সর্বকালের সেরা মুষ্টিযোদ্ধার আত্মজীবনী ‘দ্য গ্রেটেস্ট – মাই ওন স্টোরি’ । মোহাম্মদ আলীর জবানীতে লিখেছেন রিচার্ড ডায়হাম।
‘কালের কন্ঠ’তে ধারাবাহিক ভাবে অনুবাদ করছি আমি। ভালো হচ্ছে নাকি খারাপ, সেই প্রতিক্রিয়া জানার জন্যে সিসিবিতে দেয়ার লোভটাও সামলানো গেল না! আজ দিচ্ছি ধারাবাহিকের ২য় ও ৩য় কিস্তি-
২
‘তোকে আমরা হারিয়ে দিয়েছি, বেজন্মা’ কথাটা যে বললো তার দিকে একবার তাকালাম। ভারি গড়নের এক শ্বেতাঙ্গ, যে নিজের চেয়ারের উপর দাঁড়িয়ে হাতের মুঠোয় গোল করে পাকানো খবরের কাগজটা রাজদন্ডের মতো নাড়তে নাড়তে বলছে ‘তোকে বাগে পেয়েছি, এইবার তোকে বাগে পেয়েছি’।
আমাদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ এসে রিংটা ঘিরে রাখলো, তারপরেও উন্মত্ত জনতার উন্মাদনা চলছেই। কেউ পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে দড়ি গলিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে জো ফ্রেজিয়ার আলিঙ্গনে টেনে নিচ্ছে তারই সহ-প্রশিণার্থী ও অনুশীলনের সঙ্গী নরটনকে।
একজন রেডিও ধারাভাষ্যকার আমার নাম ধরে চেঁচাচ্ছে, ‘ব্যাপারটা ব্যখ্যা করে কিছু একটা বলুন’, কি বলবো? ততণে আ্যঞ্জেলো এবং বান্ডিনি আমাকে ধরে রিং থেকে নিচে নামিয়ে আনছে। আমার গলা বেয়ে নামছে আমারই নোনতা স্বাদের রক্ত,চোখে মুখে ফুটে উঠছে ব্যথা আর আঘাতের চিহ্ণ, কাঁধ দুটো টনটন করছে। তারপরেও আমি একটু থমকে দাঁড়ালাম, আমি জানি বেলিন্ডা কোথায় বসে। আমি সেদিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে তাকে আস্বস্ত করার চেষ্টা করলাম, যে আমার কিছু হয়নি। কিন্তু পুলিশ আর জনতার প্রাচীর ঠেলে আমি বেলিন্ডাকে দেখতে পেলাম না, উলটো সেই দেয়ালের চাপে ক্রমশ পিছু হটতে লাগলাম ড্রেসিং রুমের দিকে।
‘কি গো সুন্দরী’, ’এখন সুন্দরীটা কে?’…একদল সাদা মহিলা ঔদ্ধত্য নিয়ে তাদের পা মাটিতে দাবাতে দাবাতে আমার দিকে প্রশ্নগুলো ছুঁড়ে দিলো। পুলিশ তাদের সরিয়ে দিলেও প্রশ্নগুলো কিন্তু মাথায় থেকেই গেল। ব্যাথায় আমার মাথা ছিঁড়ে পড়ে যাচ্ছে, চোয়ালে অসহ্য যন্ত্রণা, এসময় কানে এলো, ‘তুমি শেষ ! খুব তো বড় বড় কথা বলছিলে, এবার সব শেষ’। অগ্নিনির্বাপন কর্মীর পোষাক পড়া লোকটার কথায় আগুনের আঁচ।
৩
আমার সামনে দেয়াল তুলে আছে নিরাপত্তাকর্মীরা। তাদের পেছনে চোরের মতো লুকিয়ে ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটছি, কানে আসছে অশ্রাব্য,অকথ্য সব গালিগালাজ আর চিৎকার ! আমার দিন কি তাহলে সত্যিই ফুরিয়ে এলো!
দরজাটা খুলতেই কয়েকটা পরিচিত চেহারার দেখা পেলাম, যাদের চোখে মুখে ফুটে আছে আমার জন্য সহানূভূতি। আমার ম্যানেজার হার্বার্ট মুহাম্মদ, সহকারী ট্রেনার বান্ডিনি, আমার ডাক্তার প্যাচিও, টেম্পল সেভেন এর ক্যাপ্টেন জোসেফ ইউসুফ- মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করার দিন থেকেই যাকে চিনি, ট্রেনার আ্যঞ্জেলো ডান্ডি… এমন আরো অনেকে। রুমে ঢুকে যাবার পরেও উত্তেজিত জনতা দরজা খোলার চেষ্টা করেই যাচ্ছিলো, আর মাঝে মাঝে খোলা দরজা দিয়ে শোনা যাচ্ছিলো বাইরের উল্লাস, ‘কি? এখন সবার সেরাটা কে?’
অবশেষে দরজা ঠেসে দাঁড়ালো আ্যঞ্জেলো, আর আমি নিস্তার পেলাম এক নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণা থেকে। ‘জংলি’ এই একটা কথাই শুনতে পেলাম তার মুখে।
‘এটা নরটনের শহর আলী, তোমার যেমন লুইভিল। বুঝতে চেষ্টা করো, এই শহরের এক ছোকরা তোমাকে হারিয়ে দিয়েছে, এটা আজকের নায়কের প্রতি শহরবাসীর অভিনন্দন’। কিন্তু ঐ ঘামে ভেজা উল্লাসে চকচক করতে থাকা চেহারাগুলোকে আমি ভালো মতোই চিনি। ওরা কেউ বক্সিং এর ভক্ত নয়। নরটনের তো নয়ই! এটা শ্বেতাঙ্গ মার্কিনীদের উচ্ছাস, এক ‘কালা আদমি’কে হারিয়ে দিয়েছে একজন সাদা মানুষ।
চলবে…
১ম 😀
চমৎকার হচ্ছে ...... শুধু সাইজে যদি আরেকটু বড় হতো ......
সাথে আছি... তবে এখনি পড়ছিনা, পুরাটা লেখা হলে একসাথে পড়ব 🙂
এখন থেকে পুরাটা পড়ে তারপরেই কমেন্ট করবি x-( হুদাই কমেন্টাবি না 😡
অনটপিক : লেখাটা চরম হচ্ছে ভাই :thumbup:
"Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
- A Concerto Is a Conversation
হু ....যেন তুই কইলেই হইল :grr: :grr: :grr:
তাহলে ১ বছর পরে...।
আনুবাদের ধরণটা ভালো লাগছে । যে ব্যাটা war and peace আনুবাদ করছে তার আপনার কাছে গিয়া কোচিং করা উচিত ।
ভালো লাগছে পড়ে...কিন্তু এতো ছোটো ক্যান?
আগে পুরা দ্যান, তার্পরে পড়ি :grr: :grr: :grr:
চুপে চুপে পইড়া গেলাম ...
ভাই অসাধারন লাগছে....কিন্তু প্লীজ আর একটু বড় করে লিখেন।
খুব ভাল হইতেসে সামীউর ভাই...মনে হইতেসে একটু সেবা ফ্লেভার আসে...এই কারণে আরও বেশি ভাল লাগতেসে :thumbup:
অনুবাদ খুব ভাল হচ্ছে... :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
চমৎকার হচ্ছে, চলতে থাকুক। পরের পর্ব জলদি এবং আর একটু বড় করে দাও। :hatsoff:
অনুবাদটা চমৎকার হচ্ছে সামীউর। :thumbup: