দৌড়ে এসে আর এভাবে লাফ দিয়ে ভুঁড়ির উপর বসবি না। পিলে চমকে যাবে, ভুঁড়ি গলে যাবে।আরে এখন কি আর সেই বয়স আছে নাকি, দৌড়ে এসে লাফ দিয়ে ভুঁড়ির উপর বসে পরা! ওজন বেড়েছে,বড় হয়েছিশ্ না, তুইতো দিনে পঞ্চাশবার বলিস বয়স হয়েছে। আরে তোর বয়সে আমার মা তিন তিনটি সন্তানের মা হয়েছিলেন। ধাড়ী খুকী!
আরাম করে পেটের ওপর সেটেল হয়ে বসে প্রশ্নের ঝাঁপি খুলে দিল আমার রাজকুমারী। ‘পিলে কি? পিলে চমকে যায় কিভাবে?? চমকালে কি হয়???
আসলও একটা ধাক্কা খাই, নিজের মনেই প্রশ্ন করি, পিলে জানি কি? সম্ভবত ‘লিভারের’ বাংলা বা প্রাচীন শব্দ ‘পিলা’।কোন রকমে তোতলাতে তোতলাতে উত্তর দিলাম। কিন্তু এটা কিভাবে চমকে যায়,আদো চমকায় কিনা, চমকালে কি হয়, আমার সাধ্য নাই বলার। আসলে আমরা অনেক কিছু বলি, যা নিজেরাই জানিনা বা মিন করি না।
চাচী এসে রক্ষা করলেন এই যাত্রায়। নাম্ হতচ্ছারি বেচারার পেটের উপর থেকে।কেবলি জার্নি করে এসে একটু শুয়েছে,আর লাফিয়ে পড়েছে ওর উপর, ‘গুণ্ডি একটা’ !
“না নামবোনা, ওকে আগে বুঝিয়ে বলতে হবে,কিভাবে ও রসের খালি হাঁড়ি ফ্ল্যাগের রশির সাথে বেঁধে দিয়েছিল, আর খান জাহান আলীর বিউগেলের তালে তালে ঐ রসের খালি হাঁড়ি ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড এর চূড়ায় উঠে গেল, পতাকার পরিবর্তে? আর এই বাঁদর গুলিও কি সব স্যলিউট করেছিল রসের হাঁড়িকে ফ্ল্যগের পরিবর্তে?? আমি আমার বান্ধবীদের সাথে গল্প করার সময় ঠিকমত বুঝিয়ে বলতে পারিনি!
চাচী আমার দিকে ব্লাঙ্ক লুক দিয়ে বসে পরলেন কিছুই না বুঝে! ব্যাপারটা ও যেভাবে বলল, যেন গত কালের ঘটে যাওয়া ঘটনা!
ক্যাডেট কলেজের প্রতি দিনের ঘটনা আমার রাজকুমারীর মুখস্ত, যেন ঐগুলি ওরই জিবনে ঘটেছিল!
এই প্রসঙ্গ থেকে সরে আসার এক মাত্র রাস্তা হোল খাবার বিষয়ক গল্প।
আচ্ছা জানিস, এবার সিঙ্গাপুরে কি হয়েছে? “মোস্তফার’ দোকানের পাশে, ‘ফখরুদ্দিনের বিরয়ানীর’ একটা দোকান খুলেছে।এক সিঙ্গাপুরিয়ান কে নিয়ে গেলাম মুখ বড় করে ‘মোঘলাই খানা’ খাওয়াতে।অনেক চাপাবাজী করেছিলাম এই ফখরুদ্দিন বাবুর্চি নিয়ে।
আল্লাহ্ বাঁচিয়েছে, দোকানের দেয়ালে বড় বড় সব ছবি বাঁধানো।জর্ডানের বাদশাহ হোসেনের ছেলের বিয়েতে ফখরুদ্দীন বাবুর্চির রান্নার ছবি, বাদশাহের হাত থেকে সার্টিফিকেট নেয়ার ছবি, নিচে সংক্ষেপে সব ইতিহাস।বুঝলি, ইজ্জৎতো বাঁচলো, কিন্তু খাবার একদম থার্ড কেলাশ!! এত তেল ওয়ালা বিরয়ানী আমি জীবনেও খাইনি!
ডাগর ডাগর চোখে চেয়ে থেকে, পা দুলিয়ে তিনি সব শুনলেন।শেষে মাথা নেড়ে বেণী দুলিয়ে প্রশ্ন করলেনঃ “রসের খালি হাড়ি উপরে তুলার টেকনিকটা “?? বুঝলাম নিজেকে যত বুদ্ধিমানই ভাবিনা কেন এই পুঁচকের কাছে হেরে গেছি সবসময়ের মত।
নিজের অনুজর কাছে হেরে যাওয়ার যে কি আনন্দের!
পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দময় মুহূর্ত গুলির একটি পেয়েছিল প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আউব খানের বাবা।ও ছিলেন নন কমিশনড অফিসার “রিসালদার”। জেনারেল আউব খান বাবার ইউনিট পরিদর্শনে গেলে, বাবা বুক ফুলিয়ে ছেলেকে স্যলিউট করছিলেন,দু চোখ বেয়ে পরছিল আশ্রু।
সাংবাদিকরা চোখে পানি দেখে ভেবেছিল, এটা বুঝি এক বাবার ‘অক্ষমতার’,’বেইজ্জতের’ আশ্রু! কিন্তু এ প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে পৃথিবী জানলো, এ অশ্রু নিজের হাতে গড়া ‘ছোট্ট সেই মানুশটার’ কাছে হেরে যাওয়ার আনন্দশ্রু!
এ অশ্রু ভালবাসার!
(চলবে)
আজিজ ভাই,
এই সিরিজের প্রথম লেখাটার কমেন্টের উত্তরে বলি: মুচমুচে মানে ব্যাপক সুস্বাদু হয়েছে লেখাটা। এ পর্বটাও তেমন হয়েছে।
পিলে মানে হচ্ছে প্লীহা বা spleen। লিভার শরীরের ডান পাশে থাকে, পিলে বাঁ পাশে।তবে 'পিলে চমকানো' কথাটা কি করে এলো আমার জানা নেই।
খান জাহান আলী ভাই দুনিয়া থেকে চলে গেছেন অনেকদিন হলো। আমরা পেয়েছিলাম। মাটির মানুষ ছিলেন একেবারে।
ধন্যবাদ। লিখা ভাল লাগার জন্যে।
ধন্যবাদ। প্লীহার ব্যাপারে সঠিক তথ্য সরবরাহ করার জন্যে।
ধন্যবাদ। সবসময় আমাকে আকুন্ঠ সাপোর্ট দেবার জন্যে।
খান জাহান আলী ভাই এর 'বিউগেল' আমার কানে এখনো মধু বর্ষণ করে। আল্লাহ্ ওঁকে জান্নাতবাসি করুন।
Smile n live, help let others do!
ভাই ভালো হচ্ছে... চালিয়ে যান।
ভাই শিশির, শীতকালে তুমি বেশি বেশি পরছ এবং পড়ছ মনে হচ্ছে ! :))
Smile n live, help let others do!
আজিজ ভাই, ভাবতেসি আপাতত এই পড়া বাদ। :-B কারণ এই পড়া পড়তে থাকলে আমি সত্যিই পড়ে যাবো......। ~x( 😮 :pira:
"শিশির বিহীন শীতকাল, হয় কখনো?ভাই তুমি 'পরতে'ও থাক,'পড়তে'ও থাক। তারচেয়ে বেশি "ভাল থাক" এই কামনা করছি! (সম্পাদিত)
Smile n live, help let others do!
ধন্যবাদ ভাই ::salute::
ভালবাসা সিরিজটা জম্পেশ হচ্ছে। :boss:
ভালবাসাটা আসলেই জম্পেশ ব্যাপার। 'দিল ওয়ালে কে লিয়ে' ।তোমার ভাল লাগছে বলে আমি খুশি। ধন্যবাদ ভাই।
Smile n live, help let others do!
আজিজ ভাই, একটা কথা না বলে পারছিনা, আপনার এখনকার লেখাগুলো অনেক গুছানো। :hatsoff:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ভাই, মশা মারতে মারতে কি খুনি হয়ে যাচ্ছি? আল্লাহ মালুম! ;;;
দোয়া কামনা করছি - আজিজ
Smile n live, help let others do!
ভালবাসাটা আসলেই জম্পেশ ব্যাপার। লাইক
এই জম্পেশ ব্যাপারটা আদি পিতা মাতা প্রথম আবিস্কার করেছিলেন। "বিরহ" ও ওঁরাই প্রথম অনুভব করলেন স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হয়ে। একজন সিংহলে (in central Sri Lanka,well known as the Sri Pada "sacred footprint", a 1.8 metres (5 ft 11 in) rock formation near the summit it is held to be the footprint of the Adam believed in Muslim and Christian tradition.[1]
আরেকজন যোজন যোজন দূরে গহীন আফ্রিকায় অবতীর্ণ হয়ে।
"আরাফাত" বা ' মিলনের প্রান্তরে ' শত বছর পর পুনর্মিলনের মাধ্যমে আবার তাদের 'ভালবাসা' পূর্ণতা পায়।
Smile n live, help let others do!
জম্পেশ :clap:
ধন্যবাদ রেজয়ান, by the way, U look exactly like 'young General Abedin', who was my long time room mate in fazlul Haque House FCC! (in 1972~77) ভাল থাক! শুভ কামনায়।-আজিজ ভাই
Smile n live, help let others do!