বিডি আর বিদ্রোহের কথা আমরা ভুলে গেছি। ভুলে যাওয়াটা সহজ, সুবিধা জনক। সরকারও তাই চেয়েছিলো। আমরা ব্লগারাও এখন দৈনন্দিন জীবন, ভালোবাসা দিবস, আস্তিকতা-নাস্তিকতা বা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে ব্লগ লিখতে ব্যস্ত।
আমি হিসাব করে দেখলাম, সাহসী বাঙ্গালীরা প্রায় সব ৭১ রেই মারা গেছেন। আমরা যারা নতুন প্রজন্মের মানুষ, বেশিরভাগের বাবা-মাই মুক্তিযুদ্ধের সময় পালিয়ে বেরিয়েছেন। আমরা কাপুরুষের সণ্তান।তাই আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানিনা।
আমরা পালিয়ে বেরাতে বা ভুলে যেতে ভলোবাসি। এই জন্য গোলাম আজমদের কবর এ দেশের বুকেই হবে এবং আমরা কিছুই করতে পারবনা বা করবনা।
অন্যায় ভাবে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা মারা যাবেন, আমরা এর স্বাক্ষী হয়ে থাকব। সাহসীকতা এখনকার যুগে বোকামীর উদহরণ।
মেজর আজিজুল হাকীম। উনি আমার ক্যাডেট কলেজের এডজুডেন্ট ছিলেন, আমি যখন ৭ম শ্রেণীতে ভর্তি হই।শহীদ হয়েছেন বিডিআর বিদ্রোহে। আমি বিশ্বাস করতে পারিনা স্যার নেই। ওনার মত অফিস্যার বা মানুষ আরেকটা আমরা পাবো না।
বাবা মাকে ফেলে ক্যাডেট কলেজে ঢুকেছি। আমাদের ৫০ জনকে সন্তানের মতো আগলে রেখেছিলেন। আমাদের বাবা -মারা ওনার হাতে রেখে গিয়েছিলেন আমাদের। উনি তো ঠিকই আমাদেরকে মানুষ করেছেন, এজন্য আমরা এখন কেউ আর্মি অফিস্যার, উদ্যোগক্তা, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তার বা অনান্য পেশার সাথে জড়িত।
কই স্যারকে যে ওরা মেরে ফেললো, আমরা কি দয়িত্ব পালন করলাম? স্যারের স্ত্রী- সন্তানেরা কিভাবে বেচে আছেন খবর রেখেছি?
স্যারতো আমাদেরকে আপোষ করতে বা মেনে নিতে শেখাননি, আমরা কেন স্যারের হত্যাকান্ড মেনে নিচ্ছি?
স্যার, আমরা যদি আমাদের জীবদ্দশায় আপনার হত্যাকান্ডের বিচার করতে না পারি, এই কাপুরুষদের সন্তানদের আপনি ক্ষমা করবেন না স্যার।
ভুলি নাই, মনে আছে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
বাংলাদেশে ব্যাপারগুলো এমনই হয়। একটা ব্যাপার নিয়ে প্রথমে খুব হইচই হয়। সময়ের সাথে তার গরম হারায় ঠান্ডা হয়ে গেলে তার খোঁজখবরও শেষ হয়ে যায় পাবলিকের অনাগ্রহ আর সাংবাদিকদের গরম জিনিসে মেতে উঠার ধাক্কায়। নিজের জীবনের ঠেলা সামলাতে ব্যস্ত আমরাও হট বিষয় নিয়ে হইচই করি । বিষয়গুলো ঠান্ডা হয় কিন্তু ঠান্ডা হইনা আমরা। আমরা আলোচনায় আড্ডায় মাতিয়ে তুলতে থাকি পরবর্তী কোন হট বিষয়কে।
স্যারকে আমরা পাই নাই। তারপরেও তার জন্য এবং পিলখানার ঘটনায় হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর জন্য এবং সেই সাথে নানা সময়ে অন্যায়ভাবে জীবন শেষ করে দেওয়া সকল বীরদের প্রতি অক্ষমের শেষ সম্বল শ্রদ্ধাঞ্জলিই জানিয়ে গেলাম।
বীরেরা আপনারা কিছু মনে করবেন না প্লিজ, আমরা বাঙালিরা এই রকমই। 🙁 🙁 🙁
খুব কষ্ট হয় উনার কথা মনে হলে.......
🙁 🙁 🙁
🙁 🙁 🙁
কই স্যারকে যে ওরা মেরে ফেললো, আমরা কি দয়িত্ব পালন করলাম? স্যারের স্ত্রী- সন্তানেরা কিভাবে বেচে আছেন খবর রেখেছি?
----
কথা সত্য ... আমরা সবচেয়ে সহজ কাজটাই করেছি, ভুলে গেছি। ভুলে গেলে দায়িত্বগুলো পালন করতে হয় না।
ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার সব চেস্টাই সফল ... হুজুগে বান্গালী আমরা হুজুগ নিয়েই লাফাই।
🙁
রেদওয়ান, ঠিক বলেছিস। আমাদের ই শাস্তি হওয়া দরকার।
স্যার এর কথা আমার এখনো মনে আছে। আমরা ক্লাস সেভেন এ স্যারকে দেখলেই ১০ টা পুশ আপ দিতাম।
একবার স্যার এর পুরো নাম বলতে না পারায় আমাদের ক্লাস সেভেন বি সেকশন ১০০০ বার স্যার এর নাম প্রেপ টাস্ক খাতায় লিখে জমা দিয়েছিলাম।
স্যার কে এখনো মনে পড়ে।
অন্যায়কারি ও অন্যায় সহ্য কারি দুইজনই অপরাধী, এটাই জেনে এসেছি ছোট বেলা থেকে। যদি সমস্ত এক্স ক্যাডেট মিলে সেদিন ঝাপিয়ে পড়তেন তাহলে তো একজনকেও বাচিয়ে আনতে পারতেন। সে সময় তো নিজস্ব কাজ নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন আপনারা সবাই। আর ভিতরের অবস্হার কথা কেউ কেউ অবশ্য বল্গে উল্লেখ করেছেন। এমনকি আমাদের ভাবীদের নিয়েও কিছু অবনকশাস কথা। বিডিআর দুর্ঘটনার পরও কেউ কি বিচারের জন্য কিছু করেছেন? আপনারা কি পারেন না এখনও কিছু করতে? তাহলে কেন বলেন সাথে আছি, পাশে আছি। আপনাদের সবাই তো প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। কেউ ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, আর্মী অফিসার, অথবা দেশে বিদেশে কোথাও না কোথাও স্টাবলিশমেন্ট এনেছেন। আমাদের সমস্ত ফ্যামিলিগুলোর পক্ষে, পাশে, সাথে ভাই হয়ে, বন্ধু হয়ে কেউ কি একবারও এগিয়ে এসেছেন? আমাদের সুখ-দুঃখের কথা জানার জন্যও তো নিজে থেকে এগিয়ে আসেন নাই। শুধু শুধু আমরা জাতিটাই এমন, এটা তো শোনা আপনাদের কাছে আমাদের কাম্য হতে পারেনা। জওয়ানেরা তাদের মূর্খতা দেখিয়েছে, অথচ শিক্ষিত ভাইয়ারা তাদের শিক্ষিত বুদ্ধি দিয়ে আমাদের এই ফ্যামিলিদের জন্য কিছুই কি করার কথা ভাবতে পারেননা।
আজিজ ভাবী রংপুর ক্যান্টনমেন্টে থাকেন। তাদের ছেলে প্রতীক রংপুর ক্যাডেট কলেজে ক্লাস সেভেনে পড়ে। আর রুকাইয়া মিলিনিয়ামে কেজিতে পড়ছে।
:boss:
দোস্ত, তুই কমেন্ট করা শুরু করছিস, গ্রেট 🙂
:boss:
৯৭-এর রিইউনিয়নে মেজর আজিজ স্যারকে কলেজে এডজুট্যান্ট হিসাবে দেখেছিলাম। এরপরে একবার কোন এক সময় ঢাকা থেকে রাজশাহী যাবার সময় স্যারের সাথে পাশাপাশি বসে আড্ডা দিতে দিতে গিয়েছিলাম। খুব মনে পড়ছে সেই কথাগুলো। পিলখানার সকল শহীদের মাগফিরাত কামনা করছি।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
এই পোস্টে ইচ্ছে করেই কমেন্ট করিনি-কমেন্ট করার মত মানসিক শক্তি নেই বলে। আমার যেটুকু সাধ্য আছে তা নিয়ে এর প্রতিকারে যেদিন দাঁড়াতে পারব সেদিন এখানে গলা খুলে কথা বলব।শুধু এটুকু বলতে পারি,আমার তরফ থেকে চেষ্টার ত্রুটি রাখছিনা।বাকিটা ভবিষ্যৎ বলে দেবে।
আজিজ ভাই অসাধারণ একজন মানুষ। আমরা গত দুই বছর Jan 2007-Jan 2009 পর্যন্ত দুই family আমরা একসাথেই রংপুরে ছিলাম। 24th Feb 2009 এ প্যারেড দেখতে যাওয়ার সময়ও উনি গাড়ি থেকে আমাকে রিসিভ করেন। ভাইয়ের সাথে খুব আত্তীক সম্পর্ক ছিল তানভীরের। ও সব সময় বলতো বউ কে কিভাবে রেসপেক্ট করতে তা স্যারের কাছ থেকে শিখলাম। 25 feb 2009 এ সকাল প্রায় দশটায় ভাইয়ের সাথে আমার শেষ কথা হয়। আমাকে তখনও উনি বলেন, কিচ্ছুই হবেনা, আমরা ভাল আছি, তানভীর ভাল আছে, আমার সাথে আছে, কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় চলে আসবে। এরপর ওকে উনি মোবাইলটা দেন। শেষ পর্যন্ত দুইবার উনার ফোনেই আমরা যোগাযোগ করি। আর ভাবী যে কি ভাল বলে শেষ করা যাবেনা।
মাস্ফ্যু, সবিনয়ে জানতে চাই, প্রতিকারে কিভাবে দাঁড়ানো সম্ভব কিংবা আমরা কিভাবে নিজেদের " সাথে থাকা" কিংবা "পাশে থাকা" প্রমাণ করতে পারি। আমর শিক্ষিত বুদ্ধিতে আমি তেমন কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ সস্তা ইমোশনের কথা বলাটা নিজের কাছে হিপোক্রেসি মনে হয়। আরো অনেক কথাই মনে আসছিলো । বলতে ইচ্ছা করছে না। শুধু এটুকু বলি, ভাববাদী ভন্ডামির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে সত্যিকারের কিছু আমাদের দেশে হতে পারে এই বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। অনেক আক্ষেপ থেকেই কথাটা বলা। কেউ আমার কথায় মনে আগাত পেলে দুঃখিত।
আমিন ভাই,এখনো যেহেতু কিছু করতে পারিনি এবং কতটুকু করতে পারব তাও অনিশ্চিত,তাই সচেতনভাবেই উল্লেখ করিনি কি করার চেষ্টা করছি। অন্যদের কথা জানিনা,আমার এই কিছু করার ইচ্ছা ভাববাদী ভন্ডামী বা সস্তা ইমোশন কোনটাই নয়।আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে শুধুমাত্র নিজের ক্ষেত্রে সবিনয়ে বলছি-বিদেশে মাস্টার্স করতে যাবার অথবা প্রাইভেট সেক্টরে চমৎকার সব জবে ঢোকার হাতছানি বাদ দিয়ে বছরের পর বছর (২০০৮ থেকে শুরু) বেহায়ার মত বিসিএস পরীক্ষা দেয়াটা আমার এই চেষ্টার অন্তর্ভূক্ত।পুলিশ আমার প্রথম দুটি পছন্দের একটি,ওখানে যদি ঢুকতে পারি তাহলে আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব প্রেরণা ভাবীদের এখনো হুমকি ধামকি দেবার চেষ্টা যারা করে তাদের চেষ্টাটাকে অন্ততঃ এক চিমটি হলেও কঠিন করে তোলার।কতটুকু কি করতে পারব তা ভবিষ্যত বলে দেবে-এটা তো আগেই বলেছি।
পুনশ্চঃ বিদেশে যাঁরা মাস্টার্স করছেন অথবা যাঁরা প্রাইভেট সেক্টরে চমৎকার সব চাকুরি করছেন তাঁদের প্রতি বিন্দুমাত্র অসম্মান প্রকাশের ধৃষ্টতা আমার নেই।আমি শুধু আমার কি উদ্দেশ্য,ব্যক্তি পর্যায় থেকে আমি কি চেষ্টা করছি সেটা বললাম।
কে লহিবে মোর কার্য?কহে সন্ধ্যারবি-
সমগ্র জগৎ রহে নিরুত্তর ছবি।
মাটির প্রদীপ ছিল,সে কহিল-স্বামী,
আমার যেটুকু সাধ্য করিব তা আমি।
আমার অবস্থা মাটির প্রদীপের চেয়েও তুচ্ছাতিতুচ্ছ-কাজেই ক্ষুদ্র সামর্থে কি করতে পারব তা অনেকটাই অনিশ্চিত।তবে বয়স থাকা পর্যন্ত বিসিএস দিয়ে যাব এটুকু বলতে পারি।
আমার বক্তব্য থেকে তোর উত্তর একটু দূর দিয়ে গেছে। এনিওয়ে তোর আন্তরিকতা আর সততাকে :salute:
কিন্তু তাতে যে কমেন্টের উত্তরে তুই প্রথম কথাটা বলেছিস তা কি সলভ হয় ? আমি ঠিক শিওর না।
নাহ সল্ভ হয়না,কিন্তু একেবারে কিছুই করতে না পারার অপবাদ থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়।আর প্রশাসনে যদি পরবর্তী প্রজন্মের সৎ,কেনা-যায়না এমন ছেলেমেয়েগুলো ঢুকতে পারে তাহলে হয়তো এরকম ট্রাজেডী আবার ঘটা থেকে রক্ষাও পাওয়া যেতে পারে।
প্রেরণা ভাবীকে নাকি নিয়মিত ফোনে হুমকি দেয় বিডিয়ারের আত্মীয় স্বজনেরা।চিন্তা করেন তো,কোন পুলিশ অফিসার যদি এই উৎপাত থামায় এবং যে কোন প্রয়োজনে সাধ্যমত সহায়তা করার আশ্বাস দেয় তাহলে অতি ক্ষুদ্র মাত্রায় হলেও কি কিছু করা হবেনা? হায়দার ভাইদের আত্মত্যাগের তুলনায় এটুকু অণুপরমানূর সমানও না-কিন্তু এই পোড়া দেশে এটুকুই বা কম কি!
আজিজ ভাই অসুস্হ ছিলেন। উনার মেরুদন্ডের হাড়ে সমস্যা থাকায় উনি ছুটি নিয়ে ইন্ডিয়া থেকে চিকিৎসা করিয়ে আসেন ঐ ঘটনা ঘটার তিন/চার মাস আগে। উনার চলাফেরা করতে সমস্যা হত। সৈনিকদের প্রতিটা বাড়ির ভাল মন্দ উনি খবর রাখতেন, সাধ্যমত তাদের হেল্পও তিনি করতেন। তাই আজিজ ভাইয়ের জন্য এত বড় পুরষ্কার জওয়ানরা দিল। ভাই তো আল্লাহর কাছে ভাল আছেন। কিন্তু উনি যাদের রেখে গেছেন তারা কেউ তো মানতে পারছেন না। যেমন ভাবী মনে করেন আমি কিভাবে বাঁচবো ওকে ছাড়া , আমি ঠিক সেভাবেই মনে করি ভাবীও কিভাবে থাকবেন? ভাবীকে খুব মিস করছি।
শহিদ-দের প্রায় সকল-কে চিনি।তাই কষ্টটা অনেক বেশী ।
প্রেরনা ভাবি-র লেখা পড়ে কেদেছি, পরদিন হায়দার-এর কবরে গিয়েছি কিছু কথা বল্ব বলে,আমি জানি ও ঠিক বুঝতে পেরেছে !!
শান্তিতে ঘুমাও। আমাদের ক্ষুদ্রতা কখন তোমাদের স্পর্শ করবে না।
সহকর্মী এবং সহযোদ্ধার পার্থক্য হলো, সহযোদ্ধার সাথে রক্তের সম্পর্ক হয়ে যায়, আপন ভাইয়ের মতো, আর ঠিক এই জিনিসটাই এ দেশের মানুষজন বোঝে না, নিম্নশিক্ষিত এবং নিম্নবুদ্ধিসম্পন্ন বলেই মনে করে, তাদের কিছু হলেও কারো কিছু আসে যায় না। কনসিভ করা বৌ বাসায় রেখে, ছুটির দিন, কাজের দিন না ধরে যারা নিয়মিত খেটে যাচ্ছে, তাদেরকে নিম্নশ্রেনী মনে করাটাই স্বাভাবিক। কারণ উপরের লোকরা তো শুধু সাইন করে, তাদের গায়ে পালকের হাওয়াটাও লাগে না।
এখানে তোমার নিম্ন শ্রেণীরা বলতে কারা ভাইয়া আমার কাছে ঠিক ক্লিযার হল না তুমি কি একটু বুঝিয়ে বলবা?
কষ্ট করে বললাম ভাবি , নিজেদেরকেই