ক্যাডেট লাইফে একটি বৃহঃস্পতিবার যে কি তা শুধু এক ক্যাডেট-ই বলতে পারে। এমন কি কোন ক্যাডেট আছে যে সপ্তাহের
এই একটি বারের কথা ভুলতে পারবে? সকাল থেকেই পরিকল্পনা শুরু হয়ে যেত কে আজ কাঁঠাল পারবে, কে যাবে সিনেমা দেখতে,
আর সবার আগে যা চিন্তা তা হলো সেদিন রাতে কোন স্যার আর তার সাগরেদ(হাউস বেয়ারা) কে। সিনিয়রিটি বাড়ার সাথে সাথে ফুরতিও বাড়তে থাকে। ত রাতে সাধারনতঃ মুভি থাকত, না থাকলে জমে যেত আড্ডা। আড্ডার কেন্দ্রে থাকত আমাদেরই কোন ফ্রেন্ড। আর আড্ডাতে সাধারনতঃ কাউকে গুঁতান হত আর সারাদিন কে কি করসে? কার কাসে বল্ড হইসে? কে স্পেলিং মিস্টেক করসে এইসব বিস্তারিত। আমাদের আবার এক পার্টি ছিল যাদের কাজ ছিল কার স্পেলিং মিস্টেক হইসে সেই লিস্ট করা, তাই সবাই সাবধানে কথা বলত। এই ভয়ই কথা বলতে হত মেপে মেপে(আমিও ভুক্তভোগী)। এরই ফাকে কেও আবার পরতেসে!!!! সত্যি আবাক করার মতন………। এবার আসা যাক খাওয়া দাওয়ার কাছে ………। স্পেশাল ডিনার! উফ, আমি অন্য কলেজের কথা জানি না কিন্তু আমাদের কলেজে এটা স্পেশালই ছিল। আমাদের আনেকে দুপুরে খেত না। কারণ আর কিছুইনা, রাতের জন্য পেট খালি রাখা চাই। বিশেষ করে আমি এখন নাসিম এর কথা বলব, সে আসলেই একটা জিনিষ ছিল। বসত ১০নং টেবিলে, সে খাওয়া শুরু করলে ওই লাইনে শর্ট পরে যেত, এখন সে আর্মি অফিসার হয়ে গেছে। পাগলা ছিল… খুব ভাল ছেলে। আমাদের যারা ভোররাতেও এই ডিনারের স্বাদ নিতে চেত তারা আবার আইস্ক্রিম এর ১ লিটার বক্স নিয়ে যেত। খাওয়া দাওয়াও চলত আবার বক্স ভরাও চলত। সারা ডাইনিং রুমে বাবুল ভাইদের দৌঁড়াদৌঁড়ি লেগে যেত। আর মাসুদ স্যার যিনি কিনা আমাদের মেসের দায়িত্বে ছিলেন তিনি ঠিক হলের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যেতেন যখন ক্যাডেটরা ডাইনিং হ্ল থেকে বের হত। এইটাই ছিল কঠিন পার্ট। আনেক কসরত করে বক্স নিয়ে বের হতে হত। আর ধরা খেলে ত আর কথা নেই। বাবুল ভাই একবার কি এক কারণে ধরা খেয়েছিল, তার শাস্তি হয়েছিল রান্নাঘরের যত
টি-পট আর পানির জগ ছিল সব মাথার উপর নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা। বাবুল ভাই আমাদের খাবার সরবরাহ করতেন। লাইটস আউটের পর যাদের রাতের বেলা মিশন আছে(কলেজ পালান এবং সিনেমা দেখা) তারা হাউসে এসে রেডি হত। কাঁঠাল পার্টিও রেডি। কাঁঠাল যদি কাঁচা হত তাহলে লবন দিয়ে মেখে রেখে দেওয়া হত। এই কাঁঠাল পাড়তে গিয়ে কতবার যে গার্ডের দৌড়ানি খেতে হয়েছে তার হিসাব নেই। সারারাত কাঁঠাল খাওয়া আর তাস খেলা হত। তিন হাউসে জমিয়ে আড্ডা ত আছেই। জিহাদ, সাকিব, রেদওয়ান, আহসান সবাই মিলে তারপর শুরু করে দিতাম করিডোরে ক্রিকেট খেলা। আল্প আলোতে খেলা যে কি মজা তা মনে হয় না খেললে কেউ বুঝতে পারবেনা। আর কিছুখন পর পর হাউস বেয়ারা আর স্যারের ভিজিট ত আছেই তাই সারাহ্মনি হুরোহুরি লেগেই আছে। এই করতে করতে কখন যে ভোর হয়ে যেত টের পেতাম না। অবশেষে ফজরের আযানের সময় নামাজ পরে ঘুমাতে যেতাম। দেখা যেত অল্প কজন সকালে ব্রেকফাস্ট করতে পারতাম। তারপর ত শুক্রবার। সে আর এক কাহিনী।
৭ টি মন্তব্য : “একটি বৃহঃস্পতিবার ……..আর কিছু?”
মন্তব্য করুন
breakfast na gele kisu koitona?? ajib to!!!!!!!
mamu class 12 a to rajar hale chilam.......
এই মাসুদ স্যার কি বায়োলজির? গোঁফওয়ালা? স কে শ বলে?
ভীষণ জ্বালাময়ী ছিলেন। বেশ কিছুদিন আমাদের ফর্মমাষ্টার ছিলেন, এবং ছয় বছর শেষ হতে হতে উনি হয়ে গেলেন আমাদের চরম শত্রু।
হুমম...স্যার বায়োলজির। আমাদেরও বহুত জালাইত হাউসে। সে হাউস ডিউটি মাস্টার হলে একটা ছোট খাট ইন্সপেকসন হয়ে যেত।
এতোদিন কই ছিলা ভাই? শরীর-মন ভালতো??
আরো লেখ, আরো লেখ।
অবাক হলাম!!!!!!!!!! ব্রেকফাস্টে না গেলে কেউ কিছু কইতো না!!!!!!!!!!!!!! আজব কথা।
হরে ভাই।।... এডজুটেন্ট ছিল আজব তাই...