চার্চ, শুঁড়িখানা ও অশনির সংকেত

গল্পটা মোটামুটি এরকম – একদিন এক চার্চের ঠিক সামনেই একটা শুঁড়িখানা চালু হল। এহেন দুষ্কর্মে ক্ষুব্ধ হয়ে চার্চের পাদ্রি-পুরুতগন দিন রাত ওই শুঁড়িখানার বিরুদ্ধে ঈশ্বরের কাছে নালিশ দিয়ে প্রার্থনা করতে লাগলেন। তাঁদের লাগাতার বদ-দোয়ার কারনেই হোক কিংবা নিছক কাকতালীয়ভাবেই হোক, কয়েকদিন পরেই বজ্রপাত হয়ে শুঁড়িখানাটি পুড়ে ধ্বংস হয়ে যায়। তখন শুঁড়িখানার মালিক আদালতে গিয়ে চার্চ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিল। সে বলল, শুঁড়িখানার বিরুদ্ধে এই চার্চের পাদ্রি-পুরুতদের প্রার্থনার কারনেই সেটি ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু চার্চ ওয়ালারা এই অভিযোগ মানতে নারাজ। শেষমেশ কোন সুনিশ্চিত সিদ্ধান্তে আসতে না পেরে বিচারক মহোদয় লিখলেন, “মামলাটির রায় দেয়া খুবই কঠিন। কারণ, এখানে এক পক্ষে আছেন এক মদ বিক্রেতা, যিনি প্রার্থনার ক্ষমতায় বিশ্বাসী আর অপর পক্ষে আছে একটি চার্চ ও তার পাদ্রি-পুরোহিত গন, যারা কিনা প্রার্থনার ক্ষমতায় বিশ্বাস করেন না! ”

এবার বাস্তবে ফিরে আসি। আজ থেকে আড়াই শত বছর কিংবা তারও আগের কথা। তখনকার সময়ে ইউরোপ এবং আমেরিকায় চার্চ এবং খ্রিষ্টান মোল্লাদের সাংঘাতিক প্রতাপ। তাঁরা আবার ক্যাথলিক, প্রটেস্টান্ট, এরকম অনেক শাখা-উপশাখায় বিভক্ত। প্রত্যেকেই নিজেদেরকে ঈশ্বরের সহি-এজেন্ট বলে দাবী করেন আর অন্যদেরকে শয়তান, নাস্তিক, ব্লাসফেমাস, হেরেটিক, ডাইনি, ইত্যাদি বলে গালিগালাজ করে থাকেন। সেরকম সুযোগ পেলে তাঁরা ভিন্ন মতাবলম্বীদেরকে খুন-খারাবী করতেও পিছ পা হতেন না। কিন্তু মজার ব্যাপার হল, বিজ্ঞান ও মুক্তচিন্তার বিরুদ্ধে সব ধর্মের সব মোল্লারাই আবার একজোট হয়ে যুদ্ধ করতেন, এখনও যেমন করেন।

সেকালে তাঁদের ভিন্ন ভিন্ন শাখা প্রশাখার মধ্যে চার্চ বানানোর জন্য রিতিমত প্রতিযোগিতা লেগে যেত। আর এই চার্চ গুলিই হত নিজ নিজ এলাকার সবচেয়ে উঁচু দালান। সেই আদ্যিকাল থেকে দেখা গেছে যে, ঝড়-ঝঞ্জা হলে প্রায়শই কোন না কোন চার্চের উপরে বজ্রপাত হয়। অথচ আশেপাশের সাধারন ঘরবাড়ি, এমনকি গণিকালয় কিংবা মদের আখড়া গুলোও দিব্যি পার পেয়ে যায়! বড়ই গোলমেলে ব্যাপার। তাঁরা বিশ্বাস করেন বজ্র হচ্ছে শয়তানের দিকে ছুঁড়ে মারা ঈশ্বরের আগুন-তীর। তাহলে কি শয়তানরা সব চার্চ গুলোর চুড়ায় এসে ভীর করে থাকে? ধীরে ধীরে এহেন সন্দেহ তাঁদের মনে দানা বাঁধতে থাকে এবং অস্তিত্বের প্রয়জনে এক পর্যায়ে তাঁরা এর একটা ব্যাখ্যাও দাঁড় করায়।

ব্যাখ্যাটি এরকম যে – কোন চার্চে বজ্রপাত হলে বুঝতে হবে যে সেই চার্চ ও তার অনুসারিরা ঈশ্বরের শত্রু, ভণ্ড, শয়তান! এবং এক পর্যায়ে এরকম একটি বিশ্বাস দৃঢ় ভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। এখন, কোন দুই চার্চের অনুসারীদের মাঝে বিবাদ হলে সবাই পরবর্তী বজ্রপাতের জন্য অপেক্ষা করে। যে চার্চটিতে আগে বজ্রপাত হবে সেই চার্চটি হেরে যাবে। মনে করিয়ে দিচ্ছি, বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন তখনও তাঁর সেই বিখ্যাত ঘুড়িটি ওড়াননি, তখনও তিনি মেঘ-বিজলির রহস্য উদঘাটন করেননি। বজ্র যে মেঘের বিদ্যুৎ এবং সে যে সব সময় সবচেয়ে উঁচু দালানটাকে আঘাত করে – এই তত্বটা সেকালে ছিল সম্পূর্ণ অজানা।

কয়েক বছর পরে বজ্রপাতের রহস্য উদঘাটন হল। আবিষ্কার হল লাইটনিং রড বা বজ্র নিরোধক দণ্ড। দালানের চুড়ায় এই দণ্ড স্থাপন করলে সেই দালানে আর বজ্রপাত হবে না। আগে বছর বছর বজ্রপাতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হত, এখন সেটা ঠেকানোর এক অসাধারন উপায় পাওয়া গেল। কিন্তু এই আবিষ্কারের কথা জানতে পেরে খ্রিষ্টান মোল্লারা যথারীতি ক্ষেপে গেলেন। তাঁরা বললেন, মানুষের তৈরি রড ঈশ্বরের ছোড়া অগ্নিবাণ ঠেকিয়ে দেবে! এ তো রীতিমত অনাচার, ব্লাসফেমি, নাস্তিকতা! ক্ষোভে ফুঁসে উঠলেন তাঁরা সবাই। লাইটনিং রড কে শয়তানের রড বলে ডাকা শুরু করলেন। নিজেরা তো ব্যবহার করলেনই না, অন্য কেউ তাঁদের বাড়িতে এই রড ব্যবহার করতে চাইলে তাকেও বাধা দিতে থাকলেন। এমন কি, যথারীতি, সুযোগ পেলে খুন-খারাবী করতেও পিছ পা হতেন না।

কিন্তু অন্ধ কু-সংস্কার দিয়ে একটা সত্যকে তো অনন্তকাল চেপে রাখা যায় না। এক্ষেত্রেও তাই হল, আস্তে আস্তে মানুষ এই রডের কার্যকারিতা টের পেতে থাকলো। এক পর্যায়ে একে একে সবগুলো চার্চের চুড়াতেই এই রড স্থাপিত হয়ে গেল। জবরদস্ত প্রার্থনা করে, তুমুল ঘণ্টা বাজিয়েও যেখানে বজ্রপাতের হাত থেকে রেহাই মিলতো না, সেখানে এই একটি রড দিয়ে সারাজীবনের জন্য নিশ্চিন্ত হওয়া যায়! কি আর করা? ঠেলায় পড়ে হলেও শেষমেশ কু-সংস্কার ছেড়ে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারটাকে মেনে নিতে হল। ইতিহাসে এরকম ঘটনার আরও অনেক নজীর আছে। এখানে এই লেখাটিতে প্রসঙ্গক্রমে শুধুমাত্র খ্রিষ্টান মোল্লাদের কথা বলা হয়েছে, বাস্তবিক পক্ষে দেখা গেছে, অন্যান্য ধর্মের ধর্মান্ধরাও তাঁদের চেয়ে মোল্লাগিরিতে কোন অংশে কম নন।

এতো গেল বিজ্ঞানের সাথে গোঁড়া ও কু-সংস্কার আচ্ছন্ন মোল্লাদের বিবাদের কথা। বিজ্ঞান বনাম ধান্দাবাজ ব্যবসায়ীদের মাঝেও এরকম ঘটনার ইতিহাস আছে। উনবিংশ শতাব্দির শেষার্ধে নিকোলা তেসলা আবিষ্কার করেন অল্টারনেটিং কারেন্ট জেনারেটর। বাজারে তখন প্রচলিত ছিল টমাস এডিসনের ডাইরেক্ট কারেন্ট জেনারেটর। তীব্র মাত্রার পরিবেশ দূষণকারী এইসব ডিসি জেনারেটর থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ দিয়ে জ্বালানো বাতিগুলো কেরোসিন শিখা কিংবা মোমবাতির চেয়ে খুব একটা ভালো আলো দিত না। পেশাদার ব্যবসাবাজ এডিসন বুঝে গেলেন যে, মানুষ যদি তেসলার এসি জেনারেটর ব্যবহার শুরু করে তাহলে তাঁর ডিসি জেনারেটরের বাজার শেষ। সাথে সাথে তিনি অল্টারনেটিং কারেন্টের বিরুদ্ধে শুরু করে দিলেন এক নোংরা প্রোপাগান্ডা-ওয়ার। তাঁর সেই সর্বাত্মক মিথ্যা প্রচারনায় মানুষ বেশ দীর্ঘ সময় ধরে বিভ্রান্ত হয়ে ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখতে পারেননি। গত প্রায় একশ’ বছর ধরে ইলেক্ট্রিক্যাল ল্যাব আর জাদুঘর ছাড়া পৃথিবীতে কোথাও ডিসি জেনারেটর দেখা যায় না।

সাম্প্রতিক কালে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কে অস্বীকার করে কিছু মানুষ ব্যাপক প্রচারনা চালাচ্ছেন। তাঁরা এখন পর্যন্ত সাফল্যের সাথে আমেরিকার মত একটি পরাশক্তির রাষ্ট্রযন্ত্রকে তাঁদের পক্ষে রাখতে পেরেছেন। একথা অনস্বীকার্য যে, আজকের দিনে মানব জাতির জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির পেছনে আমেরিকার একটা বড় অবদান রয়েছে। কাজেই এই গ্লোবাল ওয়ার্মিং ঠেকানোর যুদ্ধে আমেরিকার অনুপস্থিতি মানে পুরো মানব জাতির জন্য এক বিরাট ক্ষতি। আমরা দেখেছি জুনিয়র বুশ সাহেবের সেই আট বছরের শাসনামলে আমেরিকাতে স্টেমসেল নিয়ে গবেষণা প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। তাঁর মন্ত্রণাদাতা দের মাঝে ভুরি ভুরি শিক্ষিত এবং বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ ছিলেন, কিন্তু ভোট ব্যবসার হিসাব-নিকাশ ঠিক রাখার জন্য তাঁরা এমনটি করেছিলেন। সেদেশের সমাজ ও রাজনীতিতে খ্রিষ্টান মোল্লাদের ব্যাপক প্রভাব। তাঁদের ধারনা স্টেমসেল নিয়ে গবেষণা করলে মহাপাপ হবে এবং ঈশ্বর ক্ষেপে যাবেন! সেদেশের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে বিপুল সংখ্যক সাধারন জনগণ এই কথা বিশ্বাস করেছিলেন। আমি এতে খুব বেশী অবাক হইনি, সেদেশের অনেক শিক্ষিত ও উচ্চ-শিক্ষিত মানুষ আছেন যাঁরা আজও বিশ্বাস করেন যে, পৃথিবীর আকার গোল নয়, চ্যাপ্টা!

আমি রীতিমত আতংক অনুভব করি যখন দেখি সেদেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ বিবর্তনবাদকে অস্বীকার করেন। তাঁদের বিরাট সংখ্যক মানুষ স্কুলে বিজ্ঞান পড়ানোর ঘোর বিরোধী। এমনকি অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের শিশু কিশোরদের সামনে বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদেরকে সমাজ, রাষ্ট্র ও ধর্মের শত্রু হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। এই শিশু কিশোরদের অনেকেই বড় হয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেবে, বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে, অনেকে ইতিমধ্যে দিচ্ছেন বা দিয়েছেন। আর কেন জানিনা, আমেরিকান সমাজের এক একটা খারাপ অভ্যাস বিশ্বের অন্যান্য সমাজের উল্লেখযোগ্য অংশের মাঝে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সংক্রামিত হয়ে যায়। আমেরিকার ভালো অর্জনগুলোকে অনুকরন করার যোগ্যতা সবার নেই, এটাই সম্ভবত এই বদভ্যাসে আক্রান্ত হবার সব চেয়ে বড় কারণ।

এখনও যাঁরা বিবর্তনবাদকে অস্বীকার করেন তাঁরা বিবর্তনবাদ সম্পর্কে তেমন কিছু না জেনেই স্রেফ বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে এর বিরোধিতা করেন। তাঁরা প্রায়শই নিজেদের মনগড়া আজগুবি কথাবার্তাকে বিবর্তনবাদ বলে চালিয়ে দেন এবং পরমুহুর্তে সেই আজগুবি কথা বলার অভিযোগ তূলে বিবর্তনবাদকে আজগুবি বলে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করেন। তাঁদের মাঝে সকল যুক্তি-প্রমাণ কে অন্ধ ভাবে অস্বীকার করার একটা প্রবণতা দেখা যায়। এঁদেরকে কোনভাবেই বিজ্ঞান্মনস্ক মানুষ বলা যাবে না।

এখন, বিজ্ঞানীরা দেখতে পাচ্ছেন যে, অচিরেই মানব জাতির জন্য এক ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসতে যাচ্ছে। সেটি হল, আজ থেকে কয়েক বছরের মধ্যে এন্টিবায়োটিক এর কার্যকারিতা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই অনেক এন্টিবায়োটিক আর ঠিক মত কাজ করতে পারছে না। আর এর ফলে সাধারন মামুলী কাটা-ছড়া, শর্দি-কাশি থেকেই ভয়াবহ ইনফেকশন হয়ে মানুষ মারা যাবে। ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য সংক্রামক জীবাণুরা ক্রমাগত বিবর্তিত হতে হতে এক সময় তারা এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধে সক্ষম হয়ে উঠছে। এরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম তৈরি করে ফেলে। এছাড়া আরও কিছু বিশেষত্বের কারনে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই এরা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলে। পুরো ব্যাপারটার মুলে রয়েছে বিবর্তন ও ন্যাচারাল সিলেকশন।

অতি দ্রুত এন্টিবায়োটিকের কোন কার্যকর বিকল্প আবিষ্কার করতে না পারলে কোটি কোটি মানুষের প্রান বিপন্ন হবে। এমনকি পৃথিবী থেকে মানুষ বিলুপ্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। এখন এই সব মানুষেরা যদি বলেন যে, যেহেতু বিবর্তন বলে কিছু নেই অতএব এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বলেও কিছু নেই, তাহলে কি অবস্থা হবে? বিবর্তনবাদকে অস্বীকার করলে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সকে স্বীকার করার কোন সুযোগ থাকে না। এবং সেকারণে তাঁরা যদি তাঁদের ক্ষমতা ব্যাবহার করে এন্টিবায়োটিকের বিকল্প আবিষ্কার করার প্রয়াসকে প্রচণ্ড ভাবে বাধাগ্রস্থ করেন, তাহলে কেমন হবে? গ্লোবাল ওয়ার্মিং কে অস্বীকার করার কুফল পূর্ণমাত্রায় পেতে পেতে হয়ত আমাদের বর্তমান প্রজন্ম পার হয়ে যাবে। কিন্তু এন্টিবায়োটিকের কোন কার্যকর বিকল্প আবিষ্কার করতে না পারলে আর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসবে। আর সেই দুর্যোগের আবির্ভাব ঘটলে তার হাত থেকে কিন্তু ধনী কিংবা গরিব, পশ্চিমা কিংবা এশিয়ান, ধার্মিক কিংবা নাস্তিক, কেউই রেহাই পাবেন না।

( ইউনিভারসিটির ছোট ভাই ওয়াহিদ আসিফ এর ফেসবুকে চার্চ, শুঁড়িখানা ও বজ্রপাত নিয়ে এই জোকটি পড়েছিলাম। ওটা পড়ার পরেই এগুলি নিয়ে বাস্তব ভিত্তিক কিছু সিরিয়াস কথা লিখতে ইচ্ছে হল। শেষের দিকে দেখি কথাগুলো অনেক বেশী সিরিয়াস হয়ে গেছে! )

৩,৬৬৭ বার দেখা হয়েছে

৩২ টি মন্তব্য : “চার্চ, শুঁড়িখানা ও অশনির সংকেত”

  1. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    :clap: :clap:
    আমিও কাজ থেকে ফেরার সময় দেখি একদল লোক 'Stop Abortion, it's murder' প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেখানে মানব ভ্রূণের নানান রকম ছবি থাকে।
    অন্যদিকে বিশ্বাসের প্রাবল্যে বিজ্ঞানও আর বিজ্ঞান থাকেনা -- ধর্মের মতই হয়ে যায়।

    জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
      অন্যদিকে বিশ্বাসের প্রাবল্যে বিজ্ঞানও আর বিজ্ঞান থাকেনা -- ধর্মের মতই হয়ে যায়।


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      ধন্যবাদ নূপুরদা ।
      আমিও abortion কে সাপোর্ট করি না। কিন্তু সমস্যা হল, মোল্লারা abortion কে নিষিদ্ধ করতে বলে, আবার contraception কে এইডস এর চেয়েও ভয়াবহ বলে প্রচার করে। এটা নারীর প্রতি এক ভয়াবহ রকমের নিবর্তনমুলক মানসিকতা।


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    চার্চগুলো তাদের ক্ষমতা আর আধিপত্য বজায় রাখার জন্য এমন এমন কিছু নিষ্ঠুর কিছু হাস্যকর কাজ করেছে যেগুলো শুনে রীতিমত হতবাক হয়ে যায় মাঝে মাঝে।

    আমরা সবাই কিভাবে যেন ধীরে ধীরে এক্সট্রেমিস্ট হয়ে যাচ্ছি, সব পক্ষ যার যার মতবাদ, মানসিকতায় শিকড় গেড়ে বসে থাকছে। বিপক্ষ যুক্তি মতবাদ শোনার মত সহনশীলতাও নেই 🙁


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      এক্সট্রেমিস্টদের সংখ্যা কম হলেও তাঁদের গলাই সবাই শুনতে পায়। এত হতাশ হবার কিছু নেই, সেই আদ্যিকাল থেকেই এরকম চলে আসছে। 🙂


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  3. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    এ্যান্টিবায়োটিকের এই ভয়াবহ সতর্কবার্তা মাস দুয়েক আগে যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশ করলো তখন রীতিমত ভয় পেয়েছিলাম। এমন একটি পরিস্থিতি যেটা আসলে বুঝতে সময় লাগবে। কারণ, এ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছেনা এবং তার ফলে মানুষ মারা যাচ্ছে--এই খবরটি প্রচার পেতে সময় লাগবে। কারণ উপরে ডিসিশান মেকার গোছের যারা আছেন তারা বিশ্বাস করতে চাইবেন না। জানিনা সেদিন কি হবে।
    আর জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কি আর বলবো। পলিসি পর্যায়ে পড়াশোনা করছি এসব নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাইনিং হলে কিছু সিভিল ও মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অনার্সের ছাত্রছাত্রীদের সাথে কাজ করি। ওরা কথা প্রসংগে বলছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং যদি হয় তাহলে এখানে এত বরফ পড়ছে কেন? ইস্ট কোস্ট, আপার পেনিনসুলা এত ঠান্ডা পড়ছে কেন বছরের পর বছর? শুনে হতাশ হলাম। সাধারণত পড়াশোনা বিষয়ক কথা পরিচিত সার্কেলের বাইরে করি না কিন্তু এবার ভাবলাম একটু জ্ঞান দান করি। সুপাত্রে হবার সম্ভাবনা আছে। বুঝিয়ে বললাম ব্যাপারটা আসলে ক্লাইমেট চেঞ্জ। গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর একটি কুফল মাত্র। সারা পৃথিবীর সামগ্রিক তাপমাত্রা বাড়ছে ঠিকই তারমানে এই নয় যে আপার পেনিনসুলাতে ঠান্ডা বেশী পড়তে পারবে না। তাপমাত্রা বাড়ার ফলে ব্যালেন্স নষ্ট হচ্ছে। কোথাও দাবদাহ আর কোথাও হিমশীতল। সমূদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। আমি যেই দেশ থেকে এসেছি সেই দেশের দক্ষিণাংশ ডোবা শুরু করবে এই শতকের শেষ দিক দিয়ে। ঠান্ডা কিংবা গরম, চরমভাবাপন্ন আবহাওয়াই হলো ক্লাইমেট চেঞ্জ।--এইটুক বলে থামার পর দেখি হা করে তাকিয়ে আছে। প্রথম প্রশ্ন আসলো, "তুমি কি বিষয়ে পড়াশোনা করছো?" উদ্ভট এক জাতি এই মার্কিনিরা। 🙂


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
    • জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

      সমস্যা আসলে মার্কিনিদের না, ক্লাইমেট চেঞ্জ টার্ম তো ইদানিং লাইমলাইটে আসল। এর আগ পর্যন্ত সবাই গ্লোবাল ওয়ার্মিং নামেই জানত! যে কোন লে'ম্যানের কাছে 'গ্লোবাল ওয়ার্মিং' বা 'বৈশ্বিক উষ্ণতা' শুধু তাপমাত্রাজনিত সমস্যা মনে হতেই পারে। :-B


      ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

      জবাব দিন
      • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

        ঠিক কথা। শুধু মার্কিনিনা কেউই ঠিক মত জানে না। মার্কিনিদের সমস্যা অন্য জায়গায় ক্লাইমেট চেঞ্জ ডিনাই করা রাজনৈতিক মতাদর্শের অংশ। ক্লাইমেট ডিনায়ার্স-কনজার্ভেটিভ পলিটিক্স-রিপাবলিকান সব একই বর্তনীর বিভিন্ন রঙের লাইট। কপাল ভালো বাঙলাদেশে লীগ-দলের এইসব নিয়া ভাগাভাগি নাই। আরে জানেই না ঠিক মত মারামারি করবো কইথেইকা?! 😀 😀 😀 আমি নিজেই ২০১২ সালের আগে (যেই বছর মাস্টার্স করতে আইলাম) ঠিক মত জানতাম না। যা জানতাম ভুল জানতাম! 😛 😛


        \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
        অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

        জবাব দিন
      • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

        একথা ঠিক যে, অনেক সময় বৈজ্ঞানিক টার্ম গুলো আমাদের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি করে। কিন্তু যে নামেই ডাকা হোক না কেন, একজন লেম্যানের তো উচিত ওই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কথা মেনে নেয়া। এমন তো না যে তাঁদের কাছে এক্সপার্ট দের বক্তব্য পৌছাচ্ছে না। কিন্তু তারপরেও তাঁরা এসকল ব্যাপারে অজ্ঞ থাকেন, আবার সেই অজ্ঞতা নিয়েই এক্সপার্টদের কথার বিরোধিতা করেন!


        গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

        জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      :clap: :clap: :clap:


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  4. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    ব্যক্তিগতভাবে এন্টিবায়োটিক নিয়ে আমি চিন্তিত নই। কেননা মানুষের সৃষ্টিশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তির উপর আমার ভরসা আছে। তারা কোন না কোন ভাবে এর সমাধান করেই ফেলবে। B-)

    আমার ভরসা নেই মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যের উপর। আমরা সবাই ই আসলে বেসিক্যালি রেসিস্ট এবং এক্সট্রিমিস্ট! কেউ লুকিয়ে রাখতে পারে আর কারও টা প্রকাশ পেয়ে যায় - এই যা পার্থক্য! আজ থেকে ১০০/১৫০ বছর পর বিবর্তনবাদীরা (মানে যারা ধর্মকে/ধর্মপালনকারীদেরকে দেখতেই পারে না, আর কি!) যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ্য হয়ে যায় তারা অবশ্যই ধর্ম পালনকারীদের উপর অত্যাচার করবে। গ্যারান্টিড! 🙁


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)
      আজ থেকে ১০০/১৫০ বছর পর বিবর্তনবাদীরা (মানে যারা ধর্মকে/ধর্মপালনকারীদেরকে দেখতেই পারে না, আর কি!) যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ্য হয়ে যায় তারা অবশ্যই ধর্ম পালনকারীদের উপর অত্যাচার করবে। গ্যারান্টিড!

      কথাটা ফালায় দিতে পারতেসিনা। সত্য হবার সম্ভাবনাই বেশী। তবে গত কয়েকশ বছরে বিবর্তনবাদীরা এখন পর্যন্ত যেহেতু লাইনে আসতে পারে নাই ভবিষ্যতে আসার চান্স কম। ধর্ম এক শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান (institution) সামাজিক ব্যবস্থা থেকে একটা প্রতিষ্ঠান গায়েব করে দেয়া সহজ না।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      তোমার মুখে ফুল-চন্দন পড়ুক, জুনায়েদ! 🙂
      আশাকরি ব্যপক কোন দুর্যোগ ঘটার আগেই এর একটা সমাধান আবিষ্কার হয়ে যাবে।

      "বিবর্তনবাদীরা (মানে যারা ধর্মকে/ধর্মপালনকারীদেরকে দেখতেই পারে না, আর কি!)" - এটা তুমি কোথায় পেলে? অতিসরলীকরণ হয়ে গেল না?


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
      • জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

        মুজিব ভাই, আমি সরলীকরণ করতে চাই নি... 🙁 O:-)
        আসলে মন্তব্যকরণ এর সময় কম খেয়ালকরণ (!) জনিত সমস্যার কারনেই শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা সরলীকরণের মতন দেখাচ্ছে!! আমি আসলে বলতে চেয়েছিলাম বিববর্তনবাদীদের মধ্যে যারা কট্টরপন্থী- অর্থাৎ একেবারেই ধর্মের বিরুদ্ধে, তাদের কথা। আমি জানি, ধর্ম ও বিজ্ঞানকে সুন্দরভাবে ব্যালান্স করে চলছেন - এমন বহু লোক আছেন! 😀


        ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

        জবাব দিন
        • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

          থ্যাংকস জুনায়েদ, :clap:
          এবার

          ..যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ্য হয়ে যায় তারা অবশ্যই ধর্ম পালনকারীদের উপর অত্যাচার করবে। গ্যারান্টিড!

          - প্রসঙ্গে আসা যাক, ইতিহাস এব্যাপারে কি ইঙ্গিত দেয়? এক কালে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নির্দেশে "পৃথিবী গোল" কিংবা "সূর্যের চারপাশে ঘোরে" - এধরনের কথা বলার দোষে অনেক বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ কে অত্যাচার করা হয়েছে, পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এখন কিন্তু অল্প কিছু মানুষ বাদে সবাই "পৃথিবী গোল"বাদী হয়ে গেছে। একারণে কোন ধর্ম পালনকারী অত্যাচারিত হয়েছে কি? বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠান থেকে নির্দেশনা দিয়ে ধর্ম পালনকারীদের উপরে অত্যাচার করার কোন নজীর ইতিহাসে নেই। উল্টো উদাহরণ কিন্তু আছে ভুরি ভুরি। 🙂
          তবে হ্যাঁ, সব যুগেই কিছু লোক ছিল যারা ধর্ম ও বিজ্ঞানের মাঝে অহেতুক বিতর্ক উস্কে দিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। এদের দ্বারা সকল মানুষেরাই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে অত্যাচারিত হয়। (সম্পাদিত)


          গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

          জবাব দিন
          • জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

            মুজিব ভাই,
            ব্যাপারটাকে 'ধর্ম বনাম বিজ্ঞান' না দেখে 'সংখ্যাগরিষ্ঠ বনাম সংখ্যালঘু' হিসাবে দেখুন- আমার কথার কিছুটা হলেও যৌক্তিকতা পাবেন। পৃথিবীর সবখানেই সংখ্যালঘুরা অবহেলিত, নির্যাতিত! তাই বলছিলাম- যেদিন ধর্মপালনকারীরা সংখ্যালঘু হবে, সেদিন তারাও নির্যাতিত হবে। 🙁


            ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

            জবাব দিন
            • মুজিব (১৯৮৬-৯২)
              ব্যাপারটাকে 'ধর্ম বনাম বিজ্ঞান' না দেখে 'সংখ্যাগরিষ্ঠ বনাম সংখ্যালঘু' হিসাবে দেখুন

              - ঠিক আছে, দেখলাম। :-B :-B

              পৃথিবীর সবখানেই সংখ্যালঘুরা অবহেলিত, নির্যাতিত

              - কথা ঠিক। কিন্তু বিজ্ঞানের হাতে কেউ নির্যাতিত হয় না, বরং সমাজ ভেদে এই নিপীড়নের মাত্রা ওই সমাজে বিজ্ঞানমনস্ক মানুষদের প্রভাব-প্রতিপত্তির ব্যাস্তানুপাতিক 😉 ( MK's qTh law of social hermo-dynamics! ) 😀 😀

              যেদিন ধর্মপালনকারীরা সংখ্যালঘু হবে, সেদিন তারাও নির্যাতিত হবে।

              - নিপীড়িত হলেও সেটা বিজ্ঞানের কোন institution কিংবা কোন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের হাতে হবে না, মোটামুটি নিশ্চিত। 🙂 (সম্পাদিত)


              গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

              জবাব দিন
              • জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)
                নিপীড়িত হলেও সেটা বিজ্ঞানের কোন institution কিংবা কোন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের হাতে হবে না, মোটামুটি নিশ্চিত। 🙂

                কিন্তু যারা অত্যাচার করবে তারা তো বিজ্ঞানের সমর্থক এবং ধর্মের বিপক্ষের লোকজন হবে, তাই না? একই রকম কথা এখন ধর্ম পালনকারী/সমর্থনকারীরাও বলে। অর্থাৎ যারা সত্যিকার অর্থে ধর্মকে ধারণ করেছে তাদের দ্বারা কখনো অন্যের (নিজেকে রক্ষা করার উদ্দ্যেশ্য ছাড়া) অনিষ্ট সাধন সম্ভব না, যারা অনিষ্ট করছে তারা সত্যিকারের ধার্মিক না, ধর্ম থেকে বিচ্যুত... ইত্যাদি ইত্যাদি।

                এ কারনেই আমি আগের কমেন্টে বলেছি 'আমরা ব্যাসিকালি রেসিস্ট এবং এক্সট্রিমিস্ট'। সংখ্যালঘুর উপর অত্যাচার করা আমাদের প্রজাতিগত বৈশিষ্ট্য। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, সম্পদ, ক্ষমতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি- এ সবই সেই অত্যাচারের হাতিয়ার মাত্র। সুতরাং যদি দোষ দিতে হয়; দিতে হবে আমাদের বিধ্বংসী ও হিংস্র মনোভাবকে, অন্য কিছু নয়- এটাই আসলে আমার এতক্ষণের আলোচনার মূল কথা। O:-)

                ধন্যবাদ মাননীয় সভাপতি, ধন্যবাদ সবাইকে... ;)) ;))


                ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

                জবাব দিন
                • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

                  দুই মিনিট আগে ফাইনাল বেল দেয়া হইসে। আপনার ০২ পয়েন্ট কাটা! :grr: :grr: :grr:


                  \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
                  অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

                  জবাব দিন
                • মুজিব (১৯৮৬-৯২)
                  কিন্তু যারা অত্যাচার করবে তারা তো বিজ্ঞানের সমর্থক এবং ধর্মের বিপক্ষের লোকজন হবে, তাই না?

                  না। বিজ্ঞানের কোন institution কোনদিন কাউকে নির্যাতন করেনি, এখনও করছে না, ভবিষ্যতেও করবে বলে মনে হয় না। "পৃথিবী গোল"বাদীরা কি কোথাও কোন "পৃথিবী চ্যাপ্টা"বাদী কাউকে কোন প্রকার অত্যাচার করেছে, না করছে? আফগানিস্তান-পাকিস্তানে পোলিও টিকা খাওয়ানোর কারণে স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে প্রতিনিয়ত অত্যাচারিত হতে হচ্ছে, কিন্তু, for example, রয়্যাল সোসাইটি অব সায়েন্স থেকে কি কোনদিন কোন বিজ্ঞান অস্বীকারকারীকে নিপীড়ন করার জন্য উৎসাহ বা আদেশ দেয়া হয়েছে? বৈজ্ঞানিক সত্যকে না মানার দায়ে কাউকে অত্যাচার করার কোন নজীর নেই। সমাজে প্রচুর মানুষ আছেন যাঁরা

                  'ব্যাসিকালি রেসিস্ট এবং এক্সট্রিমিস্ট'

                  , কিন্তু বিজ্ঞানমনস্ক মানুষেরা এই বদঅভ্যাস থেকে মুক্ত।

                  আমরা যখন স্পেসিফিক্যালি বিজ্ঞানমনস্ক মানুষদের নিয়ে কথা বলব, তখন তাঁদের স্পেসিফিক বৈশিষ্ট্য ও আচরণ কে মাথায় রেখেই আমাদেরকে কথা বলতে হবে। একথা ঠিক যে, মানব প্রজাতির অধিকাংশের মধ্যেই সংখ্যালঘুর উপর অত্যাচার করার বদ অভ্যাসটি প্রচলিত আছে। কিন্তু বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান মনস্ক মানুষদের মাঝেও এই অভ্যাসটি আছে - এরকম কোন প্রমাণ ইতিহাস কিংবা ভূগোল কোথাও পাওয়া যায় না। আমরা এখানে মানব প্রজাতির সামগ্রিক আচরণ নিয়ে কথা বলছি না। বিজ্ঞানের সমর্থক ও ধর্মের সমর্থকদের মাঝে তুলনামূলক বিচার ও করছি না। তাছাড়া, বিজ্ঞান ও ধর্মকে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসাবে দাঁড় করানোর এই প্রবণতাটাকেও আমি সমর্থন করি না। আমাদের আলোচনাটা সুনির্দিষ্টভাবে বিবর্তনবাদ তথা বিজ্ঞানকে স্বীকার করা মানুষ এবং অস্বীকার করা মানুষদের নিয়ে। এখানে, বিজ্ঞান অস্বীকারকারীরা বিজ্ঞানমনস্কদের উপরে অত্যাচার করে বলে বিজ্ঞানমনস্করাও সুযোগ পেলে বিরুদ্ধবাদীদের উপরে অত্যাচার করবে এমনটি ভাবার কোন যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি নেই। 🙂 ;))


                  গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

                  জবাব দিন
                  • জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

                    মুজিব ভাই,
                    মানুষের উপর আপনার ইতিবাচক ধারনা দেখে ভাল লাগল। :thumbup:

                    কিন্তু আমি নিরাশাবাদীদের দলে। গত পাঁচ/সাত বছরের ট্রেন্ড অনুযায়ী আমার যুক্তি বলে এক সময় ধর্মপালনকারীরা সংখ্যালঘু হবে এবং তারা নির্যাতনের শিকার হবে। হয়ত সত্যিকারের যারা বিজ্ঞানমনষ্ক তারা নির্যাতন করবে না, কিন্তু এতে নির্যাতিতের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হবে না।

                    রয়েল সোসাইটি অব সাইন্স চাইলেও এখন কোন ধর্মপালনকারীকে নির্যাতন করতে পারবে না, কেননা বেশ কয়েকটি দেশে হয়ত বিজ্ঞান এগিয়েছে কিন্তু সামগ্রিকভাবে ধর্মপালনকারীরাই এখনো সংখ্যা গরিষ্ঠ্য! আর একটি কথা, রয়েল সোসাইটি অব সাইন্সের দায়িত্বে সবসময়ই নির্লোভ, সহজ-সরল মানুষেরা থাকবে - এমন ভাবার আমি কোন কারন দেখি না। ১০০ বছর পর এবসোলুট পাওয়ার পাওয়া কোন ক্ষ্যাপা নেতা গোছের বিজ্ঞানীর মাথায় কি ভুত চাপতে পারে - তা এখনই কি করে বলি, বলুন? কখনো হয় নি বলে আগামীতেও হবে না- এরকম সিদ্ধান্ত কেম্নে নিই বলুন? 'প্রথম' বলে তো সবসময়ই একটি কথা আছে!! সবচেয়ে বড় কথা, বিজ্ঞানীরাও তো মানুষই থাকবেন- আবেগ, অনুভূতির উর্ধ্বে তো আর চলে যাবেন না?

                    যাই হোক, আলোচনা এক জায়গাতেই ঘুরপাক খাচ্ছে দেখে এটি নিয়ে আর না ঘাটানোই ভাল। কি বলেন? ভাল থাকবেন। 😀


                    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

                    জবাব দিন
                    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

                      অনেকদিন এ তল্লাটে আসা হয়নি তাই তোমার কমেন্ট দেখতে একটু দেরী হয়ে গেল। হ্যাঁ, এবার বোধ হয় ক্ষান্ত দেয়া যায়।

                      তারা অবশ্যই ধর্ম পালনকারীদের উপর অত্যাচার করবে। গ্যারান্টিড! 🙁

                      থেকে

                      কখনো হয় নি বলে আগামীতেও হবে না- এরকম সিদ্ধান্ত কেম্নে নিই বলুন?

                      - এ যখন আসা গেছে, তখন বাকীটা পথ এই রিপিটেড আলোচনা ছাড়াই পাড়ি দিতে পারবে আশা করি।

                      যাও, তালগাছটা তোমাকেই দিলাম O:-)


                      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

  5. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    এডিসন সাহেব দুষ্টু ছিলেন জেনে খারাপ লাগলো।

    তবে টেসলারের ভাগ্য আসলেই খারাপ।
    মার্কনী সাহেব ও তার ফর্মুলাতেই রেডিও বানান।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      এডিসন সাহেব সারা জীবনে অনেক হাড়-বজ্জাতি করেছেন। অথচ, আমাদের ছোটবেলায় স্কুলের পাঠ্য বইয়ে 'জাদুকর বিজ্ঞানী' শিরোনামে ওনার উপরে একটা চ্যাপ্টার ছিল! যাঁরা এই বোর্ডের বই গুলো সম্পাদনা করতেন, তাঁরা কি এডিসনকে জানতেন না?


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  6. হারুন (৮৫-৯১)

    নেচারাল সিলেকশনের নামে ডারউইন কি বুদ্ধিহীন প্রকৃতির উপর নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন নাকি চরম জড়বোধের পরিচয় দিয়েছেন। জীবন সংগ্রামে জয়ী জীবই যদি এ পৃথিবীতে টিকে থাকে তবে বিবেকসম্পন্ন জীবন মানুষের বেলায় কি তা আদৌ প্রযোজ্য নাকি জঙ্গলের জীবের জন্য প্রযোজ্য।


    শুধু যাওয়া আসা শুধু স্রোতে ভাসা..

    জবাব দিন
  7. মুজিব (১৯৮৬-৯২)
    নেচারাল সিলেকশনের নামে ডারউইন কি বুদ্ধিহীন প্রকৃতির উপর নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন নাকি চরম জড়বোধের পরিচয় দিয়েছেন

    দুঃখিত হারুন ভাই, আমি যেহেতু এই লাইনের এক্সপার্ট নই, সেহেতু চট করে judgemental হতে পারছি না। একজন লেম্যান হিসাবে এই লাইনের এক্সপার্টদের কথা শুনে, লেখা পড়ে আমার কাছে ব্যাপারটাকে খুবই স্বাভাবিক, যুক্তিযুক্ত এবং প্রমাণিত বলে মনে হয়েছে। ভাল হয় আপনি যদি পয়েন্ট ধরে ধরে ন্যাচারাল সিলেকশন/বিবর্তনবাদ কি এবং পাশাপাশি এ সম্পর্কে আপনার ব্যখ্যা এবং প্রমাণ সমূহ তুলে ধরেন। ঢালাও ভাবে করা - "চরম জড়বোধের পরিচয় দিয়েছেন" - জাতীয় প্রশ্নের উত্তর দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।

    আরেকটি কথা, বায়োলজিক্যাল ও জিনেটিক দিক থেকে মানুষ আর জঙ্গলের প্রাণী, এমন কি গাছপালার মাঝেও খুব বেশী ফারাক নেই, সামান্য এগিয়ে থাকা মাত্র।


    গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।