~ আষাঢ় দিনে ভাসি ~

অনেক কান্না ছিলো জমা হয়ে
তোমার অপেক্ষায় ।

দোয়েল আর শালিখের চঞ্চুতে
মাখা বালির মতোন
অংগাঙ্গি মিশে হৃদয়ের খোপে
সাবলীল নিঃশ্বাসের
মতো একাংগী অন্তর্গত
আত্মার পুরাতন ক্ষত
ধুয়ে দেবে বলে আষাঢ়ের বেনো জল
অবারিত শ্রাবণের ঢল !

কতোখানি ঢেলে দিলে ভূমি ধুয়ে নেবে
বুকের কাতর ব্যথা !
সেইমতো ঝরবার লাগি জলো ছলো
আষাঢ় তুমি আসো কি !
কতোটুকু জমা জল, বাষ্প দল,
ব্যাথা সারাবার উৎপল
অনুষঙ্গ হয়ে জীবনেরে আঁকো
সুখবত পল অনুপল !
ওই আনন্দ উচ্ছ্বাসে তুমি
ঝরনার মতো হাসো কি !

সেই সব গল্প কল্প কথা
আষাঢ়ের বুক থেকে আজ
আমার কান্নার সাথে তোমারো
মিলে বাজিয়েছে এস্রাজ ।

কতোটা জলের আড়াল পেলে
জীবনের সব ছবিগুলো
স্মৃতির পাতা থেকে কখনোই খুব
সহজে যাবে না ধুয়ে !
সেই সব জলমগ্ন দিনের
লাগি ধনুকের মতো নুয়ে
অপেক্ষার দশ মাসে ক্ষণ গুনে
কদম কেয়ারা ছুঁলো
যেনো সব স্বপ্ন আর সাধের
হেলানো ইজেলগুলো !

জমানো কান্নারা আজ বুঝি তাই
গোপনে ঝরবার লাগি
বিশ্বস্ত আড়াল পেয়ে বলে
সময় হয়েছে, যাই !

১৮ জুন ২০১৫ ~ শেষ প্রহর

৬,৪৫৪ বার দেখা হয়েছে

৩২ টি মন্তব্য : “~ আষাঢ় দিনে ভাসি ~”

  1. সাইদুল (৭৬-৮২)

    প্রথমে বলে নিচ্ছি কবিতা বুঝিনা। ছন্দ, মাত্রা সম্পর্কে লেখা পড়া নেই। পড়ার সময় কান আর মনের উপর বিশ্বাস রাখি। গানের মত। কান ভালো শুনলে ছন্দ, মাত্রা ভালো, মন ভালো বুঝলে কবিতা ভালো। সেই বিবেচনায় বহুদিন যাবৎ আমার প্রিয় কবিতার নাম ছিলো শাশ্বতী ওই যে যেটায়

    'ভরা নদী তার আবেগের প্রতিনিধি/ অবাধ সাগরে উধাও অগাধ থেকে'
    লাইন গুলি আছে।

    আজ থেকে শাশ্বতীর পাশে যোগ 'হল আষাড় দিনে ভাসি'। অসাধারণ একটি কবিতা। তবে শিরোনামটা ভাল লাগলো না।
    তোমাকে অভিবাদন কবি (সম্পাদিত)


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
    • লুৎফুল (৭৮-৮৪)

      তোমার লিখার মাঝে একটা না একটা চমক আর নতুনের তকমা থাকবেই ।

      বৃষ্টান্ন ... সেই সুবাদে রেখে যেতে চাই অকৃপণ । সবার জন্য ।

      ওই জলে ভেজা মানে তরতাজা,
      ওই জলে ভেজা মানে লকলকিয়ে বেড়ে ওঠা,
      ওই জলে ভেজা মানে সব শোক
      সব কান্না, সব ব্যাথা, সব নীল
      অনায়াসে ধুয়ে নিয়ে বুকের বৃক্ষের
      পাতাদের অনাবিল হেসে ওঠা
      বাতাসের বিষ মুছে তরতাজা
      ঝরঝরে হয়ে ওঠা ...

      বৃষ্টান্ন মানে বুকের জমিনে অবারিত ধানখেত সীমাহীন প্রান্তর সবার লাগি অনিমেষ সেধে রাখা ...

      জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    ভাই, পুরোপুরি আস্বাদন পাবার জন্য বেশ কয়েকবার পড়তে হল... 😀
    দারুণ লাগল, দারুণ! :clap:

    দু'টি প্রশ্ন-
    ১। সাধু-চলিত মিশ্রণ কি ইচ্ছাকৃত? বেশ মানিয়ে গেছে অবশ্য... 😀
    ২। অপেক্ষার দশ মাস কেন?

    কয়েকটি টাইপো চোখে পড়ল-
    শালিখ>শালিক, ব্যাথা>ব্যথা, উতপল>উৎপল, অনুসঙ্গ>অনুষঙ্গ
    ঝরণা>ঝরনা, নূয়ে>নুয়ে...

    নূপুরদা বিস্তারিত মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকলাম!


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
    • লুৎফুল (৭৮-৮৪)

      এই আর এক জন পাওয়া গেলো ।
      ভাই । খুব ভালো হলো ।
      আমার হলো বিবিধ সমস্যা ।
      মোস্ট অব দা টাইম লিখি সেলফোনে ।
      যেখানে আমার নামটাই লিখতে পারি না কোনোভাবেই ।
      খন্ডত, উওগ, উও, এমন অক্ষরগুলো আসেই না ।
      তার উপর আছে চন্দ্রবিন্দু বিভ্রাট । যা না দিতে পারলে কোথাও কোথাও মানেই পালটে যায় ।
      পাঠকেরা অনুগ্রহ করে সঠিকটা বুঝে নিয়ে বাঁচান।
      আর ওই শিফটের হ্যাপাটা এই জনমে কাটবার নয় ।
      তার ওপর তুমি বলাতেও দু এক জায়গায় আমি কিছুই দেখতেও পাচ্ছি না ।
      তোমার কমেন্ট থেকে কপি পেস্ট করলাম।
      তবে শালিখ টা আমি ইচ্ছে করেই লিখি ।

      ভাই এই সাপোর্টটা নূপুর দিতে শুরু করেছিলো ।
      এক সময় মনে হলো হাল ছেড়ে দিয়েছে ! 😀

      সাধু চলিতের মিশ্রণটি ইচ্ছাকৃত ।
      কবিতায় বাংলা, ইংরেজী, এমনকি অন্য ভাষার শব্দ,
      সাধু চলিত, আমনকি বানানো নতুন কিসিমের শব্দের ব্যবহারের
      স্পর্ধা কবিরা দেখান বটে ।
      তা আমারও একটু অমন দুঃসাহস মাঝে মধ্যে ঘটে ।

      বারো মাসের বছরে বর্ষাকাল আসে দশ মাস পর পর ।
      তাই অপেক্ষার সাত/আট/নয় না হয়ে দশ মাস ।

      এমন আলোচনা হলেই মনে হয় ব্লগে লেখা পোস্ট করাটা সার্থকতা পেলো ।

      জবাব দিন
      • জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

        আপনি মোবাইল থেকে টাইপ করেন??!! 😮
        খাইছে!! 😕
        আপনাকে সশস্ত্র সালাম! 😀 :gulli: ::salute::

        'অভ্র স্পেল চেকার' এই ক্ষেত্রে খুব কাজে দেয়।
        আপনি যখন কম্পিউটারে বসবেন, পুরোটা একবার চেক করে নিতে পারেন! ৯৯% গ্যারান্টি, ইনশাল্লাহ! 😀

        ('দশ মাস' ব্যাপারটা ঋতু হিসেবে দিয়েছেন সন্দেহ হয়েছিল...কিন্তু 'আষাঢ় তো মাস'- এটা ভেবে ধোঁকা খেয়ে গিয়েছিলাম!)


        ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

        জবাব দিন
        • লুৎফুল (৭৮-৮৪)

          আসলে স্পেল চেকারটা ডাউনলোড দেবো ভেবেই জীবনপাত হলো ।
          পেরে আর ঊঠলাম না ।

          যেটা হয়, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় বসে খানিক সময় পেলেই হয়তো কিছু পড়লাম এই ব্লগে বা অন্য দু একটা ব্লগ যেগুলোতে ঢু মারি, লেখা পোস্ট করি। চলতে ফিরতে নানান কিছু দেখে বা পড়ে হয়তো কিছু লেখার ভাবনা বা কবিতার লাইন তৈরী হতে থাকে মাথায় । তো সুযোগ পেলেই ভুলে যাবার আগে তা লিখে ফেলি সেলফোনে ।

          এই যেমন এই ব্লগেই বেশ কটা কবিতা আছে যা লিখেছি সেলফোনে । প্রেম প্রণয় সিরিজের কিছু এখানে পোস্ট করেছি যার সতেরোটা পর্ব সেলফোনে লেখা । আমার ফেবু স্ট্যাটাস অলমোস্ট অল আর ফ্রম সেলফোন । এই যে রোজা নিয়ে সেদিনের লেখাটা, সেটাও ।

          আসলে একটা সময় পর পর এই বর্ষার আগমন বোঝাতে খুব গভীর ভাবনা বাদেই ঝট করে ওই দশ মাসের কথা লেখা ।
          এনজয়েড ইয়োর ডিস্কাশান্স ।
          চিয়ার্স !

          জবাব দিন
  3. রেজা শাওন (০১-০৭)

    কবিতা অল্পস্বল্প বুঝি ভাই। চাষা লোক। যে টুকুই বুঝলাম, দারুণ।

    দোয়েল আর শালিখের চঞ্চুতে
    মাখা বালির মতোন
    অংগাঙ্গি মিশে হৃদয়ের খোপে

    লাইন তিনটা কয়েকবার পড়লাম। সুন্দর।

    জবাব দিন
  4. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    মনে হল, টিনের চাল গড়িয়ে, গাছের পাতা গড়িয়ে আকাশ চুঁয়ে চুঁয়ে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো নরম মাটির বুকে দাগ কেটে কেটে বুকে হেঁটে আমার জানলার পাশ দিয়ে কুলকুল কই জানি ছুটে চলেছে। এস্রাজের উল্লেখ একটানে কবেকার পুরনো, বিলীন যুগে নিয়ে গেছে যেন হ্যাঁচকা টানে।
    বৃষ্টি শুনে যাচ্ছি, দেখে যাচ্ছি।
    'বাজায়েছে', 'ঝরাবার লাগি' --র প্রয়োগ বাকি কবিতার সঙ্গে কেমন একটা দূরত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে

    জবাব দিন
    • লুৎফুল (৭৮-৮৪)

      অনেক ধন্যবাদ নূপুর ।
      জুনায়েদ কবীর উল্লেখ করেছিলো এমনটা ।
      এমন শব্দের ব্যবহার ইচ্ছাকৃত ।
      আসলে আমার কিছু কবিতা আছে আঞ্চলিক ভাষায়।
      সেই হিসেবে মাঝে মধ্যেই এমন শব্দের ব্যবহারে মনে হচ্ছে আমার এক রকম দুর্বলতা আছে ।
      কিন্তু পাঠক প্রতিক্রিয়ায় মনে হচ্ছে প্রচেষ্টাটি বর্জনীয় ।
      তবে তাই হোক ।
      এখানেই পালটে দিচ্ছি ।
      মতামতের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ।

      জবাব দিন
    • লুৎফুল (৭৮-৮৪)

      "লাগি"-টা তবু থেকে গেলো । তাও দু জায়গায় ।

      সেইমতো ঝরবার লাগি জলো ছলো
      আষাঢ় তুমি আসো কি !
      - এটাকে পালটে করা যায় ~
      সেইমতো ঝরবার সাধে জলো ছলো
      আষাঢ় তুমি আসো কি !

      জমানো কান্নারা আজ বুঝি তাই
      গোপনে ঝরবার লাগি
      - এটাকে পালটে করা যায় ~
      জমানো কান্নারা আজ বুঝি তাই
      গোপনে ঝরবার জেদে

      মতামত দিও ।

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।