রোহিঙ্গা ভাবনা

একটি অবুঝ শিশু
বর্মী বর্বরতার শিকার হয়ে গৃহত্যাগী
দীর্ঘ পথ হাঁটা ক্লিষ্ট, ক্লান্ত তার শরণার্থী মায়ের
পায়ের পাতার উপর মাথা রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
খোলা আকাশের নীচে পাতা বিছানো কোন তরুতলের মাটি তার শয্যা।
মাটিতে বসে তার শীর্ণদেহী, স্নেহময়ী মা
পরম মমতায় আরেকটি শিশুকে বুকে নিয়ে আনমনে স্তন্যদান করছে।
সহায় সম্বলহীন, উৎকন্ঠিত, ত্রাসাক্রান্ত, মাথায় তার যেন পৃথিবীর বোঝা!

দু’টি অবুঝ শিশুকে নিয়ে অনিশ্চিত, অনির্দিষ্ট পথে আজ সে শরণার্থী।
বানের জলের মত ভেসে আসা সে শরণার্থীর দলে
নারী ও শিশু ছাড়া কোন পুরুষ নেই। হয়তো তাদেরকে কচুকাটা করে
রক্তগঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের উপর বর্মী বাহিনীর এ হামলা আজ নতুন কিছু নয়,
দশকে দশকে থেমে থেমে বহু বছর ধরে এ হামলা চলে এসেছে।
নিরীহ নাগরিকদের উপর যখন স্বদেশীয়, বৈরী সেনাদল হামলে পড়ে,
তখন এ রকমই হয়, এ আমরা জানি।
তবে আমরা এও জানি, কিভাবে এ নৃশংসতার প্রতিশোধ নিতে হয়।
এখন বোধ করি ওদের প্রতিরোধ, প্রতিশোধের সময় এসে গেছে।

মায়ের গোড়ালির গাঁটে মাথা রেখে যে শিশুটি আজ আকাশ দেখছে,
হয়তো সে একদিন গেরিলা যোদ্ধা বনে যাবে।
কচি হাত দুটো একদিন কঠিন হয়ে যাবে, সে হাতে থাকবে মারণাস্ত্র।
ভূমিশয্যায় শায়িত এ শিশু হয়তো একদিন বুঝে যাবে,
স্বাধিকার স্বাধীনতার পূর্বশর্ত নাগরিক শক্তি আর ঐক্য।
স্বাধীনতার চেতনা ব্যক্তি হৃদয়ে যে আগুনের ফুলকি ঝরায়,
সমষ্টি হৃদয়ের সে ফুলকি একদিন দাবদাহে পরিণত হয়ে
অত্যাচারীর রক্তভেজা হাতকে অঙ্গারে পরিণত করে দেয়।
অত্যাচারী নতশিরে আত্মসমর্পণ করে, তাদের ভূমিশায়িত অস্ত্র
তাদেরকে বাকীটা জীবন দুঃস্বপ্ন হয়ে তাড়া করে বেড়ায়।

ঢাকা
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

৫,৩৭৫ বার দেখা হয়েছে

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।