১) উইকেন্ড এর এরকম কাজ কর্ম বিহীন রাতগুলোতে যখন কোথাও যাওয়া হয়না, তখন রুমেই বসে থাকি।কম্পিউটারের একঘেয়ে স্ক্রিনসেভারটার দিকে একদৃষ্টি তে তাকিয়ে আকাশ পাতাল ভাবি। কখনোই না দেখা পাওয়া মানুষ ও চরিত্র গুলোর কথা মনে করি.. ভরত-ভূমিসুতার কথা ভাবি। অনিমেষ-মাধবীলতার কথা ভাবি। অতীন-অলির কথা ভাবি। নাকশাল আন্দোলনের ঝামেলায় পরে অতীন যখন দেশ ছেড়ে এই মার্কিন মুলুকে চলে আসে তখন ও প্রায়ই একটা গান মনে মনে গুনগুন করে গাইতো.. সেই গানের চরণের কথা ভাবি। গানের গলা খুব খারাপ আমার,তাই মনে মনেই গুনগুন করে গাই ,
“লাল পাহাড়ের দেশে যা
রাঙ্গামটির দেশে যা
এখানে তোকে মানাইছে না গো
এক্কেবারে মানাইছে না গো “
কথাগুলো কি নির্মম সত্য ! লালপাহাড় গুলো ইদানিং খুব বেশি হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
২) নীল জিন্স পরে বাইরে বেড়িয়ে রাস্তার লাইট গুলো গুনে , লিনেন এর চাদরের নিচে গুপটি মেরে শুয়ে পরলাম।
ব্যালেরিনা , Tiny Dancer এর ব্যালেরিনা !
কেন এই ফাঁদ থেকে বের হইতে পারছিনা?
৩) কোন এক বিষণ্ন বৃষ্টিভেজা বিকেলে পাবলো নেরুদা লিখেছিলেন,
“এমন কিছু কি আছে দুনিয়ায়,
দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা ট্রেনের চেয়ে যা বিষণ্ণতর?”
২০০৯ সালে সেরকমই কোন এক বিষণ্ন বিকাল বেলা, প্রাইভেট টিউশনি ফাঁকি দিয়ে ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। অঝোর ধারায় বৃস্টি নেমেছিল সেদিন। দাড়িয়ে থাকা লোকাল ট্রেনটা বৃস্টিতে তে ভিজছিল বিষন্ন ভাবে। এতোটাই বিষন্ন ভাবে যে এখনো চোখে ভাসে সেই মন খারাপ করা ভেজা ট্রেন এর চেহারা। কবি নেরুদা কাবিল মানুষ। মনের কথা কি অবলীলায় বলে দিল।
৪) ক্যাফেইন এর প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে টানা ৮ ঘন্টা ঘুমানো দরকার। বটগাছের নিচে খালি গায়ে বসে হাওয়া খাওয়া দরকার । আলুভর্তা-ডিমভাজি-ডালভাত এর লোকমা মুখে তুলে চোখ বন্ধ করে চাবানো দরকার। চেনা পরিচিত ২২ জন বন্ধুর সাথে বড় সবুজ একটা মাঠে ফুটবল খেলা দরকার। খোলা দিঘীর মাঝখানে গিয়ে চিত সাতার দিয়ে ভেসে থাকা দরকার। ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস গুলো থেকে চোখ সড়িয়ে পৃথিবী ও তার মানুষগুলোকে ভালো মতন দেখা দরকার।
বিচ্ছিন্ন ভাবে বিভিন্ন সময়ে লিখা এগুলো। একটার সাথে আরেকটার কোন সংযোগ নেই। তাই , যতোটা ডিপ্রেসিং মনে হচ্ছে, ঠিক ততোটা মনে হয় না এগুলো। হাতে সময় থাকলে বা ইচ্ছে হলে এই দুটো গান ও শুনে আসতে পারেন নিচের দুটো লিংকে ক্লিক করে।
Tiny Dancer (২ নাম্বারটা এই গান আর Almost Famous মুভির কারনে লেখা ) আর লাল পাহাড়ের দেশে যা …
হ্যাপি ব্লগিং !
হোম সিক নাফিস, পাবলোর কবিতাটার নাম কি?
কবিতাটার নাম সম্ভবত দি বুক অফ কোশ্চেন। এই লিঙ্কে পেতে পারেন।
কি হে নাবিক, এত উদাস কেন? চিয়ার আপ।
লিখেছো দূর্দান্ত :thumbup:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ধন্যবাদ ভাই !
আসলে এগুলো পড়ে যতোটা টা "চরম উদাস" মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটা না আসলে। 🙂 ছাড়া ছাড়া ভাবে লেখা এগুলো।
"ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস গুলো থেকে চোখ সড়িয়ে পৃথিবী ও তার মানুষগুলোকে ভালো মতন দেখা দরকার।" - একদম ঠিক কথা! আর আরেকটু ভেবে দেখা, পৃথিবীর কে কে আমার কাছ থেকে কি কি চায়। কিছু দিতে না পারলেও, শুধু এটুকু ভাবতে পারলেও যথেষ্ট। পরবর্তী কাজটুকু মন এমনি এমনিই করে নেবে।
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য খায়রুল ভাই ! :hatsoff:
তোমার টুকরো টুকরো লেখাগুলো তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করলাম, নাফিস! আরো বড় পরিসরে দেখতে চাই ভাবনাগুলো।
অনেক ধন্যবাদ সাবিনা আপু..
আরো বড় কিছু লেখার ইচ্ছে আছে সামনে। হোপফুলি 🙂
ভাল লেগেছে টুকরো ভাবনা গুলো......
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
অনেক ধন্যবাদ পারভেজ ভাই ! আমি অনুপ্রাণিত 🙂
এইটা আসলেই চমৎকার একটি গান।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
অর্ণব এর কন্ঠের টা আমার কাছে আসলেই খুব ভালো লাগে রাজীব ভাই..
:boss: :boss: :boss:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
নাফিস, খুব ভালো লাগলো
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
অনেক ধন্যবাদ সাইদুল ভাই! আপনাদের সবার কমেন্ট পেয়ে আমি বিগলিত 🙂
নাফিস,
যথারীতি কুড়মুড়ে লেখা।
মনে একটা ফুরফুরে ভাব চলে আসে তোমার লেখা পড়লে
ধন্যবাদ নূপুর দা !
আর যেকোন কিছুর প্রয়োজন হোক বা না হোক, এটার বড় প্রয়োজন এই জমানায়। ডুবে যাচ্ছি আমরা। এন্ড্রয়েডের জেলীবিনে আটকে যাচ্ছি, এ্যাপলের হাতঘড়ি পরাচ্ছে হাতকড়া। আড্ডার টেবিলে চলুক দৃষ্টি এড়ানোর খেলা, শুরু হোক অস্বস্তিকর নীরবতা, তবু যেন পাঁচ ইঞ্চির হাই-ডেফিনিশান পর্দায় চোখ সেঁটে না থাকে। 😕
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
একদম ঠিক কথা বলেছো।