“শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে, রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন”
সকালে ঘুম থেকে উঠেই নির্মলেন্দু গুণের ‘স্বাধীনতা শব্দটি কি করে আমাদের হলো’ কবিতার অসাধারণ লাইনটা মাথায় কড়া নেড়ে যাচ্ছে ক্রমাগত………
কী বিপুল, কী বিশাল একজন ব্যক্তিত্ত্ব…….এমন একজন মানুষকে হত্যা করা যায় এমনই নিষ্ঠুরভাবে…….
আবার ভাবি শহীদ তাজউদ্দীনের সেই উক্তি, “(বাকশাল করে) আপনি নিজেকে সরানোর জন্য এক বুলেট ছাড়া আর কোন পথ রাখলেন না।”……কেন এত বৈপরিত্য দেখা দিল মাত্র সাড়ে তিন বছরেই???
স্বাধীনচেতা বাঙ্গালি নাকি কখনোই স্বাধীন ছিলনা……ছিলনা কোনদিন একটা রাষ্ট্রপরিচালনার অভিজ্ঞতা…….অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ভাষ্যমতে, বাঙ্গালি অভিজ্ঞ বড়জোড় গ্রামের মোড়লগিরি করে, ছোটখাটো জমিদারগিরি করে আর অনেক পরে এসে ভিনদেশী প্রভুরূপী শাসকদের আমলাগিরি করে……..
পুরো ফাঁকা কোষাগার, বিপুল ধ্বংসস্তুপ, সেইসাথে ইমম্যাচিউরড (‘৭১-এর মেজররা ‘৭৫-এই মেজর জেনারেল!!), কিছু ক্ষেত্রে অদক্ষ্, স্বাধীনতার সাথে যে দায়িত্ববোধ আসে সে বিষয় সন্মন্ধে একেবারেই অজ্ঞ, নানান টাইপ ধান্দাবাজ (এরাই ক্ষতিটা বোধ হয় বেশী করেছে) আর ‘কনফিউসিং’ মানুষগুলোর হাতে শুরু হয়েছিল স্বাধীন দেশটার পথচলা……..বোনাস হিসেবে ছিল আমাদের অসহিষ্ণু তরুণ সম্প্রদায়, লুকিয়ে ওৎ পেতে থাকা স্বাধীনতাবিরোধীগোষ্ঠি, স্নায়ুযুদ্ধের রথি-মহারথিরা, আমাদের ‘বড়ভাই’-মানসিকতার প্রতিবেশী ভারত…….আরো কত কত উপাদান……
স্বাধীনতার পরের সরকারের এই ব্যর্থতার দায়ভার তাই শুধু একজন শেখ মুজিবের নয়, তা সম্মিলিতভাবে সকলের………
আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, পুরো পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার পেছনে সরকারের ব্যর্থতাকে কি কারণ হিসেবে দেখানো আদৌ যৌক্তিক???
কাল মামলার চূড়ান্ত রায়, কিন্তু হায়!! এই রায়ের মধ্য দিয়ে আমাদের দায় মিটবে না…….কারণ এই বিচারটাও আসলে পলিটিকালি মোটিভেটেড……এখানে হবেনা ষড়যন্ত্রের উন্মোচন…….
তাহলে কি এর গুরুত্ত্ব??? আমার কাছে মনে হয়, গুরুত্ত্ব এখানেই যে, অন্তত আত্মস্বীকৃত খুনিদের শাস্তিটা হয়তো হবে………
ইতিহাসের দায় হয়তো পূরণ হবেনা, কিন্তু যাদের হাত এতটুকু কাঁপেনি এমন নিষ্ঠুর একটা কাজ করতে গিয়ে, সেই অমানুষকুলের কয়েকজনের চূড়ান্ত শাস্তিটা হওয়ার সুযোগটাতো করে দিয়েছে এই বিচার-প্রক্রিয়া!!!!
:clap:
ওয়েলডান!!
হুমমম.... :thumbup:
রশিদ ভাই,আরেকটু লিখতেন! খুব সুস্বাদু কোন খাদ্য গ্রাস নেবার সাথে সাথেই থালা খালি হয়ে গেলে যে অনুভুতি হয় আমার সেরকম হচ্ছে এই লেখাটি পড়ে...
আসলে এধরণের লেখা লিখতে বেশ ধৈর্য দরকার......সেটা ঠিক হয়ে ওঠেনা সবসময়.......লিখতে খুব মন চাইছিল, তাই এক বসাতেই শেষ করেছি.......আরেকটু সময় নিয়ে লিখলে হয়ত ভালো হতো.......
কাল মামলার চূড়ান্ত রায়, কিন্তু হায়!! এই রায়ের মধ্য দিয়ে আমাদের দায় মিটবে না…….কারণ এই বিচারটাও আসলে পলিটিকালি মোটিভেটেড……এখানে হবেনা ষড়যন্ত্রের উন্মোচন…….
---
এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই.
হুমমমম
লেখা খুব সুন্দর হয়েছে, বন্ধু..... আমি মাসরুফ এর সাথে এক মত
থ্যাংকস.......কী খবর তোর??
অল্প কথায় ভালো লিখেছো রশিদ। কাল ষড়যন্ত্রের উম্মোচন হচ্ছে না। হচ্ছে হত্যার বিচার। ষড়যন্ত্র উম্মোচন অনেক কঠিন কাজ। দীর্ঘ অনুসন্ধান, গবেষণা, শ্রম, আন্তরিকতা এবং একই সঙ্গে অনুকূল সময় এসব কিছুকে হিসেবে নিতে হবে। আপাততঃ পাপমোচন হোক। আর অনুসন্ধান, না হয় ইতিহাসের কাছে থাক। সেখানে তোমার-আমার, আমাদের সবার দায় আছে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য.......
আশা করি ইতিহাসের দায়মোচনে আমরাও শরিক হতে পারবো......
এখন অপেক্ষা এই রায় কার্যকরের জন্য।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
এখন অপেক্ষা এই রায় কার্যকরের জন্য.........একমত
একটু আগেই চূড়ান্ত রায় ঘোষিত হল। আসামীদের আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে সুপ্রীম কোর্ট।
জাতির জনকের সপরিবারে হত্যাকান্ডের বিচারে প্রায় ৩৪টা বছর লেগে গেল। কার্যকর হতে কতদিন লাগে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
কার্যকর হতে খুব বেশী সময় আশা করি লাগবে না.......তবে তাড়াহুড়া করা যাতে না হয়.......