আবোল-তাবোল (গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ)

একশ বছর বছর আগে আইনস্টাইন নামে এক ইহুদি পণ্ডিত অংক কষে এর কথা অনুমান করেছিলো। প্রায় আধাশ’ বছর আগে হকিং নামের এক নাছারা বিজ্ঞানী উপায় বাৎলে ছিল, কোন ঘটনার দিকে নজর দিলে তারে ছোঁয়া যাবে, মাপা যাবে। আর এইতো সেদিন, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫, আমেরিকা নামের এক নচ্ছার দেশের বিজ্ঞানীরা সেইসব কল্পনা আর অনুমানকে বাস্তবে পরিনত করে গ্রাভিটেশনাল ওয়েভকে পর্যবেক্ষন করে ফেলল। গোপনে বলি, এই ১৪ই সেপ্টেম্বর দিনটা আবার এই আধমের জন্মদিন ও বটে।

এখন, যেহেতু ব্যাপারটা নিয়ে সারা বিশ্বে হইচই পড়ে গেছে, তাই ধর্মোপজীবিরাও চুপ করে থাকতে পারবেন না। তাঁরা এখন বেশ কয়েকদিন ধরে বেদ-পুরান-কিতাব ঘাঁটবেন, সোলেমানি খাবনামাও বাদ যাবে না। সেই ঘাঁটাঘাঁটি শেষ হলে, কেউ কেউ দাবী করবেন, আমাগো ব্যাদে সব আচ্ছে। কেউ কেউ বলবেন, ব্রাদার, ব্রাদার ইটস অনলি এ থ্যাওরী নাট আ ফ্যাক্ট! হ্যাভ ইউ এভার হার্ড এ্যানিবাডি হ্যাজ ফলেন ফ্রাম হিজ বাইক বিকাজ হি ওয়াজ হিট বাই দ্য গ্রাভিটেশানাল ওয়েভ?!!! ক্রিয়েশনিষ্টেরা বাইবেল থেকে প্রমান দিয়ে বলবেন, বিশ্বের জন্ম দশ হাজার বছর আগে, কাজেই বিলিয়ন বছর আগে দুই ব্ল্যাকহোলের সংঘর্ষের কোন প্রশ্নই আসে না।

বিজ্ঞানের এক হটকেক শাখায় ডক্টরেট করা সুরসিক এক বাংলাস্থানীর সাথে আমার কিছুটা জানাশোনা আছে। বাঙালী বিজ্ঞানীরা যখন পাটের জেনোম উদঘাটন করেছিলেন, তখন তিনি কাষ্ঠ হাসি দিয়ে ফেবুতে ঝড় তুলে বলেছিলেন, এটি দিয়ে দেশের ভুখা-নাঙ্গা-গরীব মানুষেরা কি দুু’মুঠো বেশি পাটশাক খেতে পারবে? লাইক ও পেয়েছিলেন তিনি বেশুমার। যেহেতু LIGO র এই প্রজেক্টে কয়েকজন বাঙালী বিজ্ঞানীও ছিলেন, তাই তিনি এবং তাঁর ঘরানার লোকেরা তাঁদের শরীরে মৃদু চুলকুনি অনুভব করতেই পারেন। এমতাবস্থায় তিনি এবং তাঁর ঘরানার লোকজনেরা বলতেই পারেন, হুহ খুব বিশাল কাজ করে ফেলেছে, যাও এখন রকিং চেয়ারে বসে হকিং-ডকিং এর বই পড়তে পড়তে গ্রাভিটেশনাল ওয়েভের দোলা খাও!

এদিকে আমি আশংকায় আছি, কখন আবার লন্ডনস্থ ইতিহাস প্রজনন খামার থেকে এরকম কোন নতুন বানী চলে আসে যে, একাত্তর সালে স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার সময়ে এই গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ এর ধাক্কা খেয়ে তিনি তেলের ড্রামের উপর থেকে পরে গিয়েছিলেন। অতএব তিনিই প্রথম ও বৈধ গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ ডিটেক্টর। আর তখন আমাকে আবার “ভানুই প্রথম” এর একটা নতুন পর্ব লিখতে বসতে হবে।

যাই হোক, আপাতত এটুকুই বুঝে বসে থাকি যে, আসলে সবই মায়া আর ছায়ার খেলা, সবই পশ্চিমা আর ইহুদি-নাছারাদের ষড়যন্ত্র! আসুন ইহুদি-নাছারাদের সকল পন্য বর্জন করি এবং বাংলাদেশস্থ ইসরায়েলি দুতাবাস ঘেরাও করি।

😛

১৭ টি মন্তব্য : “আবোল-তাবোল (গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ)”

    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      😀 😀 😀

      আমার পুরো লেখাটাতে একটাও উসকানি নেই, কিন্তু তোমার এই কমেন্টের প্রথম থেকে শুরু করে প্রায় অর্ধেকটা জুড়ে শুধুই উসকানি। তুমি একজন উসকানিবাজ, তুমি ফ্যাসিবাদী ! ... 😛 😉


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      নাফরমানী করিওনা মিয়া! আমার বাড্ডে তো পাঁচ মাস আগেই এ বছরের মত তামাদি হয়ে গেছে... তাছাড়া আমি নাছারা তমুদ্দন কবুল করি না... :thumbdown: :thumbdown:


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  1. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    কোনো কোনো ধর্মগ্রন্থে নাকি আকাশের বর্ননায় "তরঙ্গায়িত আকাশ" কথাটার যে উল্লেখ আছে, সেটাই নাকি আসলে গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ, এরকম দাবী করতে দেখলাম কাউকে কাউকে।
    যা হোক, লিখাটা মজার।
    আমিও না একটা জিনিষ বুঝি না।
    মুসলমানরা নাকি আশির্বাদ প্রাপ্ত আর ইহুদি নাসারারা নাকি অভিশপ্ত।
    তাই যদি হবে, সব ব্যাখ্যা ক্যান ঐ অভিশপ্তদের হাত ধরে বের হয়?
    আর আশির্বাদ প্রাপ্তরা ক্যান খালি ওঁদের কুলি-কামিনের কাজ করে বোচকা বহন করে জীবন কাটায়?
    কি জানি, বুঝি না।
    হতে পারে, হয়তো কামলার জীবনই আসলে আশির্বাদের জীবন, তাই.........


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • ইশহাদ (১৯৯৯-২০০৫)
      সব ব্যাখ্যা ক্যান ঐ অভিশপ্তদের হাত ধরে বের হয়?

      ব্যাখা আছেঃ অভিশপ্তদের এইসব বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আসলে দুনিয়াবী ব্যাপার = অপ্রয়োজনীয়! B-)



       

      এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...

      জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      পুরোনো নাছারা-পুরাণ (old টেস্টামেন্ট) কিন্তু ভিন্ন কথা বলে। সেমতে, খাছ ইহুদি অর্থাৎ ইয়াকুব নবীর বংশধরেরাই একমাত্র আশির্বাদপ্রাপ্ত, বাকিরা সবাই অভিশপ্ত। এখন বোঝেন ঠ্যালা, কাকে কি বলবেন? আপনার মত আমিও আশির্বাদপ্রাপ্ত আর অভিশপ্তের সংজ্ঞা নিয়ে সাঙ্ঘাতিক ধন্দের মধ্য থাকি। ~x( ~x( ~x(


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
      • পারভেজ (৭৮-৮৪)

        এই যে সবাই নিজেরে আশির্বাদপ্রাপ্ত আর অন্যদের অভিশপ্ত বলে, তাতে যে কেউই আর আশির্বাদপ্রাপ্ত থাকে না, সেইটা কি তারা বুঝে?
        একটা সময় মানুষ নিজের একটা কমুনিটিতে বসবাস করে জীবনটাই কাটিয়ে দিতে পারতো।
        তাদের জন্য সেই কমুনিটিটারে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মানুষদের আখড়া বিবেচনা করায় এমন কোনো অসুবিধা হতো না।
        কুয়ার ব্যাঙের যেমন কুয়াটারে দুনিয়া ভাবায় কোনো অসুবিধা হয় না।
        কিন্তু কথা হলো, এখন তো আর সেটা সম্ভব না, তাই না?
        বেচেবর্তে থাকতে হলে অন্যদের সাথে কম হোক বা বেশি, ইন্টারএকশন করতেই হয়।
        সেইসব ইন্টারএকশনে কাউন্টারপার্টকে সমান না ভেবে সবসময় যদি অভিশপ্ত ভাবা হয়, আর নিজেরে আশির্বাদপ্রাপ্ত মনে করা হয় তাইলে ঐ ইন্টারএকশনগুলা আসলেই কি আর হৃদ্যতাপুর্ন রাখা সম্ভব? (সম্পাদিত)


        Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

        জবাব দিন
  2. মুজিব (১৯৮৬-৯২)

    আগে ভাবতো, আমার এই কুয়োটাই বিশ্ব ব্রহ্মান্ড। এখন ভাবে, বিশ্ব হল কতগুলো কুয়োর সমষ্টি, তবে সেগুলোর মাঝে আমারটাই সবচে' সেরা।


    গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।