আরও একবার-
লেখাগুলোর উপর হাত বুলোই,
নিস্প্রান এই লেখাগুলো এত সজীব কেন?
কি মায়ায় এরা আমাকে ডাকে-
বারেবার; জানিনা।
মাঝে মাঝে প্রশ্ন করে
কখনও বা উপদেশ, আবার হঠাৎ হঠাৎ –
খুচরো কিছু ভালোবাসার আবেশ।
খাটের পাশে রাখা গিটারটা তুলে নেই
“টুং টাং” কিছু অচেনা সুর –
নিজের অজান্তেই বেজে ওঠে।
অকস্মাৎ চেতনা ফিরে পাই,
কে যেন বলে, ”গিটারে তো সুর নেই”
আমি ভাবি- তারটাই হয়ত ছেড়া।
কখনো কখনো নিজের অজান্তেই জাগ্রত হয়-
সুপ্ত কবি মন,
খাতায় লিখে ফেলা দু’চারটে লাইন-
“কেন তার নির্ঘুম ছুটে চলা আমার শয়নে,
কল্পনায় ভেসে চলা অস্ফুট লাবন্যে,
প্রতিক্ষনে দু’টি কানে তার নুপূরের ঝংকার
উদগ্রীব দৃষ্টির সীমানায় তাকে খোঁজার হাহাকার”
কিন্তু হঠাৎ কলম থমকে যায়,
মনে শুধুই ঘুরতে থাকে –
“তেলাপোকা কেন উল্টো হয়েই মরে?”
আবার আনমনা হয়ে যাই।
বৃষ্টি দেখেও দেখিনা,মেঘেরাও আর আমায় ডাকেনা
রুমের কোণে হঠাৎ দেখতে পাওয়া তেলাপোকা
-টানে আমায়।
ইচ্ছে হয় বলি,”কেন তোমার এহেন উল্টো মরণ?
কি যন্ত্রনা তোমার সোজা হয়ে মরিতে?”
তেলাপোকা তবু নির্বাক
হয়ত হাসে; কৌতুহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ,
অথবা বলে, ”উল্টো হয়ে মরার যে তৃপ্তি
বুঝবে না সে, উল্টো হয়ে কভু মরেনি যে।“
আমার চেতনাকে আচ্ছাদিত করে রাখে এই প্রাণী
হিংসে হয়,
আমার প্রিয়জনের চিন্তায় কেবল আরশোলাই সাথী,
আমার স্থান সেথায় নেই।
আবার ভাবতে বসি-
লোডশেডিং এর আলোয়
রাতের আঁধারে।
একদিন ফাঁক পেয়ে ছুটে যাই তার কাছে
হাতে ধরে দু’চারটে গোলাপের কলি
রাজকন্যে হাসে
তারপর জিজ্ঞেস করে
নাহ! কোন কুশলাদি নয়;
তার জিজ্ঞাস্য সেই পুরনো প্রশ্ন খানি
“তেলাপোকা কেন উল্টো হয়ে মরে?”
কি বলার আছে আমার?
আমি হাসি।
ইচ্ছে হয় বলি-
“হায় সেলুকাস!!
কি বিচিত্র আমার প্রশ্নকর্তা।”
এমন অবান্তর প্রশ্ন শোনার জন্যই কি আবার
ছুটে আসতে হয়েছে আমার; কোন সূদূর হতে?
পরক্ষনেই ভাবি,
এই হয়ত সৃষ্টিশীলতা ,
সৃজনশীল মনভাবের বহিঃপ্রকাশ
জাফর ইকবালের বক্তৃতার ফল বুঝি –
দেশ এবার সত্যিই পেল।
সবার মনে আলোড়ন তুলে
মাধ্যমিক পরিক্ষায় হয়ত স্থান হবে এই প্রশ্নের-
“তেলাপোকা কেন উল্টো হয়ে মরে?”
কবি-সাহিত্যিকেরাও হয়ত একদিন –
বের হবেন এই প্রশ্নের সন্ধানে,
শামসুর রহমান হয়ত লিখে বসবেন-
“আরশোলা তুমি”
বইমেলায় হয়তবা সেরা বই হবে-
“হিমু ও কয়েকটি তেলাপোকা”
সুকুমার রায়ের কোন বংশধর লিখবে-
“বলতে পার –
সুয্যি কেন ওঠে? জোয়ার কেন আসে?
চাঁদটা কেন কমে-বাড়ে?
আর আরশোলা কেনই বা উলটে মরে?
বাসে বাসে বিক্রি হবে-
“তেলাপোকা সোজা করে মারার দশটি উপায়।”
এলাকার মোল্লারা ফতোয়া দিয়ে বসবেন-
“তেলাপোকা সোজা করে মারা নাজায়েজ”
নেতা-নেত্রীরাও অঙ্গিকার করে বসবেন-
তারা ক্ষমতায় গেলে কোন তেলাপোকাই উল্টো হয়ে মরবে না।
স্কুলেও হয়ত “c for cat“ না বলে
প্রথমেই পড়ানো হবে- “c for cockroach“
পোষা বিড়াল-কুকুরের মত, অনেকেই পুষবে তেলাপোকা
এফডিসিতেও তৈরি হবে-
”এক টাকার ঝাটা, কোটি টাকার তেলাপোকা”
তখন হয়ত তুমি সত্যিই খুশি হবে
পেয়ে যাবে তোমার পুরনো প্রশ্নের জবাব।
সেইসব গল্প-কবিতা তোমায় শোনাব –
কোন এক গাছের ছায়ায়, নির্জনে।
তখন কি হবে?
তোমার কৌতুহল কি দমে যাবে?
না’কি জেগে উঠবে আরও নানান উদ্ভট সব প্রশ্ন?
“ঘুমালে কেন কেউ দেখেনা চোখে?
আহারের পর কেন লাগেনা ক্ষুধা?
জেব্রা কেন হলনা ঘোড়া?
কেনই বা কান টানলে আসে মাথা?
কিংবা…………
কেন ভালোবাসি শুধুই তোমাকে?”
তুমি শুধু জানতে চেয়েছ রাজকন্যে
বুঝতে চাওনি কভু-
প্রশ্ন আছে এমন , কোন উত্তর যার নেই
আবার কিছু প্রশ্ন এমন –
যার উত্তর দিতে নেই।।
:clap:
ব্যপক মজা পেলাম। চলুক
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
অনেক ভালো লাগলো।
:just: :hatsoff:
ভালো থাকা অনেক সহজ।
আবার কিছু প্রশ্ন এমন –
যার উত্তর দিতে নেই।।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
afza apuu ami apnar onek boro fan apnar lekha pori...... apni amar lekha porechen dekhe valo laglo...
আইডিয়াটা ভাল ছিল ভাই।