গাজর
পরীক্ষা উপলক্ষে রাত জেগে পড়লে ঘুম পাক আর নাই পাক, ক্ষুধা লাগবেই। এই ফেনোমেনোনের ব্যতিক্রম এখন পর্যন্ত কাউকে দেখিনি। আমার বাবাও তার ছেলের প্রচণ্ড রাতের গভীর ক্ষুধার কথা জানেন। তাই সম্প্রতি ছোটমামা মারফত কিছু টাকা পাঠিয়েছেন। বলেছেন, ফল ফ্রুট কিনে নিও। বাধ্য সন্তানের মতো আজ বিকেলে গেলাম বাজারে। কিনে আনলাম ১ কেজি গাজর। কেন?
১) আমি কাঁচা গাজর ধুয়ে কচকচ করে চিবিয়ে খাই। সুতরাং এটি আমার কাছে ফলফ্রুট। এটি কোনোমতেই সবজি নয়। তবে হালুয়া বানানোর উপকরণ হিসেবে গাজর ফার্স্ট ক্লাস।
২) একটি ছোট সাইজের গাজর সারাদিনের ভিটামিন-এ’র চাহিদা মেটাবে। এতে আমার দৃষ্টিশক্তি হবে প্রখর। পাশেরজনের খাতা দেখে দেখে সব প্রশ্নের উত্তর ঝেড়ে দেব অনায়াসেই।
৩) গাজর খেলে আমার চুল হবে সিল্কি। ত্বক হবে মসৃণ এবং উজ্জ্বল। ভাইভা পরীক্ষায় মহিলা পরীক্ষক সহজ সহজ প্রশ্ন করবেন এবং খুশি হয়ে পাশ মার্ক বসিয়ে দেবেন।
৪) নিয়মিত গাজর সেবন আমার হার্টকে রাখবে সুস্থ সবল, প্রতিরোধ করবে বিভিন্ন অসুখ। ফলে পরীক্ষার ভয়ে দুরুদুরু কাঁপবেনা বুক। উৎফুল্ল মনে দীর্ঘ একমাসব্যাপী পেশাগত পরীক্ষা শেষ করবো।
সাবধানতাঃ অধিক গাজর সেবনে গর্ভপাত ঘটার সম্ভাবনা থাকে। বিবাহিত নারীরা সতর্কতা অবলম্বন করুন।
রাতজাগার জন্য আমার বয়সী অধিকাংশ তরুণ সিগারেট খায়। বেনসনের সোনালি প্যাকেটে থাকে ২০ টি সিগারেট। মূল্য ১০০ টাকার অধিক। ১ কেজি গাজরের মূল্য ৩৫ টাকা। মোট গাজর ১৬ টি। সিগারেট খেলে ফুসফুসে ক্যান্সার হয়। গাজর পাকস্থলীর এবং বৃহদান্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। মাই ফাদার শুড বি প্রাউড অফ হিজ ইয়াংগেস্ট চাইল্ড।
ঝগড়া
বালক বালিকার ঝগড়া চলছে। বালিকা বলছে বালককে,
– অ্যাই তোমার না প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় ফোন দেয়ার কথা, দাও নাই ক্যান?
– আমি খেলতে গেসিলাম, স্যরি!
– স্যরি মানে? তুমি একটা শয়তান!
– তুমি শয়তান
– তুমি তেলাপোকা
– তুমি ছারপোকা
– তুমি ব্যাঙ
– তুমি কেঁচো
– তুই এডিস মশা
– তুই মহিলা অ্যানোফিলিস মশা
– তুই গান্ধী পোকা
– তুই প্রজাপতি
– কি রঙের?
– অনেক রঙের !
– থ্যাংক ইউ। কিন্তু তুমি তেলাপোকাই, বুঝছো কথা?
– আচ্ছা মানলাম যাও, আমি তেলাপোকা !
– গুড বয় !
– হে হে !
ঝগড়া শেষ। সোনার বাংলাদেশ।
মানিক মিয়া এভিনিউ
ডাক্তারি কইরা জীবন চালাইতে চাইনা এই কথাটা কাছের মানুষদের বহুবার বলসি। সবাই জিগাইসে, তাইলে কী করবা?
কঠিন প্রশ্ন। সিরিয়াস কোনো উত্তর পাইনাই। ফাইজলামি টাইপ কয়টা উত্তর দিসি।
১) আমার হাতের লেখা আলহামদুলিল্লাহ্ বেশ ভালো। কলেজ জীবনে দেয়াল পত্রিকাও লিখসি একবার। এই হাতের লেখা নিয়ে ভালো ডাক্তার হওয়া সম্ভব না। বরং দেয়াল লিখন কইরা ভালো ইনকাম করা যাবে। অলরেডি প্র্যাকটিস শুরু কইরা দিসি। অ্যানাটমি খাতার লাস্ট পেজে লিখতেসি…… “ক্যান্টনমেন্টের মাটি, ফ্লাইওভারের ঘাঁটি” ।
২) ৫০ বছর ধরে আপনারা যারা পাণ্ডার মলমের নাম শুনেছেন, কিন্তু চোখে দ্যাখেন নাই, তারা আসুন দেখে যান। পাঁচ মিনিটের মধ্যে আপনার ভিতরের বাইরের সকল চুলকানি দূর করে যান……। ক্যানভাসার হিসেবে মানুষের সেবা করা যায়। অল্প পয়সায় সকল রোগের চিকিৎসা করতে পারবো।
৩) আজকে সন্ধ্যায় আমার বানানো লেবু চা খাইয়া এক ফ্রেন্ড কইলো, দারুণ বানাইছস, চিনি আর লেবুর অনুপাত পারফেক্ট! আমি ভাবলাম, তাইলে বউয়ের চেম্বারের সামনে চায়ের দোকান দিমু- ”পারফেক্ট অনুপাত টি স্টল”।
৪) এক সিলিব্রিটি জুনিয়র (ফিমেল) আমারে ইদানিং ‘চিকি’, ‘স্বর্ণলতা’ ইত্যাদি নামে ডাইকা খুব ফাল পাড়তেসে। শুনো মাইয়া, জলিল ভাই যদি ”বাংলার ট্রয়” নামে মুভি বানায়, তাইলে প্যারিস এর কোমা রোলটা কিন্তু আমিই পামু।
৫) গতকাল মানিক মিয়া এভিনিউতে দেখলাম এক লোক বাইকে কইরা যাইতেসে। পিছে ৮/৯ বছরের এক ছেলে, গায়ে টেস্টের সাদা ড্রেস, পায়ে কেডস। তার কাঁধে ব্যাগ, আর ব্যাগের ভেতর থেকে ব্যাটের হ্যান্ডেল মাথা বাইর কইরা আসে। এতো ভালো লাগলো!!আর কিছু না পারি ছেলেকে ক্রিকেট প্র্যাকটিসে নিয়ে যাবো। বসে বসে তার খেলা দেখবো। একা একা হাত তালি দিবো। ফেরার সময় ছেলে আমার কোমর জড়ায় ধরে বসে থাকবে। পিঠে মাথা রাখবে। আমি বলবো, বাবা অনেক দূর যেতে হবে। অনেক দূর।
গান
অধ্যয়ন করিতে করিতে মস্তিষ্ক উত্তপ্ত হইয়া গিয়াছে। এখন শুধু গান বাহির হইতেছে। নমুনা টাইপের গান।
মন শুধু মন ছুঁয়েছে, ও সে তো মুখ খোলেনি
মেসি শুধু গোল দিয়েছে, ঘুষ তো দেয়নি……
ভালো আছি ভালো থেকো
নিজামীকে রাজাকার বলেই ডেকো……
তোমার জন্য নীলচে তারার একটুখানি আলো
আব্বার চুল একটাও নেই কালো
মেহেদি বাটা গরম পানিতে মিশিয়ে দিয়ে ভাবি
কমলা চুলে আব্বাকে লাগে ভালো……
তোমারে লেগেছে এতো যে ভালো, চাঁদ বুঝি তা জানে
ভাতের মাড়েতে লবণ দিয়ে আম্মা ক্যান আমারে খাওয়াইতে টানে……
বাহির বলে দূরে থাকুক
ভিতর বলে আসুক না
সাকিব বলে শিশির থাকুক
গেইল বলে খেলুম না……
সারাদিন তোমায় ভেবে হলনা আমার কোনো কাজ
ইট ভাঙি তাই তোমার মাথায় দশ বারোটা আজ……
বল না তুই বলনা, ভুলে গিয়ে ছলনা
একবার শুধু বলনা দাঁতে ব্যথা বল না……
আমার মাথা পুরাপুরিই গেসে। দোয়া করবেন সবাই।
:boss: :boss: :boss: :boss: :boss:
যাওয়া মাথা নিয়া যা লেখলেন ভাই! :clap:
:thumbup: :thumbup: :thumbup: (সম্পাদিত)
😀 😀 😀
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
🙂
:shy: :shy: :shy:
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
মেডিকেল স্টুডেন্ট?
আ হা রে....
ফলফ্রুট.... =)) =)) =)) =)) =))
জি ভাই, মেডিকেল স্টুডেন্ট ~x( ~x( ~x(
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
:)) :)) :))
খেয়া (২০০৬-২০১১)
এই খেয়া মেয়েটা বোবা নাকি? x-(
এখন পর্যন্ত ইমো ছাড়া কোনো মন্তব্য দেখিনাই তার x-(
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
আব্বার চুল কমলা লাগে ভালো..... =))
:just: অসাধারন।
:clap: :clap:
=)) =))
😀 😀 😀 😀 😀
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
ববহুদিন বাদে ব্লগে এসে তোর নামটা দেখে চোখ আটকে গেল।
খুব ভালো লাগল লেখা পড়ে। :)) :)) :))
তানভীর আহমেদ
থ্যাংক ইউ, তানভীর ভাই 😀
অনেকদিন যোগাযোগ নাই। পারলে একটু স্মরণ কইরেন।
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
ফলফ্রুট খাইতেছেন তো ঠিকমতো ??? :-B :-B
অভি