“খোকন, নাস্তা খেয়ে যাও, পরাটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে” – মা ডাকলেন নীচের রান্নাঘর থেকে।
আমি তখনো দো’তালায় আমার ঘরে শুয়ে। ঘড়িতে দেখলাম সকাল প্রায় ৯ টা বাজে। কলেজের বন্ধে বাড়ীতে এসেছি। সকালে উঠে পিটি করার ঝামেলা নেই। তবু অভ্যাস মতো সকালেই ঘুম ভেঙ্গেছে। ভাল লাগছিল – কিছু না করে বিছানায় শুয়ে শুয়ে গতকাল বিকেলে সিনেমা হলে দেখা নাম না জানা সেই মেয়েটার কথা ভাবতে। আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়েছিল শুধু। তাতেই এত ভাল হয়ে আছে আমার মনটা। শুধু তার কথা ভাবতে ইচ্ছা করছে, আর কিছুই করতে ইচ্ছা করছে না। আসলে তখন বয়সটা হচ্ছে ওই রকম। যাকে দেখি তাকেই ভাল লাগে। এদিকে ক্ষিধেও লেগেছে – তাই বাধ্য হয়ে উঠলাম।
মা রাতে কখন শুতে যান আর কত ভোরে ওঠেন – কিছুই খেয়াল রাখতাম না। এখন ভাবি কত কষ্ট করতেন তিনি আমাদের মুখের একটু হাসি দেখার জন্যে। গ্যাসের চুলা ছিল না যশোর শহরে, যেখানে আমি জন্মেছি। কাঠের চুলায় রান্না করতে হত মাকে। বাড়ীতে যদিও কাজের লোক ছিল, কিন্তু দেখতাম রান্নাটা মা করছেন। আমার আব্বা নাকি মায়ের হাতের ছাড়া অন্য কারোর রান্না করা খাবার পছন্দ করতেন না। আব্বা অবশ্য সব সময় মায়ের রান্নার খুব প্রশংসা করতেন খেতে বসে। এখন বুঝি এভাবেই তিনি মায়ের মন জয় করে রেখেছিলেন।
আমি একবার এই টেকনিকটা চেষ্টা করেছিলাম আমার স্ত্রীর সাথে। কাজ হয়নি। আমার জানা ছিল না, তাই ভুল করে প্রশংসা করে ছিলাম দোকান থেকে কিনে আনা খাবারের, তার রান্না মনে করে। কোন কথা না বলে যখন আমার দিকে গটগট করে তাকালো, তখন বুঝতে পারলাম ভুলটা। বেশী শিক্ষিত, আর বেশী বুদ্ধিমান স্ত্রীর সাথে বাস করার ঝামেলা অনেক।
কাঠের চুলার কাঠ কেনার জন্যে আব্বা আমাকে সাথে করে নিয়ে যেতেন কপতাক্ষ নদীর পারে ঝিকরগাছা শহরে। সুন্দরবন থেকে নৌকায় করে কাঠ আসতো ঝিকরগাছায়। আমরা ট্রাক ভাড়া করে এক সাথে এক ট্রাক কাঠ কিনে আনতাম। এর ফলে এক সাথে কয়েক মাসের কাঠ কেনা হয়ে যেতো। আব্বা হিসাব করে দেখেছিলেন এতে কাঠের দাম বেশ কম পরে। আব্বা-মা দু’জনেই বেশ হিসাব করে চলতেন। সরকারী চাকুরে হিসাবে তখনকার দিনে আব্বা যে খুব কম টাকা আয় করতেন, তা নয়। কিন্তু হিসাব করে চলা এবং অপচয় না করা ছিল সেই সময়ের নিয়ম। আমার মনে আছে, আব্বা আমাকে শিখিয়েছিলেন যে টুথপেস্ট শেষ হয়ে আসলে কি করে টিউবের পিছন দিক খুলে আরও কয়েক দিন বেশী ব্যবহার করা যায়।
বাড়ীর দো’তলা থেকে নেমে রান্না ঘরে এসে সোজা মায়ের কোলে শুয়ে পরলাম। মা তখন তার উচু পিড়ির উপর বসে সবার প্লেটে খাবার ভাগ করে দিচ্ছেন। অন্য দিন হলে আমার স্বভাব মত জ্বালাতন শুরু করতাম মায়ের সাথে। আজ আমার মন ভাল – সেই মেয়েটার হাসি মুখটা তখনো চোখের সামনে।।
– কি রান্না করেছো পরাটার সাথে?
– তোমার জন্যে ডিম ভাজি আর সুজি।
– আলু ভাজি নেই?
– হ্যা, তাও আছে। খাবা?
– হ্যা, দাও একটু।
– তাহলে কোলের থেকে ওঠ। না হলে বাড়বো কি করে।
– না এখন ওঠবো না। আর একটু শুয়ে থাকবো।
মা প্রশ্রয়ের হাসি দিলেন। মায়ের কোলে শুয়ে কালকের মেয়েটার কথা ভাবতে ভাল লাগলো।
– বউ আসলে তখন কি করবা? – স্নেহভরে আমার দিকে তাকিয়ে মা প্রশ্ন করলেন।
– দু’জনে মিলে তোমার কোলে বসবো। প্রথমে আমি তোমার কোলে বসবো, আর বউ বসবে আমার কোলে।
আমার মুখে কিছুই আটকাতো না।
***************************
প্রায় ৫০ বছর ফাস্ট ফরোয়ার্ড করে ফিরে এলাম বর্তমানে। সকালে কাজে যাবার আগে অনেক তাড়াহুড়া থাকে আমার। কোন মতে প্রাতকৃতাদি করে জামা-কাপড় পরার পর নাস্তা খাবার জন্যে হাতে বেশী সময় থাকে না। এ ছাড়া আমরা এখন ‘এফিসিয়েন্সির দেশের অধিবাসী’। সবাই কাজে ব্যস্ত। অন্যের জন্যে সময় ব্যয় করাটা ইচ্ছা থাকলেও হয়ে ওঠে না। যার যার নিজের নাস্তা নিজেরাই বানিয়ে নেই।
আমি আগে একটা ছোট বাটিতে রাইস-স্ক্রিপস, কর্নফ্লেক্স ও দুধ নিয়ে খেতাম। এখন তার বদলে শুধু ‘ওটস’ আর ঠান্ডা দুধ নিয়ে ৪০ সেকেন্ড মাইক্রোওয়েভে গরম করে নেই। এর সাথে সাধারনত একটা পাকা কলা – এই আমার সকালের নাস্তা। খেতে লাগে প্রায় ৭ মিনিট। ওই সময়টা টিভিতে খবরও দেখি। ১২ মাইল দূরের অফিসে যেতে লাগে ১৮ মিনিট। দু’টো ফ্রি-ওয়ে – আই-৪০ ও আই-২৫ ধরি। সারফেস রাস্তা ধরে গেলে সময় আরও বেশী লাগে। ৭-তলার পাকিং লটে গাড়ি পার্ক করি। তারপর দু’টো এলিভেটর যাত্রার পর আমার কর্মস্থলে পৌছে আমার প্রথম কাজ হল এক কাপ কফি সাথে নিয়ে ই-মেইলের মধ্যে ঢোকা। কত মাপা মাপা সব কিছু এখন।
সম্প্রতি একটি নতুন জিনিস শুরু করেছি ব্রেকফাস্ট-এ। ‘দুধ-ওটস’-এর বদলে ‘ওটমিল-টু-গো’ বলে একটি জিনিস খাওয়া আরম্ভ করেছি। আকারে দেখতে একটা বিস্কুটের মতো। এটা ১০ সেকেন্ড গরম করলেই চলবে। একই ক্যালোরি শরীরে যাবে। খেতেও সময় লাগে কম। ২/৩ মিনিটে খাওয়া হয়ে যায়।
আরও সময় বাঁচাবার জন্যে ঠিক করেছি এখন থেকে বাড়ীতে বসে না খেয়ে, গাড়ী চালাতে চালাতে ওই বস্তুটা খেতে খেতে যাব। এর ফলে আরও দুই মিনিট সময় বাঁচবে।
হাজার হলেও – আমি এখন ‘এফিসিয়েন্সির দেশের অধিবাসী’।
:))
দুনিয়াজোড়া দেখি শুধু এফিসিয়েন্সি আর অপটিমাইজেশন 🙁
দুনিয়াজোড়া দেখি শুধু এফিসিয়েন্সি আর অপটিমাইজেশন 🙂
প্রতি কদমে এগিয়ে থাকার জন্য, যান্ত্রিক থেকে যান্ত্রিকতর হবার অবিরাম প্রচেষ্টা।
৫০ বছর আগের সময়ের সাথে বর্তমানকে মিলিয়ে নিতে যেয়ে কষ্ট বাড়লো 🙁
ভালো লেগেছে :hatsoff: :hatsoff:
Life is Mad.
ভেবে দেখ - যন্ত্রই বেশী যন্ত্রনা দেয় বর্তমান যুগে।
এখন বিদ্যুত না থাকলে তোমাদের প্রিয় টিভি শো দেখা যায় না, ফ্রিজের খাবার নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে, ঘরে আলো জ্বলে না, ইত্যাদি ইত্যাদি।
৫০ বছর আগে আমাদের বাড়ীতে বিদ্যুতের লাইন ছিল না - ফলে উপরের কোন অশান্তিও ছিল না।
আরও উদাহরণ তোমরা নিজেরাই খুজে বের করতে পারবে।
দারুণ, দারুণ সাইফ ভাই......... কোনো ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল পাওয়া যায় না, যাতে একই ক্যালরি আছে! তাতে সময় বাঁচবে আরো ১ মিনিট ৫০ সেকেন্ড.............. হা....হা... :hatsoff:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
শুনেছি তেমন ট্যাবলেটও নাকি পাওয়া যায়। মনে হয় তোমাদের জীবনকালেই এই ট্যাবলেট খেয়ে যেতে পারবে।
ভালোই বলেছেন ভাই,,,
বউ কোলে বসানোর আইডিয়াটা ব্যাপক ছিল। বড় হয়ে কখনো ট্রাই করেছেন কিনা সেটা তো আর বললেন না। 😛
চিন্তায় ফেলে দিলেন।
আপনার লেখার মধ্যে একটা মায়া মায়া ভাব থাকে সবসময়। এতো মমতা দিয়ে যদি লিখতে পারতাম !
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
তাইফুর্ভাই আপনি কই ???
😛 😛 😛
দুঃখিত তোমাকে চিন্তায় ফেলার জন্যে। সব সময় নিজের মন যেটা বলে সেটা করবে।
তা'হলে ভবিষ্যতে অন্য কাউকে দোষ দেবার প্রয়োজন হবেনা।
মন তো বলে শিক্ষিত, কম শিক্ষিত সবাইরেই বিয়া কইরা ফালাই। 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
কামরুল,
হা হা হা - অসুবিধা কি? ধর্মেতো মানা নাই। 'শীয়া'-দের ব্যবস্থা আরও ভাল - সেখানে 'মোতা' বিয়ের ব্যবস্থা আছে।
কিন্তু অপর পক্ষের কথা চিন্তা করেছো? তোমার সঙ্গিনী যদি একই অধিকার দাবী করে বসে?
ভাইয়া, এটা কি বললেন ? :)) :))
তবে আমাদের দেশে শিক্ষিত শ্রেণীর বেলায় অনেক ক্ষেত্রেই সম-অধিকার নয় বরং অগ্রাধিকার প্রাধান্য পায়। সে ক্ষেত্রে কামরুল কি করবে তাই ভাবছি। 😉
আর আপনি যেভাবে সময় পেরিয়ে সময়ের বিবর্তনটা বিশ্লেষন করেন তাতে কিছুটা হিংসে হয় সত্যি সত্যি।
খোকন সম্বোধনটা মনে হয় যশোরের দিকে স্পেশাল।
খুব ছোটবেলায় বাস থেকে ঝিকরগাছায় নেমে গ্রামে যেতাম আমরা। ওরকম বাস এখনো ধামরাইতে দু'একটা চলাচল করে। তারপর ঝিকরগাছা বাজারে দেখতাম সারি সারি ঘোড়ার গাড়ি দাড়ানো। রেল লাইনের নিচের রাস্তা দিয়ে নেমে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে এসে নৌকায় করে গ্রামে যাওয়া হতো। আব্বার কাছে গল্প শুনেছি কপোতাক্ষে একসময় স্টীমার-লঞ্চ চলাচল করতো। রাস্তা ভাল না থাকায় ঘোড়ার গাড়ি এড়িয়ে চলা হতো। আমার অবশ্য ঘোড়ার গাড়ির প্রতি ঝোঁকটা বেশি ছিল। সেই কপোতাক্ষ এখন শ্রীহীন কচুড়িপানার নালা!
ব্রেকফাস্ট সারাজীবন রেডি হয়ে থাকতো, খুব দয়া করে খেতাম। আর এখন নিজেরটা নিজে রেডি করে কূল পাইনা। 🙁
আমার বন্ধুয়া বিহনে
কপোতাক্ষে একসময় স্টীমার-লঞ্চ চলাচল করতো
খ্রিষ্ঠধর্ম গ্রহণ করার পর মাইকেল মধুসূদন এসেছিলেন তাঁর বাড়িতে-স্টীমারে করে।ধর্মত্যাগী পুত্রকে যশোরের জমিদার রাজনারায়ণ দত্ত শেষদেখা করতে দেননি মায়ের সাথে।হঠাৎ কেন জানি স্টীমারের কথা শুনে এটা মনে পড়ে গেলো!
মাসরুফ,
যে দিন যশোরসহ সারা দেশের লোকে মাইকেলের জন্মদিন উৎযাপন করতো, সেই একই দিনে আমার বাবা-মা আমার জন্মদিন উৎযাপন করতেন। ফলে ইচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও কোনদিন সাগরদাঁড়ী যেয়ে মাইকেলের জন্ম উৎসবে যোগ দেওয়া হয়নি।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমাধিস্মারকে (Epitaph) এই কবিতাটি খোদিত আছেঃ
দাঁড়াও, পথিক-বর জন্ম যদি তব
বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে
(জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি
বিরাম) মহীর পদে মহানিদ্রাবৃত
দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!
যশোরে সাগরদাঁড়ী কবতক্ষ-তীরে
জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি
রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী!
রেল লাইনের কাছেই ছিল কাঠের আরতগুলি। কোন গ্রামে বাড়ী তোমাদের? ঝিকরগাছা আমার নানা বাড়ী।
কাশিমপুর। রেললাইনটা কয়েক দশক পরিত্যক্ত থাকার পর, এখন আবার কলকাতার ট্রেন সার্ভিস চালু হয়েছে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী,
কাশিমপুর - নামটা যেন শোনা শোনা। আমি একবার নৌকায় আমার এক ফুফুর বাড়ী - গঙ্গানন্দপুর গিয়েছিলাম। আবছা মনে পড়ে নামটি।
ফৌজদারহাট যাবার পর থেকে দেশের সাথে সম্পর্ক ক্রমে ক্ষীণ হয়ে গেছে।
সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পাচ্ছি।
"সংকীর্ণতা পরিহার করুন"
- ৬ নম্বর বাস (এ, বি, সি), গুলশান টু মতিঝিল
আমার বন্ধুয়া বিহনে
জ্বী, সম্পর্ক আসলেই ক্ষীন হয়ে আসছে। কাশিমপুর ঝিকরগাছা থেকে তিন কিলোমিটার ভিতরে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
শহীদ ভাই,
আমি কিন্তু এই জিনিসগুলো নিয়ে অনেক ভাবি। জীবন ক্রমে ক্রমে সহজতর হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করে মেহমান শুধুমাত্র তিন ঘন্টা নোটিশ দিলেই মোরগ পোলাউ আর চাপলি কাবাব বানিয়ে ফেলতে পারি আমরা এখন, কিন্তু ছোটবেলায় দেখেছি মেহমানকে আপ্যায়ন করার জন্য বাজার থেকে কিনে আনা জীবন্ত মুরগিটি "cluck cluck " করছে, আর ওটাকে প্রসেস করে চুলায় দেয়া তো কষ্টসাদ্ধ্য ও সময়সাপেক্ষ ব্যপার ছিল।drive করে সিরিয়াল বার খাওয়া টা আমার জীবনে হরদম হয়েছে।তবে সিরিয়ালগুলো যেন শুধুমাত্র এম্পটি ক্যালরী না দেয় আমাকে, তার জন্য আমি "নিউট্রিশন ফ্যাক্ট " টা ঠিকমত পড়ে নেই।
আর খুব ভালো লাগলো আপনার লিখা পড়ে, অন্যরকম! আপনার হাই way র বর্ণনায় আমি একদম NM চলে গেছি।
২য় লাইনে তিন ঘন্টা আগে****পড়ে নেবেন।
আয়েষা,
আসলেই অনেক সুন্দর নিউ মেক্সিকো। আমি এ পর্যন্ত আমেরিকার ২৪ টা স্টেটে ঢু মেরেছি। সেই অভিজ্ঞতায় বলছি নিউ মেক্সিকোর আলাদা একটা অপূর্ব বন্য সৌন্দর্য আছে। সুযোগ পেলে চলে আসো।
বহু দিন আগে পেশাওয়ারে খাবার পর আর চাপলি কাবাব খাবার সূযোগ হয়নি। DHL করে পাঠাতে পারবে তিন ঘন্টার বেশী নোটিস দিলে?
জীবন এক দিকে সহজ হয়ে যাচ্ছে, আবার অন্য দিকে কঠিন হছে।
খুব ভাল লাগল । কেমন জানি আপন আপন একটা ভাব। আমার বাড়ি শারশা । বেড়ে ওঠা যশোরে। ভাই, ভাল থাকবেন।
একটা সময় ছিল যখন যশোরের লোকেরা এক দম বাইরে বের হতো না। সাচ্ছলতার কারনে বের হবার দরকার হতো না। বাইরে যেত শুধু চট্টগ্রাম, সিলেট ও নোয়াখালির লোকেরা। এখন মনে হয় সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে গেছে যশোরের মানুষ।
তুমি কি জেলা স্কুলে পড়েছ?
১ বছর । তার আগে নব কিশলয় স্কুলে। আমাদের বাড়ি ছিল খড়কি।
রেজোয়ান,
খড়কিতে আমার কিছু স্কুলের বন্ধুরা থাকতো। এই মুহূর্তে ঠিক নাম মনে করতে পারছি না। খড়কি পীর সাহেবের পরিবারের সাথে কি তোমাদের কোন যোগাযোগ ছিল?
আমারো মনে হয় ড্রাইভ করতে করতে ব্রেকফাস্ট করা শিখতে হবে। লাঞ্চ পর্যন্ত খালি পেটে থাকা খুব কষ্ট।
মইনুল,
একেবারে খালি পেটে না থাকাই ভাল। যদিও এখানে অনেককে দেখি কিছুই খায় না ব্রেকফাস্টে।
আমি দেখেছি ড্রাইভ করতে করতে ছেলেরা শেভ করছে আর মেয়েরা মেক-আপ নিচ্ছে। সেল ফোনে কথা বলা তো আর অন্যায় মনে হয় না। এমন কি খবরের কাগজ পড়তেও দেখেছি।
কি বিচিত্র এই দেশ, সেলুকস!
বেশী শিক্ষিত, আর বেশী বুদ্ধিমান স্ত্রীর সাথে বাস করার ঝামেলা অনেক।...
হাই এফিসিয়েন্সির দেশে রোজার মাসের ইফতারের সাথে অনেক আগের কপোতাক্ষ পাড়ের ইফতারগুলোর একটা তুলোনা করে দেখাবেন ভাইয়া প্লিজ।
কাম্রুলের মত আমারো আপনার লেখার মায়া মায়া ভাবটা বেশ লাগে।
"মায়া মায়া ভাব" ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে বলবে?
বিয়ে কি করা হয়েছে, নাকি দিল্লীর লাড্ডু খাওয়া এখনো বাকী/
এহসান ভাইয়ের পোলা ফুটবল খেলে। 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
তরেস যে এহসান ভাইয়ের পোলা সেইটা তো জানতাম না ...
কত অজানা রে
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
যান্ত্রিক জীবন থেকে দূরে ভেগে যেতে পারতাম........ 🙁 🙁 🙁
অসাধারন লেখা :clap: :boss:
ধন্যবাদ রেজওয়ান।
ঘটা করে যে ব্রেকফাস্ট করা যায়, সেই কথা টাই ভুলে গেছি এই যান্ত্রিক জীবনে এসে। 🙁
সাব্বির,
একদম যাতে ভুলে না যাও তার জন্যে নীচের লিঙ্কটা দিলাম।
ডিম সৃষ্টিকর্তার এক মহান সৃষ্টি। কেক, পুডিং থেকে শুরু করে ঝোল, দোপেঁয়াজা সবই করা যায় এই ডিম দিয়ে। কিছু না জানলেও উপায় আছে, হাফ বয়েল,ফুল বয়েল।
ভাইয়া লেখাটা পড়ে মজা পাইলাম, মেশিন একটা কিনতে হবে সাইন্টেফিক ওয়েতে ব্রেকফাস্ট। জানি একটা সময় আসবে যখন ইচ্ছা থাকলেও খেতে পারব না, আর এখন খেতে পারলেও ইচ্ছা করেনা আয়োজনের কথা চিন্তা করে। জীবন বড়ই বিচিত্র!!!!!
ডিসিসান নিছি গ্রামে চইলা যামু, ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়ন
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ফয়েজ,
সেই গ্রাম কি আর এখন আছে?
তার চাইতে চেষ্টা করো চলার গতি একটু কমিয়ে এনে জীবনটাকে আরও গভীর ভাবে উপভোগ করতে।
:thumbup: :hatsoff: আমারেও সাথে নিয়েন।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
দুই সময়ের দুইটা ব্রেকফাস্টে কত পার্থক্য! একটা মমতায় ভরা, আরেকটা যান্ত্রিকতায়। একেক সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে একেকটা হয়ত কার্যকরী, তবুও আমার কাছে প্রথমটাই ভালো।
আমি নিজেও কেমন যেন যান্ত্রিক হয়ে গেছি, সকালে একটু কর্ণ-ফ্লেক্স খেয়ে সময় বাঁচাই, দুপুরে তাড়াহুড়ো করে খাই, রাতেও তাড়াহুড়ো। আমরা যেন ক্রমশ দৌড়ে যাওয়া একটা যন্ত্র! 🙁
আপনার লেখায় পড়তে গেলে মনে একটা স্নিগ্ধ ভাব চলে আসে ভাইয়া। কেমন করে যে এমন লিখেন!
ধন্যবাদ তানভীর।
:)) :))
তবে এই টেকনিক আসলেই কাজ দেয় মাঝে মধ্যে। নিজে তো রান্না করিনা, তাই হরহামেশাই শ্বাশুমা'র ক্ষেত্রে এই টেকনিক এপ্লাই করি 😛
টুম্পা,
হা হা হা - বেচারা শ্বাশুমা।
ভাই, বরাবরের মত খুব ভালো লাগলো...
জাপানে "ক্যালরি-মেট" নামে একটা নিউট্রিশন বার ব্রেকফাস্ট হিসাবে খুব জনপ্রিয়...ট্রেনে ঝুলতে ঝুলতে ২১০ ক্যালরি আর হিসাব করা পুষ্টি সব প্যাকেজ সিস্টেমে পেটে চালান...
এখনো অবশ্য কোন কোন রবি/মঙ্গল/বৃহষ্পতি বারে ঘুম থেকে উইঠা অকারণ ভুলে মনটা ভালো হয়ে যায়...আজকে যে পরোটা আর বুটের ডালের দিন!
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
সাকেব,
জাপানীদের এফিসিয়েন্সির আমি সব সময় ভক্ত। ওদের থেকে অনেক শেখার আছে।
আমার মনে হয় সবই অভ্যাসের ব্যাপার...... যান্ত্রিক যুগে বড় হয়ে উঠা আজকালকার ছেলে মেয়েদের আবার গ্রামের ধীর জীবন অসহ্য মনে হবে...... আসলে যে যেই পরিবেশে বড় হয়, তার কাছে সেটাই সবচেয়ে কমফর্টেবল মনে হয়.......
ভাইয়া আপনার লেখার হাত দারুন! খুব সাধারণ ব্যাপার গুলোকেও অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন।
মিশেল,
কথাটা হয়তো ঠিক বলেছো। মানুষ অভ্যাসের দাস।
ধন্যবাদ তোমার ভাল লাগার জন্যে।
ভাইয়া আমি আপনার লেখার নিয়মিত পাঠক। বরাবরের মত এবারেও মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়লাম। আপনার লেখা পড়লে মনের ভেতরে কোথায় যেন তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। কি সুন্দরভাবে আপনি সাধারনকে অসাধারন বানিয়ে দেন। :hatsoff:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
ধন্যবাদ আহমদ।
আগেকার দিনের নাস্তাই ভাল ছিল ...
ব্রেকফাস্টে মজা নাই ...
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
ব্রেকফাষ্ট করিনা অনেকদিন, একসাথে ব্রাঞ্চ কইরা ফেলাই। যখন জব করতাম তখনো সকালে না খাইয়াই দৌঁড়। আমার শহরটা ছোট্ট হওয়ার দরুন সব জায়গায় যেতে সময় বেশী লাগেনা, সবচেয়ে দূরের কোথাও যেতেও লাগে ২০ মিনিট। 🙂 আগেকার নাস্তাই ভালো ছিলো।
খুব সাধারণ কথাকে অসাধারনভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। ভালো লেগেছে আবারো। 🙂
দিহান,
তুমি লিখেছো তোমার শহরটা ছোট, কোন শহর সেটা খুঁজতে যেয়ে তোমার ব্লগের লেখায় হাজির হলাম। তারপর দেখলাম আড়াই হাজারের বেশী তোমার একটা লেখা পড়েছে। আমিও পড়তে শুরু করলাম। খুব সুন্দর লাগলো। বেশী তাত্বিক কথা-বার্তার চাইতে ব্যক্তিগত জীবন ও অভিজ্ঞতা জানতে ভাল লাগে আমার।
এক বিশেষ জনকে বা এক ব্যাচের ক্যাডেটদেরকে দেখেই এত বড় সার্টিফিকেট দিয়ে দিলে? আমি ভাবছি তোমাকে প্লেনের টিকিট পাঠাবো কিনা, যাতে এখানে এসে তোমার ভাবীকে কিছুটা কনভিন্স করাতে পারো যে আমাকে বিয়ে করে খুব একটা ভুল করেনি সে। আগামী বছরে ৪০ বছর পূর্ন হবে - আমার শাস্তি ভোগের [জোক করছি]।
কোন শহরে তুমি?
তোমার দুই বাচ্চাকে আদর রইল [আর হিংসা রইল মঈনের প্রতি]
সাইফ ভাই
ভাইয়া
প্রভিন্সের নাম প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ড, সিটি শারলোটটাউন। ছোট ছিমছাম।
ভালো থাকবেন অনেক।