কত যে মজার স্মৃতি কলেজে ঘটেছিল, তা লিখতে বসলেই কোনটা ছেড়ে কোনটা লিখব ভেবে উঠতে পারি না। তাই আজকে মনে করলাম, যেহেতু কলেজ পালানোর স্মৃতিচারণ চলছে সেহেতু এই পর্বও কলেজ পালানো কে উৎসর্গ করি।
তখন আমরা একাদশ শ্রেণীর ক্যাডেট। শিক্ষাসফর শেষ করে এসেছি মাসখানেক হয়েছে। সিগারেট ফুরিয়ে গেছে। অতএব কলেজ পালিয়ে সিগারেট আনতে হবে। তখন পালানোর ব্যাপারে কিছুটা কড়াকড়ি হয়েছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না যাওয়া উচিত হবে কিনা। পালানোর রাস্তাগুলো পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে নিতে রাত পেরিয়ে ভোর ৩টা বা ৪টা বেজে গেছে।
অবশেষে আমি, মেসবাহ, নাঈম ও আবদুল্লাহ ঠিক করলাম যে বাইরে যাব। গার্ডকে নজরের উপরে রেখে আমরা তিতুমীর হাউসের জুনিয়র ব্লকের টয়লেটের পাশ দিয়ে নিচে নেমে গেলাম। তারপর হাউসের পাশ দিয়ে কর্মমুখী ক্লাসরুমের পেছন দিয়ে দেয়াল টপকে ওপাশে চলে গেলাম কোন অসুবিধা ছাড়া।
মজার ব্যাপার হচ্ছে সেদিন হরতাল বা ধর্মঘট কিছু একটা ছিল। তো আমরা হাটতে হাটতে কলেজের সামনে দিয়ে মডার্ণ মোড়ের দিকে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি সব দোকান-পাট বন্ধ। বড় রকমের একটা ধাক্কা খেলাম। চিন্তা করতে লাগলাম কি করা যায়। তখন রংপুরের ছেলে মেসবাহ উপদেশ দিল তিন মাথার মোড়ে বা কারমাইকেল কলেজের পেছনের বাজারে কোন দোকান খোলা থাকতে পারে।
আমরা হাটতে হাটতে তিন মাথার মোড়ে আসলাম। এসে দেখি এখানের সব দোকানও বন্ধ। এখন যদি খালি হাতে ফিরে যাই তাহলে সিগারেট ছাড়া থাকতে হবে যা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। তাই জিদ চড়ে গেল আজকে সিগারেট ছাড়া কলেজে ফিরে যাব না। যথারীতি কারমাইকেল কলেজের পেছনের বাজারের (জায়গাটার নাম মনে পড়ছে না) উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
যেতে যেতে হঠাত করেই দুই পুলিশ মামার সাথে দেখা। আমাদের চারজনকে দেখেই তারা আটকালো। তারপর প্রশ্ন শুরু হল এত রাতে বাইরে কি? আমরা উত্তর দিলাম মামার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম, এখন বাসায় ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু রিক্সার অভাবে হেটে যেতে হচ্ছে। বোধহয় আমাদের শুদ্ধ উচ্চারণ শুনে তাদের মনে হয়েছিল আমরা সত্য কথা বলছি। তাই আমদের ছেড়ে দিয়ে সাবধানে যাওয়ার উপদেশও দিল।
তো আমাদের ভাগ্য ঐদিন বোধহয় ভাল ছিল। কারণ অবশেষে বাজারে এসে দোকান খোলা পেলাম। যথেষ্ট পরিমাণ সিগারেট কিনলাম। কিনে চারজন সিগারেট ধরিয়ে আবার হাটা শুরু করলাম কলেজের দিকে। তো হঠাত আবার সেই দুই পুলিশ মামাকে দেখলাম আমাদের দিকে হেতে আসতে। বুঝলাম আজকে খবর খারাপ আছে। ঠিক করলাম মামাদের কি বলে বোঝানোর চেষ্টা করা যায়। আমাদের দেখেই প্রশ্ন কি ব্যাপার? জবাব দিলাম হাটেত হাটতে পা ব্যাথা হয়ে গেছে তাই বাসায় ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই মডার্ণ মোড়ে তেলের পাম্পে গিয়ে রিক্সার জন্য আপেক্ষা করব সকাল পর্যন্ত। আমাদের হাতে ব্যাগ ভরা সিগারেট এই ব্যাপারটা তারা খেয়াল করল না। আমাদের ছেড়ে দিল। আমরাও ভদ্র ছেলের মত হাটা শুরু করলাম। হাটছি আর পেছনে দেখছি মামাদের কি আবস্থা। তিন মাথা পার হয়ে যখন কলেজের কাছাকাছি এলাম সাথে সাথে ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে দৌড় দিলাম। এক দৌড়ে দেয়ালের পেছনে এসে দাড়ালাম।
ততক্ষণে সকাল হয়ে গেছে। উকি মেরে দেখি ৬টার সময়ের গার্ডের ডিউটি পরিবর্তন হচ্ছে। অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন গার্ড সাইকেলে চড়ে চলে যাবে। সে সাইকেলে ওঠার সাথে সাথে আমরা দেয়াল পেরিয়ে এক দৌড়ে হাউসে মেইন গেট দিয়ে ঢুকে সিড়ি দিয়েই তিনতলায় রুমে চলে এলাম। প্রায় ৩-৪ মিনিট পরে পিটির জন্য ফার্স্ট বেল দিল।
আমি ১০০ বারের উপরে(১১৮ বার) সফলভাবে কলেজ পালিয়েছি। কিন্তু ওই রাতে কলেজ পালিয়ে যে পরিমাণ থ্রীল বা অ্যাডভেঞ্চার হয়েছিল তা ছিল প্রচন্ড রোমাঞ্চকর…………………( চলতে থাকবে)
😀
আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।
নেট নষ্ট। তারপরে ও কিরাম করে জানি ফার্ষ্ট হয়ে গেলাম 😀
আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।
পুরা মাসুদ রানা।
এইটা তো কলেজ পালানো হলো না, কলেজের বাইরে থেকে পালিয়ে ভেতরে এসেছ বলে মনে হচ্ছে।
=)) =)) =)) =))
আজাদ ভাই ঠিক কইছেন :)) :))
:)) :))
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
😮 😮 😮
মাইনুল তোর হাউসের পোলাপান কি করতাছে দেখছছ?
আমি একবারো না 🙁
আমাদের কলেজে ক্লাসমেট দের মধ্যেই ইনফরমার ছিল, তাই কাউকেই খুব একটা বিশ্বাস করতে পারতাম না। পালানোর চিন্তা তাই ভুলেও মাথায় আনতাম না। আর কলেজের চারপাশের গাছ গুলো কেটে পুরা ফ্লাড লাইটের মত ফকফকা করে রাখা হয়েছিল, দশমাইল দূর থেকেও দেখা যাবে কেউ পালালে। 🙁
অফটপিকঃ
আমাদের একজন ক্লাসমেট কলেজ আউট হয়েছিল কলেজ পালানো সহ আরো কিছু কারণে, ইনফরমারের ফাঁসিয়ে দিয়েছিল প্রিফেক্টশীপের লোভে। ইলেভেন থেকে জ্বালাইছে সেই ইনফরমার। আমরা নাম দিয়েছিলাম রাজাকার।
অবশ্য ক্লাস টুয়েল্ভের শেষ কয়েকটা দিনে সেই ইনফরমার ধরা খাইছিল, সেই দিন থেকে সে বয়কট, বয়কট মানে সাধারণ বয়কট (অসহযোগ) নয়, কেউ তার সাথে কথা বলবে না, পরীক্ষায় বা অন্য কোন ভাবে হেল্প করবে না, কিন্তু টিজ করবে, প্রেপে মাথায় চক ছুঁড়ে মারবে, চেয়ারে চক দিয়ে দাগিয়ে রাখবে, চুইংগাম মাথায় লাগিয়ে দেয়া হবে, সিরিয়াসলি গণ দেয়া হবে প্রেপে কারেন্ট গেলেই, ডাইনিং এ তার কাবাব, সুপ, বার্গার সবকিছু ছিনতাই করে ব্যাচের ক্যাডেট নম্বর ওয়াইজ ভাগ হবে। পুরাটা ব্যাচ মিলে ওই একজন ইনফরমারের পিছনে লেগে তার লাইফ হেল করে দেয়া হয়েছিল, কারণ তার কারণে আমরা আমাদের একজন ব্যাচমেটকে হারিয়েছি কলেজ থেকে।
[ আমি বেশি কথা বলি 🙁 ]
আমাদের ব্যাচেও একজন 'রাজাকার' ছিলো। তারে ক্লাস টেন থেকে বয়কট করেছিলাম। আর টুয়েলভে এসে হাউস থেকে বের করে দিছিলাম, তখন সে থাকত কলেজ হাসপাতালে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
বেশি কথা কইলেও সত্যি কথা বলিস,আর উচিত কথা বলার একটা ঘাপলা।শত্রু মাঝে মাঝে বৃদ্ধি পায়।
আমাগো ভাগ্য ভালো আমরা রফিক কায়সারকে পাইনি 😀
আল্লাহ তোমাগো হেদায়েত দান করুক,যে তোমরা ওর মত মা**চো* কে পাওনাই।এই গালিটাও তার জন্য অনেক কম হয়ে যায়।
- বুঝলাম, ক্যাডেট কলেজ আর ক্যাডেট কলেজ নাই, মাদ্রাসা হয়া গেছে :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
😮 😮 😮 😮
"
মন্তব্য সম্পাদনা করতে পারলাম নাহ-----
এতদিলে টা এতদিনে**** হবে 😀
:)) :)) :))
:)) :)) :khekz: :khekz: বিন্দাসসসসসস :goragori:
"Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
- A Concerto Is a Conversation
ইনফরমার এর হাতে কলেজের স্মৃতি হারাইনাই বলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হইতেসে। কলেজ যে মাদ্রাসা হয়ে যাচ্ছে এটা আমরাও সারাজীবন ধরে শুনে আসলাম। =)) =)) =)) =)) =)) =))
ভাল ছিলো 😀
আমাদের ফর্ম মাস্টার ছিলেন ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক। একবার কি একটা প্রসঙ্গে আমাদের এক বন্ধু বলছিল ক্যাডেট কলেজ মাদ্রাসা হয়ে যাচ্ছে, শুনে স্যারের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল, বললেন মাদ্রাসা কি খারাপ নাকি?