ফ্ল্যাশ ফিকশন বা অনুগল্পের সাথে আমার পরিচয় আরনেস্ট হেমিংয়ের হাত ধরে।তার সেই বিখ্যাত “For sale: baby shoes; never worn” – মাধ্যমে। এমন একটি মাস্টার ক্লাস দিয়ে সাহিত্যের এই শাখায় আমার অবতারনা হলেও গভীরের স্বাদ আমি সঠিকভাবে এখনো আস্বাদন করতে পারিনি। প্রথমত,সংখ্যার এর অপ্রতুলতা যা বাংলাসাহিত্যে একে বারেই নগন্য। দ্বিতীয়ত, ছোট গল্পের সাথে তার সংমিশ্রণ। ছোট গল্পের সাথে সংমিশ্রণ এই জন্য বলছি, অনুগল্পের সঠিক আকার নিয়ে আসলেই আমি এখনো দ্বীধাগ্রস্ত। আমেরিকার মাইক্রোফিকশন ম্যাগাজিন মানডের সম্পাদক গেইল টাওয়েল মাইক্রো ফিকশনের শব্দ সংখ্যা কোন ভাবেই একশত এর বেশী বাড়াতে নারাজ। আজকের দিনে অনুগল্প ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে বেশ জনপ্রিয় হলেও মানসম্মত লেখার সংখ্যা একেবারেই কম বলে ধারনা টাওয়েলের।
উপন্যাস যদি হয় টেস্ট ক্রিকেট,তবে ছোটগল্প ওয়ানডে এবং হালের জুগের টি২০-ই অনুগল্প।আরও স্ফেসিফিক হলে সিক্স এ সাইড বলাও যেতে পারে। অনুগল্পের শব্দ সংখ্যা কত সেটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনেহয়, কত কম শব্দে মনের ভাবকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা যায়।কিছুটা বিজলীর মতন, চোখের পলকেই আসন্ন আবহাওয়াকে জানান দেয়া।পাঠকের ভাবনার জগতকে প্রসারিত করা।
রবিঠাকুরও বাংলাসাহিত্যে এই ধারানিয়ে কোথাও লিখেন নাই। প্রথমবারের মত অনুগল্প বাংলাসাহিত্যে ব্যবহার করা হয় তার মৃত্যুর পর হাংরি জেনারেশনের কবিদের আন্দোলনের ইশতিহারের ছাপা একপাতার লিফলেট গুলোতে।বাংলা সাহিত্যের আরেক পথিকৃৎ বনফুলের কিছু ছোট গল্পকে অনুগল্প হিসেবে বিবেচনা করা গেলেও সেগুলো আমাদের কাছে ছোটগল্প হিসেবেই বিবেচিত।
রবিঠাকুরের “হটাৎ দেখা’’ কবিতাটি পড়ার সময় শেষ অংশের “আমাদের গেছে যে দিন একেবারেই কি গেছে?কিছুই কি নেই বাকি?// একটুকু রইলেম চুপকরে,তারপর বল্লেম,রাতের সব তারাই আছে দিনের আলোর গভীরে।’’ –এই দুই লাইনে এসে আমার মনে হলো এটাইতো একটা অনুগল্প হতে পারতো …।।
পুনশ্চঃ কাঁচা হাতে কয়েকটি অনুগল্প লেখার চেষ্টা করলাম।পড়ার সুবিধার কথা মাথায় রেখে ইমেজ আকারে দিলাম।ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশাকরি।
১৮ টি মন্তব্য : “অনুগল্প (প্রচেষ্টা মাত্র)”
মন্তব্য করুন
১।
হঠাৎ দেখা সম্পর্কিত ভাবনা মিলে গেল। :thumbup:
২।
হ্যাশট্যাগযুক্ত শব্দগুলো কি শিরোনাম? 😕
এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...
ইশহাদ ভাই,
পড়ার ও মন্তব্যের জন্য আগে ধন্যবাদ জানাই 🙂
হটাৎ দেখা পড়ার পর শেষ অংশটুকুই সবচেয়ে মনে ধরে ছিলো। প্রায় শিমুল মোস্তফার কন্ঠে আবৃতিটাও শুনি।এই অংশটুকুই সবচেয়ে ভালো লাগে। অপনার সাথে ভাবনাগুলো মিলেছে শুনে ভালো লাগলো।
আমি হ্যাশযুক্ত করে শিরোনাম দেয়ার চেষ্টা করেছি।যদিও অনুগল্পে শিরোনামের ব্যাপারে আমি নিজেই সন্দিহান :dreamy:
তানভীর আহমেদ
আমিও B-)
এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...
🙂
চেষ্টায় আছি....জানার জন্য।
সার্চলাইট জ্বালায়ে শুরু করছি, ইশি ভাই :-B
তানভীর আহমেদ
🙂 🙂 🙂 🙂 🙂 🙂
তানভীর, ভাইয়া তোর লেখার হাতটি ভাল; একটানে পড়ে ফেলা যায়। লেখার সাথে সাথে তোর পড়াশুনোর পরিধিও যে কম নয় বুঝতে পারছি। অণু গল্প লিখতে থাক, ভাইয়া।
তোর জন্য আমার লেখা পুরনো একটি অণু ব্লগ পাঠালামঃ
পশ্চিমে নিঘর্ুম রাত, পূবর্ে কাজলচোখে জল!
আশাকরি ভাল আছিস। আমার ভালবাসা জানবি।
"পশ্চিমে নির্ঘুম রাত, পুর্বে কাজলচোখে জল!"- আপু, অপূর্ব সুন্দর!!! :boss: :boss: :boss:
সত্যি, তোমার যেকোনো লেখা পড়তেই আনন্দ।
আমি চেষ্টা করেছি মাত্র। তোমার মন্তব্যে আমি সর্বদা অনুপ্রেরণা পাই।
পড়তে ভীষণ ভালোবাসি, আপু।সামনে যাপাই পড়েফেলার চেষ্টা করি।পড়ার তৃষা, আছে বলেই হয়ত এখনো একাকিত্বটাকে অনুভব করি না।
তুমি,ভালো আছো তো????? ভালো থাকা হয় যেন..... 🙂
তানভীর আহমেদ
ভালো থাকা হয় যেন..... 🙂 (সম্পাদিত)
বড়ই জটিল জিনিষ।
যতটা না ভাবনার খোরাক জোগান দেয়ার মত একটা দৃশ্যকল্প তৈরীতে, তারচেয়ে ঢের বেশি এত অল্প কথায় পাঠকের পাঠাগ্রহ তৈরীতে, মনরঞ্জনে।
যেকোনো লিখার এসিড টেস্ট তো সেটাই, "পাঠক যেন তা পড়তে বাধ্য হয়। আর পড়ে শেষ করার পরেও তা যেন ছুঁয়ে থাকে কিছুটা সময়"।
সাবিনার "অনুব্লগ" তো বটেই, তোমার বেশ ক'টি লিখাও আমার চোখে এই শর্ত পুরনকারী বলেই মনে হলো......
এবার আমার পালা একটা অনুগল্প প্রচেষ্টার।
==========================
একসাথে ঢোকার সময় ফ্রেমে বাধানো লিখাটা চোখে পড়েছিল।
কিচ্ছু মনে হয় নাই তখন।
একাকি বেরুবার সময় আবার চোখ পড়লো তাতে :
"আমি যারে ভালবাসি, / সেকি কভু আমা হতে / দূরে যেতে পারে?
একটি দীর্ঘশ্বাস গোপন করতে গিয়ে বেরিয়ে এলো - "পারে!!!" (৩৯ শব্দ) (সম্পাদিত)
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
প্রথমেই আপনার সুচিন্তিত ও বিশ্লেষণধর্মী মতামতের জন্য ধন্যবাদ জানাই, পারভেজ ভাই। 🙂
যেকোনো লেখা পড়ার পর যদি মনের জানালায় একটুকুন নাড়ানা দেয় তাহলে পাঠকের মনে সত্যই অতৃপ্তি স্থাননেয়।তবে অনুগল্পের ধরন যেহেতু ছোট গল্পের ন্যায় সেহেতু শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ আবেশই পাঠকের মনের জানালায় ধরা দেয়।অনুগল্পের মাধ্যমে আর একটা ব্যাপার খুব মজার সেটি লেখক ও পাঠকের মাঝে আত্মিক সম্পর্ক স্থাপন....... ভাবনার জগতে আলোড়ন!!!
আপনার অনুগল্প আমার মনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।লেখা হিসেবে চাই সামনের দিনগুলোতে।
"পাঠক যেন তা পড়তে বাধ্য হয়। আর পড়ে শেষ করার পরেও তা যেন ছুঁয়ে থাকে কিছুটা সময়"
পুরোপুরিভাবে সহমত পোষণ করছি।
ভালো আছেন নিঃশ্চই???? (সম্পাদিত)
তানভীর আহমেদ
ভাল লেগেছে । এগুলো অনুগল্প নয়, কবিতা ।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
অনেক কবিতার মধ্যেই গল্প থাকে।
আবার মধ্যে না থাকলেও পিছনে তো প্রায়ই থাকে।
সেই অর্থে অনুগল্প আর কবিতার মধ্যে পার্থক্য খুবই সামান্য।
সম্ভবত পার্থক্যটা মূলত গঠনে...
কবিতার গঠনটা হতে হয় কিছুটা সশব্দে পাঠ-বান্ধব। আবৃত্তি-উপোযোগি।
এজন্য কোন এক ধরনের ব্যালান্স বা ছন্দবিন্যাস থাকাটা জরুরী হয়ে পড়ে
অনুগল্পে সেই বাধ্যবাধকতা নাই। এটা মূলত মনে মনে পড়ার জিনিষ।
আমার বুঝ এরকমই......
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:hatsoff: :boss:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
মোস্তাফিজ ভাই, কবিতা...... :no: ????!!!
ভাই, কবিতা অনেকবড়, ও আমাকে দিয়ে হবে না।
ছোট বেলায় কিছুলিখেছিলাম কলেজ সাহিত্য পত্রিকা "আলেখ্য" আর "অভিযাত্রিক " -এ। এখন ভয় পাই লিখতে তবে পড়ে আনন্দ পাই।
তানভীর আহমেদ
অণুগল্প নিয়ে আমার অনেক আশাবাদ। এইটুকুনি কথার পেটে আস্ত একটা কাহিনীকে আঁটিয়ে আনা একটা বিরাট শিল্প অস্বীকার করার জো নেই।
ভাবছি অণুগানও কি হতে পারে না? আমার শেষেরটা ভালো লেগেছে সবচে'।
স্লাইডের মত করে দেয়াতে প্রাচীন আমি রস আস্বাদনে ব্যর্থ হলাম। টিপিক্যাল ছাপার হরফে হলে হয়তো কিছুটা নিরপেক্ষ থাকা যেত।
প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক। জোরেসোরে
:thumbup:
স্লাইড আমারো চোখে লাগছে। পুরো স্বাদ নিতে পারছি না। আলাদা ভাবে এক দুই তিন শিরোনাম দিয়ে টেক্সটও যোগ করলে ভাল হবে তানভীর।
অফটপিকঃ রোমিও র আগের। চিহ্ন মুছে দিও
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
নূপুর দা, আপনার মন্তব্যে এই অধম অনুপ্রাণিত 🙂
অণুগান ব্যাপারটা আগে মাথায় আসেনি....হতে পারে আর আমার মতে আপনিই হতে পারেন পথপ্রদর্শক। আশায় থাকলাম।
স্লাইড আকারে দিয়েছিলাম দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য....
প্রচেষ্টাও থাকবে.... 🙂
তানভীর আহমেদ
সময় যেদিকে এগোচ্ছে সেদিকে ম্যাক্সি মিডির দিন সরু হয়ে এসেছে। সবার জন্যে কথাটা সর্বাংশে সত্যি না হলেও সাধারণের হিসাবটা এমনই।
লাইফ ম্যাগাজিন ছাপা বন্ধ হয়েছে যেমন হয়েছে আমাদের সাপ্তাহিক ২০০০। মানি আর না মানি এগুলো বিবর্তনের ধাপ। দিন আসছে মানুষ পড়বার বিষয়টাকে শোনবার মোড়কে চাইবে। পড়বার সময় আর কসরৎ এ দুটো থেকে বাঁচবার সাধে।
এই পরিবর্তনের ধাপ ধরে ঘিরিংগি বা প্যাঁচগি শব্দ যেমন আমাদের ভাষায় অনুপ্রবেশ করেছে তেমনি OMG IDK এসব টার্ম লেখার ব্যবহার থেকে কথ্যচর্চায় ঢুকলো বলে।
এতোক্ষণ যা বললাম তা অনুগল্পের জন্য সুখকর বা ইতিবাচক পর্যবেক্ষণ বলে বিবেচিত নাও হতে পারে। তবে আরো কথা এই যে অল্প কথায় অনেক কথার প্যাঁচ কষবার মুনিশিয়ানা খুব একটা সহজ সাধ্য ব্যপার নিশ্চিত নয়।
প্রয়াস প্রসংশনীয়। ভালো লেগেছে। আর হ্যাঁ আমি নূপুরের কথার ডিটো মারলাম। স্লাইড বদলে এমনিতেই দিলে আরো ভালো লাগতো।
লুৎফুর ভাই, আমি আপনার মন্তব্যটা খুব ভালো করে পড়লাম দুবার। আপনি যে পরিবর্তনের কথা বলেছেন তা মাথায় নিলাম। আবার মনে হলো যেকোন সাহিত্যে সমাজ, আচার, সময় চলে আসে।কিন্তু ব্যাপার হচ্ছে সঠিকভাবে সেটার ব্যবহার কেমন হচ্ছে।
আমার কাছে আপনার মন্তব্য নিঃশ্চই পরমপাওয়া।
গঠনমূলক সমালোচনা না করলে যে গাধাই থেকে যাবো আজীবন।
পরের লেখাটায় আর স্লাইড আকারে দিচ্ছি না।
দোয়াপ্রার্থী।
তানভীর আহমেদ