…………………… Everest was the embodiment of the physical forces of the world. Against it Mallory had to pit the spirit of man. He could see the joy in the faces of his comrades if he succeeded. He could imagine the thrill his success would cause among all fellow mountaineers; the credit it would bring to his country; the interest all over the world; the name it would bring him; the enduring satisfaction to himself that he had made his life worthwhile……..Perhaps he never exactly formulated it, yet in his mind must have been present the idea of “All or nothing”. Of the two alternatives, to turn back a third time, or to die, the latter was for Mallory probably the easier. The agony of the first would be more than he as a man, as a mountaineer, and as an artist, could endure.
————————–Sir Francis younghusband in The Epic of Mount Everest
এভারেস্ট নামের সাথে পুরোপুরি জড়িয়ে যাওয়া এই পর্বতারোহীর কাহিনী আমাকে এডমুন্ড হিলারীর গল্প থেকেও বেশি টানে। কেন জানিনা, ভাবতে খুব ভাল লাগে যে মৃতুর আগে স্যার জর্জ ম্যালরী সামিটে উঠতে পেরেছিলেন। উল্লেখ্য যে, স্যার জর্জ ম্যালরী এভারেস্ট অভিযানের প্রথম তিন টাতেই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং ১৯২৪ সালের অভিযানে আরেক পর্বতারোহী আন্দ্রে আরউইন এর সাথে সামিট থেকে মাত্র কয়েকশো মিটার দূরে নিখোজ হন। তারা ওখানে পৌছাতে পেরেছিলেন কিনা তা এখনো পৃথিবীর বড় আমিমাংসিত রহস্যগুলোর একটি। ৭৫ বছর পর ম্যালরীর মৃতদেহ ১৯৯৯ সালে খুজে পায় একটি দল এবং এমন অনেক আলামত আছে যা ইঙ্গিত করে যে হয়ত এভারেস্টের বুকে পা রাখা প্রথম ব্যক্তি হিলারী নন। একজন পর্বতারোহীর সবচাইতে বড় দুর্বলতা খুবই ironic একটা ব্যপার। আশেপাশের সবার কথা অগ্রাহ্য করে পর্বত অভিযানে আসা মানুষগুলোর দুর্বলতা ultimately তার একরোখা স্বভাব এবং লক্ষ্য। বৈষয়িক দৃষ্টিতে পর্বতারোহোণের কোন মূল্য নেই, এ কারণেই হয়ত যে কোন ধরনের ব্যর্থতা একজন পর্বতারোহীর কাছে একদমই অগ্রহণযোগ্য। এবং তাদের একরোখা মনোভাবের একটা বড় কারণও তাই। যে কোন লক্ষ্যে সফল হওয়ার চাপটা এজন্য আর সবকিছু থেকে বেশি।
২৭-১১-০৯
৯০০০ ফূট উচচতার বাক্ষিম অসম্ভব ঠান্ডা । এমন না যে আমরা বরফের খুব কাছাকাছি কিন্তু জায়গাটা মূলত valley এর ভেতরে হওয়ায় এখানে দিনের বেলায়ও সূর্যের আলো আসে না। তবে এখানে সিক্কিম গভমেন্টের বানিয়ে দেয়া একটা হাট এবং কিচেন থাকায় আমাদের আর টেন্ট এ থাকা লাগলো না। নিচের তলায় ২ টি বড় রুমে আমরা বেসিক ২৭৫ কোর্সের ৫৬ জন, উপরে এয়ার ফোর্স এর স্পেশাল কোর্স এবং বাইরে তাবু করে থাকলো ITBP (ইন্ডিয়ান তিবেত বরডার পুলিশ) এর কোর্স। ওই যে বলেছিলাম দেবাশীষ, ওর কারণেই আমি এবং পারভেজ খুব ভাল একটা জায়গা পেয়ে গেলাম, মানে একটি ম্যাট্রেসই আমাদের এক এক জনের জায়গা। কাল বাক্ষিম পৌছানোর পর পর আমার এবং পারভেজ দুজনেরই অবস্থা ছিল দেখার মত। ট্রেক করার সময় শরীর থাকে গরম, যার ফলে ঠান্ডার মাত্রাটা টের পাওয়া যায়না। কিন্তু এখানে এসে পৌছাতেই দেখি ভেতরে গা ঘেমে পুরো গোসল হয়ে গেছে। উইন্ডব্রেকার খুলতেই ঠান্ডার ঝাপটা। কাপুনি ধরে আমি যে গিয়ে lunch এনে খাব সে শক্তি নেই। দেবাশীষ সেটাও করলো। অতপর আমাদের কোর্স ডিরেক্টর কুশুং শেরপা স্যার ফল ইন করিয়ে লেকচার দিলেন, সারমর্ম হলো তোমরা এ পর্যন্ত এসেছ, এটা কোন ছেলেখেলা নয়, কালকে আমরা এখানেই থাকছি, তারপর দিন আমরা যাব জংরীতে। দেখিয়ে দেয়া হলো আমাদের প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করার স্থানটি।
যাই হোক, লেকচারের পর জায়গাটা ঘুরেফিরে দেখার টাইম পাওয়া গেল। প্রাকৃতিক কাজটি সম্পন্ন করার জন্য সন্ধ্যা হওয়ার একটু আগে আমি, পারভেজ এবং আমাদের আরেক বাঙ্গালী বন্ধু রনজিত দল বেধে ice-axe, টয়লেট পেপার ও পানি নিয়ে বেড়িয়েছি, দেখি Air force এর মেয়েগুলো আড্ডায় ব্যস্ত( উল্লেখ্য Air force এর ৩০ জনের দলে ৮ টি মেয়ে ছিল)। এখন ice-axe হাতে থাকা মানে ইজ্জতের ফালুদা, জান দিলেও ওটা নিয়ে তো কোন আপোশ সম্ভব নয়। রনজিতের চাপ মনে হয় কিছুটা বেশি, সে তাই ইজ্জতের কথা আপাতত ভুলে গিয়ে জঙ্গলমুখে রওনা দিয়ে দিল। আমার আর পারভেজ এর কথা আলাদা। হাজার হোক, দেশের মানসম্মান নিয়ে প্রশ্ন। তাই দুজনে ভেতরে গিয়ে গায়ে উইন্ড ব্রেকার চাপিয়ে সেটার ভেতরে ice-axe ভরে নিলাম, তারপর বেশ কষ্টে হাটতে হাটতে মেয়েদের গ্রুপটা পার হয়ে পৌছে গেলাম গন্তব্যে, যে যার যার মত কাজ শেষ করে একটু ক্যাজুয়াল মুডে ফিরে আসার সময় ওই শালা রনজিত আমার ice-axe টা টেনে বের করে দিল উইন্ড ব্রেকারের নিচ দিয়ে। এ যাত্রা আর শেষ রক্ষা হলো না। মেয়েদের অভিব্যক্তি সম্পর্কে আর নাই বা বললাম। ফোর্সে থাকলে এমনিতেই মেয়েরা সেয়ানা হয়ে যায়, তারপর এরা হলো গিয়ে আরো এক কাঠি বেশি, আমি আর পারভেজ কোন রকমে বাকি ইজ্জত নিয়ে ফিরলাম।
প্রথম থেকেই যেন কি কারণে বাক্ষিম জায়গাটা আমার ভাল লাগেনি। কেমন যেন একটা অন্যরকম পরিবেশ। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ভাত ও সবজি দিয়ে ডিনার করেছি এসময় কথা উঠল বাক্ষিম নিয়ে। স্যার আগেই আমাদের হাল্কা একটা আভাস দিয়েছিলেন কিন্তু তখনও বুঝিনি ব্যাপারটা কি। এবার জানলাম যে, এই রেঞ্জে যত এক্সপেডিশন হয় তার ক্যাজুয়াল্টি এনে রাখা হয় আমাদের এই হাটটিতে । তা ছাড়াও পাশের জঙ্গলে নাকি বেশ কিছু কবর আছে যা হয়ত বিভিন্ন সময় এখান থেকে নেয়া সম্ভব হয়নি। এটা শুনে সবাই কমবেশি অন্যমনস্ক হয়ে পড়লো, তবে আর্মির কিছু কিছু ছেলের আবার কোন ভাবান্তরই নেই, মৃত্যু এর বেশী কাছ থেকে দেখা হয়ে গেছে এমন অনেকেই আছে আমাদের এই কোর্সে। হটাত করে মনে পড়ে গেল এ বছরই বিডিআর বিদ্রোহে শহীদ আমাদের হায়দার ভাই এবং মাজহার ভাই এর কথা। মাঝে মাঝে নিজের উপর প্রচন্ড রাগ হয়, রাগ হয় কারণ আমি ভুলে যাই, রাগ হয় কারণ আমি আর সেই কয়দিনের মতো রাগান্বিত হতে পারিনা, রাগ হয় কারণ আমি শুধু বলি, আমি কিছু করতে পারিনা।
সে কথা যাক। আজ সকালে acclimatization এর জন্য আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ১১৫০০ ফুট উচু চোখা নামক জায়গায়। পর্বতারোহণের একটি নিয়ম হলো “Go High, sleep Low”. শরীর কে বেশি উচচতায় মানিয়ে নেয়ার জন্যই এই প্রক্রিয়া, এতে রাতের ঘুম ভালো হয় এবং শরীর এই উচচতার এটমসফেরিক প্রেশারের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়। তো, সেই চোখা থেকে ফিরে বিকালটা এখানে বেশ ভালই কেটেছে বলতে হবে। চাইনিজ ফোনের লাউড স্পিকারে পুরোনো কিছু হিন্দী গান শুনে আমিও বেশ চার্জড আপ। কাল ঈদ, কিন্তু দুঃখ এই যে, দেশে সবাই যখন এত মজা করবে তখন আমরা জংরীর পথে বোঝা টানবো। লোকমুখে এও শুনেছি যে এই খাড়া ৭ মাইল নাকি বেইস ক্যাম্প যাওয়ার পথে সবচাইতে কঠিন পথ। তবুও কেন যেন মনে আজ বেশ সাহস। যাই হোক না কেন দেখে নেবো।
চলবে
সম্ভব হলে জায়গাটার আরোও কিছু ছবি দিও ......
আসলে, বস, বেইস ক্যাম্প পৌছানোর আগে পৌছানো নিয়ে এতটাই ভয়ে ছিলাম যে খুব কম ছবি তোলার চান্স পাইছিলাম, ইনশাল্লাহ নেক্সট পর্বে এর থেইকা বেশি ছবি থাকবে বস।
আরো ছবি চাই বস :clap:
ইনশাল্লাহ নেক্সট পর্বে ভালো ছবি থাকবে। 😀
আরে ওমর ভাই, কলেজ থেকে বের হবার অনেকদিন পর দেখা গেল আপনাকে 🙂
লেখাটা দারুণ লাগছে তাই পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম :clap: :clap:
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
হ্যা ভাই, খবর কি ?? আশা করি ভাল আছ, পরের পর্ব শীঘ্রই লিখে ফেলবো আশা করি। 🙂
হেলিকপ্টার বা প্লেনে গিয়ে টুপ করে প্যারাসুট নিয়ে লাফ দিয়ে যাওয়া যায় না ওখানে। হেলিকপ্টার তো মনে হয় ল্যান্ডও করতে পারবে, সবুজ মাঠের মত দেখছি যে জায়গাটা 🙁
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
বস, সম্ভব। তবে ওই যে বলেছিলাম acclimatization এর কথা। শরীর যাতে দ্রুত high altitude এর সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয় এবং AMS( acute mountain sickness) এ ধরাশায়ী না হয় এজন্যই সাধারণত ট্রেক করে পর্বতারোহীরা উচচতা গেইন করে। পর্বতারোহীদের সবচাইতে বড় শ্ত্রু AMS নিয়ে সামনের পর্বগুলোতে লেখার ইচ্ছা আছে বস।
আপনার জন্য দোয়া করি ভাই। :clap:
অসংখ্য ধন্যবাদ, 😀
এই সব পোস্টে এত কম ছবি থাকলে মন ভরে না। 🙁
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
এই পর্যন্ত বস আমার নিজের কাছেও ছবি খুবই কম, তবে পরের পর্বগুলোতে অনেক ছবি দিতে পারবো আশা করি। 🙂
তোমার লেখাগুলো যতই পড়ছি ততই রোমাঞ্ছিত হচ্ছি ওমর।
অসংখ্য ধন্যবাদ তানভীর ভাই, পরের লেখা গুলোতে এটা ধরে রাখতে পারবো কিনা জানিনা, তবে চেষ্টা থাকবে। আপনার সাপোর্টটা বস খুব ভালো লাগে। 🙂
জটিল লাগতেছে। আরো ছবি দিও।
জি বস, ইনশাল্লাহ, পরেরটায় ছবি দিয়ে ভরায় ফেলবো। 😀