[ আমি কোনোদিন ফিল্ম রিভিউ লেখিনি। আর সাধারনত বেশিরভাগ সবসময় দেখা যায় ইংরেজি ও ইউরোপিয়ান ছায়াছবির রিভিউ লেখা হয়। আমি শুরুই করলাম দক্ষিন ভারতীয় একটা ছায়াছবি দিয়ে। ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। ]
খুবই চমৎকার একটা তামিল মুভি দেখলাম। অসাধারন। এক কথায় অসাধারন। এরকম একটা মুভির কথা এতোদিন কারো কাছে শুনলাম না কিভাবে সেটা ভেবেই অবাক লাগছে। ফার্স্ট ইয়ারে থাকতে আমরা ইউনিভার্সিটির কয়েকজন বন্ধু সারাক্ষনই বলতে গেলে মুভি নিয়ে আলাপ করতাম। আমরা প্রত্যেকেই বিশেষ করে সাউথ ইন্ডিয়ান মুভির খুব ভক্ত ছিলাম। তখনও কোনোদিন এই মুভিটার কথা ওঠেনাই।
“Nayakan” মুভিটি কমল হাসান অভিনীত এবং মনি রত্নম পরিচালিত। ১৯৮৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটিতে একজন সাধারন এতিম ছেলে থেকে গডফাদারের গড়ে ওঠার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। আশির দশকের শেষ ভাগে ভারতের মুম্বাই শহরের ত্রাস বা কারো কারো কাছে ঈশ্বরতুল্য, চেন্নাই থেকে আগত মাফিয়া ডন ভারাদারাজান মুদালিয়ার জীবনী অবলম্বন করে মুভিটি নির্মিত হয়। এছাড়া পরিচালক মনি রত্মম সম্ভবত এই মুভির মাধ্যমে মুম্বাইয়ে বসবাসকারী তামিল সম্প্রদায়ের দুরবস্থা দেখাতে চেয়েছেন।
ভেলু নায়াকান চরিত্রে কমল হাসানের ক্যারিয়ারের সেরা পারফর্ম্যান্স এই ছবিতে দেখা গেছে। তৎকালীন মুম্বাই শহরের লবন ব্যবসা ও এর আড়ালে কয়েকটি সন্ত্রাসী চক্রের মুম্বাইকে ভাগ বাটোয়ারা করে শাসন করার দৃশ্য ও খুব চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক।
ছবিটির একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো মুম্বাইয়ের একটি এলাকায় একেবারে বিশুদ্ধ তামিল জীবনযাত্রা দেখানো হয়েছে। কোথাও এতটুকু অতিরঞ্জন নেই। বিশেষ করে কমল হাসানের পোষাক পরিচ্ছদ ও শ্রী গণেশের পূজার দৃশ্যগুলো খুবই ভালো লেগেছে। আগেই বলা হয়েছে যে এই মুভিতে কমল হাসানের অভিনয় ছিলো ছিলো তুখোড়। বিশেষ করে একজন তামিলের হিন্দি বলতে বারবার আটকে যাওয়ার দৃশ্যগুলোতে ও রেগে গেলে হিন্দির বদলে তামিল ভাষায় কথা বলার দৃশ্যগুলো খুবই অসাধারন ছিলো। কমল হাসানের স্ত্রীর চরিত্র অভিনয় করা নায়িকার (নাম সম্ভবত সারানিয়া) এটা ছিলো প্রথম চলচ্চিত্র। অসাধারন অভিনয় করছেন তিনি। এছাড়া আরেকজন তামিল নারী অভিনেত্রী কার্থিকা; যিনি ভেলু নায়াকানের কন্যা চারুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনিও তাঁর চরিত্র অসাধারন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
পুরুষ অভিনেতাদের মধ্যে ডন ভেলুর সহকারী সিলভার চরিত্রে অভিনয়ের তেমন সুযোগ না থাকলেও অভিনেতা জানাগারাজ অসাধারন অভিনয় করছেন। টিনু আনন্দের চরিত্রটা খুবই ছোটো ছিলো। কিন্তু খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
ছবিটা ওভারঅল খুবই চমৎকার; তবে এই ছবিতে, আমার কাছে মনে হয়েছে, একটা বাদে বাকি গানগুলোর দরকার ছিলোনা। বিশেষ করে ট্রলারে একটা গানের দৃশ্য আছে যেটা এই ছবির শিল্পমূল্যের অনেকখানি ক্ষতি করেছে।
এবারে আসা যাকে পুরস্কার ও অর্জনের তালিকায়। ১৯৮৭ সালে মুক্তি পাওয়া একটা তামিল ছবির IMDb রেটিং ৮.৭!!! এতেই বোঝা যায় দর্শকদের কাছে ছবিটি কেমন লেগেছে। দিওয়ালী উৎসবে ছবিটি মুক্তি দেয়া হয়েছিলো। সমালোচকদের দৃষ্টিতে প্রশংসিত হবার সাথে সাথে এক কোটি রুপী বাজেটের ছবিটি বেশ ভালো ব্যাবসা করে। ভেলু নায়াকান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ১৯৮৭ সালের ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে পুরস্কৃত হন কমল হাসান। এছাড়াও একই আসরে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য ও শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশনার পুরস্কার ঘরে তোলে চলচ্চিত্রটি। ঐ বছরই ৬০ তম একাডেমী এ্যাওয়ার্ড (অস্কার) এর জন্য ভারত থেকে মনোনয়ন দেয়া হয় ‘নায়াকান’ ছবিটিকে। অস্কার জিততে না পারলেও ছবিটি দর্শক ও জুরীদের মন জয় করে নেয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি প্রদর্শিত ও পুরস্কৃত হয়।
তবে ছবিটি তাঁর শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি পায় মুক্তির ১৮ বছর পর। ২০০৫ সালে TIME ম্যাগাজিনে প্রকাশিত সর্বকালের সেরা ১০০ চলচ্চিত্র তালিকায় জায়গা করে নেয় ‘নায়াকান’ ছবিটি। এখানে উল্লেখ্য যে ঐ ১০০ চলচ্চিত্রের তালিকায় ‘নায়াকান’ ব্যাতীত উপমহাদেশের আর একটিই চলচ্চিত্র ছিলো। সেটি হলো ওয়ান এন্ড অনলি গ্রেট সত্যজিৎ রায়ের [#Respect] অপু ট্রিলজী! (পথের পাঁচালি, অপরাজিত ও অপুর সংসার)
পরবর্তীতে তেলেগু, কানাড়া ও হিন্দিতে ছবিটির রি-মেক করা হয়। কোনটিই তেমন প্রশংসিত হয়নি। উল্লেখ্য বিনোদ খান্না ও মাধুরী দিক্ষীত অভিনীত Dayavan ছবিটিই ‘নায়াকান’ ছবিটির হিন্দি রিমেক।
হাতে ২ ঘন্টা ১৭ মিনিট সময় থাকলে; দেখতে পারেন। গ্যারান্টি দিচ্ছি, সময়টা নষ্ট হবেনা।
:clap: :clap: :clap:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
মনিরত্নম এর নাম পর্যন্ত পড়ে আর বাকিটা পড়লাম না। অতি দ্রুত মুভিটা দেখে তারপর পুরোটা পড়ে মন্তব্য করবো। ধন্যবাদ খোঁজ দেবার জন্য 🙂
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
মনিরত্নমের পরে যোগ করবো, "কমল হাসান"
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
কমল হাসান এর নাম মনিরত্নম এর আগেই পড়ে ফেলছি, তাই মনিরত্নম পর্যন্ত বলছি 😉
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
যে কয়জন ভারতীয় সহকর্মী আছে অন্তত তাদের কাছে অভিনেতার সংজ্ঞা বলতে একটাই নাম আসে, "কমল হাসান।" ওদের সাফ কথা, শাহরুখ, আমির এইসবের টাইম নাই। 🙂 আমিও এই রকম না ভাবার কোন কারণ দেখি না। কারণ কমল হাসান ইজ কমল হাসান। 🙂
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
:thumbup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ছবিটা দেখা হয়নি।
দেখে নিতে হবে।
রিভিউ না লিখে প্রিভিউ লেখা উচিত ছিলো। 😀
http://youtu.be/UaSPHeBUE-k
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
link
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
তামিল ভাষা বুঝি না। 😕 সাবটাইটেল লাগবে।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
খুঁজলে পাওয়া যাবে।
আমি প্রথমে মনে হয় ইংলিশ সাবটাইটেল দেয়াটাই দেখছিলাম দেশে থাকতে।
হিন্দিটা বিনোদ খান্না-মাধুরীর করা। সাথে ফিরোজ খান।
তবে হিন্দিতেও তিনু আনন্দ আছে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ফিরোজ খানের কথা বলতে গিয়া মনে হইলো।
হোয়াট এ মুভি।
ম্যান, হোয়াট এ মুভি।
ওয়ান অফ দ্যা বেষ্ট ইন হিন্দি এরেনা।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ