– তুমি কি আমার কথাটা শুনেছ?
– শুনবো না কেন?
– কী বলেছি বলো তো?
– ভ্যাপসা গরমে চ্যাপা শুঁটকি খেতে মজা
– এইসব কী নাফিস! আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে কোনো মাথাব্যথা নেই তোমার? কেয়ারলেস হও, ক্যাজুয়াল হও, ভালো কথা। কখনও মানা করেছি? কিন্তু তুমি এতো কেয়ারলেস কেন? নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেছ একবার? এতবার বললাম বাসায় ঘন ঘন প্রস্তাব আসছে, তাও তোমার কোনো টেনশন নেই? কীভাবে পারো তুমি?
– তোমার বাবা বিয়ে দিতে চান?
– ভালো প্রস্তাব পেলে কোন বাবা চায় না?
– আংকেলের জন্য চ্যাপা শুঁটকির একটা রেসিপি দিচ্ছি, চ্যাপা উইথ দেশি আদা, ভালো মতন ভর্তা করে খাইয়ে দিবা। ঝাল মিডিয়াম, লবণ পাতলা। তিনবেলা খাওয়ালে ভালো, তবে দুবেলা হলেও চলবে।
– উফফ! সমস্যাটা কী তোমার? তোমার সাথে একটা ভেড়াও বাস করতে পারবেনা। আমি গেলাম। থাকো তুমি। এই রিকশা…
রিকশায় উঠেই হুড তুলে দেয় আনিকা। সিএনজি পেলে ভালো হত। রিকশায় আরাম করে কাঁদা যায় না।
– আফামনি, কই যাইবেন?
– মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ
রিকশা চলতে শুরু করে। সামনের মোড়টা ঘুরে গেলেই রিকশাটাকে আর দেখতে পাবেনা নাফিস। হার্টবিট বাড়তে থাকে আনিকার।
– চাচা, রিকশা থামান তো!
হাতব্যাগ খুলে একশো টাকার দুটো নোট বের করে আনিকা।
– যে ছেলেটা আমার পাশে বসে ছিল, একটু কষ্ট করে ওকে এটা দিয়ে আসেন। বলবেন দুপুরে আর রাতে পেটভরে খেয়ে নিতে।
নাফিস জানতো যে রিকশা থেমে যাবে। কিন্তু বৃদ্ধ রিকশাওয়ালা ফিরে আসবে এটা জানতো না।
– আফামনি এইটা আপনেরে দিতে কইসে, আর কইসে দুইবেলা ভালো মতন খাইয়া লইতে।
– একশো টাকায় ভালো খাবার কই পাওয়া যায়, সন্ধান দেন।
– নীরব হোটেলে যান, ওইহানে ভর্তাগুলান স্বাদ আছে।
– সে শুনলে খবর আছে, নীরবে একলা যাওয়া নিষেধ।
– তাইলে না যাওয়াই ভালা
– এক কাজ করেন চাচা, আপনি যাত্রীকে বাসায় নামায় দিয়া আসেন, তারপর আমি আর আপনি মিলে নীরবে যাই। এক ঘণ্টার মধ্যে পারবেন না? আমি এইখানেই বসে থাকবো, ঠিক আছে, চাচা?
– আমি তো জোহরের নামাজের আগে খাই, আফামনিরে নামায়া দিয়াই খাইতে বসতাম
– চলেন তাইলে এখনই যাই
বৃদ্ধ রিকশাচালক হেসে দিলেন। অসম্ভব সুন্দর হাসিমুখ নিয়েই রিকশার দিকে হাঁটা ধরলেন। তার পাশে নাফিস।
– আনিকা, হুড নামিয়ে দিলাম
উত্তরের অপেক্ষা না করেই হুড নামিয়ে রিকশায় উঠে বসে নাফিস।
– তু-তু-তুমি?? তোমাকে আসতে বলেছে কে? চাচা! আপনি এটাকে সাথে এনেছেন কেন?
– চ্যাপা শুঁটকি খেতে ইচ্ছে করছে খুব, চাচারও পছন্দ চ্যাপা শুঁটকি
– আমার গায়ের সাথে লেগে বসেছ কেন? সরো ওইদিকে!
– সরলাম
– গায়ে গন্ধ কেন তোমার? গোসল করো না?
– করি তো
– তাহলে কাপড় ধোও না?
– সাবান নাই
– সাবান নাই, পারফিউম তো কিনে দিয়েছিলাম, সেটা তো মাখতে পারো
– তাহলে কি অরিজিনাল গন্ধটা পেতে?
– গন্ধে বমি আসছে
– পলিথিন দেবো?
– এই ছেলে, আমার হাত ধরছো না কেন? রিকশার ঝাঁকি খেয়ে আমি রাস্তায় পড়ে গেলে তুমি খুব মজা পাবে, তাইনা?
আনিকার করতল স্পর্শ করে নাফিস। নরম আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে নিজের পোঁড় খাওয়া আঙুলগুলো চালিয়ে দেয়। অনুভব করে তার বাহু শক্ত করে আঁকড়ে ধরেছে আনিকার আরেক হাতের পাঁচটি আঙুল। ঠোঁটের কোণে চিলতে হাসি নিয়ে নাফিস রাস্তার দিকে তাকায়। সারি সারি কৃষ্ণচূড়া গাছ। ডালে ডালে যেন আগুন লেগেছে। এই মেয়েটা তার জীবনে আগুনরঙা কৃষ্ণচূড়া ফুলের মতন। একাকী মধ্যরাতে শুক্লপক্ষ চাঁদের মতন।
:)) সুন্দর গল্প, কঠিন প্রেম 😛 , ঝরঝরে লেখা :clap:
অনেক ধন্যবাদ, ভাই 🙂 দোয়া করবেন আমার জন্য।
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
একটা সময় ছিলো মাথার মধ্যে প্রচুর রুমান্টিক গল্পের প্লট ঘুরাফিরা করতো। এখন মাথায় খালি নানা কিসিমের জীবন জীবিকা নিয়া চিন্তা। বয়স হয়ে গেছে মনে হয় 🙁
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
প্লটগুলা আমারে দিয়া দেন ভাই, আমি কিছুই খুইজা পাইনা 🙁
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
তাই নাকি জিহাদ?
:clap:
একটি সরল প্রেমজ গল্প।
চলুক...
সৈয়দ সাফী
😀
অনেক ধন্যবাদ ভাই!
চলুক......
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
খুব ভাল লাগলো :thumbup:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
অনেক ধন্যবাদ আহসান ভাই 😀
দোয়া করবেন আমার জন্য 😀
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
গল্পটা ধারাবাহিক করা যায় না? -- যার প্রতিটা পর্বই হবে একেকটা ছোট গল্পের মত।
(সম্পাদিত)
ইয়ে মানে, আমি বলতে চাচ্ছিলাম যে গল্পের চরিত্রগুলো একই থাকল, আর একেকটা পর্ব হল একেকটা নতুন টাইটেলে -- একেকটা নতুন ঘটনা নিয়ে। আর পড়ার পরে যেন এটা অতৃপ্তি থেকে যায়। ঠিক যেন "শেষ হইয়াও হইল না শেষ"।
(সম্পাদিত)
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
দারুণ আইডিয়া দিয়েছেন আহমদ ভাই 😀
আমি রাজি, দেখি কতদূর কী করা যায় B-)
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
ভালো আইডিয়া! আমার নাম অমরত্ব পেয়ে যাবে ! 😀
নাফিস, ভুলে যেও না, সেইসাথে গায়ের গন্ধটাও পারমানেন্ট হয়ে যেতে পারে =)) =))
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
নাফিস আর কিছু কইবা?? আহমদ ভাই তো তোমারে ভাঁজ কৈরা ফালাইলো :)) =))
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
O:-) ভাই রেক্সোনা ডিওডেরেন্ট আছে না। শনি থেকে রবি প্রতি দিন রেক্সোনা মিনি !
ইহা কী প্রকারের বোজো হইল, উজ্রাত!!! ~x( ~x( ~x(
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
ইহা ২০০৩ সালে শোনা একখানা বিজ্ঞাপনের লাইন ! 😛
:khekz: :khekz:
তবে গল্পের শুরুতে রেক্সোনা আর গল্পের শেষে এক্স রাখলে গল্পে টুইস্টটা আরো জমবে। :goragori:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
এখানে ফেসবুকের মত একটা লাইক অপশন থাকলে মন্দ হত না...
লেখকের জন্য :teacup:
অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য 😀
আমি এটাকে লাইক হিসেবে ধরে নিলাম, শিবলী ভাই 🙂
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
দোস্ত ফেইসবুক প্লাগ-ইন একটা আছে। সেখানে লাইক দেয়া যায়। উপরে দেখ আছে!
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
এদের বিয়ে হওয়াটা ঠিক হবে না। ছেলেটা এরকমই থেকে যাবে বিয়ের পরেও। এখন মেয়েটা গন্ধ সহ্য করছে। বিয়ের পর হয়ত এটাই একটা বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে। ভাই একটু সিরিয়াস হইলে কোন সমস্যা আছে কি????????????? :duel: :chup:
:thumbup:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
আবার এমনও তো হতে পারে, এই গন্ধটা ছাড়া মেয়েটা কিছুতেই থাকতে পারছে না, এই গন্ধটাই তাকে ছেলেটার কাছে বারবার টেনে আনছে :goragori: :goragori: :dreamy: :dreamy:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
আপনার সাজেশন কাজে লাগাইসি ভাই, এটার একটা সিক্যুএল লিখসি। কয়েকদিনের মধ্যেই দিয়ে দিবো। এখন অন্য লেখা ফ্রন্টপেজে আছে তো।
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
বিশেষ গন্ধের মাধ্যমে সঙ্গী/সঙ্গীনি কে চিনে নেয়া জগতের সকল প্রাণিকুলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য দেখা যায়! :goragori: :goragori:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
মুহিব ভাই, এদের নিয়ে আমার লম্বা প্ল্যান আছে, দেখি কতদূর যাওয়া যায়। তবে নাফিস একদম বদলাবে না। এইটা হইতে দেয়া যাবেনা B-)
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
:ahem: :ahem: :dreamy:
ইমোশনাল হয়া গেসো?? আহারে...... ;)) ;))
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
পড়তে তো ব্যাপক মজা। বেশ মুচমুচে ভাব আছে। :clap: :clap:
ভাইয়ের কি এরকম কেউ আছে নাকি জীবনে? ;)) ;))
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
অপেক্ষায় আছি 😀 😀
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
ব্যাফুক বিনোদন। কমেন্টগুলাও আবার গল্পটাও ভালাই লাগলো বেয়াদবি মাফ তাই আগেই লাগায় দিলাম :frontroll:
বারে বারে অবাক হই, আর দেখি ফিরে ফিরে
কতটা বদলে গেছি এই আমি প্রতিটি পদে পদে.....................
খুব সুন্দর ভাইজান