বিষ্যুদবার। বৃহস্পতিবার।
ইংরাজিতে থার্সডে। সন্ধ্যে নামার অনেকক্ষণ আগে থেকেই আমাদের অপেক্ষা শুরু হতো। আজ ডিনারে কে কার কাছ থেকে কাস্টার্ড পাবে- কে কাবাবের সাথে স্যুপ অদলবদল করবে অন্য কারো সাথে। এসব আলোচনা শুরু হতো পাহাড়ের গায়ে পড়ে থাকা কলেজটায় – আমার প্রানের কলেজটায় সন্ধ্যে নামার অনেক আগে!
টিভি রুমের ভিসিডি শোতে সামনের চেয়ারে কে বসবে এসব নিয়ে খুনসুটির মাঝপথে যখন ডিনারের হুইসেল বাজতো- আমরা য়খন ক্লাস সেভেনে পড়তাম তখন সাথে সাথে ছুটতাম ফলইনে। আমরা যখন ক্লাস নাইনে পড়তাম তখন সেই ফলইনে দাঁড়িয়ে নিচু স্বরে হাসাহাসিও করতাম। আর আমরা যখন ক্লাস টুয়েলভ হলাম তখন হয়তো আর ফলইনের জন্য ছুটতে হতো না- তখন হাসাহাসিও আর নিচু স্বরে করতে হতো না- তবুও ডিনারে যাবার আগ্রহে কমতি ছিল না। আজ যে বৃহস্পতিবার। আজ স্পেশাল ডিনার।
স্পেশাল ডিনারে স্যুপ ছিল। শুধু সেই স্যুপ দিয়েই এক প্লেট কিংবা তার চেয়ে বেশি ভাত খেয়ে ফেলতাম। হাউজ মাস্টার বলতেন- ক্যাডেটরা কী পিকিউলিয়ার! স্যুপ দিয়ে ভাত খায়! হাউ স্ট্রেন্জ! বুঝলা রন্জু- তোমরা ক্যাডেটরা ভেরি স্ট্রেন্জ!
হাউজ মাস্টারের এই কথা জমা করে রাখা হতো পরবর্তী কোন আড্ডার জন্য। মোরশেদ কিংবা হিমেলের মুখে এ কথা শুনে একটু হাসার জন্য।
স্যুপ- মুরগি- কাবাব দিয়ে কলেজ বাবুর্চিদের তৈরি করা সেই ডিনার এমন কোন আহামরী স্বাদের হয়তো হতো না। সে স্বাদ জিভে হয়তো এখন আর লেগে নেই। কিন্তু পৃথিবী নামের এই বাজে গ্রহটায় মানুষ হয়ে জন্মেছি বলে মন নামের যে একটা বাজে জিনিস পেয়েছি- সেখানে ঘাপটি মেরে বসে আছে।
স্পেশাল ডিনার!
মাঝে মধ্যে আবার রেকর্ড গড়া কিংবা রেকর্ড ভাঙা চলতো। কয়েক বছর আগে মেহেদি ভাই কিংবা অন্য কেউ সতেরো প্লেট কাস্টার্ড খাওয়ার রেকর্ড করেছিলেন। সেই রেকর্ড আজ ভাঙা হবে। নিয়ামুল ভাঙবে সে রেকর্ড! সবার কী উৎসাহ! এসব ছেলেমানুষি উৎসাহ আর কী ফিরে আসে না কোনদিন?
এখন হাতের কাছেই হ্যালভেশিয়া।
এখন বিশ টাকা বাস ভাড়া দিয়ে চলে যাওয়া যায় গুলশান কিংবা বনানী। যেখানে পদে পদে ভিনদেশিয় সব রেস্তোরাঁ। যেখানে খাবারের অর্ডার দিতে গেলে কিছুটা চিন্তা করতে হয়- নামটা ঠিকমতো বলছি তো?
এখন পকেটে টাকা না থাকলেও- কারো কাছ থেকে ধার নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বুফে খেয়ে আসা যায়।
সে খাবারে আমি স্বাদ পাই। সে খাবারে আমার পেট ভরে।
হয়তো দরকারের চেয়ে একটু বেশিই ভরে।
কিন্তু-
আমার মনটা যে ভরে না!
প্রভাতে লিখতেসিস??
য লিখতে হলে Shift + Z চাপতে হবে।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
হায় হায়! আমি দেখি ফার্স্ট হয়া গেলাম 😀
অনেকদিন পর সিসিবিতে লিখলি। তোর উপন্যাসটাও শেষ করলিনা। মানুষ হইলিনা ! 🙁
আমার আছে। হয়তো কোনদিনই যাবেনা। স্পেশাল ডিনারের মত স্বাদ আমি আর কিছুতে এখনো খুঁজে পাইনাই।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
ঠিক কইরা দিছি। 🙂
মামু মাস্ফ্যু ফার্স্ট হোগিয়া...
এখন ফোর্থে 😀
আর কত কাশেম হইবেন। এইবার একটু রাজ্জাক হবার চেষ্টা করেন :khekz: :khekz:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
:khekz: :khekz:
মাস্ফু আবার ধরা খাইছে :gulti:
যতই হোগিয়া হোগিয়া কইয়া চিল্লাস, আসল ডায়লগ হবে,
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
x-( x-( x-( x-( x-(
এইটা কি চলে কাইয়ুম ভাই??
😀 😀
:khekz: :khekz: :khekz: :khekz: =)) =))
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
=)) =))
মাস্ফু ভাই :just: ধরা খাইয়া গেলেন :khekz: :khekz:
=)) =))
স্পেশাল ডিনার কাইতে মঞ্চায়।
যতই মঞ্চাক। কুন লাভ নাই। 🙁
একটু আগেই ডিনার সেরে আসলাম। তারপরো খিদা লেগে গেলো 😛
মহিব, ছেলেটা এখানে লিখে না কেনো ? 🙁
এখন থেকে না লিখলে পানিঢ়মেন্ট দিয়েন। 🙂
পানিশমেন্ট দিয়েন। 🙂
কাম্রুল ভাই, ওরে পানিশমেন্ট না, পানিঢ়মেন্টই দিয়েন ;;;
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
শালা। প্রভাতে নতুন নতুন একটু সমস্যা হইতাছে।
নামটা চিনা চিনা লাগে 😛
হায়্রে স্পেশাল ডিনার 🙁
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
তুই ক্যাডা 😀
আমি একবার স্পেশাল ডিনারে মাত্র ৪ প্লেট খাবার পর আর কোন খাবার পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ওআইসি স্যার ডেকে জিজ্ঞেস করলেন যে তোমার কি খাবার কম পড়েছিল? আমি বললাম জ্বী স্যার। স্যার আমাকে বললেন কয় প্লেট খেয়েছো? আমি বললাম মাত্র ৪ প্লেট স্যার। স্যার অনেক্ষন অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলেন। 😀
আমাদের কলেজ এ সু্প দিতোনা কিন্তু বাকি গুলা ছিল
উফফফফফফফ সেই কী স্বাদ :boss:
ওইরকম স্বাদ আর কোনো খাবার এ নাই :no:
আরেকদিন খাইতে ইচ্ছা করে :((
আমার এখোনো লাইগা আছে, জেবনেও যাইবেনা 🙁
:thumbup: :thumbup:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
কাইয়ূম ভাই, কিবস্থা আপ্নের?? :-B
সব ভ্লাতো??? ;;;
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
অই জুনা, কি বলছিস যে, বালো হবেনা কেনযে, কালি এয়ুকগা ঝামেলা অইয়ে, দিনকাল হালকা খষ্টে যাচ্ছেযে, 😛
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আহারে!!! 😛
নিশ্চয়ই গভীর রাতে উঠে অফিসের জন্য দৌড়াইতে হইতেছে... 😉
আপনার জন্য খারাপ লাগতেছে... =))
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
হ, এর লাইগা এই ভরদুপুরে ঘুমানির টেরাই দিতে হচ্ছে, ক দেখি এইটা কি ঠিক, এই ফক্স কলিং দুপুরে ঘুমাইতে মঞ্চায়? 😡
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
বস, আপ্নে ইউরোপে সুইচ করেন... ;;;
তাইলে এই সব টাইমিং এর ঘাপলা আর হইব না... :-B
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ইমিও সিটিই ভিবতিছি, ইসব ইফিসে ইর থিকুমই নি x-( x-(
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আহা...!!!
:dreamy: :dreamy: :dreamy:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ইম্প্রুভড ডিনার... সেই স্বাদ আমি আর কোথাও পাইনি আল্লাহর কসম!
:boss: :boss: :boss:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
একদম মনের কথা :boss:
কি অদ্ভুত মিল!!!
আমাদের অবশ্য রেকর্ড ভাঙ্গা-গড়া হতো ইংলিশ ডিনারে কে কয়টা ব্রেড খেতে পারে তা নিয়ে
:boss:
স্পেশাল ডিনারের স্বাদ কখনই ভুলব না।
স্পেশাল ডিনারের আগে ধুমায়ে ক্রিকেট খেলে যেতাম।
আহারে! সেই যে আমার নানান রঙ্গের দিনগুলি! :dreamy: :dreamy:
চমৎকার লেখা মহিব। নষ্টালজিক হয়ে গেলাম।
খুবই চমতকার লিখার ধরন আর আমার ফেলে আসা অনুভূতিকে নাড়া দিল। কত নম্বর দেয়া যায়। আচ্ছা পূরা ধারাপাত বইটা তোমায় দিলাম।
ঠিক কইছ, মন ভরে না,
আমি সবথেকে মিস করি কাবাব, আমাদের বৃহঃ বারের স্পেশাল ডিনারে স্যুপ ছিল না, মুরগীও ছিল না, ছিল পুডিং আর খাসির রেজালা, আহারে......।।
স্যুপ আর মুরগী দিত ইংলিশ ডিনারে, তয় স্যুপ ভালা পাইতাম না, হাত ধুয়ার পানির মত লাগত।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ইশ, আর জীবনেও সেই স্পেশাল ডিনার খাওয়া হবে না। জীবনে মিস করা টপ টেন জিনিসের মধ্যে এইটা প্রথম দিকেই থাকবে।
কথাটা একদম কলিজার মধ্যে গিয়া লাগলো... :boss:
এইজন্যই আমি সিসিবিরে এতো ভালা পাই..."স্বপ্ন দিয়ে তৈরী, স্মৃতি দিয়ে ঘেরা" ছয়টা বছর যে মনের এতোটা জায়গা দখল করে রাখসে- সেই কথাটা মনে করায়ে দেওয়ার জন্য... :shy:
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
তোমার এক তা লিখা এইমাত্র পড়লাম।বেশ ভাল লাগ লো বলেই তোমার অন্য লিখা খুজে এটা পড়তে এলাম।একি অবস্থা। তুমি অনেক সাংঘাতিক লিখ। ছোট ঘটনাগুলো এত যত্নের সাথে এখনও মনে রেখেছো এবং বুঝাতে পেরেছ তা আসলেই অভূতপূর্ব।তোমার বাকি লিখাগুলো ও পড়তে যাচ্ছি।আরো বেশি বেশি লিখ......। :thumbup: :thumbup:
অফ টপিকঃ যারা জীবনের ছোট ছোট ঘটনা অনেক যত্নের সাথে সংরক্ষণ করে তারা মানুষ হিসেবে মানুষের অনেক কাছাকাছি থাকতে পারে।এ্কটু কেমন কেমন কমেন্ট করে ফেললাম মনে হয়। 😕 😕
স্যুপ- মুরগি- কাবাব দিয়ে কলেজ বাবুর্চিদের তৈরি করা সেই ডিনার এমন কোন আহামরী স্বাদের হয়তো হতো না। সে স্বাদ জিভে হয়তো এখন আর লেগে নেই। কিন্তু পৃথিবী নামের এই বাজে গ্রহটায় মানুষ হয়ে জন্মেছি বলে মন নামের যে একটা বাজে জিনিস পেয়েছি- সেখানে ঘাপটি মেরে বসে আছে।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।