অনুপস্থিত একটি মাসের দিনলিপি

অনেক দিন পরে এখানে কিছু লিখছি। আমি আমার জায়গা শিফট করেছি। নতুন জায়গায় আমাকে উঠতে দিবে এপ্রিল এর ১ তারিখ আর আমাকে আমার আগের জায়গা ছাড়তে হয়েছে মার্চের ২০ তারিখ। মাঝের ১০ টা দিন উদ্বাস্তু সেজে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়িয়েছিলাম। এক জায়গায় আস্তানা গেড়েছিলাম সেখানের ভাইয়া আবার নিজেই ওই বাসায় নতুন এসেছে বলে বাসায় নেট নেই। এমন একটা সময়ে আমি নেট থেকে দূরে গেলাম যখন আমাদের এই সিসিবি টা জম্পেশ জমে উঠেছিল। আমার দিন গুলা কিভাবে কাটত সেটা এত কিছু না বলে খালি বলি যে প্রতি রাতে ঘুমাতে গেলেই ভাবতাম ইশশ আজকে না জানি কি লেখা আসল সিসিবি তে। জিহাদ বুঝি তার সেই ক্যাডেট হওয়ার ছড়াটা আরেক পর্ব লিখেই ফেলল কিংবা রায়হান অথবা মুহম্মদ শুরু করল নতুন কোন সিরিজ। আবার কোন রাতে নিজেই কি লিখব তা ঠিক করতাম। কত কিছু যে মনে মনে লিখে ফেলেছিলাম সেগুলা এখনো মাথা থেকে কিবোর্ডের ডগায় এসে পৌঁছায়নি। আজ লিখব ভেবেছিলাম কিন্তু তার আগে এটাই চলে আসল মাথায়। আরো ভাবতাম সেই উপন্যাস টার কথা যেটা আমরা শুরু করেছিলাম বাড়োয়ারি উপন্যাস হিসেবে। সেই সামিয়া আপুটার কি হল কিংবা সাজিদ যে সিপির কাছে ধরা খেয়ে গেল তার কি হবে। ওটার পরবর্তী লেখার দায়িত্ব ছিলা আমার কাঁধে। আমি কি লিখব সব ঠিক করে রেখেছি যদিও তাও ভাবছিলাম কেউ বুঝি আমি নাই দেখে লিখে ফেলবে।
একদিন হঠাৎ একটা এসএমএস পেলাম মাশরুফ এর কাছ থেকে। নিজেকে সত্যিই তখন কেউকেটা কেউ বলে মনে হচ্ছিল। আমিও একটা মানুষ আমার কথাও কারো মনে থাকে কিংবা আমি নাই সেটাও কেউ খেয়াল করে। মাশরুফ লিখেছিল ভাইয়া আপনার লেখা অনেকদিন পাই না। কি আশ্চর্য এই ছেলে গুলা আমিও কিছু লেখি সেটার জন্যও কেউ অপেক্ষা করে থাকে। সত্যি চোখে পানি চলে আসছিল প্রায়। মাশরুফের এসএমএস পেয়ে আমি নেটে ঢুকেছিলাম একটু ক্ষণের জন্য। দেখি তপু কাহিনী নামে একটা লেখা। সেটাতে আমি লিখেছিলাম হায় আমি ভাবলাম এটা বুঝি আমাকে নিয়ে লেখা। এরপর মাশরুফ আমাকে জানাল ওর একটা লেখায় একটা হিন্টস আছে আমাকে নিয়ে। গিয়ে দেখলাম। পরবর্তীতে ও আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল ভাইয়া একটা মন্তব্য তো দিতে পারতেন। যা লিখেছিস তুই নিজেই তো লজ্জা পেয়ে গেছি।
অবশেষে যেদিন নেট পেলাম সাথে সাথে আসলাম সিসিবি তে। ভেবেছিলাম সেদিনই অনেক কিছু লিখে ফেলব। কিন্তু এসে দেখি আমি অনেক কিছুই বুঝতেছি না। প্রচুর নতুন মুখ। কাউকেই চিনতেছি না। আমাকেও কেউ চিনে না। পুরান লেখকরা কোথায় সেটাই খুঁজি । আর নতুনদের লেখা পড়ি। নতুনদের দেখে উৎসাহিত হই সেই সাথে পুরান রা কেন আর লিখে না সেটা ভাবি। আমাদের পিচ্চি সামিয়া আপু, বন্য ফুয়াদ, রায়হান কনক, রায়হান আবীর (ও খালি আইডিয়া দিচ্ছে কিছু লিখছে না), কনফুসিয়াস ভাইয়া , এরা কেউ কিছু লিখে না কেন?
আজাইরা প্যাঁচাল অনেক পাড়লাম। নিজেকে আবার ঝালাই করে নিলাম । খুব শীঘ্রই লাইনে চলে আসব অফ টপিক এই লিখা পড়ে কেউ হতাশ হইয়েন না।

১৪ টি মন্তব্য : “অনুপস্থিত একটি মাসের দিনলিপি”

  1. অতি সুসময়ে অনলাইন হইলাম। আমিও অনেকদিন পর 😆 ।এসেই দেখি আপনার ব্লগ। আপনার ব্লগে আমার নাম দেখে তো মাটি থেকে দুইহাত উপরে উঠে গেসি। তাড়াতাড়ি উপন্যাসটা লিখেন।

    জবাব দিন
  2. প্রিন্স কোন কলেজ কোন ব্যাচ ভাই? আপনার নামের শেষে যে ৪৭ আছে সেটা কিসের? ৪৭ আমার খুব প্রিয় সংখ্যা। কেন বলতে পারবেন নিশ্চয়ই। আমার ক্যাডেট নাম্বার ১০৪৭।
    ইনশা আল্লাহ আমি যখন এসে গেছি পুরান গুলাকেও আনার ব্যবস্থা করব।

    জবাব দিন
  3. পুরান নতুনবলে কোনো কথা না, আসলে এখন সবার পরীক্ষা টরীক্ষা দিয়ে অবস্থা খারাপ। এই জন্য কয়েকদিন একটু absent. আমি আজকে উঁকি দিতে গিয়ে দেখি এত্তগুলান ব্লগ। পুরা টাসকি।

    জবাব দিন
  4. ক্যাডেট কলেজ ব্লগ এ আমি নবাগত। এই ব্লগের সুত্র কলেজের গ্রুপ মেইল। ঢুঁ মাইরা দেথি এইটা তো রীতিমত একটা ভার্চুয়াল ক্যাডেট কলেজ। ধীরে ধীরে ক্যাডেট কলেজ ব্লগ এ আসক্ত হয়ে পড়ছি। গত কয়েকদিনে ব্লগ পড়ে মনে হলো প্রতিটা ঘটনা যেন আমাকে নিয়েই ঘটেছে। বুঝলাম ঘটনার স্থান-কাল-পাত্র ভিন্ন হলেও প্রতিটা ঘটনা একই সুতোয় গাঁথা। এটা যেন প্রতিটা ক্যাডেটের সুখ-দুঃখের পথের-পাঁচালী। কি হাউজে, কি একাডেমী ব্লক এ, প্লে গ্রাউন্ডে, ডাইনিং হলে, প্যারেড গ্রাউন্ডে, অডিটোরিয়ামে, কলেজ মসজিদে, কমন-রুমে, কিংবা বারবার শপে - যুগে যুগে একই আবেগ ক্যাডেটদের নাড়া দিয়ে যায়। পুরনোদের আমার অভিনন্দন এমন একটা মহতী উদ্যোগের জন্য। Old is always gold. 😀

    জবাব দিন
  5. মন্তব্য উদ্ধৃতিঃ
    কয়েকদিনে ব্লগ পড়ে মনে হলো প্রতিটা ঘটনা যেন আমাকে নিয়েই ঘটেছে। বুঝলাম ঘটনার স্থান-কাল-পাত্র ভিন্ন হলেও প্রতিটা ঘটনা একই সুতোয় গাঁথা। এটা যেন প্রতিটা ক্যাডেটের সুখ-দুঃখের পথের-পাঁচালী।

    This is the best comment I've read over here.

    জবাব দিন
  6. তপু ভাই...মনে আছে...ব্লগটা যখন মর মর ছিল তখন ঘটেছিল আপনার আগমন...

    এতোদিন আপনাকে মিস করেছি অনেক...জিহাদের মতো করেই বলি...আবার কোপানি স্টার্ট করেন...

    শুরুটা যেন হয় পরীকে নিয়ে...

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।