খুলনাতে পাওয়া যেত (খুব সম্ভবত) ফরিদপুরের বিখ্যাত তিলের খাজা। পাগলের মত পছন্দ করতাম। এখন সেই জিনিসেরই অপভ্রংশ যে এখানেও পাওয়া যাবে তা ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি। তা ও আবার লন্ডনের বাইরে, নেটিভ অধ্যুষিত এলাকার লোকাল Sainsbury's তে! পরে শপের ম্যানেজারের কাছ থেকে জেনেছি ওরা নাকি প্রায় বছর দুয়েক ধরে তিলের খাজা বিক্রি করে আসছে। আফসোস, এতদিন পরে আমার চোখে পড়লো। 🙁 🙁
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
মহিনের ঘোড়াগুলি সিরিজটা খুব ভালো।
তিলের খাজা আমরা চারজন মানে আমি, বউ আর দুই মেয়েই পছন্দ করি।
ছোট টা তো প্যাকেটের পর প্যাকেট শ্যাষ করে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
মাঠের মধ্যে দিয়ে ছুটে যাওয়া জ্যান্ত এক সাপ দেখে আমরা সাত বাঙ্গালি অফিসার যখন কিভাবে তা মেরে অন্যদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারার গুরু-গম্ভির আলোচনায় লিপ্ত, তখন দেখেছিলাম উচ্ছসিত চৈনিকের মুখ....
তার উচ্ছাস সাপটিকে রক্ষার নয়, বরং সেটা ধরে রেধে খাওয়ার ইচ্ছা প্রসুত ছিল।
একটি জলজ্যান্ত সাপ দেখে ভয় নয়, ঘৃনা নয়, বিবমিষা নয় - জীভে জল আসতে পারে কারো, ভাবা যায়?
যায়।
আর কারন এই একই। (সম্পাদিত)
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
এই টা নরমালি ট্রেনিং এর অংশ নাকি স্পেশাল ট্রেনিং বা কমান্ডো ট্রেনিং এর পার্ট। লিঙ্ক।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ধুর মিয়া, এইটা কি দিলা! মুখে যে তিলের খাজার স্বাদ লেগেছিল তা নিমেষে উবে গেল যে ... 😕 😕 😕 😕
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
এই জন্যেই গানটাতে চৈনিকদের নিয়ে কিছু বলা নেই। কল্পনা করুন তো, "আমি যদি চাইনিজ হতাম সাপ দিয়ে বারবিকিউ খেতাম" - টাইপের কথা যদি কোন গানে থাকে তাহলে সেই গানের শ্রোতাদের কি অবস্থা হতে পারে? :no: :no:
তবে সেই চৈনিক সৈনিকের দিক থেকে চিন্তা করলে ব্যাপারটা আবার সম্পুর্ন অন্য রকম মনে হবে। সে হয়তো মনে মনে ভাবছে, আহা! এরকম নাদুস নুদুস একটা তেল চুকচুকে বেওয়ারিশ সাপ হেলে দুলে চড়ে বেড়াচ্ছে, আর তা দেখার পরেও জিভে জল আসবেনা, ভাবা যায়! সিনার দিকের মাংসটা যা হবে না! আচ্ছা, তোমরা কিভাবে লোভটা সামলাচ্ছো বলো তো?
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
😀 😀 😀
গানটা ভাল হয়েছে।
চৈনিকের প্রশ্নটাও "সুপার ফাইন"
(মিঃ মানিক চন্দ্র শীল-এর প্রিয় একটি রিমার্ক......)
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:boss: :boss:
আহা ... শীল স্যারকে মনে করিয়ে দিলেন। ক্লাস সেভেনে থাকা কালে আমাদের অনেকেরই বেষ্ট টিচার ছিলেন ... অনুপ ঘোষালের মত দরাজ গলা আর সেই গলায় ঝোলানো টাই এর বিশাল বড় ণ্বট ...
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
হাতের লিখাও তো ছিল মুক্তার মতো।
ল্যাবে লিখে রেখেছিলেন "আগাসিস সেইড, লার্ন ফ্রম নেচার, নট ফ্রম বুক"।
সেই থেকে আমার বন্ধু নিসার হয়ে গেল সর্বজ্ঞ।
কারন আমরা বলতাম, "শীল বাবু সেইড, লার্ন ফ্রম নিসার, নট ফ্রম বুক।"
একদিন আরেক বন্ধু প্র্যাকটিকাল করার সময় স্যারকে জিজ্ঞাসা করলো, "স্যার এই আগাসিসটা কে?"
ওর জিজ্ঞাসার টোনে কিছু একটা ছিল, যা ওনার পছন্দ হলো না।
বললেন, "আগাসিস কিডা? আগাসিস একখান বিটা........."
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:)) :)) :)) :))
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
ভাই, তিলের খাজার মচমচে শব্দ শুনতে পালাম লেখাটা পড়ার সাথে সাথে......ব্যাকুলতা বাড়লো!!!!
তানভীর আহমেদ
আশা হারিওনা। খোঁজ নিয়ে দেখ, তোমার আশে পাশেও পেয়ে যেতে পারো।
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
আহা তিলে খাজা। এখনও জিভে জল আসে কিন্তু বিধি বাম। অগ্ন্যাশয়ে অাততায়ী 🙁
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
বলে খেয়ে ফেলেন ভাই, কিচ্ছুটি হবে না ... 😉 😉
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
:dreamy:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
মোস্তাফিজ ভাই, কথাটা "অগ্ন্যাশয়ে অগ্নুৎপাত" হলে পুরোদস্তুর জটায়ু-compliant হয়ে যেত। 😀 😀
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
:khekz: :khekz:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
মুখরোচক খাবার নিয়ে জিভে জল লেখা! আ হা
কি? আছে আপনাদের ওখানে এমন জিনিস? হেহ হেহ হেহ ... 😀 😀
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
প্রায়শই কিনি। খাই একটু ভেঙে... তারপর আর একটু... তারপর হঠাৎ প্যাকেট ফাঁকা আবিষ্কার করলে ভাবি পরের প্যাকেটটা আজ আর খোলা ঠিক হবে না।
তো এভাবে বাপ ব্যাটা শুধু আবিষ্কার করি প্যাকেটের সংখ্যা অজান্তেই কমছে।
আহা আমার কন্যাটি অতোটা না হলেও পছন্দ করতো ভালোই। এখন শুধু মেন্যুতে নেই আর ওভাবে।
😀 😀
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।