আজ যে ঘটনাটি বলব তার ঘটনকাল ২০০৯ এর ফার্স্ট টার্মে, এপ্রিলের ১ তারিখ। আমরা ক্লাস নাইনে। তখন কলেজে চলছে “১০,০০০ যুগ”। ১০,০০০ যুগ বলার কারন, তখন ১০,০০০ টাকা জরিমানা খাওয়া ইডি খাওয়ার চেয়েও সহজ। ঠিক এমনই দিনে লাঞ্চের পর মাত্র হাউসে এসেছি। ঠিক তখন তৎকালীন জুনিয়র প্রিফেক্ট মাকসুদ ভাই (ছদ্মনাম) রুমে এলেন। ভাবলাম হয়ত রুম চেকিংয়ে এসেছেন। তড়িঘড়ি করে প্লেস গোছাতে শুরু করলাম। কিন্তু উনি চেকিং না করে বললেন, “ক্লাস নাইন, সবাই দুই মিনিটের মধ্যে বেল্ট আর ব্যারেট ক্যাপ পরে অ্যাডজুটেন্ট অফিসে যাও। অ্যাডজুটেন্ট অফিসের নাম শুনেই পেটের ভেতরটা গুলিয়ে উঠল। তবে একটাই রক্ষে, ১২ জন একসাথে যাচ্ছি। বাকিদের চেহারার দিকে তাকালাম। সবার মুখ সাদা হয়ে গেছে। এমনকি কাল রিফাতের মুখও একটু ফর্সা ফর্সা লাগছে। যাই হোক এখন বর্ণালী বিশ্লেষণের সময় নেই। সবাই রেডি হয়ে নিচতলায় ইমিডিয়েটদের রুমে এসে সৌরভের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম (ও টয়লেটে ছিল)। এখানে এসে দেখি রকিব ভয় পেয়ে চিল্লাচিল্লি শুরু করেছে। বুঝলাম আজ কপালের শনি ঠেকায় কে! ঠিক তখন দেখি সৌরভ দোতলা থেকে নেমেই অ্যাডজুটেন্ট অফিসের দিকে দৌড় দিল। পেছন থেকে ডাকলাম, শুনতে পেল না। বোধহয় ও ভেবেছে আমরা চলে গেছি। কি আর করা, বিধি বাম। তারপর সবাই যখন হাউস থেকে বের হচ্ছি, তখন দেখি মাকসুদ ভাই আমাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছেন আর বলছেন, “কি, কেমন ভয় দেখালাম?” বুঝতে পারলাম যে উনি এপ্রিল ফুল পালন করতে আমাদের সাথে রসিকতা করছিলেন। কিন্তু আমাদের একজন যে ইতিমধ্যে চলে গিয়েছে তা তিনি জানতেন না। তাই, হয়ত মাকসুদ ভাইয়ের দুর্ভাগ্যের কথা চিন্তা করেই, আমরা হাসতে লাগলাম। আমাদের হাসি দেখে উনি একটু ঘাবড়ে গেলেন। তারপর আমরা যখন বললাম সৌরভ অলরেডি চলে গেছে, তখন উনার চেহারা আর দেখে কে।
ওদিকে সৌরভ অ্যাডজুটেন্ট অফিসের সামনে একা দাড়িয়ে আছে। সিএসএম যখন জানতে চাইলেন এখানে কে আসতে বলেছে, তখন ও বুঝল কিছু একটা ভুল হয়েছে। ও বলল, নাইম ভাই (হাউস বেয়ারা) বলেছে। আসলে কেন ও নাইম ভাইয়ের নাম বলল সে কারন এখনো অজানা। আর কি, সিএসএম বললেন নাইম ভাইকে পরদিন অফিসে দেখা করতে। বেচারা নাইম ভাই শুধু শুধু ফেঁসে গেল। মাকসুদ ভাইয়ের এই ঘটনার কথা মনে পরলে এখনো হাসি পায়। সত্যিই কলেজের সেই দিনগুলো কত আনন্দেরই না ছিল।
মজা পাইলাম 😀
সিনিয়ররা তোমাদের এপ্রিল ফুল বানাইত??
জেপির নাম কি আসলেই ছদ্মনাম ছিল নাকি? সন্দেহ জাগছে! তুমি কি শহীদুল্লাহ হাউজের? 🙂
হ্যাঁ নাফিস ভাই আমি শহীদুল্লাহ হাউসের (হায় হায়, ধরা খাইয়া গেলাম। মাকসুদ ভাই সরি)। জীবনে একবারই এপ্রিল ফুল করতে দেখছিলাম।
হা হা ! শহীদুল্লাহ হাউজের আমাদের ব্যাচের পোলাপান দের কাহিনী সব ভালো মতো জানা আছে ! ধরা খাইয়া গেছ :))
এপ্রিল ফুল নিয়ে কোন কাহিনী মনে পড়ছে না।
তবে, আমরা যখন ক্লাস ইলেভেন এ (২০০০) ক্লাস টুয়েল্ভ এর ভাইরা কুকুরের গায়ে হ্যাপি ভ্যালেটাইন্স ডে লিখে ঐ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারীতে পুরো কলেজ গরম করে দিয়েছিলেন... 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
বহুত দিন পরে কোন কমেন্ট পইড়া প্রাণ খুইলা হাসলাম।
ধরা যখন খাইলাম তখন আর কী করা, স্বীকার করিলাম উক্ত নামখানা আসল।
কাহিনীটা মজাই লাগলো। তুমি তো দেখি একদম ফ্রেশ এক্স ক্যাডেট। দেখে ভালো লাগলো। আমি তোমার প্রথম ব্লগে মকরামি দেইখা এইখানে ফ্রন্টরোল দেওয়াইতে আসছিলাম। যাই হোক সেই পাট চুকে গেছে।
হাত পা খুলে লিখতে থাকো।
🙂
ধন্যবাদ আমিন ভাই। লেখা যখন একবার শুরু করেছি তখন চালিয়ে যাব। কিন্তু ভাই হাত পা খুলে ফেললে তো আর লেখা যাবে না।