বহুদিন ধরে এক সাথে খেলা বা টিভি দেখা হয়না। একা থাকি ৪ বছর হয়ে গেছে। তাই এইগুলার জন্য আফসোস ও এখন আর হয়না। গত ২ বছর আগে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখেছিলাম একজনের সাথে নেটে বসে। দুজনে নেটে বসে ভয়েস করি আর টিভির খেলা দেখি । মন্দের ভাল আর কি। কিন্তু সিসিবি এসে অনেক পুরান পুরান আক্ষেপ নতুন করে এনে দিয়েছে। এখানে এসে কি লেখি ভাবি আর পুরান এক একটা মজার মজার ব্যাপার মনে পড়ে। কিছুদিন ধরেই আমার টিভি রুমের কথা খুব মনে পড়ছে।
ক্যাডেট কলেজ ছাড়া আমার আর কখনো হলে থাকা হয়নি। তাই হলের টিভি রুম কেমন হয় আমার জানা নেই। তবে ভয়ে ভয়ে চারপাশ তাকিয়ে বলে দিতে পারি ক্যাডেট কলেজের টিভি রুমে কিছু দেখার সাথে অন্য কিছুর তুলনা হতেই পারে না। আহ সেই জমজমাট টিভির রুমে শুক্রবার সিনেমা দেখা কিংবা একটা ক্রিকেট,ফুটবল খেলার সময় কেউ যদি আমাকে দেয় আমি তার বিনিময়ে যা চাইবে তাই দিয়ে দিতে পারব।
আমাদের কলেজের টিভির রুমের বিন্যাস ছিল ডান আর বামে ১৫ টা করে চেয়ার থাকত সেখানে বসত ক্লাস ৯ আর ক্লাস ১০। টিভির সামনের জায়গায় প্রথমে ক্লাস সেভেন আর পিছনে ক্লাস ৮ বসত কার্পেটে। আর পিছনে চেয়ার বেঞ্চ যার যেমন খুশি বসত ক্লাস ১১ আর ক্লাস ১২। ক্লাস সেভেনে যেদিন ভর্তি হই সেদিন আমাদের থার্ড প্রেপ ছিলনা। হাউস বেয়ারা আমাদের নিয়ে গেল টিভিরুমে। গিয়ে আমরা স্বাভাবিক ভাবেই চেয়ারে বসতে নিলাম ওমা উনি দেখি আমাদের বলে যে না তোমরা নিচে বস। কি আজব। সেই দুঃখেই কিনা আমার কলেজ লাইফে খেলা দেখা ছাড়া আর টিভি রুমে যাওয়া তেমন হয়ে উঠেনি। তখন আরেকটা কথা মনে আছে সিনেমা দেখার সময় পিছন থেকে ক্লাস ১২ এর ভাইয়ারা বা কোন প্রিফেক্ট বলে উঠত “class seven head down”. কখন এবং কেন বলত নিশ্চয়ই বুঝা গিয়েছে।
ক্লাস ৯ এ উঠলাম। আমরা নতুন চেয়ারে বসব । টিভিতে কিছু থাকুক আর না থাকুক আমরা নতুন ক্লাস নাইন টিভি রুমে হাজির। চেয়ারে বসে ভাব নিয়ে টিভি দেখি। তখনই কি একটা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট যতদূর মনে পড়ে মিনি ক্রিকেট শুরু হল। ক্লাস ১১ পিছনে বসে খেলা না দেখে আমাদের চেয়ারে বসে দেখা শুরু করল এবং আমাদের বলল ক্লাস ৭ না আসা পর্যন্ত আমাদেরকে নিচে বসতে হবে। ব্যাস আমাদের প্রেস্টিজ পাংচার। আর তো খেলা দেখা যায় না। আমরা সবাই মিলে চলে আসলাম টিভিরুম থেকে। সেদিন কিছু হল না কিন্তু পরদিন খেলা দেখতে যখন কোন ক্লাস নাইন গেল না সেটা আবার তারা আমাদের ঔদ্ধত্য হিসেবে নিয়ে নিল। শুরু হল একশন। ওনারা এসে আমাদের শান্টিং দেয় আমরা যাই না খেলা দেখতে । পরে হাউস প্রিফেক্ট এসে আমাদের পক্ষ নেওয়াতে সেই যাত্রায় আমাদের প্রেস্টিজ বেঁচে গেল। সেইসময়ই ৯৮ এর বিশ্বকাপ দেখলাম।
সবার আরেকটা প্রিয় জিনিস ছিল wwf। সেটার জন্য যে কত মনোমালিন্য হয়ে গেল। ক্রিকেট খেলা থাকলেই এটা হত। আর যেদিন ইত্যাদি থাকত সেদিন আগে থেকেই ১১, ১২ এর তৎপরতা শুরু হত ডাইনিং হল প্রিফেক্ট কে ভজিয়ে নিজের হাউস কে আগে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করা। তারপর দৌড়। সে এক মজার দৃশ্য।
২০০২ এর বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় আমরা পরীক্ষার্থী ইন্টার। তখন আমরা ৩ হাউসের টিভি রুম ভাগ করে নিয়ে নিলাম। একটা হয়ে গেল আর্জেন্টিনার আরেকটা ব্রাজিল এর আরেকটা হল নিরপেক্ষ। আমরা যার যার টিভিরুমে গিয়ে প্রথম ঘোষনা দিতাম জুনিয়র যারা যারা অন্য টিম করবা বের হয়ে অন্য হাউসে চলে যাও( একই বিল্ডিং হওয়ায় সম্ভব) একদিন হল কি যেদিন আর্জেন্টিনা বাদ পড়ে গেল প্রথম রাউন্ড থেকে সেদিন তো আমাদের মাথা খারাপ অবস্থা। প্রথমেই পতাকাটা নামিয়ে আগুন দেওয়া হল। আমাদের এক বন্ধু হঠাৎ খেয়াল করল ক্লাস ৯ না যেন ৮ এর একটা ছেলে হাসছে। ডেকে আনা হল তাকে কি ব্যাপার। দেখা গেল সে ব্রাজিলের সাপোর্টার। আর যায় কই। সব রাগ তার উপর দিয়ে ঝাড়া হল ।
সে অনেক স্মৃতি সব বলে শেষ করা যাবে না। অনেক দিন পরে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে একটা খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের টেস্ট ঐ যে যেটাতে রফিকের বদান্যতায় আমরা হেরে গেলাম। পিছন থেকে কিছু বুঝতে পারছিলাম না আর শুধু হৈচৈ। সেদিন আবার মনে পড়েছিল ইশ যতই মানুষ একাকার থাকুক কিন্তু ক্যাডেট কলেজের সাথে তুলনায় আসবে না। যাওয়া যায় না কেন সেই দিনগুলায়?
(আমি অনেকদিন পরে লেখার কারনে নিজের কাছেই লেখাটা সাবলীল মনে হয়নি। যদিও আমি ভাল লিখিনা তবে এইটার মত এত খারাপ লিখি না মনে হয়। )
hehehehehehe Kamrul Bhai.....amare sms korsen onek gula likha ar aisha dekhi matro akta....kharan Japan sorkar re koiya apner Monobusho cancel koraitasi.....
এইটাই তাহলে সেই থিসিস পেপার...ভালো হইছে।
কুমিল্লায় কার্পেট সিস্টেম ছিলোনা। সিনিয়রিটি অনুযায়ী ascending orderএ বসা হতো, চেয়ার বা বেঞ্চে।
আমরা তখন নাইনে উঠসি। টিভি রুমে বৃহঃবার হিন্দি মুভি হচ্ছিলো,
নায়িকার অনাবৃত পিঠ দেখতেই সবাই সমস্বরে ইশশশশশ এই জাতীয় আওয়াজ করে উঠলো।
সামনের লাইনে বসা ফুয়াদ ভাই চিল্লায়া উঠলেন, "ভদ্রলোকের মতো সিনেমা দেখ। এইসব scene কারো পছন্দ না হইলে বাইর হইয়া যাও।" 😉
Missing those days...
হুমম...আমাদের ক্লাস টুয়েলভ বসত সবার সামনে, তারপর আস্তে আস্তে জুনিয়ররা, আমার দুই ফ্রেন্ড মুভি দেখতে দেখতে পাগল হয়া যাইত, আর আমরা দুই ফ্রেন্ড যুক্তি করে ওদের পিছনে সিট রাখতাম 😉
প্রতি বার ওদের দুইজনের সাথে আমাদের দুইজনের ঢিচিয়া ঢিচিয়া...আহহহহ, সেইসব দিনগুলা।
আমাদের ও ক্লাস ১০ এ বেঞ্চে বসা নিয়ে বিরাট ক্যাচাল হইসিল।
ইস.........এখনও বৃহস্পতিবার আসলে মিস করি......
সেই VCR শো,তারপর স্পেশাল ডিনার,তারপর আবার শো দেখে অনেক রাত পর্যন্ত গ্যাজানি।
আমাযান,ম্যাকগাইভার এখন ত সবই দেখার সুযোগ আছে।কিন্তু সেই ক্যাডেটদের সাথে একসাথে চিল্লাচিল্লি করে দেখার সুযোগটা নেই।
রাত ১১ টার পর চোরাই চাবি দিয়া টিভির রুমের পিছনের দরজা খুলে সুলতান ভাই(হাউস বেয়ারা) কে ফাকি দিয়ে টিভি দেখার মজা এখোনো মিস করি।আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম......প্যা পু
প্যা পু ...।।প্যা পু......।
টিভিরুমের প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল:
১৯৯৩-১৯৯৪ এর দিকে জি-টিভির শুক্রবার রাতের "টপ টেন" (রাত সাড়ে নয়টায় শুরু হয়ে মোটামুটি
সোয়া দশটা পর্যন্ত চলত)আমাদের কাছে খুব জনপ্রিয় ছিল।
এটা যে আমাদের শিক্ষকবৃন্দের কারো কারো প্রিয় ছিল তা জানতাম না।
এক শুক্রবার রাতের থার্ডপ্রেপের শেষের দিকে উসখুস করছি ঘন্টা পড়লেই এই দৌড়ে টিভিরুমে হাজির হব।
ঠিক তখনই ক্লাসরুমের বাইরে শোনা গেল রেজাউল করিম (মতান্তরে পেরেক) স্যার মোল্লা স্যারকে বলছেন,
"হুম.. মোল্লা ভাই
......আমি যাই
আমার 'টোপ টেন' আছে"।
Life is Mad.
aihai PEREK at last!!!!!!! =))
সবচেয়ে প্যাথেটিক ছিল আমাদের ৩ ব্যাচ সিনিয়ররা। উনারা সেই সব সিনের সময় টিভি অফ করে টেনে দিত।
তারপর আমাদের টিভি রুম থেকে বের করে দিয়ে উনারা নিজেরা বসে বসে আরাম করে দেখত আর ....
এই জন্য উনাদের নিয়ে আমাদের আহসান সাহেব বিশাল একটা রগরগে কাহিনী বানাইছিল।
পুচ্চুত