অস্ত্র থেকে অক্ষর(পূর্ণাংগ) মাসরুফ ভাইয়ের অসাধারণ একটি পোষ্ট। তো আমি তার পোষ্টটিতে মন্তব্য করেছিলাম। বিনিময়ে তিনি আমাকে বললেন সামনে কোন মুক্তিযোদ্ধাকে পেলেই তার অভিজ্ঞতার করার কথা। তো তার কথাতেই উদ্বুদ্ধ হয়ে আমার এই পোষ্ট। আসলে আমাকে এই লেখাটা লিখতে বেশি বেগ পেতে হয়নি, কারণ যাকে নিয়ে এই পোষ্টটি লেখা তিনি স্বয়ং আমার বাবা।
২৮/১০/২০১০ তারিখে মাসরুফ ভাইয়ের পোষ্টটি আমি পড়েছিলাম আর ২৯/১০/২০১০ তারিখে ছিল আমার জন্মদিন। এইদিন বাবা বাসাতেই ছিলেন। আমি আবার বাবার সাথে বেশ খোলামেলা আচরণ করি। এইকথা-সেইকথা হচ্ছিল বাবার সাথে, এক পর্যায়ে বাবাকে মাসরুফ ভাইয়ের পোষ্টটি দেখালাম। বাবা খুব আগ্রহ নিয়ে লেখাটা পড়লেন আর পড়া শেষে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়লেন। বাবাকে বললাম কি হল। বাবা একটু অন্যমনষ্ক হয়ে উত্তর দিল। উত্তর এরকম, “মেজর কামরুল হাসান ভুইয়া স্যারের প্রতি শ্রদ্ধায় আমার মাথা নত হয়ে আসছে এই ভেবে নয় যে তিনি যুদ্ধ করেছিলেন, বরং তিনি যে যুদ্ধটা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন।”
ঠিক তখনি আমার মাসরুফ ভাইয়ের উপদেশের কথা মনে পড়ে গেল আর সাথে বাবার মনের অবস্থা বুঝে চালটা চেলে দিলাম। বাবাকে বললাম যে তিনি চাইলে এখন কামরুল স্যারের মত যুদ্ধ করতে পারেন। বেশি কিছু করতে হবে না, তার ১৯৭১ সালের স্মৃতিগুলো আমাকে বললেই হবে বাকিটা আমি করে দিব। আসলে বাবা আমাকে মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতিই বলেছেন। কিন্তু আমি পুরো মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা তার মুখ থেকে শুনতে চাইছিলাম। বাবা বেশ আবেগভরা কন্ঠে বললেন যে, “শোন তাহলে…………”
আমি তখন সবে দশম শ্রেণীতে উঠছি, জানুয়ারী মাস চলে। আমাদের গ্রামে (খলিশাখালী) তখন মাত্র একটি রেডিও ছিল, খগেন নাপিতের দোকানে (সে কলকাতা থেকে আনিয়েছিল)। তো সেই রেডিওতেই অনেক কষ্ট করে আমরা বিবিসি শুনতাম, বুঝতে পারতাম না অনেক কিছুই। কিন্তু বাংলা কথাটা শুনলে শরীরটা যেন কেমন কেঁপে উঠত। স্কুলের টিফিন পিরিয়ডে আমরা খগেন কাকার দোকানে রেডিও শুনতাম, কারণ আমাদের প্রায় সবাইকেই স্কুল শেষ করে মাঠে কাজ করতে যেতে হত। মাঠ থেকে ফিরে খেয়েদেয়ে হারিকেনের আলোয় পড়তে বসতাম বাড়ির অন্যান্য ছেলেমেয়েদের সাথে। তো এভাবেই চলত, শুধু বাবা, চাচা, আমার দুই বড় ভাই ও তাদের বন্ধু এবং অন্যান্য বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে শুনতাম এবার শেখ মুজিববের অবস্থা বেশ শক্ত, আমাদের আর ধান-পাট বিক্রি করে দিয়ে অনাহারে মরতে হবে না।
মার্চ মাসের শুরুর দিকে মোটামুটি অস্থির হয়ে পড়ল গ্রাম। আমার চাচাত ভাই বাসি ভাইয়ের নেতৃত্বে আমার বড় দুইভাইসহ বেশ কিছু তরুণ রওনা হল শেখ মুজিবের ভাষণ শুনতে। তো তারা ফিরে এলে রটে গেল এবার কিছু একটা হতে বাধ্য, হয় পূর্ব পাকিস্থানকে ক্ষমতা দিতে হবে অথবা পশ্চিম পাকিস্থানিদের এ মুল্লুক ছেড়ে চলে যেতে হবে। ততদিনে আমাদের মুজিবের ভাষণ মুখস্থ হয়ে গেছে, সুযোগ পেলেই ক্লাসে বলতে শুরু করে দেই, “এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
পুরো মার্চ গ্রামের সবার মাঝে দেখা গেল বেশ একটা চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা। শেষের দিকে ২৫শে মার্চে ঢাকায় যে গণহত্যা হয়েছিল তার খবর পেলাম পরদিন। সবার মুখে মুখে শুনতে পেলাম যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে, সবাই ভয়ও পেল। বেশ কিছু ঘর দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল। আর পাশের গ্রামের খগেন কাকারা সহ আর যে কয় ঘর ছিল তারা সবাই তাদের জমিজমা বিক্রি করে কলকাতায় পাড়ি জমাল। আমাদের তখন যৌথ পরিবার, আমরা তাই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। কিন্তু বাবা-চাচাদের কড়া আদেশ গ্রামের বাইরে একদমই যাওয়া যাবে না।
এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমাদের স্কুল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল।সারাদিন ইরাদত চাচার দোকানে বসে বসে রেডিও শুনি (রেডিওটা কলকাতা যাবার সময় খগেন কাকা ইরাদত চাচার বিক্রি করে গিয়েছিলেন)। হঠাৎ একদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে শুনি আমার বড় দুই ভাই জাহাঙ্গীর ও আলমগীর যুদ্ধে যোগদান করার জন্য ইন্ডিয়া চলে গেছে ট্রেনিং নেওয়ার জন্য। তারা আগের দিন আমার আব্বার সাথে এ ব্যাপারে ঝগড়া করে কোন ফায়দা না হওয়ায় তারা এই পদক্ষেপ নেয়।
আমি তখন বেশ দাপটের সাথে সবাইকে আমার দুই ভাইয়ের কাহিনী বেশ রঙ চড়িয়ে সবাইকে শুনাতাম। এইভাবেই বেশ কিছুদিন চলল। তারপর একদিন রাতের খাবার খাওয়ার পর আমরা দুই-তিনজন বন্ধু মিলে পুকুরপাড়ের অন্যপাশে গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুকছিলাম। তো গাছের ফাক দিয়ে দেখি আমার বড়চাচার (চাঁন বিশ্বাস) ছেলে বাসি ভাই তার বন্ধুদের ও কিছু আচেনা মানুষদের নিয়ে মাঠের মধ্য দিয়ে কাঁধে ভারি কিছু নিয়ে আমাদের বাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে। তারা চলে গেলে আমরাও তাদের পিছু নিলাম। বাসি ভাইয়ের ঘরের বেড়ার ফাক দিয়ে দৃশ্যটা দেখে আমার মাথা ঘুরে গেল। ঘরের মধ্যে সাত-আটজন মিলে বেশ কিছু অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখছে। সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে স্বভাবমত মাতবর বড়চাচাকে খবরটা দিয়ে এলাম, সাথে বাবাকেও বলে এলাম।
মুরব্বিরা সাথে সাথে তাদের জেরা শুরু করে দিল। ভাইদের সংক্ষিপ্ত উত্তর দেশকে স্বাধীন করতে হলে এর কোন বিকল্প নেই। কারণ পাক-হানাদাররা ততদিনে আমাদের জেলায়(মাগুরা) ঢুকে পড়েছে। গ্রামে সালিশ বসানো হল, অনেক বাক-বিতন্ডা হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হল যে গ্রামকে সুরক্ষিত করতে আমাদের গ্রামে মুক্তিক্যাম্প থাকবে। আর সেই ক্যাম্পটা হল আমাদের বাড়ি (বিশ্বাস বাড়ি)।
আমাদের বাড়িতে তখন বেশ একটা উৎসব ভাব বিরাজমান। প্রতিদিন দুবেলা ভাল-মন্দ রান্না হচ্ছে। আমাদের বাড়িতে এ বাড়ি ও বাড়ি থেকে প্রতিদিন নানান পদের খাবার-দাবার আসছে। মুক্তিরা তাদের অস্ত্র-গোলাবারুদ পরিষ্কার করে। আমার মনের মাঝে কেমন জানি করে ওঠে এসব দেখে। আমি ভাইদের এটা-ওটা এগিয়ে দেই, একদিন তো সুযোগই পেয়ে গেলাম অস্ত্র পরিষ্কারের। আমার খুশি দেখে কে। পরে অবশ্য বাবার বকুনি খেলাম। মনে মনে ভাবতাম বড় দুভাই যুদ্ধে গেছে, আমাদের বাড়িতেই মুক্তিক্যাম্প; তাহলে আমি কেন তাদের সাথে যোগ দেব না, আমি তো তখন বেশ সাবালক।
মে মাসের মাঝামাঝি সময়, আমাদের গ্রামের উপর নজর পড়ল পাক-হানাদারদের আর নকশালদের। যারা এই নকশালদের সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য বলছি। নকশালরা ছিল সমাজতন্ত্রী বা কম্যুনিষ্ট। তারা চাইত দেশে কম্যুনিষ্ট শাসন কায়েম হোক। এ কারণে তারা পদক্ষেপ নিল গ্রামে বড়লোক যাদের পাবে তাদের জবাই করে সেই বাড়ি লুটপাট করবে। তারা যা করত কম্যুনিজম এর দোহাই দিয়ে লুটপাট। আর পাকরা ক্যাম্প করেছিল আমাদের ইউনিয়নের পাশের গ্রাম নহাটাতে। সেসময় আমাদের ইউনিয়নে মাত্র একটি বাড়ি পাকদের সহায়তা করেছিল। তারা হল মৃধাবাড়ির লোকজন। ঐ শালারা হয়ে গেল রাজাকার। আমি আজও বুঝে উঠতে পারি না কেন ওরা পাক-হানাদারদের চামচামি করেছিল।
আমাদের গ্রামের মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার ছিলেন আমার বড় চাচাত ভাই বাসি মিয়া। তিনি জরুরী ভিত্তিতে অন্য দুই গ্রামের কমান্ডার আইয়ুব ভাই (পানিঘাটা) এবং নজীর মিয়া (বেজড়া, নারায়ণদিয়া) নিয়ে মিটিং এ বসলেন। কিভাবে পাকিস্তানিদের তাড়ানো যায় আর নকশালদের ব্যবস্থা কিভাবে করা যায়। এইসব কিছু আমি তখন নিজ চোখে দেখি কারণ সবাই আমাকে ততদিনে তাদের একটা অংশ হিসেবে ধরে নিয়েছে।
একদিন হঠাৎ করেই অত্যন্ত বাজে একটা ব্যাপার ঘটে গেল। আমার বড় চাচা কালীগঞ্জ বাজার থেকে বাজার করে বিলের মধ্যে দিয়ে নৌকায় করে বাড়ি ফিরছিল। নকশালের দল চাচাকে সেই নৌকাতেই গলুই এর উপর খেজুর গাছ কাটার ছেনি দিয়ে জবাই করে। পরে তারা সেই নৌকায় করেই চাচাকে আমাদের বাড়ি পৌছাবার ব্যবস্থা করে। পুরো বাড়িতে থমথমে একটা ভাব। বাসি ভাই শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন। এরপর তিনি ঘোষণা দিলেন, সবাইকে (মুক্তি্যোদ্ধাদের) নিয়ে বেরোলাম, নকশালদের খতম না করে বাড়ি ফিরব না।
নকশালদের কার্যক্রম পরিচালনা করত সমাজতন্ত্রী চারু মজুমদার আর তার কিছু সহকারী। তাদের ঘাটি ছিল নড়াইল জেলার লোহাগাড়া ইউনিয়নে। আমার আরেক চাচাত ভাই তারা বিশ্বাসকে দায়িত্ব দেয়া হল তাদের উপর নজরদারি করার জন্য। সেই একই কময়ে পাকরা বাটাজোড় গ্রাম দখল করল। কিন্তু তাতে তারা সুবিধা করতে না পারায় তার নদী (নবগঙ্গা) পার হয়ে নহাটা বাজারে এসে মৃধাদের সহায়তায় দখল করে নেয়। সেসময় বর্ষাকাল চলছে, বন্যা শুরু হয়ে গেছে। নৌকা ছাড়া কোন জায়গায় যাওয়া অসম্ভব। পাকরা আবার পানি খুব ভয় পেত, কারণ তারা সাতার কাটতে জানে না। পাকিরা যদি আমাদের গ্রামে আসতে চায় তাহলে তাদেরকে একটা খাল(হরিখালি) পার হতে হবে। পানিঘাটা আর বেজড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা অই খালের দুই পাশে বেশ কিছু দিন ঘাপটি মেরে বিসে থাকল। আর আমাদের দল তো ওইপার থেকে সবসময় পাহারা দিয়ে যাচ্ছি।
একদিন রাতের খাবার শেষে বাসি ভাই এসে আমাকে একটা থ্রী নট থ্রী রাইফেল হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল যে তোর চাচার(চান বিশ্বাস) খুনের বদলা নিবি না। আমি সঙ্গে সঙ্গে রাইফেলটা নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখে বললাম সবগুলোকে মেরে ফেলব। পরে ভাই আমাকে বলে দিল তোর জন্য একটা পোস্ট বানানো হয়েছে। আমাকে ওই রাতেই হরিখালি খালে নিয়ে যাওয়া হল। দিনে আমার কাজ ছিল একটা পরিত্যক্ত বাড়িতে বসে পাকদের পাহারা দেয়া। আর রাত হলেই রাইফেলটা প্লাষ্টিক দিয়ে মুড়িয়ে খালে নেমে কচুরিপানার আড়ালে নেমে। আমাকে বলা হল রাইফেলটা সাবধানে রাখতে আর প্রয়োজন না পড়লে ব্যবহার না করতে। মানে আমার কাজ ছিল পাকরা আমাদের গ্রামের দিকে আসলেই সবাইকে জানানো, আর রাইফেল দেয়া হয়েছিল আমার সাবধানতার খাতিরে। আর আমি ছিলাম কমান্ডারের ছোট ভাই, তাই প্রতিদিন আমার জন্য দুবেলা খাবার আসত।
অপেক্ষা করে যাচ্ছি তো যাচ্ছি, পাক হানাদারেরা আর আসে না। অবশেষে মে মাসের ২৭ তারিখে তারা আমাদের গ্রামের দিকে যাত্রা করে। তারা এসেছিল দুই নৌকায় চেপে, কম করে ৪০ জন ছিল। আমি ঘরের ফুঁটো দিয়ে দেখতে পেয়েই একছুট দিলাম আমার বাড়ির উদ্দেশ্যে। বাসি ভাইকে জানালাম। সাথে সাথে সবাই রওনা হয়ে গেলাম হরিখালি খাল মুখে। বাসি ভাই একবার আমায় মানা করেছিল না আসার জন্য, কিন্তু আমি কি আর তার কথা এই ব্যাপারে মেনে নিতে পারি। আইয়ুব ভাই ও নজীর ভাই তাদের দলবল নিয়ে দুপাশে পজিশন নিয়ে তৈরি আছে। আমি বাসি ভাইয়ের দলটার পিছনের সারিতে ছিলাম। আমরা সবাই ঠিকমত পজিশন নিতে নিতেই বাসি ভাই একটা গুলি করলেন। প্রায় তখনই গর্জে ওঠে পাকিস্তানিদের এল, এম, জি। আমরা সবাই কাভার নিয়ে নেই। তার একমিনিট খানেক পর আইয়ুব ভাইদের রাইফেল পাকদের উদ্দেশ্যে গুলি বর্ষণ শুরু করে। পাকরাও পালটা জবাব দিতে থাকে। তাদের দলটা কাভার নিয়ে নেয়। তখনই নজ়ীর ভাইয়ের দল তাদের মেশিনগানের গুলি ছোড়া শুরু করল। পাকদের নৌকায় এতে ফুঁটো হয়ে যায়। নৌকা আস্তে আস্তে ডুবে যাচ্ছিল। প্রায় জনা বিশেক পাক হানাদার তখন অগস্ত্য যাত্রা করে ফেলেছে।
এরপর বাসি ভাই হঠাৎ করে একটা আতশবাজি আগুন ধরিয়ে উপরে ছুড়ে মারলেন। এর পরপরই সবাই একযোগে নৌকা বরাবর গুলি করতে লাগলাম। আমি সেসময় লোড করে গুলি করতে পেরেছিলাম মাত্র চার বার। প্রথম তিন বার তো ধারে-কাছে দিয়ে গেল না। শেষ গুলিটা গিয়ে যে পাকিটার গায়ে লাগল সে মোটামুটি নৌকা থেকে ছিটকে পানিতে পড়ে গেল। নৌকার মাঝি যে ছিল গোলাগুলি দেখে সে আগেই পানিতে ঝাপিয়ে পালিয়ে গেছে। আমি দেখতে লাগলাম নৌকাটা আস্তে আস্তে ডুবে গেল। ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে তিন দিক থেকে সবাই হুল্লোড় করে উঠল। বাসি ভাই সবাইকে আমাদের বাড়িতে খাবারের দাওয়াত দিলেন এবং তারা সানন্দে রাজি হয়ে গেলেন।
গ্রামে আসার সাথে সাথে লোকজন আমাদের ঘিরে ধরল। একের পর এক তাদের প্রশ্ন, কিভাবে আমরা পাকিস্তানিদের মারলাম, কোনদিকে আমরা পজিশন নিয়েছিলাম ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা সবাই মিলে বেশ একটা খাওয়া দাওয়া দিলাম। সবাই যার যার বাড়িতে চলে যাওয়ার পর মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন। বাবা বকা দিলেন, দুই ভাই তো গেছে যুদ্ধে আমিও যদি যাই তাহলে তারা কি নিয়ে বাঁচবে। তখন নিজেকে বেশ বড় বড় মনে হল, তাদের অভয় দিয়ে বললাম আল্লাহ আছেন না তিনি সবই দেখছেন, তিনি আমাদের সাথে অবিচার করবেন না। এই কথা গুলো বলতে বলতে চোখের পানি লুকিয়ে লুকিয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম।
পাকিস্তানিদের ধ্বংস করেছি কিন্তু যুদ্ধ তখনও শেষ হয়নি। কারণ পাকিরা ছাড়াও আরও দুটি দল ছিল যারা দেশের বিপক্ষে। এক রাজাকার ও আলবদর এবং দুই নকশালরা। আমাদের ইউনিয়নে শুধুমাত্র একটি বাড়িতেই রাজাকার ছিল সেকথা তো আগেই বলেছি। আমরা সবাই পরদিন মৃধাবাড়িতে গেলাম। পুরো বাড়িতে রাজাকার ছিল সাত জন। সবাই পালিয়েছে। শুধু একজন কে পেয়েছিলাম সবগুলো ঘর তল্লাশি করে চালের ডোলের মাঝে। এরপর তাকে নদীর পাড়ে নিয়ে জনসম্মুখে বাসি ভাই নিজেই গুলি করে মারল। এবং ঘোষণা দিয়ে গেলেন যদি বাকি রাজাকাররা ফিরে আসে আর তাকে জানানো না হয় তাহলে তিনি পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেবার হুমকি দিলেন। পরে আর কোন রাজাকার আমাদের গ্রামে এখনও ফিরে আসে নাই।
নকশালরা আমাদের ভয়ে লুকিয়ে ছিল। কিন্তু কতদিন আর লুকিয়ে থাকা যায়। জুলাই মাসের শেষদিকে তারাভাই(যাকে বাসি ভাই নকশালদের উপর নজরদারি করার জন্য নিয়োগ দিয়েছিলেন) এসে আমাদের জানালেন নকশালরা কালকে পালিয়ে ইন্ডিয়া চলে যাবে, আর যাত্রাপথে যেসব গ্রাম পাবে সেসব গ্রামের লোকজন মেরে যাবে। তাদের মন ছিল খুব কদাকার। তারা মানুষকে মারত নৌকার গলুই এর উপর রেখে খেজুর গাছ কাটার ছেনি(এক ধরনের বাকানো দা) জবাই করে মাথাটা সেই বাড়িতে পাঠিয়ে দিত। বাসি ভাইসহ আমাদের সবার গায়ে তো আগুন ধরে গেল। সেই রাতের আধারে সবাই চলে গেলাম নড়াইলের দিকে, গড়ামড়া বিলে যেখানে নকশালেরা ঘাঁটি করেছিল। আমরা সাঁতরে গিয়ে পুরো জায়গাটা গিরে ধরে আত্মসমর্পণ করার জন্য নকশালদের আদেশ দিলাম। পাঁচজন পালিয়ে গিয়েছিল। আঠারোজন আত্মসমর্পণ করে। বাসি আমাদের নির্দেশ দিলেন, সবার হাত-পা বেধে ফেলতে। আমরা সেটা করে ফেললে বাসি ভাই নিজেই অটোমেটিক দিয়ে সবগুলোকে পরপারে পাঠিয়ে দিলেন। আমরা কয়েকজন ধাওয়া করে বাকি পাঁচজনকে ধরতে পারিনি। তারা পালিয়ে ইন্ডিয়া চলে যায়।
এর কিছুদিন পর আমার মেঝোভাই ফিরে আসে পুরো ট্রেনিং নিয়ে। কিন্তু আমাদের এলাকায় তো ততদিনে যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে। ভাই অন্য এলাকায় যুদ্ধে যেতে চাইলেও বাবা তাকে আর যেতে দেয়নি। আর বড়ভাই ফিরে আসে নভেম্বর মাসে। তিনি খুলনা এলাকায় অনেক দিন ধরে যুদ্ধ করেছিলেন। বাবা হাপ ছেড়ে বাঁচেন বড়ভাই ফিরে এলে। যারা যুদ্ধে গিয়েছিল তারা সবাই মোটামুটি ফিরে এসেছিল। কিন্তু যারা ইন্ডিয়া চলে গয়েছিল তারা আর ফিরে আসেনি।
আগষ্টের দিকে আমাদের এলাকায় বেশ খাবারের অভাব দেখা দেয়। খাবারের পানির অভাব দেখা দেয়। গ্রামের প্রায় সব বাড়িতেই মানুষজন একবেলা-আধবেলা খেয়ে দিন কাটিয়েছিল। এই অবস্থা কাটতে প্রায় বছর দেড়েক লেগেছিল। অবশেষে এল ১৬ই ডিসেম্বর। আমরা তো বেশ আগে থেকেই বুঝতে পারছিলাম যে এমনটি হবে। যেদিন এই ঘোষণা শুনতে পেলাম সেদিন পুরো গ্রাম বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে মেতে উঠেছিল। সেদিনের সেই স্বাধীন হওয়ার অনুভূতি কাউকে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। “তুই যদি ওইদিন সেখানে থাকতি তাহলে বুঝতে পারতি আমরা বাঙ্গালিরা কতটা আনন্দ পেয়েছিলাম।”
উপরের এইটুকু বাবা আমাকে প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে একটু একটু করে বলেছেন আর আমি তা বাবার মুখের ভাষাতেই বর্ণনা করে গেছি। বাবার মুখে এইসব স্মৃতি শুনে কতবার যে শিহরিত হয়েছি! আর বারবার ঘুরে-ফিরে একই কথা মনে হয়েছে। ইস! আমি যদি তখন বাবার সাথে থাকতে পারতাম।
১ম মনে হয়!
এখন পড়ি গিয়ে!
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
আপ্নে এইখানেও ফার্স্ট? 🙁 আমি পুরাটা পইড়া কমেন্ট করছি,মনযোগী ছাত্র হিসেবে আমারইতো ফার্স্ট হওয়ার কথা,কি বলেন আপু???? 😕
জিতুপ্পি আন্নে তো দেহি চরম ট্যাক্টিস জানেন। অভিনন্দন
মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারটায় আমরা রোমান্টিসিজমে উদ্বেলিত হই সবসময়,কি ভয়াবহ নৃশংসতায় কঠিন একটা সময় পার করেছেন আমাদের পূর্বপুরুষরা এই লেখা পড়ে আবার উপলব্ধি করলাম।অসাধারণ একটা পোস্টের জন্য ধন্যবাদ দোস্ত।আংকেলকে :salute: আর শুভকামনা।
নকশাল দের ব্যাপারটা পুরা অজানা ছিল .......... 🙁
সকল মুক্তিযোদ্ধা দের :salute:
আমি তো বাবারে প্রতিদিন একটা করে :salute: দেই......নিজেকে বেশ গর্বিত মনে করি।
:boss:
পড়ে খুব ভালো লাগলো ।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী সাতার জানতো না ? মজা পাইলাম শুইনা । তারা নাকি সেরা আর্মি আছিলো ?! :grr: কেম্নে কি ?
আঙ্কেলরে :salute:
"আরে নিজে যারে বড় বলে বড় সেই নয়,
লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়।" ওরা নিজেরাই নিজেগো সেরা কইত আরকি :gulli: :gulli2:
শিহরিত হবার মতো লেখা। এভাবে একটা নতুন ধারার সূচনা হলে আমাদের ইতিহাসকে আরো সমৃদ্ধ করবার জন্য সুযোগ বাড়বে। :boss: :boss:
একটা অনুরোধ জুলফিকার ভাই, সম্ভব হলে মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরিস্থিতির উপর আঙ্কেলের (যদিও উনি তখন বেশ ছোট ছিলেন, তারপরো) সামগ্রিক কিছু আলোচনা পেশ করবার জন্য আর্জি জানাচ্ছি প্লিজ।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
এই ব্যাপারে বাবার সাথে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বড় চাচার কাছে refer করেছেন। এখন ধান্দায় আছি ক্যামনে বড়চাচার থেকে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে কতটুকু জানতে পারি।
রাজাকারগুলাকে যদি তখনি বা স্বাধীনতার পর মেরে ফেলা যেতো!
দারুণ বর্ণণা।
মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার জন্যে তোমাকে আর আংকেলকে :salute:
নুপুরদা আমার তো শুনলেই গায়ের লোম সব দাঁড়িয়ে যায়। ধন্যবাদ 🙂
আমি যদি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারতাম !
সকল মুক্তিযোদ্ধা দের :salute: :salute: :salute:
ছুডভাই দেশ পাকিদের থেইক্যা স্বাধীন হইলেই বিভিন্ন দিক থেইক্যা পরাধীনই রইয়্যা গেছে। তাই আমরা চাইলে এহনও এই দেশকে বাচানোর যুদ্ধে অংশগ্রহন করতে পারি।
তোর এই লেখাটা মুক্তিযুদ্ধ ভার্সন ২.০ এর অন্তর্গত।শুধু অস্ত্র হাতে যুদ্ধ নয়,এই ধরণের স্মৃতি সংরক্ষণও এক ধরণের অতি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ।স্যালুট,সহযোদ্ধা!
সবই আপনার কল্যাণে :-B আপনারে দেইখ্যাই তো মোটিভেটেড হইছি।আপনারেও :salute:
:salute: :salute:
চলো বহুদুর.........
ধন্যবাদ 🙂
সাবলীল লেখা। খুব ভালো লাগলো।
আংকেল কে :salute:
বাবা তোমাকে ধন্যবাদ জানানো হচ্ছে :salute:
জুলফিকার, তখন হাতে অনেক সময় ছিল না আর লেখার সাইজটা দেখে একটু সাহসের অভাবই হচ্ছিল 😛
এখন যখন পড়া স্টার্ট করলেম, একটানে পড়ে ফেললাম। অসাধারন একটা লেখা, অসাধারন আঙ্কেলের অভিজ্ঞতা। :hatsoff: :salute:
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
ধন্যবাদ 🙂
নকশালের টিপু বিশ্বাশ, সিরাজ সিকদার এগেরকে নাকি সেই সময় ডাকাত উপাধি দেয়া হয়েছিল। রবিন হুড কায়দাতে গুপ্ত হত্যা, লুটপাট করে এই গোষ্টি অনেক সমালোচিত হয়েছিল। আঙ্কেলের কাছে এদের সম্পর্কে জেনে আরো জানাও।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
জি আজ্ঞে
সমাজতন্ত্রী গ্রুপ গুলোর ব্যাপারে আমার মনে অনেক প্রশ্ন আছে। এদের মধ্যে ব্রডার স্কেলে চীনপন্থী (পিকিং পন্থী, মাও গ্রুপ), এবং রাশিয়া পন্থী (লেনিন গ্রুপ) দুটো গ্রুপ ছিল। এর মধ্যে এক গ্রুপ সরাসরি বিরোধীতা করেছে, অন্য গ্রুপ ব্যস্ত ছিল যুদ্ধের পরে দেশ কিভাবে চলবে তা নিয়ে, মানে সমাজতন্ত্রকে দেশে প্রতিস্টিত করার ব্যাপারে তাদের প্ল্যানটাই ছিল দীর্ঘমেয়াদি। যার একটা বিবর্তিত রূপ হয়ত ছিল বাকশাল।
এসব ব্যাপারে আংকেল কি বিস্তারিত কিছু বলতে পারবেন? তোমাকে জিজ্ঞাসা করলাম, কারন এখানে দেখা যাচ্ছে আংকেল সরাসরি চীন পন্থী গ্রুপের সংগে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। এদের কাছে দেশকে শক্র মুক্ত করার চেয়ে শ্রেনী-শক্র (তাদের ভাষায়) খতম করাকে বেশি পবিত্র কাজ মনে হয়েছিল। এদের কাছে ভারত-বাংলাদেশ-পাকিস্থান বড় ব্যাপার ছিল না। এই মতাদর্শের লোক একই কাজ ভারতে করেছে, চীনে করেছে, বাংলাদেশেও করেছে। চীনে সফল হয়েছে নেতার কারনে, অন্য খানে হয়নি। একসময় চীন সমর্থন উঠিয়ে নিয়েছিল নকশালদের উপর থেকে, অথবা চীনের সমর্থন আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছিল তাঁরা, আমি সঠিক তথ্য জানিনা।
আমি আসলে এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ ভাষ্য জানতে চাচ্ছিলাম।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ফয়েজ ভাই, আমি বাবাকে জিজ্ঞাসা করে আপনাকে বিস্তারিত জানাচ্ছি।
"যার একটা বিবর্তিত রূপ হয়ত ছিল বাকশাল"
বাকশালের জায়গায় নকশাল হবে মনে হয় ফয়েজ ভাই।
না, বাকশালের কথাই বলেছি। রাশিয়া পন্থীদের সমাজতন্ত্র।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
নতুন কিছু জানতে পারলাম। তোমাকে ধন্যবাদ। সেই সাথে আঙ্কেল কে :salute:
থ্যাংকু 🙂
ঠিক এইরকম একটি পোস্টের কথাই আমি লিখব বলে মনে মনে চিন্তা করছিলাম । কেননা, আমার বাবাও একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার মুখ থেকেও অনেক যুদ্ধের কাহিনী শুনেছি। কিন্তু প্রতিটি কাহিনীই ছাড়া ছাড়া ভাবে শুনেছি। ভেবেছি আবার একত্রে সব গুলো কাহিনী শুনে ধারাবাহিক একটা পূর্ন কাহিনী উপস্থাপন করব। যাইহোক তার আগেই এইরকম একটা পোস্ট পেলাম।
খুব ভাল লাগলো।
দেখি, পরবর্তীতে বাবার সাথে দেখা হলেই খাতা কলম নিয়ে বসতে হবে। যুদ্ধের সময়ের পুরো কাহিনী শুনতে হবে। তার দৃষ্টিকোন হতে পুরো যুদ্ধের পটভূমি বুঝতে হবে। তারপর না হয় পোস্ট......দোয়া রাইখেন সবাই, যেন সফলকাম হতে পারি।
হ ভাই লাইগ্যা পড়েন। দোয়া তো আছেই।
জুলফিকারকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন দারুণ একটা পথ দেখানোর জন্য। মহিউদ্দীন সহ আমার মনে হয় আমাদের অনেকেরই বাবা মা আছেন প্রত্যক্ষ কিম্বা পরক্ষ্যভাবে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত। এবং আমি জানি তাদেরকে সেই সময়ের কথা একবার মনে করিয়ে দিলে কি পরিমানে নষ্টালজিক তারা হয়ে ওঠেন। অনেক না জানা, অথবা জানা কথা ও ভিন্ন দৃষ্টিকোন বা ভিন্ন অনুভুতি, আবেগ দিয়ে প্রকাশ পায় তাদের গল্পে। তাদের সেই সময়ের অভিজ্ঞতা তারা না লিখলেও আমাদের উচিত" তুলে আনা।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
সহমত
মহিউদ্দিন ভাই, আমরা ভারতীয়দের দোষ দিই আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্বের কথা না লেখা নিয়ে-কিন্তু আমরাই বা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা লিখলাম কতটুকু?! অধীর আগ্রহে বসে আছি আপনার লেখার জন্যে। আমার মত তুচ্ছাতিতুচ্ছের অনুরোধে এক-দুইজন করে হলেও যে মুক্তিযোদ্ধাদের কাহিনী আপনি লিখবার চিন্তা করছেন এবং জুলফিখার লিখেছে-এতে কৃতজ্ঞতা জানানর ভাষা আমার নেই।মুক্তিযুদ্ধের সেকেন্ড ভার্সনে আমরা সবাই সহযোদ্ধা,জয় আমাদের সুনিশ্চিত!
জুলফিকার,
প্রথমেই কোটি কোটি ধন্যবাদ দিচ্ছি মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সংগ্রামের দিনগুলিতে ফিরিয়ে নেবার জন্যে- রাজা-বাদশাহদের কাহিনীর চাইতে এই গণমানুষের সংগ্রামের কাহিনী আমার কাছে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের দেয়া এরকম ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকনায় একদিন বিশাল মহাদেশ গড়ে উঠবে এটা আশা করা মনে হচ্ছে দুরাশা নয়-তোর এই লেখা আমাকে সেই সাহস দিচ্ছে।"আমার চাচার চোখে মুক্তিযুদ্ধ"-তোর পরবর্তী লেখা পড়ার জন্যে অধীর আগ্রহে বসে রইলাম-যদি সম্ভব হয় তোর বাবার একটা ছবি এখানে যুক্ত করে দে- একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ছবি দেখে ধন্য হই...
আবারো অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আরেকটা কথা বলতে ভুলে গেছি-তোদের পিতা-পুত্রের এই যুদ্ধে সহযোদ্ধা আমি,আমরা সবাই।জয় আমাদের হবেই।
দেশকে, দেশের ভবিষ্যতকে এখনের রাজাকার-পাকিস্তানিদের(!) হাত থেকে বাচাতে হলে তো আমাদের এগিয়ে আস্তে হবেই। নাহলে যে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের কথা ভুলেই যাবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আজীবন :salute...
লেখাটা প্রচন্ড ভালো লেগেছে... অনেক অনেক ধনবাদ জুলফিকার।
আঙ্কেল কে আমার সশ্রদ্ধ সালাম জানিও।
আব্বারে আপনার হয়া :salute: দিয়া দিলাম।
চমৎকার উদ্যোগ।
কিছু প্রশ্ন ছিল, পরে করবো। আপাততঃ আঙ্কেলকে লাল সালাম।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ধন্যবাদ। প্রশ্নের অপেক্ষায় বয়া থাকলাম। আঙ্কেলেরে লাল সালাম দিয়া দিমু।
এরকম সত্যিকারের বীরদের কাহিনী পড়তে ভালো লাগে। সকল মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
খুব জরুরী কিছু কথা ছিল, জুলফিকার ভাই আপনার সাথে! পার্লে একটু ফোনে যোগাযোগ করেন 01710571571 এই নম্বর এ। খুব ই আর্জেন্ট।